শিক্ষাবিজ্ঞান (Education)
Class xii (wbchse)
ভারতীয় সংবিধানে শিক্ষার ধারা
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (মান-1)
প্রশ্ন: সংবিধানে ভারতকে কীরূপ রাষ্ট্র বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে?
উঃ সংবিধানে ভারতকে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রাষ্ট্র বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
প্রশ্ন: গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি কী?
উঃ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি হল স্বাধীনতা, সাম্য, সৌভ্রাতৃত্ববোধ ও ন্যায়বিচার।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের খসড়া কত খ্রিস্টাব্দে তৈরি হয়?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের খসড়া ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে তৈরি হয়।
প্রশ্ন: কার সভাপতিত্বে ভারতীয় সংবিধানের খসড়া রচিত হয়েছিল? অথবা, ভারতীয় সংবিধানের জনক কে?
উঃ ড. বি. আর. আম্বেদকরের সভাপতিত্বে ভারতীয় সংবিধানের খসড়া রচিত হয়েছিল।
প্রশ্ন: ভারতীয় গণপরিষদ কবে সংবিধানের খসড়াটি গ্রহণ করেছিল?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের খসড়াটি গণপরিষদ ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ নভেম্বর গ্রহণ করেছিল।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধান কার্যকরী হয় কবে?
উঃ ভারতীয় সংবিধান কার্যকরী হয় ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে উল্লিখিত মৌলিক অধিকারগুলি কী?
উঃ ভারতীয় সংবিধানে উল্লিখিত মৌলিক অধিকারগুলি হল-
(i) সাম্যের অধিকার, (ii) স্বাধীনতার অধিকার, (iii) শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার, (iv) ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার, (v) সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা বিষয়ক অধিকার, (vi) ৬ থেকে ১৪ বছরের বালকবালিকাদের অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার, (vii) সাংবিধানিক প্রতিকারের অধিকার।
প্রশ্ন: কততম সংশোধনীতে ভারতীয় সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষ' ও ‘সমাজতান্ত্রিক’ কথা দুটি যোগ করা হয়?
উঃ ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে ৪২ তম সংশোধনীতে ভারতীয় সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও ‘সমাজতান্ত্রিক' কথা দুটি যোগ করা হয়।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের দুটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য লেখো।
উঃ ভারতীয় সংবিধানের দুটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল—
(i) এটি বিশ্বের বৃহত্তম লিখিত সংবিধান এবং (ii) এতে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি গৃহীত হয়েছে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধান রচনার সময় কতগুলি অধ্যায়, ধারা ও তপশিল সংবলিত ছিল?
উঃ ভারতীয় সংবিধান রচনার সময় মোট ২২টি অধ্যায়, ৩৯৫টি ধারা ও ৮টি তপশিল সংবলিত ছিল।
প্রশ্ন: কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা বন্টনের ক্ষেত্রে কতগুলি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে? সেগুলি কী?
উঃ কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা বন্টনের ক্ষেত্রে মোট তিনটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। সেগুলি হল— (i) কেন্দ্রীয় তালিকা, (ii) রাজ্য তালিকা ও (iii) যুগ্ম তালিকা।
প্রশ্ন: কেন্দ্রীয় তালিকা ইউনিয়ন লিস্ট কী?
উঃ যে সকল বিষয়ে আইন প্রণয়নের অধিকার কেন্দ্রীয় সরকারের তাকে কেন্দ্রীয় তালিকা বা ইউনিয়ন লিস্ট বা লিস্ট ১ বলে।
প্রশ্ন: রাজ্য তালিকা বা স্টেট লিস্ট বা লিস্ট 2 কী?
উঃ যে সকল বিষয়ে আইন প্রণয়নের অধিকার রাজ্য সরকারের, তাকে রাজ্য তালিকা বা স্টেট লিস্ট বা লিস্ট 2 বলে।
প্রশ্ন: যুগ্ম তালিকা বা কনকারেন্ট লিস্ট বা লিস্ট ৩ কী?
উঃ যে সকল বিষয়ে আইন প্রণয়নের অধিকার কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের উভয়ের, তাকে যুগ্ম তালিকা বা কনকারেন্ট লিস্ট বা লিস্ট ৩ বলে।
প্রশ্ন: কেন্দ্রীয় তালিকায় কতগুলি বিষয় এবং রাজ্য তালিকায় কতগুলি বিষয় আছে?
উঃ কেন্দ্রীয় তালিকায় 97 টি বিষয় এবং রাজ্য তালিকায় 62 টি বিষয় আছে।
প্রশ্ন: শিক্ষার বিষয়টি কবে ভারতীয় সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত হয়?
উঃ শিক্ষার বিষয়টি ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ডিসেম্বর সংবিধানের ৪২তম সংশোধনীতে কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ তালিকাভুক্ত হয়।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কোন্ কোন্ ধারায় শিক্ষাসংক্রান্ত আলোচনা রয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ২৮, ৩০, ৪৫, ৪৬, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৩৫০ প্রভৃতি ধারায় শিক্ষাসংক্রান্ত আলোচনা রয়েছে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে শিক্ষাসংক্রান্ত যে কোনো দুটি ধারা বিবৃত করো।
উঃ ভারতীয় সংবিধানে শিক্ষাসংক্রান্ত দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা হল--
i) ২৮নং ধারা (Article 28): সংবিধানের এই ধারায় বলা হয়েছে যে, রাজ্য সরকারের আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোনোভাবেই ধর্মীয় শিক্ষা বা ধর্মীয় নির্দেশনা দেওয়া যাবে না।
ii) ৬৪নং ধারা (Article 64): সংবিধানের এই ধারায় বলা হয়েছে যে, পার্লামেন্ট কর্তৃক ঘোষিত ভারত সরকারের আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত বিজ্ঞানমূলক ও প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠানগুলি জাতীয় মর্যাদা লাভ করবে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৩০ (১) নং উপধারায় কী উল্লেখ আছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৩০(১) নং উপধারায় বলা হয়েছে যে, সরকার কর্তৃক পরিচালিত বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্ম, বর্ণ বা ভাষার পার্থক্য শিক্ষার্থীদের প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত করবে না।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে নির্দেশক নীতির ৪৫নং ধারার বিষয়বস্তু কী? অথবা, ভারতীয় সংবিধানের ৪৫নং ধারার মূল বক্তব্য কী?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪৫নং ধারায় বলা হয়েছে যে, সংবিধান কার্যকরী হওয়ার ১০ বছরের মধ্যে রাষ্ট্র ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত দেশের সকল শিশুদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করবে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৪৬নং ধারাতে কী উল্লেখ আছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪৬নং ধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রকে সমাজের দুর্বল শ্রেণি বিশেষ করে তপশিলি জাতি ও উপজাতির মানুষদের জন্য শিক্ষাগত ও আর্থিক সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে এবং সকল প্রকার সামাজিক অন্যায় ও শোষণ থেকে এই সম্প্রদায়ের মানুষদের রক্ষা করার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
প্রশ্ন: 21 ভারতীয় সংবিধানের ৩৫০ (ক) ধারায় কী বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৩৫০ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিশুরা প্রাথমিক স্তরে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারবে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৩৫১ ধারায় কী বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৩৫১ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, হিন্দি ভাষার উন্নতি ও বিস্তার ঘটানো ভারত সরকারের অন্যতম কর্তব্য।
প্রশ্ন: করে, কততম সংশোধনী বিলে সর্বসম্মতভাবে তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে?
উঃ ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ ডিসেম্বর, ৬২তম সংবিধান সংশোধনী বিলে সর্বসম্মতভাবে তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
প্রশ্ন: সংবিধানের ৯৩তম সংশোধনী বিল কত খ্রিস্টাব্দে পাস হয় এবং এই সংশোধনী বিলের বিষয়বস্তু কী ছিল?
উঃ সংবিধানের ৯৩তম সংশোধনী বিল ২০০১ খ্রিস্টাব্দে পাস হয়। এতে বলা হয়, ভারত রাষ্ট্র প্রতিটি ৬ বছর থেকে ১৪ বছর বয়সি শিশুদের অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করবে।
প্রশ্ন: বাধ্যতামূলক শিক্ষা' বলতে কী বোঝো?
উঃ সংবিধানের 45 নং ধারা অনুযায়ী 14 বছর বয়স পর্যন্ত সকল শিশুকে অবশ্যই শিক্ষার আঙ্গিনায় আনাকে বাধ্যতামূলক শিক্ষা বলে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় শিশুদের জন্য অবৈতনিক বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের কথা বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪৫ নম্বর ধারায় শিশুদের জন্য অবৈতনিক বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন: ভারতের সংবিধানের শিশুদের বাধ্যতামূলক শিক্ষা সংক্রান্ত 45 নং ধারাটি বিবৃত করো।
অথবা, ভারতীয় সংবিধানে নির্দেশক নীতির 45 নং ধারার বিষয়বস্তু কী?
উঃ ভারতের সংবিধানের 45 নং ধারায় শিশুদের বাধ্যতামূলক শিক্ষা সম্পর্কে বলা হয়েছে-- সংবিধান প্রণয়নের 10 বছরের মধ্যে সব শিশুদের জন্য 14 বছর বয়স সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অবৈতনিক, বাধ্যতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করবে রাষ্ট্র।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কততম ধারায় সকলের জন্য সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে?"
উঃ ভারতীয় সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ের (Part III) ১৪, ১৫ এবং ১৬নং ধারায় (Article) সকলের জন্য সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে সকলের জন্য সমানাধিকার বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানে সকলের জন্য সমানাধিকার বলতে বোঝানো হয়েছে যে, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে আইনের চোখে সকলে সমান। এমনকি সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও এই সমতাবিধান করা হবে বলে ভারতীয় সংবিধানে বলা হয়েছিল।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ১৪নং ধারায় কী বলা হয়েছে?”
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৪নং ধারায় বলা হয়েছে, ভারতে অবস্থিত কোনো ভারতীয় নাগরিককে রাষ্ট্র আইনের দ্বারা সমানভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে না।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় নারীশিক্ষার কথা বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৫ ও ১৬নং ধারায় নারীশিক্ষার কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ১৫নং ধারায় নাগরিকদের সমানাধিকার প্রসঙ্গে কী বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৫নং ধারায় বলা হয়েছে যে,
(i) জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, জন্মস্থান, লিঙ্গ প্রভৃতি বিষয় কখনো নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্যের কারণ হবে না।
(ii) সাধারণের জন্য ব্যবহৃত স্নানাগার, কুয়ো, রাস্তাঘাট, পান্থশালা, রেস্তোরাঁ প্রভৃতি সকলের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।
(iii) কখনো কখনো জনস্বার্থ রক্ষার্থে সরকার কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে; আর নারী ও শিশুদের জন্য কিছু বিশেষাধিকার সংরক্ষিত হতে পারে।
প্রশ্ন: শিক্ষায় সমসুযোগ বলতে কী বোঝায়?
উঃ জাতি-ধর্ম-বর্ণ অর্থ নির্বিশেষে সকলের শিক্ষায় সমান অধিকারকে শিক্ষায় সমসুযোগ বলে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় শিক্ষায় সমসুযোগের কথা বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ২৯ এবং ৪৫ নম্বর ধারায় শিক্ষায় সমসুযোগের কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন: নারীদের সুযোগসুবিধার কথা সংবিধানের কত নং ধারায় বলা হয়েছে?
উঃ নারীদের সুযোগসুবিধা প্রদান ও শিক্ষাদানের কথা সংবিধানের ১৫ ও ১৬নং ধারায় বলা হয়েছে।
প্রশ্ন: জাতীয় নারীশিক্ষা পরিষদ কত খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয়?
উঃ জাতীয় নারীশিক্ষা পর্ষদ গঠিত হয় ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে।
প্রশ্ন: মেয়েদের জন্য পৃথক কারিগরি বিদ্যালয় গঠনের কথা কে ঘোষণা করেন?
উঃ শ্রীমতী দুর্গাবাই দেশমুখ-এর নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় নারীশিক্ষা পরিষদ ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে নারীদের জন্য পৃথক কারিগরি বিদ্যালয় গঠনের কথা ঘোষণা করেন।
প্রশ্ন: শ্রীমতী হংস মেহেতা কমিটি কবে, কেন গঠিত হয়?
উঃ ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দের ১০ মে, মেয়েদের পৃথক পাঠ্যক্রমের সমস্যা সমাধানের জন্য জাতীয় নারী শিক্ষা পরিষদের নেত্রী শ্রীমতি হংস মেহেতা একটি শিক্ষা কমিটি গঠন করেন।
প্রশ্ন: ভক্তবৎসলম কমিটি করে ও কেন গঠিত হয়?
উঃ ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে জনসাধারণের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কীভাবে গ্রামাঞ্চলে নারীশিক্ষার প্রসার ঘটানো যায়, সে সম্পর্কে আলোচনার জন্য ভক্তবৎসলম কমিটি গঠিত হয়।
প্রশ্ন: গ্রামাঞ্চলে নারীদের জন্য Teachers Training College গড়ে তোলার কথা কে বলেছিল?
উঃ গ্রামাণ্ডলে নারীদের জন্য Teachers Training College গড়ে তোলার কথা বলেছিল শ্রীভক্তবৎসলম্ কমিটি।
প্রশ্ন: ভারতে বর্তমান নারীশিক্ষার হার কত?
উঃ ভারতে বর্তমান নারীশিক্ষার হার শতকরা ৬৫.৪৬ (২০১১ খ্রিস্টাব্দ)
প্রশ্ন: নারীশিক্ষা বিস্তারের দুটি উপায় লেখো।
উঃ নারীশিক্ষা বিস্তারের জন্য- (i) শিক্ষিকার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে, (ii) সদর্থক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে হবে।
প্রশ্ন: 'The Education' গ্রন্থটি কার লেখা? এর বিষয়বস্তু কী?
উ: 'The Education' গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন গান্ধিজি। এই গ্রন্থে গান্ধিজি ভারতের সামাজিক ও জাতীয় বিকাশে নারীদের শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করেছেন।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৪১ নং ধারায় কী বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪১ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্র তার আর্থিক সামর্থ্য ও উন্নয়নের সীমার মধ্যে সব নাগরিকের জন্য কর্ম ও শিক্ষার ব্যবস্থা করবে এবং সেইসঙ্গে বেকার যুবক, বৃদ্ধ, অসুস্থ ও অক্ষম মানুষদের সরকারি সাহায্য দান করবে।
প্রশ্ন: ভারতের সংবিধান অনুযায়ী তপশিলি জাতি কাদের বলা হয়?
উঃ ভারতের সংবিধান অনুযায়ী আর্থিক ও সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া অনুন্নত ও দুর্বল শ্রেণির মানুষকে তপশিলি জাতি বলা হয়। যেমন— কামার, ধোপা প্রভৃতি।
প্রশ্ন: আমাদের দেশে ‘তপশিলি জাতি হিসেবে কারা পরিগণিত?
উঃ আমাদের দেশ ভারতবর্ষে হিন্দুধর্মের রক্ষণশীলদের কাছে যারা 'অস্পৃশ্য' বলে পরিচিত ছিল এবং বর্তমানে ভারতীয় সংবিধান অনুসারে সামাজিক দিক থেকে যারা সুবিধাহীন শ্রেণি, তারাই ‘তপশিলি জাতি' বলে পরিগণিত।
প্রশ্ন: ভারতবর্ষে কাদের ‘তপশিলি উপজাতি' বলা হয়?
উঃ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির নির্দেশে বিভিন্ন রাজ্যের যেসব অনগ্রসর উপজাতির নাম নথিভুক্ত করা হয়, তাদের তপশিলি উপজাতি বলা হয়। যেমন—সাঁওতাল, কোল, মুন্ডা প্রভৃতি।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের শিক্ষার বিষয়ে বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৫ এবং ৪৬ নং ধারায় তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের শিক্ষার বিষয়ে বলা হয়েছে।
প্রশ্ন: কার সভাপতিত্বে তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিদের শিক্ষার জন্য কমিটি গঠিত হয়েছিল?
উঃ ইউ এন ধেবরের সভাপতিত্বে তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিদের শিক্ষার জন্য কমিটি গঠিত হয়েছিল।
প্রশ্ন: সংখ্যালঘু' কারা?
উঃ ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের কার্লেকর কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী হিন্দু সমাজে একদা উচ্চবর্ণের মানুষের দ্বারা অত্যাচারিত শ্রেণির মানুষ, যারা পিছিয়ে যেতে যেতে একেবারে অনুন্নত শ্রেণিতে পরিণত হয়েছে, তাদের বলা হয় সংখ্যালঘু। যেমন ছোটো কারিগর, পশুপালনকারী বা শিকারি সম্প্রদায়।
প্রশ্ন: সংখ্যালঘুদের শিক্ষাসংক্রান্ত সমানাধিকারের বিষয়টি ভারতীয় সংবিধানের কোন ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে।
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ২৯ নং ধারায় সংখ্যালঘুদের শিক্ষাসংক্রান্ত সমানাধিকারের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রশ্ন: করে সম্পত্তির অধিকারের বিষয়টিকে মৌলিক অধিকারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়?
উঃ ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে ৪৪ তম সংবিধান সংশোধনকালে সম্পত্তি অধিকারের বিষয়টিকে মৌলিক অধিকারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে সাম্যের অধিকার সম্বন্ধীয় ধারাগুলির মধ্যে কোন্টি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ?
উঃ ভারতীয় সংবিধানে সাম্যের অধিকার সম্বন্ধীয় ধারা হল- ১৪-১৮ নং ধারা। এর মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হল ১৪ নং ধারাটি, যাতে ভারত ভূখণ্ডের মধ্যে কোনো ব্যক্তিকে আইনের দৃষ্টিতে সমানাধিকার ও আইনের দ্বারা সংরক্ষণের কথা বল হয়েছে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে কাদের জন্য বিশেষ সুযোগসুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে?"
উঃ ভারতীয় সংবিধানে তপশিলি জাতি বা Scheduled Castes', তপশিলি উপজাতি বা 'Scheduled Tribes এবং অন্যান্য অনুন্নত শ্রেণি বা Other Backward Classes' (OBC)-এর জন্য বিশেষ সুযোগসুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রশ্ন: সংবিধানের ৩৮ নং ধারায় বর্ণিত আর্থসামাজিক বিষয়ে দু নীতি উল্লেখ করো।
উঃ সংবিধানের ৩৮ নং ধারায় বর্ণিত আর্থসামাজিক বিষয়ের দুটি উল্লেখযোগ্য নীতি হল--
উঃ (i) সমাজের বস্তুগত সম্পদের উপর একচেটিয়া মালিকানা প্রতিহত করে তার সুষম বণ্টনের ব্যবস্থা করা।
(ii) প্রতিটি শিশুকে শারীরিক ও নৈতিক শোষণের হাত থেকে রক্ষ করা ও তারা যাতে সুস্বাস্থ্য, সম্মান ও স্বাধীনতার অধিকারী হতে পারে, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক কর্তব্যের সংখ্যা কত?
উঃ ভারতীয় সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক কর্তব্যের সংখ্যা ১১টি।
প্রশ্ন: কততম সংশোধনীতে ভারতীয় সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষ' ও ‘সমাজতান্ত্রিক’ কথা দুটি যোগ করা হয়?
উঃ ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে ৪২ তম সংশোধনীতে ভারতীয় সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও ‘সমাজতান্ত্রিক' কথা দুটি যোগ করা হয়।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের দুটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য লেখো।
উঃ ভারতীয় সংবিধানের দুটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল—
(i) এটি বিশ্বের বৃহত্তম লিখিত সংবিধান এবং (ii) এতে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি গৃহীত হয়েছে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধান রচনার সময় কতগুলি অধ্যায়, ধারা ও তপশিল সংবলিত ছিল?
উঃ ভারতীয় সংবিধান রচনার সময় মোট ২২টি অধ্যায়, ৩৯৫টি ধারা ও ৮টি তপশিল সংবলিত ছিল।
প্রশ্ন: কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা বন্টনের ক্ষেত্রে কতগুলি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে? সেগুলি কী?
উঃ কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা বন্টনের ক্ষেত্রে মোট তিনটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। সেগুলি হল— (i) কেন্দ্রীয় তালিকা, (ii) রাজ্য তালিকা ও (iii) যুগ্ম তালিকা।
প্রশ্ন: কেন্দ্রীয় তালিকা ইউনিয়ন লিস্ট কী?
উঃ যে সকল বিষয়ে আইন প্রণয়নের অধিকার কেন্দ্রীয় সরকারের তাকে কেন্দ্রীয় তালিকা বা ইউনিয়ন লিস্ট বা লিস্ট ১ বলে।
প্রশ্ন: রাজ্য তালিকা বা স্টেট লিস্ট বা লিস্ট 2 কী?
উঃ যে সকল বিষয়ে আইন প্রণয়নের অধিকার রাজ্য সরকারের, তাকে রাজ্য তালিকা বা স্টেট লিস্ট বা লিস্ট 2 বলে।
প্রশ্ন: যুগ্ম তালিকা বা কনকারেন্ট লিস্ট বা লিস্ট ৩ কী?
উঃ যে সকল বিষয়ে আইন প্রণয়নের অধিকার কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের উভয়ের, তাকে যুগ্ম তালিকা বা কনকারেন্ট লিস্ট বা লিস্ট ৩ বলে।
প্রশ্ন: কেন্দ্রীয় তালিকায় কতগুলি বিষয় এবং রাজ্য তালিকায় কতগুলি বিষয় আছে?
উঃ কেন্দ্রীয় তালিকায় 97 টি বিষয় এবং রাজ্য তালিকায় 62 টি বিষয় আছে।
প্রশ্ন: শিক্ষার বিষয়টি কবে ভারতীয় সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত হয়?
উঃ শিক্ষার বিষয়টি ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ডিসেম্বর সংবিধানের ৪২তম সংশোধনীতে কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ তালিকাভুক্ত হয়।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কোন্ কোন্ ধারায় শিক্ষাসংক্রান্ত আলোচনা রয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ২৮, ৩০, ৪৫, ৪৬, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৩৫০ প্রভৃতি ধারায় শিক্ষাসংক্রান্ত আলোচনা রয়েছে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে শিক্ষাসংক্রান্ত যে কোনো দুটি ধারা বিবৃত করো।
উঃ ভারতীয় সংবিধানে শিক্ষাসংক্রান্ত দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা হল--
i) ২৮নং ধারা (Article 28): সংবিধানের এই ধারায় বলা হয়েছে যে, রাজ্য সরকারের আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোনোভাবেই ধর্মীয় শিক্ষা বা ধর্মীয় নির্দেশনা দেওয়া যাবে না।
ii) ৬৪নং ধারা (Article 64): সংবিধানের এই ধারায় বলা হয়েছে যে, পার্লামেন্ট কর্তৃক ঘোষিত ভারত সরকারের আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত বিজ্ঞানমূলক ও প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠানগুলি জাতীয় মর্যাদা লাভ করবে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৩০ (১) নং উপধারায় কী উল্লেখ আছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৩০(১) নং উপধারায় বলা হয়েছে যে, সরকার কর্তৃক পরিচালিত বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্ম, বর্ণ বা ভাষার পার্থক্য শিক্ষার্থীদের প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত করবে না।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে নির্দেশক নীতির ৪৫নং ধারার বিষয়বস্তু কী? অথবা, ভারতীয় সংবিধানের ৪৫নং ধারার মূল বক্তব্য কী?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪৫নং ধারায় বলা হয়েছে যে, সংবিধান কার্যকরী হওয়ার ১০ বছরের মধ্যে রাষ্ট্র ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত দেশের সকল শিশুদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করবে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৪৬নং ধারাতে কী উল্লেখ আছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪৬নং ধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রকে সমাজের দুর্বল শ্রেণি বিশেষ করে তপশিলি জাতি ও উপজাতির মানুষদের জন্য শিক্ষাগত ও আর্থিক সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে এবং সকল প্রকার সামাজিক অন্যায় ও শোষণ থেকে এই সম্প্রদায়ের মানুষদের রক্ষা করার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৩৫০ (ক) ধারায় কী বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৩৫০ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিশুরা প্রাথমিক স্তরে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারবে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৩৫১ ধারায় কী বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৩৫১ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, হিন্দি ভাষার উন্নতি ও বিস্তার ঘটানো ভারত সরকারের অন্যতম কর্তব্য।
প্রশ্ন: করে, কততম সংশোধনী বিলে সর্বসম্মতভাবে তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে?
উঃ ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ ডিসেম্বর, ৬২তম সংবিধান সংশোধনী বিলে সর্বসম্মতভাবে তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
প্রশ্ন: সংবিধানের ৯৩তম সংশোধনী বিল কত খ্রিস্টাব্দে পাস হয় এবং এই সংশোধনী বিলের বিষয়বস্তু কী ছিল?
উঃ সংবিধানের ৯৩তম সংশোধনী বিল ২০০১ খ্রিস্টাব্দে পাস হয়। এতে বলা হয়, ভারত রাষ্ট্র প্রতিটি ৬ বছর থেকে ১৪ বছর বয়সি শিশুদের অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করবে।
প্রশ্ন: বাধ্যতামূলক শিক্ষা' বলতে কী বোঝো?
উঃ সংবিধানের 45 নং ধারা অনুযায়ী 14 বছর বয়স পর্যন্ত সকল শিশুকে অবশ্যই শিক্ষার আঙ্গিনায় আনাকে বাধ্যতামূলক শিক্ষা বলে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় শিশুদের জন্য অবৈতনিক বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের কথা বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪৫ নম্বর ধারায় শিশুদের জন্য অবৈতনিক বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন: ভারতের সংবিধানের শিশুদের বাধ্যতামূলক শিক্ষা সংক্রান্ত 45 নং ধারাটি বিবৃত করো।
অথবা, ভারতীয় সংবিধানে নির্দেশক নীতির 45 নং ধারার বিষয়বস্তু কী?
উঃ ভারতের সংবিধানের 45 নং ধারায় শিশুদের বাধ্যতামূলক শিক্ষা সম্পর্কে বলা হয়েছে-- সংবিধান প্রণয়নের 10 বছরের মধ্যে সব শিশুদের জন্য 14 বছর বয়স সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অবৈতনিক, বাধ্যতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করবে রাষ্ট্র।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কততম ধারায় সকলের জন্য সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে?"
উঃ ভারতীয় সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ের (Part III) ১৪, ১৫ এবং ১৬নং ধারায় (Article) সকলের জন্য সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে সকলের জন্য সমানাধিকার বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানে সকলের জন্য সমানাধিকার বলতে বোঝানো হয়েছে যে, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে আইনের চোখে সকলে সমান। এমনকি সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও এই সমতাবিধান করা হবে বলে ভারতীয় সংবিধানে বলা হয়েছিল।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ১৪নং ধারায় কী বলা হয়েছে?”
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৪নং ধারায় বলা হয়েছে, ভারতে অবস্থিত কোনো ভারতীয় নাগরিককে রাষ্ট্র আইনের দ্বারা সমানভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে না।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় নারীশিক্ষার কথা বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৫ ও ১৬নং ধারায় নারীশিক্ষার কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ১৫নং ধারায় নাগরিকদের সমানাধিকার প্রসঙ্গে কী বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৫নং ধারায় বলা হয়েছে যে,
(i) জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, জন্মস্থান, লিঙ্গ প্রভৃতি বিষয় কখনো নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্যের কারণ হবে না।
(ii) সাধারণের জন্য ব্যবহৃত স্নানাগার, কুয়ো, রাস্তাঘাট, পান্থশালা, রেস্তোরাঁ প্রভৃতি সকলের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।
(iii) কখনো কখনো জনস্বার্থ রক্ষার্থে সরকার কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে; আর নারী ও শিশুদের জন্য কিছু বিশেষাধিকার সংরক্ষিত হতে পারে।
প্রশ্ন: শিক্ষায় সমসুযোগ বলতে কী বোঝায়?
উঃ জাতি-ধর্ম-বর্ণ অর্থ নির্বিশেষে সকলের শিক্ষায় সমান অধিকারকে শিক্ষায় সমসুযোগ বলে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় শিক্ষায় সমসুযোগের কথা বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ২৯ এবং ৪৫ নম্বর ধারায় শিক্ষায় সমসুযোগের কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন: নারীদের সুযোগসুবিধার কথা সংবিধানের কত নং ধারায় বলা হয়েছে?
উঃ নারীদের সুযোগসুবিধা প্রদান ও শিক্ষাদানের কথা সংবিধানের ১৫ ও ১৬নং ধারায় বলা হয়েছে।
প্রশ্ন: জাতীয় নারীশিক্ষা পরিষদ কত খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয়?
উঃ জাতীয় নারীশিক্ষা পর্ষদ গঠিত হয় ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে।
প্রশ্ন: মেয়েদের জন্য পৃথক কারিগরি বিদ্যালয় গঠনের কথা কে ঘোষণা করেন?
উঃ শ্রীমতী দুর্গাবাই দেশমুখ-এর নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় নারীশিক্ষা পরিষদ ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে নারীদের জন্য পৃথক কারিগরি বিদ্যালয় গঠনের কথা ঘোষণা করেন।
প্রশ্ন: শ্রীমতী হংস মেহেতা কমিটি কবে, কেন গঠিত হয়?
উঃ ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দের ১০ মে, মেয়েদের পৃথক পাঠ্যক্রমের সমস্যা সমাধানের জন্য জাতীয় নারী শিক্ষা পরিষদের নেত্রী শ্রীমতি হংস মেহেতা একটি শিক্ষা কমিটি গঠন করেন।
প্রশ্ন: ভক্তবৎসলম কমিটি করে ও কেন গঠিত হয়?
উঃ ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে জনসাধারণের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কীভাবে গ্রামাঞ্চলে নারীশিক্ষার প্রসার ঘটানো যায়, সে সম্পর্কে আলোচনার জন্য ভক্তবৎসলম কমিটি গঠিত হয়।
প্রশ্ন: গ্রামাঞ্চলে নারীদের জন্য Teachers Training College গড়ে তোলার কথা কে বলেছিল?
উঃ গ্রামাণ্ডলে নারীদের জন্য Teachers Training College গড়ে তোলার কথা বলেছিল শ্রীভক্তবৎসলম্ কমিটি।
প্রশ্ন: ভারতে বর্তমান নারীশিক্ষার হার কত?
উঃ ভারতে বর্তমান নারীশিক্ষার হার শতকরা ৬৫.৪৬ (২০১১ খ্রিস্টাব্দ)
প্রশ্ন: নারীশিক্ষা বিস্তারের দুটি উপায় লেখো।
উঃ নারীশিক্ষা বিস্তারের জন্য- (i) শিক্ষিকার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে, (ii) সদর্থক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে হবে।
প্রশ্ন: 'The Education' গ্রন্থটি কার লেখা? এর বিষয়বস্তু কী?
উ: 'The Education' গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন গান্ধিজি। এই গ্রন্থে গান্ধিজি ভারতের সামাজিক ও জাতীয় বিকাশে নারীদের শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করেছেন।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৪১ নং ধারায় কী বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪১ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্র তার আর্থিক সামর্থ্য ও উন্নয়নের সীমার মধ্যে সব নাগরিকের জন্য কর্ম ও শিক্ষার ব্যবস্থা করবে এবং সেইসঙ্গে বেকার যুবক, বৃদ্ধ, অসুস্থ ও অক্ষম মানুষদের সরকারি সাহায্য দান করবে।
প্রশ্ন: ভারতের সংবিধান অনুযায়ী তপশিলি জাতি কাদের বলা হয়?
উঃ ভারতের সংবিধান অনুযায়ী আর্থিক ও সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া অনুন্নত ও দুর্বল শ্রেণির মানুষকে তপশিলি জাতি বলা হয়। যেমন— কামার, ধোপা প্রভৃতি।
প্রশ্ন: আমাদের দেশে ‘তপশিলি জাতি হিসেবে কারা পরিগণিত?
উঃ আমাদের দেশ ভারতবর্ষে হিন্দুধর্মের রক্ষণশীলদের কাছে যারা 'অস্পৃশ্য' বলে পরিচিত ছিল এবং বর্তমানে ভারতীয় সংবিধান অনুসারে সামাজিক দিক থেকে যারা সুবিধাহীন শ্রেণি, তারাই ‘তপশিলি জাতি' বলে পরিগণিত।
প্রশ্ন: ভারতবর্ষে কাদের ‘তপশিলি উপজাতি' বলা হয়?
উঃ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির নির্দেশে বিভিন্ন রাজ্যের যেসব অনগ্রসর উপজাতির নাম নথিভুক্ত করা হয়, তাদের তপশিলি উপজাতি বলা হয়। যেমন—সাঁওতাল, কোল, মুন্ডা প্রভৃতি।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের শিক্ষার বিষয়ে বলা হয়েছে?
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৫ এবং ৪৬ নং ধারায় তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের শিক্ষার বিষয়ে বলা হয়েছে।
প্রশ্ন: কার সভাপতিত্বে তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিদের শিক্ষার জন্য কমিটি গঠিত হয়েছিল?
উঃ ইউ এন ধেবরের সভাপতিত্বে তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিদের শিক্ষার জন্য কমিটি গঠিত হয়েছিল।
প্রশ্ন: সংখ্যালঘু' কারা?
উঃ ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের কার্লেকর কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী হিন্দু সমাজে একদা উচ্চবর্ণের মানুষের দ্বারা অত্যাচারিত শ্রেণির মানুষ, যারা পিছিয়ে যেতে যেতে একেবারে অনুন্নত শ্রেণিতে পরিণত হয়েছে, তাদের বলা হয় সংখ্যালঘু। যেমন ছোটো কারিগর, পশুপালনকারী বা শিকারি সম্প্রদায়।
প্রশ্ন: সংখ্যালঘুদের শিক্ষাসংক্রান্ত সমানাধিকারের বিষয়টি ভারতীয় সংবিধানের কোন ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে।
উঃ ভারতীয় সংবিধানের ২৯ নং ধারায় সংখ্যালঘুদের শিক্ষাসংক্রান্ত সমানাধিকারের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রশ্ন: করে সম্পত্তির অধিকারের বিষয়টিকে মৌলিক অধিকারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়?
উঃ ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে ৪৪ তম সংবিধান সংশোধনকালে সম্পত্তি অধিকারের বিষয়টিকে মৌলিক অধিকারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে সাম্যের অধিকার সম্বন্ধীয় ধারাগুলির মধ্যে কোন্টি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ?
উঃ ভারতীয় সংবিধানে সাম্যের অধিকার সম্বন্ধীয় ধারা হল- ১৪-১৮ নং ধারা। এর মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হল ১৪ নং ধারাটি, যাতে ভারত ভূখণ্ডের মধ্যে কোনো ব্যক্তিকে আইনের দৃষ্টিতে সমানাধিকার ও আইনের দ্বারা সংরক্ষণের কথা বল হয়েছে।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে কাদের জন্য বিশেষ সুযোগসুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে?"
উঃ ভারতীয় সংবিধানে তপশিলি জাতি বা Scheduled Castes', তপশিলি উপজাতি বা 'Scheduled Tribes এবং অন্যান্য অনুন্নত শ্রেণি বা Other Backward Classes' (OBC)-এর জন্য বিশেষ সুযোগসুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রশ্ন: সংবিধানের ৩৮ নং ধারায় বর্ণিত আর্থসামাজিক বিষয়ে দু নীতি উল্লেখ করো।
উঃ সংবিধানের ৩৮ নং ধারায় বর্ণিত আর্থসামাজিক বিষয়ের দুটি উল্লেখযোগ্য নীতি হল--
উঃ (i) সমাজের বস্তুগত সম্পদের উপর একচেটিয়া মালিকানা প্রতিহত করে তার সুষম বণ্টনের ব্যবস্থা করা।
(ii) প্রতিটি শিশুকে শারীরিক ও নৈতিক শোষণের হাত থেকে রক্ষ করা ও তারা যাতে সুস্বাস্থ্য, সম্মান ও স্বাধীনতার অধিকারী হতে পারে, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া।
প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক কর্তব্যের সংখ্যা কত?
উঃ ভারতীয় সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক কর্তব্যের সংখ্যা ১১টি।