Tuesday 29 December 2020

৪২ টি আরোহ যুক্তির দোষ ও বিচার

Leave a Comment

 আরোহমূলক দোষ বা অনুপপত্তি

(INDUCTIVE FALLACIES)

Class - xii ( wbchse)

** নীচের আরোহ যুক্তিগুলি বিচার করো এবং কোন দোষ থাকলে তা উল্লেখ করো-- (মান 4)

) বদ্ধ পরিষ্কার জল ডেঙ্গির কারণ : 

উঃ

দোষ:  অপর্যবেক্ষণমূলক দোষ। অথবা, অবৈধ সাম্যানীকরণ দোষ । 

 বিচার:  এটি আরােহ অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অপর্যবেক্ষণমূলক দোষে দুষ্ট। কারণ, এখানে যে সমস্ত ক্ষেত্রে বদ্ধ পরিষ্কার জল আছে  অথচ তা ডেঙ্গির কারণ নয়— সেরূপ দৃষ্টান্তগুলিকে পর্যবেক্ষন করা হয়নি। অথচ এরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষেত্রে এই ধরনের দৃষ্টান্তগুলিকে পর্যবেক্ষণ করা উচিত ছিল। এক্ষেত্রে অবাধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে গুটিকয়েক দৃষ্টান্ত দেখে একপ্রকার সামান্যীকরণ করা হয়েছে বলে একে অবৈধ সামান্যীকরণের দোষে দুষ্ট রূপেও উল্লেখ করা যায়।

২)  সব কাক নিশ্চয়ই কালাে; কারণ, আমরা অন্য কোনাে রঙের কাক দেখিনি। 

উঃ

দোষ:  অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ। 

বিচার : এটি আরােহ অনুমানের দৃষ্টান্ত। এখানে অবাধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কয়েকটি কাককে কালাে বর্ণের হতে দেখে সকল কাক হয় কালাে’ এরূপ সিদ্ধান্ত করা হয়েছে। কিন্তু, পৃথিবীর সব কাক কালাে কিনা তা অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কোনাে মানুষের পক্ষে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। এমনও হতে পারে যে, আমাদের সীমিত অভিজ্ঞতার বাইরে অন্য রঙের কাক থাকতে পারে। কাজেই, কাকের সঙ্গে কালাে রঙের কোনাে অনিবার্য সম্পর্ক আছে কিনা তা নির্ণয় না করে অর্থাৎ, কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয় না করে এক্ষেত্রে সার্বিক সিদ্ধান্ত করা হয়েছে বলে যুক্তিটি অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট হয়েছে। ফলে সিদ্ধান্তটি ভ্রান্ত ও দোষযুক্ত। 

৩) কয়েকটি লালফুল গন্ধহীন হতে দেখে সিদ্ধান্ত করা হল যে, সব লালফুল গন্ধহীন। 

উঃ

দোষ :  অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ। 

বিচার : এক্ষেত্রে অবাধ অভিজ্ঞতায় কয়েকটি লালফুলকে গন্ধহীন হতে দেখে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে সব লালফুল গন্ধহীন। কিন্তু, এরূপ সিদ্ধান্ত ভ্রান্ত। কারণ, এখানে কোনাে বিরুদ্ধ দৃষ্টান্ত বা নঞর্থক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত গঠন করা হয়নি। অর্থাৎ, জগতে গন্ধযুক্ত লালফুলের (যেমন — গােলাপফুল) অস্তিত্ব আছে এটা প্রমাণিত। কাজেই ,সালফুল ও গহীনতার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক বিচার না করে এরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য যুক্তিটি অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট হয়েছে।

 ৪) বহু লােক সাপের কামড়ে মারা গেছে। সুতরাং, সব সাপ বিষধর। 

উঃ

দোষ:  অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে। 

বিচার : এটি আরােহ অনুমানের দৃষ্টান্ত। এখানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে। কেননা, উক্ত যুক্তিতে বেশ কয়েকজন লােকের সাপের কামড়ের ফলে মৃত্যু হতে দেখে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে  সব সাপ বিষধর। কিন্তু, এক্ষেত্রে যে বিরুদ্ধ দৃষ্টান্ত বা নঞর্থক দৃষ্টান্ত থাকতে পারে তাকে পর্যবেক্ষণ না করে সিন্ধান্ত রা হয়েছে। অর্থাৎ, এমন অনেক সাপ আছে যারা বিষধর নয় কিংবা এমন অনেক লােক আছে যারা সাপের কামড়ে মারা যায়নি — এই নঞর্থক দিককে পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। তা ছাড়া পৃথিবীর সব সাপ বিষধর কিনা তা কােনাে মানুষের পক্ষে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। তাই এক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে তা অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট হয়েছে। 

৫) মানসিক হাসপাতালের অধিকাংশ রােগী উচ্চশিক্ষিত। সুতরাং, উচ্চশিক্ষাই মানসিক রােগের কারণ। 

উঃ

দোষ :  অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ।

 বিচার: এখানে অন্বয়ী পদ্ধতির অপপ্রয়োগের ফলে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে। কেননা, আলােচ্য যুক্তিতে কোনাে মানসিক হাসপাতালের কয়েকজন রােগীকে উচ্চশিক্ষিত হতে দেখে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে উচ্চশিক্ষাই মানসিক রােগের কারণ। কিন্তু, এরূপ সিদ্ধান্ত ভ্রান্ত। কারণ, এক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষার সঙ্গে মানসিক রােগের কার্যকারণ সম্পর্ক আছে কিনা তা নির্ণয় করার চেষ্টা করা হয়নি। কেবলমাত্র কয়েকজন মানসিক রােগীকে উচ্চশিক্ষিত হতে দেখে এরূপ সার্বিক সিদ্ধান্ত করার জন্য যুক্তিটি অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট হয়েছে। 

৬) টেলিগ্রাম অশুভ। কারণ, টেলিগ্রাম দুঃসংবাদ বহন করে নিয়ে আসে। 

উঃ

দোষ: অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ।

বিচার: এটি আরােহ অনুমানের দৃষ্টান্ত। এখানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে। কেননা, অবাধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কিছু ক্ষেত্রে টেলিগ্রাম দুঃসংবাদ বহন করে নিয়ে আসে এই দিককে পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে যে টেলিগ্রাম অশুভ। কিন্তু, সব ক্ষেত্রে টেলিগ্রাম অশুভ সংবাদ বহন করে নিয়ে আসে কিনা এই নঞর্থক দিকটিকে বিবেচনা না করে সার্বিক সিদ্ধান্ত করা হয়েছে, যা কার্যকারণ সম্পর্ক বহির্ভূত। এজন্য যুক্তিটি অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট হয়েছে।

৭) আজকালকার শিক্ষিত মহিলারা গৃহকর্ম করতে চান না। সুতরাং, নারী শিক্ষাকে উৎসাহ দেওয়া ঠিক নয়। 

উঃ

দোষ: অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ।

বিচার: যুক্তিটিতে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে। কেননা, এক্ষেত্রে অবাধ অভিজ্ঞতায় কয়েকজন শিক্ষিতা মহিলাকে গৃহকর্মে বিমুখ হতে দেখে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে নারী শিক্ষাকে উৎসাহ দেওয়া ঠিক নয়। কিন্তু, পৃথিবীর সব উচ্চশিক্ষিত মহিলা গৃহকর্মে বিমুখ কিনা তা কোনাে ব্যক্তির পক্ষে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। তাই এখানে বিশেষ কয়েকটি দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে যে সার্বিক সিদ্ধান্ত করা হয়েছে তা অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট হয়েছে।

৮) দিনের পরে রাত্রি আসে, সুতরাং দিন রাত্রির কারণ।

উঃ

দোষ: সহকার্যের একটিকে অন্যটির কারণ বলে গণ্য করা দোষ।

বিচার:  যুক্তিটি সহকার্যের একটিকে অন্যটির কারণ বলে গণ্য করা দোষে দুষ্ট। আমরা জানি একটি কারণের একাধিক কার্য থাকতে পারে।  যখন এই সহকার্যের একটিকে অন্যটির কারণ বলে গণ্য করা হয় তখন যুক্তিটিতে যে দোষ ঘটে তাকে সহকার্যের একটিকে অন্যটির কারণ বলে গণ্য করা দোষ ঘটে। আলােচ্য যুক্তিতে দিনের পর রাত আসে বলে দিনকে রাত্রির কারণ বলা হয়েছে। কিন্তু, দিন এবং রাত্রি কোনােটিই কারাের কারণ নয়, উভয় ঘটনাই হল সহকার্য। উভয়ের কারণ হল পৃথিবীর আহ্নিক গতি। কাজেই, দিন ও রাত্রির মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। এই উভয় ঘটনাই পৃথিবীর আহ্নিক গতিরূপ কারণের সহকার্য। কাজেই, যুক্তিটিতে দিন রাত্রির অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও শর্তহীন অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। এজন্য যুক্তিটিতে সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণ বলে গণ্য করা দোষ ঘটেছে।

 ৯) শীতের পরেই বসন্ত আসে। কাজেই শীত হলো বসন্তের কারণ।

উঃ

দোষ: সহকার্যের একটিকে অপরটির কারণ বলে মনে করার দোষ।

বিচার: প্রদত্ত যুক্তিটিতে অন্বয়ী পদ্ধতি প্রয়ােগ করে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে যে শীত হল বসন্তের কারণ। কেননা, শীত নিয়তই বসন্তের পূর্ববর্তী ঘটনা। কিন্তু যুক্তিটি সিদ্ধ নয়। শীত এবং বসন্ত উভয়ই পৃথিবীর বার্ষিক গতির ওপর নির্ভর করে অর্থাৎ শীত ও বসন্তের শর্ত হলাে পৃথিবীর বার্ষিক গতি। সুতরাং শীত ও বসন্ত সহকার্য। সুতরাং এই যুক্তিটিতে সহকার্যের একটিকে অপরটির কারণ বলে গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে এখানে সহকার্যের একটিকে অপরটির কারণ গণ্য করা জনিত দোষ ঘটেছে। 

১০) জোয়ারের পর ভাটা আসে। অতএব জোয়ার হল ভাটার কারণ। 

উঃ

দোষ: সহকার্যের কোনাে একটিকে অন্যটির কারণ বলে গণ্য করা দোষ । 

বিচার: আলােচ্য যুক্তিতে জোয়ারকে ভাটার কারণ বলা হয়েছে। যেহেতু জোয়ার হল ভাটার নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা। কিন্তু, কারণকে কেবল কার্যের নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা হলেই হবে না, তাকে শর্তহীন হতে হবে। জোয়ার এবং ভাটা এই দুটি ঘটনা শর্তহীন নয়। উভয় ঘটনাই চন্দ্রের আকর্ষণজনিত কারণের সহকার্য। অর্থাৎ, চন্দ্রের আকর্ষণের তারতম্যের জন্য পৃথিবীতে জোয়ার এবং ভাটা হয়। সুতরাং, জোয়ার এবং ভাটা ঘটনাদুটির কোনােটি কারাের কারণ নয়। উভয়ই একই কারণের সহকার্য। এ কারণে যুক্তিটিতে সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণ মনে করা দোষ ঘটেছে। 

১১) তাপমান যন্ত্রের পারদের অবনমন নিকটবর্তী হ্রদের জল জমে যাওয়ার কারণ। 

উঃ

দোষ: সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণরূপে গণ্য করা দোষ 

বিচার: উক্ত যুক্তিতে সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণরূপে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, তাপমান যন্ত্রের পারদ নীচে নেমে যাওয়া এবং হ্রদের জল জমে যাওয়া— এই দুটি ঘটনার মধ্যে কোনাে কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। উভয় ঘটনাই একটি কারণের সহকার্য। সেই কারণটি হল তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রিতে নেমে যাওয়া। অর্থাৎ, তাপমাত্রা 0 ° বা তার নীচে নেমে গেলে পারদের অবনমন ঘটে আবার জল জমে যায়। সুতরাং, এক্ষেত্রে একটিকে অন্যটির কারণরূপে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে।

 ১২) বিদ্যুৎ হল বজ্রনিনাদের নিয়ত পূর্বগামী ঘটনা। অতএব বিদ্যুৎ হল বজ্রনিনাদের কারণ। 

উঃ

দোষ:  সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণ বলে গণ্য করা দোষ

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণ বলে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, বিদ্যুৎ এবং মেঘ গর্জনের মধ্যে কোনাে কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। উভয় ঘটনাই একটি কারণের সহকার্য। কারণটি হল দুটি বিপরীতমুখী মেঘের সংঘর্ষ। মেঘের সঙ্গে মেঘের সংঘর্ষ হলে বিদ্যুৎ চমক দেখা যায় এবং বজ্রপাতের শব্দও শােনা যায়। সুতরাং, দুটি ঘটনার কেউই অন্যটির কারণ নয়। কাজেই, বিদ্যুৎকে মেঘ গর্জনের কারণ বলার জন্য যুক্তিটিতে সহকার্যকে কারণরূপে গণ্য করা দোষ ঘটেছে।

১৩) টেলিগ্রাম অশুভ। কারণ টেলিগ্রাম দুঃসংবাদ নিয়ে আসে।

উঃ

দোষ: অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ।

বিচার: এই আরােহ যুক্তিটি অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট। কারণ আলােচ্য যুক্তিটিতে  কতকগুলি ক্ষেত্রে টেলিগ্রামকে দুঃসংবাদ বহন করে আনতে দেখে   সামান্যীকরণ করা হয়েছে যে, টেলিগ্রাম মাত্রই অশুভ। কিন্তু যেসব ক্ষেত্রে টেলিগ্রাম শুভ সংবাদ বয়ে নিয়ে এসেছে সেই সব বিরুদ্ধ দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ না করাই আলােচ্য যুক্তিটির সিদ্ধান্ত ভ্রান্ত বলে বিবেচিত। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় নঞর্থক দৃষ্টান্তগুলি উপেক্ষিত রয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র সদর্থক দৃষ্টান্তগুলি পর্যবেক্ষণ করে কোনােরূপ কার্য - কারণ সম্বন্ধ আবিষ্কারের চেষ্টা না করে অবাধ অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে সামান্য বচন প্রতিষ্ঠা করার জন্যই এই দোষ ঘটে। 

১৪)  রাশিয়াতে যখন গমের ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন কলকাতা শহরে জন্মহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং, রাশিয়ায় গমের ফলন বৃদ্ধি হল কলকাতায় জন্মহার বৃদ্ধির কারণ। 

উঃ

দোষ : অবান্তর ঘটনাকে কারণ বলে গণ্য করা দোষ

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে সহপরিবর্তন পদ্ধতির অপপ্রয়ােগের ফলে কোনাে অবান্তর ঘটনাকে কারণ বলে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, যুক্তিতে রাশিয়ায় গমের ফলন বৃদ্ধিকে কলকাতায় জন্মহার বৃদ্ধির কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, এই দুটি ঘটনার মধ্যে কোনােরূপ কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। আসলে রাশিয়ায় গমের ফলন বৃদ্ধি এবং কলকাতায় জন্মহার বৃদ্ধি এই দুটি ঘটনার মধ্যে সহপরিবর্তন লক্ষ্য করা গেলেও সেই সহপরিবর্তন প্রাসঙ্গিক নয়। কাজেই, এক্ষেত্রে একটি অপ্রাসঙ্গিক বিষয়কে কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে ।

১৫) গতবছর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কারণ হল দেবতার রোষ। 

উঃ

দোষ: অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ।

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে একটি অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, যুক্তিটিতে দেবতার রােষকে দুর্ভিক্ষের কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, দুর্ভিক্ষের সঙ্গে দেবতার রােষের কোনােরূপ কার্যকারণ সম্বন্ধ নেই। এক্ষেত্রে দেবতার রােষ হল একটি অবান্তর বিষয়। অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের ভিত্তিতে দেবতার  রুষ্ট হওয়াকে দুর্ভিক্ষের কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কাজেই, প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান না করে কুসংস্কারবশত একটি অবান্তর বিষয়কে কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে। 

১৬) তুমি সূর্যগ্রহণের সময় খেয়েছ এবং অসুস্থ হয়ে পড়েছ। সুতরাং, সূর্যগ্রহণের সময় খাওয়া তােমার অসুস্থতার কারণ। 

উঃ

দোষ: অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ।

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে একটি অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, এখানে সূর্যগ্রহণের সময় খাওয়াকেই অসুস্থতার কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, সূর্যগ্রহণের সময় খাওয়ার সঙ্গে অসুস্থতার কোনােরূপ কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। অসুস্থতা প্রসঙ্গে সূর্যগ্রহণের সময় খাওয়া একটি অপ্রাসঙ্গিক বিষয়। অসুস্থতার প্রকৃত কারণ হল ভালাে খাদ্যবস্তু গ্রহণ না করা। অর্থাৎ, সূর্যগ্রহণ না হলেও দূষিত খাদ্যবস্তু খেলে অসুস্থ হতে হত। কাজেই, কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের ভিত্তিতে সূর্যগ্রহণের সময় খাওয়াকে অসুস্থতার কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে একটি অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। [উল্লেখ্য, উক্ত যুক্তিতে কাকতালীয় দোযেরও প্রয়ােগ করা যায়] 

১৭) কোনাে ডাক্তার তিনজন রােগীকে তিনরকম ওষুধ গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে বললেন এবং কিছুদিন পর তারা প্রত্যেকেই রােগমুক্ত হল। কাজেই, সিদ্ধান্ত করা হল গরম জল খাওয়াই তাদের রােগমুক্তির কারণ। 

উঃ

দোষ: অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ।

বিচার: উক্ত যুক্তিতে কোনাে অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা,  এখানে গরম জল খাওয়াকেই রােগমুক্তির কারণ বলা হয়েছে। কিন্তু, রােগমুক্তির ক্ষেত্রে গরম জল খাওয়া একটি অপ্রাসঙ্গিক বিষয়। এক্ষেত্রে আসল কারণটি হল রােগের জন্য নির্ধারিত ওষুধ। কাজেই, যেটি প্রকৃত কারণ নয় সেই অপ্রাসঙ্গিক বিষয়কে কারণ হিসাবে  গণ্য করার জন্য যুক্তিতে উক্ত দোষ ঘটেছে। এক্ষেত্রে অন্বয়ী পদ্ধতির অপপ্রয়ােগ ঘটেছে। 

১৮) কোনাে বেঁটে লােককে ভালাে বক্তৃতা দিতে দেখে সিদ্ধান্ত করা হল বেঁটে হওয়াই তার ভালাে বক্তৃতা দেওয়ার কারণ।

উঃ

দোষ: অবান্তর ঘটনাকে কারণ মনে করা দোষ।

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে কোনাে অবান্তর ঘটনাকে কারণ মনে করা দোষ ঘটেছে। কেননা, এক্ষেত্রে লােকটির বেঁটে হওয়াকে ভালাে বক্তৃতা দেওয়ার কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, বেঁটে হওয়ার সঙ্গে ভালাে বক্তৃতা দেওয়ার কোনােরূপ কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। ভালাে বক্তৃতা দেওয়ার আসল কারণ হল বিষয় সম্পর্কে পর্যাপ্ত পরিমাণে জ্ঞান থাকা। এক্ষেত্রে বেঁটে প্রকৃতির হওয়া একটি অপ্রাসঙ্গিক বিষয়। কাজেই, যুক্তিটিতে একটি অবান্তর বিষয়কে কারণরূপে গণ্য করার জন্য উক্ত দোষ ঘটেছে। এক্ষেত্রে অন্বয়ী পদ্ধতির অপপ্রয়ােগ ঘটেছে। 

১৯) পরীক্ষার আগে গৃহশিক্ষকের অনুপস্থিতি হল ছাত্রটির পরীক্ষার অকৃতকার্যতার কারণ।

উঃ

 দোষ: আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ।

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, এখানে গৃহশিক্ষকের অনুপস্থিতিকে ছাত্রটির পরীক্ষায় অকৃতকার্যতার কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, পরীক্ষার পূর্বে গৃহশিক্ষকের অনুপস্থিতি ছাত্রটির পরীক্ষায় অকৃতকার্যতার একটি শর্তমাত্র, একমাত্র কারণ নয়। এক্ষেত্রে ছাত্রটির শরীর সুস্থ না থাকা, মনােযােগ দিয়ে পড়াশুনা না করা, প্রশ্নপত্র কঠিন হওয়া, সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর না লেখা, উত্তরপত্রের যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়া, গৃহশিক্ষকের অনুপস্থিতি প্রভৃতি একাধিক আবশ্যিক শর্ত একত্রিতভাবে ছাত্রটির পরীক্ষায় অকৃতকার্য নামক কার্যটি সংঘটিত করে। সুতরাং, শুধুমাত্র গৃহশিক্ষকের অনুপস্থিতিকে এক্ষেত্রে কারণ বলার জন্য যুক্তিটি একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষে দুষ্ট হয়েছে। 

২০) বারুদে অগ্নিসংযােগ করতেই বিস্ফোরণ হল। সুতরাং, বারুদে অগ্নিসংযােগ হল বিস্ফোরণের কারণ। 

উঃ

দোষ: আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ।

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, এখানে  বারুদে অগ্নিসংযােগকে বিস্ফোরণের কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে । কিন্তু, বারুদে অগ্নিসংযােগ করা বিস্ফোরণ ঘটার একটি শর্তমাত্র, একমাত্র কারণ নয়। বিস্ফোরণরূপ কার্যের জন্য উপযুক্ত পরিমাণ বারুদ, শুষ্ক বারুদ, ঠাসা বারুদ, বারুদে  অগ্নিসংযােগ প্রভৃতির প্রয়ােজন হয়। এই শর্তগুলি একত্রিত হয়ে বিস্ফোরণরূপ কার্য সংঘটিত করে। কাজেই, এখানে  কেবলমাত্র অগ্নিসংযােগকে কারণ বলার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে। 

২১) বহ্নি না থাকলে ধূম থাকে না । সুতরাং , বহ্নি হল ধূমের কারণ।

উঃ

দোষ: আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ 

 বিচার: যুক্তিটিতে একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, বহ্নি না থাকলে ধূম হয় না ঠিকই কিন্তু বহ্নি থাকলেই ধূম হবে এমন কথা বলা যায় না। যেমন — বৈদ্যুতিক হিটারে উত্তপ্ত লৌহপিন্ডে বহ্নি থাকে অথচ ধূম থাকে না। অর্থাৎ, বহ্নি থাকা ধূমের একটি শর্তমাত্র, একমাত্র কারণ নয়। ধূম সৃষ্টির জন্য বহ্নি ছাড়াও ভিজে কাঠ বা জ্বালানির প্রয়ােজন হয়। ভিজে কাঠে বহ্নিসংযােগ করলে তবেই ধূম নির্গত হয়। কাজেই, বহ্নিকে ধূমের কারণ বললে একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণরূপে গণ্য করা দোষ দেখা দেবে। 

২২) পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণই হল সুস্বাস্থ্যের কারণ।

উঃ

 দোষ: আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করার দোষ।

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, এখানে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণকেই সুস্বাস্থ্যের কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ সুস্বাস্থ্যের একটি শর্তমাত্র, একমাত্র কারণ নয়। অনেকগুলি উপাদান বা আবশ্যিক শর্তের সমাবেশের ফলে একজন ব্যক্তি সুস্বাস্থ্য অর্জনে সক্ষম হয়। যেমন— শরীর চর্চা, প্রয়ােজনীয় বিশ্রাম, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ, পরিমিত পরিশ্রম, দূষণমুক্ত পরিবেশে বাস, শরীরে রােগের অভাব প্রভৃতি ব্যাপার একত্রে কোনাে মানুষকে সুস্থ ও সবল করে তােলে। কাজেই, এখানে কেবল পুষ্টিকর খাদ্যকে সুস্বাস্থ্যের কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিতে উক্ত দোষ ঘটেছে। 

২৩) আকাশে ধূমকেতু আবির্ভাবের ঠিক পরেই রাধার মৃত্যু হল। সুতরাং আকাশে ধূমকেতুর আবির্ভাবই রাজার মৃত্যুর কারণ।

উঃ

দোষ: কাকতালীয় দোষ।

ব্যাখ্যা: এটি আরােহ অনুমান এর দৃষ্টান্ত। এখানে ব্যতিরেকী পদ্ধতির অপপ্রয়ােগের জন্য কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। কারণ আমরা জানি, কারণ হলাে কার্যের শর্তহীন অপরিবর্তনীয় নিয়ত পূর্ববর্তী ঘটনা। কিন্তু যে - কোনাে পূর্ববর্তী ঘটনা কারণ নয়। যে - কোনাে পূর্ববর্তী ঘটনাকে কারণ বললে যুক্তিতে যে দোষ ঘটে তাকে কাকতালীয় দোষ বলে। উপরিউক্ত উদাহরণটিতে কাকতালীয় দোষ ঘটেছে কেননা উদাহরণটিতে পূর্ববর্তী ঘটনা (ধূমকেতুর আবির্ভাব) -কে কারণ এবং অনুবর্তী ঘটনা (রাজার মৃত্যু) -কে কার্য বলা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে রাজার মৃত্যুর জন্য ধূমকেতুর আবির্ভাব কারণ হতে পারে না। ধূমকেতুর আবির্ভাব ও রাজার মৃত্যু এদের মধ্যে অ - নিয়ত সম্পর্ক রয়েছে। তা ছাড়া এক্ষেত্রে রাজার মৃত্যু অন্য কারণে ঘটতে পারে যদিও ঘটনাক্রমে এখানে ধূমকেতুর আবির্ভাব এবং পরবর্তীতে রাজার মৃত্যু পূর্বাপর ঘটেছে। কিন্তু তাই বলে এদেরকে কার্য - কারণ বলা ঠিক নয়। 

বিকল্প

দোষ: কাকতালীয় দোষ

বিচার : উক্ত আরােহ যুক্তিতে ব্যতিরেকী পদ্ধতির অপপ্রয়ােগের জন্য কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। কেননা, আলােচ্য যুক্তিতে ধূমকেতুর আবির্ভাবকে রাজার মৃত্যুর কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। যেহেতু ধুমকেতুর আবির্ভাব রাজার মৃত্যর অগ্রবর্তী ঘটনা। কিন্তু, যে - কোনাে অগ্রবর্তী ঘটনা কারণ নয়। কারণ হবে কার্যের নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা। এক্ষেত্রে ধূমকেতুর আবির্ভাব রাজার মৃত্যুর অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও তা নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। অর্থাৎ, যখনই আকাশে ধূমকেতুর আবির্ভাব হয়েছে তারপরই একজন রাজার মৃত্যু হয়েছে এমন নয়। কাজেই এখানে অনিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনাকে কারণরূপে গণ্য করার জন্য যুক্তিটি কাকতালীয় দোষে দুষ্ট হয়েছে। 

২৪) নতুন পােশাকটি পরার পরই তার জ্বর হল। সুতরাং, নতুন পােশাকটি পরাই তার জ্বরের কারণ। 

উঃ 

দোষ: কাকতালীয় দোষ

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে ব্যতিরেকী পদ্ধতির অপপ্রয়ােগের ফলে কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। কেননা, এক্ষেত্রে নতুন পােশাক পরা জ্বরের অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। অর্থাৎ, বিশেষ কোনাে ক্ষেত্রে নতুন পােশাক পরার পর কারাে জ্বর হলেও নতুন পােশাক পরলেই সব সময় জ্বর হয় না। কাজেই, এখানে অনিয়ত পূর্ববর্তী ঘটনাকে কারণরূপে গণ্য করার জন্য অনুমানটিতে কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। 

২৫) শান্তিবাদীরা মিছিল করার পরই পশ্চিমবঙ্গে খরা শুরু হল। কাজেই, শান্তিবাদীদের মিছিল করাই খরার কারণ। 

উঃ 

দোষ: কাকতালীয় দোষ

বিচার: যুক্তিটিতে ব্যতিরেকী পদ্ধতির অপপ্রয়ােগ ঘটেছে বলে কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। কেননা, এখানে শান্তিবাদীদের মিছিলকে পশ্চিমবঙ্গের খরার কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, ঘটনাদুটির মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করা হয়নি। এক্ষেত্রে শান্তিবাদীদের মিছিল করা পশ্চিমবঙ্গের খরা সৃষ্টি হওয়ার অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। কিন্তু, কারণ হতে গেলে কার্যের নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা হতে হবে, এ কারণে যুক্তিটি কাকতালীয় দোষে দুষ্ট হয়েছে।

২৬) মাদুলি ধারণ করার ঠিক পরেই তার রােগ সারল। সুতরাং, মাদুলি ধারণ তার রােগ নিরাময়ের কারণ। 

উঃ

দোষ: কাকতালীয় দোষ। / অবান্তর ঘটনাকে কারণ মনে করা দোষ

বিচার:  উক্ত আরােহ যুক্তিতে কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। কেননা, এখানে মাদুলি ধারণ করাকে রােগ নিরাময়ের কারণরূপে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, এরূপ অনুমান ভ্রান্ত। কারণকে কেবল অগ্রবর্তী ঘটনা হলে চলবে না, তাকে নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা হতে হবে। একটি বিশেষ ক্ষেত্রে মাদুলি ধারণের পর রােগ নিরাময় হলেও সবক্ষেত্রে তা হয়। অর্থাৎ, মাদুলি ধারণ সবক্ষেত্রে রােগ নিরাময়ের অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। এক্ষেত্রে অসতর্কভাবে অনিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিটি কাকতালীয় দোষে দুষ্ট হয়েছে। [এক্ষেত্রে অবান্তর ঘটনাকে কারণ মনে করা দোষও করা যেতে পারে।] 

২৭) নববধূ গৃহে প্রবেশ করার পরই শাশুড়ির মৃত্যু হল। সুতরাং, নববধূর আগমনই শাশুড়ির মৃত্যুর কারণ। 

উঃ

দোষ: কাকতালীয় দোষ

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে ব্যতিরেকী পদ্ধতির অপপ্রয়ােগের জন্য কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। আলােচ্য যুক্তিতে নববধূর গৃহে আগমনকে শাশুড়ির মৃত্যুর কারণরূপে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, নববধূর গৃহে আগমন শাশুড়ির মৃত্যুর অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। একটি বিশেষ ক্ষেত্রে নববধূর গৃহে প্রবেশের পর শাশুড়ির মৃত্যু ঘটলেও সবক্ষেত্রে তা হয় না। কাজেই, কুসংস্কার বসতঃ এবং অসতর্কভাবে অনিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিটি কাকতালীয় দোষে দুষ্ট হয়েছে।

২৮) উপনিবেশগুলি ফলের মতাে। কারণ , ফল পাকলে যেমন গাছ থেকে পড়ে যায়, তেমনি উপনিবেশগুলি সমৃদ্ধ হলে দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। 

উঃ 

দোষ: মন্দ উপমা যুক্তি / ভ্রান্ত সাদৃশ্যমূলক দোষ।

বিচার: এটি একটি মন্দ উপমাযুক্তির উদাহরণ। কেননা, এক্ষেত্রে উপনিবেশ ও ফলের মধ্যে একটি অপ্রাসঙ্গিক সাদৃশ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গঠন করা হয়েছে। ফল প্রাকৃতিক নিয়মে নিজ থেকেই পেকে যায় এবং গাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। কিন্তু, উপনিবেশগুলি চেষ্টা করে সমৃদ্ধ হয় অর্থাৎ, পরিপক্ক হয় এবং দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। কাজেই, দুটি বিষয়ের পরিপক্কতা এবং বিচ্ছিন্ন হওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। অথচ এই যুক্তিতে সেই পার্থক্য সরিয়ে দিয়ে ফল এবং উপনিবেশদুটিকে একজাতীয় বলা হয়েছে। এজন্য এটি মন্দ উপমাযুক্তি হিসাবে গণ্য হবে। 

২৯) প্রায় জলে অবগাহন কোরাে না; কেননা, এক টুকরাে দড়ির মতাে শরীরেরও পচনের আশঙ্কা আছে। 

উঃ 

দোষ: মন্দ উপমা যুক্তি / ভ্রান্ত সাদৃশ্যমূলক দোষ।

বিচার: এটি একটি মন্দ উপমাযুক্তির দৃষ্টান্ত। এই যুক্তিতে দড়ির সঙ্গে মানুষের শরীরের যে সাদৃশ্য উল্লেখ করা হয়েছে তা অপ্রাসঙ্গিক। কেননা, দড়ি জড়পদার্থ। তার সঙ্গে জলের সম্পর্ক এক ধরনের। আর দেহে যখন চেতনা থাকে তখন চেতনাযুক্ত দেহের সঙ্গে জলের সম্পর্ক অন্য ধরনের। অর্থাৎ, জলে ভেজা দড়ি এবং জলে ভেজা দেহ — দুটির মধ্যে পার্থক্য আছে। অথচ যুক্তিটিতে এই পার্থক্য সরিয়ে দিয়ে জলে ভেজা দড়ি এবং জলে ভেজা দেহের পরিণাম অভিন্ন বলে অনুমান করা হয়েছে। সুতরাং, এটি মন্দ উপমাযুক্তি হিসাবে গণ্য হবে। 

৩০) একটি দেশের চরম পরিণতি হল ধ্বংস, কারণ, দেশ হল একপ্রকার জীবদেহ এবং জীবদেহের বার্ধক্য ও মৃত্যু আছে। 

উঃ 

দোষ: মন্দ উপমা যুক্তি / ভ্রান্ত সাদৃশ্যমূলক দোষ।

বিচার: এটি একটি মন্দ উপমাযুক্তির উদাহরণ। কারণ, এক্ষেত্রে দেশ ও জীবদেহের মধ্যে উৎপত্তি ও বৃদ্ধির সাদৃশ্যটি প্রকৃত সাদৃশ্য নয়। জীবদেহের মধ্যে প্রাণ আছে বলে তার যে অর্থে বৃদ্ধির কথা বলা হয় সেই অর্থে দেশের বৃদ্ধির কথা বলা যায় না। বস্তুত দেশ ও জীবদেহের মধ্যে বৈসাদৃশ্যমূলক ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যের সংখ্যাই অধিক। এক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের মধ্যে কোনাে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক সাদৃশ্য না থাকায় দেশের ধ্বংস জীবদেহের ধ্বংসের মতাে একইরকমভাবে ঘটে — এরূপ সিদ্ধান্ত ভ্রান্ত। তাই যুক্তিটি মন্দ উপমাযুক্তি দোষে দুষ্ট হয়েছে। 

৩১) কোনাে দেশের রাজধানী হল দেশের হৃৎপিণ্ডের মতাে। কাজেই, রাজধানীর আয়তন বৃদ্ধি দেশের পক্ষে ক্ষতিকর।

 উঃ 

দোষ: মন্দ উপমা যুক্তি / ভ্রান্ত সাদৃশ্যমূলক দোষ।

বিচার: উক্ত যুক্তিটি ভ্রান্ত সাদৃশ্যমূলক দোষে দুষ্ট। এখানে দেশের রাজধানীর সঙ্গে দেহের হৃৎপিণ্ডের তুলনা করা হয়েছে। কিন্তু, এক্ষেত্রে তুলনা বা সাদৃশ্যটি আলংকারিক তুলনা বলে গণ্য করা হয়। আর আলংকারিক সাদৃশ্যের ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ সাদৃশ্য অনুমান করা যুক্তিযুক্ত নয়। বস্তুত হৃৎপিণ্ডের আয়তন বৃদ্ধির সঙ্গে দেশের রাজধানীর আয়তন বৃদ্ধির কোনাে কার্যকারণ সম্পর্ক থাকতে পারে না। তাই এখানে মন্দ উপমাযুক্তি দোষ ঘটেছে।

৩২) নতুন শাড়িটি পরার পরই রমার জ্বর হল । কাজেই, নতুন শাড়িটিই হল রমার জ্বরের কারণ। 

উঃ 

দোষ: কাকতালীয় দোষ 

বিচার: যুক্তিটিতে কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। কেননা, এখানে নতুন শাড়িকেই জ্বরের কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে, কিন্তু সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ভ্রান্ত এবং কার্যকারণ সম্পর্ক বহির্ভূত। এক্ষেত্রে নতুন শাড়ি পরা জ্বরের অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। অর্থাৎ, রমা যখনই শাড়ি পরে তখনই জ্বর হয় এমন নয়। কোনাে ঘটনাকে কারণ হতে গেলে তাকে কার্যের নিয়ত, শর্তান্তরহীন অব্যবহিত অগ্রবর্তী ঘটনা হতে হবে। এক্ষেত্রে অনিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনাকে কারণরূপে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে।

৩৩)  গ্রীষ্মের পর বর্ষা আসে, অতএব গ্রীষ্মকাল হল বর্ষাকালের কারণ। 

উঃ 

দোষঃ সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণ বলে গণ্য করার দোষ।

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণ বলে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। এক্ষেত্রে গ্রীষ্মের পরে বর্ষা আসে বলে গ্রীষ্মকালকে বর্ষাকালের কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, কারণ হবে কার্যের নিয়ত শর্তান্তরহীন অগ্রবর্তী ঘটনা। এখানে গ্রীষ্মকাল - বর্ষাকালের নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও শর্তান্তরহীন অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। উভয় ঘটনাই হল কার্য। উভয়ের কারণ হল পৃথিবীর বার্ষিক গতি। বার্ষিক গতির জন্যই বিভিন্ন ঋতু পরিবর্তন ঘটে অর্থাৎ, গ্রীষ্ম ও বর্ষার আবির্ভাব ঘটে। সুতরাং, এক্ষেত্রে গ্রীষ্মকে বর্ষার কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিতে উক্ত দোষ ঘটেছে।

 ৩৪) হিটলারের পােল্যান্ড আক্রমণ হল ইংল্যান্ডের সঙ্গে জার্মানির যুদ্ধের কারণ।

 উঃ 

দোষ: আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ।

বিচার: উক্ত যুক্তিতে একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, কারণ হবে একাধিক সদর্থক ও নঞর্থক শর্তের সমষ্টি। এক্ষেত্রে হিটলারের পােল্যান্ড আক্রমণকেই ইংল্যান্ডের সঙ্গে জার্মানির যুদ্ধের কারণ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু হিটলারের পোল্যান্ড আক্রমণ যুদ্ধের একমাত্র কারণ নয়, কারণের একটি অংশমাত্র। এক্ষেত্রে হিটলারের পােল্যান্ড আক্রমণ করার পাশাপাশি আরও অন্যান্য শর্ত যেমন— ইউরােপে অর্থনৈতিক সংকট, উপনিবেশগুলির স্বাধীনতা লাভের আকাঙ্ক্ষা, জার্মান জাতির জাতীয়তাবােধ প্রভৃতি একত্রিত হয়ে যুদ্ধ সংঘটিত করেছে। কাজেই, এক্ষেত্রে একটি শর্তকে সমগ্র কারণ বলে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে।

 ৩৫) বুদ্ধিজীবীরা মিছিল করার পরে পশ্চিমবঙ্গে খরা সৃষ্টি হল। সুতরাং, বুদ্ধিজীবীদের মিছিল করাই হল পশ্চিমবঙ্গে খরা সৃষ্টির কারণ। 

উঃ

দোষ: অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ। / কাকতালীয় দোষ।

 বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে একটি অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, এক্ষেত্রে বুদ্ধিজীবীদের মিছিল করাকেই খরা সৃষ্টির কারণ বলে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, বুদ্ধিজীবীদের মিছিল করার সঙ্গে খরা সৃষ্টি হওয়ার কোনােরূপ কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে এরূপ সিদ্ধান্ত করা হয়েছে বলে যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট হয়েছে। 

৩৬) যকৃৎ থেকে যেমন পিত্তরস, পাকস্থলী থেকে অম্লরস ক্ষরিত হয়, তেমনি মস্তিষ্ক থেকে চিন্তা নিঃসৃত হয়। 

উঃ 

দোষ: মন্দ উপমাযুক্তি বা দুষ্টু উপমা যুক্তি বা ভ্রান্ত সাদৃশ্যমূলক দোষ।

বিচার: এটি একটি মন্দ উপমাযুক্তির দৃষ্টান্ত। কেননা, এক্ষেত্রে হেতুবাক্যে উল্লিখিত ধর্মগুলি সিদ্ধান্তে অনুমিত ধর্ম প্রসঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয়। এক্ষেত্রে হেতুবাক্যে উল্লিখিত ধর্মগুলি অর্থাৎ পিত্তরস, অম্নরস হল জড়ধর্ম এবং জড়ধর্মী যকৃৎ ও পাকস্থলী থেকে ওইসব ধর্ম নিঃসৃত হতে পারে। কিন্তু, চিন্তা হল অজড়ধর্ম, যা জড়ধর্মী মস্তিষ্ক থেকে নিঃসৃত হতে পারে না। কাজেই, এখানে অপ্রাসঙ্গিক সাদৃশ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গঠিত হয়েছে বলে যুক্তিটি মন্দ উপমা দোষে দুষ্ট হয়েছে।

 ৩৭) কলকাতার বাৎসরিক মৃত্যুর হার দিল্লির চেয়ে বেশি। অতএব কলকাতা দিল্লির চেয়ে অস্বাস্থ্যকর স্থান। 

উঃ 

দোষ:  অ-পর্যবেক্ষণ দোষ /অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ/

বিচার: উক্ত যুক্তিতে অ - পর্যবেক্ষণ দোষ ঘটেছে। কেননা, বাৎসরিক মৃত্যুর হার বেশি দেখে কলকাতাকে দিল্লির চেয়ে অস্বাস্থ্যকর স্থান বলা হয়েছে। কিন্তু, এখানে নঞর্থক দৃষ্টান্তগুলিকে পর্যবেক্ষণ না করে কেবল কিছু সদর্থক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত গঠন করা হয়েছে। দিল্লির তুলনায় কলকাতায় বাৎসরিক মৃত্যুর হার বেশি এ কথা সত্য, কিন্তু দিল্লির তুলনায় কলকাতায় জনসংখ্যার পরিমাণ অনেক বেশি ফলে মৃত্যুর হারও বেশি— এই নঞর্থকদিকটিকে পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। এ কারণে যুক্তিটি অপর্যবেক্ষণ দোষে দুষ্ট হয়েছে। 

৩৮) পেঁচার ডাক নিশ্চয়ই অশুভ। কেননা, পেঁচা ডাকার ঠিক পরেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল।

 উঃ 

দোষ: কাকতালীয় দোষ।

বিচার: যুক্তিটিতে কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। কেননা, এক্ষেত্রে পেঁচার ডাক অগ্নিকাণ্ডের অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। অর্থাৎ, যখনই অগ্নিকাণ্ড ঘটে তখনই পেঁচা ডাকে এমন নয়। কাজেই, এখানে অনিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনাকে কারণ বলার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে।

 ৩৯) রাম যে পরীক্ষায় ফেল করবে, এটা তার জানাই ছিল। কারণ, পরীক্ষা দিতে যাবার সময় সে রাস্তার একটি কালাে বিড়াল দেখেছিল। 

উঃ 

দোষ: অবান্তর ঘটনাকে কারণ মনে করা দোষ 

বিচার: উক্তি যুক্তিতে কোনাে অবান্তর ঘটনাকে কারণ মনে করা দোষ ঘটেছে। কেননা, পরীক্ষায় পাশ করা বা ফেল করার সঙ্গে রাস্তায় কালাে বিড়াল দেখার কোনােরূপ কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। পরীক্ষায় পাশ করার ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক ব্যাপার হল ভালাে প্রস্তুতি নেওয়া। কিন্তু, এখানে একটি অবান্তর বিষয়কে কারণ বলে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে। 


৪০)  ভােরের স্বপ্ন সত্য হয়।

উঃ 

দোষ:  অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ। 

বিচার: যুক্তিটি অন্বয়ী পদ্ধতির অপপ্রয়োগের ফলে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট। কেননা, এখানে কয়েকটি ক্ষেত্রে ভােরের স্বপ্ন সত্য হতে দেখে সেই সীমিত সংখ্যক দৃষ্টান্তের ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে ভােরের স্বপ্নমাত্রই সত্য হয়। এক্ষেত্রে দৃষ্টান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি করলে দেখা যাবে, ভােরের স্বপ্ন কখনও সত্য হয় আবার কখনও মিথ্যা হয়। কাজেই, কার্যকারণ সম্পর্ক নিরূপণ না করে কয়েকটি বিশেষ দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে বলে যুক্তিটিতে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে ।

৪১) কুকুরেরাও মানুষের মতাে প্রাণী। সুতরাং কুকুরেরাও মানুষের মতাে বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন: 

উঃ

দোষ:  মন্দ - উপমার দোষ।

 বিচার: এই আরােহী যুক্তিটি মন্দ - উপমার দোষে দুষ্ট। কারন, এখানে মানুষের সঙ্গে কুকুরের তুলনা করা হয়েছে। কিন্তু কোনাে উপমা রচনার ক্ষেত্রে দুটি সমজাতীয় বিষয়ের মধ্যে উপমা করা উচিত, কোনাে বিজাতীয় বিষয়ের মধ্যে উপমা করা উচিত নয়। তাছাড়া কুকুর এবং মানুষের মধ্যে অনেক বৈসাদৃশ্য রয়েছে, সেগুলি উপেক্ষা করা হয়েছে। তাই মানুষ এবং একটি ইতর প্রাণীর মধ্যে উপমা সৃষ্টি করায় যুক্তিটি  এরূপ দোষে দুষ্ট হয়েছে।

৪২) পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হল ভালাে ফসল হওয়ার কারণ। 

উঃ

দোষ: আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ

বিচার : উক্ত আরােহ যুক্তিতে একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ভালাে ফসল হওয়ার একটি শর্তমাত্র, একমাত্র কারণ নয়। ভালাে ফসল হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি উর্বর মৃত্তিকা, উন্নত মানের বীজ, কীটনাশক, রাসায়নিক সার প্রভৃতির প্রয়ােজন হয়। এগুলি একত্রিতভাবে ভালাে ফসল উৎপন্ন করে। কাজেই, এই শর্তগুলির মধ্যে কেবলমাত্র একটিকে অর্থাৎ, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতকে ভালাে ফসল হওয়ার কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে। 


Read More

Sunday 27 December 2020

Two questions & answers of On Killing a Tree.

Leave a Comment

  1. Why does it take much time to kill a tree? How is the tree finally killed? [গাছকে মেরে ফেলতে প্রচুর সময় লাগে কেন? গাছটিকে শেষ পর্যন্ত কিভাবে মেরে ফেলা হয়?] (3+3) 

ANS. The tree has grown slowly by consuming the earth's nutrients and absorbing sunlight, air and water. It feeds upon the earth's crust and gains much strength. Neither a simple jab of the knife nor hacking and chopping can kill a tree at all because new shoots come out again. So, it takes much time to kill a tree.

 * To kill a tree, its root is to be pulled out. The root is to be kept in the sun and air to get scorched and choked. The root is to be left till they get dry and become brown. In time, it becomes hardened, twisted and withered. Thus the tree is finally killed.

বঙ্গানুবাদ:

[ গাছ ধীরে ধীরে পৃথিবীর পুষ্টিদ্রব্য ভোগ করে এবং সূর্যলোক, বাতাস আর জল শোষণ করে বেড়ে উঠেছে। সেটি ভূত্বক থেকে খাদ্যসংগ্রহ করে প্রচুর শক্তি অর্জন করেছে। সাধারণ ছুরিকাঘাতে অথবা প্রবল আঘাতে টুকরো টুকরো করে কাটলেও গাছকে মেরে ফেলা যায় না।  কারণ আবার সেটির নতুন পাতা গজায়। তাই গাছকে মেরে ফেলতে প্রচুর সময় লাগে। 

 গাছকে মেরে ফেলতে হলে তার শিকড় টেনে তুলতে হবে। শিকড়টিকে দগ্ধ ও শাসরুদ্ধ করার জন্য সুর্যের তাপে ও বাতাসে ফেলে রাখতে হবে। শিকড়টি শুকিয়ে না-যাওয়া ও বাদামি বর্ণ ধারণ করা পর্যন্ত ফেলে রাখতে হবে। যথাসময়ে সেটি শক্ত হয়ে যায়, মুচড়ে যায় আর পুরােপুরি শুকিয়ে যায়। এইভাবে গাছটিকে শেষপর্যন্ত মেরে ফেলা হয়। ]


2. Justify the significance of the title of the poem "On Killing aTree". (  "On Killing aTree" কবিতাটির নামকরণের তাৎপর্য বিচার করো।)

ANS. In his poem 'On Killing a Tree' Gieve Patel gives a graphic description of the total destruction  of a tree. The poet states that  a simple jab of the knife  cannot kill a tree.  It is not so easy  task because  the tree has grown slowly, consuming the earth and absorbing  sunlight, air and water. Moreover, when it is hacked and chopped, the bleeding bark heals itself. When a man wants to destroy the tree completely, it is uprooted from the earth-cave. This destruction passes through scorching, choking, browning, hardening, twisting and finally withering. Thus the poem describes the process of killing a tree. Hence, the title is appropriate.

বঙ্গানুবাদ:

'On Killing a Tree' কবিতায় গিয়েভ প্যাটেল একটি গাছকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার এক নিখুঁত চিত্র এঁকেছেন। কবি বলেছেন যে, ছুরির সাধারণ আঘাত  গাছকে মেরে ফেলতে পারে না। এটা অত সহজ কাজ নয় কারণ গাছটি পৃথিবীর পুষ্টিকর উপাদান নিয়ে এবং সূর্যালোক, বাতাস ও জল আত্মস্থ করে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠেছে। তা ছাড়া যখন সেটিকে কুপিয়ে ও কুচিয়ে কাটা হয়, তখন সে নিজে নিজেই সেরে ওঠে। মানুষ যখন গাছকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করতে চায় তখন সেটিকে মাটির - গুহা থেকে মূলােৎপাটিত করা হয়। এই ধ্বংসকাণ্ড অতিক্রান্ত হয় রােদের তাপে দগ্ধ হওয়া, শ্বাসরুদ্ধ হওয়া, বাদামি বা তামাটে রঙে পরিণত হওয়া, শক্ত হওয়া, মুচড়ে যাওয়া এবং শেষে শুকিয়ে যাওয়া প্রভৃতির মধ্য দিয়ে। এইভাবে কবিতাটি গাছকে মেরে ফেলার পদ্ধতির বর্ণনা দেয়। তাই নামকরণটি যথােপযুক্ত । ]

Read More

Saturday 26 December 2020

চার্বাক দর্শনে অনুমান প্রমাণ নয় কেন? সমালোচনাসহ লেখ।

Leave a Comment

 অনুমান কাকে বলে? চার্বাক দর্শনে অনুমান প্রমাণ নয় কেন? এই মতক কি গ্রহণ যোগ্য? উত্তর এর সমর্থনে যুক্তি দাও।

উঃ

অনুমান: জ্ঞাত বিষয় থেকে ব্যাপ্তিজ্ঞানের ভিত্তিতে অজ্ঞাত নতুন বিষয়ের জ্ঞানকে অনুমান বলে। যে - কোনাে অনুমান প্রক্রিয়ায় তিনটি বিষয় থাকে — পক্ষ, সাধ্য ও হেতু। অনুমানের ক্ষেত্রে যে বিষয়টির অনুমান করা হয় বা যা প্রমাণ করতে চাওয়া হয় তাকে বলে সাধ্য। যে অধিকরণে (স্থলে) সাধ্য আছে কিনা এরূপ সংশয় থাকে, সেই অধিকরণকে পক্ষ বলে। আর যার সাহায্যে পক্ষে সাধ্যের অনুমান করা হয় সেই বিষয়টি হল হেতু। 

উদাহরণস্বরূপ--

 ওই পর্বতটি ধূমবান। 

যেখানে যেখানে ধূম থাকে সেখানে সেখানে বহ্নি থাকে। 

 : . ওই পর্বতটি বহ্নিমান।

 উক্ত অনুমানে ‘পর্বত’ হল পক্ষ, 'বহ্নি' হল সাধ্য এবং 'ধূম’ হল হেতু। এখানে ধূমের সঙ্গে বহ্নির অর্থাৎ হেতুর সঙ্গে সাধ্যের যে নিহত সহচার সম্পর্ক আছে তাকেই বলা হয় ব্যপ্তি। ব্যাপ্তি-জ্ঞান অনুমানের ভিত্তি।

        অনুমান প্রমাণ খন্ডনে চার্বাকদের যুক্তি:

প্রথমতঃ অনুমান হল এমন এক মানসিক প্রক্রিয়া যার সাহায্যে আমরা জ্ঞাত সত্য থেকে অজ্ঞাত সত্যে উপনীত হই। এক্ষেত্রে যে অনিশ্চয়তা আছে তা অস্বীকার করা যায় না। সুতরাং বলা যায়, অনুমান হল একপ্রকারের অন্ধকারে লাফ দেওয়ার প্রক্রিয়া, যথার্থ জ্ঞান লাভের প্রক্রিয়া নয়। 

দ্বিতীয়তঃ  অনুমানে ভ্রান্তির সম্ভাবনা থাকে। চার্বাক দার্শনিকেরা বলেন, প্রত্যক্ষ যেমন স্পষ্ট জ্ঞান দেয়, অনুমান সেরূপ স্পষ্ট জ্ঞান দিতে পারে না। কেননা, অনুমান পরােক্ষ বা অন্য - নির্ভর জ্ঞান। প্রত্যক্ষ সংশয় ও বিপর্যয় - শূন্য জ্ঞান দেয়; অপরপক্ষে, অনুমান - প্রদত্ত জ্ঞান সংশয়মূলক, বিতর্কিত ও অনিশ্চিত। তাই সংশয়মূলক অনুমানকে যথার্থ প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা যায় না। 

তৃতীয়তঃ  অবরােহ অনুমান চক্রক দোযে (Fallacy of Petitio Principii) দুষ্ট। কেননা, অবরােহ অনুমানে সিদ্ধান্তটিকে পূর্ব থেকে প্রধান আশ্রয়বাক্যে স্বীকার করে নেওয়া হয়, যে প্রধান আশ্রয়বাক্যের যাথার্থ্য প্রমাণিত হয়নি। অবশ্য আরােহ অনুমানের লক্ষ্য হল- অবরােহ অনুমানের প্রধান আশ্রয়বাক্যের যথার্থ প্রমাণ করা। কিন্তু আরােহ অনুমানে প্রত্যক্ষ বিষয়কে ভিত্তি করে অপ্রত্যক্ষ বিষয়ের সামান্যীকরণ করতে হয়। সেজন্য আরােহ অনুমানে যথেষ্ট অনিশ্চয়তা ও সন্দেহের অবকাশ থাকে।

       চতুর্থতঃ  যথার্থ ও বৈধ অনুমান গঠন করতে হলে আমাদের ব্যাপ্তিজ্ঞানের ওপর নির্ভর করতে হয়। চার্বাক দার্শনিকেরা বলেন, ব্যাপ্তিজ্ঞান প্রত্যক্ষের মাধ্যমে অর্জন করা যায় না; অতএব অনুমান যথার্থ জ্ঞানের উৎস হতে পারে না। ব্যাপ্তিজ্ঞান বলতে কি বােঝায় সংক্ষেপে আলােচনা করা যাক। দূরে পাহাড়ে ধূম দেখে অনুমান করলাম যে সেখানে বহ্নি আছে। এই অনুমান নিশ্চিতভাবে সত্য হতে পারে যদি ধূম ও  বহ্নির এই সম্বন্ধ থাকে যে, “যেখানে যেখানে ধূম আছে, সেখানে সেখানেই বহ্নি আছে।” ধূম আর বহ্নির এই নিয়ত সম্বন্ধকে দার্শনিক পরিভাষায় বলা হয় ব্যাপ্তি। ধূম থাকলেই বহ্নি থাকবে— অতীতেও যেখানে ধূম ছিল সেখানে বহ্নি ছিল, বর্তমানেও যেখানে ধুম আছে সেখানে বহ্নি আছে এবং ভবিষ্যতেও যেখানে ধূম থাকবে, বহ্নি থাকবে এই রকম নিঃসন্দিগ্ধ ব্যাপ্তিজ্ঞান যদি আমাদের হয়, তবেই আমরা কোন স্থানে ধূম দেখে নিশ্চিতভাবে অনুমান করতে পারি যে সেখানে বহ্নি আছে। চার্বাকদের মতে এরূপ নিঃসন্দিগ্ধ ব্যাপ্তিজ্ঞান প্রত্যক্ষের মাধ্যমে সম্ভব নয়। কারণ, বর্তমানে ধূমের সঙ্গে বহ্নির সহ - অবস্থানের সম্বন্ধ প্রত্যক্ষ করা গেলেও সুদূর অতীতে ও অনাগত ভবিষ্যতে ধূমের সঙ্গে বহ্নির এই সহ - অবস্থানের সম্বন্ধ প্রত্যক্ষ করা যায় না। অতএব অনুমান নিশ্চিত আনের উৎস হতে পারে না। 

পঞ্চমতঃ  কেউ কেউ বলতে পারেন, অনুমানের সাহায্যে ব্যাপ্তিজ্ঞান সম্ভব হয়। বহুক্ষেত্রে বহ্নিকে ধূমের সহচররূপে দেখেছি; এদের একত্র থাকার ব্যতিক্রম কোথাও দেখা যায়নি। এর ভিত্তিতে আমরা অনুমান করছি, ধুম ও বহ্নি একত্র থাকবেই। কিন্তু এভাবে ব্যাপ্তিজ্ঞান যদি অনুমানের ওপর নির্ভর করে, তাহলে ঐ অনুমান আবার ব্যাপ্তিজ্ঞানের ওপর নির্ভর করবে এবং ঐ ব্যাপ্তিজ্ঞান আবার আর একটি অনুমানের ওপর নির্ভর করবে। এইভাবে অনুমানের পর অনুমান গঠন করেই চলতে হবে। ফলতঃ  অনবস্থা দোষ (Fallacy of Infinite Regress) ঘটবে। প্রকৃতপক্ষে, যখন অনুমান প্রমাণ কিনা— এটাই বিচার্য বিষয়, তখন অনুমানের ওপর ভিত্তি করে ব্যাপ্তিজ্ঞান স্থাপন করা উচিত নয়।

যষ্ঠতঃ অনেকে বলতে পারেন, কোন বিশ্বস্ত মহাজ্ঞানী ব্যক্তির আপ্তবাক্য থেকে ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভ করা যেতে পারে। কিন্তু তাও গ্রহণযােগ্য নয়। কেননা, এরূপ ব্যক্তি সত্যিই বিশ্বাসযােগ্য কিনা তা জানার জন্য অনুমানের সাহায্য নিতে হয়। এক্ষেত্রে অনুমানটি হবে নিম্নরূপ: 

বিশ্বস্ত মহাজ্ঞানী লােকেরা যা বলেন তা সন্দেহাতীত;

 বিশ্বস্ত মহাজ্ঞানী লােকেরা বলেন, বহ্নি ও ধূমের নিয়ত সম্বন্ধ আছে। 

: . বহ্নি ও ধূমের নিয়ত সম্বন্ধ(ব্যাপ্তি) সন্দেহাতীত। 


সপ্তমতঃ  চার্বাকগণ অনুমানের বিরুদ্ধে আরও আপত্তি তুলে বলেন যে, উপমানের দ্বারাও ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভ করা সম্ভব নয়। আমরা জানি, নৈয়ায়িকগণ উপমান নামে একটি স্বতন্ত্র প্রমাণ স্বীকার করেন। উপমান কাকে বলে বােঝার জন্য উপমানের বহুল প্রচলিত উদাহরণটি নেওয়া যাক। কোন একজন নগরবাসী মানুষ গরু দেখেছেন; কিন্তু গবয় বা নীলগাই দেখেননি। একদিন তিনি একজন অরণ্যবাসী ব্যক্তির কাছে জানলেন যে, গরুর সদৃশ পশুই হল গবয় (গােসদৃশ গবয়)। ঐ নগরবাসী ব্যক্তিটি একদিন অরণ্যে ভ্রমণ করার জন্য বের হলেন। তিনি অরণ্যে গিয়ে গরুর সদৃশ একটি প্রাণী প্রত্যক্ষ করলেন এবং বললেন— এই নতুন প্রাণীটি হল গবয় বা নীলগাই। এই সাদৃশ্যভিত্তিক জ্ঞানের উপায়কেই নৈয়ায়িকগণ উপমান বলেছেন। চার্বাকদের মতে উপমান স্বতন্ত্র প্রমাণ নয়। তারা বলেন, উপমান অনুমানেরই প্রকারভেদ। পরিচিত গরু এবং একটি অপরিচিত গবয়ের মধ্যে সাদৃশ্য প্রত্যক্ষ করার পর আমরা অনুমানের সাহায্যে বলি— অপরিচিত পশুটি হল গবয়। তাই চার্বাকগণ সিদ্ধান্ত করেন , উপমান যেহেতু স্বতন্ত্র প্রমাণ নয়, সেহেতু উপমানের দ্বারা ব্যাপ্তি - জ্ঞান অর্জনের প্রশ্নই ওঠে না। 

অষ্টমতঃ ভাট্ট মীমাংসকগণ এবং অদ্বৈত বৈদান্তিকগণ অনুপলব্ধি নামে একটি প্রমাণ স্বীকার করেন। চার্বাকগণ বলেন, অনুপলব্ধির মাধ্যমেও ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। ভাব বস্তুর (অর্থাৎ, অস্তিত্ব রয়েছে এমন বস্তুর) জ্ঞানের জন্য যেমন প্রত্যক্ষ, অনুমান প্রভৃতি প্রমাণ স্বীকার করা হয়, তেমনই বস্তুর অভাবের বা অনস্তিত্বের জ্ঞানের জন্য ভাট্ট মীমাংসকগণ এবং অদ্বৈত বৈদান্তিকগণ অনুপলব্ধি নামক স্বতন্ত্র প্রমাণ স্বীকার করেন। 

‘ভূতলে (মেঝেতে) ঘট নেই’— আমরা অনেক সময় এই জাতীয় অবধারণ ব্যক্ত করি। প্রশ্ন হল কি উপায়ে আমরা ভূতলে ঘটাভাব জানতে পারি? এর উত্তরে ভাট্ট মীমাংসকগণ বলেন, প্রত্যক্ষ, অনুমান ইত্যাদি চিরাচরিত প্রমাণের মাধ্যমে বস্তুর অভাবের জ্ঞান সম্ভব নয়। বস্তুর অভাবের জ্ঞানের জন্য তাঁরা অনুপলব্ধি নামক স্বতন্ত্র প্রমাণ স্বীকার করেন। চার্বাক গন বলেন - অনুপলব্ধিকে যদি স্বতন্ত্র প্রমাণ হিসেবে স্বীকার করে নেওয়াও  হয় , তাহলেও বলা যায় যে, অনুপলব্ধির মাধ্যমে কোন কিছুর অভাবের জ্ঞান লাভ সম্ভব হয়, ব্যাপ্তি - জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। 

নবতমঃ অষ্টমত কেউ কেউ বলেন, কার্যকারণ সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে ব্যাপ্তি প্রতিষ্ঠা করা যায়। এদের মতে, ধূম ও বহ্নির মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা গেলেই ধূম ও বহ্নির মধ্যে ব্যাপ্তি সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠা করা যায়। কিন্তু চার্বাকপন্থীরা এই অভিমত স্বীকার করেন না। চার্বাক মতে, কার্যকারণ সম্পর্ক হল অনিবার্য সম্পর্ক। আর অনিবার্যতাকে প্রত্যক্ষ করা যায় না। তাই কার্যকারণ সম্পর্কের দ্বারা ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভ করা যায় না।

এই সকল কারণে চার্বাকগণ অনুমানকে প্রমাণ হিসাবে স্বীকার করেন না। অবশ্য পরবর্তীকালে যারা সুশিক্ষিত চার্বাক নামে পরিচিত তারা দৈনন্দিন জীবনযাত্রা নির্বাহের প্রয়ােজনে কিছু অনুমানের প্রামাণ্য স্বীকার করে নিয়েছিলেন। তবে তারা অতীন্দ্রিয় বিষয় সম্পর্কে অনুমান সমর্থন করেননি। 

 সমালােচনাঃ  ভারতীয় অন্যান্য দর্শন সম্প্রদায়, বিশেষ করে জৈন দার্শনিকগণ অনুমান প্রমাণ - বিরােধী চার্বাকদের মতের তীব্র সমালােচনা করেছেন। 

১) জৈন দার্শনিকগণ বলেন, চার্বাকরা যখন ঈশ্বর, আত্মা, স্বর্গ, পরলােক প্রভৃতি অতীন্দ্রিয় সত্তার অস্তিত্ব অস্বীকার করেন তখন তারা অনুমানের সাহায্য নিয়েই এরূপ সিদ্ধান্ত করেন। এক্ষেত্রে চার্বাকদের অনুমান প্রক্রিয়াটি হল :

 যা কিছু প্রত্যক্ষগ্রাহ্য কেবল তাদের অস্তিত্ব আছে।

 আত্মা ঈশ্বর প্রভৃতি প্রত্যক্ষগ্রাহ্য নয়। 

. :  আত্মা ঈশ্বর প্রভৃতির অস্তিত্ব নেই। 

২) চার্বাকদের বিরুদ্ধে জৈনরা আরও অভিযােগ করে বলেন যে, যদি চার্বাকদের প্রশ্ন করা হয় প্রত্যক্ষকে কেন একমাত্র প্রমাণ বলা হবে — তাহলে হয় তারা নীরব থাকবেন অথবা তাদের বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি দেখাবেন। যদি তারা নীরব থাকেন তাহলে তাদের বক্তব্য প্রতিষ্ঠিত হবে না। আর যদি তারা তাদের বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি দেন  তাহলে প্রকারান্তরে তারা অনুমানকে প্রমাণরূপে স্বীকার করে নিতে বাধ্য হবেন। 

3) অনুমান প্রমাণ স্বীকার না - করলে সমস্ত প্রকার আলােচনা, তর্ক, বিতর্ক এবং ব্যবহারিক জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়বে। যেমন — বিদেশে স্থিত কোনাে ব্যক্তির প্রত্যক্ষের অভাবে তাকে মৃত বলে ধরে নিতে হবে। কিন্তু অনুমান করে নিতে হয় যে তিনি জীবিত আছেন। 

৪) নৈয়ায়িক উদয়নাচার্য চার্বাকদের অনুমান সম্পর্কিত মতের সমালােচনা করে বলেন, চার্বাকরা যখন ভবিষ্যতের কথা বলেন, তখন তারা সেই ভবিষ্যৎকে কীভাবে জানেন? প্রত্যক্ষের দ্বারা নিশ্চয়ই ভবিষ্যৎকে জানা যায় না। কাজেই, স্বীকার করতে হয় যে, ভবিষ্যৎকে জানতে গেলে অনুমানের সাহায্য নিতেই হয়। 

৫) অনুমানলব্ধ জ্ঞান পরােক্ষ ও অস্পষ্ট বলে চার্বাকরা অনুমানকে অযথার্থ বলেছেন। কিন্তু জৈনদের মতে, প্রত্যক্ষ জ্ঞানও ইন্দ্রিয়নির্ভর হওয়ার জন্য পরােক্ষ জ্ঞান হয়। কাজেই, অনুমানলব্ধ জ্ঞান পরােক্ষ বলে অযথার্থ হলে প্রত্যঙ্গলব্ধ জ্ঞানকেও অযথার্থ বলতে হবে।

৬) যে সকল যুক্তির সাহায্যে চার্বাকগণ অনুমান ও শব্দকে প্রমাণরূপে অস্বীকার করেছেন সেই একই যুক্তির সাহায্যে প্রত্যক্ষকেও প্রমাণরূপে গ্রহণ করা যাবে না। কেননা, অনুমান ও শব্দের মতাে প্রত্যক্ষলব্ধ জ্ঞানও অনেক সময় ভ্রান্ত প্রমাণিত হয়। যেমন — রজ্জুতে সর্পভ্রম। কাজেই, অনুমানকে প্রমাণ হিসাবে অস্বীকার করলে প্রত্যক্ষকেও প্রমাণ বলা যাবে না।

Google translation: 

What is Anumana?  Why is  Anumana not Pramana in Carvaka philosophy?  Is this opinion acceptable?  Argue in support of the answer.

 Anumana: Anumana is the knowledge of an unknown new subject on the basis of baptism from a known subject.  That - there are three things in the conjecture process - pros, cons and reason.  In the case of conjecture, it is possible to say what is inferred or what is sought to be proved.  The tribunal in which there is such doubt as to whether it is feasible is called a party.  And the reason with which it is estimated that the cause is possible is the cause.

 For example--

  That mountain is smoky.

 Where there is smoke, there is smoke.

  :.  That mountain is flowing.

  In that conjecture ‘mountain’ is the side, ‘bahni’ is the possible and ‘dhoom’ is the cause.  Here, the relation between smoke and bahni, that is, the cause of death, is called range.  Scope-knowledge is the basis of conjecture.

         Charbak's argument in refuting the hypothesis:

 First of all, conjecture is a mental process by which we move from the known truth to the unknown truth.  The uncertainty in this case cannot be denied.  So it can be said that conjecture is a process of jumping into a kind of darkness, not a process of gaining accurate knowledge.

 Second, there is the possibility of error in conjecture.  Charbak philosophers say that as direct knowledge gives clear knowledge, conjecture cannot give such clear knowledge.  Because, conjecture is indirect or other - dependent knowledge.  Direct doubt and catastrophe - gives zero knowledge;  Conjecture, on the other hand, is skeptical, controversial, and uncertain.  So skeptical assumptions cannot be taken as just proof.

 Thirdly, the Fallacy of Petitio Principii is evil.  For, in the assumption of Abrahah, the decision is accepted from the East in the main asylum, which has not proved the validity of the main asylum.  However, the goal of the Ara'ah conjecture is to prove the main premise of the Ara'ah conjecture.  But in Araeh's conjecture one has to generalize the indirect subject based on the direct subject.  That is why there is enough room for uncertainty and doubt in Araeh's conjecture.

        Fourth, we need to rely on baptism in order to make accurate and valid assumptions.  Charbak philosophers say that baptism cannot be achieved directly;  Therefore conjecture cannot be a source of accurate knowledge.  Let us briefly discuss what is meant by baptism.  Seeing the smoke in the distant mountains, I guessed that there was a bahni.  This assumption can certainly be true if there is a relation between smoke and bahni that "where there is smoke, there is bahni."  This constant relation of smoke and smoke is called range in philosophical terms.  If there is smoke, there will be fire: in the past, where there was smoke, there will be fire, now there is smoke, there will be fire, and in the future, where there will be smoke, there will be fire.  .  According to the Charbaks, such an undoubted baptism is not possible through direct observation.  This is because, although the relation of co-position of smoke with smoke can be seen at present, the co-position of co-position of smoke with smoke in the distant past and in the future cannot be observed.  Therefore, conjecture cannot be a sure source of income.

 Fifth, some may say that baptism is possible with the help of conjecture.  In many cases I have seen Bohni as a companion of smoke;  The exception of their being together was not seen anywhere.  On this basis, we assume that Dhoom and Bohni will be together.  But if baptism thus relies on conjecture, then that conjecture will again depend on baptism and that baptism will again depend on another conjecture.  In this way, after the assumption, the assumption must be formed.  As a result, Fallacy of Infinite Regress will occur.  In fact, baptism should not be based on conjecture when it comes to guessing.

 As many may say, baptism can be obtained from the revelation of a faithful sage.  But that too is not acceptable.  Because, to know whether such a person is really credible, one has to take the help of conjecture.  In this case the estimate will be as follows:

 What the faithful sages say is beyond doubt;

  The faithful sage Lakera said that there is a definite relationship between bahni and dhoom.

 :.  The definite relation (range) of smoke and smoke is undoubted.

 Seventh, the Charvakas further objected to the hypothesis, saying that it was not possible to gain baptism even by analogy.  As we know, logicians accept a unique proof called analogy.  Let's take the most common example of analogy to explain what an analogy is.  One of the townspeople saw cows;  But did not see the cow or the nilgai.  One day he learned from a forest dweller that a cow-like animal is a cow (cow-like cow).  The man from the city went out for a walk in the forest one day.  He went to the forest and saw an animal resembling a cow and said: This new animal is a cow or a nilgai.  The logicians call this analogous way of knowledge analogy.  According to Charbak, analogy is not a separate proof.  They say that analogy is a type of conjecture.  After observing the resemblance between a familiar cow and an unfamiliar cow, we say by conjecture: The unfamiliar animal is the cow.  The Charvakas therefore conclude that since analogy is not a separate proof, there is no question of acquiring knowledge by analogy.

 Eighth, the Bhatta Mimansakas and the Advaita Vedantics accept a proof called unattainable.  The Charbaks say that it is not possible to gain baptism even through non-realization.  Just as evidence for direct knowledge, conjecture, etc. is accepted for the knowledge of the object of thought (i.e., the thing that exists), so for the knowledge of the lack or non-existence of matter, the Bhatta theologians and the Advaita Vedantics accept the separate evidence for unavailability.

 ‘There are no pots on the floor’ - we often express this kind of assumption.  The question is in what way can we know what happened on the ground?  In reply to this, the Bhatt critics said that knowledge of the absence of matter is not possible through conventional evidence such as direct, conjecture, etc.  For the knowledge of the lack of objects, they accept the unique evidence called unavailability.  Charbak Gon says that even if the unattainable is accepted as a separate proof, it can be said that it is possible to gain knowledge of the lack of something through the unattainable, it is not possible to gain the knowledge of scope.

 Ninth: Eighth Some say that scope can be established on the basis of causal relationship.  According to them, the causal relationship between smoke and smoke can only be established by establishing a causal relationship between smoke and smoke.  But the Charbakists do not accept this view.  According to Charbak, causal relationships are inevitable relationships.  And inevitability cannot be perceived.  So baptism cannot be gained by causal relationship.

 For all these reasons the Charvakas do not accept conjecture as evidence.  However, those who later came to be known as the well-educated Charbaks accepted the evidence of some conjecture in the necessity of daily life.  However, they did not support speculation about the supernatural.

  Criticism: Other Indian philosophical communities, especially Jain philosophers, have sharply criticized the views of anti-Charbakas.

 1) Jain philosophers say that when the Charvakas deny the existence of God, the soul, the heavens, the afterlife, etc., they make such a decision with the help of conjecture.  In this case, the process of guessing Charbak is:

  All that is perceptible is their existence.

  The soul is not perceptible to God etc.

 .  : Soul God etc. does not exist.

 2) The Jains further complained against the Charbakas, saying that if the Charbakas were asked why the eyewitness would be called the only evidence - then they would either remain silent or argue in favor of their statement.  If they remain silent, their statement will not be established.  And if they argue in favor of their statement, then they will be forced to accept the conjecture as evidence.

 3) Do not accept conjectural evidence - all kinds of discussions, arguments, debates and practical life will be useless.  For example, a person living abroad should be considered dead due to lack of direct contact.  But one has to assume that he is alive.

 4) The logical Udayanacharya criticizes the Charbakas' assumptions and says, "When the Charbakas speak of the future, how do they know the future?"  The future is certainly not known by direct observation.  So, we have to admit that to know the future, we have to take the help of conjecture.

 5) The Charbakars have called the conjecture unreal as the knowledge gained is implicit and vague.  But according to the Jains, direct knowledge is also indirect knowledge to be sense dependent.  Therefore, if the inferred knowledge is untrue as perceptual, then the perceived knowledge must also be called untrue.

 7) The same argument by which the Charbakas have rejected conjecture and word as evidence cannot be accepted as evidence.  Because, according to conjecture and word, perceived knowledge is often proved wrong.  For example - snake delusion on the rope.  Therefore, if the conjecture is denied as evidence, the eyewitness cannot be called evidence either.

Read More

Wednesday 23 December 2020

HS philosophy: SAQ of NATURE OF INDUCTION (আরোহ অনুমানের প্রকৃতি) সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন

Leave a Comment

 আরোহ অনুমানের প্রকৃতি

(NATURE OF INDUCTION)

Class XII (WBCHSE)

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন(SAQ)  প্রতিটির মান - ১

)  আরোহ অনুমান কাকে বলে? 

 উত্তর : যে অনুমানে একাধিক আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্তটি নিঃসৃত হয় কিন্তু কখনোই সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না এবং যার সিদ্ধান্তটি সর্বদা আশ্রয়বাক্যের তুলনায় বেশি ব্যাপক হয়, তাকে আরোহ অনুমান বলে।

Or,

যে অনুমানে পর্যবেক্ষণ বা পরীক্ষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত আশ্রয়বাক্য থেকে প্রকৃতির একরূপতা নীতি বা কার্য - কারণ নিয়ম বা উভয়ের সাহায্যে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সামান্য সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্তরূপে প্রতিষ্ঠা করা হয়, সেই অনুমানকে বলা হয় আরােহ অনুমান ।

Or,

কয়েকটি বিশেষ দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে প্রকৃতির একরূপতা ও কার্যকারণ নীতির উপর ভিত্তি করে একটি সার্বিক সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করাকেই আরোহ অনুমান বলা হয়।

 ২) আরােহ যুক্তিবিজ্ঞানের প্রবর্তক কে?

 উত্তর : আরােহ যুক্তিবিজ্ঞানের প্রবর্তক হলেন বেইন।

৩) আরোহ যুক্তিবিজ্ঞানের প্রকৃত প্রবর্তক কে?

 উত্তর : জন স্টুয়ার্ট মিল হলেন আরােহ যুক্তিবিজ্ঞানের প্রকৃত প্রবর্তক । 

৪) আরােহ অনুমানের দুটি  বৈশিষ্ট্য লেখাে।

  উত্তর : আরােহ অনুমানের দুটি  বৈশিষ্ট্য হল – 

(i) আরোহ অনুমানের সিদ্ধান্তটি একাধিক যুক্তিবাক্য থেকে নিঃসৃত  হয়।

 (ii) সিদ্ধান্তটি সর্বদা আশ্রয়বাক্য থেকে ব্যাপকতর হয় অর্থাৎ কখনও কম ব্যাপক হয় না। 

৫) অবরােহ ও আরােহ অনুমানের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখাে ।

 উত্তর : অবরােহ ও আরােহ অনুমানের মধ্যে দুটি পার্থক্য হল – 

(i) অবরােহ অনুমানে সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়। অপরপক্ষে, আরােহ অনুমানে সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না।

 (ii) অবরােহ অনুমানে সিদ্ধান্ত কখনও আশ্রয়বাক্য থেকে ব্যাপকতর হয় না। অপরপক্ষে, আরােহ অনুমানে সিদ্ধান্ত সর্বদা আশ্রয়বাক্য থেকে ব্যাপকতর হয়। 

৬) আরােহ অনুমানের প্রয়ােজন কী ? 

উত্তর : আরােহ অনুমানের জন্য একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন অপরিহার্য। এই সামান্য সংশ্লেষক বচনের বস্তুগত সত্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য আরােহ অনুমান প্রয়ােজন।

৭) আরোহ অনুমানের একটি উদাহরণ দাও। 

উত্তর : আরােহ অনুমানের একটি উদাহরণ হল :

 রাম হয় মরণশীল। 

যদু হয় মরণশীল।

 হরি হয় মরণশীল। 

. ' . A = সকল মানুষ হয় মরণশীল। 

৮) মিল আরােহ অনুমানকে কতভাগে ভাগ করেছেন? 

উত্তর : মিল আরােহ অনুমানকে দু - ভাগে ভাগ করেছেন । যেমন –

 (১) তথাকথিত আরােহ অনুমান।

 (২) প্রকৃত আরােহ অনুমান। 

৯) প্রকৃত আরােহ অনুমান কতপ্রকার ও কী কী ?

 উত্তর : প্রকৃত আরােহ অনুমান তিনপ্রকার। যথা- ১) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান, (২) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান এবং (৩) উপমাযুক্তি বা সাদৃশ্যমূলক আরােহ অনুমান। 

১০) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান কাকে বলে? 

উত্তর : যে আরােহ অনুমানে প্রকৃতির একরূপতা নীতি এবং কার্যকারণ নিয়মের ভিত্তিতে কয়েকটি বিশেষ বস্তু বা ঘটনাকে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ করে সমজাতীয় সকল ঘটনা সম্পর্কে একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাকে বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বলে।

OR,

যে আরােহ অনুমানে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত আশ্রয়বাক্য থেকে প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের উপর ভিত্তি করে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সামান্য সংশ্লেষ বচন সিদ্ধান্তরূপে প্রতিষ্ঠা করা হয় সেই অনুমানকে বলা হয়  বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান। 

১১) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের একটি উদাহরণ দাও। 

উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের একটি উদাহরণ হল--

 রাম হয় মানুষ এবং মরণশীল। 

রহিম হয় মানুষ এবং মরণশীল।

 রীতা হয় মানুষ এবং মরণশীল ।

 গীতা হয় মানুষ এবং মরণশীল। 

. :  সকল মানুষ হয় মরণশীল । সিদ্ধান্ত 

১২) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি কী? 

উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি হল পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ।

১৩) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি কী? 

 উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতি এরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়ম। 

১৪) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটে না কেন?

 উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানে সদর্থক ও নঞর্থক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় বলে বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের ক্ষেত্রে অবৈধ সামান্যীণ দোষ ঘটে না। 

 ১৫) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান নামকরণের কারণ কী?

 উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সাতটি স্তর অতিক্রম করে এবং কার্য - কারণ নিয়মের উপর ভিত্তি করে সামান্যীকরণ করে সামান্য সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্তরূপে প্রতিষ্ঠা করা হয় বলে এই অনুমানকে বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বলা হয়।

 ১৬) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখাে। 

উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের দুটি বৈশিষ্ট্য হল –

(i) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি হল পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ। 

(ii) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়ম। 

১৭) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বা লৌকিক আরােহ অনুমান কাকে বলে?

 উত্তর : যে আরােহ অনুমানে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করার কোনাে চেষ্টা না করে, কেবলমাত্র অবাধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কয়েকটি বিশেষ দৃষ্টান্ত গণনার মাধ্যমে একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্ত হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাকে অবৈজ্ঞানিক আরােহ বা অপূর্ণ গণনামূলক আরােহ বা লৌকিক আরােহ অনুমান বলা হয়।

 উদাহরণস্বরূপ :

(i) অবাধ অভিজ্ঞতায় আমরা আজ পর্যন্ত যত রাজহাঁস দেখেছি তাদের সবগুলি সাদা। (আজ পর্যন্ত সাদা ভিন্ন অন্য কোনাে রঙের রাজহাঁস দেখিনি)। . 

: . সকল রাজহাঁস হয় সাদা। 

(ii) অবাধ অভিজ্ঞতায় যত কাক দেখেছি, তাদের সবগুলির রং কালাে। (আজ পর্যন্ত কালাে ভিন্ন অন্য কোনাে রঙের কাক দেখিনি)। 

: . সকল কাক হয় কালাে।

১৮) লৌকিক আরােহ অনুমানকে অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বলা হয় কেন? 

 উত্তর : লৌকিক আরোহ অনুমানকে অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বলা হয় — কারণ, এই জাতীয় অনুমানের সিদ্ধান্তটি কার্যকারণ নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়। এক্ষেত্রে কেবলমাত্র অবাধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্তটিকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হয়। এখানে কেবলমাত্র অসংখ্য সদর্থক দৃষ্টান্তকে পর্যবেক্ষণ করা হয় কিন্তু, নঞর্থক বা বিরুদ্ধ দৃষ্টান্তগুলিকে পর্যবেক্ষণ করা হয় না। যেমন — 

কয়েকটি রাজহাঁসকে সাদা বর্ণের দেখে যখন সিদ্ধান্ত করা হয় সব রাজহাঁস সাদা তখন রাজহাঁস এবং সাদাবর্ণের মধ্যে আমরা কোনাে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করি না। এজন্য তর্কবিজ্ঞানী মিল এই জাতীয় অনুমানকে ‘অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান’ বলেছেন।


১৯) অবৈজ্ঞানিক আরোহ অনুমানকে লৌকিক আরোহ অনুমান বলা হয় কেন?

উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের উপর ভিত্তি করে সাধারণ মানুষ তাদের প্রাত্যহিক জীবনে কয়েকটি বিশেষ বিশেষ ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে সামান্যীকরণ করে থাকেন। এইজন্য অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে লৌকিক আরােহ অনুমান বলা হয়। 

Or,

অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে লৌকিক আরােহ অনুমান বলা হয়। কারণ, সাধারণ মানুষ দৈনন্দিন জীবনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় না করেই ব্যতিক্রমহীন অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই ধরনের অনুমান গঠন করে থাকে। তাই একে লৌকিক আরােহ বলা হয়। 

এ জাতীয় আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্তের বক্তব্য বিষয়টি খুবই দুর্বল হয়, কখনােই সবল হয় না। সে কারণে তর্কবিদ বেকন এই ধরনের অনুমানকে শিশুসুলভ অনুমান বলেছেন।


২০) লৌকিক আরােহ অনুমানকে অপূর্ণ গণনামূলক আরােহ অনুমান বলা হয় কেন?

 উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানের ক্ষেত্রে সীমিত সংখ্যক সদর্থক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে মুক্ত শ্রেণি সম্পর্কে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সামান্য সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় বলে। এক্ষেত্রে গণনার কাজ পূর্ণ গণনামূলক আরোহ অনুমানের মত সম্পূর্ণ হয় না।

 ২১) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বা লৌকিক আরােহ অনুমানের একটি উদাহরণ দাও। 

উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বা লৌকিক আরােহ  অনুমানের একটি উদাহরণ হল  ঃ

 ১ নং কাক হয় কালাে। 

২ নং কাক হয় কালাে।

 ৩ নং কাক হয় কালাে। 

এইভাবে বহু দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ।

 সুতরাং, সকল কাক হয় কালাে। 

২২) অবৈজ্ঞানিক আরোহ অনুমান বা লৌকিক আরোহ অনুমানের  দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: অবৈজ্ঞানিক আরোহ অনুমান বা লৌকিক আরোহ অনুমানের  দুটি বৈশিষ্ট্য হল-

(i) লৌকিক বা অবৈজ্ঞানিক আরোহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি কেবল পর্যবেক্ষণ বা অবাধ অভিজ্ঞতা।

(ii) লৌকিক আরোহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি কেবল প্রকৃতির একরূপতা নীতি।

২৩) বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের মধ্যে পার্থক্য কী?

 উত্তর: বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের মধ্যে পার্থক্য হল – 

বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়ম। অপরপক্ষে, অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি। 

২৪) বেকন অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে ‘শিশুসুলভ' আরােহ অনুমান বলেছেন কেন?

 উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্ত এতই দুর্বল যে কেবলমাত্র একটি বিরুদ্ধ দৃষ্টান্ত হাজার হাজার সদর্থক দৃষ্টান্তের উপর প্রতিষ্ঠিত সিদ্ধান্তকে ভ্রান্ত প্রমাণ করতে পারে। এইজন্যই বেকন অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে ‘শিশুসুলভ আরােহ অনুমান’ বলেছেন। 

২৫) লৌকিক আরােহ অনুমানের ক্ষেত্রে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটে কেন? 

উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানে নঞর্থক দৃষ্টান্তকে অগ্রাহ্য করে কয়েকটি সদর্থক দৃষ্টান্তের উপর ভিত্তি করে সামান্যীকরণ করে সার্বিক সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় বলে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটে। 

২৬) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের মূল্য কী? 

উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের মূল্য ব্যাবহারিক ক্ষেত্রে, কার্য - কারণ নিয়ম আবিষ্কারের ক্ষেত্রে, সর্বোপরি বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের প্রাথমিক স্তর হিসাবে অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

২৭) পর্যবেক্ষণ কাকে বলে? 

উত্তর : কোনাে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে কোনাে প্রাকৃতিক ঘটনাকে অন্য সব ঘটনা থেকে পৃথক করে প্রত্যক্ষ করাই হল পর্যবেক্ষণ। 

Or,

নির্দিষ্ট কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে কোন কিছু প্রত্যক্ষ করাই হল পর্যবেক্ষণ।

২৮) পরীক্ষণ কাকে বলে? 

উত্তর : কোনাে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে পরীক্ষণ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে কৃত্রিমভাবে কোনাে ঘটনা ঘটিয়ে প্রত্যক্ষ করাই হল পরীক্ষণ ।

Or,

কৃত্রিম পরিবেশে কোন বিষয়কে বিশ্লেষণ করাই হল পরীক্ষণ।

Or,

 কোনাে কৃত্রিম পরিবেশে সুনিয়ন্ত্রিত ও সুপরিকল্পিতভাবে যখন কোনাে বস্তু বা ঘটনাকে  উদ্দেশ্যপ্রণােদিতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়, তখন তাকে পরীক্ষণ বলে। 

২৯) প্রকৃতির একরূপতা নীতি কী ? 

 উত্তর : যে নীতি অনুসারে প্রকৃতি  সম অবস্থায়  সম আচরণ করে তাকে প্রকৃতির একরূপতা নীতি বলে। 

Or,

প্রকৃতির একরূপতা নীতি হলো-  প্রকৃতির সম অবস্থায় সম আচরণ করে।

৩০) কার্য - কারণ নিয়ম বলতে কী বােঝায়?

 উত্তর : কার্য - কারণ নিয়মটি হল প্রত্যেক কার্যের কারণ আছে। 

৩১) সামান্যীকরণ কাকে বলে? 

উত্তর : কতগুলি বিশেষ মূর্ত দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে সমজাতীয় সমগ্র বিষয়ের বিমুর্ত ধারণা গঠনের মানসিক প্রক্রিয়াকে সামান্যীকরণ বলে।

Or,

 বিশেষ বিশেষ দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে ওই জাতীয় সকল দৃষ্টান্ত সম্বন্ধে সামান্য সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্তরূপে প্রতিষ্ঠা করার পদ্ধতিকে বলা হয় সামান্যীকরণ পদ্ধতি। 

৩২) সামান্যীকরণের ভিত্তি কী? 

উত্তর : প্রকৃতির একরুপতা নীতি হল সামান্যীকরণের ভিত্তি।

 ৩৩) আরােহ অনুমান সংক্রান্ত ঝুকি কী ? 

উত্তর : আরােহ অনুমানে বিশেষ বিশেষ আশ্রয়বাক্যের জ্ঞাত সত্য থেকে সিদ্ধান্তে অজ্ঞাত সামান্য বচনের সত্যের মধ্যে যে ফাক থাকে তাকে লাফ দিয়ে অতিক্রম করার সময় যে ঝুঁকি থাকে তাকে আরােহ অনুমান সক্রান্ত ঝুকি বলা হয় । 

৩৪) আরােহ অনুমান সংক্রান্ত লাফ কাকে বলে? 

উত্তর : আরোহ অনুমানের বিশেষ জ্ঞাত সত্য থেকে সামান্য জ্ঞাত সত্যে অগ্রসর হওয়াকেই দার্শনিকেরা আরোহ অনুমান সংক্রান্ত লাফ বলেছেন।

৩৫) আরােহ অনুমানের সমস্যা কী? 

 উত্তর: আরোহ অনুমানের বিশেষ সত্য থেকে সিদ্ধান্তে সার্বিক সংশ্লেষক বচনের প্রতিষ্ঠার উপায় হলো মূল সমস্যা।

Or,

আরােহ অনুমানে বিশেষ বিশেষ প্রত্যক্ষগ্রাহ্য ঘটনার সত্যতা প্রত্যক্ষ করে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সিদ্ধান্তে সামান্য সংশ্লেষক বচনের সত্যতা প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু কীভাবে সামান্যীকরণ সম্ভব তাই হল আরােহ অনুমানের সমস্যা । 

৩৬) আরােহ অনুমানের সমস্যার সমাধান কীভাবে করা হয়?

 উত্তর : প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্যকারণ নিয়মের সাহায্যে আরােহ অনুমানের সমস্যার সমাধান রা হয় ।

৩৭) প্রকৃতি সম অবস্থায় সম আচরণ করে – এ কথার অর্থ কী ? 

উত্তর : প্রকৃতি সম অবস্থায় সম আচরণ করে – এ কথার অর্থ হল প্রকৃতিতে একই জাতীয় কারণ ঘটলে সর্বদা একই জাতীয় কার্য উৎপন্ন হবে।

 ৩৮) প্রকৃতির একরূপতা নীতিকে আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি বলা হয় কেন? 

উত্তর : আরােহ অনুমানে বিশেষ বিশেষ ঘটনার বস্তুগত সত্যতা থেকে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সামান্য সংশ্লেষক বচনের বস্তুগত সত্যতা প্রমাণ করা হয়। প্রকৃতির একরূপতা নীতির সাহায্যে বিশেষ থেকে সামান্যের আকারগত পরিবর্তন সম্ভব হয় বলে প্রকৃতির একরূপতা নীতিকে আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি বলা হয়।

 ৩৯) আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি কী কী? 

উত্তর : পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ হল আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি। 

৪০) পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণকে আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি বলা হয় কেন? 

উত্তর : আরােহ অনুমানে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণের সাহায্যে বিশেষ বিশেষ আশ্রয়বাক্যগুলি সংগ্রহ করা হয় বলে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণকে আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি বলা হয়। 

৪১। আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি কী কী?

 উত্তর : আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়ম। 

৪২) কার্য - কারণ নিয়মকে আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি বলা হয় কেন? 

উত্তর : আরােহ অনুমানে বিশেষ বিশেষ ঘটনার বস্তুগত সত্যতা থেকে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সামান্য সংশ্লেষক বচনের বস্তুগত সত্যতা প্রমাণ করা হয়। কার্য - কারণ নিয়মের সাহায্যে বিশেষ থেকে সামানন্যর আকারগত পরিবর্তন সম্ভব হয় বলে কার্য - কারণ নিয়মকে আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি বলা হয়।

৪৩) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বিভিন্ন স্তরগুলি কী কী? 

উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বিভিন্ন স্তরগুলি হল – (১) সংজ্ঞা, (২) পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ, (৩) অপসারণ,  (৪) প্রকল্প গঠন, (৫) সামান্যীকরণ, (৬) সামান্য বচনের প্রমাণ, (৭) সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা। 

৪৪) আরােহ অনুমানকে কি বৈধ - অবৈধ বা ভালাে - মন্দ বলা যায়? 

উত্তর : আরােহ অনুমানকে বৈধ বা অবৈধ বলা যায় না। কিন্তু ভালাে বা মন্দ বলা যায়। 

৪৫) লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের দুটি মানদণ্ডের উল্লেখ করাে। 

উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের দুটি মানদণ্ড হল –

 (i) দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।

 (ii) দৃষ্টান্তের ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।

 ৪৬) উপমাযুক্তি বা সাদৃশ্যমূলক আরােহ অনুমান কাকে বলে ? 

উত্তর : দুটি বিষয়ের মধ্যে সাদৃশ্যের ভিত্তিতে কোন কিছু বর্ণনা বা কল্পনা অথবা অনুমান করাকে উপমা যুক্তি বা সাদৃশ্যমূলক অনুমান বলা হয়।

Or,

যে অনুমানে দুই বা ততােধিক বিষয়ের মধ্যে এক বা একাধিক বিষয়ে সাদৃশ্য প্রত্যক্ষ করে যদি ওই বিষয়গুলির মধ্যে কোনাে একটিতে কোনাে ধর্ম প্রত্যক্ষ করে অন্য বিষয়গুলিতে ওই ধর্মের অনুমান করা হয় তবে সেই অনুমানকে বলা হয় উপমাযুক্তি বা সাদৃশ্যমূলক আরােহ অনুমান। 

৪৭) উপমাযুক্তির একটি বাস্তব উদাহরণ দাও।

 উত্তর : উপমাযুক্তির একটি বাস্তব উদাহরণ হল : 

মানুষ (A) এবং উদ্ভিদ (B) — এর মধ্যে জন্ম (p), বৃদ্ধি (q), মৃত্যু (r) প্রভৃতি বিষয়ে সাদৃশ্য আছে। মানুষের (A) → প্রাণ আছে (x)।

. : উদ্ভিদের (B) → প্রাণ আছে (x)। 


৪৮) উপমাযুক্তির দুটি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করাে।

 উত্তর : উপমাযুক্তির দুটি বৈশিষ্ট্য হল –

 (i) দুই বা ততােধিক বিষয়ের মধ্যে সাদৃশ্য প্রত্যক্ষ করা।

 (ii) সাদৃশ্যের উপর ভিত্তি করে বিশেষ জ্ঞাত ধর্ম থেকে সামান্য অজ্ঞাত ধর্ম অনুমান করা।

৪৯) উপমাযুক্তিকে কি আরােহ অনুমান বলা যায়? 

উত্তর : উপমাযুক্তিকে আরােহ অনুমান বলা যায়। কারণ আরােহ অনুমানের মৌলিক বৈশিষ্ট্য উপমাযুক্তির মধ্যে রয়েছে। যেমন-

 (i) সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না। 

(ii) আশ্রয়বাক্য সত্য হলেও সিন্ধান্ত সর্বদা সম্ভাবনামুলক। 

৫০) উপমাযুক্তি কতপ্রকার ও কী কী? 

উত্তর : উপমাযুক্তি দুইপ্রকার। যথা – 

(i) ভালাে উপমাযুক্তি এবং (oii) মন্দ উপমাযুক্তি।

 

৫১) উপমা ও উপমাযুক্তির ক্ষেত্রে পার্থক্য কী? 

উত্তর : উপমা ও উপমাযুক্তির মধ্যে পার্থক্য হল – 

যুক্তি ভিন্ন অন্য ক্ষেত্রে ‘উপমা' শব্দের ব্যবহার করা হয় কৃত্রিমভাবে, যা সাধারণত স্বাভাবিক ধর্ম হয় না। অপরপক্ষে, যুক্তির ক্ষেত্রে উপমিক ধর্মটি হবে স্বাভাবিক ধর্ম, কৃত্রিম ধর্ম নয়। 

৫২) উপমাযুক্তির বাস্তব ভিত্তি কী? 

উত্তর : উপমাযুক্তির বাস্তবভিত্তি হল পর্যবেক্ষণ। কেননা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আশ্রয়বাক্যগুলি সংগ্রহ করা হয়। 

৫৩) উপমাযুক্তির ভিত্তি কী? 

উত্তর : উপমাযুক্তির ভিত্তি দুই বা ততােধিক  ব্যক্তি বা বস্তুর মধ্যে সাদৃশ্য বা উপমা। কেননা উপমাযুক্তিতে সাদৃশ্য বা উপমার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয়। 

৫৪) ভালাে বা উত্তম উপমাযুক্তি কাকে বলে? 

উত্তর : যে উপমা যুক্তিতে দুটি বিষয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক সাদৃশ্য বর্তমান থাকে এবং তারই ভিত্তিতে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তাকে ভালাে বা উত্তম উপমাযুক্তি কাকে বলে। 


৫৫) ভালাে উপমাযুক্তির একটি উদাহরণ দাও।

 উত্তর : ভালাে উপমাযুক্তির একটি উদাহরণ হল :

 রাম ও শ্যাম দুজনেরই রক্তে ম্যালেরিয়ার জীবাণু পাওয়া গেছে।

রাম কুইনাইন খেয়ে ভালো হয়েছে,

: . শ্যামও কুইনাইন খেলে ভালো হবে।


৫৬) মন্দ উপমাযুক্তি কাকে বলে? 

উত্তর : যে উপমা যুক্তিতে দুটি বিষয়ের মধ্যে সাদৃশ্য নিছকই আকস্মিক, বাহ্যিক, অপ্রাসঙ্গিক ও কম গুরুত্বপূর্ণ হয় এবং তারই ভিত্তিতে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তাকে মন্দ বা দুষ্ট উপমা যুক্তি বলা হয়।

৫৭) মন্দ উপমাযুক্তির একটি উদাহরণ দাও।

 উত্তর : মন্দ উপমাযুক্তির একটি উদাহরণ হল : 

কুকুর ও চেয়ার উভয়েরই চারটি পা আছে।

 কুকুর কামড়াতে পারে।

: .  চেয়ারও কামড়াতে পারবে।


  ৫৮) ভালাে উপমাযুক্তি ও মন্দ উপমাযুক্তির মধ্যে পার্থক্য কী? 

উত্তর : ভালো উপমার ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক সাদৃশ্য বর্তমান থাকে। অপরপক্ষে, মন্দ উপমার ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের সাদৃশ্য নিছকই আকস্মিক, বাহ্যিক, অপ্রাসঙ্গিক এবং কম গুরুত্বপূর্ণ হয়।


৫৯) উপমাযুক্তির মূল্যায়নের দুটি মানদণ্ডের উল্লেখ করাে।

উত্তর : উপমাযুক্তির মূল্যায়নের দুটি মানদণ্ড হল– 

(i) যুক্তিবাক্যে দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাবনার মাত্রা তত বেশি হবে।

 (ii) যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।

 ৬০) আরােহ অনুমানে পূর্ব স্বীকৃতি বা স্বীকার্য সত্য দুটি কী? 

উত্তর : আরােহ অনুমানের পূর্ব স্বীকৃতি বা স্বীকার্য সত্য দুটি হল – (i) প্রকৃতির একরূপতা নীতি এবং (ii) কার্যকারণ নিয়ম। 

৬১) আরােহ অনুমানের আকার দাও ।

 উত্তর : আরােহ অনুমানের আকার হল  ঃ

 ১ নং S হয় P

 ২ নং S হয় P 

৩ নং S হয় P 

এইভাবে বহু দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ ।

: . সকল S হয় P

৬২। উপমাযুক্তির আকার দাও ।

উত্তর: উপমা যুক্তির আকার হলো -

A এবং B- এর মধ্যে p, q, r বিষয়ে সাদৃশ্য আছে।

 A হল C। 

.: . Bও C। 

৬৩) উপমাযুক্তির গুরুত্ব কী? 

উত্তর : উপমাযুক্তির সিদ্ধান্তকে প্রকল্প হিসাবে গ্রহণ করে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান শুরু করা হয়। সুতরাং, বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের প্রাথমিক স্তর বা উপাদান হিসাবে উপমাযুক্তির গুরুত্ব রয়েছে। 

৬৪) সংশ্লেষক বচন কী? 

উত্তর : যে বচনের উদ্দেশ্য পদকে বিশ্লেষণ করলে বিধেয় পদের ধারণা পাওয়া যায় না এবং উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে বিধেয় নতুন তথ্য প্রদান করে, তাকে সংশ্লেষক বচন বলে।

৬৫) বিশ্লেষক বচন কী? 

উত্তর : যে বচনের বিধেয় পদের ধারণাটি উদ্দেশ্য পদের মধ্যে নিহিত থাকে, তাকে বিশ্লেষক বচন বলে।

 ৬৬) উপমাযুক্তি বৈধ বা অবৈধ হতে পারে না কেন? 

উত্তর : উপমাযুক্তি একপ্রকার আরােহ অনুমান যা বস্তুগত সত্যতার উপর নির্ভরশীল। তাই উপমাযুক্তিকে বৈধ বা অবৈধ বলা যায় না। কেবল যে যুক্তি আকারগত সত্যতার উপর নির্ভরশীল তা বৈধ বা অবৈধ হতে পারে। উপমাযুক্তি আকারগত সত্যতার উপর নির্ভরশীল নয়। তাই উপমাযুক্তিকে বৈধ বা অবৈধ বলা যায় না। 

৬৭) উপমাযুক্তি ও আরােহমূলক সামান্যীকরণের মধ্যে পার্থক্য কী? 

উত্তর : পার্থক্য:

উপমাযুক্তি ও আরােহমূলক সামান্যীকরণের মধ্যে উপমাযুক্তির ভিত্তি সাদৃশ্য। অপরপক্ষে, আরােহমূলক সামান্যীকরণের ভিত্তি কার্য - কারণ নিয়ম ও প্রকৃতির একরূপতা নীতি। 

৬৮) আরােহ অনুমানে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে সম্বন্ধ কীরূপ? 

উত্তর: আরােহ অনুমানে সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না। অর্থাৎ আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে প্রসক্তি সম্বন্ধ নেই।

৬৯) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি কী? 

উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি হল পর্যবেক্ষণ বা অবাধ অভিজ্ঞতা। কেননা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে  আশ্রয়বাক্যগুলি সংগ্রহ করা হয়। 

৭০) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি কী ? 

উত্তর : প্রকৃতির এরূপতা নীতি অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি। কেননা এই নীতির উপর ভিত্তি করে সামান্যীকরণ সম্ভব হয়। 

৭১) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বা লৌকিক আরােহ অনুমানের দুটি মানদণ্ড লেখো। 

উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বা লৌকিক আরােহ অনুমানের দুটি মানদণ্ড হল – 

(i) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানে আশ্রয়বাক্যের দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে। 

(ii) স্বাভাবিক শ্রেণির উপর ভিত্তি করে সামান্যীণ লে সিন্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা বেশি

 ৭২) বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সঙ্গে উপমাযুক্তির পার্থক্য কী? 

উত্তর : বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সঙ্গে উপমাযুক্তির পার্থক্য হল –

 বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি বা কার্যকারণ নিয়ম বা উভয়ই। অপরপক্ষে, উপমাযুক্তির ভিত্তি সাদৃশ্য বা উপমা। কোনাে কার্য - কারণ নিয়মের ইঙ্গিত থাকে না।

৭৩) লৌকিক আরােহ অনুমানের গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা কী? 

উত্তর : বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের প্রারম্ভিক স্তর হিসাবে লৌকিক বা অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের ব্যাবহারিক গুরুত্ব রয়েছে। 

৭৪) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্ত কীরূপ বচন?

 উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্ত সামান্য সংশ্লেষ বচন হয়।


 ৭৫) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের ভিত্তি কী?

 উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি পর্যবেক্ষণ ও আকারগত ভিত্তি প্রকৃতির এপতা নীতি।

 ৭৬) তথাকথিত আবােহ অনুমান কাকে বলে? 

উত্তর : যে সকল অনুমানের আকৃতি অনেকটা আরোহের মতো, অথচ যাদের মধ্যে আরোহ অনুমানের বৈশিষ্ট্যগুলি উপস্থিত থাকে না, তাদের তথাকথিত আরোহ অনুমান বলে।


৭৭) উপমাযুক্তির মূল্যায়নের প্রাসঙ্গিকতার মানদণ্ডটি উল্লেখ করো।

 উত্তর : উপমাযুক্তির মূল্যায়নের প্রাসঙ্গিকতার মানদণ্ডটি হল – 

(i) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে সাদৃশ্যগুলি যদি প্রাসঙ্গিক হয় তবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা বেশি হবে।

 (ii) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে সাদৃশ্যগুলি যদি অপ্রাসঙ্গিক হয় তবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা কম হবে। 

৭৮) উপমাযুক্তির মূল্যায়নের দৃষ্টান্তের সংখ্যার মানদণ্ডটি কী?

উত্তর : উপমাযুক্তির মূল্যায়নের দৃষ্টান্তের সংখ্যার মানদণ্ডটি হল –

 (i) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত কম হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত কম হবে।

 (i) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে। 


৭৯) উপমাযুক্তির মূল্যায়নের ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্যের মানদণ্ডটি লেখাে। 

উত্তর : উপমাযুক্তির মূল্যায়নের ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্যের মানদণ্ডটি হল –

 (i) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য যত কম হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত কম হবে।

 (ii) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।

 ৮০) লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের একটি মানদণ্ড লেখাে। 

উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের একটি মানদণ্ড হল – লৌকিক আরােহ অনুমানের বিশেষ দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।

৮১) লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের শ্রেণিগত মিলের মানদণ্ডটি কী ?

উত্তর: লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের শ্রেণিগত মিলের মানদণ্ডটি হল – লৌকিক আরােহ অনুমানের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে শ্রেণিগত মিল বেশি থাকলে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা বেশি হবে।

 ৮২) কোন্ আরােহ অনুমানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটে? 

উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানে অবৈধ সামান্যব্রণ দোষ  ঘটে।

 ৮৩) লৌকিক আরােহ অনুমানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ কী কারণে ঘটে? 

উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ দুটি কারণে ঘটে। যথা – 

(i) নঞর্থক দৃষ্টান্ত অপর্যবেক্ষণের জন্য।

 (ii) পরিস্থিতি অপর্যবেক্ষণের জন্য।

 ৮৪) উপমাযুক্তি কখন মন্দ উপমার দোষে দুষ্ট হয়? 

 উত্তর : যখন কোনাে উপমাযুক্তির সাদৃশ্যগুলি নিছক বাহ্যিক, আকস্মিক, অপ্রাসঙ্গিক ও কম গুরুত্বপূর্ণ  হয়  তখন উপমাযুক্তিটি মন্দ উপমার দোষে দুষ্ট হয়। 

৮৫) কোন প্রকার আরােহ অনুমানে আমরা বিশেষ যুক্তিবাক্য থেকে বিশেষ সিদ্ধান্ত করে থাকি? 

উত্তর : উপমাযুক্তির ক্ষেত্রে আমরা বিশেষ যুক্তিবাক্য থেকে বিশেষ সিদ্ধান্ত করে থাকি।

 ৮৬) উপমাযুক্তির ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য প্রত্যক্ষ বৃদ্ধি  পেলে সিধান্তের সম্ভাব্যতা কি বাড়ে? 

 উত্তর : হ্যা , বাড়ে। অর্থাৎ উপমাযুক্তির ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য প্রত্যক্ষ বৃদ্ধি পেলে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতা বাড়ে। 

৮৭) অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে এমন একটি লৌকিক আরােহ অনুমানের উদাহরণ দাও । 

উত্তর : অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে এমন একটি  – আমি যত কাক দেখেছি সবই কালাে। সুতরাং , সকল কাক কালাে ।

৮৮) প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের মধ্যে কোনাে পার্থক্য নেই – এ কথা কে বা কারা বলেছেন ? 

উত্তর : মিল এবং বেইন বলেন প্রকৃতির একরুপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের মধ্যে কোনাে পার্থক্য নেই । 

৮৯) কার্য - কারণ নিয়ম হল মূল নিয়ম এবং প্রকৃতির একরূপতা নীতি কার্য - কারণ নিয়মের একটি বিশেষ রূপ — এ কথা কে বা কারা বলেছেন ? 

উত্তর : যুক্তিবিজ্ঞানী জোসেফ এবং মেলন বলেন যে কার্য - কারণ নিয়ম হল মূল নিয়ম এবং প্রকৃতির একরূপতা নীতি কার্য - কারণ নিয়মের একটি বিশেষ রূপ।

 ৯০) প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের মধ্যে কী সম্বন্ধ? 

উত্তর : প্রকৃতির একরূপতা নীতি অতি ব্যাপক নিয়ম। এই নিয়মের মধ্যে বহু প্রাকৃতিক নিয়ম আছে। তার মধ্যে কার্য - কারণ  নিয়ম অন্যতম। কার্য - কারণ নিয়ম প্রকৃতির একরূপতা নীতির অন্তর্ভুক্ত কম ব্যাপক নিয়ম। 

৯১) প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের মধ্যে পার্থক্য কী? 

উত্তর : প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের মধ্যে পার্থক্য হল – প্রকৃতির একরূপতা নীতি অনুসারে প্রকৃতি সম অবস্থায় সম আচরণ করে। অপরপক্ষে, কার্য - কারণ নিয়ম  অনুসারে জগতে প্রত্যেক কার্যের কারণ আছে।

৯২) প্রকৃত আরোহ অনুমান কাকে বলে

উত্তর: যে সকল আরোহ অনুমানে কয়েকটি বিশেষ দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ বা পরীক্ষণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হিসেবে একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাকে প্রকৃত আরোহ অনুমান বলে।

<<<<<<<<<< The End >>>>>>>>>>>>>


Read More

Monday 21 December 2020

MCQ OF THE POETRY OF EARTH

Leave a Comment

 THE POETRY OF EARTH

                   John Keats

Choose the Correct Option from the Alternatives Provided 

1) The poetry of earth is never

(a) alive (✓b) dead (c) eternal (d) immortal 

2. "The Poetry of Earth" is a - 

(✓a) sonnet (b) lyric (d) narrative poem () war poenm

 3. "The poetry of earth is never dead..."- Here 'poetry' refers to- 

(✓a) music (b) composition (d) rhythm (c) narration

4)  "The poetry of earth is never dead :" Here 'earth' refers to 

(a) rock (b) soil (c) globe (✓d) nature

 5) According to Keats, birds are faint with

(a) storm (b) cold (✓c) hot sun (d) hail

 6) "When all the birds are faint with the hot sun, .." - Here the word 'faint' means 

(a) conscious (b) dead () injured (✓d) unconscious

 7) The birds hide in cooling trees due to - 

(a) rain (b) frost (✓c) heat (d) landslide 

8) The sun in the poem 'The Poetry of Earth' is -  

(a) mild (b) pleasant (c) yellow (d✓) hot

 9) "And hide in cooling trees, ..."- The word 'hide' means - 

(a✓) taking shelter (b) going away (c) making fun (d) only dancing

 10) When all the birds are faint with the hot sun, they hide in cooling --

 (✓a) trees (c) caves (b) bushes (d) cotes

 11) " ... a voice will run" -- It is the voice of - 

(a) bee (c) Cricket (b✓) Grasshopper (d) bird

12) The voice of the Grasshopper runs from-  (a) field to field (b) flower to flower

 (✓c) hedge to hedge (d) forest to forest 

13) The Grasshopper sings in - 

(a) winter (✓b) summer (c) autumn (d) spring.

14) The voice of the Grasshopper will run from hedge to hedge about freshly cut --

(a) trees  (b) garden (c✓) Mead (d) leaves 

15) "... a voice will run From hedge to hedge" - The word 'hedge means a line of - 

(a) hazes (b) buds (c) hazels (✓d) bushes 

16) The Grasshopper is an agent of-

 (a✓) summer (b) winter  (c) autumn (d) spring

17) ... about the new-mown mead; " - The word 'mead' means - 

(a) pond (b) middle (✓c) meadow  (d) crop 

18) "That is the Grasshopper" - Here That refers to --------- the of the Grasshopper. 

(a) beauty (b) liveliness (c) idleness (d✓) voice

 19) When birds are faint with the hot sun,  summer song is carried out by -

(a) the Cricket (b✓) the Grasshopper  (c) the wind  (d) the clouds. 

20) " - he takes the lead" - Who is 'he' referred to here? 

(a) the poet (b✓) the Grasshopper (c) the Cricket (d) the fly

21) In the scorching heat of summer, the Grasshopper feels - 

(a) sorrow  (b) tired (✓c) happy (d) safe

22) " --- he takes the lead" Here the word 'lead' means - 

 (a) position  (b) leadership (c) control  (d✓) role

23) The Grasshopper takes the lead in the luxury of - (✓a) summer (b) winter (c) autumn  (d) spring

 24) "In summer luxury" - Here the word 'luxury' means - 

(a) richness (b✓) delight (c) brightness (d) comfort.

25) "In summer luxury..." Who enjoys 'summer luxury'? 

(a) the Cricket (b) the bird (c✓) the Grasshopper (d) the poet 

26) "- he has never done With his delights ;..." Who is 'he' referred to here? 

(a) the poet (b) the bird (c) the Cricket   (✓d) the Grasshopper

 27 "- he has never done With his delights; Whose delights never come to an end? 

(a) the Cricket (b) the poet(c) the bird (✓d) the Grasshopper

28 "... for when tired out with fun" - Who is tired out with fun? 

(a) the poet (b) the Cricket (c) the poetry (✓d) the Grasshopper  

29) "... for when tired out with fun" - Here the word 'fun' means  

 (✓a) merriment  (b) sports (c) jokes (d) fan 


30) "He rests at ease beneath some .... " --- Who is  'he' referred to here ? 

(a) the poet (✓b) the Grasshopper(c) the poet's friend (d) the Cricket.

31) "He rests at ease beneath some ..." – The expression 'at ease' means -

 (a) easily (b) calmly (✓c) comfortably (d) readily

 32) The Grasshopper is tired out with 

(a) heat (b) cold (c✓) fun (d) hard work.

 33) "He rests at ease beneath some..." – The word 'beneath' means 

(a) behind (b) before (✓c) under (d) besides 

34) When the Grasshopper is tired, he takes rest beneath some pleasant - 

(✓a) weed (b) wedge (c) weather  (d) willow

35) "... beneath some pleasant weed."- The word 'weed' means- 

(✓a) unwanted wild plant (b) wide plant (c) tree (d) group of plants 

36) How is the weed as mentioned in the sonnet 'The Poetry of Earth' ? 

(✓a) pleasant (b) unpleasant  (c) cold (d) frosty

37) The poetry of earth is ceasing- 

(a) forever  (b✓) never (c) once (d) twice 

38) "The Poetry of earth is ceasing never :" - The word 'ceasing' means –

 (a) seizing (b) trading (c) happening (✓d) stopping 

 39) How is the winter evening in the sonnet "The Poetry of Earth'? 

(a) pleasant (b✓) lone  (c) noisy (d) hot 

40) "On a lone winter evening, ." – The word 'lone' means - 

(a) single (b) isolated (✓c) solitary  (d) unhappy 

41) What has wrought a silence on a lone winter evening? 

(a) the Cricket (b) the sun  (✓c) the frost  (d) the Grasshopper 

 42) In "The Poetry of Earth" the frost represents - (a) the summer (b) the autumn  (c) the spring (✓d) the winter 

43) "....... when the frost Has wrought a silence," -- The word 'wrought' means- 

(✓a) made (b) shown  (c) spoken (d) Sung

 44) '... from the stove there shrills" - What shrills from the stove? 

(a) the Grasshopper's voice (b✓) the Cricket's song (c) the bird's song (d) none of the above 

45 from the stove there shrills" – The 'stove' stands for - 

(a) coldness (✓b) warmth (c) solitariness (d) liveliness

46 "... from the stove there shrills" - The word 'shrill' means 

(a) musical sound (b) high sound (✓c) piercing sound (d) low sound 

47) The Cricket finds comfort somewhere near- (a) a forest (b) a new-mown mead  (✓c) a stove (d) a bush 

48. The Cricket is an agent of - (a✓) winter (b) (c) summer (d) autumn

49) " ... in warmth increasing ever," What is increasing ever in warmth?

 (a) The Grasshopper's song (b) The bird's song (✓c) The Crickeť's song (d) The poet's song 

50 ". in warmth increasing ever," The word 'increasing' means -

 (✓a) growing (b) extending (c) developing (d) including 

51) "And seems to one in drowsiness half lost," - The word 'drowsiness' means -

 (a) sleeplessness (b) quietness (c✓) sleepiness (d) numbness

 52 "And seems to one in drowsiness half lost" - The word 'half lost means - 

(a) asleep (b) half-spent (c✓) half asleep (d) half-achieved

53) " ... one in drowsiness half lost" - One is half lost in drowsiness due to a spell of- 

(✓a) frosty weather (b) summer weather (c) magic (d) rains

 54)  "... among some grassy hills" - The word 'grassy' means - 

(a) covered with weeds (✓b) covered with grass (c) full of leaves (d) covered with flowers 

 55) "And seems to one in drowsiness---"  The Cricket's song seems to one to be the song of 

(a) the bird (b) the nature (✓c) the Grasshopper (d) the poet

 56) Grasshoppers fly in England 

(a) in autumn (b) in spring (c) in winter (✓d) in summer

Read More

Sunday 20 December 2020

Project Work: Extension of the story 'Karma'

3 comments

                      A

          PROJECT 

           REPORT

               ON  

EXTENSION OF A STORY 


                         Entitled 

                     KARMA

                     by Khushuant Singh


BANSIHARI BALIKA VIDYALAYA (H.S.)            

 P.O. Buniadpur, Dist. Dakshin Dinajpur

                  

                      Project Work

                       Submitted by

 Name of the Student.................................................

 Roll No. …………………Section ...............................

 Registration No……………………(2019-2020)


CERTIFICATE

This is to certify that this Project Report entitled EXTENSION OF KHUSHWANT SING'S SHORT STORY ‘KARMA’ prepared by ___________________ Class XI Roll No._______ Registration No. ______________ Year 201…-1…. submitted in partial fulfilment to class XI English Course during the academic year 201…-1… is a bonafied record of project work carried out under my guidance and supervision.

                              Signature of the Project Guide

                                                                           

      Name: ………………………………………

                                                                            

    Designation: …Assistant teacher

                                                                               

     Department:    English

                                                                          

   School: ………………………………………………

                                                                                          


ACKNOWLEDGEMENT

      The project, EXTENSION OF KHUSHWANT SINGH'S SHORT STORY, 'KARMA, has provided me with ample scope of learning through collaborative activity. I consider myself fortunate to have worked under Mr Amar Sengupta, whose support made my project-based learning quite joyful. I am grateful to him.

      Mr Shubhamay Mazumder has rendered important suggestions for the improvement of the project work. I cannot help acknowledging his contribution with gratitude. 

     I would like to thank Mr Chandan Basak for his precise suggestions which were very conducive to the accomplishment of the project work. 

      I owe my gratitude to Mr Ananta Ghose for his continuous support. And I am also grateful to my friends and my parents who have helped me to complete the project work.

                     Signature of the Student     

                        ...........…......                              

   


TABLE OF CONTENTS 

Introduction

Methods and Techniques

 Output of the Project 

Conclusion

 References


 INTRODUCTION


1.1 Project in our Syllabus 

The West Bengal Council for Higher Secondary Education has included the Project Work in the new syllabus of English as mandatory. The Project Work is to be written within 2000- 2500 words. In class XI, the three topics which have been selected for the Project Work are as follows: 

(i) Dramatization of a Story

(ii) Extension of a Story

 (iii) Writing an Autobiography 

     Out of the three topics, we chose the second- Extension of a story, as our project.

 1.2 Objectives 

(i) We will be able to dovelop our creative imagination. 

(ii) We learn how to extend a story following the end of particular story as the beginning.

 (iii) We learn how to portray different characters and to arrange events coherently.

 (iv) We learn how experience can be transformed to art. 

1.3 Resources 

The prescribed text book that contains stories is the resource. 

 1.4 Gulding Principles

 (i) Extension of the story depends on the realisation of the characters and events.

 (ii) Creative Imagination is of course very crucial in the extension of the story. 

(iii) Reading habit helps one to extend the story because rich experience is conducive to this kind of project work. 

(iv) Character portrayal is very important. A flat character may become a round one in keeping with the events of the story.

 (v) Rearrangement of the sequence of events may be needed to establish unity with the new end. 

(vi) The story which has been an extended one must end meaningfully.

 1.5 Limitations 

(i) Time for the whole project work is limited.

 (ii) We have not read many stories written in English. 

(II) At times we lack expressions because English is not our mother tongue.

 (iv) The structures of the short story are not known to us quite clearly. 



METHODS AND TECHNIQUES 

2.1 Introduction 

   There are some definite steps in the making of the project- Extension of a Story. We have chosen a suitable story for the project. Our teacher has provided us with the routine of day- wise activities. Only ten periods have been fixed for the whole task. We have worked in groups. An account of the collaborative activities along with methods and techniques are given in this chapter. 

2.2 First Day 

(i) We chose Khushwant Singh's short story, 'Karma', the project- Extension of a Story.

 (ii) We read out the story aloud in the class.

 (iii) We studied the characters, especially the characters Sir Mohan and his wife, very carefully. 

(iv) We came to know about the prejudice and snobbery Sir Mohan. In the extension of the story his disposition is essential. 

(v) We learned the background of the story. Historical perspective was no doubt crucial. India was then under British rule; and we realised that we could focus on it in the extension of the story.

 (vi) We were asked to review the main events of the story.

2.3 Second Day

 On the second day we began writing 'Paragraph One:-  'on the board and filling in the blank with what happened first the extension of the story. We thought about the setting and characters involved in that narrative. In this way, we divided the story into some events which would be narrated in specific paragraphs. 

2.4 Third Day

 (i) We formed groups. Each group was assigned to write a particular paragraph in the development of the story. 

(ii) We read out the narrative and discussed enough to change the structures and words in order to present the story more convincingly.

 (iii) We wrote the dialogues on the board for modifications. 

(iv) We repeated the same activity of modification and rectification for improvement. 

2.5 Fourth Day

 (i) We developed a manuscript following the instructions of our teacher. 

(ii) Our teacher asked us to read the manuscript once again.

2.6 Fifth Day 

(i) Copies of the manuscripts were distributed to each group; and they were asked to read the narrative once again. They were also asked to give their suggestions to make the story more coherent. 

(ii) We reviewed every situation, dialogue, and the character portrayal in keeping with the new suggestions. 

(iii) We decided to make the extension more concise. 

2.7 Sixth Day 

(i) Each group made necessary changes and submitted the manuscript.

2.8 Seventh Day 

 (i) We read out every manuscript.

 2.9 Eighth Day

 (i) We worked together to write the final manuscript.

2.10 Ninth Day 

 (i) We read aloud the final extension of the story. 

2.11 Tenth Day: Evaluation be

 (i) Finally, we submitted the Project Report for Evaluation.

 

 OUTPUT OF THE PROJECT

The collaborative project work has resulted in the extension of a story. we have developed the script by working in groups.

  EXTENSION OF A STORY

                            KARMA

     Sir Mohan Lal was at his wit's end. He wanted to give a strong punch to the soldier's face. He wanted to take revenge. But he thought for a moment. He decided he should not do such kind of thing. He thought perhaps none would help and support him. He wanted to remenmber his past days of struggle, success and failure. He thought about his special action and fancied English, his books, politics and people, his bottle of whisky, his English cigarettes and his English newspaper. He bragged of his association with Oxford colleges, rugby matches and Piccadilly prostitudes. But all these went in vain.


      He glanced at his thrown away bedding and suitease. He extended his arms to get them. Then he saw a group of soldiers coming towards him. They criticised him and addressed him as Nigro. Then Mohan Lal's cheeks turned red in anger. He rushed to the room of the station-master off the station to lodge a complaint against the soldiers in his coupe and on the platform and against the guard of the train. Entering the room of the station master, he saw another English in a busy mood. He gave the details of the incidents and the busy station-master in an indifferent way note down the complaint. He also told him that his wife had been in the train that he missed.

      Suddenly he remembered that he left his bedding and suitcase outside the room. He went towards them in a frantic way. However he got his bedding and suitcase. He then heaved a sigh of relief. Then a coolie came to him. He said, "Sir, what happened ?" It was the same coolie who helped Lady Lal to board on the train. So Mohan Lal did not answer and pretended as if he did not hear him. The coolie said, "The last train to town had passed." The coolie also asked him to stay with him in his cottage which was very near to the station. Sir Mohan at first was puzzled to hear the coolie's offer. But when he understood the fact, he dccided to go with him and to stay in his cottage. In the cottage the coolie gave a heartrendering details of his past and present life. Sir Mohan also gave the details of his life. Then Sir Mohan asked, "What do you think  about Mahatma Gandhi and his freedom struggle?" The coolie described Gandhi's Satyagraha movement, Quit India movement etc. and requested the babu to love India.

  

      Sir Mohan understood and he could not sleep. He spent the rest of the night in a sleepless condition. He thought how India was being tortured by the British. He thought of his Indian wife, the coolie, the British soldiers, guards and the station-master. He heard the sound of the cock. He opened the window. He saw that the coolie with his wife prepared food for him. He got up and ate the food. He then went to the station with the coolie to get some news about his wife from the enquiry counter. He heard the announcement of a coming train and the name of his wife. He ran towards the Zenana compartment. He saw his wife, Lachmi. She was escorted by two lady GRPs. She was crying and washing her eyes with the end of her red borderd saree out of fear and anxiety. One of the lady GRPs asked Lachmi, "Is this your husban?" Lachmi answered,  "Yes, he is my master." Sir Mohan realised his fault. He became a changed man. . He asked his wife to stay beside him. His wife asked, "What's the matter?" He took a small seat among the common passangers without giving answer. Being drunk the passangers around him moved aside. He took a betel leaf from his wife and began to chew. His wife could not understand the situation. Sir Mohan gave the details of his experience in past few hours. Then they went toward their house. He confessed his guilt and utter meaninglessness of his lurking ambition and decided to spend the rest of his life in a simple way. Lachmi said nothing. Tears rolled down from her cheeks. Sir Mohan requested his wife to stay with him in the ground floor. There after they cut a peaceful life.


CONCLUSION

      In conclusion, we offer a few cautions. First, stories and storytelling shouldn't be approached merely or only for "public relations" and marketing purposes. Stories are a way of knowing. If we rush to clean or airbrush troubling things out of our stories, we'll lose a great deal of their value. And what we end up with will be untrustworthy and misleading. Of course, we do and can use stories for public relations. But we must be cautious of the reasons and ways we do so and strive to be honest, truthful, and trustworthy.

      We shouldn't miss the fact that honest storytelling is risky when it is done or presented in public settings. Writing the extension of a story will help us to assess our work also. 


  REFERENCES

 Hornby, A.S. Oxford Advanced Learner's Dictionary :  A Current Course. Delhi : OUP, 2000. Print

 WBCHSE, Mindscapes: 

Higher Secondary English Selections. Kolkata :

 Orient BlackSwan, 2014. Print

 WBCHSE, A Text Book of English (B):

 Rapid Reader and A Book on ESP and Project. Kolkata : 

Deep Prakashan, 2013. Print

Read More