Showing posts with label Education. Show all posts
Showing posts with label Education. Show all posts

Thursday, 23 December 2021

HS শিক্ষাবিজ্ঞান( Education ) বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন অধ্যায় থেকে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

Leave a Comment

 

    শিক্ষাবিজ্ঞান(Education )


             Class xii (wbchse)


বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন (১৯৪৮-৪৯ খ্রিস্টাব্দ)


অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (SAQ)     (মান-1)


প্রশ্ন ১: কার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠিত হয়েছিল?

উঃ ড. সর্বপল্লী রাধাকৃয়াণের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠিত হয়েছিল।


প্রশ্ন ২: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন গঠিত হয় কত খ্রিস্টাব্দে?

উঃ ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়েছিল।


প্রশ্ন ৩: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের অপর নাম কী? 

উঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের অপর নাম রাধাকৃষ্ণন কমিশন (১৯৪৮-৪৯)।


প্রশ্ন ৪: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের সম্পাদক কে ছিলেন? 

উঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের সম্পাদক ছিলেন ড. নির্মল কুমার সিদ্ধান্ত। 


 প্রশ্ন ৫: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের সভাপতি কে ছিলেন?

উঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের সভাপতি ছিলেন ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান।


  প্রশ্ন ৬: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের সদস্য সংখ্যা কত ছিল?

উঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের মোট সদস্য ছিল ১০ জন। 


 প্রশ্ন ৭:  বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের ভারতীয় সদস্য কারা ছিলেন? 

উঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনে ৭ জন ভারতীয় সদস্য ছিলেন। এরা হলেন- ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ, ড. নির্মল কুমার সিদ্ধান্ত, ড. মেঘনাদ সাহা, ড. এ লক্ষ্মণস্বামী মুদালিয়র, ড. তারাচাঁদ, ড. জাকির হোসেন এবং ড. কমল নারায়ণ বহল। 


 প্রশ্ন ৮: রাধাকৃয়াণ কমিশনের / বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের বিদেশি সদস্য কারা ছিলেন?

উঃ রাধাকৃষাণ কমিশনে বা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনে ৩ জন বিদেশি সদস্য ছিলেন। এঁরা হলেন- (i) ড. জেমস এফ ডাফ, (ii) ড আর্থার ই মরগ্যান এবং (iii) ড. জন টিগার্ট।


 প্রশ্ন ৯: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টে কতগুলি সুপারিশ করা হয়েছিল? 

উ: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টে ২০৭টি সুপারিশ করা হয়েছিল।


 প্রশ্ন ১০: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের প্রতিবেদনটি কত পৃষ্ঠার ছিল?

 উ: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের প্রতিবেদনটি ছিল ৭৪৭ পৃষ্ঠার। 


 প্রশ্ন ১১: কত খ্রিস্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন তার রিপোর্ট জমা দেয়?

উঃ ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন তার রিপোর্ট জমা দেয়।


 প্রশ্ন ১২: বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের উচ্চশিক্ষার একটি লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য উল্লেখ করো।

উঃ বিশ্ববিদ্যালয় কমিশনের উচ্চশিক্ষার একটি লক্ষ্য হল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা হবে এমন যা দেশের রাজনীতি, সমাজ, প্রশাসন, শিল্প-বাণিজ্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে নেতৃত্বদানের যোগ্যতা অর্জনে শিক্ষার্থীদের সাহায্য করবে।


প্রশ্ন ১৩: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন ক-টি ধারায় শিক্ষার পর্যালোচনা করে? 

উঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন আটটি ধারায় শিক্ষার লক্ষ্য, পর্যালোচনা করে। সেই ধারাগুলি হল- (i) New India বা নবভারত, (ii) Democracry বা গণতন্ত্র, (iii) Justice বা ন্যায়বিচার (iv) Liberty বা স্বাধীনতা, (v) Equality সাম্য, (vi) Fraternity বা ভ্রাতৃত্ববোধ, (vii) Uninterrupted Continuity of Indian Culture বা ভারতীয় সংস্কৃতি অবিরাম ধারা এবং (viii)  History of India বা ভারতে ইতিহাস।


প্রশ্ন ১৪: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন কীসের উপর ভিত্তি করে উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে?

উঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন চারটি সমাজদর্শনের উপর ভিত্তি করে উচ্চশিক্ষার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। 

সেগুলি হল-- (i) সামাজিক ন্যায়বিচার, (ii) স্বাধীনতা, (iii) সমানাধিকার এবং (iv) সৌভ্রাতৃত্ববোধ।


প্রশ্ন ১৫: বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গুণগত দিক থেকে ক-টি ভাগে ভাগ করা হয় ও কী কী?

উঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গুণগত দিক থেকে চার ভাগে ভাগ করেছে। এগুলি হল-- প্রফেসর, রিডার, লেকচারার, ইন্সস্ট্রাকটর। এ ছাড়াও থাকবে কিছু সংখ্যক গবেষক ও শিক্ষার্থী।


প্রশ্ন ১৬: উচ্চশিক্ষায় টিউটোরিয়াল ক্লাসের ব্যবস্থা কে. কেন চালু করতে বলেছিলেন?

উঃ রাধাকৃষ্ণাণ কমিশন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বন্ধন সুদৃঢ় করার জন্য উচ্চশিক্ষায় টিউটোরিয়াল ক্লাস চালু করার নির্দেশ দিয়েছিল।


প্রশ্ন ১৭: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনে উল্লিখিত যে-কোনো দুই ধরনের পেশাগত শিক্ষার নাম লেখো।


উঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনে উল্লিখিত পেশাগত শিক্ষাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- (i) কৃষিবিদ্যা শিক্ষা এবং (ii) চিকিৎসাশাস্ত্র শিক্ষা। 


প্রশ্ন ১৮: কৃষিবিদ্যা শিক্ষার বিকাশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের কী কী সুপারিশ ছিল? 

উঃ কৃষিবিদ্যা শিক্ষার বিকাশে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন গ্রামাঞ্চলে গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় ও কৃষি কলেজ গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছিল।


প্রশ্ন ১৯: কোন্ কমিশন গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় গঠন করার সুপারিশ করে?

উঃ গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় গঠন করার সুপারিশ করে রাধাকৃষ্ণণ কমিশন (১৯৪৮-৪৯ খ্রি.)।


প্রশ্ন ২০: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে শিক্ষার্থীদের ক-টি ভাষার সঙ্গে পরিচয়ের কথা বলেছিল?

উঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন উচ্চমাধ্যমিক ও বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে শিক্ষার্থীদের তিনটি ভাষার সঙ্গে পরিচিতির কথা বলেছিল। সেই তিনটি ভাষাহল মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা, রাষ্ট্রীয় ভাষা (হিন্দি) এবং ইংরেজি।


প্রশ্ন ২১: কোন্ কমিশন কী কারণে ছাত্রদের Students' Union গঠনের অধিকার দিয়েছিল? 

উঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন শিক্ষার্থীদের চরিত্রগঠন ও নেতৃত্বের গুণাবলির বিকাশের জন্য ছাত্র সংগঠন বা Students' Union গঠনের কথা বলেছিল।


প্রশ্ন ২২: কোন্ কমিশন NCC-এর প্রশিক্ষণের উপর জোর দিয়েছিল?

উঃ রাধাকৃষ্ণাণ কমিশন NCC-এর প্রশিক্ষণের উপর জোর দিয়েছিল। 


প্রশ্ন ২৩:  NCC- এর পুরো কথাটি কী?

উঃ  NCC-এর পুরো কথাটি হল – National Cadet Corps. 


প্রশ্ন ২৪: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন নারীশিক্ষার পাঠ্যক্রমে কী বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছিল?

উঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন নারীশিক্ষার পাঠ্যক্রমে গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ও পরিবার পরিচালনার শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিল।


প্রশ্ন ২৫: UGC কী?

উঃ  ভারতের সকল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যয়ভার বহনের জন্য যে কমিশনের হাতে অর্থবণ্টনের দায়িত্বভার ন্যস্ত থাকে, সেই কমিশনই UGC বা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন নামে পরিচিত।


প্রশ্ন ২৬:  UGC কথাটি কোন্ শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে 

যুক্ত? উঃ  UGC কথাটি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত।


প্রশ্ন ২৭: UGC-এর পূর্ণরূপ কী?

উঃ  UGC-এর পূর্ণ রূপ হল University Grant Commission. 


প্রশ্ন ২৮: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন গ্রামীণ শিক্ষাক্ষেত্রে কোন্ কোন্ স্তরের উল্লেখ করেছে?

উঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন গ্রামীণ শিক্ষাক্ষেত্রে চারটি স্তরের উল্লেখ করেছে। যথা- প্রাথমিক শিক্ষা, মাধ্যমিক শিক্ষা, কলেজীয় শিক্ষা এবং বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের শিক্ষা। 


প্রশ্ন ২৯: বিদ্যালয়ে মনীষীদের জীবনীপাঠ প্রথম কোন্ কমিশন সুপারিশ করেছিল?

 উঃ বিদ্যালয়ে মনীষীদের জীবনীপাঠের প্রথম সুপারিশ করেছিল রাধাকৃষ্ণাণ কমিশন (১৯৪৮-৪৯ খ্রি.)।


প্রশ্ন ৩০:  শ্রীনিকেতন কী ধরনের প্রতিষ্ঠান?

উঃ শ্রীনিকেতন হল পশ্চিমবঙ্গের Rural Institute বা অন্যতম একটি গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়।


প্রশ্ন ৩১: শ্রীনিকেতন কে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন? 

 উঃ শ্রীনিকেতন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।


প্রশ্ন ৩২:  NCRHE-এর পুরো কথাটি কী?

উঃ NCRHE-এর পুরো কথাটি হল- National Council for Rural Higher Education I


প্রশ্ন ৩৩:  বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন যে গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছিল, তার নাম কী? 

উঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন যে গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপন করেছিল তার নাম- National Council for Rural Higher Education বা গ্রামীণ উচ্চশিক্ষা জাতীয় পর্ষদ।


প্রশ্ন ৩৪: রাধাকৃয়াণের গ্রামীণ শিক্ষা পরিকল্পনা কার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল?

উঃ রাধাকৃষ্ণাণের গ্রামীণ শিক্ষার পরিকল্পনা ডেনমার্কের জনতা কলেজ, গান্ধিজির বুনিয়াদি শিক্ষা, রবীন্দ্রনাথের পল্লিসমাজ ও শ্রীনিকেতনের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল।


প্রশ্ন ৩৫: রাধাকৃষ্ণানের গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক স্তরের মেয়াদ কত বছরের?

 উঃ রাধাকৃষ্ণাণের গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক স্তরের মেয়াদ ছিল ৪ বছরের নিম্ন ও উচ্চ বুনিয়াদি শিক্ষা।


 প্রশ্ন ৩৬:  গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় পরিকল্পনায় মাধ্যমিক স্তর কত বছরের?

উঃ গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় পরিকল্পনায় মাধ্যমিক স্তর তিন বছরের। 


প্রশ্ন ৩৭:  রাধাকৃষ্ণাণ কমিশনের কলেজীয় শিক্ষার মেয়াদ কত বছর ছিল?

উঃ রাধাকৃষ্ণাণ কমিশনের কলেজীয় শিক্ষার মেয়াদ ছিল ৩ বছর। 


প্রশ্ন ৩৮: গ্রামীণ উচ্চশিক্ষা পরিষদ কবে গঠিত হয়? 

উঃ  গ্রামীণ উচ্চশিক্ষা পরিষদ গঠিত হয় ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে।


প্রশ্ন ৩৯: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনে কোথায় গ্রামীণ প্রতিষ্ঠানে তিন বছরের শিক্ষক-শিক্ষণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়?

উঃ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনে গুজরাট গ্রামীণ প্রতিষ্ঠানে তিন বছরের শিক্ষক-শিক্ষণের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।


প্রশ্ন ৪০: গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি কর্মসূচি সম্পর্কে লেখো। 

উঃ গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসূচির অন্তর্গত দুটি বিষয় হল

(i) সম্পূর্ণ আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা এবং (ii) গ্রামীণ পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্কিত শিক্ষা, শিল্প-সংস্কৃতি, অর্থনীতি ও সমাজদর্শন সম্বন্ধে গবেষণার ব্যবস্থা করা।


 প্রশ্ন ৪১: কোন্ কোন্ বিশ্ববিদ্যালয়ের অসুবিধার্থে সাম্প্রদায়িক সনদ বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন?

উঃ বারাণসী বিশ্ববিদ্যালয় ও আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অসুবিধার জন্য সাম্প্রদায়িক সনদ বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশন।


প্রশ্ন ৪২: DPI এর সম্পূর্ণ নাম কী?

উঃ DPI এর সম্পূর্ণ নাম হল 'Director of Public Instruction' ।


প্রশ্ন ৪৩:  NCRHE কোন উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়?

উঃ ভারত সরকারকে গ্রামীণ উচ্চশিক্ষার সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে পরামর্শদানের উদ্দেশ্যে 1956 খ্রিস্টাব্দে NCRHE (National Council for RURAL Higher Education) গঠন করা হয়।


প্রশ্ন ৪৪: ভারতে প্রথম কবে জাতীয় শিক্ষার আন্দোলন হয়েছিল? 

উঃ ভারতে ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম জাতীয় শিক্ষার আন্দোলন হয়েছিল।


প্রশ্ন ৪৫: ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী কে ছিলেন?

 উঃ ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন আবুল কালাম আজাদ।


<<<<<<<<<<<<<<<<<<<>>>>>>>>>>>>>>>>

Read More

Tuesday, 21 December 2021

HS Education || ভারতীয় সংবিধানে শিক্ষা || সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

Leave a Comment

    শিক্ষাবিজ্ঞান (Education)

        Class xii (wbchse)


ভারতীয় সংবিধানে শিক্ষার ধারা    


অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (মান-1)

প্রশ্ন: সংবিধানে ভারতকে কীরূপ রাষ্ট্র বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে?

উঃ সংবিধানে ভারতকে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক, সাধারণতন্ত্র রাষ্ট্র বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। 


প্রশ্ন: গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি কী?

উঃ  গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি হল স্বাধীনতা, সাম্য, সৌভ্রাতৃত্ববোধ ও ন্যায়বিচার।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের খসড়া কত খ্রিস্টাব্দে তৈরি হয়?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের খসড়া ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে তৈরি হয়।


প্রশ্ন: কার সভাপতিত্বে ভারতীয় সংবিধানের খসড়া রচিত হয়েছিল? অথবা, ভারতীয় সংবিধানের জনক কে? 

উঃ ড. বি. আর. আম্বেদকরের সভাপতিত্বে ভারতীয় সংবিধানের খসড়া রচিত হয়েছিল। 


প্রশ্ন: ভারতীয় গণপরিষদ কবে সংবিধানের খসড়াটি গ্রহণ করেছিল?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের খসড়াটি গণপরিষদ ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ নভেম্বর গ্রহণ করেছিল।


প্রশ্ন:  ভারতীয় সংবিধান কার্যকরী হয় কবে?

উঃ ভারতীয় সংবিধান কার্যকরী হয় ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে উল্লিখিত মৌলিক অধিকারগুলি কী? 

উঃ ভারতীয় সংবিধানে উল্লিখিত মৌলিক অধিকারগুলি হল- 

(i) সাম্যের অধিকার, (ii) স্বাধীনতার অধিকার, (iii) শোষণের বিরুদ্ধে অধিকার, (iv) ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার, (v) সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা বিষয়ক অধিকার, (vi)  ৬ থেকে ১৪ বছরের বালকবালিকাদের অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার, (vii) সাংবিধানিক প্রতিকারের অধিকার।


 প্রশ্ন: কততম সংশোধনীতে ভারতীয় সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষ' ও ‘সমাজতান্ত্রিক’ কথা দুটি যোগ করা হয়?

উঃ ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে ৪২ তম সংশোধনীতে ভারতীয় সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও ‘সমাজতান্ত্রিক' কথা দুটি যোগ করা হয়।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের দুটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য লেখো।

উঃ  ভারতীয় সংবিধানের দুটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল—  

(i) এটি বিশ্বের বৃহত্তম লিখিত সংবিধান এবং (ii) এতে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি গৃহীত হয়েছে।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধান রচনার সময় কতগুলি অধ্যায়, ধারা ও তপশিল সংবলিত ছিল?

উঃ ভারতীয় সংবিধান রচনার সময় মোট ২২টি অধ্যায়, ৩৯৫টি ধারা ও ৮টি তপশিল সংবলিত ছিল।


প্রশ্ন: কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা বন্টনের ক্ষেত্রে কতগুলি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে? সেগুলি কী? 

উঃ  কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা বন্টনের ক্ষেত্রে মোট তিনটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। সেগুলি হল— (i) কেন্দ্রীয় তালিকা,  (ii) রাজ্য তালিকা ও (iii) যুগ্ম তালিকা। 


প্রশ্ন: কেন্দ্রীয় তালিকা ইউনিয়ন লিস্ট কী?

উঃ  যে সকল বিষয়ে আইন প্রণয়নের অধিকার কেন্দ্রীয় সরকারের তাকে কেন্দ্রীয় তালিকা বা ইউনিয়ন লিস্ট বা লিস্ট ১ বলে।


প্রশ্ন: রাজ্য তালিকা বা স্টেট লিস্ট বা লিস্ট 2 কী?

উঃ যে সকল বিষয়ে আইন প্রণয়নের অধিকার রাজ্য সরকারের, তাকে রাজ্য তালিকা বা স্টেট লিস্ট বা লিস্ট 2 বলে।


প্রশ্ন: যুগ্ম তালিকা বা কনকারেন্ট লিস্ট বা লিস্ট ৩ কী?

উঃ যে সকল বিষয়ে আইন প্রণয়নের অধিকার কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের উভয়ের, তাকে যুগ্ম তালিকা বা কনকারেন্ট লিস্ট বা লিস্ট ৩ বলে।


প্রশ্ন: কেন্দ্রীয় তালিকায় কতগুলি বিষয় এবং রাজ্য তালিকায় কতগুলি বিষয় আছে?

উঃ কেন্দ্রীয় তালিকায় 97 টি বিষয় এবং রাজ্য তালিকায় 62 টি বিষয় আছে।


প্রশ্ন: শিক্ষার বিষয়টি কবে ভারতীয় সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত হয়?

উঃ শিক্ষার বিষয়টি ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ডিসেম্বর সংবিধানের ৪২তম সংশোধনীতে কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ তালিকাভুক্ত হয়।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কোন্ কোন্ ধারায় শিক্ষাসংক্রান্ত আলোচনা রয়েছে?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ২৮, ৩০, ৪৫, ৪৬, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৩৫০ প্রভৃতি ধারায় শিক্ষাসংক্রান্ত আলোচনা রয়েছে।


 প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে শিক্ষাসংক্রান্ত যে কোনো দুটি ধারা বিবৃত করো।

উঃ ভারতীয় সংবিধানে শিক্ষাসংক্রান্ত দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা হল--

 i) ২৮নং ধারা (Article 28):  সংবিধানের এই ধারায় বলা হয়েছে যে, রাজ্য সরকারের আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোনোভাবেই ধর্মীয় শিক্ষা বা ধর্মীয় নির্দেশনা দেওয়া যাবে না।

ii) ৬৪নং ধারা (Article 64): সংবিধানের এই ধারায় বলা হয়েছে যে, পার্লামেন্ট কর্তৃক ঘোষিত ভারত সরকারের আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত বিজ্ঞানমূলক ও প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠানগুলি জাতীয় মর্যাদা লাভ করবে।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৩০ (১) নং উপধারায় কী উল্লেখ আছে?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৩০(১) নং উপধারায় বলা হয়েছে যে, সরকার কর্তৃক পরিচালিত বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্ম, বর্ণ বা ভাষার পার্থক্য শিক্ষার্থীদের প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত করবে না।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে নির্দেশক নীতির ৪৫নং ধারার বিষয়বস্তু কী? অথবা, ভারতীয় সংবিধানের ৪৫নং ধারার মূল বক্তব্য কী?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪৫নং ধারায় বলা হয়েছে যে, সংবিধান কার্যকরী হওয়ার ১০ বছরের মধ্যে রাষ্ট্র ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত দেশের সকল শিশুদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করবে।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৪৬নং ধারাতে কী উল্লেখ আছে?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪৬নং ধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রকে সমাজের দুর্বল শ্রেণি বিশেষ করে তপশিলি জাতি ও উপজাতির মানুষদের জন্য শিক্ষাগত ও আর্থিক সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে এবং সকল প্রকার সামাজিক অন্যায় ও শোষণ থেকে এই সম্প্রদায়ের মানুষদের রক্ষা করার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।


প্রশ্ন: 21 ভারতীয় সংবিধানের ৩৫০ (ক) ধারায় কী বলা হয়েছে?

উঃ  ভারতীয় সংবিধানের ৩৫০ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিশুরা প্রাথমিক স্তরে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারবে।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৩৫১ ধারায় কী বলা হয়েছে?

 উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৩৫১ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, হিন্দি ভাষার উন্নতি ও বিস্তার ঘটানো ভারত সরকারের অন্যতম কর্তব্য।


প্রশ্ন: করে, কততম সংশোধনী বিলে সর্বসম্মতভাবে তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে?

উঃ ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ ডিসেম্বর, ৬২তম সংবিধান সংশোধনী বিলে সর্বসম্মতভাবে তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। 


প্রশ্ন: সংবিধানের ৯৩তম সংশোধনী বিল কত খ্রিস্টাব্দে পাস হয় এবং এই সংশোধনী বিলের বিষয়বস্তু কী ছিল?

উঃ সংবিধানের ৯৩তম সংশোধনী বিল ২০০১ খ্রিস্টাব্দে পাস হয়। এতে বলা হয়, ভারত রাষ্ট্র প্রতিটি ৬ বছর থেকে ১৪ বছর বয়সি শিশুদের অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করবে।


প্রশ্ন: বাধ্যতামূলক শিক্ষা' বলতে কী বোঝো? 

উঃ সংবিধানের 45 নং ধারা অনুযায়ী 14 বছর বয়স পর্যন্ত সকল শিশুকে অবশ্যই শিক্ষার আঙ্গিনায় আনাকে বাধ্যতামূলক শিক্ষা বলে।


 প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় শিশুদের জন্য অবৈতনিক বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের কথা বলা হয়েছে?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪৫ নম্বর ধারায় শিশুদের জন্য অবৈতনিক বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের কথা বলা হয়েছে।


প্রশ্ন: ভারতের সংবিধানের শিশুদের বাধ্যতামূলক শিক্ষা সংক্রান্ত 45 নং ধারাটি বিবৃত করো। 

অথবা,  ভারতীয় সংবিধানে নির্দেশক নীতির 45 নং ধারার বিষয়বস্তু কী?

উঃ ভারতের সংবিধানের 45 নং ধারায় শিশুদের বাধ্যতামূলক শিক্ষা সম্পর্কে বলা হয়েছে-- সংবিধান প্রণয়নের 10 বছরের মধ্যে সব শিশুদের জন্য 14 বছর বয়স সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অবৈতনিক, বাধ্যতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করবে রাষ্ট্র।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কততম ধারায় সকলের জন্য সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে?"

উঃ  ভারতীয় সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ের (Part III) ১৪, ১৫ এবং ১৬নং ধারায় (Article) সকলের জন্য সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে সকলের জন্য সমানাধিকার বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উঃ  ভারতীয় সংবিধানে সকলের জন্য সমানাধিকার বলতে বোঝানো হয়েছে যে, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে আইনের চোখে সকলে সমান। এমনকি সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও এই সমতাবিধান করা হবে বলে ভারতীয় সংবিধানে বলা হয়েছিল।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ১৪নং ধারায় কী বলা হয়েছে?” 

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৪নং ধারায় বলা হয়েছে, ভারতে অবস্থিত কোনো ভারতীয় নাগরিককে রাষ্ট্র আইনের দ্বারা সমানভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে না। 


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় নারীশিক্ষার কথা বলা হয়েছে? 

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৫ ও ১৬নং ধারায় নারীশিক্ষার কথা বলা হয়েছে। 


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ১৫নং ধারায় নাগরিকদের সমানাধিকার প্রসঙ্গে কী বলা হয়েছে?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৫নং ধারায় বলা হয়েছে যে,

(i)  জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, জন্মস্থান, লিঙ্গ প্রভৃতি বিষয় কখনো নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্যের কারণ হবে না।

(ii) সাধারণের জন্য ব্যবহৃত স্নানাগার, কুয়ো, রাস্তাঘাট, পান্থশালা, রেস্তোরাঁ প্রভৃতি সকলের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। 

(iii) কখনো কখনো জনস্বার্থ রক্ষার্থে সরকার কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে; আর নারী ও শিশুদের জন্য কিছু বিশেষাধিকার সংরক্ষিত হতে পারে।


প্রশ্ন: শিক্ষায় সমসুযোগ বলতে কী বোঝায়? 

উঃ জাতি-ধর্ম-বর্ণ অর্থ নির্বিশেষে সকলের শিক্ষায় সমান অধিকারকে শিক্ষায় সমসুযোগ বলে।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় শিক্ষায় সমসুযোগের কথা বলা হয়েছে? 

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ২৯ এবং ৪৫ নম্বর ধারায় শিক্ষায় সমসুযোগের কথা বলা হয়েছে।


প্রশ্ন: নারীদের সুযোগসুবিধার কথা সংবিধানের কত নং ধারায় বলা হয়েছে?

উঃ  নারীদের সুযোগসুবিধা প্রদান ও শিক্ষাদানের কথা সংবিধানের ১৫ ও ১৬নং ধারায় বলা হয়েছে। 


প্রশ্ন: জাতীয় নারীশিক্ষা পরিষদ কত খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয়?

উঃ জাতীয় নারীশিক্ষা পর্ষদ গঠিত হয় ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে।


প্রশ্ন: মেয়েদের জন্য পৃথক কারিগরি বিদ্যালয় গঠনের কথা কে ঘোষণা করেন?

উঃ শ্রীমতী দুর্গাবাই দেশমুখ-এর নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় নারীশিক্ষা পরিষদ ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে নারীদের জন্য পৃথক কারিগরি বিদ্যালয় গঠনের কথা ঘোষণা করেন।


প্রশ্ন: শ্রীমতী হংস মেহেতা কমিটি কবে, কেন গঠিত হয়?

উঃ  ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দের ১০ মে, মেয়েদের পৃথক পাঠ্যক্রমের সমস্যা সমাধানের জন্য জাতীয় নারী শিক্ষা পরিষদের নেত্রী শ্রীমতি হংস মেহেতা একটি শিক্ষা কমিটি গঠন করেন।


প্রশ্ন: ভক্তবৎসলম কমিটি করে ও কেন গঠিত হয়?

উঃ ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে জনসাধারণের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কীভাবে গ্রামাঞ্চলে নারীশিক্ষার প্রসার ঘটানো যায়, সে সম্পর্কে আলোচনার জন্য ভক্তবৎসলম কমিটি গঠিত হয়।


প্রশ্ন: গ্রামাঞ্চলে নারীদের জন্য Teachers Training College গড়ে তোলার কথা কে বলেছিল?

 উঃ গ্রামাণ্ডলে নারীদের জন্য Teachers Training College গড়ে তোলার কথা বলেছিল শ্রীভক্তবৎসলম্ কমিটি।


প্রশ্ন: ভারতে বর্তমান নারীশিক্ষার হার কত? 

উঃ ভারতে বর্তমান নারীশিক্ষার হার শতকরা ৬৫.৪৬ (২০১১ খ্রিস্টাব্দ)


প্রশ্ন: নারীশিক্ষা বিস্তারের দুটি উপায় লেখো।

উঃ নারীশিক্ষা বিস্তারের জন্য- (i) শিক্ষিকার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে, (ii) সদর্থক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে হবে।


প্রশ্ন: 'The Education' গ্রন্থটি কার লেখা? এর বিষয়বস্তু কী?

: 'The Education' গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন গান্ধিজি। এই গ্রন্থে গান্ধিজি ভারতের সামাজিক ও জাতীয় বিকাশে নারীদের শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করেছেন।


 প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৪১ নং ধারায় কী বলা হয়েছে?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪১ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্র তার আর্থিক সামর্থ্য ও উন্নয়নের সীমার মধ্যে সব নাগরিকের জন্য কর্ম ও শিক্ষার ব্যবস্থা করবে এবং সেইসঙ্গে বেকার যুবক, বৃদ্ধ, অসুস্থ ও অক্ষম মানুষদের সরকারি সাহায্য দান করবে।


প্রশ্ন: ভারতের সংবিধান অনুযায়ী তপশিলি জাতি কাদের বলা হয়? 

উঃ ভারতের সংবিধান অনুযায়ী আর্থিক ও সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া অনুন্নত ও দুর্বল শ্রেণির মানুষকে তপশিলি জাতি বলা হয়। যেমন— কামার, ধোপা প্রভৃতি। 


প্রশ্ন: আমাদের দেশে ‘তপশিলি জাতি হিসেবে কারা পরিগণিত?

 উঃ আমাদের দেশ ভারতবর্ষে হিন্দুধর্মের রক্ষণশীলদের কাছে যারা 'অস্পৃশ্য' বলে পরিচিত ছিল এবং বর্তমানে ভারতীয় সংবিধান অনুসারে সামাজিক দিক থেকে যারা সুবিধাহীন শ্রেণি, তারাই ‘তপশিলি জাতি' বলে পরিগণিত।


প্রশ্ন: ভারতবর্ষে কাদের ‘তপশিলি উপজাতি' বলা হয়? 

উঃ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির নির্দেশে বিভিন্ন রাজ্যের যেসব অনগ্রসর উপজাতির নাম নথিভুক্ত করা হয়, তাদের তপশিলি উপজাতি বলা হয়। যেমন—সাঁওতাল, কোল, মুন্ডা প্রভৃতি।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের শিক্ষার বিষয়ে বলা হয়েছে? 

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৫ এবং ৪৬ নং ধারায় তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের শিক্ষার বিষয়ে বলা হয়েছে।


প্রশ্ন: কার সভাপতিত্বে তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিদের শিক্ষার জন্য কমিটি গঠিত হয়েছিল?

উঃ ইউ এন ধেবরের সভাপতিত্বে তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিদের শিক্ষার জন্য কমিটি গঠিত হয়েছিল।


প্রশ্ন: সংখ্যালঘু' কারা?

উঃ ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের কার্লেকর কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী হিন্দু সমাজে একদা উচ্চবর্ণের মানুষের দ্বারা অত্যাচারিত শ্রেণির মানুষ, যারা পিছিয়ে যেতে যেতে একেবারে অনুন্নত শ্রেণিতে পরিণত হয়েছে, তাদের বলা হয় সংখ্যালঘু। যেমন ছোটো কারিগর, পশুপালনকারী বা শিকারি সম্প্রদায়।


প্রশ্ন: সংখ্যালঘুদের শিক্ষাসংক্রান্ত সমানাধিকারের বিষয়টি ভারতীয় সংবিধানের কোন ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে।

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ২৯ নং ধারায় সংখ্যালঘুদের শিক্ষাসংক্রান্ত সমানাধিকারের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। 


প্রশ্ন: করে সম্পত্তির অধিকারের বিষয়টিকে মৌলিক অধিকারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়?

উঃ ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে ৪৪ তম সংবিধান সংশোধনকালে সম্পত্তি অধিকারের বিষয়টিকে মৌলিক অধিকারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।


প্রশ্ন:  ভারতীয় সংবিধানে সাম্যের অধিকার সম্বন্ধীয় ধারাগুলির মধ্যে কোন্‌টি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ?

উঃ  ভারতীয় সংবিধানে সাম্যের অধিকার সম্বন্ধীয় ধারা হল- ১৪-১৮ নং ধারা। এর মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হল ১৪ নং ধারাটি, যাতে ভারত ভূখণ্ডের মধ্যে কোনো ব্যক্তিকে আইনের দৃষ্টিতে সমানাধিকার ও আইনের দ্বারা সংরক্ষণের কথা বল হয়েছে।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে কাদের জন্য বিশেষ সুযোগসুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে?" 

উঃ ভারতীয় সংবিধানে তপশিলি জাতি বা Scheduled Castes', তপশিলি উপজাতি বা 'Scheduled Tribes এবং অন্যান্য অনুন্নত শ্রেণি বা Other Backward Classes' (OBC)-এর জন্য বিশেষ সুযোগসুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।


প্রশ্ন: সংবিধানের ৩৮ নং ধারায় বর্ণিত আর্থসামাজিক বিষয়ে দু নীতি উল্লেখ করো।

উঃ সংবিধানের ৩৮ নং ধারায় বর্ণিত আর্থসামাজিক বিষয়ের দুটি উল্লেখযোগ্য নীতি হল--

উঃ (i) সমাজের বস্তুগত সম্পদের উপর একচেটিয়া মালিকানা প্রতিহত করে তার সুষম বণ্টনের ব্যবস্থা করা। 

(ii) প্রতিটি শিশুকে শারীরিক ও নৈতিক শোষণের হাত থেকে রক্ষ করা ও তারা যাতে সুস্বাস্থ্য, সম্মান ও স্বাধীনতার অধিকারী হতে পারে, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক কর্তব্যের সংখ্যা কত? 

উঃ ভারতীয় সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক কর্তব্যের সংখ্যা ১১টি। 


 প্রশ্ন: কততম সংশোধনীতে ভারতীয় সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষ' ও ‘সমাজতান্ত্রিক’ কথা দুটি যোগ করা হয়?

উঃ ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে ৪২ তম সংশোধনীতে ভারতীয় সংবিধানে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও ‘সমাজতান্ত্রিক' কথা দুটি যোগ করা হয়।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের দুটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য লেখো।

উঃ  ভারতীয় সংবিধানের দুটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল—  

(i) এটি বিশ্বের বৃহত্তম লিখিত সংবিধান এবং (ii) এতে ধর্মনিরপেক্ষতার নীতি গৃহীত হয়েছে।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধান রচনার সময় কতগুলি অধ্যায়, ধারা ও তপশিল সংবলিত ছিল?

উঃ ভারতীয় সংবিধান রচনার সময় মোট ২২টি অধ্যায়, ৩৯৫টি ধারা ও ৮টি তপশিল সংবলিত ছিল।


প্রশ্ন: কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা বন্টনের ক্ষেত্রে কতগুলি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে? সেগুলি কী? 

উঃ  কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ক্ষমতা বন্টনের ক্ষেত্রে মোট তিনটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। সেগুলি হল— (i) কেন্দ্রীয় তালিকা,  (ii) রাজ্য তালিকা ও (iii) যুগ্ম তালিকা। 


প্রশ্ন: কেন্দ্রীয় তালিকা ইউনিয়ন লিস্ট কী?

উঃ  যে সকল বিষয়ে আইন প্রণয়নের অধিকার কেন্দ্রীয় সরকারের তাকে কেন্দ্রীয় তালিকা বা ইউনিয়ন লিস্ট বা লিস্ট ১ বলে।


প্রশ্ন: রাজ্য তালিকা বা স্টেট লিস্ট বা লিস্ট 2 কী?

উঃ যে সকল বিষয়ে আইন প্রণয়নের অধিকার রাজ্য সরকারের, তাকে রাজ্য তালিকা বা স্টেট লিস্ট বা লিস্ট 2 বলে।


প্রশ্ন: যুগ্ম তালিকা বা কনকারেন্ট লিস্ট বা লিস্ট ৩ কী?

উঃ যে সকল বিষয়ে আইন প্রণয়নের অধিকার কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের উভয়ের, তাকে যুগ্ম তালিকা বা কনকারেন্ট লিস্ট বা লিস্ট ৩ বলে।


প্রশ্ন: কেন্দ্রীয় তালিকায় কতগুলি বিষয় এবং রাজ্য তালিকায় কতগুলি বিষয় আছে?

উঃ কেন্দ্রীয় তালিকায় 97 টি বিষয় এবং রাজ্য তালিকায় 62 টি বিষয় আছে।


প্রশ্ন: শিক্ষার বিষয়টি কবে ভারতীয় সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত হয়?

উঃ শিক্ষার বিষয়টি ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ডিসেম্বর সংবিধানের ৪২তম সংশোধনীতে কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ তালিকাভুক্ত হয়।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কোন্ কোন্ ধারায় শিক্ষাসংক্রান্ত আলোচনা রয়েছে?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ২৮, ৩০, ৪৫, ৪৬, ৬২, ৬৩, ৬৪, ৩৫০ প্রভৃতি ধারায় শিক্ষাসংক্রান্ত আলোচনা রয়েছে।


 প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে শিক্ষাসংক্রান্ত যে কোনো দুটি ধারা বিবৃত করো।

উঃ ভারতীয় সংবিধানে শিক্ষাসংক্রান্ত দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা হল--

 i) ২৮নং ধারা (Article 28):  সংবিধানের এই ধারায় বলা হয়েছে যে, রাজ্য সরকারের আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোনোভাবেই ধর্মীয় শিক্ষা বা ধর্মীয় নির্দেশনা দেওয়া যাবে না।

ii) ৬৪নং ধারা (Article 64): সংবিধানের এই ধারায় বলা হয়েছে যে, পার্লামেন্ট কর্তৃক ঘোষিত ভারত সরকারের আর্থিক সাহায্যপ্রাপ্ত বিজ্ঞানমূলক ও প্রযুক্তিগত প্রতিষ্ঠানগুলি জাতীয় মর্যাদা লাভ করবে।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৩০ (১) নং উপধারায় কী উল্লেখ আছে?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৩০(১) নং উপধারায় বলা হয়েছে যে, সরকার কর্তৃক পরিচালিত বা সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্ম, বর্ণ বা ভাষার পার্থক্য শিক্ষার্থীদের প্রবেশাধিকার থেকে বঞ্চিত করবে না।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে নির্দেশক নীতির ৪৫নং ধারার বিষয়বস্তু কী? অথবা, ভারতীয় সংবিধানের ৪৫নং ধারার মূল বক্তব্য কী?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪৫নং ধারায় বলা হয়েছে যে, সংবিধান কার্যকরী হওয়ার ১০ বছরের মধ্যে রাষ্ট্র ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত দেশের সকল শিশুদের জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করবে।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৪৬নং ধারাতে কী উল্লেখ আছে?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪৬নং ধারায় বলা হয়েছে, রাষ্ট্রকে সমাজের দুর্বল শ্রেণি বিশেষ করে তপশিলি জাতি ও উপজাতির মানুষদের জন্য শিক্ষাগত ও আর্থিক সুবিধার ব্যবস্থা করতে হবে এবং সকল প্রকার সামাজিক অন্যায় ও শোষণ থেকে এই সম্প্রদায়ের মানুষদের রক্ষা করার বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।


প্রশ্ন:  ভারতীয় সংবিধানের ৩৫০ (ক) ধারায় কী বলা হয়েছে?

উঃ  ভারতীয় সংবিধানের ৩৫০ (ক) ধারায় বলা হয়েছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিশুরা প্রাথমিক স্তরে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারবে।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৩৫১ ধারায় কী বলা হয়েছে?

 উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৩৫১ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, হিন্দি ভাষার উন্নতি ও বিস্তার ঘটানো ভারত সরকারের অন্যতম কর্তব্য।


প্রশ্ন: করে, কততম সংশোধনী বিলে সর্বসম্মতভাবে তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে?

উঃ ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দের ২৬ ডিসেম্বর, ৬২তম সংবিধান সংশোধনী বিলে সর্বসম্মতভাবে তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। 


প্রশ্ন: সংবিধানের ৯৩তম সংশোধনী বিল কত খ্রিস্টাব্দে পাস হয় এবং এই সংশোধনী বিলের বিষয়বস্তু কী ছিল?

উঃ সংবিধানের ৯৩তম সংশোধনী বিল ২০০১ খ্রিস্টাব্দে পাস হয়। এতে বলা হয়, ভারত রাষ্ট্র প্রতিটি ৬ বছর থেকে ১৪ বছর বয়সি শিশুদের অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করবে।


প্রশ্ন: বাধ্যতামূলক শিক্ষা' বলতে কী বোঝো? 

উঃ সংবিধানের 45 নং ধারা অনুযায়ী 14 বছর বয়স পর্যন্ত সকল শিশুকে অবশ্যই শিক্ষার আঙ্গিনায় আনাকে বাধ্যতামূলক শিক্ষা বলে।


 প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় শিশুদের জন্য অবৈতনিক বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের কথা বলা হয়েছে?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪৫ নম্বর ধারায় শিশুদের জন্য অবৈতনিক বাধ্যতামূলক শিক্ষাদানের কথা বলা হয়েছে।


প্রশ্ন: ভারতের সংবিধানের শিশুদের বাধ্যতামূলক শিক্ষা সংক্রান্ত 45 নং ধারাটি বিবৃত করো। 

অথবা,  ভারতীয় সংবিধানে নির্দেশক নীতির 45 নং ধারার বিষয়বস্তু কী?

উঃ ভারতের সংবিধানের 45 নং ধারায় শিশুদের বাধ্যতামূলক শিক্ষা সম্পর্কে বলা হয়েছে-- সংবিধান প্রণয়নের 10 বছরের মধ্যে সব শিশুদের জন্য 14 বছর বয়স সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অবৈতনিক, বাধ্যতামূলক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করবে রাষ্ট্র।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কততম ধারায় সকলের জন্য সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে?"

উঃ  ভারতীয় সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ের (Part III) ১৪, ১৫ এবং ১৬নং ধারায় (Article) সকলের জন্য সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে সকলের জন্য সমানাধিকার বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উঃ  ভারতীয় সংবিধানে সকলের জন্য সমানাধিকার বলতে বোঝানো হয়েছে যে, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে আইনের চোখে সকলে সমান। এমনকি সরকারি চাকরির ক্ষেত্রেও এই সমতাবিধান করা হবে বলে ভারতীয় সংবিধানে বলা হয়েছিল।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ১৪নং ধারায় কী বলা হয়েছে?” 

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৪নং ধারায় বলা হয়েছে, ভারতে অবস্থিত কোনো ভারতীয় নাগরিককে রাষ্ট্র আইনের দ্বারা সমানভাবে রক্ষণাবেক্ষণের অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে না। 


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় নারীশিক্ষার কথা বলা হয়েছে? 

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৫ ও ১৬নং ধারায় নারীশিক্ষার কথা বলা হয়েছে। 


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ১৫নং ধারায় নাগরিকদের সমানাধিকার প্রসঙ্গে কী বলা হয়েছে?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৫নং ধারায় বলা হয়েছে যে,

(i)  জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, জন্মস্থান, লিঙ্গ প্রভৃতি বিষয় কখনো নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্যের কারণ হবে না।

(ii) সাধারণের জন্য ব্যবহৃত স্নানাগার, কুয়ো, রাস্তাঘাট, পান্থশালা, রেস্তোরাঁ প্রভৃতি সকলের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে। 

(iii) কখনো কখনো জনস্বার্থ রক্ষার্থে সরকার কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে; আর নারী ও শিশুদের জন্য কিছু বিশেষাধিকার সংরক্ষিত হতে পারে।


প্রশ্ন: শিক্ষায় সমসুযোগ বলতে কী বোঝায়? 

উঃ জাতি-ধর্ম-বর্ণ অর্থ নির্বিশেষে সকলের শিক্ষায় সমান অধিকারকে শিক্ষায় সমসুযোগ বলে।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় শিক্ষায় সমসুযোগের কথা বলা হয়েছে? 

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ২৯ এবং ৪৫ নম্বর ধারায় শিক্ষায় সমসুযোগের কথা বলা হয়েছে।


প্রশ্ন: নারীদের সুযোগসুবিধার কথা সংবিধানের কত নং ধারায় বলা হয়েছে?

উঃ  নারীদের সুযোগসুবিধা প্রদান ও শিক্ষাদানের কথা সংবিধানের ১৫ ও ১৬নং ধারায় বলা হয়েছে। 


প্রশ্ন: জাতীয় নারীশিক্ষা পরিষদ কত খ্রিস্টাব্দে গঠিত হয়?

উঃ জাতীয় নারীশিক্ষা পর্ষদ গঠিত হয় ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে।


প্রশ্ন: মেয়েদের জন্য পৃথক কারিগরি বিদ্যালয় গঠনের কথা কে ঘোষণা করেন?

উঃ শ্রীমতী দুর্গাবাই দেশমুখ-এর নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় নারীশিক্ষা পরিষদ ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে নারীদের জন্য পৃথক কারিগরি বিদ্যালয় গঠনের কথা ঘোষণা করেন।


প্রশ্ন: শ্রীমতী হংস মেহেতা কমিটি কবে, কেন গঠিত হয়?

উঃ  ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দের ১০ মে, মেয়েদের পৃথক পাঠ্যক্রমের সমস্যা সমাধানের জন্য জাতীয় নারী শিক্ষা পরিষদের নেত্রী শ্রীমতি হংস মেহেতা একটি শিক্ষা কমিটি গঠন করেন।


প্রশ্ন: ভক্তবৎসলম কমিটি করে ও কেন গঠিত হয়?

উঃ ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে জনসাধারণের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় কীভাবে গ্রামাঞ্চলে নারীশিক্ষার প্রসার ঘটানো যায়, সে সম্পর্কে আলোচনার জন্য ভক্তবৎসলম কমিটি গঠিত হয়।


প্রশ্ন: গ্রামাঞ্চলে নারীদের জন্য Teachers Training College গড়ে তোলার কথা কে বলেছিল?

 উঃ গ্রামাণ্ডলে নারীদের জন্য Teachers Training College গড়ে তোলার কথা বলেছিল শ্রীভক্তবৎসলম্ কমিটি।


প্রশ্ন: ভারতে বর্তমান নারীশিক্ষার হার কত? 

উঃ ভারতে বর্তমান নারীশিক্ষার হার শতকরা ৬৫.৪৬ (২০১১ খ্রিস্টাব্দ)


প্রশ্ন: নারীশিক্ষা বিস্তারের দুটি উপায় লেখো।

উঃ নারীশিক্ষা বিস্তারের জন্য- (i) শিক্ষিকার সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে, (ii) সদর্থক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে হবে।


প্রশ্ন: 'The Education' গ্রন্থটি কার লেখা? এর বিষয়বস্তু কী?

উ: 'The Education' গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন গান্ধিজি। এই গ্রন্থে গান্ধিজি ভারতের সামাজিক ও জাতীয় বিকাশে নারীদের শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করেছেন।


 প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের ৪১ নং ধারায় কী বলা হয়েছে?

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ৪১ নং ধারায় বলা হয়েছে যে, রাষ্ট্র তার আর্থিক সামর্থ্য ও উন্নয়নের সীমার মধ্যে সব নাগরিকের জন্য কর্ম ও শিক্ষার ব্যবস্থা করবে এবং সেইসঙ্গে বেকার যুবক, বৃদ্ধ, অসুস্থ ও অক্ষম মানুষদের সরকারি সাহায্য দান করবে।


প্রশ্ন: ভারতের সংবিধান অনুযায়ী তপশিলি জাতি কাদের বলা হয়? 

উঃ ভারতের সংবিধান অনুযায়ী আর্থিক ও সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া অনুন্নত ও দুর্বল শ্রেণির মানুষকে তপশিলি জাতি বলা হয়। যেমন— কামার, ধোপা প্রভৃতি। 


প্রশ্ন: আমাদের দেশে ‘তপশিলি জাতি হিসেবে কারা পরিগণিত?

 উঃ আমাদের দেশ ভারতবর্ষে হিন্দুধর্মের রক্ষণশীলদের কাছে যারা 'অস্পৃশ্য' বলে পরিচিত ছিল এবং বর্তমানে ভারতীয় সংবিধান অনুসারে সামাজিক দিক থেকে যারা সুবিধাহীন শ্রেণি, তারাই ‘তপশিলি জাতি' বলে পরিগণিত।


প্রশ্ন: ভারতবর্ষে কাদের ‘তপশিলি উপজাতি' বলা হয়? 

উঃ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাষ্ট্রপতির নির্দেশে বিভিন্ন রাজ্যের যেসব অনগ্রসর উপজাতির নাম নথিভুক্ত করা হয়, তাদের তপশিলি উপজাতি বলা হয়। যেমন—সাঁওতাল, কোল, মুন্ডা প্রভৃতি।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানের কত নম্বর ধারায় তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের শিক্ষার বিষয়ে বলা হয়েছে? 

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ১৫ এবং ৪৬ নং ধারায় তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের শিক্ষার বিষয়ে বলা হয়েছে।


প্রশ্ন: কার সভাপতিত্বে তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিদের শিক্ষার জন্য কমিটি গঠিত হয়েছিল?

উঃ ইউ এন ধেবরের সভাপতিত্বে তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতিদের শিক্ষার জন্য কমিটি গঠিত হয়েছিল।


প্রশ্ন: সংখ্যালঘু' কারা?

উঃ ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের কার্লেকর কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী হিন্দু সমাজে একদা উচ্চবর্ণের মানুষের দ্বারা অত্যাচারিত শ্রেণির মানুষ, যারা পিছিয়ে যেতে যেতে একেবারে অনুন্নত শ্রেণিতে পরিণত হয়েছে, তাদের বলা হয় সংখ্যালঘু। যেমন ছোটো কারিগর, পশুপালনকারী বা শিকারি সম্প্রদায়।


প্রশ্ন: সংখ্যালঘুদের শিক্ষাসংক্রান্ত সমানাধিকারের বিষয়টি ভারতীয় সংবিধানের কোন ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে।

উঃ ভারতীয় সংবিধানের ২৯ নং ধারায় সংখ্যালঘুদের শিক্ষাসংক্রান্ত সমানাধিকারের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। 


প্রশ্ন: করে সম্পত্তির অধিকারের বিষয়টিকে মৌলিক অধিকারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়?

উঃ ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে ৪৪ তম সংবিধান সংশোধনকালে সম্পত্তি অধিকারের বিষয়টিকে মৌলিক অধিকারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।


প্রশ্ন:  ভারতীয় সংবিধানে সাম্যের অধিকার সম্বন্ধীয় ধারাগুলির মধ্যে কোন্‌টি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ?

উঃ  ভারতীয় সংবিধানে সাম্যের অধিকার সম্বন্ধীয় ধারা হল- ১৪-১৮ নং ধারা। এর মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হল ১৪ নং ধারাটি, যাতে ভারত ভূখণ্ডের মধ্যে কোনো ব্যক্তিকে আইনের দৃষ্টিতে সমানাধিকার ও আইনের দ্বারা সংরক্ষণের কথা বল হয়েছে।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে কাদের জন্য বিশেষ সুযোগসুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে?" 

উঃ ভারতীয় সংবিধানে তপশিলি জাতি বা Scheduled Castes', তপশিলি উপজাতি বা 'Scheduled Tribes এবং অন্যান্য অনুন্নত শ্রেণি বা Other Backward Classes' (OBC)-এর জন্য বিশেষ সুযোগসুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।


প্রশ্ন: সংবিধানের ৩৮ নং ধারায় বর্ণিত আর্থসামাজিক বিষয়ে দু নীতি উল্লেখ করো।

উঃ সংবিধানের ৩৮ নং ধারায় বর্ণিত আর্থসামাজিক বিষয়ের দুটি উল্লেখযোগ্য নীতি হল--

উঃ (i) সমাজের বস্তুগত সম্পদের উপর একচেটিয়া মালিকানা প্রতিহত করে তার সুষম বণ্টনের ব্যবস্থা করা। 

(ii) প্রতিটি শিশুকে শারীরিক ও নৈতিক শোষণের হাত থেকে রক্ষ করা ও তারা যাতে সুস্বাস্থ্য, সম্মান ও স্বাধীনতার অধিকারী হতে পারে, সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া।


প্রশ্ন: ভারতীয় সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক কর্তব্যের সংখ্যা কত? 

উঃ ভারতীয় সংবিধানে স্বীকৃত মৌলিক কর্তব্যের সংখ্যা ১১টি।

Read More

Thursday, 16 December 2021

HS Education (শিক্ষাবিজ্ঞান) শিক্ষায় রাশিবিজ্ঞান: সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

Leave a Comment

 শিক্ষাবিজ্ঞান || দ্বাদশ শ্রেণী                            (wbchse)  

 তৃতীয় অধ্যায়ঃ  শিক্ষায় রাশিবিজ্ঞান


অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (মান-1)


১। পরিসংখ্যানবিদ্যা বা রাশিবিজ্ঞান কাকে বলে? 

উঃ  যে বিজ্ঞানভিত্তিক গাণিতিক পদ্ধতির মাধ্যমে পরিমাণযোগ্য ডেটাগুলির সংগ্রহ, উপস্থাপন, বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়, তাকে 'রাশিবিজ্ঞান' বা 'পরিসংখ্যানবিদ্যা' বা Statistics বলা হয়।


২। রাশিবিজ্ঞানের ইংরেজি প্রতিশব্দ কী?

 উঃ  ইংরেজি 'Statistics' শব্দটির প্রতিশব্দ হিসেবে আমরা রাশিবিজ্ঞান কথাটি গ্রহণ করি।

 

৩। শিক্ষাগত রাশিবিজ্ঞান কাকে বলে?

উঃ যে রাশিবিজ্ঞান শিক্ষা প্রক্রিয়াকে কার্যকরী ও উন্নত করতে সাহায্য করে, তাকে শিক্ষাগত রাশিবিজ্ঞান বলা হয়।


৪। রাশিবিজ্ঞানে 'তথ্য' বলতে কী বোঝায়? 

উঃ রাশিবিজ্ঞানে তথ্য বলতে কোনো ব্যক্তি, বস্তু এবং ঘটনার প্রতিক্রিয়া লিপিবদ্ধকরণের প্রক্রিয়াকে বোঝায়। যেমন বয়স, উচ্চতা, মেধা, সাফল্য ইত্যাদি। 


৫। তথ্য কী? বৈশিষ্ট্য অনুসারে তথ্যসমূহকে ক-টি ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী?

উঃ তথ্য: তথ্য্য হলো কোন ব্যক্তি, বস্তু, ঘটনার প্রতিক্রিয়া লিপিবদ্ধকরণের প্রক্রিয়া। যেমন- মেধা, সাফল্য, বয়স, উচ্চতা ইত্যাদি।


বৈশিষ্ট্য অনুসারে তথ্যসমূহকে দুই ভাগে ভাগ করা হয় - (i) গুণগত তথ্য এবং (ii) পরিমাণগত তথ্য।


গুণগত তথ্য: যেসব তথ্যকে সংখ্যার সাহায্যে প্রকাশ করা যায় না, কিন্তু বিশেষ গুণ এর ভিত্তিতে পরস্পরের থেকে পৃথক করা যায়, তাকে গুণগত তথ্য বলে। যেমন-- বুদ্ধিমত্তা, মেধা, প্রত্যাশা ইত্যাদি।


পরিমাণগত তথ্য: যেসব তথ্যকে সংখ্যার দ্বারা প্রকাশ করা যায়, তাকে পরিমাণগত তথ্য বলে। যেমন-- ওজন, বয়স, উচ্চতা, আয় ইত্যাদি।


৬। রাশিবিজ্ঞানে 'বিন্যাসকরণ' বলতে কী বোঝো?

 উঃ রাশিবিজ্ঞানে বিন্যাসকরণ বলতে বোঝায় স্তম্ভ এবং সারির মধ্যে তথ্যগুলিকে যুক্তি ও নিয়মসম্মত উপায়ে এমনভাবে সংগঠিত করা, যাতে তথ্যের সহজতম উপস্থাপন এবং তুলনা করা সম্ভব হয়।


৭। 'পরিমাপ' কাকে বলে?

উঃ পরিমাপ হল একপ্রকার গাণিতিক কৌশল, যে পদ্ধতিতে কোনো বস্তু সম্পৰ্কীয় বিষয়কে সংখ্যাদ্বারা প্রকাশ করা হয়। যেমন- কোনো বস্তুর উচ্চতা, দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, কিংবা কোনো শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর।


৮।' 'রাশিতথ্য' কী? উদাহরণ দাও।” 

উঃ ব্যক্তিসমষ্টির কর্মদক্ষতা বা বস্তুসমষ্টি থেকে প্রাপ্ত পরিসংখ্যানমূলক তথ্যের সমষ্টি এবং গুণগত বৈশিষ্ট্যগুলি হল রাশিতথ্য। যেমন- শিক্ষার্থীর বয়স, ওজন ইত্যাদি। 


৯। ‘স্কোর' কাকে বলে?

উঃ ব্যক্তি বা বস্তুর কোনো ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যকে যখন গাণিতিক প্রতীক দিয়ে প্রকাশ করা হয়, তখন তাকে স্কোর বলা হয়। যেমন– আমার বয়স ১৮ বছর ৩ মাস ১৮ দিন।

Or, সংখ্যা দ্বারা প্রকাশিত যেকোনো ধরনের পরিমাপকে রাশিবিজ্ঞানে স্কোর বলা হয়।


13 "স্কোর বিন্যাস' বা 'তথ্যবিন্যাস' বা 'Tabulation' কাকে বলে?*

উঃ রাশিবিজ্ঞানে তথ্যসমূহকে সংক্ষিপ্ত, নির্দিষ্ট এবং যৌক্তিক নিয়মে উপস্থাপন করার প্রক্রিয়াকেই বলা হয় স্কোর বিন্যাস বা তথ্যের বিন্যাস।


১০। রাশিবিজ্ঞানে 'পরিসংখ্যান' বলতে কী বোঝো?

উঃ রাশিবিজ্ঞানে পরিসংখ্যান হল একটি বিজ্ঞান, যেখানে বিভিন্ন ঘটনার ব্যাখ্যা ও বর্ণনার উপর ভিত্তি করে সংখ্যামূলক তথ্যাবলির সংগ্রহ, শ্রেণিবিন্যাস, সারণিকরণ করা হয়।


১১। পরিসংখ্যামূলক ছক বা Statistical Table কাকে বলে? 

উঃ পরিমাপযোগ্য ডেটাগুলিকে যখন সারি এবং স্তম্ভে যথার্থ শিরোনাম দিয়ে একটি বিশেষ পদ্ধতিতে বিন্যস্ত করা হয়, তাকে পরিসংখ্যামূলক ছক বা 'Statistical Table' বলা হয়।


১২। রাশিবিজ্ঞানে 'স্কেল' কী?'

উঃ সাধারণত ব্যক্তির পারদর্শিতা, বুদ্ধাংক ইত্যাদি কতগুলি  সমদুরত্ব বিশিষ্ট সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করা যায়, এই সমদুরত্ব সম্পন্ন সংখ্যাগুলিকে যখন পাশাপাশি সাজানো যায়, তখন তাকে স্কেল বলে।


১৩। একক Unit কাকে বলে?

উঃ কোনো স্কেলের পাশাপাশি দুটি সংখ্যার বিয়োগফল থেকে প্রাপ্ত সংখ্যাকে একক বা 'Unit' বলা হয়। যেমন- বুদ্ধ্যঙ্ক 90, 100 বা 110,120 হলে যে কোনো দুটি সংখ্যার বিয়োগফল হবে 10, তাই এক্ষেত্রে একক হল 10। 


১৪। 'চল' (Variable) কাকে বলে?

উঃ যে-কোনো পরিবর্তনীয় মানই হল চল। অন্যভাবে বলা যায়, যেসব স্কোরকে গাণিতিক অর্থে পরিমাপের ফল হিসেবে উপস্থাপন করা হয় তাদের চল বলা হয়। 


১৫। 'বিচ্ছিন্ন চল' (Continuous Variable) কাকে বলে?*

উঃ যে ধরনের চলের স্কেলে ফাঁক থাকে, তাকে বিচ্ছিন্ন চল বলা হয়। যেমন— কোনো শ্রেণির ছাত্রসংখ্যা 50 থেকে 51 জন বললে বোঝায়, ছাত্রসংখ্যা হয় 30 বা 31 হবে। কিন্তু কখনো 30.2 বা 30.5 হবে না।


১৬। 'অবিচ্ছিন্ন চল' (Discrete Variable) কাকে বলে? 

উঃ  যে ধরনের চলের স্কেলে ফাঁক থাকে না বা যে চলের স্কেলে কোনো বিরাম বা ছেদ থাকে না, তাকে অবিচ্ছিন্ন চল বলে। যেমন— শিশুর দৈহিক বয়স, মানসিক বয়স প্রভৃতি। ধরা যাক, কোনো ক্লাসে ছাত্রীদের উচ্চতা 35, 35.5, 36, 36.5 – এখানে চলগুলির মধ্যবর্তী কোনো ফাঁক নেই তাই এরা অবিচ্ছিন্ন চল।


১৭।একটি অবিচ্ছিন্ন চলকের (Variable) উদাহরণ দাও।

উঃ সময়, বয়স ইত্যাদি হল অবিচ্ছিন্ন চলকের উদাহরণ। 


১৮। একটি বিচ্ছিন্ন চল ও একটি অবিচ্ছিন্ন চলের উদাহরণ দাও।

উঃ বিচ্ছিন্ন চল- ছাত্রসংখ্যা, অবিচ্ছিন্ন চল ছাত্রের উচ্চতা ওজন ইত্যাদি।


১৯। ট্যালি (Tally) চিহ্ন কাকে বলা হয়? 

উঃ অবিন্যস্ত তথ্যগুলি যখন ছকের মধ্যে বিন্যস্ত করে সাজানে হয় তখন প্রত্যেক স্কোরমানের পরিপ্রেক্ষিতে তালিকার পার্শ্ববর্তী স্তম্ভে একটি করে স্ল্যাশ (Slash)-এর ন্যায় দাগ চিহ্ন বসাতে হয়। 4টি দাগ উল্লম্ভভাবে (IIII) বসানো হয় এবং 5 নং দাগটি কোনাকুনিভাবে  (卌) বসানো হয়। একেই ট্যালি চিহ্ন বলে।


২০। পরিসংখ্যা বণ্টন গঠনের সময় ট্যালি চিহ্ন কেন ব্যবহার করা হয়?

উঃ পরিসংখ্যা বণ্টনের সময় মূলত স্কোরবণ্টন নির্ভুল এবং সহজে মোট পরিসংখ্যা নির্ণয় করার জন্য ট্যালি চিহ্ন ব্যবহার করা হয়।


২১। 'বিচ্ছিন্ন শ্রেণি' (DIscrete Class) কাকে বলে?*

উঃ যে শ্রেণিতে দুটি স্কোরের মধ্যবর্তী ব্যবধানে কোনো ক্ষুদ্রতম অংশ থাকে না, তাকে বিচ্ছিন্ন শ্রেণি  বলা হয়। যেমন—

শ্রেণি         পরিসংখ্যা

12-16               8

 17-21             6

 ইত্যাদি।


২২। 'অবিচ্ছিন্ন শ্রেণি' (Continuous Class) কাকে বলে? 

যে শ্রেণিতে দুটি স্কোরের মধ্যবর্তী ব্যবধানে কোনো ক্ষুদ্রতম অংশ থাকে, তাকে বলা হয় অবিচ্ছিন্ন শ্রেণি। যেমন -

শ্রেণি           পরিসংখ্যা 

 5.5 - 10.5             9

10.5-15.5             10

ইত্যাদি। 


২৩। 'শ্রেণিসীমা' কী? (What Is Class Limit?) 

প্রত্যেক শ্রেণির দু-দিকের প্রান্তে একটি শুরু ও অপরটি শেষ অংশ থাকে এবং ওই দুটি সীমার মধ্যে ব্যবধান থাকে নির্দিষ্ট, এদের একটিকে ঊর্ধ্ব শ্রেণি সীমা (Upper Class Limit) এবং নিম্ন শ্রেণি সীমা (Lower Class Limit) বলে। যেমন-

 5-10, 11-15।


২৪। রাশিবিজ্ঞানে শ্রেণি ব্যবধান (Class Interval) বলতে কী বোঝো?

উঃ রাশিবিজ্ঞানে যখন কোনো বৃহত্তর স্কোরগুচ্ছের বিস্তার অনেক দীর্ঘ হয়, তখন সেগুলিকে স্কোর মানের আকার অনুযায়ী কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করে নেওয়া হয়। এর ফলে প্রতিটি শ্রণির একটি নির্দিষ্ট বিরতি থাকে। একেই বলা হয় শ্রেণি বা শ্রেণি ব্যবধান। যেমন – নিম্ন 9.5 এবং ঊর্ধ্বসীমা 14.5 হলে, শ্রেণি প্রসার হবে 14.5 --9.5 = 51


২৫। নীচে প্রদত্ত শ্রেণি ব্যবধান দুটির (ক) নিম্ন প্রান্ত ও ঊর্ধ্ব প্রাপ্ত (খ) শ্রেণি ব্যবধানের দৈর্ঘ্য নির্ণয় করো : (i) 45-47, (íi) 80-89 

উঃ (i)45 47-এর নিম্ন প্রান্ত 44.5 এবং ঊর্ধ্ব প্রান্ত 47.5

শ্রেণি ব্যবধান 47.5 - 44.5 = 3

(ii) 80–89-এর নিম্ন প্রাপ্ত 79.5 এবং ঊর্ধ্ব প্রাপ্ত 89.5, শ্রেণি ব্যবধান 89.579.5 = 10


২৬। নিম্নলিখিত শ্রেণি ব্যবধানের ঊর্ধ্বসীমা ও নিম্নসীমা নির্ণয় করো (I) 45-47 (II) 160-164

 উঃ 45-47-এর নিম্নসীমা 44.5. এবং উচ্চসীমা 47.51 

 160 – 164-এর নিম্নসীমা 159.5 এবং ঊর্ধ্বসীমা 164.5


২৬। রাশিবিজ্ঞানে 'পরিসংখ্যা' (Frequency) বলতে কী বোঝায়? 

উঃ রাশিবিজ্ঞানে পরিসংখ্যা শব্দটির অর্থ হল পুনরাবৃত্তিমূলক সংখ্যা। অর্থাৎ কোনো রাশিবিন্যাসে কোনো স্কোর যতবার পুনরাবৃত্ত হচ্ছে, সেই সংখ্যাকে পরিসংখ্যা (Frequency) বলে। 

  শ্রেণিসীমা         পরিসংখ্যা 

 5-7                          3

8-10                         5


২৭। পরিসংখ্যান কাকে বলে?

উঃপরিসংখ্যান (Statistics) বলতে বোঝায় তথ্যাবলির সংকলন সারণিকরণ, উপস্থাপন ও তার বিশ্লেষণ। পরিসংখ্যান হল সেই বিজ্ঞান যা বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা, তুলনা, শ্রেণিবিন্যাস ও ব্যাখ্যা করে।

Lovit-এর মতে, “পরিসংখ্যান হল সেই বিজ্ঞান যা বিভিন্ন ঘটনার ব্যাখ্যা, তাদের বর্ণনা এবং তুলনা করার জন্য আবশ্যিক সংখ্যামূলক তথ্যাবলি সংগ্রহ, শ্রেণিবিন্যাস ও সারণিকরণ করে।”


২৮। শিক্ষাক্ষেত্রে পরিসংখ্যানের দুটি উপযোগিতা লেখো।

উঃ শিক্ষাক্ষেত্রে পরিসংখ্যানের দুটি উপযোগিতা হল _-

(i) শিক্ষা ও মনোবিজ্ঞানে পরীক্ষণ পদ্ধতির মূল বিষয়বস্তু হল শিক্ষার্থীর আচরণ। এক্ষেত্রে পূর্বগামী ঘটনার নিয়ন্ত্রণের কাজটি পরিসংখ্যানের প্রয়োগে যথার্থ কারণ নির্ণয় করা সম্ভব। হয়।

(ii) শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাথমিক ডেটা, মাধ্যমিক ডেটা এবং প্রান্ত ডেটা থেকে লব্ধ ফলের তাৎপর্যপূর্ণ বিশ্লেষণে পরিসংখ্যানের অবদান অনস্বীকার্য।


২৯। পরিসংখ্যা বণ্টন (Frequency distribution) কী? অথবা, পরিসংখ্যা বিভাজন বলতে কী বোঝো?

উঃ পরিসংখ্যা বিভাজন হল একপ্রকার পরিসংখ্যানমূলক ছক, যা প্রাপ্ত স্কোরগুলির মানের ক্রম অনুসারে সজ্জিত করে একক স্কোরভিত্তিক বা শ্রেণিবন্ধ স্কোরভিত্তিক  মানের সাপেক্ষে তাদের পরিসংখ্যাগুলো উপস্থাপন করা হয়। যেমন-

স্কোর       পরিসংখ্যা

5                15

4                 8


৩০।পরিসংখ্যা বণ্টনের পদ্ধতিগুলি কী কী?

উঃ পরিসংখ্যা বণ্টনের পদ্ধতিগুলি হল- (i) একক স্কোরভিত্তিক পরিসংখ্যা বণ্টন এবং (ii) শ্রেণিবন্ধ স্কোরভিত্তিক পরিসংখ্যা বণ্টন।


৩১। রাশিবিজ্ঞানে 'লেখচিত্র' কাকে বলে?

উঃ রাশিবিজ্ঞানে বিন্যস্ত স্কোরগুলিকে সহজবোধ্য করে তোলার জন্য যে বিশেষ ধরনের চিত্রের সাহায্যে ফুটিয়ে তোলা হয়, তাকে লেখচিত্র বলা হয়।


৩২। যে-কোনো একটি লেখচিত্রের নাম লেখো যার সাহায্যে একটি পরিসংখ্যা বণ্টনকে পরিবেশন করা হয়

উঃ একটি পরিসংখ্যা বণ্টনকে পরিবেশন করা হয় এমন একটি লেখচিত্র হল- ছাত্রীদের শিক্ষাবিজ্ঞানে প্রাপ্ত নম্বরের বণ্টন। 


৩৩। ‘আয়তলেখচিত্র’ বা ‘হিস্টোগ্রাম' (Histogram) কী?*

উঃ হিস্টোগ্রাম বা আয়তলেখচিত্র হল অনুভূমিক সরলরেখার উপর অঙ্কিত পাশাপাশি অবস্থিত একগুচ্ছ আয়তক্ষেত্র, যাদের প্রতিটির ক্ষেত্রফল অনুরূপ শ্রেণির পরিসংখ্যার সঙ্গে সমানুপাতিক।


 ৩৪। হিস্টোগ্রাম অঙ্কনের সময় কোন্ অক্ষে কী বসানো হয়?

উঃ হিস্টোগ্রাম অঙ্কনের সময় X অক্ষে প্রতিটি শ্রেণির নিম্নসীমা এবং Y অক্ষে পরিসংখ্যা বসানো হয়।


৩৫। পরিসংখ্যা বহুভুজ (Frequency Polygon) কাকে বলে?

উঃ পরিসংখ্যা বহুভুজ এক ধরনের রৈখিক লেখচিত্র, যেখানে পরিসংখ্যা বিভাজনের প্রত্যেক শ্রেণি ব্যবধানের মধ্যবিন্দুকে সংশ্লিষ্ট শ্রেণির প্রতিনিধিসূচক বিন্দু ধরে নিয়ে ছক কাগজে স্থাপন করতে হয়। এইভাবে বিন্দুগুলি যোগ করলে যে বহুভুজ পাওয়া যায়, তাকে পরিসংখ্যা বহুভুজ বলা হয়।


৩৬। পরিসংখ্যা বহুভুজে X ও Y অক্ষের দৈর্ঘ্যের অনুপাত কত হওয়া দরকার?

উঃ পরিসংখ্যা বহুভুজে X ও Y অক্ষের দৈর্ঘ্যের অনুপাত 4:3 হওয়া দরকার। এই নিয়মকে বলে 75% Rule ।

 

৩৭। পরিসংখ্যা বহুভুজ (Frequency Polygon) ও আয়তলেখ (Histogram) এর একটি পার্থক্য উল্লেখ করো।

উঃ পরিসংখ্যা বহুভুজে পরিসংখ্যা বসানো হয় শ্রেণি ব্যবধানের মধ্যবিন্দুর উপর, অন্যদিকে আয়তলেখে পরিসংখ্যা বসানো হয় শ্রেণি ব্যবধানের প্রকৃত নিম্নসীমার উপর।


 ৩৮। রাশিবিজ্ঞানে মধ্যবিন্দু বা মধ্যমান কাকে বলা হয়?

উঃ রাশিবিজ্ঞানে কোনো শ্রেণি ব্যবধানের মধ্যবর্তী মানকে বলা হয় ওই শ্রেণির মধ্যমান বা Mid Point


৩৯। কেন্দ্রীয় প্রবণতা (Central Tendency) কাকে বলে?

উঃ কেন্দ্রীয় প্রবণতা এমন একটি বিষয়, যা সাংখ্যমানের প্রতিনিধি হিসেবে অবস্থান করে। এক্ষেত্রে সমগ্র স্কোরগুলির মধ্যে পার্থক্য থাকলেও তাদের কেন্দ্রের দিকে বা মাঝামাঝি জায়গাতে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়, তাকে বলে কেন্দ্রীয় প্রবণতা। 


৪০। "বিস্তৃতি' বা 'প্রসার' (Range) কী?'

উঃ কোনো রাশিমালার বন্টনের ক্ষেত্রে উচ্চস্কোর ও নিম্নস্কোরের মধ্যে যে পার্থক্য পাওয়া যায়, তাকে বলে বিস্তৃতি (Range)।


৪১। কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপ (Measures of Central Tendency) বলতে কী বোঝো? নীচের পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় প্রবণতার কোন্ পরিমাপটি যথাযথ? (i) কোনো দলের প্রাপ্ত স্কোরের মধ্যবিন্দু নির্ধারণে. (II) কোনো দলের গড় সাফল্য নির্ধারণে।

উঃ কেন্দ্রীয় ধরণতার পরিমাপ: কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপ হল একটি সংখ্যাগত পরিমাপ। এক্ষেত্রে একটি কেন্দ্রীয় মানের চারদিকে সমগ্র রাশিতথ্যমালার বিস্তৃতি থাকে। অর্থাৎ কোনো একক সাংখ্যমানকে একগুচ্ছ সাংখ্যমানের প্রতিনিধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

Or, একক সংখ্যামানকে যখন একগুচ্ছ সংখ্যা মানের প্রতিনিধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তখন তাকে বলা হয় কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপ।

 প্রশ্নে উল্লিখিত পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় প্রবণতার দুটি পরিমাপই যথাযথ। 


৪২। কেন্দ্রীয় প্রবণতা পরিমাপের ক-টি পদ্ধতি বর্তমানে রয়েছে

উঃ কেন্দ্রীয় প্রবণতা পরিমাপের তিনটি পদ্ধতি বর্তমানে রয়েছে। এগুলি হল- (i) গড় বা Mean. (ii) মধ্যমমান বা Median, (iii) ভূষিষ্টক বা Mode


৪৩। সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপ কোনটি? 

উঃ সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপ হল গড়।


৪৪। 'গড়' কী?'

উঃ কেন্দ্রীয় প্রবণতার একটি বিশেষ পরিমাপ হল গড়, যেখানে স্কোরের মোট যোগফলকে মোট স্কোরসংখ্যা দ্বারা ভাগ করা হয়। 


৪৫। 'গড়' (Mean)-এর দুটি সুবিধা লেখো।

উঃ ‘গড়’-এর দুটি সুবিধা হল

(i)খুব সহজেই নির্ণয় করা যায়। এক্ষেত্রে রাশিমালাকে সাজানোর প্রয়োজন হয় না।

 (ii)এটি নির্ণয় করার সময় যেহেতু রাশিমালার সমগ্র রাশিগুলিকে ব্যবহার করা হয়, তাই এটি অন্যান্য কেন্দ্রীয় প্রবণতার মান অপেক্ষা বেশি নির্ভরযোগ্য। 


৪৬। 'গড়'-এর দুটি অসুবিধা লেখো।

উঃ ‘গড়’-এর দুটি অসুবিধা হল--

(i) রাশিমালার সর্বোচ্চ মানের দ্বারা গড়ের মান প্রভাবিত হয়। 

(ii) কোনো একটি স্কোর অনুপস্থিত থাকলে গড় নির্ণয়েbঅসুবিধার সৃষ্টি হয়। 


৪৭। কল্পিত গড় কী?

উঃ অবিন্যস্ত স্কোরগুচ্ছ যখন বৃহৎ আয়তনের হয় অর্থাৎ যখন কোনো বন্টনে স্কোরের সংখ্যা অনেক হয় তখন স্কোরগুলির মধ্যে একটিকে কল্পিত গড় ধরে নিয়ে সেই গড়মান প্রত্যেক স্কোর থেকে বিয়োগ করা হয়। 

   অর্থাৎ যখন কোনো বন্টনে স্কোরের সংখ্যা অনেক, তখন এই স্কোরগুলির মধ্যে যে স্কোরটিকে অনুমেয় গড়মান ধরে, সেই গড়মানকে প্রত্যেক স্কোর থেকে বিয়োগ করা হয়, তাকে কল্পিত গড় বলা হয়। 


৪৮। 'চ্যুতি' কাকে বলে? 

উঃ প্রত্যেক স্কোর থেকে কল্পিত গড়ের বিয়োগফলকে চ্যুতি বলা হয়।


৪৯। নিম্নলিখিত শ্রেণি ব্যবধানটির মধ্যবিন্দু ও শ্রেণি দৈর্ঘ্য নির্ণয় করো।

উঃ  70 - 79 শ্রেণি ব্যবধানটির মধ্যবিন্দু 74.5 এবং শ্রেণি দৈর্ঘ্য 79.5-69.5 = 10


৫০। 15-20 শ্রেণিটির মধ্যবিন্দু নির্ণয় করো।

উঃ 15-20 শ্রেণিটির মধ্যবিন্দু হল 17.5। 


৫১। মিনের সংক্ষিপ্ত সূত্রে C-এর অর্থ কী?*

উঃ মিনের সংক্ষিপ্ত সূত্রে C-এর অর্থ শুদ্ধিকরণ।


৫২। নিম্নলিখিত রাশিমালার গড় নির্ণয় করো : 

12, 8, 10, 5, 15, 20, 22

উঃ (12+8+10+5+15+20+22)÷ 7 = 13.14


৫৩। নিম্নলিখিত স্কোর শ্রেণি ব্যবধান দুটির মধ্যবিন্দু নির্ণয় করো:

 (i) 40 - 44, (ii) 110-119 

উঃ (i) 40 - 44 স্কোরের মধ্যবিন্দু হল- 42

(í) 110 - 119 স্কোরের মধ্যবিন্দু- 114.5


৫৪। মধ্যমমান বা মধ্যক কাকে বলে? অথবা, মিডিয়ান বলতে কী বোঝো? 

উঃ কেন্দ্রীয় প্রবণতা পরিমাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিমাপ পদ্ধতি হল মিডিয়ান বা মধ্যমমান বা মধ্যক। মধ্যমমান হল এমন একটি সাংখ্যমান, যা মানের উর্ধ্বক্রম বা নিম্নক্রম অনুসারে সাজালে বন্টনের স্কোরগুলিকে দুই ভাগে ভাগ করে।


৫৫।'মিডিয়ান' (Median)-এর দুটি ব্যবহার লেখ।

উঃ 'মিডিয়ান' (Median)-এর দুটি ব্যবহার হল 

(i) অসম্পূর্ণ বণ্টনের ক্ষেত্রে : যখন বন্টনটি অসম্পূর্ণ থাকে, তখন গড় নির্ণয় সম্ভব হয় না। সেই সময় Median ব্যবহৃত হয়।

(ii) প্রান্তীয় রাশির বিষমতা: প্রান্তীয় রাশিগুলির মধ্যে বিষমতা বেশি থাকলে Median ব্যবহৃত হয়।


৫৬। মোড (Mode) কাকে বলে?

উঃ রাশিবিজ্ঞানে কোনো পরিসংখ্যা বণ্টনে যে সংখ্যাটি সবথেকে বেশি বার থাকে, তাকে সেই পরিসংখ্যাটির মোড বা ভূষিষ্টক বলা হয়।

৫৭। True Mode কী?

উঃ প্রকৃত ভূষিষ্টক হল কোন বন্টনের বৃহত্তম কেন্দ্রীয় বিন্দু বা মান।


৫৮। Crude Mode কী?

উঃ কোন রাশিমালার যে শ্রেণীতে সর্বাধিক পরিসংখ্যা রয়েছে সেই শ্রেণীটি হলো ভূষিষ্টক শ্রেণি। এই শ্রেণীবিভাগের মধ্যমান হলো   Crude Mode বা অপরিশোধিত ভূষিষ্টক।


৫৯। মোড (Mode) এর দুটি ব্যবহার লেখ।

উঃ (i) স্কোরের অবস্থান বেশিবার জানতে: রাশিমালার মধ্যে কোন স্কোরটি বেশিবার অবস্থান করছে তা জানতে মোড(Mode) ব্যবহার করা হয়।

(ii) দ্রুত কেন্দ্রীয় মান জানতে: কোন বন্টনের কেন্দ্রীয় মান দ্রুত জানতে বা পরিমাপ করতে মোড (Mode) ব্যবহার করা হয়।

Read More

Sunday, 12 December 2021

HS শিক্ষাবিজ্ঞান ( Education) অধ্যায়: শিখন -- সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

Leave a Comment

 শিক্ষা বিজ্ঞান ( Education)

            শিখন (Learning)

     দ্বাদশ শ্রেণী (Class xii) (wbchse)


অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (মান-1)


১। 'শিখন' কী?

  উঃ অনুশীলন প্রক্রিয়ার দ্বারা প্রাণীর কোনো আচরণের পরিবর্তনের ঘটনাই হল 'শিখন'।

অথবা,  

যে মানসিক প্রক্রিয়া অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে প্রগতিশীল আচরণগত পরিবর্তনের মাধ্যমে ব্যক্তির দৈহিক ও মানসিক বিকাশ ঘটিয়ে তাকে পরিবর্তনশীল পরিবেশের সঙ্গে সার্থকভাবে অভিযোজনে সাহায্য করে, তাই হল শিখন।


২। ‘শিখন’-এর একটি কার্যকরী সংজ্ঞা দাও।

 উঃ সক্রিয় অনুশীলন, অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণের প্রভাবে প্রাণীর মানসিক ও বাহ্যিক আচরণের পরিবর্তন সাধিত হয় যে প্রক্রিয়ায় তাকে 'শিখন' বলে।   

৩।  আধুনিক অর্থে ‘শিখন' বলতে কী বোঝায়?

 উঃ  যে শিক্ষালব্ধ পদ্ধতিতে অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কর্ম সম্পাদনের ক্ষমতালাভের মাধ্যমে প্রাণীর মানসিক ও দৈহিক আচরণে উৎকর্ষতা আসে, সেই পদ্ধতিই ‘শিখন' নামে পরিচিত।


৪। মনোবিজ্ঞানী জে পি গিলফোর্ড ‘'শিখন'-এর কী সংজ্ঞা দিয়েছেন?

 উঃ মনোবিজ্ঞানী জে পি গিলফোর্ড-এর মতে, “Learning is change in behaviour resulting from behaviour.” অর্থাৎ ‘শিখন’ হল আচরণ থেকে ফলজাত আচরণের পরিবর্তন প্রক্রিয়া। 


৫। থর্নডাইক ‘শিখন’ সম্বন্ধে কী বলেছেন? 

 উঃ মনোবিদ থর্নডাইক বলেছেন, 'শিখন' হল উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে যথার্থ ও কার্যকরী সম্বন্ধ স্থাপনের প্রক্রিয়া।


৬। ম্যাকডুগালের মতে ‘শিখন' কী?

 উঃ মনোবিদ ম্যাকডুগালের মতে, উদ্দেশ্যসাধনের উপযোগী উপায় নির্বাচনের ক্ষমতা অর্জন করাই হল শিখন।


৭। শিখনের প্রধান দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

উঃ শিখনের প্রধান বৈশিষ্ট্য দুটি হল-

 ১) শিখন প্রক্রিয়া উদ্দেশ্যমুখী ও ক্রমবিকাশমান।

২) শিখন পরিবেশের সঙ্গে অভিযোজন করতে সহায়তা করে। 


৮। মনোবিদ রবার্ট এম গ্যাগনের মতানুসারে শিখনের শ্রেণিবিভাগ করো।

উঃ মনোবিদ রবার্ট এম গ্যাগনের মতানুসারে শিখনকে ৮টি ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলি হল- 

(i)সংকেত শিখন,  (ii) উদ্দীপক-প্রতিক্রিয়া শিখন, (iii)সমস্যাসমাধানমূলক শিখন, (iv) ভাষাগত সংযোগসাধনমূলক শিখন, (v) শৃঙ্খলিতকরণ শিখন, (vi)ধারণা শিখন, (vii) নিয়ম শিখন এবং (viii) বৈষম্যমূলক শিখন।


৯। গ্যাগনের কোন গ্রন্থে শিখনের আটটি প্রকারের উল্লেখ পাওয়া যায়?

উঃ রবার্ট গ্যাগনে তাঁর The Conditions of Learning গ্রন্থে আট প্রকারের শিখনের উল্লেখ করেছেন।


১০। গ্যাগনের শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী সব থেকে উচ্চ পর্যায়ের শিখন কোন্‌টি? 

উঃ গ্যাগনের শ্রেণিবিভাগ অনুযায়ী সবথেকে উচ্চ পর্যায়ের শিখন হল সমস্যাসমাধানমূলক শিখন।


১১। 'প্রজ্ঞামূলক শিখন' কাকে বলে? 

উঃ যখন কোনো ব্যক্তির জ্ঞানার্জনের উদ্দেশ্যে শিখন সাধিত হয় তখন ওই শিখনকে বলা  'প্রজ্ঞামূলক শিখন'।


১২। দক্ষতামূলক শিখন' কী?

উঃ যে শিখনের দ্বারা ব্যক্তির দক্ষতা বা সামর্থ্যের বিকাশ ঘটে, তাকে দক্ষতামুলক শিখন বলে।


১৩। প্রক্ষোভমূলক শিখন' বলতে কী বোঝো?

উঃ শিশুর মধ্যে আদর্শগত প্রক্ষোভ গঠনের জন্য যে শিখন কার্য পরিচালিত হয়, তাকে প্রক্ষোভ মূলক শিখন বলে।


 ১৪। নৈতিক শিখন' বলতে কী বোঝো?

উঃ শিক্ষার্থীর চারিত্রিক সংগঠন ও মূল্যবোধের বিকাশের জন্য যে শিখন প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়, তাকে ‘নৈতিক শিখন' বলে।


১৫। 'দেহসঞ্চালনগত শিখন' কাকে বলে?

উঃ যে শিখন প্রক্রিয়ার দ্বারা শিশুর দেহসঞ্চালন ক্রিয়ার পরিবর্তন ও ক্রমোন্নয়ন ঘটে, সেই শিখন প্রক্রিয়াকে 'দেহসঞ্চালনগত শিখন' বলা হয়। 


১৬। স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র কোন্ শিখনকে নিয়ন্ত্রিত করে?

উঃ স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র স্মৃতিমূলক শিখন বা স্মরণক্রিয়ার দ্বারা শিখনকে নিয়ন্ত্রিত করে।


১৭। স্মৃতি' বা 'স্মরণক্রিয়া' কাকে বলে?

উঃ যে মানসিক প্রক্রিয়ার দ্বারা পূর্বার্জিত ও সংরক্ষিত অভিজ্ঞতাকে প্রয়োজনমতো যথার্থ সময়ে সঠিক স্থানে স্মরণ করা যায়, সেই মানসিক প্রক্রিয়াকেই ‘স্মৃতি' বা 'স্মরণক্রিয়া' বলা হয়।


১৮। 'বিস্মৃতি' কী?

উঃ স্মৃতির অভাবই হল 'বিস্মৃতি'। এটি স্মরণক্রিয়ার বিপরীত একটি প্রক্রিয়া। এর সাধারণ অর্থ কোনো বিষয় ভুলে যাওয়া।


১৯। শিখনের পর্যায় বা স্তরগুলি কী কী?

 উঃ শিখনের স্তর বা পর্যায়গুলি হল তিন প্রকার। যথা- অভিজ্ঞতা অর্জন, সংরক্ষণ এবং পুনরুত্থাপন। এই শেষ পর্যায়টিকে অর্থাৎ পুনরুত্থাপনকে আবার দুটি স্তরে বিন্যস্ত করা হয়। যথা- পুর্নরুদ্রেক ও প্রত্যভিজ্ঞা। 


২০। সংরক্ষণ বা ধারণ বলতে কী বোঝো?

উঃ সংরক্ষণ' বা 'ধারণ' হল এমন একটি মানসিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে বাইরে থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতাকে দীর্ঘকাল ধরে স্মৃতিতে ধরে রাখা যায় বা মনে রাখা যায়।


২১। পুনরুদ্রেক ও প্রত্যভিজ্ঞার মধ্যে প্রভেদ কোথায়?

উঃ যে মানসিক প্রক্রিয়ার দ্বারা পূর্বে অর্জিত অভিজ্ঞতা সংরক্ষণের স্তর থেকে মানুষের চেতনায় আসে অর্থাৎ কোনো পুরোনো কথা মানুষের মনে পড়ে, তাকেই 'পুনরুদ্রেক' বলা হয়। অন্যদিকে, পূর্বে অর্জিত অভিজ্ঞতা যখন মানুষের সামনে কোনো মূর্ত প্রতিরূপের সাহায্যে পুনরুত্থাপিত হয়, তখন তাকে 'প্রত্যভিজ্ঞা' বলা হয়। 'প্রত্যভিজ্ঞা' কথার অর্থ হল পূর্ব অভিজ্ঞতাকে প্রত্যক্ষ করা বা চিনে নেওয়া। 


২২। পুনরুদ্রেক প্রক্রিয়াটির সঙ্গে কোন্ তিনটি বিষয় বিশেষভাবে যুক্ত? 

উঃ পুনরুদ্রেক প্রক্রিয়াটির সঙ্গে যে তিনটি বিষয় বিশেষভাবে যুক্ত, সেগুলি হল-  সান্নিধ্যের সূত্র, সাদৃশ্যের সূত্র এবং বৈসাদৃশ্যের সূত্র। 


২৩। সান্নিধ্যের সূত্রটি কী?

উঃ যে সূত্রের কারণে পুনরুদ্রেকের ক্ষেত্রে একটি ঘটনা আর-একটি ঘটনাকে মনে করিয়ে দেয়, তাকে সান্নিধ্যের সূত্র' বলা হয়।


২৪। সাদৃশ্যের সূত্রটি লেখো।

উঃ পুনরুদ্রেকের ক্ষেত্রে সাদৃশ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুটি বিষয়ের মধ্যে সাদৃশ্য থাকলে একটি মনে করলে অপরটিও মনে পড়ে যায়। একেই ‘সাদৃশ্যের সূত্র' হিসেবে ধরা হয়। 


২৫  বৈসাদৃশ্যের সূত্রটি কী?

উঃ পুনরুদ্রেকের ক্ষেত্রে বৈসাদৃশ্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুটি বিষয়ের মধ্যে বৈসাদৃশ্য থাকলে একটি মনে করলে অপরটিও মনে পড়ে যায়। একেই 'বৈসাদৃশ্যের সুত্র' ধরা হয়।


২৬। 'শিখন'-এর সংযোজনবাদী তত্ত্বের প্রবক্তা কে?

উঃ থর্নডাইক। 


২৭। 'শিখন'-এর গেস্টান্ট তত্ত্বের মূল দুজন প্রবক্তা কে ছিলেন?

উঃ 'শিখন'-এর গেস্টান্ট তত্ত্বের মূল দুই প্রবক্তা হলেন ম্যাক্স ওয়ারদাইমার এবং কফকা।


২৮। প্রাচীন অনুবর্তনের আবিষ্কারক কে? 

উঃ প্রাচীন অনুবর্তনের আবিষ্কারক হলেন মনোবিদ আইভান প্যাভলভ।


 ২৯। সক্রিয় অনুবর্তনের উদ্ভাবন করেন কে?

উঃ সক্রিয় অনুবর্তনের উদ্ভাবক হলেন মনোবিদ বি এফ স্কিনার।


৩০। 'শিখন'-এর মাত্রা কার উপর নির্ভর করে? 

উঃ ‘শিখন’-এর মাত্রা নির্ভর করে প্রচেষ্টার সংখ্যার উপর। প্রচেষ্টার সংখ্যা যত বৃদ্ধি পাবে, শিখনের হারও তত বৃদ্ধি পাবে। 


৩১। শিখন'-এর প্রকৃতি কীসের মাধ্যমে প্রকাশ পায় ?

উঃ ‘শিখন’-এর প্রকৃতি প্রকাশ পায় পরিণমনের মাধ্যমে। 


৩২। ‘শিখন'-এর দুটি সহজ উপায় লেখো।

উঃ শিখনের পদ্ধতিগুলির মধ্যে দুটি সহজ উপায় হল - আবৃত্তি পদ্ধতি এবং অর্থ অনুধাবন করে পাঠের পদ্ধতি।


৩৩। শিক্ষার্থীর শিখনে শিক্ষকের প্রধান ভূমিকা কী?

উঃ শিক্ষার্থীর শিখনে শিক্ষকের প্রধান ভূমিকা হল- শিক্ষার্থী শিখনকার্যকে সহজ করে তোলা বা facilitate করা; যার অর্থ হল to make a process easier. 


৩৪। 'Survey-Q-3R'  কী?

উঃ কোনো পাঠ্য বিষয়বস্তু মুখস্থ করার ক্ষেত্রে অধ্যাপক ফ্রান্সিস পি রবিনসন যে নিয়ম উদ্ভাবন করেছেন, তাকে 'Survey Q-3R' বলা হয়। এর সম্পূর্ণ কথাটি হল- Survey, Question, Read Recite, Review। অর্থাৎ কোনো বিষয়কে সহজে আয়ত্ত করার জন্য পর্যবেক্ষণ, প্রশ্নকরণ, পঠনপাঠন, আবৃত্তি পাঠ ও পর্যালোচনার প্রয়োজন।


৩৫। 'শিখন' ও 'শিক্ষণ'-এর মধ্যে মূল পার্থক্য কোথায়? 

উঃ 'শিখন' হল ব্যক্তির নিজের ও সমাজের কল্যাণসাধনের উদ্দেশ্যে কোনো বিষয়কে আয়ত্ত করা বা শেখা। আর 'শিক্ষণ' হল ব্যক্তির সহজাত সম্ভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে জ্ঞান প্রদান করা অর্থাৎ শিক্ষাদান।


৩৬। শিখন'-এর উপাদানগুলি কী কী? অথবা, 'শিখন' কী কী বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হয়? 

উঃ শিখনের উপাদানগুলি হল পরিণমন, প্রেষণা, আগ্রহ, মনোযোগ ও সামর্থ্য। এই বিষয়গুলিই শিখনকে প্রভাবিত করে।


৩৭। 'পরিণমন' কী?

উঃ ‘পরিণমন' হল এমন একটি স্বাভাবিক জৈবিক বিকাশের প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে প্রাণীর জন্মগত সম্ভাবনাগুলির স্বতঃস্ফূর্ত বিকাশ ঘটে এবং সেইসঙ্গে তার আচরণের গুণগত ও পরিমাণগত উভয় ধরনের পরিবর্তন সাধিত হয়।

অথবা,

পরিণমন হল জন্মগত একটি স্বাভাবিক আচরণ পরিবর্তনের জৈবিক প্রক্রিয়া, যার নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঘটে থাকে।


 ৩৮। মনোবিদ ম্যাকগিয়ক ‘পরিণমন'-এর সংজ্ঞায় কী বলেছেন?

উঃ মনোবিদ ম্যাকগিয়ক-এর মতে, অনুশীলন ও অভিজ্ঞতা ছাড়াই বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জৈবিক কারণে শিশুর আচরণ পরিবর্তনের প্রক্রিয়া হল 'পরিণমন'।


৩৯। পরিণমনের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।”

উঃ পরিণমনের দুটি বৈশিষ্ট্য হল – (ক) পরিণমন একটি স্বাভাবিক বিকাশ প্রক্রিয়া এবং (খ) পরিণমনের ফলে ব্যক্তির দৈহিক আচরণের পরিবর্তন ঘটে।


৪০। শিখন ও পরিণমনের দুটি সাদৃশ্য লেখো। শিখন ও পরিণমনের দুটি উল্লেখযোগ্য সাদৃশ্য হল

উঃ (i) শিখন ও পরিণমন উভয়ই ব্যক্তিনির্ভর প্রক্রিয়া। (ii) শিখন ও পরিণমন উভয়ই ব্যক্তির আচরণে পরিবর্তন ঘটায়।


 ৪১। শিখন ও পরিণমনের একটি পার্থক্য লেখো। 

উঃ শিখন ও পরিণমনের একটি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য হল শিখন একটি অনুশীলননির্ভর কৃত্রিম প্রক্রিয়া; কিন্তু পরিণমন একটি স্বাভাবিক জৈবিক বিকাশের প্রক্রিয়া।


৪২।  'প্রেষণা' কী?' 

উঃ 'প্রেযণা' হল এমন একটি মানসিক প্রক্রিয়া, যা ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ কর্মউদ্দীপনাকে উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য তার মধ্যে একটি তাগিদ সৃষ্টি করে এবং তাকে সঠিক পথে পরিচালিত করে।

অথবা,

প্রেষণা হল এমন এক মানসিক প্রক্রিয়া যা ব্যক্তির মধ্যে অভ্যন্তরীণ কর্মোদ্দীপনা জাগ্রত করে এবং বাধাবিপত্তি সত্ত্বেও সেটিকে নিয়ন্ত্রিত পথে পরিচালনার মাধ্যমে লক্ষ্যের অভিমুখে নিয়ে যায়।


৪৩।  'প্রেষণা' শব্দটির উৎপত্তি কোথা থেকে হয়েছে?

উঃ 'প্রেষণা' শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ হল 'Motivation'। এই শব্দটি ল্যাটিন শব্দ 'Moveers' থেকে এসেছে, যার অর্থ 'to move' অর্থাৎ 'চলনক্রিয়া'। 


৪৪। 'প্রেষণা চক্র' বলতে কী বোঝায়? অথবা, প্রেষণা চক্রের চারটি ধাপ কী কী? 

উঃ যে স্তরগুলি অতিক্রম করলে বা যে স্তরগুলি চক্রাকারে আবর্তিত হলে প্রেষণা সৃষ্টি হয়, সেই স্তরগুলির এই আবর্তনকে 'প্রেষণা চক্র' বলা হয়। প্রেষণা চক্রের মূল চারটি স্তর হল— চাহিদা, তাড়না, উদ্দেশ্যমুখী আচরণ এবং উদ্দেশ্যপুরণ।


৪৫। প্রেষণা চক্রের প্রথম ও শেষ স্তরগুলি কী কী?

উঃ প্রেষণা চক্রের প্রথম স্তর হল চাহিদা বা অভাববোধ এবং শেষ স্তর হল উদ্দেশ্যপুরণ।


৪৬। প্রেষণার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উঃ প্রেষণার দুটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল—(i) শিখনে আগ্রহ বুদ্ধি করে এবং (ii) লক্ষ্যাভিমুখী আচরণ নির্দিষ্ট করে। 


৪৭। প্রেষণার শ্রেণিবিন্যাস করো।

উঃ প্রেষণাকে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা— জৈবিক প্রেষণা, ব্যক্তিগত বা মানসিক প্রেষণা এবং সামাজিক প্রেষণা


৪৮। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রেষণা সৃষ্টিতে শিক্ষকের কী কী কর্তব্য পালন করা উচিত?

উঃ শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রেষণা সৃষ্টির জন্য শিক্ষকের উচিত তাদের কর্মোদ্যোগী করে তোলা, প্রশংসার মাধ্যমে নতুন কাজে উৎসাহ দান করা, তাদের সফলতার জন্য পুরস্কার প্রদান করা ইত্যাদি।


৪৯। প্রেষণা হ্রাসের দুটি কারণ উল্লেখ করো।

উঃ প্রেষণা হ্রাসের দুটি কারণ হলো -- (i) কৌতুহল বা অনুরাগ এর অভাব এবং (ii) চাহিদা পূরণ না হওয়া।


৫০। মনোযোগ কী?

উঃ যে মানসিক প্রক্রিয়া ব্যক্তির চেতনার পরিধিকে সংকীর্ণ করে, তাকে কোন একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর কেন্দ্রীভূত করে সেই মানসিক প্রক্রিয়া কে মনোযোগ বলে।


৫১। মনোযোগের একটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

উঃ মনোযোগের একটি বৈশিষ্ট্য হল -- মনোযোগ একটি নির্বাচনধর্মী প্রক্রিয়া।


৫২। মনোযোগ এর মূল শর্ত বা নির্ধারকগুলি কী কী?

উঃ মনোযোগ এর মূল শর্ত বা নির্ধারক গুলি হল -- (i) বিষয়কেন্দ্রিক বা বস্তুগত শর্ত (ii) মনোগত শর্ত য়এবং (iii) দৈহিক বা বাহ্যিক শর্ত।


৫৩। মনোযোগের বিষয়কেন্দ্রিক শর্তগুলি কী কী?  অথবা মনোযোগের দুটি বস্তুগত নির্ধারকের নাম লেখ।

উঃ মনোযোগের বিষয়কেন্দ্রিক শর্তগুলি হল--- তীব্রতা, আকৃতি, পুনরাবৃত্তি, নতুনত্ব, গতিশীলতা, বৈপরীত্য ইত্যাদি।


৫৪। মনোযোগের মনোগত শর্তগুলি কী কী? অথবা মনোযোগের একটি অভ্যন্তরীণ উদ্দীপক এর নাম লেখ

উঃ মনোযোগের মনোগত শর্তগুলি হল -- আবেগ, অভ্যাস, আগ্রহ, প্রক্ষোভ, মানসিক প্রবণতা, আকাঙ্ক্ষা ইত্যাদি।


৫৫। মনোযোগের দৈহিক শর্ত গুলি কী কী? 

উঃ মনোযোগের দৈহিক শর্তগুলি হল --ইন্দ্রিয়সমূহের বিশেষ অবস্থা, আচরণের পরিবর্তন, ব্যক্তিগত বিশেষত্ব ইত্যাদি।


৫৬। মনোযোগ এর বিস্তারমাপক যন্ত্র টির নাম কী?

উঃ মনোযোগের বিস্তার মাপক যন্ত্র টির নাম ট্যাচিসটোস্কোপ ( Tachistoscope)।


৫৭। কোন যন্ত্রের সাহায্যে শ্রবণগত মনোযোগ এর বিস্তার মাপা হয়?

উঃ মেট্রোনোম (Metronome) নামক যন্ত্রের সাহায্যে শ্রবণ গত মনোযোগের বিস্তার পরিমাপ করা হয়।


৫৮। আগ্রহ বা অনুরাগ কী?

উঃ আগ্রহ বা অনুরাগ হল বাস্তব বা কাল্পনিক কোনো বস্তু, ঘটনা বা অবস্থার প্রতি এক বিশেষ কৌতূহল, অনুভূতি, যা ব্যক্তিকে ওই বিষয়টি সম্পর্কে উদ্বুদ্ধ করে ও তাকে মনোযোগী করে তোলে।


৫৯। 'আগ্রহ' বা 'Interest' শব্দটির উৎপত্তি কোথা থেকে হয়েছে? 

উঃ ‘আগ্রহ’-এর ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘Interest’ একটি ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ হল ‘it concerns' or 'it matters'


 ৬০। কোন্ মনোবিদ আগ্রহকে ‘সুপ্ত মনোযোগ’ বলেছেন?

উঃ মনোবিদ ম্যাকডুগাল আগ্রহকে ‘সুপ্ত মনোযোগ’ বলেছেন। 


৬১। আগ্রহের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো। অথবা, আগ্রহের একটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।”

উঃ আগ্রহের দুটি বৈশিষ্ট্য হল— (i) আগ্রহ একটি অনুভূতিনির্ভর প্রক্রিয়া এবং (ii)মনোযোগের পূর্ব শর্ত বা প্রাথমিক শর্তই হল আগ্রহ।


৬২। স্পিয়ারম্যানের মানসিক ক্ষমতা সংক্রান্ত তত্ত্বটি প্রথম কত খ্রিস্টাব্দে, কোন্ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়?

উঃ স্পিয়ারম্যানের মানসিক ক্ষমতা সংক্রান্ত তত্ত্বটি প্রথম ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দে 'আমেরিকান জার্নাল অফ সাইকোলজি'-তে প্রকাশিত হয়।


৬৩। স্পিয়ারম্যানের মানসিক ক্ষমতার তত্ত্বটি কী নামে পরিচিত এবং এটি কোন্ প্রবন্ধাকারে প্রকাশ পায়।

উঃ স্পিয়ারম্যানের মানসিক ক্ষমতার তত্ত্বটি 'দ্বি-উপাদান তত্ত্ব' নামে পরিচিত এবং এটি 'General Intelligence Objectively Determined and Measured' নামক প্রবন্ধাকারে প্রকাশ পায়।

 

৬৪। সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বলতে কী বোঝো? অথবা, স্পিয়ারম্যানের দ্বি-উপাদান তত্ত্বে g উপাদান বলতে কী বোঝো? 

উঃ যে মানসিক ক্ষমতা জন্মগত ও সহজাত এবং যে-কোনো কাজেই কমবেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে, তাকে সাধারণ মানসিক ক্ষমতা বলে। স্পিয়ারম্যান তাঁর তত্ত্বে এই ক্ষমতাকে 'G-factor' বা g-উপাদান বলে উল্লেখ করেছেন। 


৬৫। স্পিয়ারম্যানের মানসিক ক্ষমতা সংক্রান্ত তত্ত্বে উল্লিখিত সাধারণ উপাদানের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উঃ স্পিয়ারম্যানের মানসিক ক্ষমতা সংক্রান্ত তত্ত্বে উল্লিখিত সাধারণ উপাদানের দুটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হল -- (i) সাধারণ উপাদান হল জন্মগত ও (ii) এই উপাদান সর্বজনীন।


৬৬। বিশেষ মানসিক ক্ষমতা কী?*

উঃ যখন কোনো একটি কাজের জন্য ব্যক্তির সাধারণ মানসিক ক্ষমতার পাশাপাশি কোনো বিশেষ সামর্থ্যের প্রয়োজন হয়। এবং ওই কাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজে তা ব্যবহৃত হয় না, তাকে 'বিশেষ মানসিক ক্ষমতা' বলে। স্পিয়ারম্যান তাঁর তত্ত্বে এই ক্ষমতাকে 'S-factor' বলেছেন। 


৬৭। বিশেষ ক্ষমতার যে-কোনো দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উঃ বিশেষ ক্ষমতার উল্লেখযোগ্য দুটি বৈশিষ্ট্য হল – (i) বিশেষ উপাদানের সংখ্যা একাধিক এবং (ii)বিশেষ উপাদান ব্যক্তিকেন্দ্রিক।


 ৬৮। সাধারণ মানসিক ক্ষমতার সঙ্গে বিশেষ মানসিক ক্ষমতার দুটি পার্থক্য দেখাও। 

উঃ (i)সাধারণ মানসিক ক্ষমতা একটি সর্বজনীন ক্ষমতা; কিন্তু বিশেষ মানসিক ক্ষমতা বিশিষ্ট ক্ষমতা, সর্বজনীন নয়।

(ii) সাধারণ মানসিক ক্ষমতা জন্মগত; আর বিশেষ মানসিক ক্ষমতা অর্জিত।


৬৯। 'সহগতি' বলতে কী বোঝো?

উঃ রাশিবিজ্ঞানের ভাষায়, দুই বা ততোধিক চলের মধ্যে শিখন পারস্পরিক যে সম্বন্ধ, তাকেই 'সহগতি' বলা হয়। যেমন বৃষ্টি ও জলস্তর হ্রাসবৃদ্ধির সম্বন্ধ। 


৭০। ‘শূন্য সহগতি' কাকে বলে? 

উঃ যখন দুটি পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত চলরাশির একটির হ্রাস বা বৃদ্ধি অপরটির উপর কোনো প্রভাব ফেলে না, তখন ওই দুটি চলের মধ্যে যে সম্বন্ধ থাকে, তাকে 'শূন্য সহগতি' বলা হয়। যেমন- কোনো ব্যক্তির বাড়িতে প্রবেশ করা মাত্র বিদ্যুৎ চলে যাওয়া।


৭১।  'সহগতির সহগাঙ্ক' বলতে কী বোঝায়?

উঃ যে সাংখ্যমান দ্বারা দুটি পরস্পর সম্বন্ধযুক্ত চলরাশির পরিমাণ নির্ণয় করা হয়, তাকে 'সহগতির সহগাঙ্ক' বলে। সহগতির সহগাঙ্ককে স্পিয়ারম্যান তাঁর তত্ত্বে 'r' দ্বারা প্রকাশ করেছেন। 


৭২। টেট্রাড সমীকরণের ক্ষেত্রে r, a, b, p. q-এর মাধ্যমে কোন্ কোন্ বিষয়কে ব্যাখ্যা করা হয়েছে? 

অথবা, স্পিয়ারম্যানের টেট্রাড সমীকরণে ‘r' বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

উঃ টেট্রাড সমীকরণের ক্ষেত্রে 'r' হল সহগতির সহগাঙ্ক, 'a' হল বৈপরীত্য, ‘b’ হল পার্থক্যকরণ, 'p' হল সম্পূর্ণকরণ এবং 'q' হল বাতিলকরণ।


৭৩। প্রাথমিক বা দলগত উপাদান তত্ত্বটি কবে, কোন্ গ্রন্থে প্রথম প্রকাশিত হয়?

উঃ প্রাথমিক বা দলগত উপাদান তত্ত্বটি ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে 'The Nature of Intelligence' গ্রন্থে প্রথম প্রকাশিত হয়।


৭৪। থার্স্টোনের দলগত উপাদান তত্ত্বে ক-টি মৌলিক সামর্থ্যের উল্লেখ পাওয়া যায় ও কী কী? অথবা,  তত্ত্ব অনুযায়ী যে-কোনো দুটি প্রাথমিক মানসিক ক্ষমতার নাম লেখো।" 

উঃ  থার্স্টোনের দলগত উপাদান তত্ত্বে সাতটি মৌলিক সামর্থ্যের উল্লেখ পাওয়া যায়। 

সেগুলি হল- (i)আঙ্কিক বা সংখ্যাগত সামর্থ্য বা N. (ii) স্থানগত সম্বন্ধ নির্ণয়ের সামর্থ্য বা S (iii) স্মৃতি বা স্মরণক্রিয়ার সামর্থ্য বা M. (iv) বাচনিক সামর্থ্য বা V. (v) নির্ভুল প্রত্যক্ষণের সামর্থ্য বা P,  (vi) যুক্তি বা বিচারক্ষমতার সামর্থ্য বা R এবং (vii) উপযুক্ত বাক্য বা শব্দ ব্যবহারের সামর্থ্য বা W।


 ৭৫। থার্স্টোনের বহু উপাদান তত্ত্বে 's' বলতে কী বোঝানো হয়?

উঃ থার্স্টোনের বহু উপাদান তত্ত্বে 's' বলতে স্থানগত নির্ণয়ের সামর্থ্যকে বোঝানো হয়।


৭৬। স্পিয়ারম্যানের মানসিক ক্ষমতা সংক্রান্ত তত্ত্ব ও থার্স্টোনের মানসিক ক্ষমতা সংক্রান্ত তত্ত্বের মধ্যে দুটি পার্থক্য ব্যক্ত করো।

উঃ দ্বি-উপাদান তত্ত্ব ও দলগত উপাদান তত্ত্বের পার্থক্যগুলি নিম্নরূপ :

 (i) দ্বি-উপাদান তত্ত্বে দুটি মানসিকক্ষমতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু দলগত উপাদান তত্ত্বে  সাতটি প্রাথমিক ক্ষমতা বা উপাদানের কথা বলা হয়েছে।

(ii) দ্বি-উপাদান তত্ত্বে  জন্মগত ও  অর্জিত উভয় ধরনের মানসিক ক্ষমতাই কার্যকরী হয়।  কিন্তু দলগত উপাদান তত্ত্বের প্রতিটি মানসিক ক্ষমতা জন্মগত।


৭৭। কত খ্রিস্টাব্দে কোন বইতে মনোবিদ গার্ডেনার তার সাতটি বুদ্ধির কথা প্রচার করেন?

উঃ ১৯৮৩ খ্রিস্টাব্দে 'Theory of Intelligence নামক বইতে মনোবিদ গার্ডেনার তাঁর সাতটি বুদ্ধির কথা প্রচার করেন।


৭৮। 'কার্যকরী বুদ্ধি’ বলতে কী বোঝো? 

উঃ দৈনন্দিন জীবনে বাস্তবমুখী কাজ করার ক্ষমতা বা সামর্থ্যকেই অনেক মনোবিদ 'কার্যকরী বুদ্ধি’ বলেছেন।


৭৯। বুদ্ধির একটি বৈশিষ্ট্য লেখো।

উঃ বুদ্ধির একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল- বুদ্ধি হল ব্যক্তির একটি সহজাত বা মৌলিক ক্ষমতা, যা অনুশীলন দ্বারা কার্যকরী হয়ে থাকে। 


৮০। বুদ্ধির অভীক্ষা কী?*

উঃ বুদ্ধি পরিমাপের জন্য ব্যবহৃত কৌশলগুলিকে বুদ্ধির অভীক্ষা বলা হয়। 


৮১।  বুদ্ধ্যঙ্ক কী?

উঃ বুদ্ধ্যঙ্ক হল কোনো ব্যক্তির বুদ্ধির মান নির্দেশক একক। কোনো ব্যক্তির বুদ্ধ্যঙ্ক নির্ণয়ের জন্য তার মানসিক বয়স ও তার জন্মবয়সের অনুপাত নির্ণয় করা প্রয়োজন।


৮২।  বুদ্ধ্যঙ্ক নির্ণয়ের সমীকরণটি লেখো।” 

উঃ বুদ্ধ্যঙ্ক নির্ণয়ের সমীকরণটি হল

                মানসিক বয়স

বুদ্ধ্যঙ্ক =    -------------------            x 100

                     জন্মবয়স


[ বুদ্ধ্যঙ্কের মান যাতে ভগ্নাংশে না হয়, সেজন্য এই অনুপাতকে 100 দিয়ে গুণ করতে হয়।]


৮৩। বুদ্ধ্যঙ্ক বা Intelligence Quotient-এর উদ্ভাবক কে?

উঃ বুদ্ধ্যঙ্ক বা Intelligence Quotient বা IQ-এর উদ্ভাবক ছিলেন মনোবিদ উইলিয়ম স্টার্ন।


৮৪। বুদ্ধির বাছাই তত্ত্ব বা Sampling Theory-এর প্রবক্তা হলেন।

উঃ মনোবিদ থম্পসন।














Read More

Sunday, 10 October 2021

শিক্ষাবিজ্ঞানের অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (জানার প্রক্রিয়া)

Leave a Comment

                 শিক্ষা বিজ্ঞান

জানার প্রক্রিয়া : সংবেদন , প্রত্যক্ষণ ও ধারণা

অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর      প্রতিটি প্রশ্নের মান-২

প্রশ্ন ১। 'প্রত্যক্ষণ' বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ প্রত্যক্ষণ হল সংবেদনের অর্থযুক্ত রূপ। বস্তুর যাবতীয় ‘গুণ ও বৈশিষ্ট্য যেসব মানসিক প্রক্রিয়ার সাহায্যে সরবরাহ করা হয়, তাকে বলা হয় 'প্রত্যক্ষণ' (Perception)।

প্রশ্ন ২। সংবেদন কী ?

 উত্তরঃ সংবেদন বস্তুনিষ্ঠ বাহ্য উদ্দীপক। উদ্দীপক ইন্দ্রিয়ের সংস্পর্শে এলে যে প্রাথমিক বোধ জাগে, তা হল ‘সংবেদন'।

প্রশ্ন: ৩। লেন্‌স্‌ বলতে কী বোঝো?

উত্তরঃ কনীনিকার পিছনে একরকম তরল পদার্থ জমাট বেঁধে স্বচ্ছ কাচের আকার ধারণ করেছে, একে 'লেস' বলে।

প্রশ্ন ৪। স্বনতীক্ষ্ণতা কাকে বলে?

উত্তরঃ স্বনতীক্ষ্ণতা (Pitch): স্বনতীক্ষ্ণতা নির্ভর করে প্রতি সেকেণ্ড বায়ুতরঙ্গের কম্পনসংখ্যা এবং শব্দের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ওপর। বায়ুর তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত ছোটো হবে, সেই শব্দ তত তীক্ষ্ণ হবে। অপরপক্ষে বায়ুর তরঙ্গদৈর্ঘ্যে যত বড়ো হবে সেই শব্দের তীক্ষ্ণতা তত কম হবে। সুতরাং আমরা বলতে পারি, একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যতসংখ্যক বায়ুতরঙ্গ কানের পর্দায় আঘাত করে, তার ওপরই নির্ভর করে ‘স্বনতীক্ষ্ণতা’ বা ‘Pitch |

প্রশ্ন ৫। স্বনগভীরতা বলতে কী বোঝো?

■ উত্তর ঃ স্বনগভীরতা নির্ভর করে বায়ুতরঙ্গের শক্তি বা বিস্তারের ওপর। বায়ুতরঙ্গের উচ্চতা বা অনুচ্চতার জন্য স্বনগভীরতা বেশি বা কম হয়। স্বনতীক্ষ্ণতা যত বেশি হয়, ততই তা সরু ও মিহি হয়।

প্রশ্ন ৬। উপস্বনতা কী?

উত্তর ঃ উপস্বনতা (Timbre) : প্রত্যেক শব্দের একটি করে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে, যার জন্য ওই শব্দকে অন্যান্য শব্দ থেকে পৃথক করে বুঝে নেওয়া যায়। শব্দের এই বৈশিষ্ট্যকে বলে উপস্বনতা। হারমোনিয়াম ও সেতার একসঙ্গে এক সুরে একই স্বনতীক্ষ্ণতায় ও স্বনগভীরতায় বাজলেও কোন শব্দটি হারমোনিয়াম এবং কোন শব্দ সেতারের তা আমরা বুঝতে পারি উপস্বনতার সাহায্যে।

প্রশ্ন ৭। ধারণা কী?

উত্তর ঃ একই শ্রেণির বিভিন্ন বস্তুর মধ্যে যে সাধারণ গুণ বর্তমান আছে, তার অভিজ্ঞতাই হল 'ধারণা'।

প্রশ্ন ৮। সংবেদন ও প্রত্যক্ষণের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।

উত্তর ঃ (i) সংবেদন বস্তুনিষ্ঠ বাহ্য উদ্দীপক আর প্রত্যক্ষণ হল মানসিক প্রক্রিয়া।

(ii) সংবেদন হল প্রত্যক্ষণের উপাদান আর প্রত্যক্ষণ হল সংবেদনের অর্থযুক্ত রূপ

প্রশ্ন ৯। ধারণার দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।

উত্তর ঃ (i) ধারণা জীবন অভিজ্ঞতার সঙ্গে যুক্ত।

(ii) ধারণা সংরক্ষণ করা সম্ভব।

১০। প্রত্যক্ষণ কয় প্রকার? ও কী কী? 

উত্তরঃ প্রত্যক্ষণ তিন প্রকার

(i) সাক্ষাৎ প্রত্যক্ষণ

(ii) অর্জিত প্রত্যক্ষণ

(iii) সংপ্রত্যক্ষণ

প্রশ্ন ১১। প্রত্যক্ষণের যে-কোনো চারটি স্তরের নাম করো।

 উত্তরঃ পৃথকীকরণ, সাদৃশ্য খোঁজা, উৎস ও স্থান নির্দেশ করা ও বিশ্বাস করা।

প্রশ্ন ১২। ইন্দ্রিয় সংবেদনে সাহায্য করে এমন চারটি ইন্দ্রিয়ের নাম লেখো। 

 উত্তরঃ চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা ও জিহ্বা।

প্রশ্ন ১৩। 'সোমেথেসিস্' কথার অর্থ কী? কখন এটি হয়ে থাকে?

 উত্তরঃ সোমেথেসিস' কথার অর্থ হল – দৈহিক অনুভূতি। দেহ যখন বিশ্রাম অবস্থায় থাকে তখন এই সংবেদন পাওয়া যায়।

প্রশ্ন ১৪। জানার প্রক্রিয়াটির বিভিন্ন স্তরগুলি রেখাচিত্রের সাহায্যে দেখাও। 

উত্তরঃ উদ্দীপক → সংবেদন  →প্রত্যক্ষণ  →ধারণা → জ্ঞান।


প্রশ্ন ১৫। মনোবিদ টিচেনার সংবেদনের কয়টি গুণের কথা বলেছেন? সেগুলি কী কী?

 উত্তরঃ মনোবিদ টিচেনার সংবেদনের চারটি গুণের কথা বলেছেন। যথা—

(i) গুণ,

(ii) তীব্রতা,

(iii) স্পষ্টতা,

(iv) স্থায়িত্ব।

প্রশ্ন ১৬। আমাদের পেশি কয় প্রকার ও কী কী? 

উত্তরঃ আমাদের পেশি তিন প্রকার। যথা— ঐচ্ছিক পেশি, অনৈচ্ছিক পেশি এবং হূৎপিণ্ডের পেশি।

প্রশ্ন ১৭। কর্নিয়া কী?

উত্তরঃ চোখের ওপরের আবরণটি সামনের দিকে পুরু, স্ফীত অথচ স্বচ্ছ যার মধ্য দিয়ে চোখের ভিতর আলোক প্রবেশ করতে পারে, এই অংশটিকেই ‘কর্নিয়া' বলে।

প্রশ্ন ১৮। তারারন্দ্র কাকে বলে?

উত্তরঃ কনীনিকার মধ্যভাগে একটি ক্ষুদ্র ছিদ্র আছে যার মধ্য দিয়ে চোখের ভিতর আলোক প্রবেশ করে। এই ছিদ্রকে বলে ‘তারারন্ধ্র’ (Pupil)।

প্রশ্ন ১৯। জলীয় রস কী?

উত্তরঃ কর্নিয়া ও কনীনিকার মধ্যে যে জায়গাটুকু আছে তা এরকম বর্ণহীন তরল পদার্থের দ্বারা পূর্ণ থাকে। এই তরল পদার্থকে বলা হয় 'জলীয় রস' (aqueous humour)।

প্রশ্ন ২০। প্রত্যক্ষণের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা গঠন করার ক্ষেত্রে মনের অবস্থানগুলো কী ? 

উত্তরঃ প্রত্যক্ষণের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা গঠন করার ব্যাপারে মনের কয়েকটি অবস্থান লক্ষ করা যায়। যেমন -

(i) পূর্ব অভিজ্ঞতা

(ii) প্রসঙ্গ ও পরিবেশের প্রভাব

(iii) আবেগ ও মানসিক উত্তেজনা

(iv) অভিভাবকের প্রভাব

(v) সমাজের প্রভাব।


প্রশ্ন ২১। প্রত্যক্ষণ প্রক্রিয়ার ক্যাটি দিক ও কী কী?


উত্তর : প্রত্যক্ষণ প্রক্রিয়ার দুটি দিক। যথা—


(i) উপস্থাপনমূলক প্রক্রিয়া এবং (ii) পুনরুজ্জীবনমূলক প্রক্রিয়া। 

প্রশ্ন ২২। সংবেদনের উপাদান কয়টি ও কী কী?


উত্তরঃ সংবেদনের উপাদান তিনটি। যথা— উদ্দীপক, স্নায়ুতন্ত্র ও মস্তিষ্ক।


প্রশ্ন ২৩। বৌদ্ধিক ক্ষেত্রগুলি কী কী?


উত্তর: বৌদ্ধিক ক্ষেত্র গুলি হল- জ্ঞান, বোধ, প্রয়োগ, বিশ্লেষণ, সংশ্লেষণ ও মূল্যায়ন।


প্রশ্ন ২৪। প্রাক্ষোভিক ক্ষেত্রগুলি কী কী? 

উত্তরঃ প্রাক্ষোভিক ক্ষেত্র গুলি হল- অনুভূতি, আগ্রহ, কর্মোদ্যোগ ও মূল্যবোধ।


প্রশ্ন ২৫। সাইকোমোটর ক্ষেত্রগুলি কী কী?


উত্তর ঃ সাইকোমোটর ক্ষেত্র গুলি হল - তাৎক্ষণিক অনুকরণ, কর্মপ্রচেষ্টা, সমন্বয় ও স্বভাব দক্ষতা।


প্রশ্ন ২৬। পরিবেশ সম্পর্কে শিশুরা কীভাবে ধারণা গঠন করে? দুটি বিষয় উল্লেখ করো। 

উত্তর : (i) অনুভবের মধ্য দিয়ে এবং

(ii) বস্তুর গতিশীলতা দেখে– শিশুরা ধারণা গঠন করে।


প্রশ্ন ২৭। স্কিমা কী?


উত্তরঃ কোনো বিষয় সম্বন্ধে সংগৃহীত তথ্যের ক্ষুদ্রতম একককে ‘স্কিমা’ বলে।


প্রশ্ন ২৮। প্রজ্ঞা কাকে বলে?


উত্তরঃ মানুষ যে মানসিক প্রক্রিয়ার দ্বারা তার চারপাশের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করে এবং সেই জ্ঞানের প্রয়োগ করে সমস্যার সমাধান করতে পারে তাকে ‘প্রজ্ঞা (cognition) বলে।


প্রশ্ন ২৯। জ্ঞান কাকে বলে?


উত্তরঃ আমরা যে মানসিক প্রক্রিয়ার দ্বারা আমাদের পরিবেশ সম্বন্ধে বিশেষ ধারণা লাভ করতে পারি, তাকে ‘জ্ঞান' বলে।


প্রশ্ন ৩০। আত্মীকরণ কী?


 উত্তরঃ সংগৃহীত তথ্য সরাসরি আমাদের জ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে জ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত হয়, একে ‘আত্মীকরণ' বলে।


প্রশ্ন ৩১। পিঁয়াজে (Piaget) প্রজ্ঞামূলক বিকাশকে কয়টি স্তরে ভাগ করেছেন? কী কী? 

উত্তরঃ পিঁয়াজে প্রজ্ঞামূলক বিকাশকে চারটি স্তরে ভাগ করেছেন। যথা—

(i) সংবেদন সঞ্চালনমূলক স্তর। (০-২ বছর)

(ii) প্রাক সক্রিয়তার স্তর। (২-৬ বছর)

(iii) মূর্ত সক্রিয়তার স্তর। (৬-১১ বছর)

(iv) নিয়মতান্ত্রিক সক্রিয়তার স্তর। (১১-১৮ বছর)



Read More

Monday, 18 January 2021

Education ( শিক্ষাবিজ্ঞান) প্রশ্ন : শিক্ষার বৃত্তিমূলক লক্ষ্য, গণতান্ত্রিক লক্ষ্য, ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্য এবং সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্য বলতে কী বোঝ? এই লক্ষ্যগুলির সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি লেখো।

Leave a Comment

 প্রশ্ন : শিক্ষার বৃত্তিমূলক লক্ষ্য, গণতান্ত্রিক লক্ষ্য, ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্য এবং সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্য বলতে কী বোঝ? এই লক্ষ্যগুলির সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি লেখো।

OR, শিক্ষার  বৃত্তিমূলক  লক্ষ্য বলতে কী বোঝ? এই লক্ষ্যের সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি লেখো।

 OR, শিক্ষার   গণতান্ত্রিক  লক্ষ্য বলতে কী বোঝ? এই লক্ষ্যের সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি লেখো।

OR, শিক্ষার ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্য বলতে কী বোঝ? এই লক্ষ্যের সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি লেখো।

OR, শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্য বলতে কী বোঝ? এই লক্ষ্যের সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি লেখো।

উঃ 

ভূমিকা : শিক্ষা একটি গতিশীল প্রক্রিয়া এবং এই গতিশীল প্রক্রিয়ার জন্য নির্দিষ্ট। কোনাে লক্ষ্য নির্ধারণ করা খুবই কঠিন। তাই বিভিন্ন দেশের মনীষীরা বিভিন্ন দিকের উৎকর্ষ সাধনের জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকমের লক্ষ্যের কথা বলেছেন। যেমন বৃত্তিমূলক লক্ষ্য, সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্য, গণতান্ত্রিক লক্ষ্য, ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্য ইত্যাদি।

 বৃত্তিমূলক লক্ষ্য : প্রাচীনকালের জীবনযাত্রা ছিল অত্যন্ত সহজ, সরল। তাই জীবন  ধারণের জন্য জটিল কৌশল আয়ত্ত করতে হতাে না। কিন্তু বর্তমানকালে সমাজে জটিলতা বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের অধিক অভিজ্ঞতার প্রয়ােজন পড়ছে। পিতামাতার একার পক্ষে এই জটিল পরিস্থিতির জন্য স্বার্থক অভিযােজনের শিক্ষাপ্রদান সম্ভব না হওয়ার ফলে শিক্ষা হয়ে উঠল নিয়মতান্ত্রিক। বর্তমানকালে যে সকল অভিজ্ঞতাগুলি শিক্ষার্থীকে গ্রহণ করতে হয়, তাদের মধ্যে বৃত্তির উপযােগী করে গড়ে তােলার শিক্ষা হলাে অন্যতম। 

শিক্ষার যে সমস্ত লক্ষ্য শিশুকে ভবিষ্যতের বৃত্তি অর্জনের জন্য প্রস্তুত করে তােলে তাকেই বৃত্তিমূলক শিক্ষা বলে। এই লক্ষ্যের মূল উদ্দেশ্যই হলাে শিক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তিকে উপার্জনক্ষম করে তােলা। অথাৎ শিক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তিকে এমন কতকগুলি কর্মদক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা যার দ্বারা সে জীবিকা অর্জনে সক্ষম হয়। 

শিক্ষার বৃত্তিমূলক লক্ষ্যের সুবিধা : বৃত্তিমূলক লক্ষ্যের সুবিধাগুলি হলাে—

 ক) এই ধরনের শিক্ষার মধ্য দিয়ে ব্যক্তির অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য আনা ও বজায় রাখা  সম্ভব হয়। সমালােচক সুশীল রায় বলেছেন, এই আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যের ফলে স্বাভাবিকভাবে ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে, তার উদারতা আসবে এবং তার মধ্যে নীতিবােধ জাগ্রত হবে।

 খ) বৃত্তিমূলক লক্ষ্য শিক্ষাকে বহুলাংশে মনােবিদ্যাসম্মত করে তােলে। মনােবিদগণের মতে, ব্যক্তি যখন নিজে তার কাজের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে সচেতন হন তাহলে ব্যক্তিব মধ্যে সেই কাজ বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। সমালােচক সুশীল রায় বলেছেন, বৃত্তিমুখী লক্ষ্য, শিক্ষার্থীর শিক্ষাকালীন আচরণকে তার কাছে অনেক বেশী অর্থপূর্ণ এবং সহজ করে তােলে।

 গ) শিশুকে কর্মকেন্দ্রিক এবং কর্মের প্রতি মর্যাদাবােধের বিকাশে বৃত্তিমূলক শিক্ষা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সকলপ্রকার শিশুদের ক্ষেত্রেই এই শিক্ষা বিশেষ উপযােগী।

ঘ) সমালােচক সুশীল রায়ের ভাষায় বলা যায়, শিক্ষা যদি বৃত্তিমূলক দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যাভিমুখী হয়, তাহলে সেই শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে সামাজিক যােগ্যতাসম্পন ব্যক্তিত্বেও রূপান্তরিত করা সহজ হয়। কারণ এই শিক্ষার সহায়তায় শিক্ষার্থী পরবর্তীজীবনে সফলভাবে সামাজিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে তার প্রয়ােজনীয়তাকে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়।

শিক্ষার বৃত্তিমূলক লক্ষ্যের অসুবিধা বা ত্রুটি: বৃত্তিমূলক শিক্ষার লক্ষ্যের সীমাবদ্ধতাগুলি হলাে— 

ক) উপার্জনশীল হওয়াই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়, কিছু অতিরিক্ত বৃত্তিমূলক শিক্ষা মানুষের দিগন্তকে সীমিত করে তােলে। 

খ) সার্থক জীবনযাপন বলতে বৃত্তিমূলক শিক্ষায় অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্যকেই বােঝানাে হয় — যা কখনই সুষ্ঠু সমাজের কাম্য নয়। 

গণতান্ত্রিক লক্ষ্য : গণতন্ত্র বলতে বােঝায় সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা। স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই আমাদের দেশ তথা ভারতবর্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে পরিচিত। অর্থাৎ এই দেশের সকল নাগরিকেরই সমান অধিকারের সাথে এবং স্বাধীনভাবে একত্রিত হয়ে বসবাস করার অধিকার রয়েছে। তাই এই দেশের প্রতিটি নাগরিকেরই কর্তব্য হলাে এই সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা বজায় রাখা, যা শিক্ষার মাধ্যমেই সম্ভব। অথাৎ দেশের নাগরিকদের মধ্যে সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা বােধের বিকাশে শিক্ষার ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। 

সুতরাং শিক্ষার গণতান্ত্রিক লক্ষ্য বলতে বােঝায়, দেশের নাগরিকদের মধ্যে পারস্পরিক  সৌহার্দ্য ও সমতা বজায় রাখার ধ্যানধারণার বিকাশ ঘটানাে, সুষ্ঠু নাগরিক প্রস্তুত করা এবং সুনাগরিকদের দ্বারা পরিচালিত সুষ্ঠু দেশ গঠন করা ।

শিক্ষার গণতান্ত্রিক লক্ষের সুবিধা : গণতান্ত্রিক শিক্ষার সুবিধাগুলি হলাে—

 ক) এই শিক্ষার মাধ্যমে নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্যহীন মনােভাব প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়। 

খ) পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের মনােভাব গঠনে গণতান্ত্রিক শিক্ষা বিশেষভাবে পালন করে। 

গ) দেশের সম্পদকে সুষ্ঠভাবে ব্যবহারের শিক্ষা প্রদান করতে সাহায্য করে।

 ঘ) গণতান্ত্রিক শিক্ষা এক শােষণ ও বঞ্চনাহীন সমাজ সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। 

চ) প্রতিটি শিক্ষার্থীকে দেশের সুযােগ্য নাগরিক রূপে গড়ে তুলতে এবং দেশের ঐতিহ্যের প্রতি মর্যাদা সৃষ্টিতে গণতান্ত্রিক শিক্ষার ভূমিকা অনস্বীকার্য।

শিক্ষার গণতান্ত্রিক লক্ষ্যের অসুবিধা বা ত্রুটি : গণতান্ত্রিক শিক্ষার লক্ষ্যের ত্রুটি বা সীমাবদ্ধতার দিকগুলি হলাে— 

ক)  সমাজ ও দেশের সুখ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অনেক সময়ই ব্যক্তি - স্বার্থ উপেক্ষিত হয়। 

খ) অতিরিক্ত পরিমাণে দেশপ্রীতি মানুষকে স্বার্থপর ও নিজের ভৌগােলিক সীমাকেন্দ্রিক করে তােলে।


শিক্ষার ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্য : শিক্ষার লক্ষ্য এক নয়, বহু। যুগে যুগে বিভিন্ন দার্শনিক ও শিক্ষাবিদ শিক্ষার প্রকৃত লক্ষ্য নির্ধারণ করতে গিয়ে ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদী এবং সমাজতন্ত্রবাদী — এই দুটি গােষ্ঠীতে বিভক্ত হয়েছে। যেসব শিক্ষাবিদ শিক্ষার লক্ষ্য হিসেবে ব্যক্তির ব্যক্তিগত বিকাশকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন, তাঁদের বলা হয় ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী। ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদীদের মত অনুযায়ী শিক্ষার লক্ষ্য হল ব্যক্তির সম্ভাবনাময় ব্যক্তিত্বের যথাযথ বিকাশসাধন। এক্ষেত্রে ব্যক্তির দৈহিক, মানসিক, নৈতিক, আধ্যাত্মিক এবং বৃত্তিমূলক দিকের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। এখানে শিক্ষার কেন্দ্রে রয়েছে ব্যক্তি। তাই বলা হয় , শিক্ষার যে লক্ষ্য ব্যক্তির সামগ্রিক বিকাশে সহায়ক হয় এবং ব্যক্তির যাবতীয় প্রয়ােজন বা চাহিদাপূরণে সাহায্য করে , তাকেই শিক্ষার ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্য বলে। শিক্ষার ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্যের সমর্থকদের মধ্যে  রয়েছেন স্যার পার্সি নান, বাট্রান্ড রাসেল, স্বামী বিবেকানন্দ প্রমুখ। 

শিক্ষার ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্যের যেসব গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায় সেগুলি হল—

 (১) শিক্ষার লক্ষ্য নিরূপণের ক্ষেত্রে ব্যক্তি হল কেন্দ্রবিন্দু, (২) ব্যক্তিগত পার্থক্যকে গুরুত্ব দেওয়া, (৩) শিক্ষার মধ্য দিয়ে ব্যক্তির চাহিদা পূরণ করা এবং (৪) ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রেখে তার বিকাশ ঘটানাের চেষ্টা।

শিক্ষার ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্যের সুবিধা:

 (1) মানবশিশু পৃথিবীতে জন্মলাভ করে কতকগুলি বৈশিষ্ট্য নিয়ে। এই বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে কতকগুলি সাধারণ এবং কতকগুলি বিশেষ প্রকৃতির হয়। কেবলমাত্র ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষাই বিশেষ প্রকৃতির বৈশিষ্ট্যগুলিকে বিকশিত করতে এবং সংরক্ষণ করতে সমর্থ হয়। 

(2) শিশু পৃথিবীতে আবির্ভাবের মুহূর্তে সম্পূর্ণ নিষ্কলুষ অবস্থায় থাকে। পরিবেশই তাকে কলুষিত করে। তাই সমাজ - পরিবেশের বাইরে তাকে ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষায় শিক্ষিত করলে সে উন্নত ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে পারে। 

(3) প্রতিটি ব্যক্তিই একক সত্তা। দলগত পদ্ধতির সাহায্যে সকলকে একসাথে না পড়িয়ে ব্যক্তিকেন্দ্রিক পদ্ধতির সাহায্যে পাঠদান করলে প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্বকীয়তা বজায় থাকে এবং তারা নিজ নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী শেখার সুযােগ পায়।

 (4) মানবজীবনের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হল আত্মােপলদ্ধি। আত্মােপলদ্ধি দ্বারাই ব্যক্তির মধ্যে পরিপূর্ণতা আসে। ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষার মধ্য দিয়ে এই কাজটি ( আত্মােপলব্ধি ) সহজেই সম্পন্ন করা যায়। 

(5) ব্যক্তির দ্বারা সমাজ গঠিত হয়। তাই ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তির উন্নতি ঘটলে সমাজেরই উন্নতি হবে। 

শিক্ষার ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্যের অসুবিধা বা ত্রুটি :

(1) অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যক্তিকে স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক করে তােলে। ব্যক্তি তখন সমাজের কল্যাণের পরিবর্তে ব্যক্তিগত কল্যাণকে বড়াে করে দেখে ।

(2) ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষায় ব্যক্তিকে সর্বপ্রকার স্বাধীনতা দেওয়া হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই ব্যক্তি সেই স্বাধীনতার অপব্যবহার করে। 

(3) সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষা অসম্ভব। ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষা সমাজের মধ্যেই ঘটে, তাই ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষা পরােক্ষভাবে সমাজের ওপর নির্ভরশীল।

 (4) ব্যক্তিকেন্দ্রিক লক্ষ্যের সমর্থনে মনােবিজ্ঞানের যে তত্ত্ব রয়েছে তা ত্রুটিমুক্ত নয়। কারণ ব্যক্তি ও সমাজের মিথস্ক্রিয়ার ফলেই ব্যক্তিত্বের বিকাশ সম্ভব হয়। 

(5) প্রত্যেকের জন্য পৃথক শিক্ষা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং জটিল। শিক্ষার ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিকাশের সুবিধা ও অসুবিধাগুলির সাপেক্ষে এই কথা বলা যায় যে, কেবল ব্যক্তিকেন্দ্রিক লক্ষ্যের মাধ্যমে শিক্ষার আধুনিক লক্ষ্যপূরণ তথা জাতীয় বিকাশ সম্ভব নয়।

শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্য : শিক্ষার লক্ষ্য এক নয়, বহু। যুগে যুগে বহু দার্শনিক এবং শিক্ষাবিদ শিক্ষার প্রকৃত লক্ষ্য নির্ধারণ করতে গিয়ে ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদী এবং সমাজতন্ত্রবাদী — এই দুই গােষ্ঠীতে বিভক্ত হয়েছেন। যেসব শিক্ষাবিদ শিক্ষার লক্ষ্য হিসেবে সামাজিক দিকের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন তাদের বলা হয় সমাজতবাদী। তাঁরা মনে করেন সমাজের বাইরে ব্যক্তির পৃথক কোনাে অস্তিত্ব নেই। সামাজিক চাহিদা ও প্রত্যাশাপূরণের মধ্য দিয়েই ব্যক্তির চাহিদা ও প্রত্যাশাপূরণ সম্ভব। একইভাবে সমাজের অগ্রগতি ও উন্নয়ন হলেই ব্যক্তির অগ্রগতি ও উন্নয়ন নিশ্চিত হয়। তাই সমাজই হবে শিক্ষার লক্ষ্যের ভিত্তি। শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক মতবাদের সমর্থকদের মধ্যে হাবার্ট স্পেনসার, রস, ডিউই, গান্ধিজি প্রমুখের নাম বিশেষ উল্লেখযোগ্য। 

শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্যের বৈশিষ্ট্যগুলি হল— 

1) সমাজকে বাদ দিয়ে ব্যক্তির আলাদা অস্তিত্ব নেই। তাই সমাজের যা লক্ষ্য ব্যক্তি লক্ষ্যও তাই হবে। 

2) সমাজের কল্যাণ হলে ব্যক্তির কল্যাণ হবে।

 3) সমাজই ব্যক্তিকে নিরাপত্তা দিতে পারে।

 4) সামাজিক চাহিদা এবং আশা - আকাঙ্ক্ষা পূরণই হবে শিক্ষার কাজ।

  শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্যের সুবিধা

(1) সমাজজীবন ব্যক্তিকে সবধরনের নিরাপত্তার আশ্বাস দেয় এবং তার সামনে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়। 

(2) সমাজ পরিবেশই বংশানুক্রমে অর্জিত অতীতের সুন্দর ও সফল অভিজ্ঞতাগুলি ব্যক্তি সামনে  অনুশীনের জন্য তুলে ধরে। 

(3) সামাজিক রীতিনীতি এবং অনুশাসনগুলি ব্যক্তির আচরণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ব্যক্তি ও সমাজের কল্যাণ সাধন করে।

 (4) সমাজের সভ্য হিসেবে প্রতিটি ব্যক্তি সমাজের যাবতীয় সুযােগসুবিধা ভােগ করে। শুধু তাই নয়, এই সুযােগ সুবিধাকে ব্যক্তি তার আশা - আকাঙ্ক্ষার পরিতৃপ্তির কাজে ব্যবহার করে। 

(5) সমাজ দুর্বল এবং সর্বল সব ধরনের ব্যক্তিকেই আশ্রয় দেয় এবং সবারই মঙ্গল কামনা করে। 

(6) এমন কতকগুলি দায়িত্ব থাকে যা এককভাবে কোনাে ব্যক্তির পক্ষেই সম্পাদন করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে সমাজ বা রাষ্ট্র ওই কাজের দায়িত্ব নেয়। ফলে সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্যই বলবৎ হয়।

 শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্যের ত্রুটি বা অসুবিধা : 

(1) শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্যে সমাজের চাহিদা, আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের ওপর অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়। ব্যক্তির সামর্থ্য, চাহিদা, ইচ্ছা - অনিচ্ছা অবহেলিত হয়। এর ফলে ব্যক্তির যেমন কল্যাণ হয় না, তেমনি সমাজেরও কল্যাণ সাধিত হয় না। 

(2) শিক্ষার লক্ষ্য হিসেবে সমাজতান্ত্রিক মতবাদের প্রাধান্য রাষ্ট্রপ্রধানদের স্বেচ্ছাচারিতার সুযােগ করে দেয়, গণতন্ত্র অবহেলিত হয়। এই ধরনের শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষক, ছাত্র — সকলের মধ্যেই স্বেচ্ছাচারিতার মানসিকতা তৈরি হয়। 

(3) শিক্ষার লক্ষ্য হিসেবে সমাজতান্ত্রিকতার ওপর খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়ায় ব্যক্তিস্বাধীনতা ক্ষুন্ন হয়। ব্যক্তির সৃজনশীলতা বিকাশের পথে বাধার সৃষ্টি হয়। 

(4) পুরােপুরি সমাজতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যক্তির আত্মবিকাশের পথ রুদ্ধ হয়, ফলে ব্যক্তির মধ্যে ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হয়। সমস্ত মানুষের মধ্যে পুঞ্জীভূত এই ক্ষোভ পরে বিদ্রোহের আকার ধারণ করতে পারে ।


<<<<<<<<<<<<<< The End >>>>>>>>>>>>

Read More

Friday, 13 November 2020

HS Education (শিক্ষাবিজ্ঞান) অধ্যায়: শিখন কৌশল -- সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর।

1 comment

 শিক্ষাবিজ্ঞান - দ্বাদশ শ্রেণী (wbchse)

অধ্যায়: শিখন কৌশল

সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তরঃ (দু একটি বাক্যে উত্তর দিতে হবে।) মান - 1

১) শিখন তত্ত্ব বা শিখন কৌশল বলতে কী বােঝাে? 

উঃ যে পদ্ধতিতে শিখন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়, তাকে শিখন তত্ত্ব বা ‘শিখন কৌশল’ বলা হয়। 

) শিখনের যে - কোনাে দুটি কৌশল উল্লেখ করাে। 

উঃ শিখনের বিভিন্ন কৌশলের মধ্যে মনােবিদগণ দুটি কৌশলকে গুরুত্বপূর্ণ বলে অভিহিত করেছেন - (i) অনুবর্তন এবং (ii) সমস্যাসমাধান কৌশল । 

৩) 'অনুবর্তন’ বলতে কী বােঝাে ?

উঃ যে প্রক্রিয়ায় কৃত্রিম উদ্দীপকের সাহায্যে  স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করা হয়, তাকে 'অনুবর্তন’বলে।

 ৪) অনুবর্তনের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর।

উঃ অনুবর্তনের উল্লেখযােগ্য দুটি বৈশিষ্ট্য হল— 

(i) এই প্রক্রিয়ায় কৃত্রিম উদ্দীপকের সাহায্যে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করা হয়।

 (ii)  এই প্রক্রিয়ায় প্রাণীর আচরণের প্রকৃতি অনুশীলন করা হয়। 

৫) অনুবর্তন প্রক্রিয়ার অপর নাম কী?

উঃ অনুবর্তন প্রক্রিয়ার অপর নাম হল উদ্দীপক - প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া। 

) 'সংযােগাত্মক অনুবর্তন’ কাকে বলে? 

 উঃ কোনাে বিশেষ উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে কৃত্রিম সংযােগ থাপিত হওয়ার ফলে যে অনুবর্তন ঘটে, তাকে সংযােগাত্মক অনুবর্তন বলা হয়।

৭) বিয়ােগাত্মক অনুবর্তন ’ কাকে বলে? 

উঃ যখন বারবার পুনরাবৃত্তিতে বিরূপ ফললাভ করলে প্রাণী  উদ্দীপককে উপেক্ষা করতে থাকে, তখন তাকে 'বিয়ােগাত্মক অনুবর্তন’ বলে।

 ৮) অনুবর্তন প্রক্রিয়ার ‘পুনঃসংযােজন’ কী? 

উঃ অনুবর্তনকে সক্রিয় করে রাখতে হলে মাঝে মাঝে পূর্ব পরীক্ষামত তা পুনরাবৃত্তি করতে হবে, একেই ‘পুনঃসংযােজন’ বলে। 

৯) শিক্ষাক্ষেত্রে অনুবর্তন নীতির যে - কোনাে দুটি প্রয়ােগ লেখাে। 

অথবা, অনুবর্তনের একটি শিক্ষামূলক তাৎপর্য লেখাে। 

উঃ শিক্ষাক্ষেত্রে অনুবর্তন নীতির দুটি প্রয়োগ -

 (i) শিশুর কু - অভ্যাস দূর করা যায় এবং সু - অভ্যাস গঠন করা যায়।

 (ii)  শিশু বিভিন্ন শব্দ ও শব্দের সাহায্যে বস্তুর নাম শিখতে পারে। 

১০) অনুবর্তনকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী? 

উঃ অনুবর্তনকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়— (1) প্রাচীন বা ক্ল্যাসিক্যাল  অনুবর্তন এবং (2) সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তন।

১১) প্রাচীন অনুবর্তনের আবিষ্কারক কে? 

উঃ প্রাচীন অনুবর্তনের আবিষ্কারক হলেন রাশিয়ান বিজ্ঞানী আইভান প্যাভলভ। 

১২) অনাবর্তিত উদ্দীপক কাকে বলে? 

উঃ যে-কোনো উদ্দীপকের সঙ্গে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ার সংযোগকেই বলা হয় অনাবর্তিত  উদ্দীপক।

উদাহরণ: প্যাভলভের পরীক্ষার খাদ্যবস্তু হল অনাবর্তিত উদ্দীপক। 

১৩) অনুবর্তিত উদ্দীপক  কাকে বলে?

উঃ নতুন উদ্দীপকের সঙ্গে যে প্রতিক্রিয়াটি অনুবর্তিত, তাকেই বলা হয় অনুবর্তিত উদ্দীপক।


১৪) অনুবর্তিত প্রতিক্রিয়া বা Conditioning Response কী? 

উঃ প্রাণীর যে - কোনাে প্রকারের অভ্যাস বা মানসিক বৈশিষ্ট্যকে অনুবর্তিত প্রতিক্রিয়া বা Conditioning Response বলা। 

১৫) প্রাচীন অনুবর্তন তত্ত্বে অপানুবর্তন  কখন ঘটে?

  অথবা, অপানুবর্তন কী? 

উঃ অনুবর্তনের পর অনুবর্তিত উদ্দীপকের (ঘণ্টাধ্বনি) পরই যদি স্বাভাবিক উদ্দীপক (খাদ্য) উপস্থাপন না করা হয়, তাহলে অনুবর্তন প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাবে। একেই ‘অপানুবর্তন’ বলে।

অথবা, অনুবর্তনের হ্রাস পাওয়াকে অপানুবর্তন বলে।

১৬) প্যাভলভের প্রাচীন অনুবর্তনে ‘cs' বলতে কী বােঝানাে হয়েছে? 

উঃ প্যাভলভের প্রাচীন অনুবর্তনে সাপেক্ষ ও বিকল্প উদ্দীপককে ‘CS' বা 'Conditioned Stimulus' বলা হয়েছে। এখানে CS হল ‘ঘণ্টাধ্বন। 

১৭) প্যাভলভের অনুবর্তনে 'UR' বলতে কী বােঝানাে হয়েছে? 

উঃ প্যাভলভের অনুবর্তনে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াকে 'UR' বা 'Unconditioned Response' বলা হয়েছে। এখানে UR হল লালাক্ষরণ। 

১৮) প্যাভলভের অনুবর্তনে ‘US' বলতে কী বােঝানাে হয়েছে? 

উঃ প্যাভলভের অনুবর্তনে স্বাভাবিক উদ্দীপককে 'US' বা 'Unconditioned Stimulus ' বলা হয়েছে । এখানে US হল । ‘ খাদ্যদ্রব্য।

 ১৯) প্যাভলভের পরীক্ষায় কোন্ স্বাভাবিক উদ্দীপকটিকে কৃত্রিম উদ্দীপক হিসেবেও ব্যবহার করা হয়েছিল?

 উঃ প্যাভলভের পরীক্ষায় ঘণ্টাধ্বনিকে কৃত্রিম উদ্দীপক হিসেবেও ব্যবহার করা হয়েছিল?


২০) প্যাভলভের অনুবর্তনের পরীক্ষায় ব্যবহৃত স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াটির নাম কী? 

উঃ প্যাভলভের পরীক্ষায় ব্যবহৃত স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াটির নাম লালাক্ষরণ।

২১ 'কাইমােগ্রাফ’ কী? 

উঃ ‘কাইমােগ্রাফ’ একটি বিশেষ যন্ত্র, যেটি মনােবিদ প্যাভলভ সাপেক্ষ প্রতিবর্ত ক্রিয়া নিয়ে গবেষণায় কুকুরের লালার পরিমাণ লিপিবদ্ধ করার জন্য ব্যবহার করেছিলেন। 

২২) প্রাচীন অনুবর্তন তত্ত্বের সাংগঠনিক রূপটি লেখ।



২৩)  স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র কোন্ শিখনকে নিয়ন্ত্রিত করে?

উঃ স্বয়ংক্রিয় স্নায়ুতন্ত্র স্কিনারের সক্রিয় অনুবর্তনকে নিয়ন্ত্রণ করে। 

২৪) সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তন কীসের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে? 

উঃ সক্রিয় বা অপারেন্ট অনুবর্তন প্রাণীর সক্রিয়তার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। 

২৫) স্কিনার কত খ্রিস্টাব্দে সক্রিয় অনুবর্তনের উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা করেছিলেন? 

উঃ স্কিনার ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে সক্রিয় অনুবর্তনের উপর পরীক্ষানিরীক্ষা করেছিলেন।

 ২৬) স্কিনার কোন দুটি শ্রেণির আচরণের কথা বলেছেন?

 উঃ স্কিনার যে দুটি শ্রেণির আচরণের উল্লেখ করেছেন, সেগুলি হল- (i) রেসপন্ডেন্ট আচরণ এবং (ii) অপারেন্ট আচরণ ।

২৭) ‘রেসপন্ডেন্ট’ বলতে কী বােঝাে?

 উঃ মনােবিদ স্কিনারের মতে, যেসব আচরণের নির্দিষ্ট উদ্দীপক আছে, তাদের রেসপন্ডেন্ট জাতীয় আচরণ বা ‘রেসপন্ডেন্ট: বলা হয়।

২৮)  ‘অপারেন্ট’ বলতে কী বােঝাে? 

উঃ যেসব প্রতিক্রিয়ার নির্দিষ্ট উদ্দীপক নেই, তাদের বলা হয় ‘অপারেন্ট ’ বা অপারেন্ট জাতীয় আচরণ। 

২৯) স্কিনারের সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্বে কী ধরনের উদ্দীপকের উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে? 

উঃ মনােবিদ স্কিনারের  সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্বে ফলপ্রাপ্তি বা পুরস্কার এবং শাস্তিদায়ক উদ্দীপক - এর উপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

 ৩০) 'সক্রিয় আচরণ’ বলতে কী বােঝাে? 

উঃ যে আচরণের ক্ষেত্রে কোনাে সুনির্দিষ্ট উদ্দীপক থাকে না, যে - কোনাে উদ্দীপকের প্রভাবেই প্রাণী আচরণ করে, তাকে ‘সক্রিয় আচরণ’ বলা হয়। যেমন— স্কিনার বক্স পরীক্ষায় ইদুরের খাদ্যগ্রহণ। 

৩১) শিক্ষাক্ষেত্রে অপারেন্ট অনুবর্তনের দুটি প্রয়ােগ উল্লেখ।

উঃ শিক্ষাক্ষেত্রে অপারেন্ট অনুবর্তনের দুটি প্রয়ােগ হল— 

(i) এই তত্ত্বে শিক্ষার্থীর সক্রিয়তার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। 

(ii) ) প্রতিটি শিক্ষার্থীকে আগ্রহী করে তােলার জন্য শ্রেণিকক্ষে পুনঃসংযােজন কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণ করে। 

৩২) ‘প্রতিক্রিয়ামূলক আচরণ' কাকে বলে? 

উঃ যে - সমস্ত আচরণের উদ্দীপক পরিস্থিতি সম্পর্কে আমাদের ধারণা আছে, সেগুলিকে স্কিনার বলেছেন প্রতিক্রিয়ামূলক আচরণ। 

৩৩) স্কিনারের অপারেন্ট অনুবর্তন ও প্যাভলভের প্রাচীন অনুবর্তন তত্ত্বের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখাে। 

 উঃ অপারেন্ট অনুবর্তন ও প্রাচীন অনুবর্তনের মধ্যে দুটি পার্থক্য হল-

(i)  স্কিনার তার অপারেন্ট অনুবর্তনের গবেষণা চালিয়েছেন পায়রা ও ইদুরের উপর। অন্যদিকে প্যাভলভ তার প্রাচীন অনুবর্তনের গবেষণা চালিয়েছেন কুকুরের উপর। 

(ii) অপারেন্ট অনুবর্তন কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা পরিচালিত হয়। অন্যদিকে প্রাচীন অনুবর্তনে প্রাণীর প্রতিক্রিয়া মূলত স্বতন্ত্র স্নায়ুতন্ত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। 

৩৪) S- type এবং R - type অনুবর্তনের প্রবর্তক কে? 

উঃ মনােবিদ স্কিনার প্রতিক্রিয়ামূলক আচরণ এবং স্বতঃক্রিয়ামূলক আচরণের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যথাক্রমে S - type অনুবর্তন এবং R - type অনুবর্তনের কথা বলেন। 

৩৫) S - type অনুবর্তন কাকে বলে? 

উঃ নিরপেক্ষ উদ্দীপক দিয়ে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করাকে S - type walc 7 Stimulus type Conditioning বলা হয় ।

৩৬) R - type অনুবর্তন কাকে বলে? 

উঃ সুনির্দিষ্ট উদ্দীপকের সাহায্যে সুনির্দিষ্ট প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করাকেই R - type অনুবর্তন বা Response - type Conditioning বলা হয়। 

৩৭) সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্বের সাংগঠনিক রূপটি লেখ।

উঃ  




৩৮)  স্কিনার বক্স  কী?

উঃ সক্রিয় অনুবর্তন প্রতিক্রিয়ার পরীক্ষা করার জন্য মনোবিদ স্কিনার একটি যন্ত্র নির্মাণ করেন, যা স্কিনার বক্স নামে পরিচিত। এই বক্সে একটি লিভার থাকে। লিভারটিতে চাপ দিলে তার সামনে একটি ট্রেতে খাদ্যবস্তু এসে পড়ে। এ ছাড়া বক্সের মধ্যে থাকা প্রাণীর আচরণের প্রকৃতি রেকর্ড করার জন্য বিশেষ বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা থাকে। 

৩৯) শেপিং বা আচরণের রূপদান বলতে কী বােঝায়?

 উঃ বিভিন্ন পর্যায়ের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়ে প্রাণী যে জটিল প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে, তাকে মনােবিদ স্কিনার শেপিং (Shaping) বা আচরণের রূপদান বলেছেন। 

 ৪০) স্কিনার প্রস্তাবিত সিডিউল  কী ?

উঃ মনোবিদ স্কিনার শক্তিদায়ক উদ্দীপককে উপস্থাপন করার জন্য যে চার ধরনের সময় নির্ধারণ করেছেন, সেগুলিকে সিডিউল বলা হয়। 

৪১) স্কিনারের উল্লিখিত সিডিউলগুলির মধ্যে যে - কোনাে দুটি  সিডিউলের উল্লেখ করাে। 

উঃ  মনােবিদ স্কিনার উল্লিখিত সিডিউলগুলি হল—(i)  নিরবচ্ছিন্ন সিডিউল এবং (ii) সময় অন্তর সিডিউল। 

৪২) শৃঙ্খল প্রক্রিয়া কী?  

উঃ অপারেন্ট প্রক্রিয়ার পূর্বে সৃষ্ট প্রতিক্রিয়া পরবর্তী পর্যায়ের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টির জন্য উদ্দীপক সৃষ্টি করে। এই প্রক্রিয়াকেই শৃঙ্খল প্রক্রিয়া  বলা হয়।

 ৪৩) সমস্যাসমাধানমূলক শিখন কী? 

উঃ প্রত্যক্ষভাবে সমস্যাসমাধানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর আচরণ ধারার যে পরিবর্তন ঘটে, তাকে সমস্যাসমাধানমূলক শিখন বলে। 

৪৪) প্রচেষ্টা ও ভুলের কৌশল - এর প্রবক্তা কে ? 

উঃ প্রচেষ্টা ও ভুলের কৌশল তত্ত্বের প্রবক্তা আমেরিকার হলেন বিশিষ্ট মনােবিদ ই. এল. থর্নর্ডাইক। 

৪৫) কবে ও কোন্ বইতে থর্নড়াইকের শিখন সম্পর্কিত চিন্তাধারা প্রকাশিত হয়েছে? 

উঃ ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে 'Animal Intelligence' নামক গ্রন্থে  থর্নড়াইকের শিখন সম্পর্কিত চিন্তাধারা প্রকাশিত হয়।

৪৬) প্রচেষ্টা ও ভুল শিখন কৌশলের অর্থ কী? 

উঃ  প্রচেষ্টা ও ভুল  শিখন কৌশলের অর্থ হল-- উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সংযােগ স্থাপনের মাধ্যমে শিখন সম্পন্ন হয়। আর এই সংযােগ বা বন্ধন সৃষ্টি হয় প্রচেষ্টা ও ভুল প্রক্রিয়ার মাধ্যমে।

 ৪৭)  থর্নড্রাইক কোন্ কোন্ প্রাণীর উপর তার প্রচেষ্টা ও ভুল তত্ত্বের প্রয়ােগ করেছিলেন? 

 উঃ মনােবিদ থর্নডাইক কুকুর, বিড়াল, ইদুর, বাঁদর, মাছ, মুরগি প্রভৃতি প্রাণীর উপর তাঁর প্রচেষ্টা ও ভুল তত্ত্বের প্রয়ােগ করেছিলেন। 

৪৮) থর্নডাইকের মতবাদকে কেন সংযােজনবাদ বলা হয়? 

উঃ থর্নড়াইকের মতে, উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সংযোেগ স্থাপনের মাধ্যমে শিখন সম্পন্ন হয়। সেজন্য থর্নডাইকের মতবাদকে সংযােজনবাদ বলা হয়। 

৪৯) থর্নড়াইকের শিখন তত্ত্বে মুখ্য সূত্রগুলি কী কী ? 

উঃ থর্নডাইকের শিখন তত্ত্বের মুখ্য সূত্র তিনটি হল- (১) প্রস্তুতির সূত্র, (২) অনুশীলনের সূত্র এবং (৩) ফললাভের সূত্র। 

৫০) থর্নডাইকের শিখনে গৌণ সূত্রের সংখ্যা কয়টি ও কী কী? 

উঃ থর্নডাইকের শিখনে গৌণ সূত্রের সংখ্যা ৫ টি। এগুলি হল— (i) বহুমুখী প্রতিক্রিয়ার সূত্র, (ii) মানসিক প্রস্তুতির সূত্র, (ii)  আংশিক প্রতিক্রিয়ার সূত্র, (iv) আত্তীকরণের সূত্র এবং (v) অনুষঙ্গমূলক পরিবর্তনের সূত্র। 

৫১) থর্নডাইকের ফললাভের সূত্র সম্বন্ধে লেখ।  

উঃ শিখনের ক্ষেত্রে উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার সম্বন্ধ স্থাপনের ক্ষেত্রে যদি সুখকর বা তৃপ্তিদায়ক ফল পাওয়া যায়, তবে ওই সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় হয়, আর যদি ওই সংযােগ স্থাপনের মাধ্যমে বিরক্তিকর ফল পাওয়া যায়, তবে ওই সম্পর্কের বন্ধন শিথিল হয়। 

৫২) শ্রেণিকক্ষে থর্নডাইকের ফললাভের সূত্রের একটি প্রয়ােগ দেখাও।

উঃ  উপযুক্ত ফললাভ ছাড়া শিখন বাধাপ্রাপ্ত হয়। তৃপ্তিদায়ক অনুভূতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষার্জনে সহায়তা করে এবং তারা তুলনামূলকভাবে সহজে শিক্ষার্জনে সমর্থ হয়। সেইজন্য শ্রেণিকক্ষকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে যাতে পাঠ্যবস্তু, শিখন পদ্ধতি এবং পরিস্থিতি শিক্ষার্থীর প্রত্যাশা অনুযায়ী ও আনন্দদায়ক হয়। 

৫৩) থর্নড়াইকের অনুশীলন সূত্রকে কয়টি অংশে বিভক্ত করা যায় ও কী কী? 

উঃ থর্নডাইকের অনুশীলন সূত্রকে দুটি অংশে বিভক্ত করা যায়। যথা— অভ্যাসের সূত্র এবং অনভ্যাসের সূত্র। 

৫৪) শিক্ষাক্ষেত্রে থর্নডাইকের অনুশীলন সূত্রের একটি প্রয়ােগ লেখ। 

উঃ শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাদানের সময় প্রত্যক্ষ প্রয়ােগমূলক কাজের মাধ্যমে বিষয় অনুশীলন -এর ব্যবস্থা করবেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক। যেমন বিতর্ক সভা, শিক্ষামূলক ভ্রমণ ইত্যাদি। 

৫৫) শিক্ষাক্ষেত্রে থর্নডাইকের শিখনের প্রস্তুতি সূত্রের একটি প্রতিক্রিয়া লেখাে। 

উঃ শিক্ষাক্ষেত্রে শিখনের ক্ষেত্রে উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার সার্থক সমন্বয় স্থাপনের ক্ষেত্রে তৃপ্তিদায়ক বা বিরক্তিকর অনুভূতি নির্ভর করে ব্যক্তির প্রস্তুতির উপর। তাই প্রস্তুতি শিখন প্রক্রিয়াকে সহজতর করে, সুতরাং শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষাগ্রহণ প্রস্তুত করে তুলতে হবে। 

৫৬) ‘পাজল বক্স’ কী? 

উঃ মনােবিদ থর্নডাইক তাঁর শিখন কৌশল পরীক্ষার জন্য যে যান্ত্রিক উপকরণ ব্যবহার করেন তা 'পাজল বক্স: নামে পরিচিত।

 

৫৭) ‘টাইম কার্ভ’ কী? 

 উঃ থর্নডাইক পুনরাবৃত্তির সময়কে লেখচিত্রের সাহায্যে পরিবেশন করেন। পুনরাবৃত্তি সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই লেখ ক্রমশ নীচের দিকে নেমে আসে। একেই বলা হয় 'টাইম কার্ভ ' ( Time Curve ) । 

৫৮) গেস্টাল্ট মতবাদ কী?  

উঃ কোহলার, কফকা এবং ওয়ারদাইমার এই তিন জন বিখ্যাত মনােবিদদের প্রত্যক্ষণের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা পরীক্ষালব্ধ ফল থেকে যে মতবাদ সামগ্রিকভাবে পরিচিত, তাই গেস্টান্টবাদীদের শিখনের তত্ত্ব বা ‘ গেস্টান্ট মতবাদ নামে পরিচিত। 

৫৯) গেস্টান্ট মতবাদের প্রবক্তা কারা? 

 উঃ গেস্টান্ট মতবাদের প্রবক্তারা হলেন- কোহলার , কফকা এবং ওয়াদাইমার। 

৬০) অন্তদৃষ্টিমূলক শিখন প্রক্রিয়ার কোন দুটি মানসিক প্রক্রিয়া বিশেষভাবে কাজ করে? 

উঃ অন্তদৃষ্টিমূলক শিখন প্রক্রিয়ায় যে মানসিক প্রক্রিয়া দুটি বিশেষভাবে কাজ করে, সেগুলি হল— পৃথকীকরণ এবং সামান্যীকরণ। 

৬১) 'Mentality of Apes' গ্রন্থটির রচয়িতার নাম করো। 

উঃ 'Mentality of Apes' গ্রন্থটির রচয়িতা হলেন  কোহলার এবং কুট কফকা। 

৬২) 'Pragnanz' কথাটির অর্থ কী? 

উঃ জার্মান শব্দ ‘Pragnanz'- এর অর্থ দৃঢ় কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।

 ৬৩)  'Law of Pragnanz' বলতে কী বােঝায়?

 উঃ গেস্টান্টবাদী কফকার মতে, প্রত্যক্ষণের সূত্রের উপযােগিতা শিখনের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রত্যক্ষণের সংগঠনমূলক প্রায়ােগিক নীতিই হল ‘Law of Pragnanz' ।


Read More