শিক্ষা বিজ্ঞান
জানার প্রক্রিয়া : সংবেদন , প্রত্যক্ষণ ও ধারণা
অতি-সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর প্রতিটি প্রশ্নের মান-২
প্রশ্ন ১। 'প্রত্যক্ষণ' বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ প্রত্যক্ষণ হল সংবেদনের অর্থযুক্ত রূপ। বস্তুর যাবতীয় ‘গুণ ও বৈশিষ্ট্য যেসব মানসিক প্রক্রিয়ার সাহায্যে সরবরাহ করা হয়, তাকে বলা হয় 'প্রত্যক্ষণ' (Perception)।
প্রশ্ন ২। সংবেদন কী ?
উত্তরঃ সংবেদন বস্তুনিষ্ঠ বাহ্য উদ্দীপক। উদ্দীপক ইন্দ্রিয়ের সংস্পর্শে এলে যে প্রাথমিক বোধ জাগে, তা হল ‘সংবেদন'।
প্রশ্ন: ৩। লেন্স্ বলতে কী বোঝো?
উত্তরঃ কনীনিকার পিছনে একরকম তরল পদার্থ জমাট বেঁধে স্বচ্ছ কাচের আকার ধারণ করেছে, একে 'লেস' বলে।
প্রশ্ন ৪। স্বনতীক্ষ্ণতা কাকে বলে?
উত্তরঃ স্বনতীক্ষ্ণতা (Pitch): স্বনতীক্ষ্ণতা নির্ভর করে প্রতি সেকেণ্ড বায়ুতরঙ্গের কম্পনসংখ্যা এবং শব্দের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ওপর। বায়ুর তরঙ্গদৈর্ঘ্য যত ছোটো হবে, সেই শব্দ তত তীক্ষ্ণ হবে। অপরপক্ষে বায়ুর তরঙ্গদৈর্ঘ্যে যত বড়ো হবে সেই শব্দের তীক্ষ্ণতা তত কম হবে। সুতরাং আমরা বলতে পারি, একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যতসংখ্যক বায়ুতরঙ্গ কানের পর্দায় আঘাত করে, তার ওপরই নির্ভর করে ‘স্বনতীক্ষ্ণতা’ বা ‘Pitch |
প্রশ্ন ৫। স্বনগভীরতা বলতে কী বোঝো?
■ উত্তর ঃ স্বনগভীরতা নির্ভর করে বায়ুতরঙ্গের শক্তি বা বিস্তারের ওপর। বায়ুতরঙ্গের উচ্চতা বা অনুচ্চতার জন্য স্বনগভীরতা বেশি বা কম হয়। স্বনতীক্ষ্ণতা যত বেশি হয়, ততই তা সরু ও মিহি হয়।
প্রশ্ন ৬। উপস্বনতা কী?
উত্তর ঃ উপস্বনতা (Timbre) : প্রত্যেক শব্দের একটি করে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে, যার জন্য ওই শব্দকে অন্যান্য শব্দ থেকে পৃথক করে বুঝে নেওয়া যায়। শব্দের এই বৈশিষ্ট্যকে বলে উপস্বনতা। হারমোনিয়াম ও সেতার একসঙ্গে এক সুরে একই স্বনতীক্ষ্ণতায় ও স্বনগভীরতায় বাজলেও কোন শব্দটি হারমোনিয়াম এবং কোন শব্দ সেতারের তা আমরা বুঝতে পারি উপস্বনতার সাহায্যে।
প্রশ্ন ৭। ধারণা কী?
উত্তর ঃ একই শ্রেণির বিভিন্ন বস্তুর মধ্যে যে সাধারণ গুণ বর্তমান আছে, তার অভিজ্ঞতাই হল 'ধারণা'।
প্রশ্ন ৮। সংবেদন ও প্রত্যক্ষণের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর ঃ (i) সংবেদন বস্তুনিষ্ঠ বাহ্য উদ্দীপক আর প্রত্যক্ষণ হল মানসিক প্রক্রিয়া।
(ii) সংবেদন হল প্রত্যক্ষণের উপাদান আর প্রত্যক্ষণ হল সংবেদনের অর্থযুক্ত রূপ
প্রশ্ন ৯। ধারণার দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করো।
উত্তর ঃ (i) ধারণা জীবন অভিজ্ঞতার সঙ্গে যুক্ত।
(ii) ধারণা সংরক্ষণ করা সম্ভব।
১০। প্রত্যক্ষণ কয় প্রকার? ও কী কী?
উত্তরঃ প্রত্যক্ষণ তিন প্রকার
(i) সাক্ষাৎ প্রত্যক্ষণ
(ii) অর্জিত প্রত্যক্ষণ
(iii) সংপ্রত্যক্ষণ
প্রশ্ন ১১। প্রত্যক্ষণের যে-কোনো চারটি স্তরের নাম করো।
উত্তরঃ পৃথকীকরণ, সাদৃশ্য খোঁজা, উৎস ও স্থান নির্দেশ করা ও বিশ্বাস করা।
প্রশ্ন ১২। ইন্দ্রিয় সংবেদনে সাহায্য করে এমন চারটি ইন্দ্রিয়ের নাম লেখো।
উত্তরঃ চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা ও জিহ্বা।
প্রশ্ন ১৩। 'সোমেথেসিস্' কথার অর্থ কী? কখন এটি হয়ে থাকে?
উত্তরঃ সোমেথেসিস' কথার অর্থ হল – দৈহিক অনুভূতি। দেহ যখন বিশ্রাম অবস্থায় থাকে তখন এই সংবেদন পাওয়া যায়।
প্রশ্ন ১৪। জানার প্রক্রিয়াটির বিভিন্ন স্তরগুলি রেখাচিত্রের সাহায্যে দেখাও।
উত্তরঃ উদ্দীপক → সংবেদন →প্রত্যক্ষণ →ধারণা → জ্ঞান।
প্রশ্ন ১৫। মনোবিদ টিচেনার সংবেদনের কয়টি গুণের কথা বলেছেন? সেগুলি কী কী?
উত্তরঃ মনোবিদ টিচেনার সংবেদনের চারটি গুণের কথা বলেছেন। যথা—
(i) গুণ,
(ii) তীব্রতা,
(iii) স্পষ্টতা,
(iv) স্থায়িত্ব।
প্রশ্ন ১৬। আমাদের পেশি কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তরঃ আমাদের পেশি তিন প্রকার। যথা— ঐচ্ছিক পেশি, অনৈচ্ছিক পেশি এবং হূৎপিণ্ডের পেশি।
প্রশ্ন ১৭। কর্নিয়া কী?
উত্তরঃ চোখের ওপরের আবরণটি সামনের দিকে পুরু, স্ফীত অথচ স্বচ্ছ যার মধ্য দিয়ে চোখের ভিতর আলোক প্রবেশ করতে পারে, এই অংশটিকেই ‘কর্নিয়া' বলে।
প্রশ্ন ১৮। তারারন্দ্র কাকে বলে?
উত্তরঃ কনীনিকার মধ্যভাগে একটি ক্ষুদ্র ছিদ্র আছে যার মধ্য দিয়ে চোখের ভিতর আলোক প্রবেশ করে। এই ছিদ্রকে বলে ‘তারারন্ধ্র’ (Pupil)।
প্রশ্ন ১৯। জলীয় রস কী?
উত্তরঃ কর্নিয়া ও কনীনিকার মধ্যে যে জায়গাটুকু আছে তা এরকম বর্ণহীন তরল পদার্থের দ্বারা পূর্ণ থাকে। এই তরল পদার্থকে বলা হয় 'জলীয় রস' (aqueous humour)।
প্রশ্ন ২০। প্রত্যক্ষণের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা গঠন করার ক্ষেত্রে মনের অবস্থানগুলো কী ?
উত্তরঃ প্রত্যক্ষণের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা গঠন করার ব্যাপারে মনের কয়েকটি অবস্থান লক্ষ করা যায়। যেমন -
(i) পূর্ব অভিজ্ঞতা
(ii) প্রসঙ্গ ও পরিবেশের প্রভাব
(iii) আবেগ ও মানসিক উত্তেজনা
(iv) অভিভাবকের প্রভাব
(v) সমাজের প্রভাব।
প্রশ্ন ২১। প্রত্যক্ষণ প্রক্রিয়ার ক্যাটি দিক ও কী কী?
উত্তর : প্রত্যক্ষণ প্রক্রিয়ার দুটি দিক। যথা—
(i) উপস্থাপনমূলক প্রক্রিয়া এবং (ii) পুনরুজ্জীবনমূলক প্রক্রিয়া।
প্রশ্ন ২২। সংবেদনের উপাদান কয়টি ও কী কী?
উত্তরঃ সংবেদনের উপাদান তিনটি। যথা— উদ্দীপক, স্নায়ুতন্ত্র ও মস্তিষ্ক।
প্রশ্ন ২৩। বৌদ্ধিক ক্ষেত্রগুলি কী কী?
উত্তর: বৌদ্ধিক ক্ষেত্র গুলি হল- জ্ঞান, বোধ, প্রয়োগ, বিশ্লেষণ, সংশ্লেষণ ও মূল্যায়ন।
প্রশ্ন ২৪। প্রাক্ষোভিক ক্ষেত্রগুলি কী কী?
উত্তরঃ প্রাক্ষোভিক ক্ষেত্র গুলি হল- অনুভূতি, আগ্রহ, কর্মোদ্যোগ ও মূল্যবোধ।
প্রশ্ন ২৫। সাইকোমোটর ক্ষেত্রগুলি কী কী?
উত্তর ঃ সাইকোমোটর ক্ষেত্র গুলি হল - তাৎক্ষণিক অনুকরণ, কর্মপ্রচেষ্টা, সমন্বয় ও স্বভাব দক্ষতা।
প্রশ্ন ২৬। পরিবেশ সম্পর্কে শিশুরা কীভাবে ধারণা গঠন করে? দুটি বিষয় উল্লেখ করো।
উত্তর : (i) অনুভবের মধ্য দিয়ে এবং
(ii) বস্তুর গতিশীলতা দেখে– শিশুরা ধারণা গঠন করে।
প্রশ্ন ২৭। স্কিমা কী?
উত্তরঃ কোনো বিষয় সম্বন্ধে সংগৃহীত তথ্যের ক্ষুদ্রতম একককে ‘স্কিমা’ বলে।
প্রশ্ন ২৮। প্রজ্ঞা কাকে বলে?
উত্তরঃ মানুষ যে মানসিক প্রক্রিয়ার দ্বারা তার চারপাশের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জ্ঞানলাভ করে এবং সেই জ্ঞানের প্রয়োগ করে সমস্যার সমাধান করতে পারে তাকে ‘প্রজ্ঞা (cognition) বলে।
প্রশ্ন ২৯। জ্ঞান কাকে বলে?
উত্তরঃ আমরা যে মানসিক প্রক্রিয়ার দ্বারা আমাদের পরিবেশ সম্বন্ধে বিশেষ ধারণা লাভ করতে পারি, তাকে ‘জ্ঞান' বলে।
প্রশ্ন ৩০। আত্মীকরণ কী?
উত্তরঃ সংগৃহীত তথ্য সরাসরি আমাদের জ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে জ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত হয়, একে ‘আত্মীকরণ' বলে।
প্রশ্ন ৩১। পিঁয়াজে (Piaget) প্রজ্ঞামূলক বিকাশকে কয়টি স্তরে ভাগ করেছেন? কী কী?
উত্তরঃ পিঁয়াজে প্রজ্ঞামূলক বিকাশকে চারটি স্তরে ভাগ করেছেন। যথা—
(i) সংবেদন সঞ্চালনমূলক স্তর। (০-২ বছর)
(ii) প্রাক সক্রিয়তার স্তর। (২-৬ বছর)
(iii) মূর্ত সক্রিয়তার স্তর। (৬-১১ বছর)
(iv) নিয়মতান্ত্রিক সক্রিয়তার স্তর। (১১-১৮ বছর)
0 comments:
Post a Comment