Saturday 18 May 2019

শিক্ষাবিজ্ঞানের কয়েকটি প্রশ্ন ও উত্তর B.A. Part- I ( Gaur Banga University)

Leave a Comment
শিক্ষার বিভিন্ন উপাদানগুলি কি কি?
উত্তর:
      শিক্ষার উপাদান: শিক্ষা প্রক্রিয়ার যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে শিক্ষার কাজকে ত্বরান্বিত করে, তাদের শিক্ষার উপাদান বলে। সাধারণত এই উপাদান চার প্রকার। যথা-  শিক্ষার্থী, শিক্ষক পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষালয়।

     শিক্ষার্থী:  যে কোন শিক্ষা ব্যবস্থার মূলে একজন শিশু শিক্ষার্থী অবশ্যই থাকা প্রয়োজন যার আচরণধারার আমরা পরিবর্তন সাধন করবো। শিক্ষার্থী তার জন্মগত সম্ভাবনাকে বিকশিত করবে শিক্ষার প্রভাবে। অপরিপক্ক শিশুরই যদি অস্তিত্ব না থাকে, তবে শিক্ষার কোনো প্রয়োজন নেই। তাই শিক্ষার প্রধান উপাদান হলো শিশু বা বৃহত্তর অর্থে শিক্ষার্থী। এই উপাদানের বৈশিষ্ট্য হলো সে দেহমন বিশিষ্ট জৈবিক সত্তা। তার মনোময় জগতই শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া তার বৈশিষ্ট্য হলো সে নমনীয়। শিক্ষার দ্বারা তার বিকাশের ধারাকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
শিক্ষক: শিক্ষক ছাড়া কোন শিক্ষা ব্যবস্থা চলতে পারে না তাই শিক্ষক শিক্ষা ব্যবস্থার একটি প্রধান অঙ্গ। যে কোন শিক্ষণ-শিখন ব্যবস্থায় শিক্ষক কেবলমাত্র শিক্ষার্থীকে জ্ঞানার্জনের সাহায্য করে না, তিনি একাধারে শিক্ষার্থীর বন্ধু, হিতৈষী, সহায়ক ও পথপ্রদর্শক। শিক্ষার্থীর জীবন দর্শন গঠনের ক্ষেত্রে তিনিই হলেন প্রবীণ সহায়ক।

     পাঠ্যক্রম: শিক্ষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো পাঠ্যক্রম। প্রত্যেক শিক্ষার্থী একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে এবং সেই লক্ষ্যপথে পৌঁছানোর জন্য পাঠক্রম হলো একটি পথ। এক কথায় বলা যায়, পাঠ্যক্রম হল সেইসব বিষয়বস্তু, কর্মসূচি এবং অভিজ্ঞতার সমষ্টি যা শিক্ষার্থীর জীবনের সমস্তটাই জুড়ে থাকে।
  
     শিক্ষালয়: শিক্ষার জন্য উপরোক্ত তিনটি উপাদানের সাথে আরও একটি উপাদান অপরিহার্য তা হচ্ছে শিক্ষালয়। শিক্ষার লক্ষ্য অনুযায়ী পাঠ্যক্রমের জ্ঞানমূলক, কৃষ্টিমূলক ও সামাজিক অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যম হলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেখানে শিক্ষার্থী তার জীবনের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন করে থাকে। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
                           <<<<<<>>>>>>

শিক্ষা ও সমাজতত্ত্বের সম্পর্ক বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ
অথবা শিক্ষার সাথে সমাজবিদ্যার সম্পর্ক আলোচনা কর। ৫

উঃ শিক্ষার সাথে সমাজতত্ত্বের সম্পর্ক: যেহেতু সমাজতত্ত্ব মানব সমাজের বিভিন্ন দিকগুলি প্রতিফলিত করে, তাই স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষার সাথে সমাজতত্ত্বের পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। যেমন -
  
         অভিজ্ঞতার পুনর্গঠন:  মানুষ সামাজিক জীব এবং সমাজ জীবনে বসবাসকালে যেসকল অভিজ্ঞতা অর্জন করে, তার পুনর্গঠনে শিক্ষাবিজ্ঞানের ভূমিকা অপরিসীম

      সামাজিকীকরণ: যে কোন সমাজ ব্যবস্থাতেই কতগুলি নির্দিষ্ট নিয়মনীতি, প্রথা প্রচলিত থাকে যা ব্যক্তিকে মেনে চলতে হয়। এই সমস্ত দিকগুলি সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা দানে অর্থাৎ ব্যক্তির সামাজিকীকরণে শিক্ষাবিজ্ঞানের সাথে সমাজবিজ্ঞানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক লক্ষ্য করা যায়।

    সামাজিক কর্তব্য পালন: নাগরিক হিসেবে একজন ব্যক্তির সামাজিক কর্তব্য কি হওয়া উচিত এবং তা কিভাবে পালন করা সম্ভব তা সমাজবিদ্যা ও শিক্ষা বিজ্ঞান যৌথভাবে নির্ধারণ করে থাকে।

      রাষ্ট্রীয় কর্তব্য পালনে: গণতন্ত্র, রাষ্ট্র ও গণতান্ত্রিক ধ্যান-ধারণার সম্পর্কে ধারণা প্রদান করে সমাজতত্ত্ব এবং শিক্ষা তার বাস্তব পরিপূর্ণতা দান করে।
সামাজিক যোগ্যতা অর্জন: সমাজজীবনে সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকতে হলে জীবিকানির্বাহের যোগ্যতা, অধিকারবোধ ও কর্তব্যবোধ সম্পর্কে ধারনা গঠন একজন নাগরিককে সচেতন করে তোলে। শিক্ষাবিজ্ঞান এই সামাজিক বোধ গঠনে ও যোগ্যতা অর্জনের ক্ষেত্রে ব্যক্তিকে সাহায্য করে থাকে।
                                  <<<>>>

টীকা : উপনয়ন ৫
   
  উপনয়ন:  ব্রাহ্মণ্য শিক্ষাব্যবস্থায় উপনয়ন হলো শিক্ষার্থীকে ছাত্র জীবনে দীক্ষিত করার অপরিহার্য অনুষ্ঠান। উপনয়ন এর অর্থ হল সমীপে নিয়ে যাওয়া অর্থাৎ শিক্ষালাভের জন্য গুরুর কাছে শিশুকে নিয়ে যাওয়া। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্যদের জন্য উপনয়ন ব্যবস্থা ছিল একটি সহজ সরল অনাড়ম্বর অনুষ্ঠান। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য- এই তিন বর্ণের উপনয়নের অর্থ দ্বিতীয় জন্ম। গুরু এই দ্বিতীয় জন্ম দান করতেন। শিক্ষার্থী তখন হতেন দ্বিজ। উপনয়ন এমন একটি অনুষ্ঠান যার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থী সংযম, বেদ, নিয়ম, গুরু ও দেবতার সংস্পর্শে আসতেন।

     ব্রাহ্মণ্য শিক্ষা ব্যবস্থায় উপনয়ন দান করা হতো ব্রাহ্মণ সন্তানদের আট বছর বয়সে, ক্ষত্রিয়দের 11 বছর বয়সে, ও বৈশ্যদের 12 বছর বয়সে। শিক্ষার্থীকে মস্তক-মুণ্ডন, কৌপিন ও মেঘলা ধারণ করতে হতো। শিক্ষার্থী সমিধভাব বহন করতে তপবনে গুরু গৃহে উপস্থিত হতো এবং গুরুকে প্রণাম করে ব্রহ্মচর্যাশ্রমে গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করতো। গুরু তার নাম পরিচয় জেনে তাকে গ্রহণের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হলে তবে ছাত্ররূপে গ্রহণ করতেন। শুদ্রদের অবশ্য বেদ পাঠ ও উপনয়নের কোন অধিকার ছিল না।

      যদিও বর্তমানে উপনয়ন অনুষ্ঠানটি শুধুমাত্র ব্রাহ্মণদের অনুষ্ঠানরূপে পরিচিত। তথাপি ব্রাহ্মণ্য শিক্ষায় এর ব্যাপক প্রচলন লক্ষ্য করা যায় এবং বর্তমানেও এর নৈতিক আদর্শ কিছুটা হলেও পরিলক্ষিত হয়।
                                <<<<>>>>>

প্রশ্ন: লর্ড মেকলে কে ছিলেন প্রাচ্য-পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের সমাধানের জন্য মেকলে মিনিট এর সুপারিশ গুলি ব্যাখ্যা কর। 
অথবা
1835 খ্রিস্টাব্দে মেকলে মিনিট এর বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো  ১৫

    মেকলে মিনিট: 1813 সালের সনদ আইনের শিক্ষা সংক্রান্ত 43 নং ধারার ব্যাখ্যা নিয়ে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বাদীদের মধ্যে বিরোধ চরম অবস্থায় পৌঁছায়। এই বিরোধের অবসান ঘটাতে শিক্ষা কমিটি (জি সি পি আই) এর সদস্যরা কোম্পানির দ্বারস্থ হন। এমত অবস্থায় 1834 সালে লর্ড মেকলে বড়লাটের পরিষদে আইন সদস্যরূপে যোগ দেন। বড়লাট লর্ড বেন্টিন্ক তাকে শিক্ষা কমিটির সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত করেন। শিক্ষা কমিটির সভায় কিন্তু  মেকলে প্রাচ্য-পাশ্চাত্য বিরোধে অংশগ্রহণ করেননি। তাই কমিটি যখন সনদ আইন এর ব্যাখ্যা সরকারের কাছে চাইল, তখন বড়লাট বেন্টিন্ক সে বিষয়ে আইনগত মতামত দেওয়ার জন্য সেটিকে মেকলের কাছে পাঠালেন। মেকলে এ বিষয়ে অভিমত দেন  1835 সালের 2রা ফেব্রুয়ারি। 1813 সালের সনদ আইনের শিক্ষা ধারা সংক্রান্ত মেকলে প্রদত্ত এই ব্যাখ্যা মেকলে মিনিট নামে খ্যাত।
মেকলের বিবরণীর প্রধান বক্তব্যসমূহ: মেকলের বিবরণীর প্রধান বক্তব্য গুলি ছিল -

     ১) ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে শিক্ষা দিতে হবে।

    ২)  পুরানো অকেজো দেশীয় বিদ্যালয়গুলি বন্ধ করে দিতে হবে।

   ৩) নতুন যুগের নতুন শিক্ষার উপযুক্ত স্কুল কলেজ খুলতে হবে।

     মেকলে মিনিটের ব্যাখ্যা: 1813 সালের সনদ আইন এর 43 নং ধারাযর ব্যাখ্যায় লর্ড মেকলে যে মন্তব্য করেছিলেন তা হল -

    ১) মেকলের মতে, সাহিত্য বলতে শুধুমাত্র সংস্কৃত বা আরবি সাহিত্যকে বোঝায় না; ইংরাজি সাহিত্যকেও বোঝায়।

   ২) শিক্ষিত ভারতীয় বলতে সংস্কৃত পণ্ডিত বা আরবি ফার্সিতে পারদর্শী মৌলবীকে বোঝায় না। যারা লকের দর্শন বা মিল্টনের কবিতায় পারদর্শিতা লাভ করেছেন তাদেরও বোঝায়।

   ৩) বিজ্ঞান শিক্ষার প্রবর্তন ও প্রসার বলতে তিনি ইংরেজি শিক্ষার প্রসার বলে উল্লেখ করেন। এই কারণে মেকলের মতে প্রাচ্য বা পাশ্চাত্য যে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সরকার ভালো মনে করবেন তাই প্রচার করার কথাই বলা হয়েছে।

   ৪) প্রাচীন ভারতীয় ভাষা সম্পর্কে তিনি বলেন, এই ভাষাগুলি ইউরোপীয় ভাষাগুলির তুলনায় অনেক নিকৃষ্ট ও ভুলে ভরা। এবং পরিশেষে তিনি বলেন, ইংরেজির মত সম্পদশালী ভাষায়  শিক্ষার সুযোগ যেখানে রয়েছে সেখানে অন্য ভাষায় শিক্ষা দেওয়ার অর্থ নেই। অর্থাৎ তিনি ইংরেজিকেই শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করার কথা বলেছেন।

ইংরেজি ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম করার স্বপক্ষে যুক্তি: মেকলে ইংরেজি ভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম করার স্বপক্ষে যে যুক্তিগুলো দেখেছিলেন সেগুলি হল -
   
   ১) ইংরেজি ভাষা পাশ্চাত্য ভাষা সমূহের মধ্যে প্রধান।

  ২) গ্রিক ও ল্যাটিন ভাষা যেমন ইংরেজি ভাষার সমৃদ্ধির মূলে ছিল তেমনি ইংরেজি ভাষা ভারতীয় ভাষাকে সমৃদ্ধ করতে পারবে।

  ৩) ইংরেজি ভাষা আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের চাবিকাঠি।

 ৪) ইংরেজি শাসকশ্রেণীর ভাষা, ইংরেজি ভাষা না শিখলে ভারতবাসীর সরকারি কাজকর্মে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
  
  ৫) এই ভাষার মাধ্যমে পশ্চিমী দেশীয় সভ্যতার নামে ভারতবাসীরা ধীরে ধীরে পরিচিত হয়ে উঠবে।

  ৬) মেকলে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা ব্যাপারে পরিশ্রুত মতবাদে (Downward Filtration Theory) বা চুঁইয়ে পড়া নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে যেসব ভারতবাসী উচ্চশিক্ষা লাভ করবেন তারা পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞান এর মর্ম উপলব্ধি করে নিজেদের দায়িত্বেই অন্যান্য ভারতবাসীর শিক্ষা পরিচালনায় অংশগ্রহণ করবেন।

  ৭) ইংরেজি শিক্ষার ফলে এ দেশে এমন এক শ্রেণীর লোক সৃষ্টি হয়ে হবে যারা বর্ণে ও রক্তেই শুধু ভারতীয় থাকবে, কিন্তু মতামত, নীতি ও বুদ্ধিতে হবে ইংরেজ।
মেকলে মিনিটের সমালোচনা:  ইংরেজি শিক্ষা সম্পর্কে বিখ্যাত মেকলেথ মিনিট দেশী, বিদেশী সকলের কাছ থেকে সমভাবে প্রশংসা লাভ করলেও অনেকেই তার সমালোচনা করেছেন। ভারতীয় ভাষাসমূহের উন্নতির সম্ভাবনাকে নষ্ট করেছেন বলে তারা দাবি করেছেন সমালোচনার দিক গুলি হল -

১) ভারতীয় ভাষা, বিজ্ঞান, ইতিহাস, দর্শন সম্পর্কে মেকলে তাঁর বিবরণীতে যে অপমান করেছেন তার জন্য অনেকেই তাঁর শুধু নিন্দায় করেননি, তাঁকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদ ও রাজনৈতিক অসন্তোষের কারণ হিসেবে দায়ীও করেছেন।

২) ইংরেজিকে শিক্ষার মাধ্যম করে তিনি ভারতে নিরক্ষরতার পথ প্রশস্ত করেছিলেন। লর্ড কার্জন এর মত আরো ইংরেজ শাসকগণ বলেছিলেন যে, ইংরেজিকে শিক্ষার মাধ্যম করার ফলে ভারতে জনশিক্ষার গতি অত্যন্ত পিছিয়ে গেছে।

৩) তিনি শিক্ষা ক্ষেত্রে চুঁইয়ে পড়া নীতি অনুসরণ করে উচ্চ মধ্যবিত্তদের জন্য শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন, জনশিক্ষার নয়।

৪) মেকলের কাছে শিক্ষার উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয়দের ইংরেজ প্রভুদের প্রয়োজন অনুযায়ী শিক্ষিত করা।

৫) মেকলে তাঁর শিক্ষা সংক্রান্ত এই মতামতের জন্য ঐতিহাসিকদের দ্বারা সমভাবে নিন্দিত ও প্রশংসিত হয়েছিলেন। অনেকে তাঁকে আধুনিক ভারতীয় শিক্ষার জনক হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কারণ, তারা মনে করেন, মেকলে ভারতে পাশ্চাত্য জ্ঞানের আমদানিতে সহায়তা করেছিলেন এবং শিক্ষা সংক্রান্ত পরবর্তী সরকারি নীতিকে প্রভাবিত করেছিলেন।
                            <<<<<<>>>>>>

প্রশ্ন: উডের ডেসপ্যাচ ১৮৫৪ এর শিক্ষাগত তাৎপর্য লেখ।                ৫

শিক্ষা ক্ষেত্রে উডের ডেসপ্যাচ এর গুরুত্ব: উডের ডেসপ্যাচ এ দেশের শিক্ষার ইতিহাসে একটি নবযুগের সূচনা করে। এই দলিলে শিক্ষা সংক্রান্ত যেসব নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করার প্রস্তাব করা হয়েছিল তার কয়েকটি হল -

(১) সরকারি শিক্ষা বিভাগ স্থাপন। এই শিক্ষা বিভাগের প্রধান হবেন শিক্ষার্থীধিকর্তা, (২) সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা, (৩) বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, (৪) শিক্ষক-শিক্ষণের ব্যবস্থা, (৫) বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যবস্থা, (৬)  স্ত্রী শিক্ষার প্রসার, (৭) প্রাথমিক শিক্ষার বিস্তার এবং (৮) বিদ্যালয় পরিদর্শন ব্যবস্থা।
   
      উডের ডেসপ্যাচের সুফল: প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় শিক্ষার কাঠামো উডের ঘোষণার ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। শিক্ষার ব্যাপারে এর আগে কোন সুস্পষ্ট কেন্দ্রীয় নীতি ছিল না। উডের ডেসপ্যাচ সর্বপ্রকার দ্বন্দ্বের অবসান ঘটিয়ে ভারতীয় শিক্ষাকে একটা বলিষ্ঠ নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত করেছিল। এর ফলে মিশনারিদের ধর্মীয় শিক্ষার দাবি বহুলাংশে অগ্রাহ্য হয়, বেসরকারি উদ্যোগের বিস্তার ঘটে এবং শিক্ষা ব্যবস্থার উপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়া উডের ডেসপ্যাচের 'চুইয়ে নামার' নীতি বাতিল হয়, দেশীয় বিদ্যালয়গুলির উপর ধর্মনিরপেক্ষ গণ শিক্ষার দায়িত্ব প্রদান করা হয় এবং মাধ্যমিক স্তরে ইংরেজির পরিবর্তে মাতৃভাষার প্রয়োজনীয়তা কথা বলা হয়। এই সকল কারণে জেমস উডের ডেসপ্যাচকে 'ভারতে ইংরেজি শিক্ষার ম্যাগনাকার্টা' বলে অভিহিত করেছেন।

      প্রকৃতপক্ষে উডের শিক্ষাসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তগুলি আজও আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় সুস্পষ্টরূপে বিদ্যমান। ভারতের শিক্ষার ইতিহাসে এই ডেসপ্যা
চের গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না। এই দলিরের উপর দাঁড়িয়ে আমরা অতীতের দিকে তাকিয়ে বলতে পারি আমরা কতটুকু এগিয়েছি, আমাদের শিক্ষার উদ্দেশ্য কতটুকু সাফল্যমণ্ডিত হয়েছে।
                               <<<<>>>>

ভারতীয় শিক্ষা ক্ষেত্রে উডের দলিলকে ম্যাগনাকার্টা বলা হয় কেন? ৫

      ম্যাগনাকার্টা: ম্যাগনাকার্টা হলো ইংল্যান্ড বাসীদের রাজনৈতিক স্বাধীনতার দাবী ও অধিকারের দলিল। এই দলিল ইংল্যান্ডের জনসাধারণ কর্তৃক রচিত হয়েছিল এবং রাজা বা রানী কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছিল।
উডের দলিলকে ম্যাগনাকার্টা বলার কারণ: উডের দলিল বা ডেসপ্যাচ ভারতের শিক্ষা সমস্যাকে সমগ্রভাবে দেখবার চেষ্টা করে- প্রাথমিক ও জণশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা, মাতৃভাষায় শিক্ষার আবশ্যকতা, বৃত্তি শিক্ষা, স্ত্রীশিক্ষা, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি বিষয়ে ডেসপ্যাচ যে নীতি নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেগুলো প্রশংসারযোগ্য। এই ডেসপ্যাচ সর্বপ্রথম রীতিবদ্ধ শিক্ষা ব্যবস্থা স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে অবহিত করে। শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারের যে বিশেষ কর্তব্য রয়েছে সে সম্বন্ধে ডেসপ্যাচ সরকারকে সচেতন করতে সচেষ্ট হয়। উডের ডেসপ্যাচ প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষার একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা রচনা করেছিল। এর ফলে ভারত উপমহাদেশে ব্রিটিশ সরকার পরিচালিত শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপিত হয়। অতএব এই ডেসপ্যাচকে একটা মূল্যবান দলিল বলা যায়। এই ডেসপ্যাচে রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ব্যবস্থার যে কাঠামোর কথা বলা হয় পরবর্তীকালে সেই কাঠামোকে ভিত্তি করে বর্তমান কাল পর্যন্ত শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে। তাই বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও প্রেসিডেন্সি কলেজের এক সময়ের অধ্যক্ষ অধ্যাপক জেমস এই ডেসপ্যাচের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন উডের এই দলিলকে ভারতে ইংরেজ প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থার মহাসনদ বা ম্যাগনাকার্টা বলা যায়।
                           <<<<>>>>

প্রশ্ন: শিখন ও পরিনমনের পরস্পর সম্পর্ক আলোচনা কর।

        শিখন ও পরিনমনের সম্পর্ক: শিখন এবং পরিনমন এই দুটিই বিকাশমূলক প্রক্রিয়া যার ফলে ব্যক্তির আচরণের পরিবর্তন ঘটে। শিশুর জীবন বিকাশের ক্ষেত্রে এই দুটি প্রক্রিয়াই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

         প্রক্রিয়া দুটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো উভয়ই উভয়ের উপর নির্ভরশীল। শিখনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হলো পরিনমন। যথাযথ পরিণমনের ছাড়া শিখন অসম্ভব। পরিনমন প্রক্রিয়াটি শিখনের সীমারেখা নির্ধারণ করে। আবার অনেক ক্ষেত্রে শিখনও পরিনমনের ক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করে। যেমন- দৈহিক অনুশীলন দৈহিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই বলা যায়, শিখন এবং পরিনমন পরস্পর সম্পর্কযুক্ত এবং উভয়েই শিশুর জীবন বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে

      বাস্তবে দেখা গেছে, কোন বিষয় শেখার জন্য শিশু যদি পরিনত বা প্রস্তুত না হয় এবং তাকে যদি জোর করে সেই বিষয়ে শেখানোর চেষ্টা করা হয় তাহলে ফল বিপরীত হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় - কোন দুই-তিন বছর বয়সের শিশুকে ভাষাসাহিত্য বিষয়ে পাঠদান করলে কিংবা জটিল অংকের নিয়মকানুন শেখানোর চেষ্টা করলে তা কোনদিনই সফল হবে না। তাই বলা যায় পরিমনই ঠিক করে শিশুর শিখনের সীমারেখা।

    সুতরাং, শিশুর শিখন শুরু করার আগে তার পরিণমনের স্তর সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া  প্রয়োজন। উপযুক্ত পরিনমন ঘটলে তবেই তার শিখনের কাজ  শুরু করা উচিত।
                              <<<<>>>>>

সামাজিক জীবনে গোষ্ঠীর ভূমিকা লেখ।

      সামাজিক জীবনে গোষ্ঠীর ভূমিকা: সামাজিক জীবনে গোষ্ঠীর ভূমিকা সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হল -
     
      ১) গোষ্ঠী ছাড়া মানুষের বেঁচে থাকা অসম্ভব না  হলেও খুব কষ্টের। কারণ মানুষ তার অস্তিত্ব বজায় রাখার, বিভিন্ন স্বার্থ পূরণের এবং উদ্দেশ্য মেটানোর সুযোগ পায় গোষ্ঠীর মাধ্যমেই।

      ২) সামাজিক পরিবেশ ব্যতিরেকে মানুষ একটি প্রাণী থেকে সমাজস্থ জীব হয়ে উঠতে পারে না। সে সামাজিক হয়ে ওঠে সামাজিকীকরণের দ্বারা এবং এই সামাজিকীকরণ সম্পন্ন হয় বিভিন্ন গোষ্ঠীর সাহায্যে। অর্থাৎ গোষ্ঠীগুলিই ব্যক্তিকে মানুষে পরিণত করে এবং তার সামাজিক চরিত্রের উন্মেষ ঘটায়।

         ৩) গোষ্ঠী জীবন সমাজ জীবনের অংশবিশেষ। এটি সমাজ জীবনের আবশ্যিক অঙ্গ। গোষ্ঠীর সদস্যরা পারস্পরিক সম্পর্কে আবদ্ধ, আবার এই পারস্পরিক সম্পর্কের বন্ধন হলো সমাজ। তাই ব্যক্তির অস্তিত্বের পাশাপাশি সমাজের টিকে থাকাও গোষ্ঠীর উপর নির্ভরশীল।

       ৪) গোষ্ঠীর সদস্যদের মধ্যে এক ধরনের গোষ্ঠী চেতনার প্রকাশ ঘটে যার দ্বারা ব্যক্তির মধ্যে এই বোধ কাজ করে যে সে পৃথিবীতে একা নয়, সে এক সামগ্রিকতার অংশবিশেষ। এইভাবে গোষ্ঠী ব্যক্তির মনে তার অস্তিত্ব বিষয়ে নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা দেয়।
                                 <<<<>>>

শিক্ষা এবং মনোবিদ্যার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক উল্লেখ কর।        ৫

      শিক্ষা ও মনোবিদ্যার সম্পর্ক: মনোবিদ্যায় ব্যক্তির অভিযোজন মূলক আচরণ বা সামগ্রিক আচরণ অনুশীলন করা হয়। অন্যদিকে শিক্ষাবিজ্ঞানে শিক্ষার্থীর সর্বাঙ্গীণ জীবন বিকাশে সহায়তা করা হয়। অর্থাৎ মনোবিদ্যার বিষয়বস্তু ব্যক্তি, শিক্ষার বিষয়বস্তুও ব্যক্তি।। ফলে দুটি শাস্ত্রই ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিজ্ঞান। যে ব্যক্তির আচরণ অনুশীলন করা হচ্ছে তাকেই শিক্ষার মাধ্যমে বিকশিত করে তোলা হচ্ছে। সুতরাং এই দুই বিজ্ঞানের মধ্যে বিষয়বস্তুর সাদৃশ্য আছে। স্বাভাবিকভাবেই তারা সম্পর্কযুক্ত হতে বাধ্য।

       মনোবিদ্যার ক্ষেত্র বহুবিস্তৃত। মানুষের আচরণ অনুশীলন করতে গিয়ে মনোবিদরা তাদের আলোচনাকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভাগ করেছেন। যেমন- সমাজ মনোবিদ্যা, শিশু মনোবিদ্যা, শিক্ষা মনোবিদ্যা ইত্যাদি। শিক্ষামনোবিজ্ঞান মনোবিদরার একটি প্রয়োগমূলক শাখা, যেখানে বিশেষভাবে শিক্ষাকালীন আচরণ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। সুতরাং শিক্ষার সঙ্গে মনোবিদ্যার সম্পর্ক সর্বজনস্বীকৃত।

      তবে শুধু শিক্ষা বিজ্ঞান নয়, সাধারণভাবে মনোবিদ্যার অন্যান্য শাখাও শিক্ষাকে প্রভাবিত করেছে। আধুনিক শিক্ষার সব গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বই মনোবিদ্যার নীতির উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে; তেমনি শিক্ষার ব্যবহারিক দিকের উপরও মনোবিদ্যার প্রভাব অপরিসীম।

      সুতরাং দেখা যাচ্ছে আধুনিক শিক্ষা ও মনোবিদ্যা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। মনোবিদ্যার পরীক্ষিত নীতিগুলিকে শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেইসব মনোবৈজ্ঞানিক নীতিগুলি প্রয়োগ করতে গিয়ে যে অসুবিধা দেখা দিয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে শিক্ষাবিদরা মনোবিদদের সচেতন করেছেন এবং মনোবিদগণও সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাদের সিদ্ধান্তগুলি শিক্ষার কাজে ব্যবহারের জন্য শিক্ষাবিদদের হাতে তুলে দিয়েছেন।
                             <<<<>>>>

স্কিনারের শিখন তত্ত্বটির শিক্ষা ক্ষেত্রে গুরুত্ব আলোচনা কর।

     স্কিনারের শিখন তত্ত্বটির শিক্ষা ক্ষেত্রে গুরুত্ব: স্কিনারের শিখন তত্ত্বটি বা অপারেন্ট অনুবর্তন, প্রাচীন অনুবর্তনের মত যান্ত্রিক কৌশল নয়। শিক্ষার্থীর নিজস্ব চাহিদা ও মানসিক প্রবণতা ও বৈশিষ্ট্যগুলি এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। এই কৌশলে শিক্ষার্থী যখন শেখে তখন সে পরিবেশের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে অভিযোজন করে তার চাহিদাগুলি পরিতৃপ্ত করে। তাই আধুনিক শিক্ষাবিজ্ঞানে, স্কিনারের অনুবর্তনের উপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই শিখন কৌশলকে বিদ্যালয় শিখনের ক্ষেত্রে কার্যকর করার জন্য বর্তমানে স্বয়ং শিখন পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে যান্ত্রিক কৌশলে শিক্ষার্থীর সামনে শক্তিদায়ক সত্তা হিসেবে বিশেষ উদ্দীপক উপস্থাপন করা হয়। এই যান্ত্রিক কৌশলকে সাধারণভাবে বলা হয় শিখন যন্ত্র। শিখন যন্ত্রের শক্তিদায়ক সত্তা হিসাবে, শিক্ষার্থীর নিজস্ব প্রতিক্রিয়ার ফলাফলকে ব্যবহার করা হয়। এক কথায় স্কিনারের অনুবর্তন তত্ত্ব বা অপারেন্ট অনুবর্তন শিক্ষা ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন এনেছে যার ফলে শিক্ষাদানের পদ্ধতির মধ্যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে।
                               <<<<>>>>

প্রশ্ন: মধ্য যুগের নারী শিক্ষা সম্পর্কে মূল্যায়ন কর। ৫

         মধ্যযুগের নারীশিক্ষা: মধ্যযুগে নারী শিক্ষা অবৈধ ছিল না। তাই প্রথমদিকে ফাতিমা, হামিদা, সোফিয়ার মত বিদুষী নারীর কথা শোনা যায়।

       পরে পর্দা প্রথা চালু হওয়ায় সাধারণ নারীশিক্ষা সংকোচিত হলেও উচ্চবংশের মেয়েদের অন্দরমহলে শিক্ষার জন্য উলেমা এবং চারুকলা শিক্ষার জন্য ওস্তাদ নিয়োগ করা হত।

         রাজ পরিবারের মহিলারা নিজেরা শিক্ষিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার পৃষ্ঠপোষকতাও করতেন। রাজ পরিবারের শিক্ষিত মহিলাদের মধ্যে সুলতানা রাজিয়া, বাবর কন্যা গুলবদন বেগম, শাহজাহান কন্যা জাহানারা বেগম প্রমুখের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

        মধ্যযুগে হিন্দু নারীদের শিক্ষা যথেষ্ট বাধাপ্রাপ্ত হয়। মুসলিম শাসন কালে হিন্দু সমাজ যথেষ্ট রক্ষণশীল হয়ে ওঠে আর এই রক্ষণশীলতায় প্রধান বলি হয় নারী শিক্ষা।
                               <<<<>>>

প্রশ্ন: লর্ড কার্জনের শিক্ষা সংস্কারের ত্রুটিগুলো উল্লেখ করে।       ৫

    লর্ড কার্জনের শিক্ষা সংস্কারের ত্রুটি: লর্ড কার্জন ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থায় সামগ্রিক পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলেন। এত অল্প সময়ের মধ্যে এত ব্যাপক ব্যবস্থা গ্রহণ তাঁর গতিশীল ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক। তবে তার শিক্ষা সংস্কারের মধ্যে কিছু ত্রুটি ছিল তার নয়। তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছিলেন। শিক্ষার মান উন্নয়নকে উপলক্ষ করে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষার সম্প্রসারণ বন্ধ করেছিলেন এবং শিক্ষার সমস্ত স্তরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সরকারী নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন। তাঁর এই শিক্ষা সংকোচনের নীতি ও সরকারী নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার প্রবর্তনকে ভারতীয়রা ভালো চোখে দেখেননি।তাছাড়া বঙ্গভঙ্গ প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে তিনি এমন এক রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন যে, তাঁর কোন কাজকেই সেই সময় সঠিকভাবে মূল্যায়ন করার চেষ্টা ভারতীয়দের পক্ষ থেকে করা হয়নি। শিক্ষা সংস্কার প্রসঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযোগ ছিল, তিনি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের ব্যাপারে দেশীয় চিন্তাবিদদের কোন গুরুত্ব দেননি; তাঁদের পরামর্শও কোন সময় গ্রহণ করেননি। ফলে শিক্ষিত ভারতীয়রা তাঁকে এক দাম্ভিক সম্রাজ্যবাদী হিসেবে প্রথম থেকেই গ্রহণ করেছিলেন এবং তার সমস্ত কাজের মধ্যে রাজনৈতিক অভিসন্ধির অনুসন্ধানই করে গেছেন। এই পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝির জন্যই সমসাময়িক কালে কার্জনের শিক্ষানীতিগুলির ও তাঁর শিক্ষা প্রচেষ্টায় বিভিন্ন কার্যাবলীর সঠিক মূল্যায়ন সম্ভব হয়নি।
Read More

Wednesday 15 May 2019

B.A. Part-I Education Suggestion 2019 (University of Gour Bango)

Leave a Comment
                  SUGGESTION FOR 2019
      B.A. part-I (University of Gour Bango)
           EDUCATION (General) Paper- 1- B
 Full marks : 100                         Time : 3 Hours

মডিউল - ১ (Philosophical Foundation of Education)

১। নীচের প্রশ্নগুলির যে কোনো একটির উত্তর দাও ।                                              ১৫x১=১৫

ক) শিক্ষার সংজ্ঞা দাও। এর পরিধি বিস্তারিত আলোচনা কর।
খ) প্রকৃতিবাদের অবদান আলোচনা কর।
গ) প্রয়োগবাদ অনুযায়ী শিক্ষার লক্ষ্য, পাঠ্যক্রম, শিক্ষণ পদ্ধতি ,শিক্ষকের ভূমিকা এবং বিদ্যালয়ের অবস্থান সম্পর্কে আলোচনা কর।
ঘ)   একজন ভালো শিক্ষকের ব্যক্তিগত,  পেশাগত এবং শিক্ষাগত গুণাবলী উল্লেখ কর।
ঙ) শিক্ষার সংজ্ঞা দাও। শিক্ষার বিভিন্ন লক্ষগুলির বর্ণনা দাও।
২। যে কোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও।   ৫x২=১০
ক)  শিক্ষার গণতান্ত্রিক লক্ষ্য--আলোচনা কর।                                               ৫
 খ) শিক্ষা ও দর্শনের সম্পর্ক আলোচনা কর।         ৫
গ) শিক্ষার সামাজিক লক্ষ্য সম্পর্কে টীকা লেখ।    ৫
ঘ) শিক্ষার উপাদানগুলি আলোচনা কর।
ঙ) ভাববাদের   উপর একটি টীকা লেখ।
 চ) শিক্ষার বৃত্তিমূলক লক্ষ আলোচনা কর।     ৫

মডিউল - ২ (Sociological Foundation of Education)

৩। নীচের প্রশ্নগুলির যে কোনো একটির উত্তর দাও।                                              ১৫ x১=১৫

ক) শিক্ষামূলক সমাজতত্ত্বের সংজ্ঞা দাও। শিক্ষামূলক সমাজবিজ্ঞানের প্রকৃতি ও পরিধি আলোচনা কর।
খ) সামাজিক জীবনে গোষ্ঠীর ভূমিকা  লেখ। উদাহরণ সহকারে বিভিন্ন সামাজিক গোষ্ঠীর শ্রেণীবিভাগ আলোচনা করো।
গ) সামাজিক গোষ্ঠী বলতে কী বোঝ? এর প্রকৃতি আলোচনা কর। শিক্ষার ক্ষেত্রে গৌণ গোষ্ঠীর ভূমিকা আলোচনা কর।
ঘ) সামাজিক গোষ্ঠী কি? শিক্ষায় প্রাথমিক গোষ্ঠী হিসেবে পরিবারের ভূমিকা আলোচনা কর।    ৩+১২=১৫

৪। নীচের প্রশ্নগুলির যে  কোনো দুটির উত্তর দাও।                                                       ৫x২=১০

ক) প্রাথমিক গোষ্ঠী ও মাধ্যমিক গোষ্ঠীর মধ্যে পার্থক্য গুলি আলোচনা কর।
খ) শিক্ষায় গৌণ গোষ্ঠীর ভূমিকা আলোচনা কর।
গ) সামাজিক গোষ্ঠীর সাধারণ বৈশিষ্ট্য গুলি কি কি?
ঘ) শিক্ষা এবং সমাজতত্ত্বের সম্পর্ক বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ ।      ৫
ঙ) শিক্ষামূলক সমাজতত্ত্বের গুরুত্ব আলোচনা কর।        ৫
চ) শিক্ষার সমাজতত্ত্বমূলক ভিত্তি সম্পর্কে লেখ।    ৫
ছ) শিক্ষায় প্রাথমিক গোষ্ঠীর ভূমিকা আলোচনা কর।        ৫

মডিউল - ৩  (Psychological Foundation of Education)

৫। যে কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও।                       ‌                                                       ১৫x১=১৫

(ক) শিক্ষা মনোবিদ্যা সংজ্ঞা দাও। শিক্ষা মনোবিদ্যার প্রকৃতি এবং পরিধি আলোচনা কর।
 খ) শিখনের প্রাচীন অনুবর্তন তত্ত্বটি আলোচনা কর। এই তথ্যটির শিক্ষাগত তাৎপর্য লেখ।
গ) মানব বিকাশের স্তরগুলী উল্লেখ কর। কিশোর-কিশোরীদের শারীরিক ও মানসিক বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর।
ঘ) সক্রিয় অনুবর্তন কি? সক্রিয় অনুবর্তন এর নীতি সমূহ আলোচনা কর। শিখনের সক্রিয় অনুবর্তন তত্ত্বটির শিক্ষাগত উপযোগিতা উল্লেখ কর।
ঙ) থর্নডাইকের প্রচেষ্টা এবং ভুল সংশোধন পদ্ধতির সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দাও।

৬। যেৎকোনো দুটি প্রশ্নের উত্তর দাও।         ৫x২=১০

ক) প্রাচীন অনুবর্তন ও সক্রিয় অনুবর্তনের পার্থক্য আলোচনা কর। ৫
খ) শিক্ষা এবং মনোবিদ্যার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক উল্লেখ কর।
গ) স্কিনারের শিখন তত্ত্বটির শিক্ষাক্ষেত্রে গুরুত্ব আলোচনা কর।
ঘ) শিখনে প্রেষণার ভূমিকা আলোচনা কর।    ৫
ঙ) শৈশবকালের বিভিন্ন চাহিদা গুলি আলোচনা করো।   ৫
চ) একজন শিক্ষকের শিক্ষা মনোবিদ্যা অধ্যায়ন করা প্রয়োজন কেন?    ৫
ছ) শিখন এবং পরিনমন পরস্পরের সঙ্গে কীভাবে সম্পর্কিত?     ৫
জ) শিখন এবং প্রেষণার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক উল্লেখ কর।

মডিউল - ৪ (Historical Foundation of Education)

৭। যে কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর দাও।   ১৫x১=১৫

(ক) বৌদ্ধ যুগের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষার লক্ষ্য, শিক্ষণ পদ্ধতি, পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষক শিক্ষার্থীর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সম্বন্ধে আলোচনা কর।
(খ) শ্রীরামপুর মিশন কারা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন? বাংলার শিক্ষাক্ষেত্রে এই মিশনের কার্যাবলী আলোচনা কর।
গ) জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের কারণ ও তার ব্যর্থতার কারণগুলি সম্পর্কে আলোচনা কর।
ঘ) লর্ড মেকলে কে ছিলেন? প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের সমাধানের জন্য মেকলে মিনিটের সুপারিশগুলি ব্যাখ্যা কর।
ঙ) অ্যাডামের তিনটি প্রতিবেদনের আলোকে দেশীয় শিক্ষা ব্যবস্থার একটি বিবরণ দাও।

৮। যে কোনো 2 টি প্রশ্নের উত্তর দাও।       ৫x২= ১০                               
ক) গুরুকুল শিক্ষা ব্যবস্থা আলোচনা কর।        ৫
খ) ভারতীয় শিক্ষা ক্ষেত্রে উডের দলিলকে ম্যাগনাকার্টা বলা হয় কেন?                               ৫                     
গ) ভারতবর্ষে ইংরেজি শিক্ষার প্রবর্তনে লর্ড মেকলের ভূমিকা আলোচনা কর।                         ৫
ঘ) উডের ডেসপ্যাচ  ১৮৫৪ এর শিক্ষাগত তাৎপর্য লেখ।                                                                   ৫       
ঙ) মধ্য যুগের নারী শিক্ষা সম্পর্কে মূল্যায়ন কর।
চ) লর্ড কার্জনের শিক্ষানীতির সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে একটি সংক্ষিপ্ত প্রবন্ধ লেখ।
ছ) টীকা লেখ- টোল , মাদ্রাসা , সমাবর্তন , প্রবজ্জা, নালন্দা,* তক্ষশীলা ,উপসম্পদা, উপনয়ন।
        
Read More

Tuesday 14 May 2019

B.A. 3rd year's Education Suggestion 2019 (University of Gour Bango)

Leave a Comment
                  SUGGESTION FOR 2019
      B.A. part III ( Gour Banga University)
                    EDUCATION (General) 
                      Paper Code:  III - A
                           (New Syllabus)
                           Full Marks : 70 

রচনাধর্মী প্রশ্ন (15 নম্বরের)

ক. যে দুটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। (A ও B  Group থেকে ৪টি প্রশ্ন থাকবে)                         ১৫x২=৩০

১) মূল্যায়ন বলতে কী বোঝ? শিক্ষায় মূল্যায়নের পরিধি এবং প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর।         ৩+৭+৫=১৫
২) নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষা এর সংজ্ঞা দাও। নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষার সুবিধা ও অসুবিধাগুলো আলোচনা কর।                                                                        ৩+৬+৬=১৫
৩) কেন্দ্রীয় প্রবণতার সংজ্ঞা দাও। কেন্দ্রীয় প্রবণতার পরিমাপ গুলি কি কি? নিম্নলিখিত বন্টনের গড় ও মধ্যমান নির্ণয় কর।/ সম্যক চ্যুতি নির্ণয় কর
52 34 50 27 33 67 70 34 48 48
46 50 26 38 49 63 42 49 57 46
 76 65 35 67 57 74 53 61 5136
45 22 42 31 17 59 56 32 45 63
54 74 35 21 19 64 4129 43 42

৪) পরামর্শদানের সংজ্ঞা দাও। পরামর্শদানের বৈশিষ্ট্যগুলি উল্লেখ কর। শিক্ষায় পরামর্শ দানের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর।                 ৩+৭+৫=১৫
৫) সংগতি বিধান বলতে কি বোঝ?  বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসঙ্গতির কারণগুলো কি কি?
৬) পরামর্শদান কি? প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষ পরামর্শদানের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ কর।
৭) সহগতির সহগাঙ্ক কাকে বলে? নিম্নলিখিত তত্ত্বের Rank difference পদ্ধতিতে সহগাঙ্ক নির্ণয় কর এবং ফলাফল এর তাৎপর্য নির্ণয় কর।
Student: A   B  C  D  E  F  G  H  I   J
Score x: 2   5  3   7   9  1   4  8  6  10
Score y: 1   3   5  8   7  2    6  4 9  10
৮) নির্ভরযোগ্য তার সংজ্ঞা দাও। একটি অভিক্ষার নির্ভরযোগ্যতা নির্ণয়ের যে কোনো দুটি পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা কর।                                            ৩+৬+৬

সংক্ষিপ্ত রচনাধর্মী প্রশ্ন (10 নম্বরের)

খ. যে দুটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। (A ও B group থেকে চারটি প্রশ্ন থাকবে।)                      ১০x ২=২০

১)নির্দেশনা ও পরামর্শদান এর পার্থক্যগুলো আলোচনা কর। 
২) সংগতি বিধানের গুরুত্ব আলোচনা কর।
২) শিক্ষাগত নির্দেশনার প্রধান উদ্দেশ্যগুলি সম্পর্কে আলোচনা কর।
৩) পারদর্শিতার অভীক্ষা কি ? এর গুরুত্ব সম্পর্কে লেখ।
৪) প্রবন্ধমুলক প্রশ্নাবলীর সুবিধা ও অসুবিধাগুলো আলোচনা কর।
৭) আদর্শায়িত অভীক্ষার বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর।
৮) NRT ও CRT মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ কর।
৯) শিক্ষক নির্মিত অভীক্ষার সুবিধা ও অসুবিধা নির্ণয় কর।
১০) শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে CRC এর গুরুত্ব আলোচনা কর।
১১) মূল্যায়নের প্রকারভেদ সম্পর্কে আলোচনা করো


সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন (5 নম্বরের)

গ. যে চারটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। (Aও B গ্রুপ থেকে আটটি প্রশ্ন থাকবে)                         ৫x৪=২০

১) ওজাইভ এবং Histogram এর ব্যবহার লেখ।
২) বহুভুজের উপর টীকা লেখ।
৩) বিসমতার বিভিন্ন পরিমাপ গুলি লেখ।
৪) Anecdotal Record কার্ডের উপর টীকা লেখ।
৫) পরিমাপ ও মূল্যায়ন এর মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় কর।
৬) ঐচ্ছিক পরামর্শ দান সম্পর্কে টীকা লেখ।
৭) কেস হিস্ট্রি এর উপর টীকা লেখ।
৮) পরামর্শ দানের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর।
৯) নির্দেশনার প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর।
১০) নির্দেশনার প্রকৃতি আলোচনা কর।
১১) নির্ভরযোগ্যতা ও যথার্থতার মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ কর।
১২) সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্নের সুবিধা ও অসুবিধাগুলো উল্লেখ কর।
১৩) স্তম্ভ লেখ চিত্রের শিক্ষাগত গুরুত্ব লেখ।
১৪) মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা আলোচনা কর।
১৫) পরামর্শদানের বৈশিষ্ট্য লেখ।
১৬) সাইকোথেরাপি ও পরামর্শদান এর পার্থক্য নিরূপণ কর।

New Syllabus 
Group – A Evaluation in Education
Module – I: Educational Evaluation
 Meaning, Concept and Nature of Evaluation and Measurement.
 Need and Scope of Evaluation in Education: Evaluation of student achievement.
Module – II: Evaluation of student progress:
 Examination and evaluation - tools of evaluation:
 Examination - essay type and objective type, criteria, reference tests and standardized tests, cumulative Record Card.
 How to make a good test: Specification of objective item selection Characteristics of a good test: (a) Validity, (b) Reliability, (c) Objectivity, (d) Usability, (e) Norms.
Module – II: Statistics in Educational Evaluation
 Tabulation of educational data. Measures of Central Tendency, Measure of variability. Graphical representation.
 Histogram, Frequency Polygon and Ogive.
 Idea of linear correlation (Rank Difference and Product Moment Method).

Group – B Guidance in Education
Module – I: Educational Guidance
 Guidance: Concept, Nature, Scope and Importance.
 Types of guidance.
 Basic data necessary for guidance (Data about students, courses and vocations)
Module – II: Adjustment and Maladjustment
 Meaning, Concept and Nature of Adjustment.
 Concept and Causes of Maladjustment. Role of parents, teachers, peers and educational institutions in preventing and eradicating maladjusted behaviour.
Module – II: Adjustment and Maladjustment
 Counseling: Meaning, Concept, Nature, Types and Importance of counseling for adjustment problems.

Read More