Friday, 18 May 2018

২। সমাজবিদ্যার(Sociology) প্রশ্ন এবং উত্তর।

Leave a Comment
  প্রশ্ন: সামাজিক শ্রেণী এবং জাতি বা বর্ণের মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ কর।           ১৫ নম্বর
     OR, সামাজিক শ্রেণী ও বর্ণের উপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ।

উঃ   সামাজিক শ্রেণী: সামাজিক শ্রেণী প্রসঙ্গে গিন্সবার্গ বলেন, " সামাজিক শ্রেণী বলতে বোঝায়, সম্প্রদায়ের বিশেষ কোন অংশ বা জনগোষ্ঠীকে যারা সমতার ভিত্তিতে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং সমাজস্বীকৃত উঁচু-নিচু মানদণ্ডের দ্বারা এক জনগোষ্ঠি অপরাপর জনগোষ্ঠি থেকে ভিন্ন হয়ে থাকে"। ম্যাকাইভার ও পেজ্ বলেন, "সামাজিক শ্রেণী বলতে বোঝায় সম্প্রদায়ের এমন এক খন্ডাংশ যা মর্যাদা অনুসারে অন্যান্য অংশ থেকে স্বতন্ত্র। সামাজিক শ্রেণী প্রথমত, মর্যাদা অনুসারে উঁচু-নিচুভাবে অবস্থান করে; দ্বিতীয়ত, শ্রেণীর মর্যাদা সমাজস্বীকৃত হয় এবং শ্রেণী সদস্যরা ওই মর্যাদা সম্পর্কে সচেতন থাকে; তৃতীয়ত, সামাজিক শ্রেণীর সাংগঠনিক স্থায়িত্ব থাকে"। প্রত্যেক শ্রেণীর অন্তর্গত সদস্যদের মধ্যে সামান্য ব্যাপারে পার্থক্য থাকলেও তা তাদের পারস্পরিক শ্রেণি- সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো বাধা সৃষ্টি করে না;  তবে প্রত্যেক শ্রেণি অন্য শ্রেণী থেকে উচ্চতর ভাবে বা নিম্নতর ভাবে সম্বন্ধের ভিত্তিতে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে অবস্থান করে।

   জাতি বা বর্ণ: স্যার এডওয়ার্ড ব্লাস্ট তাঁর 'Social Service in India' নামক নিবন্ধ সংকলন গ্রন্থে বলেছেন, 'জাতি হচ্ছে এমন এক জনগোষ্ঠি যাদের মধ্যে অন্তর্বিবাহ প্রথা প্রচলিত, যারা বংশপরম্পরায় এক সাধারণ পদবী গ্রহণ করে, যারা সামাজিক আচার আচরণের ক্ষেত্রে কতগুলি বিধি-নিষেধ অনুসরণ করে, যারা গতানুগতিকভাবে পূর্বপুরুষের বৃত্তি গ্রহণ করে এবং যারা মনে করে যে তাদের আদি পূর্বপুরুষ একই ব্যক্তি এবং এভাবে যারা এক সুসংহত গোষ্ঠী জীবনে বসবাস করে।' জাতি এবং জাতিভেদ প্রথা কেবলমাত্র ভারতে বসবাসকারী হিন্দুদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় -- ভারতের বাইরে শ্রীলঙ্কায় বসবাসকারী হিন্দুদের মধ্যে, এমনকি ভারতের বাইরে অনেক হিন্দুদের মধ্যেও এই প্রথার প্রচলন আছে। প্রাচীনকালের মিশর জাপান প্রভৃতি দেশেও যে এই প্রথার প্রচলন ছিল, ইতিহাসে তার অনেক নজির পাওয়া যায়। বর্তমানে মাসাইদের মধ্যে, পূর্ব-হর্নের সোমালীদের মধ্যে, পলিনেশীয়দের মধ্যে, বর্মীদের মধ্যে, এমনকি ইউরোপ ও আমেরিকার ইহুদি বিদ্বেষ ও বর্ণবিদ্বেষ মানুষের মধ্যে এই প্রথার প্রচলন আছে। তবে, জাতি ও জাতিভেদ প্রথা বলতে বিশেষ করে ভারতীয়দের এবং আরো বিশেষ করে ভারতে বসবাসকারী হিন্দুদের মধ্যে প্রচলিত সামাজিক শ্রেণীভেদ প্রথাকেই বোঝানো হয়, কেননা ভারতীয় সমাজে এই প্রথা অতিপ্রাচীন এবং সুপ্রাচীন হওয়ায় এই প্রথা ভারতীয় জনজীবনে এক প্রাতিষ্ঠানিক রূপ গ্রহণ করেছে।
       জাত- ব্যবস্থা জন্ম ভিত্তিক। ব্যক্তি যে জাতে জন্মগ্রহণ করে সে জাতির সদস্য হিসেবেই জীবন অতিবাহিত করে। প্রত্যেক জাতভুক্ত ব্যক্তিকে সেই জাতির মধ্যেই বিবাহ করতে হয়। প্রত্যেকটি জাতির একটি পেশা বা বৃত্তি নির্দিষ্ট থাকে।

   সামাজিক শ্রেণী ও জাতি: সামাজিক শ্রেণী ও জাতীয় ক্ষেত্রে উঁচু-নিচু ভাবে স্তর বিভাগ হলেও তাদের মধ্যে পার্থক্য আছে। যথা ----
  
    প্রথমত, সামাজিক শ্রেণী সচল কিন্তু জাতি সাধারণত নিশ্চল। সমাজের নিম্ন স্তর ভুক্ত মানুষ যদি তার দক্ষতা ও যোগ্যতার জন্য অর্থ, বিত্ত ও মান মর্যাদার অধিকারী হয়ে উচ্চস্তর ভুক্ত মানুষের আচার-আচরণ ও জীবনধারা কে অনুসরণ করে, তাহলে সে ক্রমশই উচ্চ স্তরে উন্নীত হয়। তেমনি, উচ্চস্তরের মানুষ যদি তার যোগ্যতার অভাবের জন্য উচ্চস্তরের মানুষের আচার-আচরণ ও জীবনধারন প্রণালীকে অনুসরণ করতে না পারে তাহলে সে নিম্নস্তরে অবনত হয়। কিন্তু জাতিভেদ প্রথার ক্ষেত্রে জাতি-চলাচল, বিশেষ করে নিম্নতর জাতি থেকে উচ্চতর জাতিতে উন্নীত হওয়া সাধারণভাবে সম্ভব হয় না বলে এই প্রথাকে নিশ্চল বলাই সঙ্গত।

    দ্বিতীয়ত,  জাতির ক্ষেত্রে স্বজাতি বিবাহ শাস্ত্রসম্মত, উঁচু জাতির সঙ্গে নিচু জাতির বিবাহ শাস্ত্র নিষিদ্ধ। শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে বিবাহাদি সম্পর্ক স্বজাতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। ব্রাহ্মণ সন্তান যদি শূদ্রের কন্যাকে বিবাহ করে তাহলে শাস্ত্রীয় বিধান অনুসারে তাকে জাতিচ্যুত হতে হয়। সামাজিক শ্রেণীর ক্ষেত্রে এমন কোন শাস্ত্রীয় বিধান নেই। শ্রেণী ব্যবস্থায় উচ্চস্তর ভুক্ত মানুষের নিম্নস্তর ভুক্ত মানুষের সঙ্গে বিবাহাদি সম্পর্ক নিষিদ্ধ নয়।

    তৃতীয়ত, জাতিভেদ বা বর্ণভেদ প্রথার শাস্ত্রীয় বা ধর্মীয় ব্যাখ্যা দেওয়া হলেও সামাজিক শ্রেণীভেদের কেবল ঐতিহাসিক ব্যাখ্যাই দেওয়া হয়। শাস্ত্রমতে, জাতি বা বর্ণ চারটি। যথা-- ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শূদ্র। অপরদিকে, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের ইতিহাসকেই সামাজিক শ্রেণীভেদের কারণরূপে গণ্য করা হয়। সমাজ পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুসারে শ্রমবিভাগ, বৃত্তি বিভাগ, সম্পত্তির বন্টন ইত্যাদি প্রয়োজনীয়রূপে দেখা দেয় এবং শ্রম, বৃত্তি, সম্পত্তি ইত্যাদির পরিমাণ অনুসারে মানুষ কমবেশি সামাজিক ও রাজনৈতিক সুযোগ-সুবিধা লাভ করে। এভাবে, সমাজের ঐতিহাসিক পরিবর্তনের ফলেই  সামাজিক স্তর বিভাগ বা শ্রেণীবিভাগের প্রচলন হয়।
                            <<<<<>>>>>
Read More

Wednesday, 16 May 2018

মাধ্যমিক শিক্ষায় হান্টার কমিশনের সুপারিশ আলোচনা কর।

Leave a Comment
প্রশ্ন:  মাধ্যমিক শিক্ষায় হান্টার কমিশনের (১৯৮২-৮৩) সুপারিশ আলোচনা কর।     ৫ নম্বর
   উঃ
         লর্ড রিপন 1882 খ্রিস্টাব্দে উয়িলিয়াম হান্টারের সভাপতিত্বে যে শিক্ষা কমিশন নিয়োগ করেন সেটি হলো হান্টার কমিশন। এটি ভারতের প্রথম শিক্ষা কমিশন। 

    মাধ্যমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে হান্টার কমিশনের সুপারিশ: মাধ্যমিক শিক্ষা সংক্রান্ত কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলি হলো নিম্নরূপ -

  ১) মাধ্যমিক শিক্ষা পরিচালনায় সরকার সক্রিয় ভূমিকা নেবেন না।

   ২) বেসরকারি উদ্যোগে মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমূহ গড়ে উঠবে।

  ৩) সরকারি অনুদানের সাহায্যে বিদ্যালয়গুলির আর্থিক সংকট মোচন করা হবে।

   ৪) পাঠ্যক্রমের বিভাজনে - A কোর্স ও B কোর্স করতে হবে।

   ৫) নিম্ন মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার মাধ্যম মাতৃভাষা হলেও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার মাধ্যম হবে ইংরেজি।

   ৬) অনুন্নত অঞ্চলে বিদ্যালয় স্থাপনেরও সুপারিশ করেছেন কমিশন।

   ৭) মাধ্যমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
                       <<<<<>>>>>
Read More

Monday, 14 May 2018

রাধাকৃষ্ণন কমিশনের (১৯৪৮) অর্থসংক্রান্ত সুপারিশগুলি কি কি?

Leave a Comment
    প্রশ্ন: রাধাকৃষ্ণন কমিশনের (১৯৪৮) অর্থসংক্রান্ত সুপারিশগুলি কি কি?                              ৫ নম্বর

উ:
        রাধাকৃষ্ণন কমিশনের অর্থসংক্রান্ত সুপারিশ:  কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থসংস্থান সম্পর্কে সুপারিশে বলেছে -

     ১) মহাবিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় এর গৃহনির্মাণের জন্য অর্থ দান করতে হবে।

    ২) মহাবিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যে আসবাবপত্রের প্রয়োজন হবে সেগুলি ক্রয় করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সাজ সরঞ্জাম ক্রয় করতে হবে। আর এই ক্রয়ের জন্য যে অর্থের প্রয়োজন হবে তা রাষ্ট্রকে ব্যয় করতে হবে।

    ৩) মহাবিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যে সমস্ত শিক্ষার্থী দূর থেকে আসে তাদের জন্য ছাত্রাবাস তৈরি করতে হবে এই ছাত্রাবাস তৈরীর জন্য যে খরচ হবে তা রাষ্ট্রকে দিতে হবে।

    ৪) মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষা কর্মীদের বেতন প্রভিডেন্ট ফান্ড ও পেনশন প্রভৃতির জন্য উপযুক্ত সাহায্য দান করতে হবে।

      ৫) উচ্চ শিক্ষায় বিভিন্ন গবেষণামূলক কাজকর্ম হয় এবং এর জন্য যথেষ্ট অর্থের প্রয়োজন হয়। এই অর্থের যোগান রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে।

     ৬) মেধাবী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার জন্য এবং বিদেশে গিয়ে শিক্ষা গ্রহণের জন্য রাষ্ট্রকে অর্থ প্রদান 
করতে হবে।
                                   <<<<<>>>>>
Read More

Sunday, 13 May 2018

মুদালিয়র কমিশন ও কোঠারী কমিশন প্রস্তাবিত পাঠ্যক্রমের পার্থক্য কর

Leave a Comment
    প্রশ্ন: মুদালিয়র কমিশন ও কোঠারি কমিশন প্রস্তাবিত পাঠ্যক্রমের পার্থক্য কর।                ৫ নম্বর

       উত্তর: মুদালিয়র কমিশন ও কোঠারি কমিশন প্রস্তাবিত পাঠ্যক্রমের পার্থক্য:                        

   ১) মুদালিয়র কমিশনের নবম শ্রেণি থেকে বিশেষীকৃত শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অপরদিকে, কোঠারি কমিশনে একাদশ শ্রেণী থেকে বিশেষীকৃত শিক্ষার সংস্থান রয়েছে।

     ২) মুদালিয়র কমিশনে পাঠ্যক্রমে বিষয়গুলিকে মানবীয় বিভাগ, বিজ্ঞান বিভাগ, কারিগরি বিভাগ, কৃষি বিভাগ, বাণিজ্য, চারুকলা বিভাগ ও গার্হস্থ্যবিজ্ঞান বিভাগ - এই সাতটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। অপরদিকে কোঠারী কমিশনে পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত ঐচ্ছিক বিষয়গুলিকে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়নি। শিক্ষার্থীর স্বাধীনভাবে যেকোন বিষয় নির্বাচন করার অধিকার আছে।

     ৩) মুদালিয়র কমিশনে পাঠ্যক্রমের একটি সুনির্দিষ্ট সংগঠিত রূপ রচনা করা হয়েছে। কিন্তু কোঠারি কমিশনে পাঠ্যক্রমের একটি খসড়া কাঠামো ও কতগুলি নীতি প্রস্তাব আকারে উপস্থাপন করা হয়েছে।

    ৪) মুদালিয়ার কমিশনে হস্তশিল্পকে আংশিকভাবে অবশ্যিক করা হয়েছে। কিন্তু কোঠারি কমিশনে কর্ম অভিজ্ঞতাকে সর্বশেষ পর্যায় পর্যন্ত আবশ্যিক করা হয়েছে।

    ৫) কোঠারি কমিশনে সহপাঠ ক্রমিক কার্যাবলীকে সুনির্দিষ্টভাবে স্থাপন করা হয়নি। কিন্তু কোঠারি কমিশনে সমাজসেবা, শারীর শিক্ষা ইত্যাদিতে আবশ্যিক করা হয়েছে।

  ৬) মুদালিয়র কমিশনে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক শিক্ষাকে পাঠক্রমে স্থান দেওয়া হয়নি। কিন্তু কোঠারী কমিশনে নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধের শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
  
                            <<<<<>>>>>

Read More

Saturday, 12 May 2018

পরিণমন বলতে কি বোঝ? পরিণমনের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।

1 comment
পরিণমন বলতে কি বোঝ? পরিণমনের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।
উঃ
     পরিণমন: স্বাভাবিক শারীরিক বৃদ্ধির সঙ্গে যে পরিবর্তন হয় তাকে পরিণমন বলে।
       
       পরিণমন বলতে সেই সব আচরণের পরিবর্তনকে বোঝায় যা কোনো রকম অভিজ্ঞতা বা প্রশিক্ষণ ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে ঘটে এবং যেগুলির জন্য কোন অনুশীলনের দরকার হয়না। যেমন, বিশেষ একটি বয়স হলে শিশুর মাংসপেশী শক্ত হয় এবং সে হাঁটতে শেখে। কিন্তু এই বয়সে তাকে সাইকেল চালানো শেখানো যাবে না। কোন শিখন কৌশল অবলম্বন করেও তা সম্ভব নয়।

    পরিণমনের বৈশিষ্ট্য: পরিণমনে নিম্নলিিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি পরিলক্ষিত হয়়। 

    (১)  বিকাশের প্রক্রিয়া: পরিণমন শিশুর স্বাভাবিক শারীরিক বৃদ্ধির সঙ্গে স্বতঃস্ফূর্তভাবে দেখা দেয়। শিশুর হাঁটা শেখা তার পরিণমনের ফল।

     (২) স্বাভাবিক প্রক্রিয়া: পরিণমনের জন্য অতীত অভিজ্ঞতা বা প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয় না। তাই মনোবিদগণ একে স্বাভাবিক বিকাশের প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচনা করেন। 

    (৩) জৈবিক বিকাশ: পরিনমন মূলত ব্যক্তির জীবনের উপর নির্ভরশীল। ব্যক্তির জৈবিক কেন্দ্রের বিকাশে কোন ত্রুটি থাকলে তার পরিণমনলব্ধ আচরণও ত্রুটিপূর্ণ হয়।

        (৪) অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া: পরিণমন সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া। বাহ্যিক পরিবেশের উপাদানের দ্বারা প্রভাবিত নয়।

         (৫)  দৈহিক ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া: পরিণমন মূলত বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যক্তির দৈহিক ক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করে।

         (৬) সর্বজনীন: প্রতিটি বয়ঃস্তরে  প্রতিটি ব্যক্তির প্রায় একই রকমের পরিণমন ঘটতে দেখা যায়।

           (৭) সীমাবদ্ধ:  মাতৃগর্ভে ভ্রূণ সঞ্চারের সময়ে আরম্ভ হয়ে একটি নির্দিষ্ট সময়ে পরিণমনের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

          

    
Read More

Thursday, 10 May 2018

১। সমাজবিদ্যার (Sociology) প্রশ্ন এবং উত্তর।

1 comment
 প্রশ্ন: সামাজিক গোষ্ঠী বলতে কী বোঝো? এর প্রকৃতি আলোচনা কর। সামাজিক গোষ্ঠীর শ্রেণীবিভাগ কর।
উত্তর:
       সামাজিক গোষ্ঠী এবং তার স্বরূপ: কোন একটি বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সংগবদ্ধ জনসমষ্টিকে সামাজিক গোষ্ঠী বলা হয়। এ প্রসঙ্গে গিসবার্ট বলেন,  সামাজিক গোষ্ঠী হলো জনসমষ্টি, যাঁরা একটি স্বীকৃত সংগঠনের মধ্যে থেকে পরস্পরের উপর কার্য করে। যেমন পরিবার, ক্লাব বা কোন রাজনৈতিক দল ইত্যাদি।

     ম্যাকাইভার ও পেজ এর মতে, "গোষ্ঠী বলতে আমরা বুঝি কোন সামাজিক ব্যক্তির সমষ্টি, যারা পরস্পরের সঙ্গে নির্দিষ্ট সম্পর্কে সম্পর্কযুক্ত।"

       অবশ্য কতগুলি ব্যক্তির সমষ্টি মাত্রকেই গোষ্ঠী বলা যায়না। সমাজবিজ্ঞানের দিক থেকে এই জাতীয় সমষ্টির সঙ্গে কোন দ্রব্যের সমষ্টির তফাৎ নেই; কারণ গোষ্ঠীর সভ্যদের মধ্যে সামাজিক সম্পর্ক নেই।
সামাজিক গোষ্ঠীর কোন প্রকার অস্তিত্ব থাকে না যদি না ব্যক্তিদের পারস্পরিক সম্পর্ক থাকে। সামাজিক গোষ্ঠী আবির্ভাব তখনি হয় যখন সামগ্রীর বিভিন্ন অংশের মধ্যে সুস্পষ্ট সামাজিক সম্পর্ক থাকে এবং কোন একটা স্বীকৃত সংগঠনের মধ্যে থেকে কোনো সাধারণ স্বার্থ বা লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে পরস্পরের উপর কার্য করে। মানসিক, সামাজিক, ঐক্য এবং যান্ত্রিক সমষ্টি থেকে সম্পূর্ণরূপে স্বতন্ত্র হলো সামাজিক গোষ্ঠী।

      সামাজিক গোষ্ঠী এবং সমাজ এক নয়, কারণ যেকোনো সামাজিক গোষ্ঠীই সমাজ নয়। এছাড়া সামাজিক গোষ্ঠী অপেক্ষা সমাজ অনেক কম স্থায়ী।
আবার আপাত গোষ্ঠীকে সামাজিক গোষ্ঠীর সঙ্গে এক করে ফেললে ভুল হবে। আপাত গোষ্ঠীর কোনো স্বীকৃত সংগঠন নেই, কিন্তু সামাজিক গোষ্ঠীর একটি স্বীকৃত সংগঠন আছে। এটা স্বীকার করতেই হয় যে, আপাত গোষ্ঠীর ব্যক্তিদের মধ্যে যথেষ্ট সাদৃশ্য বর্তমান। উদাহরণস্বরূপ, 1 ওই দলের অন্তর্ভুক্ত যেকোনো জনসমষ্টি, যাদের উদ্দেশ্য একসঙ্গে মিলেমিশে হরিনাম করা--কিন্তু এদের নির্দিষ্ট কোন সংগঠন নেই। একই ব্যবসায়ে নিযুক্ত যে জনসমষ্টি, যাদের পেশাগত উদ্দেশ্য এক কিন্তু তাদের কোনো নির্দিষ্ট সংগঠন নেই।
অবশ্য এইসব গোষ্ঠী যদি সংগঠনের মাধ্যমে নিজেকে সংগঠিত করে তবে আপাত গোষ্ঠী সামাজিক গোষ্ঠী তে রূপান্তরিত হয়ে যায়।

           সামাজিক গোষ্ঠী কিভাবে সৃষ্টি হয়?

         এর উত্তরে বলা যায় যে, অনেক সময় ব্যবসায়ীরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে একটি দৃঢ় সংগঠনের দ্বারা নিজেদের দাবিকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করে, এর মাধ্যমেই সামাজিক গোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটে।

    সামাজিক গোষ্ঠীর শ্রেণীবিভাগ: বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে  সামাজিক গোষ্ঠীগুলির শ্রেণীবিভাগ করা হয়। কয়েকটি মুখ্য বিভাগের উল্লেখ করা হলো--

     ১। সদস্যদের পারস্পরিক সম্পর্কের গভীরতার ভিত্তিতে গোষ্ঠীর শ্রেণীবিভাগ: সদস্যদের পারস্পরিক সম্পর্কের গভীরতার ভিত্তিতে সমাজতাত্ত্বিক কুলি দুই প্রকার সামাজিক গোষ্ঠীর উল্লেখ করেছেন। যথা-

   (ক) প্রাথমিক গোষ্ঠী বা মুখ্য গোষ্ঠী: যখন সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক প্রত্যক্ষ এবং গভীর হয় এবং মুখোমুখি সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে অন্তরঙ্গ 'আমরা' অনুভূতির প্রকাশ পায়, তখন তাকে প্রাথমিক গোষ্ঠী বলে।  যেমন - পরিবার।

   (খ) গৌণ গোষ্ঠী বা মাধ্যমিক গোষ্ঠী: গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত সদস্যদের পারস্পরিক সম্পর্ক পরোক্ষ বা গৌণ হলে, তখন তাকে গৌণ গোষ্ঠী বলে। যেমন- রাজনৈতিক দল, ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্ক, বিদ্যালয় ইত্যাদি।

  ২। সদস্যদের অন্তরঙ্গতার ভিত্তিতে গোষ্ঠীর শ্রেণীবিভাগ: গোষ্ঠীর অন্তর্গত সদস্যদের অন্তরঙ্গতার ভিত্তিতে গোষ্ঠীকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

   (ক) অন্তর্গোষ্ঠী: যে গোষ্ঠীতে সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের অন্তরঙ্গতা রয়েছে, সেই গোষ্ঠীকে বলা হয় অন্তর্গোষ্ঠী। যেমন- পরিবার, ছেলেদের অথবা মেয়েদের দল অন্তর্গোষ্ঠী।

      (খ) বহির্গোষ্ঠী: ব্যক্তি যে গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত নয় এবং যে গোষ্ঠী সম্পর্কে সে বিরুদ্ধ মনোভাব পোষণ করে, ব্যক্তির কাছে সেই গোষ্ঠী বহির্গোষ্ঠী। যেমন- এক পরিবারের সদস্যদের কাছে অন্য পরিবার, ছেলেদের দলের কাছে মেয়েদের দল বহির্গোষ্ঠী।

     ৩। স্থায়িত্বের পরিপ্রেক্ষিতে: স্থায়িত্বের স্তর অনুসারে গিসবার্ট চার প্রকার গোষ্ঠীর উল্লেখ করেছেন।  যথা-

          (ক) অস্থায়ী গোষ্ঠী: এই সমস্ত গোষ্ঠী সংগঠনের কথা চিন্তা না করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আবির্ভাব ঘটে। যেমন - রাস্তায় কোনো অঘটন ঘটলে কিছু মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেখানে মিলিত হয় আবার কিছু সময় পরে তারা নিজ নিজ গন্তব্য পথে চলে যায়। এ প্রকার গোষ্ঠীকেই বলা হয় অস্থায়ী গোষ্ঠী।

         (খ) স্বল্পকাল স্থায়ী গোষ্ঠী: সংগঠনের দ্বিতীয় স্তরে দেখা যায় এমন এক গোষ্ঠী যার সদস্যরা পূর্বে থেকে চিন্তা করে দলবদ্ধ হয়। যেমন- ছাত্র সংসদ।

      (গ) দীর্ঘকাল স্থায়ী গোষ্ঠী:  এই গোষ্ঠীর উৎপত্তি সদস্যদের ইচ্ছাধীন নয়, তা নির্ভর করে সদস্যদের মধ্যে সম্পর্কের ওপর। যেমন- শ্রমিক সংসদ, শিক্ষক সমিতি।
(ঘ) চিরস্থায়ী গোষ্ঠী: চতুর্থ স্তরে এক বিশেষ ধরনের গোষ্ঠী দেখা যায় যা চিরস্থায়ী গোষ্ঠী নামে পরিচিত। এদের অস্তিত্ব অঘঠন ছাড়া (যেমন ভূমিকম্প, মহামারী, রাষ্ট্রবিপ্লব ইত্যাদি) বিঘ্নিত হয় না। যেমন- রাস্ট্র, গ্রাম সমাজ ইত্যাদি।

    ৪। কর্মপদ্ধতির পরিপ্রেক্ষিতে: কর্মপদ্ধতির পরিপ্রেক্ষিতে গোষ্ঠীকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

        (ক) বিধিবদ্ধ গোষ্ঠী: গোষ্ঠীর সদস্যরা যখন নির্দিষ্ট বা বিধিবদ্ধ নিয়ম অনুসরণ করে গোষ্ঠী পরিচালিত করে তখন তাকে বিধিবদ্ধ গোষ্ঠী বলে। যেমন- শ্রেণিকক্ষ।

         (খ) অবিধিবদ্ধ গোষ্ঠী: যে গোষ্ঠীতে সদস্যদের উপর গোষ্ঠীর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না এবং সদস্যরা কাজকর্মে ও চিন্তা-ভাবনায় সকল প্রকার স্বাধীনতা ভোগ করে তাকে অবিধিবদ্ধ গোষ্ঠী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যেমন - ফুটবল ক্লাব।


Read More

Monday, 7 May 2018

B. A part 1 Sociology (সমাজবিদ্যা) Suggestion 2018 (University of Gour Banga)

1 comment
SUGGESTION FOR 2018
B.A. part-I (University of Gour Banga)
SOCIOLOGY (General)
 Paper Code- 1- B
[New Syllabus]

Full marks :  100                  Time :   3 Hours

                              বিভাগ - ক

প্রতিটি অংশ থেকে ন্যূনতম একটি করে মোট পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দাও:                                 মান: 15

                                     অংশ -1

১) সমাজতত্ত্বের প্রকৃতি ও পরিধি আলোচনা কর।
২) সমাজতত্ত্বের সঙ্গে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সম্পর্ক আলোচনা কর।
৩) সভ্যতার সংজ্ঞা দাও। সংস্কৃতি ও সভ্যতার পার্থক্য নিরূপণ কর।
৪) সম্প্রদায় বলতে কি বোঝো?  জনসম্প্রদায়ের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।
৫) সামাজিক নিয়ন্ত্রণ বলতে কী বোঝো?  সামাজিক নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন মাধ্যম আলোচনা কর।
৬) সামাজিক দ্বন্দ্ব বলতে কি বোঝ? এর বিভিন্ন ধরন আলোচনা কর।

                                অংশ - 2

৭) পরিবার কাকে বলে?  উদাহরণসহ পরিবারের প্রকারভেদ আলোচনা কর।
৮) সামাজিক স্তরবিন্যাস বলতে কি বোঝ?  সামাজিক স্তরবিন্যাসের বিভিন্ন ধরন আলোচনা কর।
৯) বিবাহের সংজ্ঞা দাও।  উদাহরণসহ বিবাহের নিয়ম গুলি আলোচনা করো।
১০) আত্মীয়তা কাকে বলে? আত্মীয়তার ধরন বা প্রকার লেখ।
১১) সামাজিক পরিবর্তন কাকে বলে?  সামাজিক পরিবর্তনের বিভিন্ন উপাদান বা কারণগুলি আলোচনা কর।
১২) লিঙ্গ বৈষম্য বলতে কি বোঝ? সামাজিক স্তরবিন্যাসের একটি প্রকারভেদ হিসাবে লিঙ্গবৈষম্যের সম্পর্কে  কর।

                                   অংশ - 3

১৩) গ্রামীণ সমাজ কাকে বলে? গ্রামীণ সমাজের মুখ্য বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা কর।
১৪) নগর সমাজ বলতে কি বোঝ? নগর সমাজের বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা কর।
১৫) শিল্প শ্রমিক কাকে বলে? শিল্প শ্রমিক কাকে বলে সংগঠিত ও অসংগঠিত শিল্প শ্রমিকদের পার্থক্য নিরূপণ কর।
১৬) নগরায়ন বলতে কি বোঝ? নগরায়নের প্রকার গুলি আলোচনা করো।
১৭) বিশ্বায়ন কাকে বলে? বিশ্বায়নের প্রকারভেদ আলোচনা কর।

                                বিভাগ - খ

                                  অংশ -1

প্রতিটি অংশ থেকে ন্যূনতম একটি করে মোট 5 টি প্রশ্নের উত্তর দাও :                                    মান : 5

১৮) লোকাচার ও লোক নীতির উপর  সংখিপ্ত টীকা লেখ।
১৯) দ্বন্দ্বের সামাজিক ভূমিকা আলোচনা কর।
২০) সামাজিক নিয়ন্ত্রণের বিধিবদ্ধ মাধ্যম গুলি আলোচনা করো।
২১)  প্রতিষ্ঠান ও সংঘের মধ্যে পার্থক্য রচনা কর।
২২) সমাজতত্ত্ব ও নৃতত্ত্বের মধ্যে পার্থক্য আলোচনা কর।
২৩) সমাজতত্ত্ব ও দর্শনের সম্পর্ক আলোচনা কর।
২৪) সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতার মধ্যে পার্থক্য লেখ।

                                   অংশ - 2

২৫) পরিবারের কার্যাবলী আলোচনা কর।
২৬) উদাহরণসহ বিবাহের প্রকারভেদ আলোচনা কর।
২৭) একক পরিবার ও যৌথ পরিবার কাকে বলে?
২৮) গোত্র কাকে বলে? এর প্রকারভেদ গুলি কি কি?
২৯) 'সামাজিক বিবর্তন এবং প্রগতি বা উন্নতি' - এই ধারণা দুটির ব্যাখ্যা কর।
৩০) জাতির মুখ্য বৈশিষ্ট্যগুলি লেখ।

                               অংশ - 3

৩১) গ্রামীণ সমাজ ও নগর সমাজের পার্থক্য নিরূপণ কর।
৩২) ভারতীয় শিক্ষাক্ষেত্রে উদারীকরণের প্রভাব সংক্ষেপে আলোচনা কর।
৩৩) ভারতে গ্রামীণ সমাজে গ্ৰামউন্নয়নের কর্মসূচির প্রভাবের মূল্যায়ন আলোচনা কর।
৩৪) ভারতীয় নগর সমাজে মিউনিসিপ্যালিটির ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।
৩৫) শিল্প সামাজের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর
৩৬) নগর সমাজের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর।
৩৭) জাতীয় শ্রেণীর পারস্পরিক সম্পর্ক আলোচনা কর।

বি: দ্র: [পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে  প্রতিটি অংশে  তিনটি করে প্রশ্ন থাকে।]
                          <<<<<<>>>>>>
Read More