Sunday, 13 December 2020

ব্যাপ্তি কাকে বলে? কিভাবে নৈয়ায়িকগণ ব্যাপ্তি প্রমাণ করেন? (What is Vyapti? What is the Naya method of establishing it?)

2 comments

                             ন্যায় দর্শন

প্রশ্ন:  ব্যাপ্তি কাকে বলে? কিভাবে নৈয়ায়িকগণ ব্যাপ্তি প্রমাণ করেন? (What is Vyapti? What is the Naya method of establishing it?)

উঃ

ব্যাপ্তি: হেতু ও সাধ্যের মধ্যে নিয়ত অব্যভিচারী অনৌপাধিক সহচার সম্বন্ধকে ব্যাপ্তি বলা হয়। অন্নভট্ট তাঁর ‘তর্ক সংগ্রহ' গ্রন্থে ব্যাপ্তি সম্পর্কে বলেছেন— “যত্র ধূমঃ তত্র অগ্নি ইতি সাহচৰ্য্য নিয়মঃ ব্যাপ্তি।” অর্থাৎ যেখানেই ধূম সেখানেই বহ্নি, এই যে ধূমের সঙ্গে বহ্নির সাহচর্য বা সহ - অবস্থান, তার নিয়মই ব্যাপ্তি। ধুম (হেতু) ও বহ্নি (সাধ্য) -র মধ্যে এই ব্যাপ্তি সম্বন্ধে (ক) ধূম ও বহ্নি সহচার সম্বন্ধে আবদ্ধ, অর্থাৎ ধূম ও বহ্নি একসঙ্গে সহাবস্থান করে, (খ) ধূম ও বহ্নির মধ্যে অব্যভিচারী সম্বন্ধ আছে, অর্থাৎ ধূম আছে অথচ, বহ্নি নেই, এরকম হতে পারে না এবং  গ) ধূম ও বহ্নির মধ্যে অনৌপাধিক সম্বন্ধ বিদ্যমান, অর্থাৎ উভয়ের সম্বন্ধ কোন শর্ত - নির্ভর নয়। ব্যাপক অর্থে ব্যাপ্তি হলেও বােঝায় যে কোন দুটি বিষয়ের নিয়ত সাহচর্য। সংকীর্ণ অর্থে ব্যাপ্তি বলতে বােঝায় হেতু ও সাধ্যের নিয়ত সাহচর্য সম্পর্ক।

        ব্যাপ্তির প্রকার: ব্যাপ্তি দু'প্রকার — (১) সমব্যাপ্তি ; (২) অসমব্যাপ্তি বা বিষয়ব্যাপ্তি ।

      (১) সমব্যাপ্তি : সমব্যাপক দুটি পদের ব্যাপ্তিকে সমব্যাপ্তি বলা হয়। এখানে ব্যাপক ও ব্যাপ্য-র বিস্তৃতি সমান হয়। যেমন, 'যার উৎপত্তি আছে, তার বিনাশ আছে'। উৎপত্তি হওয়া বস্ত্ত ও বিনাশ হওয়া বস্তুর বিস্তৃতি সমান। উৎপত্তিশীল ও বিনাশশীল সমব্যাপ্তি - বিশিষ্ট।

(২) অসমব্যপ্তি বা বিষমব্যাপ্তি: অসমব্যাপক দুটি পদের ব্যাপ্তিকে অসমব্যাপ্তি বলা হয়। এখানে ব্যাপক ও ব্যাপ্য-র বিস্তৃতি সমান নয়। যেমন, যেখানে ধূম আছে, সেখানে বহ্নি আছে। ধূম ও বহির বিস্তৃতি সমান নয়। ধূম থাকলে বহ্নি থাকবেই। কিন্তু যেখানে বহ্নি, সেখানে সব সময় ধূম নাও থাকতে পারে। তাহলেই বহ্নির বিস্তৃতি ধূমের চেয়ে ব্যাপক। তাই দুটি পদের ব্যাপকতা যেখানে ভিন্ন, এই ব্যাপ্তি হল অসমব্যাপ্তি বা বিষয়ব্যাপ্তি।

       সাধারণত নৈয়ায়িকগণ নিম্নলিখিত উপায়ে ব্যাপ্তি নির্ণয় করেন ।

     (১) অন্বয়: দুটি বস্তুর একটি থাকলে অপরটি থাকে লক্ষ্য করা যায়। যেমন, 'যেখানে ধূম, সেখানে বহ্নি'। দুটি বস্তুর একসঙ্গে উপস্থিতি হল অন্বয়। 

    (২) ব্যতিরেকঃ দুটি বস্তুর একটি যদি না থাকে, অপরটি থাকে না। যেমন, যেখানে বহ্নি নেই, সেখানে ধূম নেই। দুটি বস্তুর একসঙ্গে অনুপস্থিতি হল ব্যতিরেক। অন্বয় ও ব্যতিরেক - এর দিক থেকে দুটি বস্তুর মধ্যে সাহচর্য থাকা দরকার, তা না  হলে দুটি বস্তুর মধ্যে ব্যাপ্তি নির্ণয় করা সম্ভব নয়।

    (৩) ব্যভিচারাগ্ৰহ: ব্যাপ্তি নির্ণয় প্রণালীর তৃতীয় স্তরে আমরা ব্যভিচারাগ্রহ পাই, যখন কোন বিপরীত দৃষ্টান্ত প্রত্যক্ষ করি না। অন্বয় ও ব্যতিরেক - এর দ্বারা যে দুই বস্তুর মধ্যে নিয়মিত সহচার সম্বন্ধ আছে মনে করা হয়, সেক্ষেত্রে এমন কোন ব্যভিচার (ব্যতিক্রম - দর্শন) হবে না, সেক্ষেত্রে একটি বস্তু উপস্থিত আছে, অথচ অন্য বস্তু অনুপস্থিত থাকে। দুটি বস্তুর একটি আছে, অথচ অপরটি নেই, এমন কোন দৃষ্টান্ত দেখা যায় না। যেমন, ধূম আছে, অথচ বহ্নি নেই, এমন কোন দৃষ্টান্তের নজির নেই। একে ব্যভিচারাগ্রহ (ব্যভিচার মানে বিপরীত দৃষ্টান্ত; অগ্ৰহ মানে অদর্শন) বলা হয়। এই স্তর অবধি দেখে আমরা ভাবতে পারি যে, ধূম ও বহ্নির ব্যাপ্তি সম্বন্ধ আছে। কিন্তু এই সম্বন্ধ অনৌপাধিক না উপাধিযুক্ত দেখা দরকার, কেননা উপাধিযুক্ত সম্বন্ধকে ব্যাপ্তি বলা যায় না।

     (৪) উপাধিনিরাস : উপরােক্ত তিনটি পদ্ধতি অবলম্বন করেও নিশ্চিত হওয়া যায় না যে, ব্যাপ্তি - সম্বন্ধটি কোন উপাধি বা শর্ত থেকে মুক্ত কিনা। তাই সম্বন্ধটি যে অনৌপাধিক বা শর্তশূন্য এবিষয়ে আমরা স্থির হতে চাই। সেজন্য আমরা উপাধি নিরাস করতে অগ্রসর হই। 'উপাধি' শব্দটির অর্থ শর্ত এবং 'নিরাস’ শব্দটির অর্থ অপসারণ করা। নৈয়ায়িকগণ মনে করেন, ব্যাপ্তিসম্বন্ধ হল উপাধিহীন বা শর্তহীন সম্বন্ধ। তাই নৈয়ায়িকগণ বলেন, আমাদের প্রত্যক্ষিত বিষয় দুটির মধ্যে উপাধিহীন সম্বন্ধ আছে কিনা তা জানার জন্য ভুয়ােদর্শন প্রয়ােজন। একটির উপস্থিতিতে আর একটি উপস্থিত আছে এবং একটির অনুপস্থিতিতে আর একটি  অনুপস্থিত আছে — এ সম্বন্ধ বারবার প্রত্যক্ষ করার নাম ভূয়ােদর্শন। যদি বার বার দেখা যায়, ধূম থাকলেই বহ্নি থাকে এবং বহ্নি না থাকলে ধূম থাকে না, তখন আমরা মনে করি - ধূমের সঙ্গে বহ্নির যে সম্পর্ক তা হল উপাধি বা শর্তশূন্য । 

উপাধিনিরসন পদ্ধতির সাহায্যে ব্যাপ্তি নির্ণয় সত্ত্বেও সংশয়বাদীরা সংশয় প্রকাশ করতে পারেন এবং বলতে পারেন যে, ভবিষ্যতে এই নিয়ত সম্পর্কের ব্যতিক্রম হতে পারে। তাই সংশয়বাদীদের সন্দেহ ভঞ্জন করার জন্য নৈয়ায়িকগণ তর্ক ও সামান্যলক্ষণ প্রক্রিয়ার ব্যবহার করেছেন। 

       (৫) তর্ক: ব্যাপ্তি - সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠার জন্য নৈয়ায়িকগণ তর্কের সাহায্য গ্রহণ করেন। তর্ক হল এমন এক পদ্ধতি যার দ্বারা মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ের বিরুদ্ধ বচনকে  অসত্য প্রমাণ করে মূল বাক্যের সত্যতা প্রতিষ্ঠা করা হয়। 'সকল ধূমবান বস্তুই বহ্নিমান’ – যদি এই বচনটি সত্য না হয়, তাহলে এর বিরুদ্ধ বচন ‘কোন কোন ধূমবান বস্তু বহ্নিমান নয়’– নিশ্চয়ই সত্য হবে। তা যদি হয়, তাহলে বহ্নি বা আগুন ছাড়াও ধূম উৎপন্ন হবে। কিন্তু এরূপ অনুমান সর্বজনস্বীকৃত কার্যকারণ - নীতির বিরােধী। কেননা, বহ্নি ছাড়া ধূমের অন্য কোন কারণ আমাদের জানা নেই। যদি বহ্নি ছাড়া ধূম উৎপন্ন হয়, তাহলে তার তাৎপর্য হবে — কারণ ছাড়াই কার্য ঘটতে পারে। কিন্তু এরূপ বক্তব্য কোন মানুষের কাছেই গ্রহণযােগ্য নয়। কাজেই ‘কোন কোন ধূমবান বস্তু বহ্নিমান নয়’ - এই বচনটি অসত্য বলে এর বিরুদ্ধ বচন, অর্থাৎ , মূল ব্যাপ্তি বচন 'সকল ধূমবান বস্তুই বহ্নিমান' - সত্য বলে স্বীকৃত হবে।

     (৬) সামান্য লক্ষণ প্রত্যক্ষ:  ব্যাপ্তিজ্ঞানের সমস্তু সংশয় দূর করার জন্য নৈয়ায়িকেরা সর্বশেষে সামান্যলক্ষণ প্রত্যক্ষের কথা বলেছেন। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে যখন আমরা ধূমের সঙ্গে বহ্নির সম্পর্ক প্রত্যক্ষ করি, তখন আমরা ধূমের সামান্যধর্ম ধূমত্বকে এবং বহ্নির সামান্যধর্ম বহ্নিত্বকে প্রত্যক্ষ করি; এবং সেই সময় ধূমত্বের সঙ্গে বহ্নিত্বের সম্পর্কও প্রত্যক্ষ করে থাকি। 'বিশেষ’ - এর মধ্যে সামান্য বা জাতিধর্মকে অলৌকিকভাবে প্রত্যক্ষ করার নাম সামান্য - লক্ষণ প্রত্যক্ষ। ধূমত্ব এবং বহ্নিত্বের মাধ্যমে আমাদের সমস্ত ধূম এবং সমস্ত বহ্নির প্রত্যক্ষ হয় বলে আমরা 'সকল ধূমবান বস্তুই বহ্নিমান ’ -- এরূপ ব্যাপ্তি - জ্ঞানবাক সামান্য বচন প্রতিষ্ঠা করতে পারি। কাজেই দুটি জিনিষের অব্যভিচারী নিয়ত অনৌপাধিক সম্পর্ক বা ব্যাপ্তি নিশ্চিতভাবে স্থাপন করতে হলে দুটি জিনিসের সহচার সম্পর্কের কয়েকটি দৃষ্টান্ত দেখলেই চলবে না, এই দৃষ্টান্তের মধ্য থেকে দুটি জিনিসের সামান্যও প্রত্যক্ষ করতে হবে।

 

Read More

বৈশেষিক মতে, অভাব কি? অভাব কয় প্রকার? অভাবকে কি ভাবে জানা যায় ? ( What is Abhava according to to Vaisesika? What are its different kinds? How Abhava is known?) Philosophy

1 comment

                            বৈশেষিক দর্শন

     প্রশ্ন: বৈশেষিক মতে, অভাব কি? অভাব কয় প্রকার? অভাবকে কি ভাবে জানা যায় ? ( What is Abhava according to to Vaisesika? What are its different kinds? How Abhava is known?)

উঃ

      অভাব: অভাব মানে কোন কিছু নেই। যার অস্তিত্ব নেই, তাই অভাব। কোন কিছু নেই এটা তাে অস্বীকার করা যায় না। দিনের আকাশে তারা নেই, অমাবস্যায় চাদ নেই, গরমকালে শীত নেই: —কোন - না - কোন কিছুর অভাব কোনা কোন সময় বােঝা যায়ই। তাই অভাবকে না মেনে উপায় নেই। শীতের বেলায় গাছের শাখার দিকে তাকিয়ে ডালগুলি আছে বুঝি কিন্তু পাতার অভাব তাে অস্বীকার করা যায় না। তাই ভাবপদার্থ যেমন আছে অভাবকেও পদার্থ হিসাবে স্বীকার করতেই হয়।

        অভাবের প্রকার: অভাব দু'প্রকার, যথা — সংসৰ্গাভাব ও অন্যোন্যাভাব।

        সংসৰ্গাভাব: সংসৰ্গাভাব বলতে কোন বস্তুতে অন্য বস্তুর অভাব বােঝায়। যেমন, 'কলসীতে জল নেই' — এখানে কলসীতে জলের অভাব রয়েছে বা কলসীর সঙ্গে জলের সংসর্গের অভাব প্রকাশ পাচ্ছে।

      অন্যোন্যাভাব: অন্যোন্যাভাব বলতে এক বস্তু আর এক বস্তু নয় ( ক — খ নয় ) বােঝায়। অন্যোন্যাভাব হল দুটি স্বতন্ত্র বস্তুর মধ্যে অভিন্নতার অভাব। যেমন , হাতি - ঘােড়া নয়, চেয়ার - টেবিল নয়। 

সংসর্গাভাব তিন প্রকার— (ক) প্রাগভাব, (খ) ধ্বংসাভাব ও (গ) অত্যন্তাভাব ।

        (ক) প্রাগভাব: প্রাক বা পূর্ববর্তী অভাবই প্রাগভাব। কোন বস্তু সৃষ্ট বা উৎপন্ন হওয়ার পূর্বে বস্তুর যে অভাব থাকে, তাই প্রাগভাব। যেমন — সিমেন্ট, বালি, ইট, লােহা দিয়ে পাকাবাড়ি তৈরি হবে। সুতরাং এখন পাকাবাড়ি নেই। নির্মিত হওয়ার  পূর্বে সিমেন্ট, বালি, ইট, লােহার মধ্যে পাকাবাড়ির যে অভাব আছে, তাই হল প্রাগভাব। প্রাগভাবের আদি নেই, অথচ অন্ত আছে। পাকাবাড়ি নির্মিত হওয়ার পূর্বে উপরিউক্ত উপাদানের মধ্যে পাকাবাড়ির অস্তিত্ব ছিল না। পাকাবাড়ি নির্মিত হওয়ার পূর্বে পাকাবাড়ির অভাবের কোন আদি নেই। কিন্তু যেই বাড়িটি নির্মিত হল, সেই মুহূর্তে পাকাবাড়ির প্রাগভাব লােপ পেয়ে গেল, তাই প্রাগভাবের অন্ত বা শেষ আছে।

       (খ) ধ্বংসাভাব  ঃ  উৎপন্ন হওয়ার পর কোন বস্তু ধ্বংস হয়ে গেলে তার যে অভাব, তাই ধ্বংসাভাব। একটি মাটির কলসী ভেঙে গেলে কলসীটির ধ্বংসাভাব ঘটে। কলসীটি ভেঙে গিয়ে টুকরোগুলি ছিটিয়ে ছড়িয়ে থাকে। কিন্তু টুকরােগুলির মধ্যে কলসী নেই। ধ্বংসাভাবের যদিও আদি আছে, তবু অন্ত নেই । কলসীটি কোন এক সময়ে ধ্বংস হয়েছে, তাই কলসীটির উৎপত্তির আরম্ভ বা আদি আছে। কিন্তু কলসীটির অন্ত নেই, কেননা সেই কলসীটি আর তৈরি করা যাবে, যেটি ভেঙে গেল। যদিও একই রকম আর একটি নতুন মাটির কলসী তৈরি করা যায়, কিন্তু যে মাটির কলসী ভেঙে গেল, ঠিক সেই কলসীটিকে তৈরি করা সম্ভব নয়। বস্তুর ধ্বংসজনিত অভাব রয়ে যায়, ধ্বংসাভাবের অন্ত বা শেষ নেই। 

(গ) অত্যন্তাভাবঃ কোন একটি বস্তুতে অন্য একটি বস্তুর চিরকালের অভাবকে অত্যন্তাভাব বলা হয়। অত্যন্তভাব ত্ৰৈকালিক বা তিন কালের অভাব - অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতেও থাকে। অত্যন্তভাব অনাদি ও অনন্ত অর্থাৎ এই অভাবের আদি বা আরম্ভ নেই , অন্ত বা শেষ নেই। যেমন, বায়ুতে বর্ণের অভাব অত্যন্তভাব , যা তিন কালেই থাকে । খরগােশে শিঙের অভাব চিরকালের। ঘটেতে চেতনার অভাব চিরদিনের। 

       অনন্যান্যাভাব :  দুই বস্তুর পারস্পরিক ভেদ বা ভিন্নতাই অন্যোন্যাভাব । যেমন, ঘট পট নয়। ঘটের মধ্যে পটের রূপ থাকতে পারে না। অন্যোন্যাভাব হল ঘটে পটের অভাব, পটে ঘটের অভাব। সংসৰ্গাভাব বলতে বােঝায় দুই বস্তুর মধ্যে সংযােগের অভাব, অন্যোন্যাভাব বলতে বােঝায় দুই বস্তুর মধ্যে অভিন্নতার অভাব। অন্যোন্যাভাব নিত্য। অন্যোন্যাভাবের আদি নেই, অন্তও নেই। 

        অভাবকে কিভাবে জানা যায়? :  অভাব বিষয়ক একটি সুচিন্তিত প্রশ্ন : অভাবকে কিভাবে জানা যায়? ন্যায় - বৈশেষিকগণ এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন যে, প্রত্যক্ষে দ্বারাই অভাবকে জানা যায় । তর্ক সংগ্রহে অন্নমভট্ট এরকম বক্তব্য রেখেছে যে, অভাবের প্রত্যক্ষ বহু সময় যে কোন একটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ — ভূতলে ঘটাভাব প্রত্যক্ষ করছি, এই প্রত্যক্ষ কোন সন্নিকর্য নির্ভরশীল। এখন মনে হতে পারে, সন্নিকর্যটি কি যার উপর অভাব - জ্ঞানের নির্ভরতা? ন্যায় - বৈশেষিকগণ এর উত্তর দিয়েছেন এভাবে যে, ‘বিশেষণ - বিশেষ্য - ভাব' হল ঐ সন্নিকর্ষ। ভূতলে ঘটাভাব প্রত্যক্ষ করার সময় ভূতলের সঙ্গে চক্ষু - ইন্দ্রিয় সংযুক্ত হয়, যে ভূতল ঘটাভাবের দ্বারা বিশেষিত। সুতরাং চক্ষু - ইন্দ্রিয় ও ঘটাভাবের মধ্যে সম্পর্ককে ‘যার সঙ্গে সংযুক্ত তার বিশেষণতা' বলা হয়। এই বিশেষণতাই হল 'সংযুক্ত বিশেষণতা'।

        ‘ভূতলে ঘটাভাব' — এখানে ভূতল ‘বিশেয্য' এবং ঘটাভাব ‘বিশেষণ'। সুতরাং ভূতলে  ঘটাভাব প্রত্যক্ষ করার বিষয়ে উভয়ের সম্বন্ধ হল ‘বিশেষণ - বিশেষ্য - ভাব'। অভাব প্রত্যক্ষের ক্ষেত্রে ন্যায় - বৈশেষিকগণ এইভাবে ‘বিশেষণতা’ নামক যষ্ঠ প্রকার সন্নিকর্যের স্বীকৃতি দিয়ে বক্তব্য রাখলেন যে, অভাব জ্ঞানের উৎস হল প্রত্যক্ষ বা অভাবকে প্রত্যক্ষের দ্বারাই জানা যায়। 

        ভাট্ট মীমাংসকগণ উপরিউক্ত মতের বিরােধিতা করে বলেছেন যে, প্রত্যক্ত অভাবের জ্ঞানে প্রমাণস্বরূপ নয় বা অভাব কখনও প্রত্যক্ষের বিষয় নয়। এর কারণ হল: প্রত্যক্ষের ক্ষেত্রে বিষয়বস্তুর সঙ্গে ইন্দ্রিয় - সন্নিকর্ষ নিশ্চিতভাবে ঘটে, কিন্তু কোন অভাবের সঙ্গে ইন্দ্রিয় - সন্নিকর্ষ  বা সংযােগ ঘটে না । ভাট্ট মতে, অভাবকে জানা গেলেও অভাব জ্ঞানের উৎস হল অনুপলব্ধি। যখন আমরা বিছানার উপর বালিশের অভাবের কথা বলি, তখন আমরা কেবল বিছানাই প্রত্যক্ষ করি, বালিশ প্রত্যক্ষ করি না। কাজেই বালিশের অভাব হল অনুপলব্ধির বিষয়। অবশ্য এই অনুপলব্ধিকে যােগ্য হতে হবে, তা না হলে প্রমাণরূপে ধার্য হবে না। ভাট্ট মতে, শুধুমাত্র যােগ্যানুপলব্ধিই হল অভাব জ্ঞানের প্রমাণস্বরূপ। 

        ন্যায় বৈশেষিক দার্শনিকগণ যােগ্যানুপলব্ধিকে স্বীকার করেন। অনুপলব্ধি অভাব জ্ঞানের ক্ষেত্রে সহায়ক হলেও যে আধারের মধ্যে কোন বিষয়ের অভাব নিহিত, সেই আধার বা আশ্রয়ের সঙ্গে আমাদের ইন্দ্রিয় - সন্নিকর্য নিশ্চিতভাবে বর্তমান থাকে। সুতরাং অভাব জ্ঞানের মধ্যে ইন্দ্রিয়ের সংযােগ অপরিহার্য বলেই ইন্দ্রিয়ই অভাবের মুখ্য প্রমাণ-স্বরূপ। অবশ্য ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে যােগ্যানুপলব্ধির সহকারিত্ব অভাব - জ্ঞানের জন্য নিশ্চয়ই থাকবে। কাজেই ন্যায় - বৈশেষিক মতে, অভাব প্রত্যক্ষের বিষয় অর্থাৎ প্রত্যক্ষের সাহায্যেই অভাবকে জানা যায়। 

Read More

Saturday, 12 December 2020

নিরপেক্ষ ন্যায়ের বৈধতা বিচারের 47 টি উদাহরণ (HS Philosophy)

2 comments

 Class xii (wbchse)

 নিরপেক্ষ ন্যায় 

বৈধতা বিচার কর: (মান - ৪)

) প্রত্যেক ধার্মিক ব্যক্তি সুখী এবং সব অধ্যাপক হয় সুখী কাজেই সব অধ্যাপক ধার্মিক হয়।

উঃ

যৌক্তিক আকার-

A— সকল ধার্মিক ব্যক্তি হয় সুখী ব্যক্তি ।

A- সকল অধ্যাপক হয় সুখী ব্যক্তি । 

: . A— সকল অধ্যাপক হয় ধার্মিক ব্যক্তি । 

দোষ: অব্যাপ্য হেতু দোষ।

 বিচার : এই যুক্তিটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট  হয়েছে। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে হেতুপদকে দুটি আশ্রয়বাক্যের মধ্যে অন্তত একবার ব্যাপ্য হতেই হবে। কিন্তু উক্ত যুক্তিতে হেতুপদটি (সুখী ব্যক্তি) প্রধান আশ্রয়বাক্য এবং অপ্রধান আশ্রয়বাক্য উভয় ক্ষেত্রেই 'A' বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় অব্যাপ্য হয়েছে। ফলে যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট।

২) লােকটি নিশ্চয়ই বৃদ্ধ, কারণ সে বৃদ্ধদের মতােই দুর্বল। 

উঃ

 তর্কবিদ্যাসম্মত আকার হবে—

 A— সকল বৃদ্ধ হয় দুর্বল ব্যক্তি। 

 A- লােকটি হয় দুর্বল ব্যক্তি। 

 : . A লােকটি হয় বৃদ্ধ 

দোষ: অব্যাপ্য হেতুদোষ।  

বিচার : এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট  হয়েছে। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে হেতুপদকে দুটি আশ্রয়বাক্যের মধ্যে অন্তত একবার ব্যাপ্য হতেই হবে। কিন্তু উক্ত যুক্তিতে হেতুপদটি (দুর্বল ব্যক্তি) প্রধান আশ্রয়বাক্য এবং অপ্রধান আশ্রয়বাক্য উভয় ক্ষেত্রেই 'A' বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় অব্যাপ্য হয়েছে। ফলে যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট।


৩) সে সুখী, সুতরাং সে ধার্মিক। 

উঃ

তর্কবিদ্যাম্মত আকার— 

A— সকল  সুখী ব্যক্তি হয় ধার্মিক ব্যক্তি। 

 A— সে হয় সুখী ব্যক্তি। 

 : . A— সে হয় ধার্মিক ব্যক্তি।   

দোষ: ×

বিচার: এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি বৈধ। কেননা, এখানে ন্যায় অনুমানের বৈধতার দশটি নিয়ম যথাযথভাবে পালিত হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি প্রথম সংস্থানের শুদ্ধ মূর্তি AAA, নাম– BARBARA ।

৪) সব দার্শনিক উদারব্যক্তি এবং সব দার্শনিক বুদ্ধিমান। সুতরাং, সব বুদ্ধিমান ব্যক্তিই উদার।

উঃ

 উক্ত যুক্তিটির তর্কবিজ্ঞানসম্মত আকার হবে—

 A— সকল দার্শনিক হয় উদার ব্যক্তি। 

A— সকল দার্শনিক হয় বুদ্ধিমান ব্যক্তি।

: . A— সকল বুদ্ধিমান ব্যক্তি হয় উদার ব্যক্তি। 

দোষ:  অবৈধ পক্ষদোষ 

 বিচার: এটি ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অবৈধ পক্ষদোষে দুষ্ট। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। আলােচ্য যুক্তিতে পক্ষপদটি (বুদ্ধিমান ব্যক্তি) অপ্রধান আশ্রয়বাক্যে A বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি কিন্তু ওই পক্ষপদটি সিদ্ধান্তে A বচনের উদ্দেশ্য স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়েছে।  কাজেই যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট।


৫) ড. রাধাকৃষণ ভারতের রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং তিনি দর্শনের অধ্যাপক ছিলেন। অতএব দর্শনের সকল অধ্যাপকই রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত হবেন। 

উঃ

অনুমানটির যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার হবে—

 A— ড . রাধাকৃষণ হন এমন ব্যক্তি যিনি ভারতের রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন । 

A— ড . রাধাকৃয়ণ হন দর্শনের অধ্যাপক । 

 : . A— সকল দর্শনের অধ্যাপক হন এমন ব্যক্তি যারা ভারতের রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত হবেন । 

দোষ: অবৈধ পক্ষদোষ।

বিচার: এটি ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অবৈধ পক্ষদোষে দুষ্ট। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। আলােচ্য যুক্তিতে পক্ষপদটি (দর্শনের অধ্যাপক) অপ্রধান আশ্রয়বাক্যে A বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি কিন্তু ওই পক্ষপদটি সিদ্ধান্তে A বচনের উদ্দেশ্য স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়েছে।  কাজেই যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। যুক্তিটির মূর্তি— AAA , সংস্থান — তৃতীয়। 


 ৬) কোনাে ডানাযুক্ত প্রাণী ঘােড়া নয় এবং ঘােড়া মাত্রই চতুষ্পদ। সুতরাং, কোনাে চতুষ্পদ প্রাণী ডানাযুক্ত নয়। 

উঃ

অনুমানটির যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার হবে— 

E- কোনাে ডানাযুক্ত প্রাণী নয় ঘােড়া। 

A— সকল ঘােড়া হয় চতুষ্পদ প্রাণী । 

: . E- কোনাে চতুষ্পদ প্রাণী নয় ডানাযুক্ত প্রাণী।

 দোষ: অবৈধ পক্ষদোষ।

বিচার: এটি ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অবৈধ পক্ষদোষে দুষ্ট। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। আলােচ্য যুক্তিতে পক্ষপদটি (চতুষ্পদ প্রাণী) অপ্রধান আশ্রয়বাক্যে A বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি কিন্তু ওই পক্ষপদটি সিদ্ধান্তে E বচনের উদ্দেশ্য স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়েছে।  কাজেই যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। যুক্তিটির মূর্তি— EAE, সংস্থান — চতুর্থ। 


 ৭) সকল মা তার ছেলেকে ভালােবাসেন। সকল ছেলে খেলতে ভালােবাসে। অতএব সকল মা খেলতে ভালােবাসেন। 

উঃ

যৌক্তিক আকার— 

A- সকল ছেলে হয় এমন ব্যক্তি যারা খেলতে ভালােবাসে।

A- সকল মা হয় এমন ব্যক্তি যারা তাদের ছেলেকে ভালােবাসেন। 

 : . A- সকল মা হয় এমন ব্যক্তি যারা খেলতে ভালােবাসে।

দোষ: চারিপদঘটিত দোষ।

বিচার: এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়ের নিয়ম অনুসারে প্রতিটি ন্যায় অনুমানে তিনটি পদ থাকবে, তার কম বা বেশি নয়। অথচ আলোচ্য যুক্তিতে চারটি পদ রয়েছে পদগুলি হল-- (১) মা, (২) ব্যক্তি যারা খেলতে ভালােবাসে, (৩) ব্যক্তি যারা তাদের ছেলেকে ভালােবাসেন এবং (৪) ছেলে। কাজেই যুক্তিটি অবৈধ এবং চারিপদঘটিত দোষে দুষ্ট। মূর্তি— AAA সংস্থান — প্রথম।

৮) তুমি স্নাতক নও, সুতরাং তুমি এ পদের প্রার্থী হতে পারাে না। 

উঃ

যৌক্তিক আকার- 

A- সকল স্নাতক হয় এ পদের প্রার্থী (হওয়ার যােগ্য ব্যক্তি।)

 E- তুমি নও স্নাতক।

: . E- তুমি নও এ পদের প্রার্থী (হওয়ার যােগ্য ব্যক্তি।)

দোষ: অবৈধ সাধ্যদোষ।

বিচার: এটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। কিন্তু দৃষ্টান্তে সাধ্যপদ (এ পদের প্রার্থী হওয়ার যোগ্য ব্যক্তি) প্রধান  আশ্রয়বাক্যে A বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি। অথচ সিদ্ধান্ত E বচনের বিধেয় স্থানে হাওয়ায় ব্যাপ্য হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি বৈধতার নিয়ম লঙ্ঘন করায় অবৈধ সাধ্যদোষে দুষ্ট হয়েছে। যুক্তিটির মূর্তি-- AEE, সংস্থান-- প্রথম।


৯) সেনাপতি সৈন্যবাহিনীকে পরিচালনা করে, সেনাপতির স্ত্রী সেনাপতিকে পরিচালনা করেন। অতএব সেনাপতির স্ত্রী সেনাবাহিনীকে পরিচালনা করেন। 

উঃ

তর্কবিজ্ঞানসম্মত আকার -

A- সেনাপতি হন এমন ব্যক্তি যিনি সৈন্যবাহিনীকে পরিচালনা করেন।

 A- সেনাপতির স্ত্রী হন এমন ব্যক্তি যিনি সেনাপতিকে পরিচালনা করেন। 

 : . A- সেনাপতির স্ত্রী হন এমন ব্যক্তি যিনি সৈন্যবাহিনীকে পরিচালনা করেন।

দোষ: চারিপদঘটিত দোষ।

 বিচার— এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়ের নিয়ম অনুসারে প্রতিটি ন্যায় অনুমানে তিনটি পদ থাকবে, তার কম বা বেশি নয়। অথচ আলোচ্য যুক্তিতে চারটি পদ রয়েছে পদগুলি হল-- (১)  সেনাপতির স্ত্রী, (২) ব্যক্তি যিনি সৈন্যবাহিনীকে পরিচালনা করেন, (৩) ব্যক্তি যিনি সেনাপতিকে পরিচালনা করেন এবং (৪) সেনাপতি। কাজেই যুক্তিটি অবৈধ এবং চারিপদঘটিত দোষে দুষ্ট। মূর্তি— AAA সংস্থান — প্রথম।


১০) বােলপুর বর্ধমানের কাছে, আর বর্ধমান কলকাতার কাছে। সুতরাং, বােলপুর কলকাতার কাছে। 

উঃ

তর্কবিজ্ঞানসম্মত আকার -

 A- বর্ধমান হয় এমন স্থান যা কলকাতার কাছে অবস্থিত।

 A- বােলপুর হয় এমন স্থান যা বর্ধমানের কাছে অবস্থিত। 

 : . A- বােলপুর হয় এমন স্থান যা কলকাতার কাছে অবস্থিত। 

দোষ: চারিপদঘটিত দোষ।

বিচার: এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়ের নিয়ম অনুসারে প্রতিটি ন্যায় অনুমানে তিনটি পদ থাকবে, তার কম বা বেশি নয়। অথচ আলোচ্য যুক্তিতে চারটি পদ রয়েছে পদগুলি হল-- (১)বর্ধমান, (২) স্থান যা কলকাতার কাছে অবস্থিত, (৩) স্থান যা বর্ধমানের কাছে অবস্থিত এবং (৪) বোলপুর।কাজেই যুক্তিটি অবৈধ এবং চারিপদঘটিত দোষে দুষ্ট। মূর্তি— AAA সংস্থান — প্রথম।


  ১১) মুরগি ডিমের ভিতর থেকে আসে, ডিম মুরগির ভিতর থেকে আসে। অতএব মুরগি মুরগির ভিতর থেকে আসে।

উঃ

তর্কবিজ্ঞানসম্মত আকার 

A- সকল ডিম হয় এমন যা মুরগির ভিতর থেকে আসে। 

 সকল মুরগি হয় এমন যা ডিমের ভিতর থেকে আসে। 

: . A- সকল মুরগি হয় এমন যা মুরগির ভিতর থেকে আসে। 

দোষ: চারিপদঘটিত দোষ।

বিচার: এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়ের নিয়ম অনুসারে প্রতিটি ন্যায় অনুমানে তিনটি পদ থাকবে, তার কম বা বেশি নয়। অথচ আলোচ্য যুক্তিতে চারটি পদ রয়েছে পদগুলি হল-- (১) মুরগি, (২)  যা মুরগির ভিতর থেকে আসে, (৩)  যা ডিমের ভিতর থেকে আসে এবং (৪) ডিম। কাজেই যুক্তিটি অবৈধ এবং চারিপদঘটিত দোষে দুষ্ট। মূর্তি— AAA সংস্থান — প্রথম।


 ১২) এই লােকটি সৎ হতে পারে না; কারণ, সে অকপট নয়।

উঃ

তর্কবিজ্ঞানসম্মত আকার—

 A— সকল সৎ ব্যক্তি হয় অকপট ব্যক্তি ।  

 E- এই লােকটি নয় অকপট ব্যক্তি। 

: . E- এই লােকটি নয় সৎ ব্যক্তি। 

 দোষ: ×

বিচার: এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি বৈধ। কেননা, এখানে ন্যায় অনুমানের বৈধতার দশটি নিয়ম যথাযথভাবে পালিত হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি দ্বিতীয় সংস্থানের শুদ্ধ মূর্তি AEE, নাম— CAMESTRES . 

OR, (বিকল্প উত্তর)

তর্কবিজ্ঞানসম্মত আকার—

 A— সকল  অকপট ব্যক্তি হয় সৎ ব্যক্তি।  

 E- এই লােকটি নয় অকপট ব্যক্তি। 

: . E- এই লােকটি নয় সৎ ব্যক্তি। 

দোষ: অবৈধ সাধ্য দোষ।

বিচার: এটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। কিন্তু দৃষ্টান্তে সাধ্যপদ (সৎ ব্যক্তি) প্রধান  আশ্রয়বাক্যে A বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি। অথচ সিদ্ধান্ত E বচনের বিধেয় স্থানে হাওয়ায় ব্যাপ্য হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি বৈধতার নিয়ম লঙ্ঘন করায় অবৈধ সাধ্যদোষে দুষ্ট হয়েছে। যুক্তিটির মূর্তি-- AEE, সংস্থান-- প্রথম।

১৩) দেখা মানে বিশ্বাস করা। অতএব আমি ভগবানে বিশ্বাস করতে অস্বীকার করছি। 

উঃ

তর্কবিজ্ঞানসম্মত আকার-

 A- সকল দর্শনযােগ্য বিষয় হয় বিশ্বাসযােগ্য। 

E- ভগবান নয় দর্শনযােগ্য বিষয়। 

E- ভগবান নয় বিশ্বাসযােগ্য। 

দোষ: অবৈধ সাধ্যদোষ।

বিচার: এটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। কিন্তু দৃষ্টান্তে সাধ্যপদ (বিশ্বাসযোগ্য) প্রধান  আশ্রয়বাক্যে A বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি। অথচ সিদ্ধান্ত E বচনের বিধেয় স্থানে হাওয়ায় ব্যাপ্য হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি বৈধতার নিয়ম লঙ্ঘন করায় অবৈধ সাধ্যদোষে দুষ্ট হয়েছে। যুক্তিটির মূর্তি-- AEE, সংস্থান-- প্রথম।

OR (বিকল্প উত্তর)


তর্কবিজ্ঞানসম্মত আকার-

 A- সকল  বিশ্বাসযােগ্য বিষয় হয় দর্শনযোগ্য বিষয়।

E- ভগবান নয় দর্শনযােগ্য বিষয়। 

E- ভগবান নয় বিশ্বাসযােগ্য। 

দোষ: ×

 বিচার: এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি বৈধ। কেননা, এখানে ন্যায় অনুমানের বৈধতার দশটি নিয়ম যথাযথভাবে পালিত হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি দ্বিতীয় সংস্থানের শুদ্ধ মূর্তি AEE, নাম— CAMESTRES . 


 ১৪ ) যা চকচক করে তাই সােনা নয়। এই ধাতুটি সােনা হতে পারে না। কারণ, এটি চকচক করে।

উঃ 

তর্কবিজ্ঞানসম্মত আকার-

 0 - কোনাে কোনাে চকচকে বস্তু নয় সােনা। 

 A- এই ধাতুটি হয় চকচকে বস্তু। 

: . E- এই ধাতুটি নয় সােনা। 

দোষ: অব্যাপ্য হেতু দোষ।

 বিচার : এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট  হয়েছে। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে হেতুপদকে দুটি আশ্রয়বাক্যের মধ্যে অন্তত একবার ব্যাপ্য হতেই হবে। কিন্তু উক্ত যুক্তিতে হেতুপদটি (চকচকে বস্তু) প্রধান আশ্রয়বাক্যে  'O' বচনের উদ্দেশ্য স্থানে থাকায় অব্যাপ্য হয়েছে। আবার  অপ্রধান আশ্রয়বাক্যেও 'A'বচনের বিধেয় স্থানে হওয়ায় ব্যাপ্য হয় নি।  কাজেই যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। যুক্তিটির মূর্তি- OAE, সংস্থান- প্রথম।

১৫) তুমি কি করে বল যে ওই লােকটি ভদ্রলােক নয়? কারণ, সে সত্য কথা বলে যেমন সব ভদ্রলােক বলে। 

উঃ

তর্কবিজ্ঞানসম্মত আকার-

 A- সকল ভদ্রলােক হয় এমন ব্যক্তি যারা সত্য কথা বলে। 

A- ওই লােকটি হয় এমন ব্যক্তি যে সত্য কথা বলে।

: A- ওই লোকটি হয় ভদ্রলোক।

দোষ: অব্যাপ্য হেতু দোষ।

 বিচার : এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট  হয়েছে। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে হেতুপদকে দুটি আশ্রয়বাক্যের মধ্যে অন্তত একবার ব্যাপ্য হতেই হবে। কিন্তু উক্ত যুক্তিতে হেতুপদটি (ব্যক্তি যারা বা যে সত্য কথা বলে) উভয় আশ্রয়বাক্যেই 'A' বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় অব্যাপ্য হয়েছে। ফলে যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। মূর্তি AAA, সংস্থান- দ্বিতীয়।


১৬) মানুষেরা বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন এবং তারা সকলেই দ্বিপদবিশিষ্ট। সুতরাং, সকল দ্বিপদবিশিষ্ট জীব বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন। 

উঃ

তর্কবিজ্ঞানসম্মত আকার 

A- সকল মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন জীব। 

 A- সকল মানুষ হয় দ্বিপদবিশিষ্ট জীব। 

 ..A- সকল দ্বিপদবিশিষ্ট জীব হয় বুদ্ধিবৃত্তি সম্পন্ন জীব।

দোষ: অবৈধ পক্ষদোষ।

 বিচার- এটি ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অবৈধ পক্ষদোষে দুষ্ট। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। আলােচ্য যুক্তিতে পক্ষপদটি (দ্বিপদ বিশিষ্ট প্রাণী) অপ্রধান আশ্রয়বাক্যে A বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি কিন্তু ওই পক্ষপদটি সিদ্ধান্তে A বচনের উদ্দেশ্য স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়েছে।  কাজেই যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। যুক্তিটির মূর্তি— AAA, সংস্থান- তৃতীয়। 


 ১৭) কেবলমাত্র সত্যবাদীরাই সৎ এবং কেবলমাত্র সত্যবাদীরাই শ্রদ্ধার যােগ্য। সুতরাং, শ্রদ্ধারযােগ্য ব্যক্তিরাই সৎ। 

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার- 

A- সকল সৎ ব্যক্তি হয় সত্যবাদী।

 A- সকল শ্রদ্ধার যােগ্য ব্যক্তি হয় সত্যবাদী। 

 : . A- সকল শ্রদ্ধার যােগ্য ব্যক্তি হয় সৎ ব্যক্তি। 

দোষ: অব্যাপ্য হেতুদোষ।

বিচার : এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট  হয়েছে। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে হেতুপদকে দুটি আশ্রয়বাক্যের মধ্যে অন্তত একবার ব্যাপ্য হতেই হবে। কিন্তু উক্ত যুক্তিতে হেতুপদটি (সত্যবাদী) উভয় আশ্রয়বাক্যেই 'A' বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় অব্যাপ্য হয়েছে। ফলে যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। মূর্তি- AAA, সংস্থান- দ্বিতীয়।


১৮) সব ভারতীয় বাঙালি নয় এবং সব বাঙালি ছাত্র নয়, অতএব কোনাে কোনাে ছাত্র ভারতীয় নয়। 

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার- 

O- কোনাে কোনাে ভারতীয় নয় বাঙালি।

 O = কোনাে কোনাে বাঙালি নয় ছাত্র। 

.. 0 - কোনাে কোনাে ছাত্র নয় ভারতীয়। 

দোষ: নঞর্থক আশ্রয়বাক্যজনিত দোষ।

 বিচার- এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়েয় বৈধতার নিয়ম অনুসারে দুটি আশ্রয় বাক্য নঞর্থক  হলে কোন বৈধ সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় না। যেহেতু উক্ত যুক্তিটির দুটি আশ্রয়বাক্যই নঞর্থক  OO বচন, তাই যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। যুক্তিটির মূর্তি- OOO, সংস্থান- চতুর্থ । 


১৯ ) তিনি সৎ হতে পারেন না। কারণ, তিনি রাজনীতিজ্ঞ এবং রাজনীতিজ্ঞ ব্যক্তিরা খুব কম ক্ষেত্রেই সৎ হন। 

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার— 

0 - কোনাে কোনাে রাজনীতিজ্ঞ ব্যক্তি নয় সৎ ব্যক্তি।

A তিনি হন রাজনীতিজ্ঞ ব্যক্তি।

 : . E— তিনি নন সৎ ব্যক্তি। 

দোষ: অব্যাপ্য হেতুদোষ।

 বিচার : এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট  হয়েছে। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে হেতুপদকে দুটি আশ্রয়বাক্যের মধ্যে অন্তত একবার ব্যাপ্য হতেই হবে। কিন্তু উক্ত যুক্তিতে হেতুপদটি (রাজনীতিজ্ঞ ব্যক্তি) প্রধান আশ্রয়বাক্যে  'O' বচনের উদ্দেশ্য স্থানে থাকায় অব্যাপ্য হয়েছে। আবার  অপ্রধান আশ্রয়বাক্যেও 'A'বচনের বিধেয় স্থানে হওয়ায় ব্যাপ্য হয় নি।  কাজেই যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। যুক্তিটির মূর্তি- OAE, সংস্থান- প্রথম।


২০) যদি কোনাে রাজীতিবিদ সত্যবাদী হয় তাহলে সে সৎ। ভাস্কর সৎ এবং সে রাজনীতিবিদ। সুতরাং, ভাস্কর সত্যবাদী। 

উঃ

যুক্তিবিনসম্মত আকার -

A- সকল সত্যবাদী রাজনীতিবিদ হয় সৎ রাজনীতিবিদ। 

 A- ভাস্কর হয় সৎ রাজনীতিবিদ। 

 ..A- ভাস্কার হয় সত্যবাদী রাজনীতিবিদ। 

দোষ: অব্যাপ্য হেতুদোষ।

বিচার : এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট  হয়েছে। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে হেতুপদকে দুটি আশ্রয়বাক্যের মধ্যে অন্তত একবার ব্যাপ্য হতেই হবে। কিন্তু উক্ত যুক্তিতে হেতুপদটি (সৎ রাজনীতিবিদ) উভয় আশ্রয়বাক্যেই 'A' বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় অব্যাপ্য হয়েছে। ফলে যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। মূর্তি- AAA, সংস্থান -দ্বিতীয়।


 ২১) বাতাসের অস্তিত্ব নেই। কারণ, বাতাসকে দেখা যায় না।  

উঃ

 যুক্তিবিপ্লনসম্মত আকার- 

A- সকল দুশ্যমান পদার্থ হয় অস্তিত্বশীল পদার্থ। 

 E- বাতাস নয় দৃশ্যমান পদার্থ। 

 E- বাতাস নয় অস্তিত্বশীল পদার্থ। 

দোষ: অবৈধ সাধ্যদোষ।

বিচার: এটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। কিন্তু দৃষ্টান্তে সাধ্যপদ (অস্তিত্বশীল পদার্থ) প্রধান  আশ্রয়বাক্যে A বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি। অথচ সিদ্ধান্ত E বচনের বিধেয় স্থানে হাওয়ায় ব্যাপ্য হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি বৈধতার নিয়ম লঙ্ঘন করায় অবৈধ সাধ্যদোষে দুষ্ট হয়েছে। যুক্তিটির মূর্তি-- AEE, সংস্থান-- প্রথম।


২২) যদি কেউ পরিশ্রম না করে তাহলে সে সফল হবে না। তুমি পরিশ্রম করােনি। কাজেই, তুমি কী করে সফল হবে? 

উঃ

যুক্তিবিনসম্মত আকার -

A- সকল পরিশ্রমী ব্যক্তি হয় সফল ব্যক্তি। 

E তুমি নও পরিশ্রমী ব্যক্তি।

: . E- তুমি নও সফল ব্যক্তি।

দোষ: অবৈধ সাধ্যদোষ।

বিচার: এটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। কিন্তু দৃষ্টান্তে সাধ্যপদ (সফল ব্যক্তি) প্রধান  আশ্রয়বাক্যে A বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি। অথচ সিদ্ধান্ত E বচনের বিধেয় স্থানে হাওয়ায় ব্যাপ্য হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি বৈধতার নিয়ম লঙ্ঘন করায় অবৈধ সাধ্যদোষে দুষ্ট হয়েছে। যুক্তিটির মূর্তি-- AEE, সংস্থান-- প্রথম।


 ২৩) এই পদার্থটি ধাতু হতে পারে না। কারণ এটি বিদ্যুৎ পরিবহন করে না। 

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার-

 A- সকল ধাতু হয় বিদ্যুৎ পরিবহনকারী বস্তু। 

 E- এই পদার্থটি নয় বিদ্যুৎ পরিবহনকারী বস্তু।  

  : . E- এই পদার্থটি নয় ধাতু। 

দোষ: ×

বিচার— বিচার: এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি বৈধ। কেননা, এখানে ন্যায় অনুমানের বৈধতার দশটি নিয়ম যথাযথভাবে পালিত হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি দ্বিতীয় সংস্থানের শুদ্ধ মূর্তি AEE, নাম— CAMESTRES . 


২৪) সব পাখিদের মতাে বাদুড়ের ডানা আছে। অতএব বাদুড় অবশ্যই পাখি।

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার--

 A- সল পাখি হয় ডানাবিশিষ্ট প্রাণী।

A- সকল বাদুড় হয় ডানা বিশিষ্ট প্রাণী।

A- সকল বাদুর হয় পাখি।

দোষ: অব্যাপ্য হেতু দোষ।

বিচার : এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট  হয়েছে। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে হেতুপদকে দুটি আশ্রয়বাক্যের মধ্যে অন্তত একবার ব্যাপ্য হতেই হবে। কিন্তু উক্ত যুক্তিতে হেতুপদটি (ডানা বিশিষ্ট প্রাণী) উভয় আশ্রয়বাক্যেই 'A' বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় অব্যাপ্য হয়েছে। ফলে যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। মূর্তি- AAA, সংস্থান -দ্বিতীয়।


২৫) কোনাে কবিই অমর নয়, যেহেতু যে - কোনাে কবি মানুষ এবং মানুষ অমর নয়। 

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞাসম্মত আকার- 

E- কোনাে মানুষ নয় অমর।

 A- সকল কবি হয় মানুষ। 

 E- কোনাে কবি নয় অমর। 

দোষ: ×

বিচার: এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি বৈধ। কেননা, এখানে ন্যায় অনুমানের বৈধতার দশটি নিয়ম যথাযথভাবে পালিত হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি প্রথম সংস্থানের শুদ্ধ মূর্তি EAE, নাম— CELARENT .


 ২৬) বিদ্যাসাগর পণ্ডিত ছিলেন এবং তিনি দয়ালু ছিলেন। সুতরাং, সব দয়ালু ব্যক্তিই পণ্ডিত।

উঃ

 যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার- 

A- বিদ্যাসাগর হন এমন ব্যক্তি যিনি পণ্ডিত ছিলেন।

 A- বিদ্যাসাগর হন এমন ব্যক্তি যিনি দয়ালু ছিলেন।

 ..A- সকল দয়ালু ব্যক্তি হয় পণ্ডিত ব্যক্তি।

দোষ: অবৈধ পক্ষদোষ।

বিচার: এটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অবৈধ পক্ষদোষে দুষ্ট। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। আলােচ্য যুক্তিতে পক্ষপদটি (দয়ালু ব্যক্তি) অপ্রধান আশ্রয়বাক্যে A বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি কিন্তু ওই পক্ষপদটি সিদ্ধান্তে A বচনের উদ্দেশ্য স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়েছে।  কাজেই যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। যুক্তিটির মূর্তি—AAA, সংস্থান-তৃতীয়।


২৭) সকল পুরুষ অবশ্যই নারী। কারণ নারীদের মতাে পুরুষরাও মরণশীল। 

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার -

A- সকল নারী হয় মরণশীল। 

 A- সকল পুরুষ হয় মরণশীল । 

 . ' . A- সকল পুরুষ হয় নারী ।

দোষ: অব্যাপ্য হেতুদোষ

বিচার : এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট  হয়েছে। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে হেতুপদকে দুটি আশ্রয়বাক্যের মধ্যে অন্তত একবার ব্যাপ্য হতেই হবে। কিন্তু উক্ত যুক্তিতে হেতুপদটি (মরণশীল) উভয় আশ্রয়বাক্যেই 'A' বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় অব্যাপ্য হয়েছে। ফলে যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। মূর্তি- AAA, সংস্থান- দ্বিতীয়।


 ২৮) কোনাে কোনাে রাজনীতিবিদ শিক্ষক, কেননা, রাধাকৃয়ণ একজন শিক্ষক। 

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার— 

A- রাধাকুয়ণ হন একজন শিক্ষক। 

 A- রাধাকৃষণ হন রাজনীতিবিদ। 

 ..I- কোনাে কোনাে রাজনীতিবিদ হন শিক্ষক।

দোষ: × 

বিচার: এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি বৈধ। কেননা, এখানে ন্যায় অনুমানের বৈধতার দশটি নিয়ম যথাযথভাবে পালিত হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি তৃতীয় সংস্থানের শুদ্ধ মূর্তি AAI, নাম— DARAPTI .. 

 

২৯) বিজ্ঞানীরা বুদিধমান এবং কোনো কোনাে বিজ্ঞানী পদার্থবিদ, সুতরাং, সব পদার্থবিদই বুদ্ধিমান। 

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার- 

A- সকল বিজ্ঞানী হয় বুদ্ধিমান ব্যক্তি।

 I- কোনাে কোনাে বিজ্ঞানী হয় পদার্থবিদ। 

 ..A- সকল পদার্থবিদ হয় বুদ্ধিমান ব্যক্তি।

দোষ: অবৈধ পক্ষদোষ।

বিচার: এটি ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অবৈধ পক্ষদোষে দুষ্ট। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। আলােচ্য যুক্তিতে পক্ষপদটি (পদার্থবিদ) অপ্রধান আশ্রয়বাক্যে 'I' বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি কিন্তু ওই পক্ষপদটি সিদ্ধান্তে A বচনের উদ্দেশ্য স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়েছে।  কাজেই যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। যুক্তিটির মূর্তি— AIA, সংস্থান — তৃতীয়। 

 

৩০) অমল বিমলের বন্ধু। কেননা, কমল বিমলের বন্ধু এবং অমল কমলের বন্ধু। 

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার -

 A- কমল হয় বিমলের বন্ধু । 

 A- অমল হয় কমলের বন্ধু । 

 : . A- অমল হয় বিমলের বন্ধু । 

দোষ: চারিপদ ঘটিত দোষ।

বিচার: এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়ের নিয়ম অনুসারে প্রতিটি ন্যায় অনুমানে তিনটি পদ থাকবে, তার কম বা বেশি নয়। অথচ আলোচ্য যুক্তিতে চারটি পদ রয়েছে পদগুলি হল-- (১) অমল, (২) কমল, (৩) বিমলের বন্ধু এবং (৪) কমলের বন্ধু। কাজেই যুক্তিটি অবৈধ এবং চারিপদঘটিত দোষে দুষ্ট। মূর্তি— AAA সংস্থান — প্রথম।

 

 ৩১) অ্যারিস্টটল প্লেটো নন। প্লেটো দার্শনিক। সুতরাং, অ্যারিস্টটল দার্শনিক নন। 

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞান সম্মত আকার- 

A- প্লেটো হন দার্শনিক । 

 E- অ্যারিস্টটল নন প্লেটো । 

: . E- অ্যারিস্টটল নন দার্শনিক ।

দোষ: অবৈধ সাধ্যদোষ।

বিচার: এটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। কিন্তু দৃষ্টান্তে সাধ্যপদ (দার্শনিক) প্রধান  আশ্রয়বাক্যে A বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি। অথচ সিদ্ধান্ত E বচনের বিধেয় স্থানে হাওয়ায় ব্যাপ্য হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি বৈধতার নিয়ম লঙ্ঘন করায় অবৈধ সাধ্যদোষে দুষ্ট হয়েছে। যুক্তিটির মূর্তি-- AEE, সংস্থান-- প্রথম।


৩২) বিবেকানন্দ একজন বড়াে ধর্ম সংস্কারক এবং তিনি অবিবাহিত। কাজেই, সমস্ত  অবিবাহিত পুরুষই ধর্ম সংস্কারক। 

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার- 

A- বিবেকানন্দ হন একজন ধর্মসংস্কারক ।

 A- বিবেকানন্দ হন অবিবাহিত পুরুষ । 

 : . A- সকল অবিবাহিত পুরুষ হয় ধর্মসংস্কারক । 

দোষ: অবৈধ পক্ষদোষে

বিচার: এটি ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অবৈধ পক্ষদোষে দুষ্ট। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। আলােচ্য যুক্তিতে পক্ষপদটি (অবিবাহিত পুরুষ) অপ্রধান আশ্রয়বাক্যে A বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি কিন্তু ওই পক্ষপদটি সিদ্ধান্তে E বচনের উদ্দেশ্য স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়েছে।  কাজেই যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। যুক্তিটির মূর্তি—  AAA,, সংস্থান — তৃতীয়। 


৩৩)  সব চকচকে বস্তু সােনা নয়, হীরে সােনা নয়। সুতরাং, হীরে চকচক করে না। 

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার- 

 O- কোনাে কোনাে চকচকে বস্তু নয় সােনা।

E- হীরে নয় সোনা।

E- হীরে নয় চকচকে বস্তু।

দোষ: নঞর্থক আশ্রয়বক্যজনিত দোষ।

 বিচার- এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়েয় বৈধতার নিয়ম অনুসারে দুটি আশ্রয় বাক্য নঞর্থক  হলে কোন বৈধ সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় না। যেহেতু উক্ত যুক্তিটির দুটি আশ্রয়বাক্যই নঞর্থক  OE বচন, তাই যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। যুক্তিটির মূর্তি- OEE, সংস্থান-দ্বিতীয়।  


৩৪) তার উম্মাদ হওয়ার আশঙ্কা নেই। কারণ, সে শিক্ষিত নয় এবং সাধারণত শিক্ষিত ব্যক্তিরাই উন্মাদ হয়।

উঃ

 যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার-

 I- কোনাে কােনাে শিক্ষিত ব্যক্তি হয় উম্মাদ ব্যক্তি। 

 E- সে নয় শিক্ষিত ব্যক্তি । 

 ..E- সে নয় উন্মাদ ব্যক্তি ।

দোষ:  অবৈধ সাধ্যদোষে

বিচার: এটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। কিন্তু দৃষ্টান্তে সাধ্যপদ (উন্মাদ ব্যক্তি) প্রধান  আশ্রয়বাক্যে I বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি। অথচ সিদ্ধান্ত E বচনের বিধেয় স্থানে হাওয়ায় ব্যাপ্য হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি বৈধতার নিয়ম লঙ্ঘন করায় অবৈধ সাধ্যদোষে দুষ্ট হয়েছে। যুক্তিটির মূর্তি-- IEE, সংস্থান-- প্রথম।


৩৫) সে এত ভালাে যে এ কাজ করতে পারে না।

উঃ

 যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার- 

E- কােনাে খুব ভালাে ব্যক্তি নয় এমন যে এ কাজ করতে পারে । 

 A- সে হয় খুব ভালাে ব্যক্তি ।

 : . E- সে নয় এমন ব্যক্তি যে এ কাজ করতে পারে।

 দোষ: ×

বিচার: এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি বৈধ। কেননা, এখানে ন্যায় অনুমানের বৈধতার দশটি নিয়ম যথাযথভাবে পালিত হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি প্রথম সংস্থানের শুদ্ধ মূর্তি EAE, নাম— CELARENT . 


৩৬) কোনাে সংক্ষিপ্ত ন্যায় সম্পূর্ণ নয়, সুতরাং, এই যুক্তিটি অসম্পূর্ণ। 

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার- 

A- সকল সংক্ষিপ্ত ন্যায় হয় অসম্পূর্ণ ন্যায় (মূল বচনের বিবর্তিত)।

A- এই যুক্তিটি হয় সংক্ষিপ্ত ন্যায়। 

 : . A- এই যুক্তিটি হয় অসম্পূর্ণ ন্যায়।

দোষ: ×

বিচার: এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি বৈধ। কেননা, এখানে ন্যায় অনুমানের বৈধতার দশটি নিয়ম যথাযথভাবে পালিত হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি প্রথম সংস্থানের শুদ্ধ মূর্তি AAA, নাম– BARBARA . 


৩৭) চার্বাকরা অবশ্যই নাস্তিক, কারণ তারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না এবং নাস্তিকদের কেউই ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না।

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার—

 E- কোনাে নাস্তিক নয় ঈশ্বরের বিশ্বাসী ব্যক্তি।

 E- কোনাে চার্বাক নয় ঈশ্বরের বিশ্বাসী ব্যক্তি। 

 : . A- সকল চার্বাক হয় নাস্তিক ।

দোষ: নঞর্থক আশ্রয়বাক্যজনিত দোষ। 

বিচার- এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়েয় বৈধতার নিয়ম অনুসারে দুটি আশ্রয় বাক্য নঞর্থক  হলে কোন বৈধ সিদ্ধান্ত পাওয়া যায় না। যেহেতু উক্ত যুক্তিটির দুটি আশ্রয়বাক্যই নঞর্থক  EE বচন, তাই যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। যুক্তিটির মূর্তি- EEA, সংস্থান-দ্বিতীয়।  

 

৩৮) জাগতিক বস্তুমাত্রই পরিণামী। কারণ, কোনাে জাগতিক বস্তু অজড় নয় এবং কোনাে জড়বস্তুই পরিণামী নয়।

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত স্মত আকার

 E- কোনাে জড়বস্তু নয় পরিণামী ।

 A- সকল জাগতিক বস্তু হয় জড়বস্তু ( মূল বচনের বিবর্তিত রূপ)।

: . A- সকল জাগতিক বস্তু হয় পরিণামী। 

দোষ:  একটি নঞর্থক আশ্রয়বাক্য থেকে সদর্থক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দোষ।

বিচার— যুক্তিটি একটি নঞর্থক আশ্রয়বাক্য থেকে সদর্থক সিদ্ধান্ত গ্রহণের দোষে দুষ্ট হয়েছে। কেননা, ন্যায়ের নিয়ম অনুসারে একটি আশ্রয় বাক্য নঞর্থক হলে সিদ্ধান্ত অবশ্যই অঞর্থক হবে। কাজেই যুক্তিযুক্ত দোষে দুষ্ট। যুক্তি তিন মূর্তি- EAA, সংস্থান- প্রথম।


৩৯) সকল দাহ্য বস্তুই বিপজ্জনক। কাজেই, বিপজ্জনক নয় এমন বস্তুসমূহ অ - বিস্ফোরক, কেলনা, সকল বিস্ফোরক পদার্থই দাহ্য ।

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার

 A- সকল বিস্ফোরক পদার্থ হয় দাহ্যবস্তু ।  

 A- সকল দাহ্যবস্তুই হয় বিপজ্জনক বস্তু । 

: . A- সকল বিপজ্জনক বস্তু হয় বিস্ফোরক পদার্থ।   (মূল বচনের বিবর্তিত রূপ )

দোষ: অবৈধ পক্ষদোষ।

বিচার— এটি ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অবৈধ পক্ষদোষে দুষ্ট। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। আলােচ্য যুক্তিতে পক্ষপদটি (বিপজ্জনক বস্তু) অপ্রধান আশ্রয়বাক্যে A বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি কিন্তু ওই পক্ষপদটি সিদ্ধান্তে A বচনের উদ্দেশ্য স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়েছে।  কাজেই যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। যুক্তিটির মূর্তি— AAA, সংস্থান — চতুর্থ। 


৪০) সব ছাত্র সফল নয়। কারণ, সব সফল ব্যক্তি পরিশ্রমী এবং সব ছাত্র পরিশ্রমী নয়।

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত  আকার 

A- সকল সফল ব্যক্তি হয় পরিশ্রমী। 

 0 - কোনাে কোনাে ছাত্র নয় পরিশ্রমী । 

: . O- কোনাে কোনাে ছাত্র নয় সফল ব্যক্তি। 

দোষ: ×

 বিচার— এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি বৈধ। কেননা, এখানে ন্যায় অনুমানের বৈধতার দশটি নিয়ম যথাযথভাবে পালিত হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি দ্বিতীয় সংস্থানের শুদ্ধ মূর্তি AOO , নাম– BAROCO . 


৪১) তিনি শিক্ষক নন, যেহেতু কেবলমাত্র পণ্ডিত ব্যক্তিরাই শিক্ষক এবং তিনি পণ্ডিত নন।

উঃ

 যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার—

 A- সকল শিক্ষক হয় পণ্ডিত ব্যক্তি । 

 E- তিনি নন পণ্ডিত ব্যক্তি । 

 : . E- তিনি নন শিক্ষক ।

দোষ: ×

 বিচার— এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি বৈধ। কেননা, এখানে ন্যায় অনুমানের বৈধতার দশটি নিয়ম যথাযথভাবে পালিত হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি দ্বিতীয় সংস্থানের শুদ্ধ মূর্তি AEE, নাম— CAMESTRES . 


৪২) বইটি টেবিলের উপর আছে। টেবিলটি মাটির উপর আছে। অতএব বইটি মাটির উপর আছে।

উঃ 

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার -

A- টেবিলটি হয় এমন বস্তু যেটি মাটির উপর আছে।

A- বইটি হয় এমন বস্তু যেটি টেবিলের উপর আছে।

 : . A- বইটি হয় এমন বস্তু যেটি মাটির উপর আছে। 

দোষ: চারিপদঘটিত দোষ।

 বিচার- এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়ের নিয়ম অনুসারে প্রতিটি ন্যায় অনুমানে তিনটি পদ থাকবে, তার কম বা বেশি নয়। অথচ আলোচ্য যুক্তিতে চারটি পদ রয়েছে পদগুলি হল-- (১) বই, (২) বস্তু যেটি মাটির উপর আছে, (৩) বস্তু যেটি টেবিলের উপর আছে।  এবং (৪) টেবিল। কাজেই যুক্তিটি অবৈধ এবং চারিপদঘটিত দোষে দুষ্ট। মূর্তি— AAA ।

 ৪৩) একমাত্র লােকাল ট্রেন এই স্টেশনে দাঁড়ায়। এই DMU ট্রেনটি এই স্টেশনে দাঁড়ায়নি। ফলত এই DMU ট্রেনটি লােকাল ট্রেন হতে পারে না। 

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার-

 A- সকল ট্রেন যা এই স্টেশনে দাঁড়ায় হয় লােকাল ট্রেন।

 E- এই DMU ট্রেনটি নয় ট্রেন যা এই স্টেশনে দাঁড়ায়। 

 : . E- এই DMU ট্রেনটি নয় লােকাল ট্রেন। 

দোষ: অবৈধ সাধ্যদোষ।

 বিচার— এটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয় সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। কিন্তু দৃষ্টান্তে সাধ্যপদ (লোকাল ট্রেন) প্রধান  আশ্রয়বাক্যে A বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় ব্যাপ্য হয়নি। অথচ সিদ্ধান্ত E বচনের বিধেয় স্থানে হাওয়ায় ব্যাপ্য হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি বৈধতার নিয়ম লঙ্ঘন করায় অবৈধ সাধ্যদোষে দুষ্ট হয়েছে। যুক্তিটির মূর্তি-- AEE, সংস্থান-- প্রথম।


 ৪৪) রামবাবু এত দুর্বল যে হাঁটতে পারে না।

উঃ

 যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার-

 E- কোনাে  অতি দুর্বল ব্যক্তি নন এমন ব্যক্তি যিনি হাঁটতে পারেন।  

 A- রামবাবু হয় অতি দুর্বল ব্যক্তি। 

 : . E- রামবাবু নয় এমন ব্যক্তি যিনি হাঁটতে পারেন।

দোষ: ×

 বিচার—এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি বৈধ। কেননা, এখানে ন্যায় অনুমানের বৈধতার দশটি নিয়ম যথাযথভাবে পালিত হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি প্রথম সংস্থানের শুদ্ধ মূর্তি  EAE, নাম— CELARENT . 


৪৫) যেহেতু তুমি পরিশ্রমী নও, তুমি কী করে পরীক্ষায় পাশ করবে? একমাত্র পরিশ্রমী ব্যক্তিরাই পরীক্ষার পাশ করতে পারে।

উঃ

 যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার— 

A- সকল ব্যক্তি যারা পরীক্ষায় পাশ করতে পারে হয় পরিশ্রমী ব্যক্তি।

 E- তুমি নও পরিশ্রমী ব্যক্তি । 

 : . E- তুমি নও এমন ব্যক্তি যে পরীক্ষায় পাশ করবে। 

দোষ: ×

বিচার- এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি বৈধ। কেননা, এখানে ন্যায় অনুমানের বৈধতার দশটি নিয়ম যথাযথভাবে পালিত হয়েছে। কাজেই যুক্তিটি দ্বিতীয় সংস্থানের শুদ্ধ মূর্তি AEE, নাম— CAMESTRES . 


৪৬) কোনাে কোনাে ব্যাংক অফিসার নিশ্চয়ই অধ্যাপক। কেননা, তারা এম. এ. আর, সকল অধ্যাপকই এম. এ.

উঃ

যুক্তিবিজ্ঞানসম্মত আকার :

 A- সকল অধ্যাপক  হন এম . এ . ।

 I- কোনো কোনো ব্যাংক অফিসার  হন এম. এ. 

 I- কোনাে কোনাে ব্যাংক অফিসার  হন অধ্যাপক 

দোষ: অব্যাপ্য হেতু দোষ ।

বিচার: এটি একটি নিরপেক্ষ ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ এবং  অব্যাপ্য হেতুদোষে দুষ্ট  হয়েছে। কেননা, ন্যায়ের বৈধতার নিয়ম অনুসারে হেতুপদকে দুটি আশ্রয়বাক্যের মধ্যে অন্তত একবার ব্যাপ্য হতেই হবে। কিন্তু উক্ত যুক্তিতে হেতুপদটি (এম. এ.) প্রধান আশ্রয়বাক্যের 'A' বচনের বিধেয় স্থানে থাকায় অব্যাপ্য হয়েছে। আবার, অপ্রধান আশ্রয়বাক্য I বচনের বিধেয় স্থানে হওয়ায় অব্যাপ্য হয়েছে। ফলে যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট। মূর্তি- AAA, সংস্থান- দ্বিতীয়।


৪৭) সব অশিক্ষিত ব্যক্তি অন্ধ; সে অন্ধ; অতএব সে অশিক্ষিত।

উঃ

যুক্তি - আকার :

 A- সকল অশিক্ষিত ব্যক্তি  হয় অন্ধ ব্যক্তি । 

A- সে হয় অন্ধ ব্যক্তি। 

: . A- সে  হয় অশিক্ষিত ব্যক্তি।

দোষ: অনেকার্থ হেতুদোষ।

বিচার: এই যুক্তিটি একটি ন্যায় অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অবৈধ। কেননা, ন্যায়ের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি ন্যায় অনুমানের তিনটি পদ থাকবে এবং প্রত্যেকটি পদ একটি নির্দিষ্ট অর্থে ব্যবহৃত হবে। কিন্তু দৃষ্টান্তে হেতুপদ (অন্ধ ব্যক্তি) প্রধান আশ্রয়বাক্যে 'অজ্ঞ' অর্থে এবং অপ্রধান আশ্রয়বাক্যে 'দৃষ্টিহীন' অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট।



Read More

Friday, 11 December 2020

নিরপেক্ষ ন্যায়ের বৈধতার দশটি নিয়ম উল্লেখ কর।

Leave a Comment

 প্রশ্ন: নিরপেক্ষ ন্যায়ের বৈধতার দশটি নিয়ম উল্লেখ কর।

উঃ  ন্যায়ের বৈধতার ১০টি নিয়ম  হল --

১) প্রতিটি ন্যায় অনুমানে ঠিক তিনটি পদ থাকবে, তার বেশি নয়, কমও নয় এবং প্রতিটি পদ সমগ্র যুক্তিতে একই অর্থে ব্যবহৃত হবে। 

২) যে - কোনাে ন্যায় অনুমান কেবলমাত্র তিনটি বচনের দ্বারা গঠিত হবে। 

৩) হেতুপদকে দুটি আশ্রয়বাক্যের মধ্যে অন্ততপক্ষে একবার ব্যাপ্য হতেই হবে। 

৪) যে পদ আশ্রয়বাক্যে ব্যাপ্য নয়, সেই পদ সিদ্ধান্তে ব্যাপ্য হতে পারবে না। 

৫) ন্যায় অনুমানের দুটি আশ্রয়বাক্য যদি নঞর্থক হয় তাহলে কোনাে বৈধ সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে না। অর্থাৎ, বৈধ ন্যায়ে অন্তত একটি আশ্রয়বাক্য সদর্থক হবেই।

৬) যদি একটি আশ্রয়বাক্য নঞর্থক হয় তাহলে ন্যায়ের সিদ্ধান্তটি অবশ্যই নঞর্থক হবেই।

 ৭) যদি দুটি আশ্রয়বাক্যই সদর্থক হয় তবে সিদ্ধান্ত অবশ্যই সদর্থক হবে। অবশ্য (৭) নং নিয়মটি মূল নিয়ম নয় , এটি (৬) নং নিয়ম থেকেই নিঃসৃত হয়। 

 ৮) ন্যায়ের দুটি আশ্রয়বাক্য যদি বিশেষ বচন হয় তাহলে কোনাে বৈধ সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে না। 


৯) একটি আশ্রয়বাক্য বিশেষ বচন হলে সিদ্ধান্তটি অবশ্যই বিশেষ বচন হবে।

 ১০) যদি প্রধান আশ্রয়বাক্যটি বিশেষ এবং অপ্রধান আশ্রয়বাক্যটি নঞর্থক হয় তাহলে কোনাে বৈধ সিদ্ধান্ত পাওয়া যাবে না।

উল্লেখ্য উপরােক্ত দশটি নিয়মের মধ্যে প্রথম দুটি নিয়ম হল ন্যায়ের গঠন সংক্রান্ত নিয়ম এবং পরের আটটি নিয়ম হল ন্যায়ের বৈধতা সম্পর্কিত নিয়ম। 


Read More

ন্যায় মতে রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ এবং শব্দ গুণের প্রত্যক্ষ কিভাবে হয় আলোচনা কর।

Leave a Comment

 ন্যায় মতে গুণ কী? ন্যায় মতে গুণ কয় প্রকার ও কী কী? ন্যায় মতে রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ এবং শব্দ গুণের প্রত্যক্ষ কিভাবে হয় আলোচনা কর।


       গুণ ( Quality : গুণ হল সেই পদার্থ যা দ্রব্যে সমবায় সম্পর্কে থাকে এবং যা দ্রব্য ও কর্ম থেকে ভিন্ন। দ্রব্যের গুণই গুণ। দ্রব্যের সঙ্গে গুণের সমবায় সম্বন্ধ। দ্রব্য থেকে গুণকে আলাদা করা যায় না, যদিও দ্রব্য ও গুণ ভিন্ন। গুণের কোন গুণ থাকে না। গুণ বস্তুর সমবায়ী কারণ হতে পারে না, বরং অসমবায়ী কারণ  হয়। যেমন, কাপড়টির নীল রঙ, কারণ ( অসমবায়ী ) হল কাপড়টির সুতাে নীল রঙের। গুণনিষ্ক্রিয় পদার্থ যা নিষ্ক্রিয় ভাবেই দ্রব্যে অবস্থান করে।


      গুণের প্রকার: ন্যায় মতে, গুণ ২৪ প্রকার, যথা — রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ, শব্দ, সংখ্যা, পরিমাণ, পৃথকত্ব,  সংযােগ, বিভাগ, পরত্ব , অপরত্ব, বুদ্ধি, সুখ, দুঃখ, ইচ্ছা, দ্বেয়, প্রযত্ন, গুরুত্ব, দ্রবত্ব, স্নেহ, সংস্কার, ধর্ম ও অধর্ম। 

     

         রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ এবং শব্দের প্রত্যক্ষ  : আমাদের চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা ও ত্বক — এই পাঁচটি বাহ্য ইন্দ্রিয় আছে। এই পাঁচটি বাহ্য ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে আমরা রূপ, রস, গন্ধ, শব্দ ও স্পর্শ এই পাঁচটি গুণ ক্ষেত্র অনুযায়ী প্রত্যক্ষ করি। চক্ষু - ইন্দ্রিয়ের গ্রাহ্য বিষয় হল রূপ, কর্ণ - ইন্দ্রিয়ের বিষয় হল শব্দ, নাসিকা - ইন্দ্রিয়ের বিষয় হল গন্ধ, জিহ্বা বা রসনা - ইন্দ্রিয়ের বিষয় হল রস ও ত্বক - ইন্দ্রিয়ের গ্রাহ্য বিষয় হল স্পর্শ। 


         রূপ প্রত্যক্ষ : ‘গােলাপটি লাল’, ‘রুমালটি লাল’, ‘টিয়া সবুজ’ — চক্ষু - ইন্দ্রিয়ের সাহায্যেই এই রকম রূপ - রঙের প্রত্যক্ষ হয়। রূপ হল তেজ - গুণ এবং চক্ষু তেজ পরমাণু থেকেই উদ্ভূত। সােজাসুজি চক্ষু রূপ প্রত্যক্ষ করে না। গােলাপের লাল রঙ, রুমালটির লাল রঙ, টিয়াটির সবুজ রঙ প্রত্যঙ্গের ক্ষেত্রে চক্ষুর সঙ্গে গােলাপ - রুমাল - টিয়ার সংযােগ ঘটে, আর ঐ চক্ষু সংযুক্ত সমবায়সন্নিকর্ষ থেকেই রূপের প্রত্যক্ষ হয়, অর্থাৎ বস্তুতে সমবেত রূপের সঙ্গে চক্ষুর সংযুক্ত সমবায়সন্নিকর্ষ ঘটে। অবশ্য রূপ প্রত্যক্ষের সময় দ্রব্যটি মহৎ পরিমাণ বিশিষ্ট হওয়া চাই। রুমালটিতে মহৎ পরিমাণ আছে বলেই আমরা রুমালটির নীল রঙ প্রত্যক্ষ করতে পারি। রূপ প্রত্যক্ষের সময় আলােক সংযােগেরও দরকার। অন্ধজন রূপ প্রত্যক্ষ করতে পারে না। দ্রব্যের সঙ্গে রূপের সমবায় সম্বন্ধ রয়েছে। 


        রস প্রত্যক্ষ :  'রসগােল্লা মিষ্ট ’, ‘তেঁতুল অম্ল' — জিহ্বা বা রসনা ইন্দ্রিয়ের সাহায্যেই এই রকম স্বাদের প্রত্যক্ষ হয়। স্বাদ জলীয় গুণ আর জিহ্বা বা রসনা জল পরমাণু থেকে উদ্ভূত। সােজাসুজি জিহ্বা স্বাদ প্রত্যক্ষ করতে পারে না। রসগােল্লার মিষ্ট রসের স্বাদ, তেঁতুলের অম্ল স্বাদ গুণের প্রত্যক্ষের ক্ষেত্রে জিহ্বার সঙ্গে রসগােল্লা, তেঁতুলের সংযােগ ঘটে, আর ঐ জিহ্বা সংযুক্ত - সমবায় সন্নিকর্ষ থেকেই স্বাদ প্রত্যক্ষ হয়, অর্থাৎ বস্তুতে সমবেত রসের সঙ্গে জিহ্বা বা রসনার সংযুক্ত - সমবায় সন্নিকর্ষ ঘটে। অবশ্য রস প্রত্যক্ষের সময় গুণ যে দ্রব্যে সমবেত থাকে, সেই দ্রব্যটি মহৎ পরিমাণ বিশিষ্ট হওয়া চাই। 


      গন্ধ প্রত্যক্ষ: ধূপের গন্ধ প্রত্যক্ষ নাসিকা - ইন্দ্রিয়ের দ্বারাই সম্পন্ন হয়। গন্ধ হল ক্ষিতি বা পৃথিবী ভূতের গুণ এবং নাসিকা পৃথিবী পরমাণু থেকেই উদ্ভূত। সােজাসুজি নাসিকা বা ঘ্রাণ - ইন্দ্রিয় গন্ধ প্রত্যক্ষ করে না। ধূপের গন্ধ গুণ প্রত্যক্ষের সময় নাসিকার সঙ্গে ধূপের সংযােগ ঘটে, আর ঐ নাসিকা সংযুক্ত - সমবায় সন্নিকর্ষ থেকেই গন্ধের প্রত্যক্ষ হয়, অর্থাৎ, বস্তুতে সমবেত গন্ধের সঙ্গে নাসিকার বা ঘ্রাণ - ইন্দ্রিয়ের সংযুক্ত - সমবায় সন্নিকর্ষ ঘটে। অবশ্যই যাতে মহৎ পরিমাণ আছে, সেই দ্রব্যেরই গন্ধ প্রত্যক্ষ করা যায়। 


        স্পর্শ প্রত্যক্ষ: বরফের শীতল স্পর্শ প্রত্যক্ষ ত্বক - ইন্দ্রিয় দ্বারা হয়। স্পর্শ হল মরুৎ বা বায়ুর গুণ এবং ত্বক মরুৎ পরমাণু থেকেই উদ্ভূত। সােজাসুজি ত্বক স্পর্শ প্রত্যক্ষ করে না; বরফের শীতল গুণ প্রত্যক্ষের সময় ত্বকের সঙ্গে বরফের সংযােগ ঘটে, আর ঐ ত্বক সংযুক্ত - সমবায় সন্নিকর্ষ থেকেই স্পর্শের প্রত্যক্ষ হয়, অর্থাৎ বস্তুতে বস্তুতে সমবেত শীতলতার সঙ্গে ত্বকের সংযুক্ত - সমবায় সন্নিকর্ষ ঘটে। অবশ্যই যাতে মহৎ পরিমাণ আছে, সেই দ্রব্যেরই স্পর্শ প্রত্যক্ষ করা যায়। 


      শব্দ প্রত্যক্ষ : শব্দের প্রত্যক্ষ কর্ণ - ইন্দ্রিয়ের দ্বারা হয়। শব্দ ব্যোম বা আকাশ ভূতের গুণ, কিন্তু কর্ণ আকাশ পরমাণু থেকে উদ্ভূত নয়। আকাশ সর্বব্যাপী। কর্ণ - ইন্দ্রিয় হল কর্ণ গােলকের দ্বারা সীমিত আকাশ। আমরা শব্দ শুনি কান দিয়ে। শব্দ হল আকাশের গুণ। কান দিয়ে শব্দ শােনার সময় শব্দ গুণের আশ্রয় দ্রব্যরূপী আকাশের সঙ্গে সংযােগ প্রতিষ্ঠিত হয় না। তাই কানের সঙ্গে শব্দের সমবায় সন্নিকর্ষ ঘটে এবং এ থেকেই শব্দের প্রত্যক্ষ হয়। পুকুরে একটা বড় ঢিল পড়লে প্রথমে একটা ছােট্ট ঢেউ ওঠে, পরে সেটা আরও বড় হয়। এরপর এই ঢেউ আরও বাড়তে বাড়তে চারদিকে আবর্তিত হতে থাকে। ঠিক সে রকম কোন বােমার আওয়াজ হলে সেখান থেকে শব্দের তরঙ্গ বাড়তে বাড়তে যে শব্দ তরঙ্গ কানের বিবরে সৃষ্টি হবে, তাকে কান সমবায় সম্বন্ধে শুনবে। কোন শব্দ তরঙ্গই শােনা যাবে না যদি কান না থাকে।

Read More

নিরপেক্ষ ন্যায়ের ১৯টি শুদ্ধ মূর্তি বা বৈধ মূর্তি।

Leave a Comment

 প্রশ্ন:  নিরপেক্ষ ন্যায়  কাকে বলে ? ন্যায়ের বৈধ মূর্তি বলতে কী বােঝায় ? বিভিন্ন সংস্থানের বৈধ মূর্তিগুলির নাম উল্লেখ কর।

নিরপেক্ষ ন্যায়: যে অবরোহ মূলক মাধ্যম অনুমানে পরস্পর সম্পর্কিত দুটি আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্তটি অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় এবং যেখানে সিদ্ধান্তটি কখনই আশ্রয়বাক্যের কোনটির তুলনায় বেশি ব্যাপক হতে পারে না তাকে ন্যায় যুক্তি বা নিরপেক্ষ ন্যায় বলে।

 বৈধ মূতি:  বৈধ ন্যায় - গঠনের জন্য কয়েকটি নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। যেসব ন্যায়ের মূর্তিতে প্রয়োজন অনুযায়ী এইসব নিয়মগুলি যথাযথভাবে প্রয়োগ করা হয় এবং - নিমসংগতভাবে সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করা হয়, তাদের বৈধ মূর্তি বলে।

     দুটি আশ্রয়বাক্যের গুণ ও পরিমাণ অনুযায়ী চারটি সংস্থানে মোট ১৯ টি (উনিশটি)  শুদ্ধ বা বৈধ মূর্তি আছে। এগুলি হল---

প্রথম সংস্থানের বৈধ মূর্তি (চারটি)---  

(i) BARBARA (AAA) বারবারা

(ii) CELARENT (EAE) সিলারেন্ট

(iii) DARII (AII) ড্যারিয়াই

(iv) FERIO (EIO)  ফেরিও

দ্বিতীয় সংস্থানের বৈধ মূর্তি (চারটি) -

(i) CESARE (EAE) 

(ii) CAMESTRES (AEE)

 (iii) FESTINO (EIO)

(iv) BAROCO (AO0)

তৃতীয় সংস্থানের বৈধ মূর্তি (ছয়টি) ---

(i) DARAPTI (AAI)

(ii)  DISAMIS (IAI)

(iii)  DATISI (AII)

(iv) FELAPTION (EAO)

(v) BOCARDO (OAO)

(vi) FERISON (EIO)I 

চতুর্থ সংস্থানের শুদ্ধমূর্তি (পাঁচটি)---

(i) BRAMANTIP (AAI)

(ii)  CAMENES (AEE)

(iii) DIMARIS (IAI)

(iv)  FESAPO (EAO)

(v) FRESISON (EIO) 


Read More

Sunday, 6 December 2020

HS Philosophy | সাংকেতিক বা প্রতীকী যুক্তিবিজ্ঞান: সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর

Leave a Comment

 অষ্টম অধ্যায়

সাংকেতিক বা প্রতীকী যুক্তিবিজ্ঞান(SYMBOLIC LOGIC)

 সত্যাপেক্ষক বা অপেক্ষক (TRUTH FUNCTIONS)


অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর (মান -1)

১) সাংকেতিক বা প্রতীকী যুক্তিবিজ্ঞান কাকে বলে?

উঃ যে যুক্তিবিজ্ঞান সংকেত বা প্রতীক ব্যবহারের মাধ্যমে যুক্তিকে প্রকাশ করে এবং যুক্তির বৈধতা বিচার করে, তাকে সাংকেতিক বা প্রতীকী প্রযুক্তিবিজ্ঞান বলে।

২) প্রতীক বা সংকেত বলতে কী বোঝায়?

উঃ প্রতীক বা সংকেত হলো প্রতিনিধিত্বমূলক চিহ্ন যার দ্বারা কোন বাক্য বা বচনকে অথবা তার কোন অংশকে নির্দেশ করা হয়। যেমন,  ট্রাফিক সিগন্যালের লাল আলো দেখলে গাড়ি থেমে যায় আর সবুজ আলো দেখলে গাড়ি চলতে থাকে। এখানে লাল আলো গাড়ি থামার এবং সবুজ আলো গাড়ি চলার কৃত্রিম সংকেত।

) প্রতীক বা সংকেত কত প্রকার এবং কী কী? 

উঃ দুই প্রকার যথা- শাব্দিক প্রতীক এবং অশাব্দিক প্রতীক।

৪) শাব্দিক প্রতীক কাকে বলে?

উঃ যখন আমরা বিভিন্ন বস্তু বা ক্রিয়া কি বোঝানোর চেষ্টা করি তখন বিভিন্ন প্রকার শব্দ প্রতীক বা সংকেত হিসাবে কাজ করে। যেমন- একটি প্রাণীকে দেখে যখন বলা হয় 'এটি একটি বিড়াল' তখন 'বিড়াল' শব্দটি একটি বিশেষ শ্রেণীর প্রাণীকে বোঝাবার সংকেত হিসেবে কাজ করে। তেমনি চেয়ার, টেবিল, পুস্তক প্রভৃতি শব্দ প্রতীক হিসেবে গণ্য হয়। এগুলি হল শাব্দিক প্রতীক।

৫)  অশাব্দিক  প্রতীক বলতে কী বোঝ?

উঃ শব্দ নয় অথচ প্রতীক এমন যে সংকেত তাকেই বলা হয় অশাব্দিক। যেমন ইংরাজী বর্ণমালার বিভিন্ন বর্ণ a, b, c, d বা  p, q, r, s কিংবা ক-খ-গ-ঘ ইত্যাদি বর্ণ হল অশাব্দিক প্রতীক। অনুরূপভাবে গণিতের +, -, ×, ÷ ইত্যাদি চিহ্ন অশাব্দিক প্রতীক হিসেবে গণ্য হয়।

৬) প্রতীক এর গুরুত্ব কী?

উঃ সাংকেতিক যুক্তিবিজ্ঞানের অন্যতম প্রবক্তা আলফ্রেড নর্থ হােয়াইটহেডের (Whitehead) ভাষায় — প্রতীক বা সংকেত (Symbol) - এর সাহায্যে আমরা যুক্তির বিভিন্ন ধাপগুলাে এত দ্রুত সহজে অতিক্রম করতে পারি যেন মনে হয় শুধু যন্ত্রের মতােই চোখ কাজ করে যাচ্ছে, মগজের কোনাে দরকারই হচ্ছে না।

      আবার Russell- এর মতে, সাধারণ ভাষা তর্কবিজ্ঞানের পক্ষে ঠিক যথাযথ নয়। এই ভাষার মাধ্যমে সেই কারণে তর্কবিজ্ঞানে সঠিক পথও পাওয়া যায় না। তর্কবিজ্ঞানে এই সঠিক, যথাযথ এবং আরও বিশ্লেষণাত্মক আলােচনার জন্য  যুক্তিবিজ্ঞানে সংকেতের ব্যবহার অবশ্যই প্রয়ােজনীয়। সাধারণভাবে বিমূর্ত ধারণা (abstract idea) প্রকাশের ব্যাপারে সংকেতের ব্যবহার বিশেষ উপযােগী।

৭) নব্য যুক্তিবিজ্ঞানে গঠনের দিক থেকে বচনকে কয় ভাগে করাযায়?

উঃ নব্য যুক্তিবিজ্ঞানে গঠনের দিক থেকে বচনকে দুই ভাগে করা হয়েছে। যথা-

 ( i ) সরল বচন বা আণবিক বচন এবং ( ii ) যৌগিক বচন।  

৮) সরল বচন বা আণবিক বচন কাকে বলে?  

উঃ যে বচনের অন্তর্গত কোনাে অংশ স্বতন্ত্রভাবে বচন হিসাবে গণ্য হতে পারে না, অর্থাৎ, যে বচনে একটি মাত্র অবধারণ ক্রিয়া ব্যক্ত হয়, তাকে সরল বচন বলে। যেমন— সকল কাক হয় কালাে, রাম হয় বুদ্ধিমান, কোনাে কোনাে ছাত্র হয় সৎ প্রভৃতি বচনগুলি হল সরল বচন। কেননা, বচনগুলির কোনাে অংশই আলাদাভাবে বচন বলে গণ্য হতে পারে না। 

৯) যৌগিক বচন কাকে বলে?

উঃ যে বচনের অন্তর্গত এক বা একাধিক অংশ স্বতন্ত্রভাবে বচন হিসাবে গণ্য হতে পারে, তাকে যৌগিক বচন বলে । যেমন— কবিতা গান করবে এবং সবিতা নাচবে, যদি বিদ্যুৎ থাকে তাহলে আলাে জ্বলবে, রাম সৎ এবং সাহসী, আমি ভাত খাব অথবা রুটি খাব, এমন নয় যে সূর্য পশ্চিম দিকে উদিত হয় প্রভৃতি বচনগুলি হল যৌগিক বচন। কেননা, এই বচনগুলির প্রত্যেকটিতে একের অধিক সরল বচন আছে। যেমন প্রথম উদাহরণটিতে ‘কবিতা গান করবে’ আর ‘সবিতা নাচবে’ — এই দুটি অংশ বা অঙ্গ স্বতন্ত্রভাবে বচন হিসাবে গণ্য হতে পারে। উল্লেখ্য , যৌগিক বচনে চারটি বা তার বেশি উপাদান বচন থাকাও সম্ভব।

১০) অঙ্গ বা অবয়ব বা উপাদান বচন কাকে বলে?

উঃ যে সকল বচন দিয়ে একটি যৌগিক বচন গঠিত হয়, তাকে যৌগিক বচনের অঙ্গ বা অবর বা উপাদান বচন বলে। যেমন— রাম আসবে এবং শ্যাম আসবে— এই বচনটিতে রাম আসবে আর শ্যাম আসবে এই দুটি হল অঙ্গ বা উপাদান বচন। 

১১) যােজক কাকে বলে?

উঃ দুই বা ততােধিক সরল বচনের সমন্বয়ে একটি যৌগিক বচন গঠিত হয়। কাজেই, যৌগিক বচন গঠনের জন্য 'এবং’, ‘অথবা’ , ‘যদি - তাহলে’, ‘এমন নয় যে' প্রভৃতি শব্দ বা শব্দসমষ্টির প্রয়ােজন হয়। এই জাতীয় শব্দ বা শব্দসমষ্টিকে ‘যােজক’ বলা হয়। 

সংক্ষেপে, যেসব চিহ্নের মাধ্যমে যৌগিক বচনে অঙ্গবাক্যগুলিকে যুক্ত করা হয়, তাদের বলা হয় যােজক।

 ১২) গ্রাহক কাকে বলে?

উঃ যৌগিক বাক্যের অন্তর্গত উপাদান বাক্য সরল বাক্যের পরিবর্তে p, q, r, s প্রভৃতি বর্ণ ব্যবহার করা হয়। এদের গ্রাহক বলে।

 অর্থাৎ, যে প্রতীক চিহ্নের স্থানে আমরা যে কোন পদ বা বচন বসাতে পারি, তাকে বলে বচন গ্রাহক বা গ্রাহক প্রতীক বা সংক্ষেপে গ্রাহক।

১৩) যুক্তিবিজ্ঞানে গ্রাহক প্রতীককে কয় ভাগে ভাগ করা হয় এবং কী কী?

উঃ যুক্তিবিজ্ঞানে গ্রাহক প্রতীককে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা- (i)পদগ্রাহক প্রতীক এবং (ii) বচনগ্রাহক প্রতীক।

১৪) পদগ্রাহক প্রতীক কাকে বলে?

উঃ যখন বলা হয় কোন S নয় P তখন  S ও  P হল পদগ্রাহক প্রতীক।

১৫) বচনগ্রাহক প্রতীক । 

উঃ যখন বলা হয়, 'যদি p তাহলে q' তখন ‘ p ’ ও ‘ q ' হল বচনগ্রাহক প্রতীক। কারণ- p ও q- এর স্থলে যে - কােন বচন বসানাে যায় অর্থাৎ, p, q যে - কোনাে বচনই গ্রহণ করতে পারে । যেমন— p- এর স্থলে “ আমি পরিশ্রম করি এবং q- এর স্থলে ‘ আমি সফল হব ’ বসানাে হয় তাহলে আমরা একটি যৌগিক বচন পাব– “ যদি আমি পরিশ্রম করি তাহলে আমি সফল হব'। স্মরণীয় যে , নব্য যুক্তিবিজ্ঞানে যুক্তির অন্তর্গত বচন প্রতীক হিসাবে ইংরাজি ছােটো হাতের অক্ষর p, q , r , s , t প্রভৃতি বর্ণগুলি ব্যবহৃত হয়।

 ১৬)  ধ্রুবক কাকে বলে?

উঃ যৌগিক বাক্যের ক্ষেত্রে দুটি বা তার বেশি সরলবাক্যকে যুক্ত করার জন্য 'এবং', 'অথবা', 'যদি - তাহলে', 'যদি এই কেবল- যদি’ প্রভৃতি শব্দ বা শব্দসমষ্টি যােজক ( connective ) হিসাবে ব্যবহৃত হয়। প্রতীকী যুক্তিবিজ্ঞানে এইসব যােজকের পরিবর্তে যথাক্রমে  ডট (• ) , ভেল ( v) , হর্স শু (⊃) এবং ট্রিপলবার (≡)  প্রভৃতি চিহ্ন ব্যবহার করা হয় । যােজক জ্ঞাপক এই চিহ্নগুলিকে ধ্রুবক ( constan ) বলে । 

১৭) সত্যাপেক্ষ বচন কাকে বলে?

উঃ যে যৌগিক বচনের সামগ্রিক সত্য মূল্য তার অঙ্গ বচনগুলির সত্যমূল্যের উপর নির্ভরশীল, সেই যৌগিক বচনকে সত্যাপেক্ষ বচন বলে।

১৮) সত্যাপেক্ষক কাকে বলে?

উঃ সত্যাপেক্ষ বচনের আকারকে সত্যাপেক্ষক বলে। যেমন-- 'সে বুদ্ধিমান অথবা বোকা' -- সত্যাপেক্ষ এই বচনের আকারটি অর্থাৎ সত্যাপেক্ষকটি হল pv q ।

১৯) সত্যাপেক্ষ যুক্তি কাকে বলে?

উঃ যে যুক্তির অন্তত একটি অবয়ববাক্য যৌগিক বচন সেই যুক্তিকে সত্যাপেক্ষ যুক্তি বলে।

২০) সত্যসারণির নির্দেশক স্তন্ত কাকে বালে? 

উঃ সত্যসারণির অঙ্গবচনগুলি নিয়ে যে সকল স্তম্ভ গড়ে ওঠে, তাদের বলা হয় নির্দেশক স্তম্ভ।

২১) ফলস্তম্ভ বলতে কী বােঝো ? 

উঃ সত্যসারণির যে স্তম্ভটি থেকে বচনের সত্যমূল্য নির্ধারণ করা যায় তাকে ফলস্তম্ভ বলা হয়। 

২২) যৌগিক বচন বা সত্যাপেক্ষ বচন কয় প্রকার ও কী কী?

উঃ যৌগিক বচন মূলত পাঁচপ্রকার হতে পারে-

 ( i ) নিষেধক বচন 

( ii ) সংযৌগিক বচন 

 ( ii ) বৈকল্পিক বচন  

(iv) প্রাকল্পিক বচন 

 ( v ) দ্বিপ্রাকল্পিক বচন বা বস্তুগত সমমান বচন 

২৩) নিষেধক বচন কাকে বলে?

উঃ কোন বচনে যা ঘোষণা করা হয় তাকে নিষেধ করলে বা অস্বীকার করলে যে বচনটি পাওয়া যায়,  সেটিকে মূল বচনের নিষেধক বচন বলা হয়। যেমন--  'পারদ কঠিন ধাতু' -- এই বচনটি অস্বীকার করা মানে 'পারদ কঠিন ধাতু নয়' --- বচনটিকে স্বীকার করে নেওয়া বোঝায়।

মূল বচনের সঙ্গে বাংলায় নয়, নহে, নি, না ইত্যাদি শব্দ যোগ করে এবং ইংরেজিতে no, not, by no means, do not ইত্যাদি শব্দ যুক্ত করে নিষেধক বচন গঠন করা হয়।

কিন্তু প্রতীকী যুক্তিবিজ্ঞানে নয়, না (no, not) ইত্যাদি ভিন্ন ভিন্ন শব্দ ব্যবহার না করে কেবল একটি শব্দসমষ্টি মূল বচনের পূর্বে ব্যবহার করে নিষেধক বচন গঠন করা হয়। এই শব্দসমষ্টি হলো 'এমন নয় যে' (it is not the case that) যেমন--

এমন নয় যে,  রাম বুদ্ধিমান।

এমন নয় যে, বরফ শীতল।

এমন নয় যে, মৃত ব্যক্তি কথা বলতে পারে।


২৪) সংযৌগিক বচন কাকে বলে?

উঃ যে যৌগিক বচনের দুই বা ততোধিক উপাদান বচন 'এবং', 'আর' বা অনুরূপ অর্থযুক্ত শব্দের দ্বারা পরস্পর সংযুক্ত হয়, তাকে সংযৌগিক বচন বলে। সংযৌগিক বচনের অন্তর্গত উপাদান বচনগুলিকে বলা হয় সংযোগী। যেমন-

'শিশুরা সরল এবং বোকারা সরল' --- এটি একটি সংযৌগিক বচন। এখানে 'শিশুরা সরল' 'একটি সংযোগী ও 'বোকারা সরল' আর একটি সংযোগী। এই দুটি সংযোগী 'এবং' শব্দের দ্বারা যুক্ত হয়েছে।

এবং অর্থবোধক আরো কিছু শব্দ: বাংলা ভাষায় কিন্তু, ও, আর, তথাপি, যদিও, সত্ত্বেও, অধিকন্তু, আরও, তবুও, তা ছাড়া, অথচ, তার ওপর  প্রভৃতি শব্দ 'এবং’ - এর সমার্থক হিসাবে যুক্তিবিজ্ঞানে গণ্য হয় ও যােজকের কাজ করে। যেমন—  (i) সে দরিদ্র কিন্তু সৎ। (ii) রীতা শিক্ষিত অথচ বিনয়ী।


২৫) বৈকল্পিক বচন কাকে বলে?

উঃ যে যৌগিক বচনের অন্তর্গত দুই বা ততোধিক উপাদান বচনকে 'অথবা', 'নতুবা,' 'কিংবা' বা অনুরূপ অর্থবোধক শব্দের দ্বারা শর্তযুক্ত করা হয়, তাকে বৈকল্পিক বচন বলে।

 যেমন-- 'আমি মাছ খাব অথবা মাংস খাব' --- এটি একটি বৈকল্পিক বচন। এই বচনের দুটি বিকল্প আছে - (১) আমি মাছ খাব, আর (২) আমি মাংস খাব।  এক্ষেত্রে বিকল্প দুটি 'অথবা' শব্দের দ্বারা যুক্ত হয়েছে।

'অথবা' অর্থবোধক আরো কিছু শব্দ: 'কিংবা', 'বা', 'নতুবা', 'নচেৎ',  না- হয়', 'পক্ষান্তরে', 'যদি - না' প্রকৃতির শব্দ বৈকল্পিক যোজক হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

২৬) একটি বৈকল্পিক বচনে সর্বাধিক কয়টি বিকল্প থাকতে পারে? 

উঃ দুই - এর অধিক বিকল্প থাকতে পারে ।

২৭) প্রাকল্পিক বচন বা সংশ্লেষকমূলক বচন কাকে বলে?

উঃ যে যৌগিক বচনের দুটি অঙ্গবচন বা উপাদান বাক্য 'যদি - তাহলে' বা এই জাতীয় কোন শর্তের দ্বারা যুক্ত হয়, তাকে প্রাকল্পিক বচন বলে। প্রাকল্পিক বচনের দুটি অংশ থাকে --পূর্বগ এবং অনুগ।

পূর্বগ: প্রাকল্পিক বচনের যে অংশে শর্তের উল্লেখ থাকে অর্থাৎ, 'যদি'-র পরে যে উপাদান বচনটি থাকে তাকে পূর্বগ বা পূর্বকল্প বলে।

অনুগ: প্রাকল্পিক বচনের যে অংশে মূল বক্তব্যটি উল্লিখিত হয় অর্থাৎ, 'তাহলে' -র পরে যে উপাদান বচনটি থাকে তাকে অনুগ বা অনুকল্প বলে।

উল্লেখ্য প্রাকল্পিক বাক্যে 'যদি' ও 'কেবল যদি' এই দুটি শব্দেরও ব্যবহার হয়। 'যদি' শব্দটি দুটি বাক্যের মাঝখানে থাকলে পূর্বগ ও অনুগ স্থান পরিবর্তন করে অর্থাৎ, 'যদি'-র ক্ষেত্রে 'যদি'-র সঙ্গে যুক্ত অংশটি পূর্বগ হয়। যেমন-- 

মাটি ভিজবে যদি বৃষ্টি হয়।

= যদি বৃষ্টি হয় তাহলে মাটি ভিজবে

কিন্তু 'কেবল যদি' শব্দটি দিয়ে দুটি বাক্য যুক্ত হলে পূর্বগ ও অনুগের কোন স্থান পরিবর্তন হবে না। যেমন--

 রাম আসবে কেবল যদি শ্যাম আসে।

= যদি রাম আসে তাহলে শ্যাম আসবে।

২৭) দ্বিপ্রাকল্পিক বচন কাকে বলে ? 

উঃ যে সত্যাপেক্ষ বচনের অঙ্গবাক্য দুটি ‘যদি এবং কেবল যদি’ শব্দ দ্বারা যুক্ত থাকে তাকে দ্বিপ্রাকল্পিক বচন বলা হয় । যেমন — বৃষ্টি হবে যদি এবং কেবল যদি মেঘ করে। 

২৮) নিষেধক বচনকে সত্যাপেক্ষ বচন বলা হয় কেন? 

উঃ কারণ মূল বচনের সত্যমূল্য জানা থাকলে নিষেধক বচনের  সত্যমুল্য সুনিশ্চিতভাবে নির্ণয় করা যায়।

২৯) নিষেধের নিষেধ কাকে বলা হয় ? 

উঃ কোনো নিষেধক বচনকে পুনরায় নিষেধ করাকেই নিষেধের নিষেধ বলা হয়। যেমন — p এর নিষেধ ~ p । আবার ~p -এর নিষেধ অর্থাৎ নিষেধের নিষেধ হল ~~ p । 

৩০) সমমান বা সমসমান বচন কাকে বলে? 

উঃ যদি দুটি বচন বা বচনাকারের সত্যমূল্য এক হয় অর্থাৎ যদি উভয়ই সত্য কিংবা উভয়েই মিথ্যা হয় তখন বচন দুটিকে সমমান বচন বলা হয়।

 

৩১) সত্যাপেক্ষক যােজক কাকে বলে? 

সত্যাপেক্ষক বচনে ব্যবহৃত বিভিন্ন সংযােজক বা যােজকগুলিকে সত্যাপেক্ষক যােজক বা সত্যাপেক্ষক সংযােজক বলে । 

৩১) সত্যাপেক্ষক যােজক হিসেবে ব্যবহৃত ধ্রুবক কয়টি ও কী কী ?

 উঃ পাঁচটি । যথা— কার্ল বা নেগেশন ( ~ ), ডট ( • ), ভেল (v), হর্স শু ( ⊃) এবং ট্রিপলবার (≡)। 

৩২) স্থায়ী সংকেতগুলি কী নামে পরিচিত ?

 উঃ ধ্রুবক ।

 ৩৩)  অস্থায়ী সংকেতগুলি কী নামে পরিচিত?

 উঃ বর্ণপ্রতীক এবং বাক্য - প্রতীক। 

৩৪) বচনাকার কাকে বলে?

 উঃ একাধিক পদ-গ্রাহক প্রতীকের পর্যায়ক্রমকে বচনাকার বলে। 

যেমন-  p v  q

39. নিবেশন দৃষ্টান্ত কাকে বলে ? 

 উঃ একটি বচনাকার থেকে প্রাপ্ত একাধিক বচনগুলিকে নিবেশন দৃষ্টান্ত বলা হয় । যেমন- p এই বচনাকার থেকে রাম হয় বিদ্বান, সকল ফুল হয় সুন্দর, সুমনা হয় বুদ্ধিমতী ইত্যাদি বচন পাওয়া যেতে পারে।

৪০) বচনের সত্যমূল্য বলতে কী বােঝায় ? 

উঃ বচনের সত্যমূল্য বলতে বােঝায় বচনটির সত্যতা অথবা মিথ্যাত্বকে। 

৪১) সংযৌগিক বচন কখন সত্য হয়? 

উঃ সংযৌগিক বচনের সমস্ত সংযােগী সত্য হলে সংযৌগিক বচন সত্য হয়। 

৪২) সংযৌগিক বচন কখন মিথ্যা হয়? 

উঃ সংযৌগিক বচনের একটি সংযােগী মিথ্যা হলে সমগ্র সংযৌগিক বচনটি মিথ্যা হয়। 

৪৩) বৈকল্পিক বচন কখন সত্য হয়? 

উঃ বৈকল্পিক বচনের যে - কোনাে একটি বিকল্প সত্য হলে বৈকল্পিক বচন সত্য হয়। 

৪৪) বৈকল্পিক বচন কখন মিথ্যা হয়? 

 উঃ বৈকল্পিক বচনের সমস্ত বিকল্পগুলি মিথ্যা হলে বৈকল্পিক বচন মিথ্যা হয়।

 ৪৫) প্রাকল্পিক বচন কখন সত্য হয়? 

উঃ পূর্বর্গ সত্য ও অনুগ সত্য হলে অথবা পূর্বগ মিথ্যা ও অনুগ সত্য হলে অথবা পূর্বগ মিথ্যা ও অনুগ মিথ্যা হলে প্রাকল্পিক বচন  সত্য হয়। 

৪৬) প্রাকল্পিক বচন কখন মিথ্যা হয়? 

উঃ প্রাকল্পিক বচনের পূর্বগ সত্য এবং অনুগ মিথ্যা হলে প্রাকল্পিক বচন মিথ্যা হয়। 

৪৭) একটি দ্বিপ্রাকল্পিক বচন কখন সত্য হয়? 

উঃ দ্বিপ্রাকল্পিক বচনের উভয় অঙ্গবাক্য একইসঙ্গে সত্য হলে বা একই সঙ্গে মিথ্যা হলে দ্বিপ্রাকল্পিক বচন সত্য হয়।

৪৮) কখন একটি দ্বিপ্রাকল্লিক বচন মিথ্যা হয় ? 

উঃ দ্বিপ্রাকল্পিক বচনের একটি অঙ্গবাক্য সত্য এবং অন্যটি মিথ্যা হলে দ্বিপ্রাকল্পিক বচন মিথ্যা হয়। 

৪৯) সমমান বচন কখন সত্য হয় ?

 উঃ দুটি অংশই একসঙ্গে সত্য বা মিথ্যা হলে সমমান বচন সত্য হয়।

৫০) সমমান বচন কখন মিথ্যা হয়?

উঃ একটি অংশ সত্য বা মিথ্যা এবং অপর অংশ মিথ্যা বা সত্য হলে সমমান বচন মিথ্যা হয়। 

৫১) একটি বৈকল্পিক বচনের নিষেধ কী বচন হয়? 

 উঃ সংযৌগিক বচন। 

৫২) সংযেীগিক বচন কি সত্যাপেক্ষ বচন? 

উঃ হ্যাঁ, সংযৌগিক বচন সত্যাপেক্ষ বচন। কেননা এর সত্যমূল্য বচনের দুটি সংযোগীর সত্যতা বা মিথ্যাত্বের উপর নির্ভরশীল। 

৫৩) প্রাকল্পিক বচনকে সত্যাপেক্ষ বচন বলা হয় কেন? 

উঃ প্রাকল্পিক বচনের সত্যতা বা মিথ্যাত্ব তার পূর্বগ ও অনুগের সত্যতা বা মিথ্যাত্বের উপর নির্ভর করে বলে একে সত্যাপেক্ষ বচন বলা হয়।

 ৫৪) সত্যসারণিতে চারটি গ্রাহক থাকলে কটি সারি হবে? 

উঃ ১৬ টি সারি। 

৫৫) সত্যমূল্য কয় প্রকার? 

তিন প্রকার । যথা — সত্য , মিথ্যা ও আপতিক ।

 ৫৬) ‘এমন নয় যে' থাকলে যে প্রতীকচিহ্ন বসে তার নাম কী? 

উঃ কার্ল বা নেগেশন ( ~ )। 

৫৭) ~p- এর মান কখন সত্য হয়? 

উঃ  p- এর মান মিথ্যা হলে। 

৫৮) p.q কখন সত্য হয়?

উঃ  p ও q উভয়েই সত্য হলে।

 ৫৯) pvq কখন মিথ্যা হয়? 

উঃ p ও q উভয়ই যখন মিথ্যা হয়।

৬০) স্বতঃসত্য বচনাকার কাকে বলে?

উঃ যে বচনাকারের অন্তর্গত সব নিবেশন দৃষ্টান্ত সত্য হয় অর্থাৎ, যে বচনাকারের সত্য ছাড়া মিথ্যা নিবেশন দৃষ্টান্ত হতে পারে না, তাকে স্বতঃসত্য বচনাকার বলা হয়। যেমন- p v ~p ' হল একটি স্বতঃসত্য বচনাকার। 

৬১) স্বতঃমিথ্যা বচনাকার কাকে বলে?

উঃ যে বচনাকারের অন্তর্গত সব নিবেশন দৃষ্টান্ত মিথ্যা হয় অর্থাৎ যে বচনাকারের মিথ্যা ছাড়া সত্য নিকেশন দৃষ্টান্ত হতে পারে না, তাকে স্বতঃমিথ্যা বচনাকার বলা হয়। যেমন- ‘ p • ~ p ' হল একটি স্বতঃমিথ্যা বচনাকার। 

৬২) আপতিক বা অনির্দিষ্ট মান বা পরতঃসাধ্য বচনাকার বলে?

উঃ যে বচনাকারের অন্তর্গত নিবেশন দৃষ্টান্ত ক্ষেত্র অনুসারে সত্য হতে পারে আবার মিথ্যাও হতে পারে, তাকে আপতিক বচনাকার বলে। অর্থাৎ, যে বচনাকারের সত্য ও মিথ্যা উভয়প্রকার নিবেশন দৃষ্টান্ত থাকে, তাকে আপতিক বচনাকার বলে।  যেমন—  p • q হল একটি আপতিক বচনাকার। 



 




Read More