মন্দ উপমা দোষ ব্যাখ্যা ও বিচার কর।।
উঃ
মন্দ উপমা যুক্তি বা দুষ্ট উপমা যুক্তি বা ভ্রান্ত সাদৃশ্যমূলক দোষ: দুটি বস্তু বা ব্যক্তি বা ঘটনার মধ্যে কিছু বিষয়ে সাদৃশ্য লক্ষ্য করে তাদের মধ্যে কোন একটিতে একটি অতিরিক্ত গুন লক্ষ করে যদি অনুমান করা হয় যে অপরটিতেও ওই অতিরিক্ত গুণটি থাকবে তাহলে সেই যুক্তিকে উপমা যুক্তি বলা হয়। এইরূপ উপমা যুক্তি ভালো বা মন্দ হতে পারে। যে উপমা যুক্তিতে যে সমস্ত সাদৃশ্যের ভিত্তিতে অনুমান করা হয়, সেই সাদৃশ্যের বিষয়গুলি যদি প্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বপূর্ণ হয় তাহলে সেই যুক্তিকে ভালো বা উত্তম উপমা যুক্তি বলে। অন্যদিকে যে উপমা যুক্তির ভিত্তি স্বরূপ সাদৃশ্যের বিষয়গুলি অপ্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বহীন হয় তাকে মন্দ উপমা যুক্তি বলে। কাজেই উপমা যুক্তির ভিত্তি হিসেবে যে সমস্ত সাদৃশ্য লক্ষ্য করা হয় সেগুলি অপ্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বহীন হলেই উপমা যুক্তি সংক্রান্ত দোষ ঘটে।
উদাহরণ: মানুষের মতো উদ্ভিদের জন্ম, বৃদ্ধি ও ধ্বংস আছে। অতএব মানুষের মতো উদ্ভিদের চিন্তা শক্তি আছে।
যুক্তি বিশ্লেষণ:
মানুষ ( A) এবং উদ্ভিদ(B) এর মধ্যে জন্ম((p),
বৃদ্ধি (q), ধ্বংস(r)
বিষয়ে সাদৃশ্য আছে
মানুষের(A) চিন্তাশক্তি (z)আছে
.........................................................................
উদ্ভিদের(B) চিন্তাশক্তি (z)আছে
দোষ: এটি মন্দ উপমা যুক্তির দৃষ্টান্ত।
ব্যাখ্যা: এটি আরোহ অনুমানের দৃষ্টান্ত। এই যুক্তিটি ভ্রান্ত সাদৃশ্যমূলক দোষে দুষ্ট। কেননা, এই যুক্তিতে মানুষের সঙ্গে উদ্ভিদের কয়েকটি বিষয়ে সাদৃশ্য দেখে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে মানুষ ও উদ্ভিদের মধ্যে অপ্রাসঙ্গিক সাদৃশ্যের ভিত্তিতে এরূপ অনুমান করা হয়েছে। মানুষের মন আছে এবং মনের ধর্ম হল চিন্তা শক্তি। অপরদিকে, উদ্ভিদের মন নেই, তাই উদ্ভিদের চিন্তাশক্তি থাকার প্রশ্নই নেই। অথচ এখানে জন্ম ও বৃদ্ধির সাদৃশ্যের ভিত্তিতে উদ্ভিদের চিন্তাশক্তি অনুমান করা হয়েছে। ফলে যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট হয়েছে।
0 comments:
Post a Comment