আরোহ অনুমানের প্রকৃতি
(NATURE OF INDUCTION)
Class XII (WBCHSE)
সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন(SAQ) প্রতিটির মান - ১
১) আরোহ অনুমান কাকে বলে?
উত্তর : যে অনুমানে একাধিক আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্তটি নিঃসৃত হয় কিন্তু কখনোই সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না এবং যার সিদ্ধান্তটি সর্বদা আশ্রয়বাক্যের তুলনায় বেশি ব্যাপক হয়, তাকে আরোহ অনুমান বলে।
Or,
যে অনুমানে পর্যবেক্ষণ বা পরীক্ষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত আশ্রয়বাক্য থেকে প্রকৃতির একরূপতা নীতি বা কার্য - কারণ নিয়ম বা উভয়ের সাহায্যে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সামান্য সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্তরূপে প্রতিষ্ঠা করা হয়, সেই অনুমানকে বলা হয় আরােহ অনুমান ।
Or,
কয়েকটি বিশেষ দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে প্রকৃতির একরূপতা ও কার্যকারণ নীতির উপর ভিত্তি করে একটি সার্বিক সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করাকেই আরোহ অনুমান বলা হয়।
২) আরােহ যুক্তিবিজ্ঞানের প্রবর্তক কে?
উত্তর : আরােহ যুক্তিবিজ্ঞানের প্রবর্তক হলেন বেইন।
৩) আরোহ যুক্তিবিজ্ঞানের প্রকৃত প্রবর্তক কে?
উত্তর : জন স্টুয়ার্ট মিল হলেন আরােহ যুক্তিবিজ্ঞানের প্রকৃত প্রবর্তক ।
৪) আরােহ অনুমানের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখাে।
উত্তর : আরােহ অনুমানের দুটি বৈশিষ্ট্য হল –
(i) আরোহ অনুমানের সিদ্ধান্তটি একাধিক যুক্তিবাক্য থেকে নিঃসৃত হয়।
(ii) সিদ্ধান্তটি সর্বদা আশ্রয়বাক্য থেকে ব্যাপকতর হয় অর্থাৎ কখনও কম ব্যাপক হয় না।
৫) অবরােহ ও আরােহ অনুমানের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখাে ।
উত্তর : অবরােহ ও আরােহ অনুমানের মধ্যে দুটি পার্থক্য হল –
(i) অবরােহ অনুমানে সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়। অপরপক্ষে, আরােহ অনুমানে সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না।
(ii) অবরােহ অনুমানে সিদ্ধান্ত কখনও আশ্রয়বাক্য থেকে ব্যাপকতর হয় না। অপরপক্ষে, আরােহ অনুমানে সিদ্ধান্ত সর্বদা আশ্রয়বাক্য থেকে ব্যাপকতর হয়।
৬) আরােহ অনুমানের প্রয়ােজন কী ?
উত্তর : আরােহ অনুমানের জন্য একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন অপরিহার্য। এই সামান্য সংশ্লেষক বচনের বস্তুগত সত্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য আরােহ অনুমান প্রয়ােজন।
৭) আরোহ অনুমানের একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর : আরােহ অনুমানের একটি উদাহরণ হল :
রাম হয় মরণশীল।
যদু হয় মরণশীল।
হরি হয় মরণশীল।
. ' . A = সকল মানুষ হয় মরণশীল।
৮) মিল আরােহ অনুমানকে কতভাগে ভাগ করেছেন?
উত্তর : মিল আরােহ অনুমানকে দু - ভাগে ভাগ করেছেন । যেমন –
(১) তথাকথিত আরােহ অনুমান।
(২) প্রকৃত আরােহ অনুমান।
৯) প্রকৃত আরােহ অনুমান কতপ্রকার ও কী কী ?
উত্তর : প্রকৃত আরােহ অনুমান তিনপ্রকার। যথা- ১) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান, (২) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান এবং (৩) উপমাযুক্তি বা সাদৃশ্যমূলক আরােহ অনুমান।
১০) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান কাকে বলে?
উত্তর : যে আরােহ অনুমানে প্রকৃতির একরূপতা নীতি এবং কার্যকারণ নিয়মের ভিত্তিতে কয়েকটি বিশেষ বস্তু বা ঘটনাকে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ করে সমজাতীয় সকল ঘটনা সম্পর্কে একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাকে বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বলে।
OR,
যে আরােহ অনুমানে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত আশ্রয়বাক্য থেকে প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের উপর ভিত্তি করে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সামান্য সংশ্লেষ বচন সিদ্ধান্তরূপে প্রতিষ্ঠা করা হয় সেই অনুমানকে বলা হয় বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান।
১১) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের একটি উদাহরণ হল--
রাম হয় মানুষ এবং মরণশীল।
রহিম হয় মানুষ এবং মরণশীল।
রীতা হয় মানুষ এবং মরণশীল ।
গীতা হয় মানুষ এবং মরণশীল।
. : সকল মানুষ হয় মরণশীল । সিদ্ধান্ত
১২) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি কী?
উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি হল পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ।
১৩) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি কী?
উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতি এরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়ম।
১৪) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটে না কেন?
উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানে সদর্থক ও নঞর্থক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় বলে বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের ক্ষেত্রে অবৈধ সামান্যীণ দোষ ঘটে না।
১৫) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান নামকরণের কারণ কী?
উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সাতটি স্তর অতিক্রম করে এবং কার্য - কারণ নিয়মের উপর ভিত্তি করে সামান্যীকরণ করে সামান্য সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্তরূপে প্রতিষ্ঠা করা হয় বলে এই অনুমানকে বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বলা হয়।
১৬) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখাে।
উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের দুটি বৈশিষ্ট্য হল –
(i) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি হল পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ।
(ii) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়ম।
১৭) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বা লৌকিক আরােহ অনুমান কাকে বলে?
উত্তর : যে আরােহ অনুমানে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করার কোনাে চেষ্টা না করে, কেবলমাত্র অবাধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কয়েকটি বিশেষ দৃষ্টান্ত গণনার মাধ্যমে একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্ত হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাকে অবৈজ্ঞানিক আরােহ বা অপূর্ণ গণনামূলক আরােহ বা লৌকিক আরােহ অনুমান বলা হয়।
উদাহরণস্বরূপ :
(i) অবাধ অভিজ্ঞতায় আমরা আজ পর্যন্ত যত রাজহাঁস দেখেছি তাদের সবগুলি সাদা। (আজ পর্যন্ত সাদা ভিন্ন অন্য কোনাে রঙের রাজহাঁস দেখিনি)। .
: . সকল রাজহাঁস হয় সাদা।
(ii) অবাধ অভিজ্ঞতায় যত কাক দেখেছি, তাদের সবগুলির রং কালাে। (আজ পর্যন্ত কালাে ভিন্ন অন্য কোনাে রঙের কাক দেখিনি)।
: . সকল কাক হয় কালাে।
১৮) লৌকিক আরােহ অনুমানকে অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বলা হয় কেন?
উত্তর : লৌকিক আরোহ অনুমানকে অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বলা হয় — কারণ, এই জাতীয় অনুমানের সিদ্ধান্তটি কার্যকারণ নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়। এক্ষেত্রে কেবলমাত্র অবাধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্তটিকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হয়। এখানে কেবলমাত্র অসংখ্য সদর্থক দৃষ্টান্তকে পর্যবেক্ষণ করা হয় কিন্তু, নঞর্থক বা বিরুদ্ধ দৃষ্টান্তগুলিকে পর্যবেক্ষণ করা হয় না। যেমন —
কয়েকটি রাজহাঁসকে সাদা বর্ণের দেখে যখন সিদ্ধান্ত করা হয় সব রাজহাঁস সাদা তখন রাজহাঁস এবং সাদাবর্ণের মধ্যে আমরা কোনাে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করি না। এজন্য তর্কবিজ্ঞানী মিল এই জাতীয় অনুমানকে ‘অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান’ বলেছেন।
১৯) অবৈজ্ঞানিক আরোহ অনুমানকে লৌকিক আরোহ অনুমান বলা হয় কেন?
উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের উপর ভিত্তি করে সাধারণ মানুষ তাদের প্রাত্যহিক জীবনে কয়েকটি বিশেষ বিশেষ ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে সামান্যীকরণ করে থাকেন। এইজন্য অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে লৌকিক আরােহ অনুমান বলা হয়।
Or,
অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে লৌকিক আরােহ অনুমান বলা হয়। কারণ, সাধারণ মানুষ দৈনন্দিন জীবনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় না করেই ব্যতিক্রমহীন অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই ধরনের অনুমান গঠন করে থাকে। তাই একে লৌকিক আরােহ বলা হয়।
এ জাতীয় আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্তের বক্তব্য বিষয়টি খুবই দুর্বল হয়, কখনােই সবল হয় না। সে কারণে তর্কবিদ বেকন এই ধরনের অনুমানকে শিশুসুলভ অনুমান বলেছেন।
২০) লৌকিক আরােহ অনুমানকে অপূর্ণ গণনামূলক আরােহ অনুমান বলা হয় কেন?
উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানের ক্ষেত্রে সীমিত সংখ্যক সদর্থক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে মুক্ত শ্রেণি সম্পর্কে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সামান্য সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় বলে। এক্ষেত্রে গণনার কাজ পূর্ণ গণনামূলক আরোহ অনুমানের মত সম্পূর্ণ হয় না।
২১) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বা লৌকিক আরােহ অনুমানের একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বা লৌকিক আরােহ অনুমানের একটি উদাহরণ হল ঃ
১ নং কাক হয় কালাে।
২ নং কাক হয় কালাে।
৩ নং কাক হয় কালাে।
এইভাবে বহু দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ।
সুতরাং, সকল কাক হয় কালাে।
২২) অবৈজ্ঞানিক আরোহ অনুমান বা লৌকিক আরোহ অনুমানের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
উত্তর: অবৈজ্ঞানিক আরোহ অনুমান বা লৌকিক আরোহ অনুমানের দুটি বৈশিষ্ট্য হল-
(i) লৌকিক বা অবৈজ্ঞানিক আরোহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি কেবল পর্যবেক্ষণ বা অবাধ অভিজ্ঞতা।
(ii) লৌকিক আরোহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি কেবল প্রকৃতির একরূপতা নীতি।
২৩) বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর: বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের মধ্যে পার্থক্য হল –
বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়ম। অপরপক্ষে, অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি।
২৪) বেকন অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে ‘শিশুসুলভ' আরােহ অনুমান বলেছেন কেন?
উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্ত এতই দুর্বল যে কেবলমাত্র একটি বিরুদ্ধ দৃষ্টান্ত হাজার হাজার সদর্থক দৃষ্টান্তের উপর প্রতিষ্ঠিত সিদ্ধান্তকে ভ্রান্ত প্রমাণ করতে পারে। এইজন্যই বেকন অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে ‘শিশুসুলভ আরােহ অনুমান’ বলেছেন।
২৫) লৌকিক আরােহ অনুমানের ক্ষেত্রে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটে কেন?
উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানে নঞর্থক দৃষ্টান্তকে অগ্রাহ্য করে কয়েকটি সদর্থক দৃষ্টান্তের উপর ভিত্তি করে সামান্যীকরণ করে সার্বিক সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় বলে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটে।
২৬) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের মূল্য কী?
উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের মূল্য ব্যাবহারিক ক্ষেত্রে, কার্য - কারণ নিয়ম আবিষ্কারের ক্ষেত্রে, সর্বোপরি বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের প্রাথমিক স্তর হিসাবে অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
২৭) পর্যবেক্ষণ কাকে বলে?
উত্তর : কোনাে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে কোনাে প্রাকৃতিক ঘটনাকে অন্য সব ঘটনা থেকে পৃথক করে প্রত্যক্ষ করাই হল পর্যবেক্ষণ।
Or,
নির্দিষ্ট কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে কোন কিছু প্রত্যক্ষ করাই হল পর্যবেক্ষণ।
২৮) পরীক্ষণ কাকে বলে?
উত্তর : কোনাে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে পরীক্ষণ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে কৃত্রিমভাবে কোনাে ঘটনা ঘটিয়ে প্রত্যক্ষ করাই হল পরীক্ষণ ।
Or,
কৃত্রিম পরিবেশে কোন বিষয়কে বিশ্লেষণ করাই হল পরীক্ষণ।
Or,
কোনাে কৃত্রিম পরিবেশে সুনিয়ন্ত্রিত ও সুপরিকল্পিতভাবে যখন কোনাে বস্তু বা ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণােদিতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়, তখন তাকে পরীক্ষণ বলে।
২৯) প্রকৃতির একরূপতা নীতি কী ?
উত্তর : যে নীতি অনুসারে প্রকৃতি সম অবস্থায় সম আচরণ করে তাকে প্রকৃতির একরূপতা নীতি বলে।
Or,
প্রকৃতির একরূপতা নীতি হলো- প্রকৃতির সম অবস্থায় সম আচরণ করে।
৩০) কার্য - কারণ নিয়ম বলতে কী বােঝায়?
উত্তর : কার্য - কারণ নিয়মটি হল প্রত্যেক কার্যের কারণ আছে।
৩১) সামান্যীকরণ কাকে বলে?
উত্তর : কতগুলি বিশেষ মূর্ত দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে সমজাতীয় সমগ্র বিষয়ের বিমুর্ত ধারণা গঠনের মানসিক প্রক্রিয়াকে সামান্যীকরণ বলে।
Or,
বিশেষ বিশেষ দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে ওই জাতীয় সকল দৃষ্টান্ত সম্বন্ধে সামান্য সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্তরূপে প্রতিষ্ঠা করার পদ্ধতিকে বলা হয় সামান্যীকরণ পদ্ধতি।
৩২) সামান্যীকরণের ভিত্তি কী?
উত্তর : প্রকৃতির একরুপতা নীতি হল সামান্যীকরণের ভিত্তি।
৩৩) আরােহ অনুমান সংক্রান্ত ঝুকি কী ?
উত্তর : আরােহ অনুমানে বিশেষ বিশেষ আশ্রয়বাক্যের জ্ঞাত সত্য থেকে সিদ্ধান্তে অজ্ঞাত সামান্য বচনের সত্যের মধ্যে যে ফাক থাকে তাকে লাফ দিয়ে অতিক্রম করার সময় যে ঝুঁকি থাকে তাকে আরােহ অনুমান সক্রান্ত ঝুকি বলা হয় ।
৩৪) আরােহ অনুমান সংক্রান্ত লাফ কাকে বলে?
উত্তর : আরোহ অনুমানের বিশেষ জ্ঞাত সত্য থেকে সামান্য জ্ঞাত সত্যে অগ্রসর হওয়াকেই দার্শনিকেরা আরোহ অনুমান সংক্রান্ত লাফ বলেছেন।
৩৫) আরােহ অনুমানের সমস্যা কী?
উত্তর: আরোহ অনুমানের বিশেষ সত্য থেকে সিদ্ধান্তে সার্বিক সংশ্লেষক বচনের প্রতিষ্ঠার উপায় হলো মূল সমস্যা।
Or,
আরােহ অনুমানে বিশেষ বিশেষ প্রত্যক্ষগ্রাহ্য ঘটনার সত্যতা প্রত্যক্ষ করে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সিদ্ধান্তে সামান্য সংশ্লেষক বচনের সত্যতা প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু কীভাবে সামান্যীকরণ সম্ভব তাই হল আরােহ অনুমানের সমস্যা ।
৩৬) আরােহ অনুমানের সমস্যার সমাধান কীভাবে করা হয়?
উত্তর : প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্যকারণ নিয়মের সাহায্যে আরােহ অনুমানের সমস্যার সমাধান রা হয় ।
৩৭) প্রকৃতি সম অবস্থায় সম আচরণ করে – এ কথার অর্থ কী ?
উত্তর : প্রকৃতি সম অবস্থায় সম আচরণ করে – এ কথার অর্থ হল প্রকৃতিতে একই জাতীয় কারণ ঘটলে সর্বদা একই জাতীয় কার্য উৎপন্ন হবে।
৩৮) প্রকৃতির একরূপতা নীতিকে আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি বলা হয় কেন?
উত্তর : আরােহ অনুমানে বিশেষ বিশেষ ঘটনার বস্তুগত সত্যতা থেকে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সামান্য সংশ্লেষক বচনের বস্তুগত সত্যতা প্রমাণ করা হয়। প্রকৃতির একরূপতা নীতির সাহায্যে বিশেষ থেকে সামান্যের আকারগত পরিবর্তন সম্ভব হয় বলে প্রকৃতির একরূপতা নীতিকে আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি বলা হয়।
৩৯) আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি কী কী?
উত্তর : পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ হল আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি।
৪০) পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণকে আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি বলা হয় কেন?
উত্তর : আরােহ অনুমানে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণের সাহায্যে বিশেষ বিশেষ আশ্রয়বাক্যগুলি সংগ্রহ করা হয় বলে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণকে আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি বলা হয়।
৪১। আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি কী কী?
উত্তর : আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়ম।
৪২) কার্য - কারণ নিয়মকে আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি বলা হয় কেন?
উত্তর : আরােহ অনুমানে বিশেষ বিশেষ ঘটনার বস্তুগত সত্যতা থেকে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সামান্য সংশ্লেষক বচনের বস্তুগত সত্যতা প্রমাণ করা হয়। কার্য - কারণ নিয়মের সাহায্যে বিশেষ থেকে সামানন্যর আকারগত পরিবর্তন সম্ভব হয় বলে কার্য - কারণ নিয়মকে আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি বলা হয়।
৪৩) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বিভিন্ন স্তরগুলি কী কী?
উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বিভিন্ন স্তরগুলি হল – (১) সংজ্ঞা, (২) পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ, (৩) অপসারণ, (৪) প্রকল্প গঠন, (৫) সামান্যীকরণ, (৬) সামান্য বচনের প্রমাণ, (৭) সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা।
৪৪) আরােহ অনুমানকে কি বৈধ - অবৈধ বা ভালাে - মন্দ বলা যায়?
উত্তর : আরােহ অনুমানকে বৈধ বা অবৈধ বলা যায় না। কিন্তু ভালাে বা মন্দ বলা যায়।
৪৫) লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের দুটি মানদণ্ডের উল্লেখ করাে।
উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের দুটি মানদণ্ড হল –
(i) দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।
(ii) দৃষ্টান্তের ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।
৪৬) উপমাযুক্তি বা সাদৃশ্যমূলক আরােহ অনুমান কাকে বলে ?
উত্তর : দুটি বিষয়ের মধ্যে সাদৃশ্যের ভিত্তিতে কোন কিছু বর্ণনা বা কল্পনা অথবা অনুমান করাকে উপমা যুক্তি বা সাদৃশ্যমূলক অনুমান বলা হয়।
Or,
যে অনুমানে দুই বা ততােধিক বিষয়ের মধ্যে এক বা একাধিক বিষয়ে সাদৃশ্য প্রত্যক্ষ করে যদি ওই বিষয়গুলির মধ্যে কোনাে একটিতে কোনাে ধর্ম প্রত্যক্ষ করে অন্য বিষয়গুলিতে ওই ধর্মের অনুমান করা হয় তবে সেই অনুমানকে বলা হয় উপমাযুক্তি বা সাদৃশ্যমূলক আরােহ অনুমান।
৪৭) উপমাযুক্তির একটি বাস্তব উদাহরণ দাও।
উত্তর : উপমাযুক্তির একটি বাস্তব উদাহরণ হল :
মানুষ (A) এবং উদ্ভিদ (B) — এর মধ্যে জন্ম (p), বৃদ্ধি (q), মৃত্যু (r) প্রভৃতি বিষয়ে সাদৃশ্য আছে। মানুষের (A) → প্রাণ আছে (x)।
. : উদ্ভিদের (B) → প্রাণ আছে (x)।
৪৮) উপমাযুক্তির দুটি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করাে।
উত্তর : উপমাযুক্তির দুটি বৈশিষ্ট্য হল –
(i) দুই বা ততােধিক বিষয়ের মধ্যে সাদৃশ্য প্রত্যক্ষ করা।
(ii) সাদৃশ্যের উপর ভিত্তি করে বিশেষ জ্ঞাত ধর্ম থেকে সামান্য অজ্ঞাত ধর্ম অনুমান করা।
৪৯) উপমাযুক্তিকে কি আরােহ অনুমান বলা যায়?
উত্তর : উপমাযুক্তিকে আরােহ অনুমান বলা যায়। কারণ আরােহ অনুমানের মৌলিক বৈশিষ্ট্য উপমাযুক্তির মধ্যে রয়েছে। যেমন-
(i) সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না।
(ii) আশ্রয়বাক্য সত্য হলেও সিন্ধান্ত সর্বদা সম্ভাবনামুলক।
৫০) উপমাযুক্তি কতপ্রকার ও কী কী?
উত্তর : উপমাযুক্তি দুইপ্রকার। যথা –
(i) ভালাে উপমাযুক্তি এবং (oii) মন্দ উপমাযুক্তি।
৫১) উপমা ও উপমাযুক্তির ক্ষেত্রে পার্থক্য কী?
উত্তর : উপমা ও উপমাযুক্তির মধ্যে পার্থক্য হল –
যুক্তি ভিন্ন অন্য ক্ষেত্রে ‘উপমা' শব্দের ব্যবহার করা হয় কৃত্রিমভাবে, যা সাধারণত স্বাভাবিক ধর্ম হয় না। অপরপক্ষে, যুক্তির ক্ষেত্রে উপমিক ধর্মটি হবে স্বাভাবিক ধর্ম, কৃত্রিম ধর্ম নয়।
৫২) উপমাযুক্তির বাস্তব ভিত্তি কী?
উত্তর : উপমাযুক্তির বাস্তবভিত্তি হল পর্যবেক্ষণ। কেননা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আশ্রয়বাক্যগুলি সংগ্রহ করা হয়।
৫৩) উপমাযুক্তির ভিত্তি কী?
উত্তর : উপমাযুক্তির ভিত্তি দুই বা ততােধিক ব্যক্তি বা বস্তুর মধ্যে সাদৃশ্য বা উপমা। কেননা উপমাযুক্তিতে সাদৃশ্য বা উপমার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয়।
৫৪) ভালাে বা উত্তম উপমাযুক্তি কাকে বলে?
উত্তর : যে উপমা যুক্তিতে দুটি বিষয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক সাদৃশ্য বর্তমান থাকে এবং তারই ভিত্তিতে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তাকে ভালাে বা উত্তম উপমাযুক্তি কাকে বলে।
৫৫) ভালাে উপমাযুক্তির একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর : ভালাে উপমাযুক্তির একটি উদাহরণ হল :
রাম ও শ্যাম দুজনেরই রক্তে ম্যালেরিয়ার জীবাণু পাওয়া গেছে।
রাম কুইনাইন খেয়ে ভালো হয়েছে,
: . শ্যামও কুইনাইন খেলে ভালো হবে।
৫৬) মন্দ উপমাযুক্তি কাকে বলে?
উত্তর : যে উপমা যুক্তিতে দুটি বিষয়ের মধ্যে সাদৃশ্য নিছকই আকস্মিক, বাহ্যিক, অপ্রাসঙ্গিক ও কম গুরুত্বপূর্ণ হয় এবং তারই ভিত্তিতে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তাকে মন্দ বা দুষ্ট উপমা যুক্তি বলা হয়।
৫৭) মন্দ উপমাযুক্তির একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর : মন্দ উপমাযুক্তির একটি উদাহরণ হল :
কুকুর ও চেয়ার উভয়েরই চারটি পা আছে।
কুকুর কামড়াতে পারে।
: . চেয়ারও কামড়াতে পারবে।
৫৮) ভালাে উপমাযুক্তি ও মন্দ উপমাযুক্তির মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর : ভালো উপমার ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক সাদৃশ্য বর্তমান থাকে। অপরপক্ষে, মন্দ উপমার ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের সাদৃশ্য নিছকই আকস্মিক, বাহ্যিক, অপ্রাসঙ্গিক এবং কম গুরুত্বপূর্ণ হয়।
৫৯) উপমাযুক্তির মূল্যায়নের দুটি মানদণ্ডের উল্লেখ করাে।
উত্তর : উপমাযুক্তির মূল্যায়নের দুটি মানদণ্ড হল–
(i) যুক্তিবাক্যে দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাবনার মাত্রা তত বেশি হবে।
(ii) যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।
৬০) আরােহ অনুমানে পূর্ব স্বীকৃতি বা স্বীকার্য সত্য দুটি কী?
উত্তর : আরােহ অনুমানের পূর্ব স্বীকৃতি বা স্বীকার্য সত্য দুটি হল – (i) প্রকৃতির একরূপতা নীতি এবং (ii) কার্যকারণ নিয়ম।
৬১) আরােহ অনুমানের আকার দাও ।
উত্তর : আরােহ অনুমানের আকার হল ঃ
১ নং S হয় P
২ নং S হয় P
৩ নং S হয় P
এইভাবে বহু দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ ।
: . সকল S হয় P
৬২। উপমাযুক্তির আকার দাও ।
উত্তর: উপমা যুক্তির আকার হলো -
A এবং B- এর মধ্যে p, q, r বিষয়ে সাদৃশ্য আছে।
A হল C।
.: . Bও C।
৬৩) উপমাযুক্তির গুরুত্ব কী?
উত্তর : উপমাযুক্তির সিদ্ধান্তকে প্রকল্প হিসাবে গ্রহণ করে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান শুরু করা হয়। সুতরাং, বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের প্রাথমিক স্তর বা উপাদান হিসাবে উপমাযুক্তির গুরুত্ব রয়েছে।
৬৪) সংশ্লেষক বচন কী?
উত্তর : যে বচনের উদ্দেশ্য পদকে বিশ্লেষণ করলে বিধেয় পদের ধারণা পাওয়া যায় না এবং উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে বিধেয় নতুন তথ্য প্রদান করে, তাকে সংশ্লেষক বচন বলে।
৬৫) বিশ্লেষক বচন কী?
উত্তর : যে বচনের বিধেয় পদের ধারণাটি উদ্দেশ্য পদের মধ্যে নিহিত থাকে, তাকে বিশ্লেষক বচন বলে।
৬৬) উপমাযুক্তি বৈধ বা অবৈধ হতে পারে না কেন?
উত্তর : উপমাযুক্তি একপ্রকার আরােহ অনুমান যা বস্তুগত সত্যতার উপর নির্ভরশীল। তাই উপমাযুক্তিকে বৈধ বা অবৈধ বলা যায় না। কেবল যে যুক্তি আকারগত সত্যতার উপর নির্ভরশীল তা বৈধ বা অবৈধ হতে পারে। উপমাযুক্তি আকারগত সত্যতার উপর নির্ভরশীল নয়। তাই উপমাযুক্তিকে বৈধ বা অবৈধ বলা যায় না।
৬৭) উপমাযুক্তি ও আরােহমূলক সামান্যীকরণের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর : পার্থক্য:
উপমাযুক্তি ও আরােহমূলক সামান্যীকরণের মধ্যে উপমাযুক্তির ভিত্তি সাদৃশ্য। অপরপক্ষে, আরােহমূলক সামান্যীকরণের ভিত্তি কার্য - কারণ নিয়ম ও প্রকৃতির একরূপতা নীতি।
৬৮) আরােহ অনুমানে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে সম্বন্ধ কীরূপ?
উত্তর: আরােহ অনুমানে সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না। অর্থাৎ আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে প্রসক্তি সম্বন্ধ নেই।
৬৯) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি কী?
উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি হল পর্যবেক্ষণ বা অবাধ অভিজ্ঞতা। কেননা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আশ্রয়বাক্যগুলি সংগ্রহ করা হয়।
৭০) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি কী ?
উত্তর : প্রকৃতির এরূপতা নীতি অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি। কেননা এই নীতির উপর ভিত্তি করে সামান্যীকরণ সম্ভব হয়।
৭১) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বা লৌকিক আরােহ অনুমানের দুটি মানদণ্ড লেখো।
উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বা লৌকিক আরােহ অনুমানের দুটি মানদণ্ড হল –
(i) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানে আশ্রয়বাক্যের দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।
(ii) স্বাভাবিক শ্রেণির উপর ভিত্তি করে সামান্যীণ লে সিন্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা বেশি
৭২) বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সঙ্গে উপমাযুক্তির পার্থক্য কী?
উত্তর : বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সঙ্গে উপমাযুক্তির পার্থক্য হল –
বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি বা কার্যকারণ নিয়ম বা উভয়ই। অপরপক্ষে, উপমাযুক্তির ভিত্তি সাদৃশ্য বা উপমা। কোনাে কার্য - কারণ নিয়মের ইঙ্গিত থাকে না।
৭৩) লৌকিক আরােহ অনুমানের গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা কী?
উত্তর : বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের প্রারম্ভিক স্তর হিসাবে লৌকিক বা অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের ব্যাবহারিক গুরুত্ব রয়েছে।
৭৪) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্ত কীরূপ বচন?
উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্ত সামান্য সংশ্লেষ বচন হয়।
৭৫) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের ভিত্তি কী?
উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি পর্যবেক্ষণ ও আকারগত ভিত্তি প্রকৃতির এপতা নীতি।
৭৬) তথাকথিত আবােহ অনুমান কাকে বলে?
উত্তর : যে সকল অনুমানের আকৃতি অনেকটা আরোহের মতো, অথচ যাদের মধ্যে আরোহ অনুমানের বৈশিষ্ট্যগুলি উপস্থিত থাকে না, তাদের তথাকথিত আরোহ অনুমান বলে।
৭৭) উপমাযুক্তির মূল্যায়নের প্রাসঙ্গিকতার মানদণ্ডটি উল্লেখ করো।
উত্তর : উপমাযুক্তির মূল্যায়নের প্রাসঙ্গিকতার মানদণ্ডটি হল –
(i) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে সাদৃশ্যগুলি যদি প্রাসঙ্গিক হয় তবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা বেশি হবে।
(ii) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে সাদৃশ্যগুলি যদি অপ্রাসঙ্গিক হয় তবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা কম হবে।
৭৮) উপমাযুক্তির মূল্যায়নের দৃষ্টান্তের সংখ্যার মানদণ্ডটি কী?
উত্তর : উপমাযুক্তির মূল্যায়নের দৃষ্টান্তের সংখ্যার মানদণ্ডটি হল –
(i) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত কম হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত কম হবে।
(i) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।
৭৯) উপমাযুক্তির মূল্যায়নের ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্যের মানদণ্ডটি লেখাে।
উত্তর : উপমাযুক্তির মূল্যায়নের ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্যের মানদণ্ডটি হল –
(i) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য যত কম হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত কম হবে।
(ii) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।
৮০) লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের একটি মানদণ্ড লেখাে।
উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের একটি মানদণ্ড হল – লৌকিক আরােহ অনুমানের বিশেষ দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।
৮১) লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের শ্রেণিগত মিলের মানদণ্ডটি কী ?
উত্তর: লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের শ্রেণিগত মিলের মানদণ্ডটি হল – লৌকিক আরােহ অনুমানের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে শ্রেণিগত মিল বেশি থাকলে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা বেশি হবে।
৮২) কোন্ আরােহ অনুমানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটে?
উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানে অবৈধ সামান্যব্রণ দোষ ঘটে।
৮৩) লৌকিক আরােহ অনুমানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ কী কারণে ঘটে?
উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ দুটি কারণে ঘটে। যথা –
(i) নঞর্থক দৃষ্টান্ত অপর্যবেক্ষণের জন্য।
(ii) পরিস্থিতি অপর্যবেক্ষণের জন্য।
৮৪) উপমাযুক্তি কখন মন্দ উপমার দোষে দুষ্ট হয়?
উত্তর : যখন কোনাে উপমাযুক্তির সাদৃশ্যগুলি নিছক বাহ্যিক, আকস্মিক, অপ্রাসঙ্গিক ও কম গুরুত্বপূর্ণ হয় তখন উপমাযুক্তিটি মন্দ উপমার দোষে দুষ্ট হয়।
৮৫) কোন প্রকার আরােহ অনুমানে আমরা বিশেষ যুক্তিবাক্য থেকে বিশেষ সিদ্ধান্ত করে থাকি?
উত্তর : উপমাযুক্তির ক্ষেত্রে আমরা বিশেষ যুক্তিবাক্য থেকে বিশেষ সিদ্ধান্ত করে থাকি।
৮৬) উপমাযুক্তির ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য প্রত্যক্ষ বৃদ্ধি পেলে সিধান্তের সম্ভাব্যতা কি বাড়ে?
উত্তর : হ্যা , বাড়ে। অর্থাৎ উপমাযুক্তির ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য প্রত্যক্ষ বৃদ্ধি পেলে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতা বাড়ে।
৮৭) অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে এমন একটি লৌকিক আরােহ অনুমানের উদাহরণ দাও ।
উত্তর : অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে এমন একটি – আমি যত কাক দেখেছি সবই কালাে। সুতরাং , সকল কাক কালাে ।
৮৮) প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের মধ্যে কোনাে পার্থক্য নেই – এ কথা কে বা কারা বলেছেন ?
উত্তর : মিল এবং বেইন বলেন প্রকৃতির একরুপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের মধ্যে কোনাে পার্থক্য নেই ।
৮৯) কার্য - কারণ নিয়ম হল মূল নিয়ম এবং প্রকৃতির একরূপতা নীতি কার্য - কারণ নিয়মের একটি বিশেষ রূপ — এ কথা কে বা কারা বলেছেন ?
উত্তর : যুক্তিবিজ্ঞানী জোসেফ এবং মেলন বলেন যে কার্য - কারণ নিয়ম হল মূল নিয়ম এবং প্রকৃতির একরূপতা নীতি কার্য - কারণ নিয়মের একটি বিশেষ রূপ।
৯০) প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের মধ্যে কী সম্বন্ধ?
উত্তর : প্রকৃতির একরূপতা নীতি অতি ব্যাপক নিয়ম। এই নিয়মের মধ্যে বহু প্রাকৃতিক নিয়ম আছে। তার মধ্যে কার্য - কারণ নিয়ম অন্যতম। কার্য - কারণ নিয়ম প্রকৃতির একরূপতা নীতির অন্তর্ভুক্ত কম ব্যাপক নিয়ম।
৯১) প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের মধ্যে পার্থক্য কী?
উত্তর : প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের মধ্যে পার্থক্য হল – প্রকৃতির একরূপতা নীতি অনুসারে প্রকৃতি সম অবস্থায় সম আচরণ করে। অপরপক্ষে, কার্য - কারণ নিয়ম অনুসারে জগতে প্রত্যেক কার্যের কারণ আছে।
৯২) প্রকৃত আরোহ অনুমান কাকে বলে
উত্তর: যে সকল আরোহ অনুমানে কয়েকটি বিশেষ দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ বা পরীক্ষণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হিসেবে একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাকে প্রকৃত আরোহ অনুমান বলে।
<<<<<<<<<< The End >>>>>>>>>>>>>
0 comments:
Post a Comment