প্রশ্ন: " উত্তাপ যত বাড়ে পারদ স্তম্ভের উচ্চতা তত বাড়ে। উত্তাপ যত কমে পারদ স্তম্ভের উচ্চতা তত কমে। অতএব উত্তাপ বৃদ্ধি হল পারদ স্তম্ভের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণ।" ------ এই দৃষ্টান্তে মিলের কোন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে? পদ্ধতিটি ব্যাখ্যা কর।
[চিহ্নিতকরণ, সংজ্ঞা, আকার, সুবিধা (২টি), অসুবিধা (২টি)]
(মান 1 + 2 + 1 + 2 + 2)
অথবা, প্রশ্ন: মিলের সহপরিবর্তন পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।
[সংজ্ঞা, আকার, দৃষ্টান্ত সুবিধা (২টি), অসুবিধা (২টি)]
(মান 1 + 2 + 1 + 2 + 2)
উঃ
চিহ্নিতকরণ: উদ্ধৃত যুক্তিটিতে মিলের সহ পরিবর্তন পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়েছে।
সূত্র বা সংজ্ঞা: মিল প্রদত্ত সহপরিবর্তন পদ্ধতির সূত্র বা সংজ্ঞা হলো -- " যখন কোন একটি ঘটনা বিশেষ ভাবে পরিবর্তিত হয়, তখন যদি অপর একটি ঘটনাও একইভাবে পরিবর্তিত হয় তাহলে সেই (দ্বিতীয়) ঘটনাটি হবে অপর ঘটনার কারণ বা কার্য বা তার সঙ্গে কার্যকারণ সম্বন্ধে আবদ্ধ।"
যুক্তি বিজ্ঞানী কফি (Coffey) এই পদ্ধতির ব্যাখ্যায় বলেছেন -- "যদি দুটি ঘটনা সর্বদাই একইভাবে বাড়ে ও কমে এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য ঘটনা একই রূপ অবস্থায় থাকে বা স্বাধীনভাবে বাড়ে ও কমে তাহলে ঘটনা দুটি সম্ভবত কার্যকারণ সম্পর্ক যুক্ত হবে।"
সূত্রটির বিশ্লেষণ বা ব্যাখ্যা: সহপরিবর্তন পদ্ধতির সূত্রটিকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় --- অগ্রবর্তী ও অনুবর্তী ঘটনা দুটির মধ্যে বিশেষ অনুপাতে (পরিমাণে) হ্রাস বা বৃদ্ধি ঘটলে ঘটনা দুটির মধ্যে কার্যকারণ সম্বন্ধে থাকবে।
সহপরিবর্তন পদ্ধতির আকার বা সাংকেতিক উদাহরণ:
অগ্রবর্তী ঘটনা( কারণ) অনুবর্তী ঘটনা (কার্য)
ABC abc
A1BC a1bc
A2BC a2bc
A3BC a3bc
সুতরাং , A হল a- এর কারন। কেননা, এই দৃষ্টান্তে অগ্রবর্তী ঘটনায় A-এর বৃদ্ধির সঙ্গে অনুবর্তী ঘটনায় a -ও বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে অন্যান্য পারিপার্শ্বিক অবস্থা একই আছে।
দৃষ্টান্ত বা বাস্তব উদাহরণ: সহপরিবর্তন পদ্ধতির দৃষ্টান্ত বা বাস্তব উদাহরণ হল --
অগ্রবর্তী ঘটনা(কারণ) পূর্ববর্তী ঘটনা( কার্য)
উত্তাপ স্বাভাবিক (A) পারদ স্তম্ভের উচ্চতা
স্বাভাবিক(a)
উত্তাপ বাড়ানো হল(A1) পারদস্তম্ভের উচ্চতা
বাড়ছে(a1)
উত্তাপ ক্রমশ বাড়ানো হল(A2) পারদস্তম্ভের উচ্চতা
ক্রমশ বাড়ছে(a2)
উত্তাপ ক্রমশ বাড়ানো হল(A3) পারদস্তম্ভের উচ্চতা
ক্রমশ বাড়ছে(a3)
. : উত্তাপ বৃদ্ধি(A) হল পারদস্তম্ভের উচ্চতা বৃদ্ধির(a) কারণ।
সুবিধা বা গুণ: সহপরিবর্তন পদ্ধতি দুটি সুবিধা বা গুণ হল --
(১) স্থায়ী কারণের ক্ষেত্রে কার্যকারণ সম্পর্ক আবিষ্কারের একমাত্র পদ্ধতি হল সহপরিবর্তন পদ্ধতি।
(২) সহপরিবর্তন পদ্ধতি ব্যতিরেকী পদ্ধতির বিকল্প। ব্যতিরেকী পদ্ধতির প্রয়োগ যেখানে সম্ভব নয় সেখানে সহপরিবর্তন পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়।
অসুবিধা বা ত্রুটি: সহপরিবর্তন পদ্ধতির দুটি অসুবিধা হলো ----
(১) সহপরিবর্তন পদ্ধতি কার্য এবং কারণের পরিমাণগত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও গুণগত পরিবর্তনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
(২) সহ পরিবর্তন পদ্ধতির প্রয়োগ ক্ষেত্র সীমাবদ্ধ।
(৩) স্থিতিশীল ঘটনার ক্ষেত্রে সহপরিবর্তন পদ্ধতি অচল।
মূল্যায়ন: মিলের সহপরিবর্তন পদ্ধতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের প্রথমে জেনে নিতে হয় দুটি ঘটনার সহপরিবর্তনের সম্পর্কটি নিয়ত সম্পর্ক কিনা। আর তা যদি আগেই জানতে হয় তাহলে কারণ আবিষ্কার করার ক্ষেত্রে সহপরিবর্তন পদ্ধতির সার্থকতা কোথায়? তবে এই পদ্ধতির আসল মূল্য হল, এর সাহায্যে অবান্তর ঘটনাবলী বর্জন করা যায় এবং এই পদ্ধতি ছাড়া অন্য কোন পদ্ধতি নেই, যার সাহায্যে আমরা কার্যকারণের পরিমাণগত স্বভাবের পরিচয় পেতে পারি।
<<<<<<>>>>>>
3 comments:
Gd
Kjththjtti
Thank you sir
Post a Comment