Monday, 18 January 2021

Education ( শিক্ষাবিজ্ঞান) প্রশ্ন : শিক্ষার বৃত্তিমূলক লক্ষ্য, গণতান্ত্রিক লক্ষ্য, ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্য এবং সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্য বলতে কী বোঝ? এই লক্ষ্যগুলির সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি লেখো।

Leave a Comment

 প্রশ্ন : শিক্ষার বৃত্তিমূলক লক্ষ্য, গণতান্ত্রিক লক্ষ্য, ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্য এবং সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্য বলতে কী বোঝ? এই লক্ষ্যগুলির সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি লেখো।

OR, শিক্ষার  বৃত্তিমূলক  লক্ষ্য বলতে কী বোঝ? এই লক্ষ্যের সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি লেখো।

 OR, শিক্ষার   গণতান্ত্রিক  লক্ষ্য বলতে কী বোঝ? এই লক্ষ্যের সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি লেখো।

OR, শিক্ষার ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্য বলতে কী বোঝ? এই লক্ষ্যের সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি লেখো।

OR, শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্য বলতে কী বোঝ? এই লক্ষ্যের সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি লেখো।

উঃ 

ভূমিকা : শিক্ষা একটি গতিশীল প্রক্রিয়া এবং এই গতিশীল প্রক্রিয়ার জন্য নির্দিষ্ট। কোনাে লক্ষ্য নির্ধারণ করা খুবই কঠিন। তাই বিভিন্ন দেশের মনীষীরা বিভিন্ন দিকের উৎকর্ষ সাধনের জন্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকমের লক্ষ্যের কথা বলেছেন। যেমন বৃত্তিমূলক লক্ষ্য, সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্য, গণতান্ত্রিক লক্ষ্য, ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্য ইত্যাদি।

 বৃত্তিমূলক লক্ষ্য : প্রাচীনকালের জীবনযাত্রা ছিল অত্যন্ত সহজ, সরল। তাই জীবন  ধারণের জন্য জটিল কৌশল আয়ত্ত করতে হতাে না। কিন্তু বর্তমানকালে সমাজে জটিলতা বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের অধিক অভিজ্ঞতার প্রয়ােজন পড়ছে। পিতামাতার একার পক্ষে এই জটিল পরিস্থিতির জন্য স্বার্থক অভিযােজনের শিক্ষাপ্রদান সম্ভব না হওয়ার ফলে শিক্ষা হয়ে উঠল নিয়মতান্ত্রিক। বর্তমানকালে যে সকল অভিজ্ঞতাগুলি শিক্ষার্থীকে গ্রহণ করতে হয়, তাদের মধ্যে বৃত্তির উপযােগী করে গড়ে তােলার শিক্ষা হলাে অন্যতম। 

শিক্ষার যে সমস্ত লক্ষ্য শিশুকে ভবিষ্যতের বৃত্তি অর্জনের জন্য প্রস্তুত করে তােলে তাকেই বৃত্তিমূলক শিক্ষা বলে। এই লক্ষ্যের মূল উদ্দেশ্যই হলাে শিক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তিকে উপার্জনক্ষম করে তােলা। অথাৎ শিক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তিকে এমন কতকগুলি কর্মদক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা যার দ্বারা সে জীবিকা অর্জনে সক্ষম হয়। 

শিক্ষার বৃত্তিমূলক লক্ষ্যের সুবিধা : বৃত্তিমূলক লক্ষ্যের সুবিধাগুলি হলাে—

 ক) এই ধরনের শিক্ষার মধ্য দিয়ে ব্যক্তির অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য আনা ও বজায় রাখা  সম্ভব হয়। সমালােচক সুশীল রায় বলেছেন, এই আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যের ফলে স্বাভাবিকভাবে ব্যক্তির আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে, তার উদারতা আসবে এবং তার মধ্যে নীতিবােধ জাগ্রত হবে।

 খ) বৃত্তিমূলক লক্ষ্য শিক্ষাকে বহুলাংশে মনােবিদ্যাসম্মত করে তােলে। মনােবিদগণের মতে, ব্যক্তি যখন নিজে তার কাজের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে সচেতন হন তাহলে ব্যক্তিব মধ্যে সেই কাজ বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। সমালােচক সুশীল রায় বলেছেন, বৃত্তিমুখী লক্ষ্য, শিক্ষার্থীর শিক্ষাকালীন আচরণকে তার কাছে অনেক বেশী অর্থপূর্ণ এবং সহজ করে তােলে।

 গ) শিশুকে কর্মকেন্দ্রিক এবং কর্মের প্রতি মর্যাদাবােধের বিকাশে বৃত্তিমূলক শিক্ষা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। সকলপ্রকার শিশুদের ক্ষেত্রেই এই শিক্ষা বিশেষ উপযােগী।

ঘ) সমালােচক সুশীল রায়ের ভাষায় বলা যায়, শিক্ষা যদি বৃত্তিমূলক দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যাভিমুখী হয়, তাহলে সেই শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে সামাজিক যােগ্যতাসম্পন ব্যক্তিত্বেও রূপান্তরিত করা সহজ হয়। কারণ এই শিক্ষার সহায়তায় শিক্ষার্থী পরবর্তীজীবনে সফলভাবে সামাজিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে তার প্রয়ােজনীয়তাকে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়।

শিক্ষার বৃত্তিমূলক লক্ষ্যের অসুবিধা বা ত্রুটি: বৃত্তিমূলক শিক্ষার লক্ষ্যের সীমাবদ্ধতাগুলি হলাে— 

ক) উপার্জনশীল হওয়াই জীবনের একমাত্র লক্ষ্য নয়, কিছু অতিরিক্ত বৃত্তিমূলক শিক্ষা মানুষের দিগন্তকে সীমিত করে তােলে। 

খ) সার্থক জীবনযাপন বলতে বৃত্তিমূলক শিক্ষায় অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্যকেই বােঝানাে হয় — যা কখনই সুষ্ঠু সমাজের কাম্য নয়। 

গণতান্ত্রিক লক্ষ্য : গণতন্ত্র বলতে বােঝায় সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা। স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই আমাদের দেশ তথা ভারতবর্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে পরিচিত। অর্থাৎ এই দেশের সকল নাগরিকেরই সমান অধিকারের সাথে এবং স্বাধীনভাবে একত্রিত হয়ে বসবাস করার অধিকার রয়েছে। তাই এই দেশের প্রতিটি নাগরিকেরই কর্তব্য হলাে এই সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা বজায় রাখা, যা শিক্ষার মাধ্যমেই সম্ভব। অথাৎ দেশের নাগরিকদের মধ্যে সাম্য, মৈত্রী ও স্বাধীনতা বােধের বিকাশে শিক্ষার ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযােগ্য। 

সুতরাং শিক্ষার গণতান্ত্রিক লক্ষ্য বলতে বােঝায়, দেশের নাগরিকদের মধ্যে পারস্পরিক  সৌহার্দ্য ও সমতা বজায় রাখার ধ্যানধারণার বিকাশ ঘটানাে, সুষ্ঠু নাগরিক প্রস্তুত করা এবং সুনাগরিকদের দ্বারা পরিচালিত সুষ্ঠু দেশ গঠন করা ।

শিক্ষার গণতান্ত্রিক লক্ষের সুবিধা : গণতান্ত্রিক শিক্ষার সুবিধাগুলি হলাে—

 ক) এই শিক্ষার মাধ্যমে নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্যহীন মনােভাব প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়। 

খ) পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের মনােভাব গঠনে গণতান্ত্রিক শিক্ষা বিশেষভাবে পালন করে। 

গ) দেশের সম্পদকে সুষ্ঠভাবে ব্যবহারের শিক্ষা প্রদান করতে সাহায্য করে।

 ঘ) গণতান্ত্রিক শিক্ষা এক শােষণ ও বঞ্চনাহীন সমাজ সৃষ্টিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। 

চ) প্রতিটি শিক্ষার্থীকে দেশের সুযােগ্য নাগরিক রূপে গড়ে তুলতে এবং দেশের ঐতিহ্যের প্রতি মর্যাদা সৃষ্টিতে গণতান্ত্রিক শিক্ষার ভূমিকা অনস্বীকার্য।

শিক্ষার গণতান্ত্রিক লক্ষ্যের অসুবিধা বা ত্রুটি : গণতান্ত্রিক শিক্ষার লক্ষ্যের ত্রুটি বা সীমাবদ্ধতার দিকগুলি হলাে— 

ক)  সমাজ ও দেশের সুখ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অনেক সময়ই ব্যক্তি - স্বার্থ উপেক্ষিত হয়। 

খ) অতিরিক্ত পরিমাণে দেশপ্রীতি মানুষকে স্বার্থপর ও নিজের ভৌগােলিক সীমাকেন্দ্রিক করে তােলে।


শিক্ষার ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্য : শিক্ষার লক্ষ্য এক নয়, বহু। যুগে যুগে বিভিন্ন দার্শনিক ও শিক্ষাবিদ শিক্ষার প্রকৃত লক্ষ্য নির্ধারণ করতে গিয়ে ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদী এবং সমাজতন্ত্রবাদী — এই দুটি গােষ্ঠীতে বিভক্ত হয়েছে। যেসব শিক্ষাবিদ শিক্ষার লক্ষ্য হিসেবে ব্যক্তির ব্যক্তিগত বিকাশকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন, তাঁদের বলা হয় ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদী। ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদীদের মত অনুযায়ী শিক্ষার লক্ষ্য হল ব্যক্তির সম্ভাবনাময় ব্যক্তিত্বের যথাযথ বিকাশসাধন। এক্ষেত্রে ব্যক্তির দৈহিক, মানসিক, নৈতিক, আধ্যাত্মিক এবং বৃত্তিমূলক দিকের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। এখানে শিক্ষার কেন্দ্রে রয়েছে ব্যক্তি। তাই বলা হয় , শিক্ষার যে লক্ষ্য ব্যক্তির সামগ্রিক বিকাশে সহায়ক হয় এবং ব্যক্তির যাবতীয় প্রয়ােজন বা চাহিদাপূরণে সাহায্য করে , তাকেই শিক্ষার ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্য বলে। শিক্ষার ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্যের সমর্থকদের মধ্যে  রয়েছেন স্যার পার্সি নান, বাট্রান্ড রাসেল, স্বামী বিবেকানন্দ প্রমুখ। 

শিক্ষার ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্যের যেসব গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায় সেগুলি হল—

 (১) শিক্ষার লক্ষ্য নিরূপণের ক্ষেত্রে ব্যক্তি হল কেন্দ্রবিন্দু, (২) ব্যক্তিগত পার্থক্যকে গুরুত্ব দেওয়া, (৩) শিক্ষার মধ্য দিয়ে ব্যক্তির চাহিদা পূরণ করা এবং (৪) ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রেখে তার বিকাশ ঘটানাের চেষ্টা।

শিক্ষার ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্যের সুবিধা:

 (1) মানবশিশু পৃথিবীতে জন্মলাভ করে কতকগুলি বৈশিষ্ট্য নিয়ে। এই বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে কতকগুলি সাধারণ এবং কতকগুলি বিশেষ প্রকৃতির হয়। কেবলমাত্র ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষাই বিশেষ প্রকৃতির বৈশিষ্ট্যগুলিকে বিকশিত করতে এবং সংরক্ষণ করতে সমর্থ হয়। 

(2) শিশু পৃথিবীতে আবির্ভাবের মুহূর্তে সম্পূর্ণ নিষ্কলুষ অবস্থায় থাকে। পরিবেশই তাকে কলুষিত করে। তাই সমাজ - পরিবেশের বাইরে তাকে ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষায় শিক্ষিত করলে সে উন্নত ব্যক্তিত্বের অধিকারী হতে পারে। 

(3) প্রতিটি ব্যক্তিই একক সত্তা। দলগত পদ্ধতির সাহায্যে সকলকে একসাথে না পড়িয়ে ব্যক্তিকেন্দ্রিক পদ্ধতির সাহায্যে পাঠদান করলে প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্বকীয়তা বজায় থাকে এবং তারা নিজ নিজ ক্ষমতা অনুযায়ী শেখার সুযােগ পায়।

 (4) মানবজীবনের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হল আত্মােপলদ্ধি। আত্মােপলদ্ধি দ্বারাই ব্যক্তির মধ্যে পরিপূর্ণতা আসে। ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষার মধ্য দিয়ে এই কাজটি ( আত্মােপলব্ধি ) সহজেই সম্পন্ন করা যায়। 

(5) ব্যক্তির দ্বারা সমাজ গঠিত হয়। তাই ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষার মাধ্যমে ব্যক্তির উন্নতি ঘটলে সমাজেরই উন্নতি হবে। 

শিক্ষার ব্যক্তিতান্ত্রিক লক্ষ্যের অসুবিধা বা ত্রুটি :

(1) অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যক্তিকে স্বার্থপর ও আত্মকেন্দ্রিক করে তােলে। ব্যক্তি তখন সমাজের কল্যাণের পরিবর্তে ব্যক্তিগত কল্যাণকে বড়াে করে দেখে ।

(2) ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষায় ব্যক্তিকে সর্বপ্রকার স্বাধীনতা দেওয়া হয়। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই ব্যক্তি সেই স্বাধীনতার অপব্যবহার করে। 

(3) সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষা অসম্ভব। ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষা সমাজের মধ্যেই ঘটে, তাই ব্যক্তিকেন্দ্রিক শিক্ষা পরােক্ষভাবে সমাজের ওপর নির্ভরশীল।

 (4) ব্যক্তিকেন্দ্রিক লক্ষ্যের সমর্থনে মনােবিজ্ঞানের যে তত্ত্ব রয়েছে তা ত্রুটিমুক্ত নয়। কারণ ব্যক্তি ও সমাজের মিথস্ক্রিয়ার ফলেই ব্যক্তিত্বের বিকাশ সম্ভব হয়। 

(5) প্রত্যেকের জন্য পৃথক শিক্ষা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং জটিল। শিক্ষার ব্যক্তিকেন্দ্রিক বিকাশের সুবিধা ও অসুবিধাগুলির সাপেক্ষে এই কথা বলা যায় যে, কেবল ব্যক্তিকেন্দ্রিক লক্ষ্যের মাধ্যমে শিক্ষার আধুনিক লক্ষ্যপূরণ তথা জাতীয় বিকাশ সম্ভব নয়।

শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্য : শিক্ষার লক্ষ্য এক নয়, বহু। যুগে যুগে বহু দার্শনিক এবং শিক্ষাবিদ শিক্ষার প্রকৃত লক্ষ্য নির্ধারণ করতে গিয়ে ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদী এবং সমাজতন্ত্রবাদী — এই দুই গােষ্ঠীতে বিভক্ত হয়েছেন। যেসব শিক্ষাবিদ শিক্ষার লক্ষ্য হিসেবে সামাজিক দিকের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন তাদের বলা হয় সমাজতবাদী। তাঁরা মনে করেন সমাজের বাইরে ব্যক্তির পৃথক কোনাে অস্তিত্ব নেই। সামাজিক চাহিদা ও প্রত্যাশাপূরণের মধ্য দিয়েই ব্যক্তির চাহিদা ও প্রত্যাশাপূরণ সম্ভব। একইভাবে সমাজের অগ্রগতি ও উন্নয়ন হলেই ব্যক্তির অগ্রগতি ও উন্নয়ন নিশ্চিত হয়। তাই সমাজই হবে শিক্ষার লক্ষ্যের ভিত্তি। শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক মতবাদের সমর্থকদের মধ্যে হাবার্ট স্পেনসার, রস, ডিউই, গান্ধিজি প্রমুখের নাম বিশেষ উল্লেখযোগ্য। 

শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্যের বৈশিষ্ট্যগুলি হল— 

1) সমাজকে বাদ দিয়ে ব্যক্তির আলাদা অস্তিত্ব নেই। তাই সমাজের যা লক্ষ্য ব্যক্তি লক্ষ্যও তাই হবে। 

2) সমাজের কল্যাণ হলে ব্যক্তির কল্যাণ হবে।

 3) সমাজই ব্যক্তিকে নিরাপত্তা দিতে পারে।

 4) সামাজিক চাহিদা এবং আশা - আকাঙ্ক্ষা পূরণই হবে শিক্ষার কাজ।

  শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্যের সুবিধা

(1) সমাজজীবন ব্যক্তিকে সবধরনের নিরাপত্তার আশ্বাস দেয় এবং তার সামনে ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়। 

(2) সমাজ পরিবেশই বংশানুক্রমে অর্জিত অতীতের সুন্দর ও সফল অভিজ্ঞতাগুলি ব্যক্তি সামনে  অনুশীনের জন্য তুলে ধরে। 

(3) সামাজিক রীতিনীতি এবং অনুশাসনগুলি ব্যক্তির আচরণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ব্যক্তি ও সমাজের কল্যাণ সাধন করে।

 (4) সমাজের সভ্য হিসেবে প্রতিটি ব্যক্তি সমাজের যাবতীয় সুযােগসুবিধা ভােগ করে। শুধু তাই নয়, এই সুযােগ সুবিধাকে ব্যক্তি তার আশা - আকাঙ্ক্ষার পরিতৃপ্তির কাজে ব্যবহার করে। 

(5) সমাজ দুর্বল এবং সর্বল সব ধরনের ব্যক্তিকেই আশ্রয় দেয় এবং সবারই মঙ্গল কামনা করে। 

(6) এমন কতকগুলি দায়িত্ব থাকে যা এককভাবে কোনাে ব্যক্তির পক্ষেই সম্পাদন করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে সমাজ বা রাষ্ট্র ওই কাজের দায়িত্ব নেয়। ফলে সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্যই বলবৎ হয়।

 শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্যের ত্রুটি বা অসুবিধা : 

(1) শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্যে সমাজের চাহিদা, আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের ওপর অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়। ব্যক্তির সামর্থ্য, চাহিদা, ইচ্ছা - অনিচ্ছা অবহেলিত হয়। এর ফলে ব্যক্তির যেমন কল্যাণ হয় না, তেমনি সমাজেরও কল্যাণ সাধিত হয় না। 

(2) শিক্ষার লক্ষ্য হিসেবে সমাজতান্ত্রিক মতবাদের প্রাধান্য রাষ্ট্রপ্রধানদের স্বেচ্ছাচারিতার সুযােগ করে দেয়, গণতন্ত্র অবহেলিত হয়। এই ধরনের শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষক, ছাত্র — সকলের মধ্যেই স্বেচ্ছাচারিতার মানসিকতা তৈরি হয়। 

(3) শিক্ষার লক্ষ্য হিসেবে সমাজতান্ত্রিকতার ওপর খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়ায় ব্যক্তিস্বাধীনতা ক্ষুন্ন হয়। ব্যক্তির সৃজনশীলতা বিকাশের পথে বাধার সৃষ্টি হয়। 

(4) পুরােপুরি সমাজতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থায় ব্যক্তির আত্মবিকাশের পথ রুদ্ধ হয়, ফলে ব্যক্তির মধ্যে ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হয়। সমস্ত মানুষের মধ্যে পুঞ্জীভূত এই ক্ষোভ পরে বিদ্রোহের আকার ধারণ করতে পারে ।


<<<<<<<<<<<<<< The End >>>>>>>>>>>>

Read More

Sunday, 10 January 2021

MCQ আরোহ অনুমানের স্বরূপ বা প্রকৃতি

Leave a Comment

 আরোহ অনুমানের স্বরূপ বা প্রকৃতি

বহুবিকল্প ভিত্তিক প্রশ্ন উত্তর (MCQ)

  ১)  যে উপমাযুক্তির সাদৃশ্যগুলি প্রাসঙ্গিক, অকৃত্রিম, নিজস্ব ধর্মবিশিষ্ট তাকে বলা হয়— 

(a) মন্দ উপমা  (b✓) ভালাে বা উত্তম উপমা  (c) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান (d) লৌকিক আরােহঅনুমান 

) উপমাযুক্তির সিদ্ধান্তটি হবে—

(a) সুনিশ্চিত (b ✓)  সম্ভাব্য (c) বৈধ (d) অবৈধ

 ৩) একটি বিশেষ সত্য থেকে অন্য একটি বিশেষ সত্যে উপনীত হওয়া যায়

 (a) অবরােহ অনুমানে  (b) লৌকিক অনুমানে (c✓ ) উপমা অনুমানে (d) কোনােটিই নয় । 

) উপমাযুক্তি উত্তম উপমারূপে গণ্য হয় যখন---

 (a✓) উপমেয় বিষয়গুলি প্রাসঙ্গিক হয়

 (b) উপমেয় বিষয়গুলি অপ্রাসঙ্গিক হয়

 (c) উপমেয় বিষয়গুলির বাস্তবিকতা থাকে না

 (d) উপমেয় বিষয়গুলি অনুমেয় হয়। 

)  মানুষের মতাে গাছপালার জন্ম, বৃদ্ধি, ক্ষয় ও মৃত্যু আছে। বুদ্ধি আছে। অতএব গাছপালারও বুদ্ধি আছে। এটি একটি—

 (a) লৌকিক আরােহ (b✓) উপমাযুক্তি (c) বৈজ্ঞানিক আরােহ (d) অবরােহ যুক্তি ।

 ৬) পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানাে রুটি— এটি একটি---

 (a✓) মন্দ উপমা (b) ভালাে উপমা (c) যৌক্তিক উপমা (d) কোনােটিই নয় 

৭) উপমাযুক্তির সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হল— 

 (a) সাদৃশ্যের সংখ্যা (b✓) সাদৃশ্যের প্রাসঙ্গিকতা (c) ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য উত্তরমালা  (d) ব্যক্তিগত সাদৃশ্য।

) অপসারণ, সংজ্ঞপ্রদান ইত্যাদি হল ------- আরােহ অনুমানে অনুসৃত প্রক্রিয়া।

 (a✓) বৈজ্ঞানিক ( b ) সাদৃশ্যমূলক ( c ) লৌকিক ( d ) কারণভিত্তিক ।

 ৯) অবৈজ্ঞানিক আরােহে বিশ্লেষণ করা হয় না------

 (a) সাদৃশ্য (b) পর্যবেক্ষণ (c) পরীক্ষণ (d✓) কার্যকারণ নীতি । 

১০) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের অপর নাম হল ----

(a) পূর্ণ গণনামূলক আরােহ অনুমান । 

(b✓) অপূর্ণ গণনামূলক আরােহ অনুমান

 (c) সাদৃশ্যমূলক আরােই অনুমান 

(d) বৈসাদৃশ্যমূলক আরােহ অনুমান।

 ১১) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে শিশুসুলভ আরােহ অনুমান বলেছেন ---

(a✓) বেকন (b) জর্জ বুল  (c) ভেন (d) কান্ট । 

১২) অপূর্ণ গণনামূলক আরােহ অনুমান বলা হয়— 

(a) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে

 (b✓) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে

 (c) মিশ্র যুক্তিকে 

(d) নিরপেক্ষ যুক্তিকে।

 ১৩) লৌকিক আরােহ যুক্তির ভিত্তি হল—

 (a) পর্যবেক্ষণমূলক অভিজ্ঞতা (b) পরীক্ষণমূলক অভিজ্ঞতা (c✓) অবাধ অভিজ্ঞতা (d) সবকটি ঠিক

 ১৪) প্রসক্তি সম্বন্ধ থাকে না যে যুক্তিতে তা হল--

 ( a ) অবরােহ যুক্তি (b✓) আরােহ যুক্তি (c) উপমাযুক্তি (d) কোনােটিই নয়।


 ১৫) ‘অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটে---

 (a) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানে (b✓) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানে (c) উপমা যুক্তি তে ( d ) সবকটি ঠিক ।

১৬) আরােহ অনুমান হল— 

( a ) বিশেষ থেকে বিশেষে যাওয়ার প্রক্রিয়া

 ( b ) সামান্য থেকে সামান্যতে যাওয়ার প্রক্রিয়া

 ( c ) সামান্য থেকে বিশেষে যাওয়ার প্রক্রিয়া

 (d✓) বিশেষ থেকে সামান্যতে যাওয়ার প্রক্রিয়া ।

 ১৭) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল—

 (a) পর্যবেক্ষণ (b✓) প্রকৃতির একরূপতা নীতি  (b) অবাধ অভিজ্ঞতা  (d) পরীক্ষণ।

১৮) আরােহ যুক্তির উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন 

(a✓) মিল (b) কান্ট  (c) প্লেটো (d) লক। 

১৯) যে যুক্তির সিদ্ধান্ত হেতুবাক্যকে অতিক্রম করে যায় তা হল---

 (a) অবরােহ যুক্তি (b✓) আরােহ যুক্তি (c) উপমাযুক্তি (d) কোনােটিই নয় । 

২০) যে যুক্তির গতি বিশেষ থেকে সার্বিকের দিকে তা হল ---

(a) অবরােহ যুক্তি (b✓) আরােহ যুক্তি (c) মাধ্যম যুক্তি (d) উপমাযুক্তি । 

২১) সামান্যীকরণ যে যুক্তির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য তা হল ---

(a) উপমাযুক্তি (b) অবরােহ যুক্তি (c✓) আরােহ যুক্তি (d) সবকটি ঠিক ।

 ২৩) আরােহযুক্তির হেতুবাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে যে সম্বন্ধ থাকে তা হল ---

 (a✓) আবশ্যিক সম্বন্ধ (b) আপতিক সম্বন্ধ (c) সাময়িক সম্বন্ধ (d) আংশিক সম্বন্ধ । 

২৪) সাদৃশ্যের ভিত্তিতে যে যুক্তি গঠন করা হয় তা হল ---

(a) অবরােহ যুক্তি (b) আরােহ যুক্তি (✓c) উপমাযুক্তি (d) কোনােটিই নয়।

 ২৫) প্রসক্তিযােগ্যতা যে যুক্তির লক্ষণ তা হল --

(a✓) অবরােহ যুক্তি (b) আরােহ যুক্তি (c) লৌকিক যুক্তি (d) উপমাযুক্তি ।

 ২৬) আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্যকে— 

(a) খণ্ডন করে  (b✓) অতিক্রম করে (c) সুনিশ্চিত করে  (d) প্রসক্তিসম্বন্ধে আবদ্ধকরে 

২৭)  আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্তটি হল ---

(a) বিশেষ বচন (b) বিশেষ বিশ্লেষক বচন (c) সামান্য বচন (✓d) সামান্য সংশ্লেষক বচন। 

২৮) আরোহ অনুমানের সিদ্ধান্তটি হবে---

 (a) নিশ্চিত (✓b) সম্ভাব্য (c) বৈধ (d) অবৈধ ।

২৯) আরােহ অনুমানে সামান্যীকরণের মাধ্যমে যে বচন প্রতিষ্ঠা করা হয় তা হল --

 (a✓) সামান্য সংশ্লেষক বচন  (b) সামান্য বিশ্লেষক বচন (c) বিশেষ সংশ্লেষক বচন (d) বিশেষ বিশ্লেষক বচন। 

৩০) আরােহ অনুমানের সমস্যাটি হল- 

(a) বৈধতা নির্ণয় (b) অবৈধতা নির্ণয় (c) আকারগত সত্যতা নির্ণয় (d✓) সামান্যীকরণ ।

 ৩১) আরােহ অনুমানে যে সমস্যাটি লক্ষ করা যায়— 

(a✓) বিশেষ সত্য থেকে সামান্য সত্যে উপনীত হওয়ার সমস্যা (b) সাদৃশ্যের সংখ্যাল্পতা (c) পর্যবেক্ষণের সমস্যা (d) পরীক্ষণের সমস্যা - এর ক্ষেত্রে। 

৩২) আরােহ অনুমানের সমস্যার সমাধান করা হয়—

 (a) সামান্যীকরণের সাহায্যে  (b) কার্যকারণ নীতির সাহায্যে (c) বিশেষীকরণের সাহায্যে (d✓) কার্যকারণ ও প্রকৃতির একরূপতা নীতির সাহায্যে। 

৩৩) আরােহ অনুমানকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন— 

(✓a) মিল ( b ) বেন্থাম (c) কান্ট ( d ) জর্জ বুল।

 ৩৪) আরােহ অনুমানের সত্যতাটি হল— 

(a✓) বস্তুগত ( b ) আকারগত ( c ) পরিমাণগত ( d ) কোনােটিই নয় । 

৩৫) আরােহঅনুমানে জানা থেকে অজানাতে যাওয়াকে বলা হয়— 

(a) সত্যতা (b) সম্ভাব্যতা (✓c) আরােহমূলক ঝাপ বা লাফ (d) অবরােহমূলক লাফ । 

৩৬) জ্ঞাত সত্য থেকে অজ্ঞাত সত্যে যাওয়ার কারণে উপমাযুক্তি হল একটি- 

(a✓) আরোহ অনুমান (b) অবরোহ অনুমান (c) মাধ্যম অনুমান (d) অমাধ্যম অনুমান।

৩৭) আরোহমূলক লাফ হল---

(a✓) জানা থেকে অজানাতে যাওয়া

(b) অজানা থেকে জানাতে যাওয়া

(c) জানা থেকে জানাতে যাওয়া

(d) অজানা থেকে অজানাতে যাওয়া।


৩৮) আরােহ অনুমান সংক্রান্ত লাফ কথাটি বলেছেন--

 (a) বেইন (b) লক  ( c✓) মিল । (d) কোপি ।

 ৩৯) আরােহ অনুমানের লাফকে অন্ধকারে ঝাপ দেওয়া বলেছেন --

(a) বেইন  (b) কান্ট (c✓) মিল  (d) লক । 

৪০) আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল— 

 (a) দৃষ্টান্ত গণনা (b) পর্যবেক্ষণ (c) পরীক্ষণ (d✓) প্রকৃতির একরূপতা ও কার্যকারণ নীতি 

৪১)  আরােহের বস্তুগত ভিত্তি হল— 

 (a) প্রকৃতির একরূপতা নীতি এবং কার্যকারণ সূত্র (b) পরীক্ষণ এবং সত্যতা যাচাই (c✓) পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষণ (d) গণনা এবং পরিমাপ । 

৪২) প্রকৃতির একরূপতার অর্থ হল—

 (✓a) একই পরিবেশে একই রকম আচরণ করা (b) একই পরিবেশে বিভিন্ন রকম আচরণ করা (c) বিভিন্ন পরিবেশে বিভিন্ন রকম আচরণ করা (d) বিভিন্ন পরিবেশে একই রকম আচরণ করা

  ৪৩)  কার্যকারণ নিয়মের অর্থ হল—

 (a) কারণ থাকলে কার্য থাকবে (b✓) কার্য থাকলে কারণ থাকবে (c) কার্য থাকলে কারণ থাকবে না  (d) কার্য ও কারণ একই ঘটনা । 

৪৪)  সম্ভাব্যতার বিষয়টি যুক্ত--

 (a) অবরােহ অনুমানের সঙ্গে (b✓) আরােহ অনুমানের সঙ্গে (c) মাধ্যম অনুমানের সঙ্গে (d) কোনােটিই নয়।

৪৫) আরােহ অনুমানের যুক্তিবাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে যে সম্বন্ধ থাকে না তা হল— 

(a) কার্যকারণ সম্বন্ধ (b) যৌক্তিক সম্বন্ধ (c✓) প্রসক্তি সম্বন্ধ (d) বিজ্ঞানসম্মত সম্বন্ধ। 

৪৬) পর্যবেক্ষণ হল --

(a) সকল ঘটনাই প্রত্যক্ষ করা (b) বিশেষ ঘটনা প্রত্যক্ষ করা (c) উদ্দেশ্যহীনভাবে যে - কোনাে ঘটনা প্রত্যক্ষ করা (d✓) নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে যে - কোনাে ঘটনা প্রত্যক্ষ করা। 

৪৭) পরীক্ষণ হল— 

(a) প্রাকৃতিক পরিবেশে কোনাে ঘটনা পর্যবেক্ষণ (✓b) কৃত্রিম পরিবেশে কোনাে ঘটনার পর্যবেক্ষণ (c) ক ও খ উভয়ই ঠিক (d) কোনােটিই নয় ।

৪৮) বিশেষ থেকে সামান্যে উপনীত হওয়ার প্রক্রিয়াকে বলা হয়—

 (a) বিশেষীকরণ  (b[) সামান্যীকরণ  (c) পরীক্ষণ (d) নিরীক্ষণ। 

৪৯) সামান্য সংশ্লেষক বচন হল সেই বচন --

(a) যার বিধেয় উদ্দেশ্যের সমার্থক 

(b) যার বিধেয়টি স্বীকৃতিমূলক 

(c) যার বিধেয়টি উদ্দেশ্যের পুনরাবৃত্তিমূলক 

(d✓) যার বিধেয়টি উদ্দেশ্য সম্পর্কে অভিজ্ঞতালব্ধ নতুন কিছু তথ্য জ্ঞাপন করে।

 

৫০) আরােহের বস্তুগত ভিত্তি হল—

(a)  পর্যবেক্ষণ (b) পরীক্ষণ  (✓c) পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ (d) প্রকৃতির একরূপতা নীতি। 

৫১) লৌকিক আরােহের আকারগত ভিত্তি হল— 

 (a) দৃষ্টান্ত গণনা (b) পর্যবেক্ষণ (c) পরীক্ষণ (d✓) প্রকৃতির একরূপতা ও কার্যকারণ।

 ৫২) লৌকিক আরােহকে শিশুসুলভ অনুমান বলেছেন --

(a) মিল  (b) হবস  (c) জনসন  (d✓) বেকন।

 ৫৩) লৌকিক আরােহ বিবেচনা করে --

(✓a) সদর্থক দৃষ্টান্ত (b) নঞর্থক দৃষ্টান্ত (c) বিপরীত দৃষ্টান্ত (d) বিরুদ্ধ দৃষ্টান্ত ।

৫৪) যুক্তিবিজ্ঞানী মিল জানিয়েছেন তিন হাজার বছর ধরে ইউরােপীয়রা এমন সিদ্ধান্ত করেছে যে রাজহাঁস সাদা। এমন সিদ্ধান্তে আসার ভিত্তি হল— 

( a ) লৌকিক আরােহ । ( b ) বৈজ্ঞানিক আরােহ ( c ) উপমাযুক্তি ( d ) অবরােহ যুক্তি । 

৫৫) সাপের কামড়ে অনেক লােক মারা গেছে। তাই বলা যায়, সব সাপই বিষধর— এই অনুমানটি— 

(a✓) লৌকিক আরােহের (b) উপমাযুক্তির (c) বৈজ্ঞানিক যুক্তির (d) অবরােহ যুক্তির । 

৫৬) লৌকিক আরোহ অনুমান কে বলা হয় --

 (a) পূর্ণ গণনামূলক আরোহ অনুমান  (b✓) অপূর্ণ গণনামূলক অনুমান (c) সাদৃশ্য অনুমান (d) সাদৃশ্য অনুমান 

 ৫৭) অপূর্ণ গণনামূলক আরােহ অনুমানের আর এক নাম— 

(a✓) অবৈজ্ঞানিক অনুমান  (b) বৈজ্ঞানিক অনুমান    ( c ) লৌকিক অনুমান (d) সাদৃশ্য যুক্তি।

৫৮) কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয়ের চেষ্টা করা হয় না যে যুক্তিতে তা

 (a) বৈজ্ঞানিক যুক্তি (b) মাধ্যম যুক্তি (c✓) উপমাযুক্তি  (d) অমাধ্যম যুক্তি ।

 ৫৯) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের লক্ষ্য হল—

 (✓a) কার্যকারণ সম্বন্ধের উপর গুরুত্ব আরােপ (b) লৌকিক অনুমান প্রতিষ্ঠা  (c) উপমাযুক্তির উপর গুরুত্ব আরােপ (d) সবকটি ঠিক । 

৬০) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্তটি হল— 

(a) বৈধ (b) অবৈধ (c✓) সার্বিক সংশ্লেষক (d) সার্বিক বিশ্লেষক । 

৬১) বৈধতার বিষয়টি যুক্ত— 

(a✓) অবরােহ অনুমানের সঙ্গে (b) আরােহ অনুমানের সঙ্গে (C) লৌকিক অনুমানের সঙ্গে (d) উপমাযুক্তির সঙ্গে। 

৬২) আমরা এক বিশেষ সত্য থেকে আর - একবিশেষ সতত্য উপনীত হই যে আরােহ যুক্তিতে , তার নাম হল— 

 (a) বৈজ্ঞানিক আরােহানুমান। (b) অবৈজ্ঞানিক আরােহানুমান (c✓) উপমাযুক্তি (d) কোনােটিই নয় ।

 ৬৩) উপমাযুক্তি হল—

 (a✓) আরােহ অনুমান  (b) অবরােহ অনুমান (c) পর্যবেক্ষণ (d) পরীক্ষণ ।

 ৬৪)  উপমা যুক্তির ভিত্তি হলো --

 (a) পর্যবেক্ষণ (b) পরীক্ষণ (d) বৈসাদৃশ্য । (c✓) অসম্পূর্ণ সাদৃশ্য।

৬৫) উপমাযুক্তির সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতা বাড়ে যদি-

 (a✓) সাদৃশ্যের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় 

(b) সাদৃশ্যের সংখ্যা হ্রাস পায় 

(c) সিদ্ধান্ত বিশেষ হয় 

(d) সিদ্ধান্ত সামান্য হয়। 


৬৬) যে উপমাযুক্তির সাদৃশ্যগুলি কৃত্রিম, অপ্রাসঙ্গিক ও আরােপিত ধর্মবিশিষ্ট তাকে বলা হয়— 

 (a) কৃত্রিম উপমা  (b) কোনােটিই নয়  (c✓) মন্দ উপমা (d) উত্তম উপমা।


Read More

Friday, 8 January 2021

সমাজবিদ্যার একটি প্রশ্ন ও উত্তর

Leave a Comment

 প্রশ্ন : সংস্কৃতি কাকে বলে? সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্যগুলি আলােচনা করাে।

 উত্তর: 

 সংস্কৃতির সংজ্ঞা (Definition) : এডওয়ার্ড টাইলরের মতে, সংস্কৃতি বলতে বােঝায় মানুষের জ্ঞান, বিশ্বাস, কলা, নৈতিকতা, আইন, প্রথা ইত্যাদির জটিল মিলন এবং অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ে তার দক্ষতা ও অভ্যাস যেটা সে সমাজের সদস্য হিসেবেও আয়ত্ত করে। 

পিটার ওর্সলের ( Peter Worsley ) মতে, সংস্কৃতি বলতে বােঝায় সামাজিক উৎপাদন ও সম্পদ যা শিক্ষার দ্বারা একটি প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে সঞ্চারিত হয়।

বায়ারস্টেড ( Bierstedt) এর মতে, সংস্কৃতি হচ্ছে একটি জটিল সমন্বয় যা সমাজের সদস্য হিসেবে একজন মানুষ চিন্তা করে, কোন কিছু করে এবং যা তাদের থাকে।

সংস্কৃতির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে কুলী, এনজেল ও কার ( Cooley, Angel and  Car ) বলেন, একত্রে বাস করার সঠিক ফলশ্রুতি যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সঞ্চারিত- তাই হচ্ছে সংস্কৃতি। সমাজতাত্ত্বিক রস বলেন, সংস্কৃতি হচ্ছে সামগ্রিকভাবে মানুষের অর্জিত আচরণ পদ্ধতি যা অনুকরণ অথবা নির্দেশনায় মাধ্যমে বর্তায়। প্রখ্যাত সমাজ নৃ-তাত্ত্বিক মালিনাউস্কির (Malinowski) মতে, সংস্কৃতি হচ্ছে মানব সৃষ্ট এমন কৌশল বা উপায় যার মাধ্যমে সে তার উদ্দেশ্য চরিতার্থ করে।

 রালফ্ লিনটন ( Ralph Linton ) সংস্কৃতির একটি সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছেন-- সংস্কৃতি হচ্ছে মানব আচরণের সামাজিক রূপ যা মানুষ কোনও সমাজে বয়স্কদের থেকে গ্রহণ করে এবং পরবর্তী প্রজন্মে তা বাহিত করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে একটি কুঠার মানুষের তৈরি জিনিস বলে গুরুত্বপূর্ণ নয়, এই হাতিয়ারটি তার কাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ সংস্কৃতি মানুষের সৃষ্টি জিনিসের চেয়ে বরং জিনিসগুলির উপযােগিতা ও ব্যবহারের প্রতি বেশি গুরুত্ব প্রদান করে। 

প্রকৃতি ও মানুষের মধ্যকার সম্পর্কের ভিত্তিতে কোয়েনিগ (Koening) সংস্কৃতির সংজ্ঞা নিরূপণ করেছেন। তার মতে, সংস্কৃতি হচ্ছে মানুষের সার্বিক প্রচেষ্টার ফল যা পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়ে জীবনপ্রণালীকে উন্নত করে। মানুষই একমাত্র প্রাণী যারা যে কোন অবস্থার সাথে খাপ খাওয়াতে এবং নতুন কিছু সৃষ্টি করতে পারে। বেঁচে থাকার প্রয়ােজনীয় বস্তুণ্ডলির চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে মানুষ নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে, সামাজিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে, যাকে এক কথায় সংস্কৃতি বলা যায়। 

 সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য সমূহ :

 ১। সংস্কৃতি হল মানুষের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জীবনযাপনের ধারার সঞ্চিত অভিজ্ঞতা। মনুষ্যেতর প্রাণীর পক্ষে কোন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য গড়ে তােলা সম্ভব নয়। সংস্কৃতিবিহীন মানবসমাজের কথা কল্পনা করা যায় না।

 ২। সংস্কৃতি সহজাত নয়। অভিজ্ঞতা, অনুশীলন ও চর্চার মাধ্যমে সংস্কৃতিকে রপ্ত করতে হয়। সংস্কৃতি আহরণের এই প্রক্রিয়াকে সমাজতত্ত্বের পরিভাষায় সামাজিকীকরণ (Socialization) বলে অভিহিত করা হয়। 

৩। বস্তুগত ও অবস্থাগত উভয় উপাদানের সংমিশ্রণে সংস্কৃতি গঠিত হয়। জৈবিক, পরিবেশগত, মনস্তাত্ত্বিক, ঐতিহাসিক বিভিন্ন উপাদান থেকে সংস্কৃতি গঠিত। 

৪। সংস্কৃতি সদা পরিবর্তনশীল। সংস্কৃতি নিষ্ক্রিয় বা একপেশে কোন বিষয় নয়। সংস্কৃতির অভিযােজনমূলক (adaptive) চরিত্র পরিবর্তনশীলতার গুরুত্বপূর্ণ কারণ। জ্ঞান - বিজ্ঞানের উন্নতি, রাষ্ট্রের কার্যাবলীর ব্যাপকতা ও জটিলতা বৃদ্ধি এবং মানুষের জীবনযাত্রার মানে (quality of life) পরিবর্তন সংঘটিত হওয়ার জন্য মানব সংস্কৃতিরও পরিবর্তন ঘটে । 

৫। সংস্কৃতি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত শিক্ষা বা অনুশীলনের বিষয় নয়। সমাজের সদস্য হিসেবেই মানুষ সামাজিকীকরণের মাধ্যমে সংস্কৃতির বিভিন্ন উপাদান সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করেন। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায় যে সংস্কৃতি হল যৌথ এবং অংশীদারমূলক ( shared )।

 ৬। সংস্কৃতি শূন্যে অবস্থান করে না। সংস্কৃতি হচ্ছে কাঠামােভিত্তিক।  কাঠামােভিত্তিক রূপের মাধ্যমে সংস্কৃতির প্রকাশ ঘটে। সংস্কৃতির এই  রূপটি বস্তুগত বা অবস্তুগত উভয় ধরনেরই হতে পারে।

৭। সংস্কৃতি সামাজিক অবস্থার সৃষ্টি, শুধু মানুষই সংস্কৃতির অধিকারী। সংস্কৃতি সামাজিক অবস্থার দ্বারা নিয়ন্ত্রিতও। 

৮। সামাজিক অবস্থা ভেদে সংস্কৃতির মধ্যে পার্থক্য যেমন আছে, তেমনি সাদৃশ্যও আছে। মানুষের ধ্যান - ধারণা, আচার - আচরণ ও সংগঠনের মাধ্যমে প্রকাশিত সংস্কৃতি সর্বযুগে ও সব জায়গায় এক রকম হয় না। 

৯। সংস্কৃতির মধ্যে যেমন আদান - প্রদান হয় আবার এর মধ্যে দ্বন্দ্বও দেখা যায়। 

১০৷ মানব সংস্কৃতির বৈচিত্র্য অত্যন্ত স্পষ্ট। আচার - আচরণ এক সংস্কৃতি থেকে অন্য সংস্কৃতিতে ভিন্ন। যেমন ইউরােপিয়ান সমাজে যে আচরণগুলিকে স্বাভাবিক বলে মনে করা হয় অন্য সমাজে অনেক সময় তা স্বাভাবিক বলে নাও ভাবা হতে পারে। প্রতিটি সংস্কৃতির নিজস্ব আচরণের ধারা আছে যা অন্য সংস্কৃতি থেকে অনেকাংশে আলাদা। 

<<<<<<<<<<<The End >>>>>>>>>>>>

Read More

Tuesday, 29 December 2020

৪২ টি আরোহ যুক্তির দোষ ও বিচার

Leave a Comment

 আরোহমূলক দোষ বা অনুপপত্তি

(INDUCTIVE FALLACIES)

Class - xii ( wbchse)

** নীচের আরোহ যুক্তিগুলি বিচার করো এবং কোন দোষ থাকলে তা উল্লেখ করো-- (মান 4)

) বদ্ধ পরিষ্কার জল ডেঙ্গির কারণ : 

উঃ

দোষ:  অপর্যবেক্ষণমূলক দোষ। অথবা, অবৈধ সাম্যানীকরণ দোষ । 

 বিচার:  এটি আরােহ অনুমানের দৃষ্টান্ত। এটি অপর্যবেক্ষণমূলক দোষে দুষ্ট। কারণ, এখানে যে সমস্ত ক্ষেত্রে বদ্ধ পরিষ্কার জল আছে  অথচ তা ডেঙ্গির কারণ নয়— সেরূপ দৃষ্টান্তগুলিকে পর্যবেক্ষন করা হয়নি। অথচ এরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষেত্রে এই ধরনের দৃষ্টান্তগুলিকে পর্যবেক্ষণ করা উচিত ছিল। এক্ষেত্রে অবাধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে গুটিকয়েক দৃষ্টান্ত দেখে একপ্রকার সামান্যীকরণ করা হয়েছে বলে একে অবৈধ সামান্যীকরণের দোষে দুষ্ট রূপেও উল্লেখ করা যায়।

২)  সব কাক নিশ্চয়ই কালাে; কারণ, আমরা অন্য কোনাে রঙের কাক দেখিনি। 

উঃ

দোষ:  অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ। 

বিচার : এটি আরােহ অনুমানের দৃষ্টান্ত। এখানে অবাধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কয়েকটি কাককে কালাে বর্ণের হতে দেখে সকল কাক হয় কালাে’ এরূপ সিদ্ধান্ত করা হয়েছে। কিন্তু, পৃথিবীর সব কাক কালাে কিনা তা অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কোনাে মানুষের পক্ষে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। এমনও হতে পারে যে, আমাদের সীমিত অভিজ্ঞতার বাইরে অন্য রঙের কাক থাকতে পারে। কাজেই, কাকের সঙ্গে কালাে রঙের কোনাে অনিবার্য সম্পর্ক আছে কিনা তা নির্ণয় না করে অর্থাৎ, কার্যকারণ সম্পর্ক নির্ণয় না করে এক্ষেত্রে সার্বিক সিদ্ধান্ত করা হয়েছে বলে যুক্তিটি অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট হয়েছে। ফলে সিদ্ধান্তটি ভ্রান্ত ও দোষযুক্ত। 

৩) কয়েকটি লালফুল গন্ধহীন হতে দেখে সিদ্ধান্ত করা হল যে, সব লালফুল গন্ধহীন। 

উঃ

দোষ :  অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ। 

বিচার : এক্ষেত্রে অবাধ অভিজ্ঞতায় কয়েকটি লালফুলকে গন্ধহীন হতে দেখে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে সব লালফুল গন্ধহীন। কিন্তু, এরূপ সিদ্ধান্ত ভ্রান্ত। কারণ, এখানে কোনাে বিরুদ্ধ দৃষ্টান্ত বা নঞর্থক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত গঠন করা হয়নি। অর্থাৎ, জগতে গন্ধযুক্ত লালফুলের (যেমন — গােলাপফুল) অস্তিত্ব আছে এটা প্রমাণিত। কাজেই ,সালফুল ও গহীনতার মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক বিচার না করে এরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য যুক্তিটি অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট হয়েছে।

 ৪) বহু লােক সাপের কামড়ে মারা গেছে। সুতরাং, সব সাপ বিষধর। 

উঃ

দোষ:  অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে। 

বিচার : এটি আরােহ অনুমানের দৃষ্টান্ত। এখানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে। কেননা, উক্ত যুক্তিতে বেশ কয়েকজন লােকের সাপের কামড়ের ফলে মৃত্যু হতে দেখে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে  সব সাপ বিষধর। কিন্তু, এক্ষেত্রে যে বিরুদ্ধ দৃষ্টান্ত বা নঞর্থক দৃষ্টান্ত থাকতে পারে তাকে পর্যবেক্ষণ না করে সিন্ধান্ত রা হয়েছে। অর্থাৎ, এমন অনেক সাপ আছে যারা বিষধর নয় কিংবা এমন অনেক লােক আছে যারা সাপের কামড়ে মারা যায়নি — এই নঞর্থক দিককে পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। তা ছাড়া পৃথিবীর সব সাপ বিষধর কিনা তা কােনাে মানুষের পক্ষে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। তাই এক্ষেত্রে যে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে তা অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট হয়েছে। 

৫) মানসিক হাসপাতালের অধিকাংশ রােগী উচ্চশিক্ষিত। সুতরাং, উচ্চশিক্ষাই মানসিক রােগের কারণ। 

উঃ

দোষ :  অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ।

 বিচার: এখানে অন্বয়ী পদ্ধতির অপপ্রয়োগের ফলে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে। কেননা, আলােচ্য যুক্তিতে কোনাে মানসিক হাসপাতালের কয়েকজন রােগীকে উচ্চশিক্ষিত হতে দেখে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে উচ্চশিক্ষাই মানসিক রােগের কারণ। কিন্তু, এরূপ সিদ্ধান্ত ভ্রান্ত। কারণ, এক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষার সঙ্গে মানসিক রােগের কার্যকারণ সম্পর্ক আছে কিনা তা নির্ণয় করার চেষ্টা করা হয়নি। কেবলমাত্র কয়েকজন মানসিক রােগীকে উচ্চশিক্ষিত হতে দেখে এরূপ সার্বিক সিদ্ধান্ত করার জন্য যুক্তিটি অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট হয়েছে। 

৬) টেলিগ্রাম অশুভ। কারণ, টেলিগ্রাম দুঃসংবাদ বহন করে নিয়ে আসে। 

উঃ

দোষ: অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ।

বিচার: এটি আরােহ অনুমানের দৃষ্টান্ত। এখানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে। কেননা, অবাধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কিছু ক্ষেত্রে টেলিগ্রাম দুঃসংবাদ বহন করে নিয়ে আসে এই দিককে পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে যে টেলিগ্রাম অশুভ। কিন্তু, সব ক্ষেত্রে টেলিগ্রাম অশুভ সংবাদ বহন করে নিয়ে আসে কিনা এই নঞর্থক দিকটিকে বিবেচনা না করে সার্বিক সিদ্ধান্ত করা হয়েছে, যা কার্যকারণ সম্পর্ক বহির্ভূত। এজন্য যুক্তিটি অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট হয়েছে।

৭) আজকালকার শিক্ষিত মহিলারা গৃহকর্ম করতে চান না। সুতরাং, নারী শিক্ষাকে উৎসাহ দেওয়া ঠিক নয়। 

উঃ

দোষ: অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ।

বিচার: যুক্তিটিতে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে। কেননা, এক্ষেত্রে অবাধ অভিজ্ঞতায় কয়েকজন শিক্ষিতা মহিলাকে গৃহকর্মে বিমুখ হতে দেখে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে নারী শিক্ষাকে উৎসাহ দেওয়া ঠিক নয়। কিন্তু, পৃথিবীর সব উচ্চশিক্ষিত মহিলা গৃহকর্মে বিমুখ কিনা তা কোনাে ব্যক্তির পক্ষে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। তাই এখানে বিশেষ কয়েকটি দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে যে সার্বিক সিদ্ধান্ত করা হয়েছে তা অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট হয়েছে।

৮) দিনের পরে রাত্রি আসে, সুতরাং দিন রাত্রির কারণ।

উঃ

দোষ: সহকার্যের একটিকে অন্যটির কারণ বলে গণ্য করা দোষ।

বিচার:  যুক্তিটি সহকার্যের একটিকে অন্যটির কারণ বলে গণ্য করা দোষে দুষ্ট। আমরা জানি একটি কারণের একাধিক কার্য থাকতে পারে।  যখন এই সহকার্যের একটিকে অন্যটির কারণ বলে গণ্য করা হয় তখন যুক্তিটিতে যে দোষ ঘটে তাকে সহকার্যের একটিকে অন্যটির কারণ বলে গণ্য করা দোষ ঘটে। আলােচ্য যুক্তিতে দিনের পর রাত আসে বলে দিনকে রাত্রির কারণ বলা হয়েছে। কিন্তু, দিন এবং রাত্রি কোনােটিই কারাের কারণ নয়, উভয় ঘটনাই হল সহকার্য। উভয়ের কারণ হল পৃথিবীর আহ্নিক গতি। কাজেই, দিন ও রাত্রির মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। এই উভয় ঘটনাই পৃথিবীর আহ্নিক গতিরূপ কারণের সহকার্য। কাজেই, যুক্তিটিতে দিন রাত্রির অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও শর্তহীন অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। এজন্য যুক্তিটিতে সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণ বলে গণ্য করা দোষ ঘটেছে।

 ৯) শীতের পরেই বসন্ত আসে। কাজেই শীত হলো বসন্তের কারণ।

উঃ

দোষ: সহকার্যের একটিকে অপরটির কারণ বলে মনে করার দোষ।

বিচার: প্রদত্ত যুক্তিটিতে অন্বয়ী পদ্ধতি প্রয়ােগ করে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে যে শীত হল বসন্তের কারণ। কেননা, শীত নিয়তই বসন্তের পূর্ববর্তী ঘটনা। কিন্তু যুক্তিটি সিদ্ধ নয়। শীত এবং বসন্ত উভয়ই পৃথিবীর বার্ষিক গতির ওপর নির্ভর করে অর্থাৎ শীত ও বসন্তের শর্ত হলাে পৃথিবীর বার্ষিক গতি। সুতরাং শীত ও বসন্ত সহকার্য। সুতরাং এই যুক্তিটিতে সহকার্যের একটিকে অপরটির কারণ বলে গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে এখানে সহকার্যের একটিকে অপরটির কারণ গণ্য করা জনিত দোষ ঘটেছে। 

১০) জোয়ারের পর ভাটা আসে। অতএব জোয়ার হল ভাটার কারণ। 

উঃ

দোষ: সহকার্যের কোনাে একটিকে অন্যটির কারণ বলে গণ্য করা দোষ । 

বিচার: আলােচ্য যুক্তিতে জোয়ারকে ভাটার কারণ বলা হয়েছে। যেহেতু জোয়ার হল ভাটার নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা। কিন্তু, কারণকে কেবল কার্যের নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা হলেই হবে না, তাকে শর্তহীন হতে হবে। জোয়ার এবং ভাটা এই দুটি ঘটনা শর্তহীন নয়। উভয় ঘটনাই চন্দ্রের আকর্ষণজনিত কারণের সহকার্য। অর্থাৎ, চন্দ্রের আকর্ষণের তারতম্যের জন্য পৃথিবীতে জোয়ার এবং ভাটা হয়। সুতরাং, জোয়ার এবং ভাটা ঘটনাদুটির কোনােটি কারাের কারণ নয়। উভয়ই একই কারণের সহকার্য। এ কারণে যুক্তিটিতে সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণ মনে করা দোষ ঘটেছে। 

১১) তাপমান যন্ত্রের পারদের অবনমন নিকটবর্তী হ্রদের জল জমে যাওয়ার কারণ। 

উঃ

দোষ: সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণরূপে গণ্য করা দোষ 

বিচার: উক্ত যুক্তিতে সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণরূপে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, তাপমান যন্ত্রের পারদ নীচে নেমে যাওয়া এবং হ্রদের জল জমে যাওয়া— এই দুটি ঘটনার মধ্যে কোনাে কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। উভয় ঘটনাই একটি কারণের সহকার্য। সেই কারণটি হল তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রিতে নেমে যাওয়া। অর্থাৎ, তাপমাত্রা 0 ° বা তার নীচে নেমে গেলে পারদের অবনমন ঘটে আবার জল জমে যায়। সুতরাং, এক্ষেত্রে একটিকে অন্যটির কারণরূপে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে।

 ১২) বিদ্যুৎ হল বজ্রনিনাদের নিয়ত পূর্বগামী ঘটনা। অতএব বিদ্যুৎ হল বজ্রনিনাদের কারণ। 

উঃ

দোষ:  সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণ বলে গণ্য করা দোষ

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণ বলে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, বিদ্যুৎ এবং মেঘ গর্জনের মধ্যে কোনাে কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। উভয় ঘটনাই একটি কারণের সহকার্য। কারণটি হল দুটি বিপরীতমুখী মেঘের সংঘর্ষ। মেঘের সঙ্গে মেঘের সংঘর্ষ হলে বিদ্যুৎ চমক দেখা যায় এবং বজ্রপাতের শব্দও শােনা যায়। সুতরাং, দুটি ঘটনার কেউই অন্যটির কারণ নয়। কাজেই, বিদ্যুৎকে মেঘ গর্জনের কারণ বলার জন্য যুক্তিটিতে সহকার্যকে কারণরূপে গণ্য করা দোষ ঘটেছে।

১৩) টেলিগ্রাম অশুভ। কারণ টেলিগ্রাম দুঃসংবাদ নিয়ে আসে।

উঃ

দোষ: অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ।

বিচার: এই আরােহ যুক্তিটি অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট। কারণ আলােচ্য যুক্তিটিতে  কতকগুলি ক্ষেত্রে টেলিগ্রামকে দুঃসংবাদ বহন করে আনতে দেখে   সামান্যীকরণ করা হয়েছে যে, টেলিগ্রাম মাত্রই অশুভ। কিন্তু যেসব ক্ষেত্রে টেলিগ্রাম শুভ সংবাদ বয়ে নিয়ে এসেছে সেই সব বিরুদ্ধ দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ না করাই আলােচ্য যুক্তিটির সিদ্ধান্ত ভ্রান্ত বলে বিবেচিত। এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় নঞর্থক দৃষ্টান্তগুলি উপেক্ষিত রয়ে গিয়েছে। শুধুমাত্র সদর্থক দৃষ্টান্তগুলি পর্যবেক্ষণ করে কোনােরূপ কার্য - কারণ সম্বন্ধ আবিষ্কারের চেষ্টা না করে অবাধ অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে সামান্য বচন প্রতিষ্ঠা করার জন্যই এই দোষ ঘটে। 

১৪)  রাশিয়াতে যখন গমের ফলন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন কলকাতা শহরে জন্মহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং, রাশিয়ায় গমের ফলন বৃদ্ধি হল কলকাতায় জন্মহার বৃদ্ধির কারণ। 

উঃ

দোষ : অবান্তর ঘটনাকে কারণ বলে গণ্য করা দোষ

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে সহপরিবর্তন পদ্ধতির অপপ্রয়ােগের ফলে কোনাে অবান্তর ঘটনাকে কারণ বলে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, যুক্তিতে রাশিয়ায় গমের ফলন বৃদ্ধিকে কলকাতায় জন্মহার বৃদ্ধির কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, এই দুটি ঘটনার মধ্যে কোনােরূপ কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। আসলে রাশিয়ায় গমের ফলন বৃদ্ধি এবং কলকাতায় জন্মহার বৃদ্ধি এই দুটি ঘটনার মধ্যে সহপরিবর্তন লক্ষ্য করা গেলেও সেই সহপরিবর্তন প্রাসঙ্গিক নয়। কাজেই, এক্ষেত্রে একটি অপ্রাসঙ্গিক বিষয়কে কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে ।

১৫) গতবছর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কারণ হল দেবতার রোষ। 

উঃ

দোষ: অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ।

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে একটি অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, যুক্তিটিতে দেবতার রােষকে দুর্ভিক্ষের কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, দুর্ভিক্ষের সঙ্গে দেবতার রােষের কোনােরূপ কার্যকারণ সম্বন্ধ নেই। এক্ষেত্রে দেবতার রােষ হল একটি অবান্তর বিষয়। অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের ভিত্তিতে দেবতার  রুষ্ট হওয়াকে দুর্ভিক্ষের কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কাজেই, প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান না করে কুসংস্কারবশত একটি অবান্তর বিষয়কে কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে। 

১৬) তুমি সূর্যগ্রহণের সময় খেয়েছ এবং অসুস্থ হয়ে পড়েছ। সুতরাং, সূর্যগ্রহণের সময় খাওয়া তােমার অসুস্থতার কারণ। 

উঃ

দোষ: অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ।

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে একটি অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, এখানে সূর্যগ্রহণের সময় খাওয়াকেই অসুস্থতার কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, সূর্যগ্রহণের সময় খাওয়ার সঙ্গে অসুস্থতার কোনােরূপ কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। অসুস্থতা প্রসঙ্গে সূর্যগ্রহণের সময় খাওয়া একটি অপ্রাসঙ্গিক বিষয়। অসুস্থতার প্রকৃত কারণ হল ভালাে খাদ্যবস্তু গ্রহণ না করা। অর্থাৎ, সূর্যগ্রহণ না হলেও দূষিত খাদ্যবস্তু খেলে অসুস্থ হতে হত। কাজেই, কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের ভিত্তিতে সূর্যগ্রহণের সময় খাওয়াকে অসুস্থতার কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে একটি অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। [উল্লেখ্য, উক্ত যুক্তিতে কাকতালীয় দোযেরও প্রয়ােগ করা যায়] 

১৭) কোনাে ডাক্তার তিনজন রােগীকে তিনরকম ওষুধ গরম জলের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে বললেন এবং কিছুদিন পর তারা প্রত্যেকেই রােগমুক্ত হল। কাজেই, সিদ্ধান্ত করা হল গরম জল খাওয়াই তাদের রােগমুক্তির কারণ। 

উঃ

দোষ: অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ।

বিচার: উক্ত যুক্তিতে কোনাে অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা,  এখানে গরম জল খাওয়াকেই রােগমুক্তির কারণ বলা হয়েছে। কিন্তু, রােগমুক্তির ক্ষেত্রে গরম জল খাওয়া একটি অপ্রাসঙ্গিক বিষয়। এক্ষেত্রে আসল কারণটি হল রােগের জন্য নির্ধারিত ওষুধ। কাজেই, যেটি প্রকৃত কারণ নয় সেই অপ্রাসঙ্গিক বিষয়কে কারণ হিসাবে  গণ্য করার জন্য যুক্তিতে উক্ত দোষ ঘটেছে। এক্ষেত্রে অন্বয়ী পদ্ধতির অপপ্রয়ােগ ঘটেছে। 

১৮) কোনাে বেঁটে লােককে ভালাে বক্তৃতা দিতে দেখে সিদ্ধান্ত করা হল বেঁটে হওয়াই তার ভালাে বক্তৃতা দেওয়ার কারণ।

উঃ

দোষ: অবান্তর ঘটনাকে কারণ মনে করা দোষ।

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে কোনাে অবান্তর ঘটনাকে কারণ মনে করা দোষ ঘটেছে। কেননা, এক্ষেত্রে লােকটির বেঁটে হওয়াকে ভালাে বক্তৃতা দেওয়ার কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, বেঁটে হওয়ার সঙ্গে ভালাে বক্তৃতা দেওয়ার কোনােরূপ কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। ভালাে বক্তৃতা দেওয়ার আসল কারণ হল বিষয় সম্পর্কে পর্যাপ্ত পরিমাণে জ্ঞান থাকা। এক্ষেত্রে বেঁটে প্রকৃতির হওয়া একটি অপ্রাসঙ্গিক বিষয়। কাজেই, যুক্তিটিতে একটি অবান্তর বিষয়কে কারণরূপে গণ্য করার জন্য উক্ত দোষ ঘটেছে। এক্ষেত্রে অন্বয়ী পদ্ধতির অপপ্রয়ােগ ঘটেছে। 

১৯) পরীক্ষার আগে গৃহশিক্ষকের অনুপস্থিতি হল ছাত্রটির পরীক্ষার অকৃতকার্যতার কারণ।

উঃ

 দোষ: আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ।

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, এখানে গৃহশিক্ষকের অনুপস্থিতিকে ছাত্রটির পরীক্ষায় অকৃতকার্যতার কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, পরীক্ষার পূর্বে গৃহশিক্ষকের অনুপস্থিতি ছাত্রটির পরীক্ষায় অকৃতকার্যতার একটি শর্তমাত্র, একমাত্র কারণ নয়। এক্ষেত্রে ছাত্রটির শরীর সুস্থ না থাকা, মনােযােগ দিয়ে পড়াশুনা না করা, প্রশ্নপত্র কঠিন হওয়া, সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর না লেখা, উত্তরপত্রের যথাযথ মূল্যায়ন না হওয়া, গৃহশিক্ষকের অনুপস্থিতি প্রভৃতি একাধিক আবশ্যিক শর্ত একত্রিতভাবে ছাত্রটির পরীক্ষায় অকৃতকার্য নামক কার্যটি সংঘটিত করে। সুতরাং, শুধুমাত্র গৃহশিক্ষকের অনুপস্থিতিকে এক্ষেত্রে কারণ বলার জন্য যুক্তিটি একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষে দুষ্ট হয়েছে। 

২০) বারুদে অগ্নিসংযােগ করতেই বিস্ফোরণ হল। সুতরাং, বারুদে অগ্নিসংযােগ হল বিস্ফোরণের কারণ। 

উঃ

দোষ: আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ।

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, এখানে  বারুদে অগ্নিসংযােগকে বিস্ফোরণের কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে । কিন্তু, বারুদে অগ্নিসংযােগ করা বিস্ফোরণ ঘটার একটি শর্তমাত্র, একমাত্র কারণ নয়। বিস্ফোরণরূপ কার্যের জন্য উপযুক্ত পরিমাণ বারুদ, শুষ্ক বারুদ, ঠাসা বারুদ, বারুদে  অগ্নিসংযােগ প্রভৃতির প্রয়ােজন হয়। এই শর্তগুলি একত্রিত হয়ে বিস্ফোরণরূপ কার্য সংঘটিত করে। কাজেই, এখানে  কেবলমাত্র অগ্নিসংযােগকে কারণ বলার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে। 

২১) বহ্নি না থাকলে ধূম থাকে না । সুতরাং , বহ্নি হল ধূমের কারণ।

উঃ

দোষ: আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ 

 বিচার: যুক্তিটিতে একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, বহ্নি না থাকলে ধূম হয় না ঠিকই কিন্তু বহ্নি থাকলেই ধূম হবে এমন কথা বলা যায় না। যেমন — বৈদ্যুতিক হিটারে উত্তপ্ত লৌহপিন্ডে বহ্নি থাকে অথচ ধূম থাকে না। অর্থাৎ, বহ্নি থাকা ধূমের একটি শর্তমাত্র, একমাত্র কারণ নয়। ধূম সৃষ্টির জন্য বহ্নি ছাড়াও ভিজে কাঠ বা জ্বালানির প্রয়ােজন হয়। ভিজে কাঠে বহ্নিসংযােগ করলে তবেই ধূম নির্গত হয়। কাজেই, বহ্নিকে ধূমের কারণ বললে একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণরূপে গণ্য করা দোষ দেখা দেবে। 

২২) পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণই হল সুস্বাস্থ্যের কারণ।

উঃ

 দোষ: আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করার দোষ।

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, এখানে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণকেই সুস্বাস্থ্যের কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ সুস্বাস্থ্যের একটি শর্তমাত্র, একমাত্র কারণ নয়। অনেকগুলি উপাদান বা আবশ্যিক শর্তের সমাবেশের ফলে একজন ব্যক্তি সুস্বাস্থ্য অর্জনে সক্ষম হয়। যেমন— শরীর চর্চা, প্রয়ােজনীয় বিশ্রাম, পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ, পরিমিত পরিশ্রম, দূষণমুক্ত পরিবেশে বাস, শরীরে রােগের অভাব প্রভৃতি ব্যাপার একত্রে কোনাে মানুষকে সুস্থ ও সবল করে তােলে। কাজেই, এখানে কেবল পুষ্টিকর খাদ্যকে সুস্বাস্থ্যের কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিতে উক্ত দোষ ঘটেছে। 

২৩) আকাশে ধূমকেতু আবির্ভাবের ঠিক পরেই রাধার মৃত্যু হল। সুতরাং আকাশে ধূমকেতুর আবির্ভাবই রাজার মৃত্যুর কারণ।

উঃ

দোষ: কাকতালীয় দোষ।

ব্যাখ্যা: এটি আরােহ অনুমান এর দৃষ্টান্ত। এখানে ব্যতিরেকী পদ্ধতির অপপ্রয়ােগের জন্য কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। কারণ আমরা জানি, কারণ হলাে কার্যের শর্তহীন অপরিবর্তনীয় নিয়ত পূর্ববর্তী ঘটনা। কিন্তু যে - কোনাে পূর্ববর্তী ঘটনা কারণ নয়। যে - কোনাে পূর্ববর্তী ঘটনাকে কারণ বললে যুক্তিতে যে দোষ ঘটে তাকে কাকতালীয় দোষ বলে। উপরিউক্ত উদাহরণটিতে কাকতালীয় দোষ ঘটেছে কেননা উদাহরণটিতে পূর্ববর্তী ঘটনা (ধূমকেতুর আবির্ভাব) -কে কারণ এবং অনুবর্তী ঘটনা (রাজার মৃত্যু) -কে কার্য বলা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে রাজার মৃত্যুর জন্য ধূমকেতুর আবির্ভাব কারণ হতে পারে না। ধূমকেতুর আবির্ভাব ও রাজার মৃত্যু এদের মধ্যে অ - নিয়ত সম্পর্ক রয়েছে। তা ছাড়া এক্ষেত্রে রাজার মৃত্যু অন্য কারণে ঘটতে পারে যদিও ঘটনাক্রমে এখানে ধূমকেতুর আবির্ভাব এবং পরবর্তীতে রাজার মৃত্যু পূর্বাপর ঘটেছে। কিন্তু তাই বলে এদেরকে কার্য - কারণ বলা ঠিক নয়। 

বিকল্প

দোষ: কাকতালীয় দোষ

বিচার : উক্ত আরােহ যুক্তিতে ব্যতিরেকী পদ্ধতির অপপ্রয়ােগের জন্য কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। কেননা, আলােচ্য যুক্তিতে ধূমকেতুর আবির্ভাবকে রাজার মৃত্যুর কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। যেহেতু ধুমকেতুর আবির্ভাব রাজার মৃত্যর অগ্রবর্তী ঘটনা। কিন্তু, যে - কোনাে অগ্রবর্তী ঘটনা কারণ নয়। কারণ হবে কার্যের নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা। এক্ষেত্রে ধূমকেতুর আবির্ভাব রাজার মৃত্যুর অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও তা নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। অর্থাৎ, যখনই আকাশে ধূমকেতুর আবির্ভাব হয়েছে তারপরই একজন রাজার মৃত্যু হয়েছে এমন নয়। কাজেই এখানে অনিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনাকে কারণরূপে গণ্য করার জন্য যুক্তিটি কাকতালীয় দোষে দুষ্ট হয়েছে। 

২৪) নতুন পােশাকটি পরার পরই তার জ্বর হল। সুতরাং, নতুন পােশাকটি পরাই তার জ্বরের কারণ। 

উঃ 

দোষ: কাকতালীয় দোষ

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে ব্যতিরেকী পদ্ধতির অপপ্রয়ােগের ফলে কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। কেননা, এক্ষেত্রে নতুন পােশাক পরা জ্বরের অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। অর্থাৎ, বিশেষ কোনাে ক্ষেত্রে নতুন পােশাক পরার পর কারাে জ্বর হলেও নতুন পােশাক পরলেই সব সময় জ্বর হয় না। কাজেই, এখানে অনিয়ত পূর্ববর্তী ঘটনাকে কারণরূপে গণ্য করার জন্য অনুমানটিতে কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। 

২৫) শান্তিবাদীরা মিছিল করার পরই পশ্চিমবঙ্গে খরা শুরু হল। কাজেই, শান্তিবাদীদের মিছিল করাই খরার কারণ। 

উঃ 

দোষ: কাকতালীয় দোষ

বিচার: যুক্তিটিতে ব্যতিরেকী পদ্ধতির অপপ্রয়ােগ ঘটেছে বলে কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। কেননা, এখানে শান্তিবাদীদের মিছিলকে পশ্চিমবঙ্গের খরার কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, ঘটনাদুটির মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করা হয়নি। এক্ষেত্রে শান্তিবাদীদের মিছিল করা পশ্চিমবঙ্গের খরা সৃষ্টি হওয়ার অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। কিন্তু, কারণ হতে গেলে কার্যের নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা হতে হবে, এ কারণে যুক্তিটি কাকতালীয় দোষে দুষ্ট হয়েছে।

২৬) মাদুলি ধারণ করার ঠিক পরেই তার রােগ সারল। সুতরাং, মাদুলি ধারণ তার রােগ নিরাময়ের কারণ। 

উঃ

দোষ: কাকতালীয় দোষ। / অবান্তর ঘটনাকে কারণ মনে করা দোষ

বিচার:  উক্ত আরােহ যুক্তিতে কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। কেননা, এখানে মাদুলি ধারণ করাকে রােগ নিরাময়ের কারণরূপে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, এরূপ অনুমান ভ্রান্ত। কারণকে কেবল অগ্রবর্তী ঘটনা হলে চলবে না, তাকে নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা হতে হবে। একটি বিশেষ ক্ষেত্রে মাদুলি ধারণের পর রােগ নিরাময় হলেও সবক্ষেত্রে তা হয়। অর্থাৎ, মাদুলি ধারণ সবক্ষেত্রে রােগ নিরাময়ের অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। এক্ষেত্রে অসতর্কভাবে অনিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিটি কাকতালীয় দোষে দুষ্ট হয়েছে। [এক্ষেত্রে অবান্তর ঘটনাকে কারণ মনে করা দোষও করা যেতে পারে।] 

২৭) নববধূ গৃহে প্রবেশ করার পরই শাশুড়ির মৃত্যু হল। সুতরাং, নববধূর আগমনই শাশুড়ির মৃত্যুর কারণ। 

উঃ

দোষ: কাকতালীয় দোষ

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে ব্যতিরেকী পদ্ধতির অপপ্রয়ােগের জন্য কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। আলােচ্য যুক্তিতে নববধূর গৃহে আগমনকে শাশুড়ির মৃত্যুর কারণরূপে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, নববধূর গৃহে আগমন শাশুড়ির মৃত্যুর অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। একটি বিশেষ ক্ষেত্রে নববধূর গৃহে প্রবেশের পর শাশুড়ির মৃত্যু ঘটলেও সবক্ষেত্রে তা হয় না। কাজেই, কুসংস্কার বসতঃ এবং অসতর্কভাবে অনিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিটি কাকতালীয় দোষে দুষ্ট হয়েছে।

২৮) উপনিবেশগুলি ফলের মতাে। কারণ , ফল পাকলে যেমন গাছ থেকে পড়ে যায়, তেমনি উপনিবেশগুলি সমৃদ্ধ হলে দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। 

উঃ 

দোষ: মন্দ উপমা যুক্তি / ভ্রান্ত সাদৃশ্যমূলক দোষ।

বিচার: এটি একটি মন্দ উপমাযুক্তির উদাহরণ। কেননা, এক্ষেত্রে উপনিবেশ ও ফলের মধ্যে একটি অপ্রাসঙ্গিক সাদৃশ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গঠন করা হয়েছে। ফল প্রাকৃতিক নিয়মে নিজ থেকেই পেকে যায় এবং গাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। কিন্তু, উপনিবেশগুলি চেষ্টা করে সমৃদ্ধ হয় অর্থাৎ, পরিপক্ক হয় এবং দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। কাজেই, দুটি বিষয়ের পরিপক্কতা এবং বিচ্ছিন্ন হওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। অথচ এই যুক্তিতে সেই পার্থক্য সরিয়ে দিয়ে ফল এবং উপনিবেশদুটিকে একজাতীয় বলা হয়েছে। এজন্য এটি মন্দ উপমাযুক্তি হিসাবে গণ্য হবে। 

২৯) প্রায় জলে অবগাহন কোরাে না; কেননা, এক টুকরাে দড়ির মতাে শরীরেরও পচনের আশঙ্কা আছে। 

উঃ 

দোষ: মন্দ উপমা যুক্তি / ভ্রান্ত সাদৃশ্যমূলক দোষ।

বিচার: এটি একটি মন্দ উপমাযুক্তির দৃষ্টান্ত। এই যুক্তিতে দড়ির সঙ্গে মানুষের শরীরের যে সাদৃশ্য উল্লেখ করা হয়েছে তা অপ্রাসঙ্গিক। কেননা, দড়ি জড়পদার্থ। তার সঙ্গে জলের সম্পর্ক এক ধরনের। আর দেহে যখন চেতনা থাকে তখন চেতনাযুক্ত দেহের সঙ্গে জলের সম্পর্ক অন্য ধরনের। অর্থাৎ, জলে ভেজা দড়ি এবং জলে ভেজা দেহ — দুটির মধ্যে পার্থক্য আছে। অথচ যুক্তিটিতে এই পার্থক্য সরিয়ে দিয়ে জলে ভেজা দড়ি এবং জলে ভেজা দেহের পরিণাম অভিন্ন বলে অনুমান করা হয়েছে। সুতরাং, এটি মন্দ উপমাযুক্তি হিসাবে গণ্য হবে। 

৩০) একটি দেশের চরম পরিণতি হল ধ্বংস, কারণ, দেশ হল একপ্রকার জীবদেহ এবং জীবদেহের বার্ধক্য ও মৃত্যু আছে। 

উঃ 

দোষ: মন্দ উপমা যুক্তি / ভ্রান্ত সাদৃশ্যমূলক দোষ।

বিচার: এটি একটি মন্দ উপমাযুক্তির উদাহরণ। কারণ, এক্ষেত্রে দেশ ও জীবদেহের মধ্যে উৎপত্তি ও বৃদ্ধির সাদৃশ্যটি প্রকৃত সাদৃশ্য নয়। জীবদেহের মধ্যে প্রাণ আছে বলে তার যে অর্থে বৃদ্ধির কথা বলা হয় সেই অর্থে দেশের বৃদ্ধির কথা বলা যায় না। বস্তুত দেশ ও জীবদেহের মধ্যে বৈসাদৃশ্যমূলক ধর্ম বা বৈশিষ্ট্যের সংখ্যাই অধিক। এক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের মধ্যে কোনাে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক সাদৃশ্য না থাকায় দেশের ধ্বংস জীবদেহের ধ্বংসের মতাে একইরকমভাবে ঘটে — এরূপ সিদ্ধান্ত ভ্রান্ত। তাই যুক্তিটি মন্দ উপমাযুক্তি দোষে দুষ্ট হয়েছে। 

৩১) কোনাে দেশের রাজধানী হল দেশের হৃৎপিণ্ডের মতাে। কাজেই, রাজধানীর আয়তন বৃদ্ধি দেশের পক্ষে ক্ষতিকর।

 উঃ 

দোষ: মন্দ উপমা যুক্তি / ভ্রান্ত সাদৃশ্যমূলক দোষ।

বিচার: উক্ত যুক্তিটি ভ্রান্ত সাদৃশ্যমূলক দোষে দুষ্ট। এখানে দেশের রাজধানীর সঙ্গে দেহের হৃৎপিণ্ডের তুলনা করা হয়েছে। কিন্তু, এক্ষেত্রে তুলনা বা সাদৃশ্যটি আলংকারিক তুলনা বলে গণ্য করা হয়। আর আলংকারিক সাদৃশ্যের ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ সাদৃশ্য অনুমান করা যুক্তিযুক্ত নয়। বস্তুত হৃৎপিণ্ডের আয়তন বৃদ্ধির সঙ্গে দেশের রাজধানীর আয়তন বৃদ্ধির কোনাে কার্যকারণ সম্পর্ক থাকতে পারে না। তাই এখানে মন্দ উপমাযুক্তি দোষ ঘটেছে।

৩২) নতুন শাড়িটি পরার পরই রমার জ্বর হল । কাজেই, নতুন শাড়িটিই হল রমার জ্বরের কারণ। 

উঃ 

দোষ: কাকতালীয় দোষ 

বিচার: যুক্তিটিতে কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। কেননা, এখানে নতুন শাড়িকেই জ্বরের কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে, কিন্তু সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ভ্রান্ত এবং কার্যকারণ সম্পর্ক বহির্ভূত। এক্ষেত্রে নতুন শাড়ি পরা জ্বরের অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। অর্থাৎ, রমা যখনই শাড়ি পরে তখনই জ্বর হয় এমন নয়। কোনাে ঘটনাকে কারণ হতে গেলে তাকে কার্যের নিয়ত, শর্তান্তরহীন অব্যবহিত অগ্রবর্তী ঘটনা হতে হবে। এক্ষেত্রে অনিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনাকে কারণরূপে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে।

৩৩)  গ্রীষ্মের পর বর্ষা আসে, অতএব গ্রীষ্মকাল হল বর্ষাকালের কারণ। 

উঃ 

দোষঃ সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণ বলে গণ্য করার দোষ।

বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে সহকার্যের কোনাে একটিকে কারণ বলে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। এক্ষেত্রে গ্রীষ্মের পরে বর্ষা আসে বলে গ্রীষ্মকালকে বর্ষাকালের কারণ হিসাবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, কারণ হবে কার্যের নিয়ত শর্তান্তরহীন অগ্রবর্তী ঘটনা। এখানে গ্রীষ্মকাল - বর্ষাকালের নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও শর্তান্তরহীন অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। উভয় ঘটনাই হল কার্য। উভয়ের কারণ হল পৃথিবীর বার্ষিক গতি। বার্ষিক গতির জন্যই বিভিন্ন ঋতু পরিবর্তন ঘটে অর্থাৎ, গ্রীষ্ম ও বর্ষার আবির্ভাব ঘটে। সুতরাং, এক্ষেত্রে গ্রীষ্মকে বর্ষার কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিতে উক্ত দোষ ঘটেছে।

 ৩৪) হিটলারের পােল্যান্ড আক্রমণ হল ইংল্যান্ডের সঙ্গে জার্মানির যুদ্ধের কারণ।

 উঃ 

দোষ: আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ।

বিচার: উক্ত যুক্তিতে একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, কারণ হবে একাধিক সদর্থক ও নঞর্থক শর্তের সমষ্টি। এক্ষেত্রে হিটলারের পােল্যান্ড আক্রমণকেই ইংল্যান্ডের সঙ্গে জার্মানির যুদ্ধের কারণ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু হিটলারের পোল্যান্ড আক্রমণ যুদ্ধের একমাত্র কারণ নয়, কারণের একটি অংশমাত্র। এক্ষেত্রে হিটলারের পােল্যান্ড আক্রমণ করার পাশাপাশি আরও অন্যান্য শর্ত যেমন— ইউরােপে অর্থনৈতিক সংকট, উপনিবেশগুলির স্বাধীনতা লাভের আকাঙ্ক্ষা, জার্মান জাতির জাতীয়তাবােধ প্রভৃতি একত্রিত হয়ে যুদ্ধ সংঘটিত করেছে। কাজেই, এক্ষেত্রে একটি শর্তকে সমগ্র কারণ বলে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে।

 ৩৫) বুদ্ধিজীবীরা মিছিল করার পরে পশ্চিমবঙ্গে খরা সৃষ্টি হল। সুতরাং, বুদ্ধিজীবীদের মিছিল করাই হল পশ্চিমবঙ্গে খরা সৃষ্টির কারণ। 

উঃ

দোষ: অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ। / কাকতালীয় দোষ।

 বিচার: উক্ত আরােহ যুক্তিতে একটি অবান্তর ঘটনাকে কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, এক্ষেত্রে বুদ্ধিজীবীদের মিছিল করাকেই খরা সৃষ্টির কারণ বলে গণ্য করা হয়েছে। কিন্তু, বুদ্ধিজীবীদের মিছিল করার সঙ্গে খরা সৃষ্টি হওয়ার কোনােরূপ কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে এরূপ সিদ্ধান্ত করা হয়েছে বলে যুক্তিটি উক্ত দোষে দুষ্ট হয়েছে। 

৩৬) যকৃৎ থেকে যেমন পিত্তরস, পাকস্থলী থেকে অম্লরস ক্ষরিত হয়, তেমনি মস্তিষ্ক থেকে চিন্তা নিঃসৃত হয়। 

উঃ 

দোষ: মন্দ উপমাযুক্তি বা দুষ্টু উপমা যুক্তি বা ভ্রান্ত সাদৃশ্যমূলক দোষ।

বিচার: এটি একটি মন্দ উপমাযুক্তির দৃষ্টান্ত। কেননা, এক্ষেত্রে হেতুবাক্যে উল্লিখিত ধর্মগুলি সিদ্ধান্তে অনুমিত ধর্ম প্রসঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয়। এক্ষেত্রে হেতুবাক্যে উল্লিখিত ধর্মগুলি অর্থাৎ পিত্তরস, অম্নরস হল জড়ধর্ম এবং জড়ধর্মী যকৃৎ ও পাকস্থলী থেকে ওইসব ধর্ম নিঃসৃত হতে পারে। কিন্তু, চিন্তা হল অজড়ধর্ম, যা জড়ধর্মী মস্তিষ্ক থেকে নিঃসৃত হতে পারে না। কাজেই, এখানে অপ্রাসঙ্গিক সাদৃশ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গঠিত হয়েছে বলে যুক্তিটি মন্দ উপমা দোষে দুষ্ট হয়েছে।

 ৩৭) কলকাতার বাৎসরিক মৃত্যুর হার দিল্লির চেয়ে বেশি। অতএব কলকাতা দিল্লির চেয়ে অস্বাস্থ্যকর স্থান। 

উঃ 

দোষ:  অ-পর্যবেক্ষণ দোষ /অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ/

বিচার: উক্ত যুক্তিতে অ - পর্যবেক্ষণ দোষ ঘটেছে। কেননা, বাৎসরিক মৃত্যুর হার বেশি দেখে কলকাতাকে দিল্লির চেয়ে অস্বাস্থ্যকর স্থান বলা হয়েছে। কিন্তু, এখানে নঞর্থক দৃষ্টান্তগুলিকে পর্যবেক্ষণ না করে কেবল কিছু সদর্থক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত গঠন করা হয়েছে। দিল্লির তুলনায় কলকাতায় বাৎসরিক মৃত্যুর হার বেশি এ কথা সত্য, কিন্তু দিল্লির তুলনায় কলকাতায় জনসংখ্যার পরিমাণ অনেক বেশি ফলে মৃত্যুর হারও বেশি— এই নঞর্থকদিকটিকে পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। এ কারণে যুক্তিটি অপর্যবেক্ষণ দোষে দুষ্ট হয়েছে। 

৩৮) পেঁচার ডাক নিশ্চয়ই অশুভ। কেননা, পেঁচা ডাকার ঠিক পরেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছিল।

 উঃ 

দোষ: কাকতালীয় দোষ।

বিচার: যুক্তিটিতে কাকতালীয় দোষ ঘটেছে। কেননা, এক্ষেত্রে পেঁচার ডাক অগ্নিকাণ্ডের অগ্রবর্তী ঘটনা হলেও নিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনা নয়। অর্থাৎ, যখনই অগ্নিকাণ্ড ঘটে তখনই পেঁচা ডাকে এমন নয়। কাজেই, এখানে অনিয়ত অগ্রবর্তী ঘটনাকে কারণ বলার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে।

 ৩৯) রাম যে পরীক্ষায় ফেল করবে, এটা তার জানাই ছিল। কারণ, পরীক্ষা দিতে যাবার সময় সে রাস্তার একটি কালাে বিড়াল দেখেছিল। 

উঃ 

দোষ: অবান্তর ঘটনাকে কারণ মনে করা দোষ 

বিচার: উক্তি যুক্তিতে কোনাে অবান্তর ঘটনাকে কারণ মনে করা দোষ ঘটেছে। কেননা, পরীক্ষায় পাশ করা বা ফেল করার সঙ্গে রাস্তায় কালাে বিড়াল দেখার কোনােরূপ কার্যকারণ সম্পর্ক নেই। পরীক্ষায় পাশ করার ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক ব্যাপার হল ভালাে প্রস্তুতি নেওয়া। কিন্তু, এখানে একটি অবান্তর বিষয়কে কারণ বলে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে। 


৪০)  ভােরের স্বপ্ন সত্য হয়।

উঃ 

দোষ:  অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ। 

বিচার: যুক্তিটি অন্বয়ী পদ্ধতির অপপ্রয়োগের ফলে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষে দুষ্ট। কেননা, এখানে কয়েকটি ক্ষেত্রে ভােরের স্বপ্ন সত্য হতে দেখে সেই সীমিত সংখ্যক দৃষ্টান্তের ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে ভােরের স্বপ্নমাত্রই সত্য হয়। এক্ষেত্রে দৃষ্টান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি করলে দেখা যাবে, ভােরের স্বপ্ন কখনও সত্য হয় আবার কখনও মিথ্যা হয়। কাজেই, কার্যকারণ সম্পর্ক নিরূপণ না করে কয়েকটি বিশেষ দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত করা হয়েছে বলে যুক্তিটিতে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে ।

৪১) কুকুরেরাও মানুষের মতাে প্রাণী। সুতরাং কুকুরেরাও মানুষের মতাে বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন: 

উঃ

দোষ:  মন্দ - উপমার দোষ।

 বিচার: এই আরােহী যুক্তিটি মন্দ - উপমার দোষে দুষ্ট। কারন, এখানে মানুষের সঙ্গে কুকুরের তুলনা করা হয়েছে। কিন্তু কোনাে উপমা রচনার ক্ষেত্রে দুটি সমজাতীয় বিষয়ের মধ্যে উপমা করা উচিত, কোনাে বিজাতীয় বিষয়ের মধ্যে উপমা করা উচিত নয়। তাছাড়া কুকুর এবং মানুষের মধ্যে অনেক বৈসাদৃশ্য রয়েছে, সেগুলি উপেক্ষা করা হয়েছে। তাই মানুষ এবং একটি ইতর প্রাণীর মধ্যে উপমা সৃষ্টি করায় যুক্তিটি  এরূপ দোষে দুষ্ট হয়েছে।

৪২) পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হল ভালাে ফসল হওয়ার কারণ। 

উঃ

দোষ: আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ

বিচার : উক্ত আরােহ যুক্তিতে একটি আবশ্যিক শর্তকে সমগ্র কারণ হিসাবে গণ্য করা দোষ ঘটেছে। কেননা, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত ভালাে ফসল হওয়ার একটি শর্তমাত্র, একমাত্র কারণ নয়। ভালাে ফসল হওয়ার জন্য পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি উর্বর মৃত্তিকা, উন্নত মানের বীজ, কীটনাশক, রাসায়নিক সার প্রভৃতির প্রয়ােজন হয়। এগুলি একত্রিতভাবে ভালাে ফসল উৎপন্ন করে। কাজেই, এই শর্তগুলির মধ্যে কেবলমাত্র একটিকে অর্থাৎ, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতকে ভালাে ফসল হওয়ার কারণ হিসাবে গণ্য করার জন্য যুক্তিটিতে উক্ত দোষ ঘটেছে। 


Read More

Sunday, 27 December 2020

Two questions & answers of On Killing a Tree.

Leave a Comment

  1. Why does it take much time to kill a tree? How is the tree finally killed? [গাছকে মেরে ফেলতে প্রচুর সময় লাগে কেন? গাছটিকে শেষ পর্যন্ত কিভাবে মেরে ফেলা হয়?] (3+3) 

ANS. The tree has grown slowly by consuming the earth's nutrients and absorbing sunlight, air and water. It feeds upon the earth's crust and gains much strength. Neither a simple jab of the knife nor hacking and chopping can kill a tree at all because new shoots come out again. So, it takes much time to kill a tree.

 * To kill a tree, its root is to be pulled out. The root is to be kept in the sun and air to get scorched and choked. The root is to be left till they get dry and become brown. In time, it becomes hardened, twisted and withered. Thus the tree is finally killed.

বঙ্গানুবাদ:

[ গাছ ধীরে ধীরে পৃথিবীর পুষ্টিদ্রব্য ভোগ করে এবং সূর্যলোক, বাতাস আর জল শোষণ করে বেড়ে উঠেছে। সেটি ভূত্বক থেকে খাদ্যসংগ্রহ করে প্রচুর শক্তি অর্জন করেছে। সাধারণ ছুরিকাঘাতে অথবা প্রবল আঘাতে টুকরো টুকরো করে কাটলেও গাছকে মেরে ফেলা যায় না।  কারণ আবার সেটির নতুন পাতা গজায়। তাই গাছকে মেরে ফেলতে প্রচুর সময় লাগে। 

 গাছকে মেরে ফেলতে হলে তার শিকড় টেনে তুলতে হবে। শিকড়টিকে দগ্ধ ও শাসরুদ্ধ করার জন্য সুর্যের তাপে ও বাতাসে ফেলে রাখতে হবে। শিকড়টি শুকিয়ে না-যাওয়া ও বাদামি বর্ণ ধারণ করা পর্যন্ত ফেলে রাখতে হবে। যথাসময়ে সেটি শক্ত হয়ে যায়, মুচড়ে যায় আর পুরােপুরি শুকিয়ে যায়। এইভাবে গাছটিকে শেষপর্যন্ত মেরে ফেলা হয়। ]


2. Justify the significance of the title of the poem "On Killing aTree". (  "On Killing aTree" কবিতাটির নামকরণের তাৎপর্য বিচার করো।)

ANS. In his poem 'On Killing a Tree' Gieve Patel gives a graphic description of the total destruction  of a tree. The poet states that  a simple jab of the knife  cannot kill a tree.  It is not so easy  task because  the tree has grown slowly, consuming the earth and absorbing  sunlight, air and water. Moreover, when it is hacked and chopped, the bleeding bark heals itself. When a man wants to destroy the tree completely, it is uprooted from the earth-cave. This destruction passes through scorching, choking, browning, hardening, twisting and finally withering. Thus the poem describes the process of killing a tree. Hence, the title is appropriate.

বঙ্গানুবাদ:

'On Killing a Tree' কবিতায় গিয়েভ প্যাটেল একটি গাছকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার এক নিখুঁত চিত্র এঁকেছেন। কবি বলেছেন যে, ছুরির সাধারণ আঘাত  গাছকে মেরে ফেলতে পারে না। এটা অত সহজ কাজ নয় কারণ গাছটি পৃথিবীর পুষ্টিকর উপাদান নিয়ে এবং সূর্যালোক, বাতাস ও জল আত্মস্থ করে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠেছে। তা ছাড়া যখন সেটিকে কুপিয়ে ও কুচিয়ে কাটা হয়, তখন সে নিজে নিজেই সেরে ওঠে। মানুষ যখন গাছকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করতে চায় তখন সেটিকে মাটির - গুহা থেকে মূলােৎপাটিত করা হয়। এই ধ্বংসকাণ্ড অতিক্রান্ত হয় রােদের তাপে দগ্ধ হওয়া, শ্বাসরুদ্ধ হওয়া, বাদামি বা তামাটে রঙে পরিণত হওয়া, শক্ত হওয়া, মুচড়ে যাওয়া এবং শেষে শুকিয়ে যাওয়া প্রভৃতির মধ্য দিয়ে। এইভাবে কবিতাটি গাছকে মেরে ফেলার পদ্ধতির বর্ণনা দেয়। তাই নামকরণটি যথােপযুক্ত । ]

Read More

Saturday, 26 December 2020

চার্বাক দর্শনে অনুমান প্রমাণ নয় কেন? সমালোচনাসহ লেখ।

Leave a Comment

 অনুমান কাকে বলে? চার্বাক দর্শনে অনুমান প্রমাণ নয় কেন? এই মতক কি গ্রহণ যোগ্য? উত্তর এর সমর্থনে যুক্তি দাও।

উঃ

অনুমান: জ্ঞাত বিষয় থেকে ব্যাপ্তিজ্ঞানের ভিত্তিতে অজ্ঞাত নতুন বিষয়ের জ্ঞানকে অনুমান বলে। যে - কোনাে অনুমান প্রক্রিয়ায় তিনটি বিষয় থাকে — পক্ষ, সাধ্য ও হেতু। অনুমানের ক্ষেত্রে যে বিষয়টির অনুমান করা হয় বা যা প্রমাণ করতে চাওয়া হয় তাকে বলে সাধ্য। যে অধিকরণে (স্থলে) সাধ্য আছে কিনা এরূপ সংশয় থাকে, সেই অধিকরণকে পক্ষ বলে। আর যার সাহায্যে পক্ষে সাধ্যের অনুমান করা হয় সেই বিষয়টি হল হেতু। 

উদাহরণস্বরূপ--

 ওই পর্বতটি ধূমবান। 

যেখানে যেখানে ধূম থাকে সেখানে সেখানে বহ্নি থাকে। 

 : . ওই পর্বতটি বহ্নিমান।

 উক্ত অনুমানে ‘পর্বত’ হল পক্ষ, 'বহ্নি' হল সাধ্য এবং 'ধূম’ হল হেতু। এখানে ধূমের সঙ্গে বহ্নির অর্থাৎ হেতুর সঙ্গে সাধ্যের যে নিহত সহচার সম্পর্ক আছে তাকেই বলা হয় ব্যপ্তি। ব্যাপ্তি-জ্ঞান অনুমানের ভিত্তি।

        অনুমান প্রমাণ খন্ডনে চার্বাকদের যুক্তি:

প্রথমতঃ অনুমান হল এমন এক মানসিক প্রক্রিয়া যার সাহায্যে আমরা জ্ঞাত সত্য থেকে অজ্ঞাত সত্যে উপনীত হই। এক্ষেত্রে যে অনিশ্চয়তা আছে তা অস্বীকার করা যায় না। সুতরাং বলা যায়, অনুমান হল একপ্রকারের অন্ধকারে লাফ দেওয়ার প্রক্রিয়া, যথার্থ জ্ঞান লাভের প্রক্রিয়া নয়। 

দ্বিতীয়তঃ  অনুমানে ভ্রান্তির সম্ভাবনা থাকে। চার্বাক দার্শনিকেরা বলেন, প্রত্যক্ষ যেমন স্পষ্ট জ্ঞান দেয়, অনুমান সেরূপ স্পষ্ট জ্ঞান দিতে পারে না। কেননা, অনুমান পরােক্ষ বা অন্য - নির্ভর জ্ঞান। প্রত্যক্ষ সংশয় ও বিপর্যয় - শূন্য জ্ঞান দেয়; অপরপক্ষে, অনুমান - প্রদত্ত জ্ঞান সংশয়মূলক, বিতর্কিত ও অনিশ্চিত। তাই সংশয়মূলক অনুমানকে যথার্থ প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা যায় না। 

তৃতীয়তঃ  অবরােহ অনুমান চক্রক দোযে (Fallacy of Petitio Principii) দুষ্ট। কেননা, অবরােহ অনুমানে সিদ্ধান্তটিকে পূর্ব থেকে প্রধান আশ্রয়বাক্যে স্বীকার করে নেওয়া হয়, যে প্রধান আশ্রয়বাক্যের যাথার্থ্য প্রমাণিত হয়নি। অবশ্য আরােহ অনুমানের লক্ষ্য হল- অবরােহ অনুমানের প্রধান আশ্রয়বাক্যের যথার্থ প্রমাণ করা। কিন্তু আরােহ অনুমানে প্রত্যক্ষ বিষয়কে ভিত্তি করে অপ্রত্যক্ষ বিষয়ের সামান্যীকরণ করতে হয়। সেজন্য আরােহ অনুমানে যথেষ্ট অনিশ্চয়তা ও সন্দেহের অবকাশ থাকে।

       চতুর্থতঃ  যথার্থ ও বৈধ অনুমান গঠন করতে হলে আমাদের ব্যাপ্তিজ্ঞানের ওপর নির্ভর করতে হয়। চার্বাক দার্শনিকেরা বলেন, ব্যাপ্তিজ্ঞান প্রত্যক্ষের মাধ্যমে অর্জন করা যায় না; অতএব অনুমান যথার্থ জ্ঞানের উৎস হতে পারে না। ব্যাপ্তিজ্ঞান বলতে কি বােঝায় সংক্ষেপে আলােচনা করা যাক। দূরে পাহাড়ে ধূম দেখে অনুমান করলাম যে সেখানে বহ্নি আছে। এই অনুমান নিশ্চিতভাবে সত্য হতে পারে যদি ধূম ও  বহ্নির এই সম্বন্ধ থাকে যে, “যেখানে যেখানে ধূম আছে, সেখানে সেখানেই বহ্নি আছে।” ধূম আর বহ্নির এই নিয়ত সম্বন্ধকে দার্শনিক পরিভাষায় বলা হয় ব্যাপ্তি। ধূম থাকলেই বহ্নি থাকবে— অতীতেও যেখানে ধূম ছিল সেখানে বহ্নি ছিল, বর্তমানেও যেখানে ধুম আছে সেখানে বহ্নি আছে এবং ভবিষ্যতেও যেখানে ধূম থাকবে, বহ্নি থাকবে এই রকম নিঃসন্দিগ্ধ ব্যাপ্তিজ্ঞান যদি আমাদের হয়, তবেই আমরা কোন স্থানে ধূম দেখে নিশ্চিতভাবে অনুমান করতে পারি যে সেখানে বহ্নি আছে। চার্বাকদের মতে এরূপ নিঃসন্দিগ্ধ ব্যাপ্তিজ্ঞান প্রত্যক্ষের মাধ্যমে সম্ভব নয়। কারণ, বর্তমানে ধূমের সঙ্গে বহ্নির সহ - অবস্থানের সম্বন্ধ প্রত্যক্ষ করা গেলেও সুদূর অতীতে ও অনাগত ভবিষ্যতে ধূমের সঙ্গে বহ্নির এই সহ - অবস্থানের সম্বন্ধ প্রত্যক্ষ করা যায় না। অতএব অনুমান নিশ্চিত আনের উৎস হতে পারে না। 

পঞ্চমতঃ  কেউ কেউ বলতে পারেন, অনুমানের সাহায্যে ব্যাপ্তিজ্ঞান সম্ভব হয়। বহুক্ষেত্রে বহ্নিকে ধূমের সহচররূপে দেখেছি; এদের একত্র থাকার ব্যতিক্রম কোথাও দেখা যায়নি। এর ভিত্তিতে আমরা অনুমান করছি, ধুম ও বহ্নি একত্র থাকবেই। কিন্তু এভাবে ব্যাপ্তিজ্ঞান যদি অনুমানের ওপর নির্ভর করে, তাহলে ঐ অনুমান আবার ব্যাপ্তিজ্ঞানের ওপর নির্ভর করবে এবং ঐ ব্যাপ্তিজ্ঞান আবার আর একটি অনুমানের ওপর নির্ভর করবে। এইভাবে অনুমানের পর অনুমান গঠন করেই চলতে হবে। ফলতঃ  অনবস্থা দোষ (Fallacy of Infinite Regress) ঘটবে। প্রকৃতপক্ষে, যখন অনুমান প্রমাণ কিনা— এটাই বিচার্য বিষয়, তখন অনুমানের ওপর ভিত্তি করে ব্যাপ্তিজ্ঞান স্থাপন করা উচিত নয়।

যষ্ঠতঃ অনেকে বলতে পারেন, কোন বিশ্বস্ত মহাজ্ঞানী ব্যক্তির আপ্তবাক্য থেকে ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভ করা যেতে পারে। কিন্তু তাও গ্রহণযােগ্য নয়। কেননা, এরূপ ব্যক্তি সত্যিই বিশ্বাসযােগ্য কিনা তা জানার জন্য অনুমানের সাহায্য নিতে হয়। এক্ষেত্রে অনুমানটি হবে নিম্নরূপ: 

বিশ্বস্ত মহাজ্ঞানী লােকেরা যা বলেন তা সন্দেহাতীত;

 বিশ্বস্ত মহাজ্ঞানী লােকেরা বলেন, বহ্নি ও ধূমের নিয়ত সম্বন্ধ আছে। 

: . বহ্নি ও ধূমের নিয়ত সম্বন্ধ(ব্যাপ্তি) সন্দেহাতীত। 


সপ্তমতঃ  চার্বাকগণ অনুমানের বিরুদ্ধে আরও আপত্তি তুলে বলেন যে, উপমানের দ্বারাও ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভ করা সম্ভব নয়। আমরা জানি, নৈয়ায়িকগণ উপমান নামে একটি স্বতন্ত্র প্রমাণ স্বীকার করেন। উপমান কাকে বলে বােঝার জন্য উপমানের বহুল প্রচলিত উদাহরণটি নেওয়া যাক। কোন একজন নগরবাসী মানুষ গরু দেখেছেন; কিন্তু গবয় বা নীলগাই দেখেননি। একদিন তিনি একজন অরণ্যবাসী ব্যক্তির কাছে জানলেন যে, গরুর সদৃশ পশুই হল গবয় (গােসদৃশ গবয়)। ঐ নগরবাসী ব্যক্তিটি একদিন অরণ্যে ভ্রমণ করার জন্য বের হলেন। তিনি অরণ্যে গিয়ে গরুর সদৃশ একটি প্রাণী প্রত্যক্ষ করলেন এবং বললেন— এই নতুন প্রাণীটি হল গবয় বা নীলগাই। এই সাদৃশ্যভিত্তিক জ্ঞানের উপায়কেই নৈয়ায়িকগণ উপমান বলেছেন। চার্বাকদের মতে উপমান স্বতন্ত্র প্রমাণ নয়। তারা বলেন, উপমান অনুমানেরই প্রকারভেদ। পরিচিত গরু এবং একটি অপরিচিত গবয়ের মধ্যে সাদৃশ্য প্রত্যক্ষ করার পর আমরা অনুমানের সাহায্যে বলি— অপরিচিত পশুটি হল গবয়। তাই চার্বাকগণ সিদ্ধান্ত করেন , উপমান যেহেতু স্বতন্ত্র প্রমাণ নয়, সেহেতু উপমানের দ্বারা ব্যাপ্তি - জ্ঞান অর্জনের প্রশ্নই ওঠে না। 

অষ্টমতঃ ভাট্ট মীমাংসকগণ এবং অদ্বৈত বৈদান্তিকগণ অনুপলব্ধি নামে একটি প্রমাণ স্বীকার করেন। চার্বাকগণ বলেন, অনুপলব্ধির মাধ্যমেও ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। ভাব বস্তুর (অর্থাৎ, অস্তিত্ব রয়েছে এমন বস্তুর) জ্ঞানের জন্য যেমন প্রত্যক্ষ, অনুমান প্রভৃতি প্রমাণ স্বীকার করা হয়, তেমনই বস্তুর অভাবের বা অনস্তিত্বের জ্ঞানের জন্য ভাট্ট মীমাংসকগণ এবং অদ্বৈত বৈদান্তিকগণ অনুপলব্ধি নামক স্বতন্ত্র প্রমাণ স্বীকার করেন। 

‘ভূতলে (মেঝেতে) ঘট নেই’— আমরা অনেক সময় এই জাতীয় অবধারণ ব্যক্ত করি। প্রশ্ন হল কি উপায়ে আমরা ভূতলে ঘটাভাব জানতে পারি? এর উত্তরে ভাট্ট মীমাংসকগণ বলেন, প্রত্যক্ষ, অনুমান ইত্যাদি চিরাচরিত প্রমাণের মাধ্যমে বস্তুর অভাবের জ্ঞান সম্ভব নয়। বস্তুর অভাবের জ্ঞানের জন্য তাঁরা অনুপলব্ধি নামক স্বতন্ত্র প্রমাণ স্বীকার করেন। চার্বাক গন বলেন - অনুপলব্ধিকে যদি স্বতন্ত্র প্রমাণ হিসেবে স্বীকার করে নেওয়াও  হয় , তাহলেও বলা যায় যে, অনুপলব্ধির মাধ্যমে কোন কিছুর অভাবের জ্ঞান লাভ সম্ভব হয়, ব্যাপ্তি - জ্ঞান লাভ সম্ভব নয়। 

নবতমঃ অষ্টমত কেউ কেউ বলেন, কার্যকারণ সম্পর্কের ওপর ভিত্তি করে ব্যাপ্তি প্রতিষ্ঠা করা যায়। এদের মতে, ধূম ও বহ্নির মধ্যে কার্যকারণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা গেলেই ধূম ও বহ্নির মধ্যে ব্যাপ্তি সম্বন্ধ প্রতিষ্ঠা করা যায়। কিন্তু চার্বাকপন্থীরা এই অভিমত স্বীকার করেন না। চার্বাক মতে, কার্যকারণ সম্পর্ক হল অনিবার্য সম্পর্ক। আর অনিবার্যতাকে প্রত্যক্ষ করা যায় না। তাই কার্যকারণ সম্পর্কের দ্বারা ব্যাপ্তিজ্ঞান লাভ করা যায় না।

এই সকল কারণে চার্বাকগণ অনুমানকে প্রমাণ হিসাবে স্বীকার করেন না। অবশ্য পরবর্তীকালে যারা সুশিক্ষিত চার্বাক নামে পরিচিত তারা দৈনন্দিন জীবনযাত্রা নির্বাহের প্রয়ােজনে কিছু অনুমানের প্রামাণ্য স্বীকার করে নিয়েছিলেন। তবে তারা অতীন্দ্রিয় বিষয় সম্পর্কে অনুমান সমর্থন করেননি। 

 সমালােচনাঃ  ভারতীয় অন্যান্য দর্শন সম্প্রদায়, বিশেষ করে জৈন দার্শনিকগণ অনুমান প্রমাণ - বিরােধী চার্বাকদের মতের তীব্র সমালােচনা করেছেন। 

১) জৈন দার্শনিকগণ বলেন, চার্বাকরা যখন ঈশ্বর, আত্মা, স্বর্গ, পরলােক প্রভৃতি অতীন্দ্রিয় সত্তার অস্তিত্ব অস্বীকার করেন তখন তারা অনুমানের সাহায্য নিয়েই এরূপ সিদ্ধান্ত করেন। এক্ষেত্রে চার্বাকদের অনুমান প্রক্রিয়াটি হল :

 যা কিছু প্রত্যক্ষগ্রাহ্য কেবল তাদের অস্তিত্ব আছে।

 আত্মা ঈশ্বর প্রভৃতি প্রত্যক্ষগ্রাহ্য নয়। 

. :  আত্মা ঈশ্বর প্রভৃতির অস্তিত্ব নেই। 

২) চার্বাকদের বিরুদ্ধে জৈনরা আরও অভিযােগ করে বলেন যে, যদি চার্বাকদের প্রশ্ন করা হয় প্রত্যক্ষকে কেন একমাত্র প্রমাণ বলা হবে — তাহলে হয় তারা নীরব থাকবেন অথবা তাদের বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি দেখাবেন। যদি তারা নীরব থাকেন তাহলে তাদের বক্তব্য প্রতিষ্ঠিত হবে না। আর যদি তারা তাদের বক্তব্যের স্বপক্ষে যুক্তি দেন  তাহলে প্রকারান্তরে তারা অনুমানকে প্রমাণরূপে স্বীকার করে নিতে বাধ্য হবেন। 

3) অনুমান প্রমাণ স্বীকার না - করলে সমস্ত প্রকার আলােচনা, তর্ক, বিতর্ক এবং ব্যবহারিক জীবনযাত্রা অচল হয়ে পড়বে। যেমন — বিদেশে স্থিত কোনাে ব্যক্তির প্রত্যক্ষের অভাবে তাকে মৃত বলে ধরে নিতে হবে। কিন্তু অনুমান করে নিতে হয় যে তিনি জীবিত আছেন। 

৪) নৈয়ায়িক উদয়নাচার্য চার্বাকদের অনুমান সম্পর্কিত মতের সমালােচনা করে বলেন, চার্বাকরা যখন ভবিষ্যতের কথা বলেন, তখন তারা সেই ভবিষ্যৎকে কীভাবে জানেন? প্রত্যক্ষের দ্বারা নিশ্চয়ই ভবিষ্যৎকে জানা যায় না। কাজেই, স্বীকার করতে হয় যে, ভবিষ্যৎকে জানতে গেলে অনুমানের সাহায্য নিতেই হয়। 

৫) অনুমানলব্ধ জ্ঞান পরােক্ষ ও অস্পষ্ট বলে চার্বাকরা অনুমানকে অযথার্থ বলেছেন। কিন্তু জৈনদের মতে, প্রত্যক্ষ জ্ঞানও ইন্দ্রিয়নির্ভর হওয়ার জন্য পরােক্ষ জ্ঞান হয়। কাজেই, অনুমানলব্ধ জ্ঞান পরােক্ষ বলে অযথার্থ হলে প্রত্যঙ্গলব্ধ জ্ঞানকেও অযথার্থ বলতে হবে।

৬) যে সকল যুক্তির সাহায্যে চার্বাকগণ অনুমান ও শব্দকে প্রমাণরূপে অস্বীকার করেছেন সেই একই যুক্তির সাহায্যে প্রত্যক্ষকেও প্রমাণরূপে গ্রহণ করা যাবে না। কেননা, অনুমান ও শব্দের মতাে প্রত্যক্ষলব্ধ জ্ঞানও অনেক সময় ভ্রান্ত প্রমাণিত হয়। যেমন — রজ্জুতে সর্পভ্রম। কাজেই, অনুমানকে প্রমাণ হিসাবে অস্বীকার করলে প্রত্যক্ষকেও প্রমাণ বলা যাবে না।

Google translation: 

What is Anumana?  Why is  Anumana not Pramana in Carvaka philosophy?  Is this opinion acceptable?  Argue in support of the answer.

 Anumana: Anumana is the knowledge of an unknown new subject on the basis of baptism from a known subject.  That - there are three things in the conjecture process - pros, cons and reason.  In the case of conjecture, it is possible to say what is inferred or what is sought to be proved.  The tribunal in which there is such doubt as to whether it is feasible is called a party.  And the reason with which it is estimated that the cause is possible is the cause.

 For example--

  That mountain is smoky.

 Where there is smoke, there is smoke.

  :.  That mountain is flowing.

  In that conjecture ‘mountain’ is the side, ‘bahni’ is the possible and ‘dhoom’ is the cause.  Here, the relation between smoke and bahni, that is, the cause of death, is called range.  Scope-knowledge is the basis of conjecture.

         Charbak's argument in refuting the hypothesis:

 First of all, conjecture is a mental process by which we move from the known truth to the unknown truth.  The uncertainty in this case cannot be denied.  So it can be said that conjecture is a process of jumping into a kind of darkness, not a process of gaining accurate knowledge.

 Second, there is the possibility of error in conjecture.  Charbak philosophers say that as direct knowledge gives clear knowledge, conjecture cannot give such clear knowledge.  Because, conjecture is indirect or other - dependent knowledge.  Direct doubt and catastrophe - gives zero knowledge;  Conjecture, on the other hand, is skeptical, controversial, and uncertain.  So skeptical assumptions cannot be taken as just proof.

 Thirdly, the Fallacy of Petitio Principii is evil.  For, in the assumption of Abrahah, the decision is accepted from the East in the main asylum, which has not proved the validity of the main asylum.  However, the goal of the Ara'ah conjecture is to prove the main premise of the Ara'ah conjecture.  But in Araeh's conjecture one has to generalize the indirect subject based on the direct subject.  That is why there is enough room for uncertainty and doubt in Araeh's conjecture.

        Fourth, we need to rely on baptism in order to make accurate and valid assumptions.  Charbak philosophers say that baptism cannot be achieved directly;  Therefore conjecture cannot be a source of accurate knowledge.  Let us briefly discuss what is meant by baptism.  Seeing the smoke in the distant mountains, I guessed that there was a bahni.  This assumption can certainly be true if there is a relation between smoke and bahni that "where there is smoke, there is bahni."  This constant relation of smoke and smoke is called range in philosophical terms.  If there is smoke, there will be fire: in the past, where there was smoke, there will be fire, now there is smoke, there will be fire, and in the future, where there will be smoke, there will be fire.  .  According to the Charbaks, such an undoubted baptism is not possible through direct observation.  This is because, although the relation of co-position of smoke with smoke can be seen at present, the co-position of co-position of smoke with smoke in the distant past and in the future cannot be observed.  Therefore, conjecture cannot be a sure source of income.

 Fifth, some may say that baptism is possible with the help of conjecture.  In many cases I have seen Bohni as a companion of smoke;  The exception of their being together was not seen anywhere.  On this basis, we assume that Dhoom and Bohni will be together.  But if baptism thus relies on conjecture, then that conjecture will again depend on baptism and that baptism will again depend on another conjecture.  In this way, after the assumption, the assumption must be formed.  As a result, Fallacy of Infinite Regress will occur.  In fact, baptism should not be based on conjecture when it comes to guessing.

 As many may say, baptism can be obtained from the revelation of a faithful sage.  But that too is not acceptable.  Because, to know whether such a person is really credible, one has to take the help of conjecture.  In this case the estimate will be as follows:

 What the faithful sages say is beyond doubt;

  The faithful sage Lakera said that there is a definite relationship between bahni and dhoom.

 :.  The definite relation (range) of smoke and smoke is undoubted.

 Seventh, the Charvakas further objected to the hypothesis, saying that it was not possible to gain baptism even by analogy.  As we know, logicians accept a unique proof called analogy.  Let's take the most common example of analogy to explain what an analogy is.  One of the townspeople saw cows;  But did not see the cow or the nilgai.  One day he learned from a forest dweller that a cow-like animal is a cow (cow-like cow).  The man from the city went out for a walk in the forest one day.  He went to the forest and saw an animal resembling a cow and said: This new animal is a cow or a nilgai.  The logicians call this analogous way of knowledge analogy.  According to Charbak, analogy is not a separate proof.  They say that analogy is a type of conjecture.  After observing the resemblance between a familiar cow and an unfamiliar cow, we say by conjecture: The unfamiliar animal is the cow.  The Charvakas therefore conclude that since analogy is not a separate proof, there is no question of acquiring knowledge by analogy.

 Eighth, the Bhatta Mimansakas and the Advaita Vedantics accept a proof called unattainable.  The Charbaks say that it is not possible to gain baptism even through non-realization.  Just as evidence for direct knowledge, conjecture, etc. is accepted for the knowledge of the object of thought (i.e., the thing that exists), so for the knowledge of the lack or non-existence of matter, the Bhatta theologians and the Advaita Vedantics accept the separate evidence for unavailability.

 ‘There are no pots on the floor’ - we often express this kind of assumption.  The question is in what way can we know what happened on the ground?  In reply to this, the Bhatt critics said that knowledge of the absence of matter is not possible through conventional evidence such as direct, conjecture, etc.  For the knowledge of the lack of objects, they accept the unique evidence called unavailability.  Charbak Gon says that even if the unattainable is accepted as a separate proof, it can be said that it is possible to gain knowledge of the lack of something through the unattainable, it is not possible to gain the knowledge of scope.

 Ninth: Eighth Some say that scope can be established on the basis of causal relationship.  According to them, the causal relationship between smoke and smoke can only be established by establishing a causal relationship between smoke and smoke.  But the Charbakists do not accept this view.  According to Charbak, causal relationships are inevitable relationships.  And inevitability cannot be perceived.  So baptism cannot be gained by causal relationship.

 For all these reasons the Charvakas do not accept conjecture as evidence.  However, those who later came to be known as the well-educated Charbaks accepted the evidence of some conjecture in the necessity of daily life.  However, they did not support speculation about the supernatural.

  Criticism: Other Indian philosophical communities, especially Jain philosophers, have sharply criticized the views of anti-Charbakas.

 1) Jain philosophers say that when the Charvakas deny the existence of God, the soul, the heavens, the afterlife, etc., they make such a decision with the help of conjecture.  In this case, the process of guessing Charbak is:

  All that is perceptible is their existence.

  The soul is not perceptible to God etc.

 .  : Soul God etc. does not exist.

 2) The Jains further complained against the Charbakas, saying that if the Charbakas were asked why the eyewitness would be called the only evidence - then they would either remain silent or argue in favor of their statement.  If they remain silent, their statement will not be established.  And if they argue in favor of their statement, then they will be forced to accept the conjecture as evidence.

 3) Do not accept conjectural evidence - all kinds of discussions, arguments, debates and practical life will be useless.  For example, a person living abroad should be considered dead due to lack of direct contact.  But one has to assume that he is alive.

 4) The logical Udayanacharya criticizes the Charbakas' assumptions and says, "When the Charbakas speak of the future, how do they know the future?"  The future is certainly not known by direct observation.  So, we have to admit that to know the future, we have to take the help of conjecture.

 5) The Charbakars have called the conjecture unreal as the knowledge gained is implicit and vague.  But according to the Jains, direct knowledge is also indirect knowledge to be sense dependent.  Therefore, if the inferred knowledge is untrue as perceptual, then the perceived knowledge must also be called untrue.

 7) The same argument by which the Charbakas have rejected conjecture and word as evidence cannot be accepted as evidence.  Because, according to conjecture and word, perceived knowledge is often proved wrong.  For example - snake delusion on the rope.  Therefore, if the conjecture is denied as evidence, the eyewitness cannot be called evidence either.

Read More

Wednesday, 23 December 2020

HS philosophy: SAQ of NATURE OF INDUCTION (আরোহ অনুমানের প্রকৃতি) সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন

Leave a Comment

 আরোহ অনুমানের প্রকৃতি

(NATURE OF INDUCTION)

Class XII (WBCHSE)

সংক্ষিপ্ত উত্তরধর্মী প্রশ্ন(SAQ)  প্রতিটির মান - ১

)  আরোহ অনুমান কাকে বলে? 

 উত্তর : যে অনুমানে একাধিক আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্তটি নিঃসৃত হয় কিন্তু কখনোই সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না এবং যার সিদ্ধান্তটি সর্বদা আশ্রয়বাক্যের তুলনায় বেশি ব্যাপক হয়, তাকে আরোহ অনুমান বলে।

Or,

যে অনুমানে পর্যবেক্ষণ বা পরীক্ষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত আশ্রয়বাক্য থেকে প্রকৃতির একরূপতা নীতি বা কার্য - কারণ নিয়ম বা উভয়ের সাহায্যে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সামান্য সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্তরূপে প্রতিষ্ঠা করা হয়, সেই অনুমানকে বলা হয় আরােহ অনুমান ।

Or,

কয়েকটি বিশেষ দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে প্রকৃতির একরূপতা ও কার্যকারণ নীতির উপর ভিত্তি করে একটি সার্বিক সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করাকেই আরোহ অনুমান বলা হয়।

 ২) আরােহ যুক্তিবিজ্ঞানের প্রবর্তক কে?

 উত্তর : আরােহ যুক্তিবিজ্ঞানের প্রবর্তক হলেন বেইন।

৩) আরোহ যুক্তিবিজ্ঞানের প্রকৃত প্রবর্তক কে?

 উত্তর : জন স্টুয়ার্ট মিল হলেন আরােহ যুক্তিবিজ্ঞানের প্রকৃত প্রবর্তক । 

৪) আরােহ অনুমানের দুটি  বৈশিষ্ট্য লেখাে।

  উত্তর : আরােহ অনুমানের দুটি  বৈশিষ্ট্য হল – 

(i) আরোহ অনুমানের সিদ্ধান্তটি একাধিক যুক্তিবাক্য থেকে নিঃসৃত  হয়।

 (ii) সিদ্ধান্তটি সর্বদা আশ্রয়বাক্য থেকে ব্যাপকতর হয় অর্থাৎ কখনও কম ব্যাপক হয় না। 

৫) অবরােহ ও আরােহ অনুমানের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখাে ।

 উত্তর : অবরােহ ও আরােহ অনুমানের মধ্যে দুটি পার্থক্য হল – 

(i) অবরােহ অনুমানে সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয়। অপরপক্ষে, আরােহ অনুমানে সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না।

 (ii) অবরােহ অনুমানে সিদ্ধান্ত কখনও আশ্রয়বাক্য থেকে ব্যাপকতর হয় না। অপরপক্ষে, আরােহ অনুমানে সিদ্ধান্ত সর্বদা আশ্রয়বাক্য থেকে ব্যাপকতর হয়। 

৬) আরােহ অনুমানের প্রয়ােজন কী ? 

উত্তর : আরােহ অনুমানের জন্য একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন অপরিহার্য। এই সামান্য সংশ্লেষক বচনের বস্তুগত সত্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য আরােহ অনুমান প্রয়ােজন।

৭) আরোহ অনুমানের একটি উদাহরণ দাও। 

উত্তর : আরােহ অনুমানের একটি উদাহরণ হল :

 রাম হয় মরণশীল। 

যদু হয় মরণশীল।

 হরি হয় মরণশীল। 

. ' . A = সকল মানুষ হয় মরণশীল। 

৮) মিল আরােহ অনুমানকে কতভাগে ভাগ করেছেন? 

উত্তর : মিল আরােহ অনুমানকে দু - ভাগে ভাগ করেছেন । যেমন –

 (১) তথাকথিত আরােহ অনুমান।

 (২) প্রকৃত আরােহ অনুমান। 

৯) প্রকৃত আরােহ অনুমান কতপ্রকার ও কী কী ?

 উত্তর : প্রকৃত আরােহ অনুমান তিনপ্রকার। যথা- ১) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান, (২) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান এবং (৩) উপমাযুক্তি বা সাদৃশ্যমূলক আরােহ অনুমান। 

১০) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান কাকে বলে? 

উত্তর : যে আরােহ অনুমানে প্রকৃতির একরূপতা নীতি এবং কার্যকারণ নিয়মের ভিত্তিতে কয়েকটি বিশেষ বস্তু বা ঘটনাকে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ করে সমজাতীয় সকল ঘটনা সম্পর্কে একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাকে বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বলে।

OR,

যে আরােহ অনুমানে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত আশ্রয়বাক্য থেকে প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের উপর ভিত্তি করে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সামান্য সংশ্লেষ বচন সিদ্ধান্তরূপে প্রতিষ্ঠা করা হয় সেই অনুমানকে বলা হয়  বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান। 

১১) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের একটি উদাহরণ দাও। 

উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের একটি উদাহরণ হল--

 রাম হয় মানুষ এবং মরণশীল। 

রহিম হয় মানুষ এবং মরণশীল।

 রীতা হয় মানুষ এবং মরণশীল ।

 গীতা হয় মানুষ এবং মরণশীল। 

. :  সকল মানুষ হয় মরণশীল । সিদ্ধান্ত 

১২) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি কী? 

উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি হল পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ।

১৩) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি কী? 

 উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতি এরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়ম। 

১৪) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটে না কেন?

 উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানে সদর্থক ও নঞর্থক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় বলে বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের ক্ষেত্রে অবৈধ সামান্যীণ দোষ ঘটে না। 

 ১৫) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান নামকরণের কারণ কী?

 উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সাতটি স্তর অতিক্রম করে এবং কার্য - কারণ নিয়মের উপর ভিত্তি করে সামান্যীকরণ করে সামান্য সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্তরূপে প্রতিষ্ঠা করা হয় বলে এই অনুমানকে বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বলা হয়।

 ১৬) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখাে। 

উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের দুটি বৈশিষ্ট্য হল –

(i) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি হল পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ। 

(ii) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়ম। 

১৭) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বা লৌকিক আরােহ অনুমান কাকে বলে?

 উত্তর : যে আরােহ অনুমানে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করার কোনাে চেষ্টা না করে, কেবলমাত্র অবাধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে কয়েকটি বিশেষ দৃষ্টান্ত গণনার মাধ্যমে একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্ত হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাকে অবৈজ্ঞানিক আরােহ বা অপূর্ণ গণনামূলক আরােহ বা লৌকিক আরােহ অনুমান বলা হয়।

 উদাহরণস্বরূপ :

(i) অবাধ অভিজ্ঞতায় আমরা আজ পর্যন্ত যত রাজহাঁস দেখেছি তাদের সবগুলি সাদা। (আজ পর্যন্ত সাদা ভিন্ন অন্য কোনাে রঙের রাজহাঁস দেখিনি)। . 

: . সকল রাজহাঁস হয় সাদা। 

(ii) অবাধ অভিজ্ঞতায় যত কাক দেখেছি, তাদের সবগুলির রং কালাে। (আজ পর্যন্ত কালাে ভিন্ন অন্য কোনাে রঙের কাক দেখিনি)। 

: . সকল কাক হয় কালাে।

১৮) লৌকিক আরােহ অনুমানকে অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বলা হয় কেন? 

 উত্তর : লৌকিক আরোহ অনুমানকে অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বলা হয় — কারণ, এই জাতীয় অনুমানের সিদ্ধান্তটি কার্যকারণ নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত নয়। এক্ষেত্রে কেবলমাত্র অবাধ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্তটিকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হয়। এখানে কেবলমাত্র অসংখ্য সদর্থক দৃষ্টান্তকে পর্যবেক্ষণ করা হয় কিন্তু, নঞর্থক বা বিরুদ্ধ দৃষ্টান্তগুলিকে পর্যবেক্ষণ করা হয় না। যেমন — 

কয়েকটি রাজহাঁসকে সাদা বর্ণের দেখে যখন সিদ্ধান্ত করা হয় সব রাজহাঁস সাদা তখন রাজহাঁস এবং সাদাবর্ণের মধ্যে আমরা কোনাে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় করি না। এজন্য তর্কবিজ্ঞানী মিল এই জাতীয় অনুমানকে ‘অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান’ বলেছেন।


১৯) অবৈজ্ঞানিক আরোহ অনুমানকে লৌকিক আরোহ অনুমান বলা হয় কেন?

উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের উপর ভিত্তি করে সাধারণ মানুষ তাদের প্রাত্যহিক জীবনে কয়েকটি বিশেষ বিশেষ ঘটনা পর্যবেক্ষণ করে সামান্যীকরণ করে থাকেন। এইজন্য অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে লৌকিক আরােহ অনুমান বলা হয়। 

Or,

অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে লৌকিক আরােহ অনুমান বলা হয়। কারণ, সাধারণ মানুষ দৈনন্দিন জীবনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কার্যকারণ সম্বন্ধ নির্ণয় না করেই ব্যতিক্রমহীন অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই ধরনের অনুমান গঠন করে থাকে। তাই একে লৌকিক আরােহ বলা হয়। 

এ জাতীয় আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্তের বক্তব্য বিষয়টি খুবই দুর্বল হয়, কখনােই সবল হয় না। সে কারণে তর্কবিদ বেকন এই ধরনের অনুমানকে শিশুসুলভ অনুমান বলেছেন।


২০) লৌকিক আরােহ অনুমানকে অপূর্ণ গণনামূলক আরােহ অনুমান বলা হয় কেন?

 উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানের ক্ষেত্রে সীমিত সংখ্যক সদর্থক দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে মুক্ত শ্রেণি সম্পর্কে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সামান্য সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় বলে। এক্ষেত্রে গণনার কাজ পূর্ণ গণনামূলক আরোহ অনুমানের মত সম্পূর্ণ হয় না।

 ২১) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বা লৌকিক আরােহ অনুমানের একটি উদাহরণ দাও। 

উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বা লৌকিক আরােহ  অনুমানের একটি উদাহরণ হল  ঃ

 ১ নং কাক হয় কালাে। 

২ নং কাক হয় কালাে।

 ৩ নং কাক হয় কালাে। 

এইভাবে বহু দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ।

 সুতরাং, সকল কাক হয় কালাে। 

২২) অবৈজ্ঞানিক আরোহ অনুমান বা লৌকিক আরোহ অনুমানের  দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর: অবৈজ্ঞানিক আরোহ অনুমান বা লৌকিক আরোহ অনুমানের  দুটি বৈশিষ্ট্য হল-

(i) লৌকিক বা অবৈজ্ঞানিক আরোহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি কেবল পর্যবেক্ষণ বা অবাধ অভিজ্ঞতা।

(ii) লৌকিক আরোহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি কেবল প্রকৃতির একরূপতা নীতি।

২৩) বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের মধ্যে পার্থক্য কী?

 উত্তর: বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের মধ্যে পার্থক্য হল – 

বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়ম। অপরপক্ষে, অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি। 

২৪) বেকন অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে ‘শিশুসুলভ' আরােহ অনুমান বলেছেন কেন?

 উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্ত এতই দুর্বল যে কেবলমাত্র একটি বিরুদ্ধ দৃষ্টান্ত হাজার হাজার সদর্থক দৃষ্টান্তের উপর প্রতিষ্ঠিত সিদ্ধান্তকে ভ্রান্ত প্রমাণ করতে পারে। এইজন্যই বেকন অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানকে ‘শিশুসুলভ আরােহ অনুমান’ বলেছেন। 

২৫) লৌকিক আরােহ অনুমানের ক্ষেত্রে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটে কেন? 

উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানে নঞর্থক দৃষ্টান্তকে অগ্রাহ্য করে কয়েকটি সদর্থক দৃষ্টান্তের উপর ভিত্তি করে সামান্যীকরণ করে সার্বিক সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয় বলে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটে। 

২৬) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের মূল্য কী? 

উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের মূল্য ব্যাবহারিক ক্ষেত্রে, কার্য - কারণ নিয়ম আবিষ্কারের ক্ষেত্রে, সর্বোপরি বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের প্রাথমিক স্তর হিসাবে অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। 

২৭) পর্যবেক্ষণ কাকে বলে? 

উত্তর : কোনাে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশে কোনাে প্রাকৃতিক ঘটনাকে অন্য সব ঘটনা থেকে পৃথক করে প্রত্যক্ষ করাই হল পর্যবেক্ষণ। 

Or,

নির্দিষ্ট কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে কোন কিছু প্রত্যক্ষ করাই হল পর্যবেক্ষণ।

২৮) পরীক্ষণ কাকে বলে? 

উত্তর : কোনাে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে পরীক্ষণ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে কৃত্রিমভাবে কোনাে ঘটনা ঘটিয়ে প্রত্যক্ষ করাই হল পরীক্ষণ ।

Or,

কৃত্রিম পরিবেশে কোন বিষয়কে বিশ্লেষণ করাই হল পরীক্ষণ।

Or,

 কোনাে কৃত্রিম পরিবেশে সুনিয়ন্ত্রিত ও সুপরিকল্পিতভাবে যখন কোনাে বস্তু বা ঘটনাকে  উদ্দেশ্যপ্রণােদিতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়, তখন তাকে পরীক্ষণ বলে। 

২৯) প্রকৃতির একরূপতা নীতি কী ? 

 উত্তর : যে নীতি অনুসারে প্রকৃতি  সম অবস্থায়  সম আচরণ করে তাকে প্রকৃতির একরূপতা নীতি বলে। 

Or,

প্রকৃতির একরূপতা নীতি হলো-  প্রকৃতির সম অবস্থায় সম আচরণ করে।

৩০) কার্য - কারণ নিয়ম বলতে কী বােঝায়?

 উত্তর : কার্য - কারণ নিয়মটি হল প্রত্যেক কার্যের কারণ আছে। 

৩১) সামান্যীকরণ কাকে বলে? 

উত্তর : কতগুলি বিশেষ মূর্ত দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে সমজাতীয় সমগ্র বিষয়ের বিমুর্ত ধারণা গঠনের মানসিক প্রক্রিয়াকে সামান্যীকরণ বলে।

Or,

 বিশেষ বিশেষ দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ করে ওই জাতীয় সকল দৃষ্টান্ত সম্বন্ধে সামান্য সংশ্লেষক বচন সিদ্ধান্তরূপে প্রতিষ্ঠা করার পদ্ধতিকে বলা হয় সামান্যীকরণ পদ্ধতি। 

৩২) সামান্যীকরণের ভিত্তি কী? 

উত্তর : প্রকৃতির একরুপতা নীতি হল সামান্যীকরণের ভিত্তি।

 ৩৩) আরােহ অনুমান সংক্রান্ত ঝুকি কী ? 

উত্তর : আরােহ অনুমানে বিশেষ বিশেষ আশ্রয়বাক্যের জ্ঞাত সত্য থেকে সিদ্ধান্তে অজ্ঞাত সামান্য বচনের সত্যের মধ্যে যে ফাক থাকে তাকে লাফ দিয়ে অতিক্রম করার সময় যে ঝুঁকি থাকে তাকে আরােহ অনুমান সক্রান্ত ঝুকি বলা হয় । 

৩৪) আরােহ অনুমান সংক্রান্ত লাফ কাকে বলে? 

উত্তর : আরোহ অনুমানের বিশেষ জ্ঞাত সত্য থেকে সামান্য জ্ঞাত সত্যে অগ্রসর হওয়াকেই দার্শনিকেরা আরোহ অনুমান সংক্রান্ত লাফ বলেছেন।

৩৫) আরােহ অনুমানের সমস্যা কী? 

 উত্তর: আরোহ অনুমানের বিশেষ সত্য থেকে সিদ্ধান্তে সার্বিক সংশ্লেষক বচনের প্রতিষ্ঠার উপায় হলো মূল সমস্যা।

Or,

আরােহ অনুমানে বিশেষ বিশেষ প্রত্যক্ষগ্রাহ্য ঘটনার সত্যতা প্রত্যক্ষ করে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সিদ্ধান্তে সামান্য সংশ্লেষক বচনের সত্যতা প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু কীভাবে সামান্যীকরণ সম্ভব তাই হল আরােহ অনুমানের সমস্যা । 

৩৬) আরােহ অনুমানের সমস্যার সমাধান কীভাবে করা হয়?

 উত্তর : প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্যকারণ নিয়মের সাহায্যে আরােহ অনুমানের সমস্যার সমাধান রা হয় ।

৩৭) প্রকৃতি সম অবস্থায় সম আচরণ করে – এ কথার অর্থ কী ? 

উত্তর : প্রকৃতি সম অবস্থায় সম আচরণ করে – এ কথার অর্থ হল প্রকৃতিতে একই জাতীয় কারণ ঘটলে সর্বদা একই জাতীয় কার্য উৎপন্ন হবে।

 ৩৮) প্রকৃতির একরূপতা নীতিকে আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি বলা হয় কেন? 

উত্তর : আরােহ অনুমানে বিশেষ বিশেষ ঘটনার বস্তুগত সত্যতা থেকে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সামান্য সংশ্লেষক বচনের বস্তুগত সত্যতা প্রমাণ করা হয়। প্রকৃতির একরূপতা নীতির সাহায্যে বিশেষ থেকে সামান্যের আকারগত পরিবর্তন সম্ভব হয় বলে প্রকৃতির একরূপতা নীতিকে আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি বলা হয়।

 ৩৯) আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি কী কী? 

উত্তর : পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ হল আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি। 

৪০) পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণকে আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি বলা হয় কেন? 

উত্তর : আরােহ অনুমানে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণের সাহায্যে বিশেষ বিশেষ আশ্রয়বাক্যগুলি সংগ্রহ করা হয় বলে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণকে আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি বলা হয়। 

৪১। আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি কী কী?

 উত্তর : আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়ম। 

৪২) কার্য - কারণ নিয়মকে আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি বলা হয় কেন? 

উত্তর : আরােহ অনুমানে বিশেষ বিশেষ ঘটনার বস্তুগত সত্যতা থেকে সামান্যীকরণের মাধ্যমে সামান্য সংশ্লেষক বচনের বস্তুগত সত্যতা প্রমাণ করা হয়। কার্য - কারণ নিয়মের সাহায্যে বিশেষ থেকে সামানন্যর আকারগত পরিবর্তন সম্ভব হয় বলে কার্য - কারণ নিয়মকে আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি বলা হয়।

৪৩) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বিভিন্ন স্তরগুলি কী কী? 

উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বিভিন্ন স্তরগুলি হল – (১) সংজ্ঞা, (২) পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ, (৩) অপসারণ,  (৪) প্রকল্প গঠন, (৫) সামান্যীকরণ, (৬) সামান্য বচনের প্রমাণ, (৭) সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা। 

৪৪) আরােহ অনুমানকে কি বৈধ - অবৈধ বা ভালাে - মন্দ বলা যায়? 

উত্তর : আরােহ অনুমানকে বৈধ বা অবৈধ বলা যায় না। কিন্তু ভালাে বা মন্দ বলা যায়। 

৪৫) লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের দুটি মানদণ্ডের উল্লেখ করাে। 

উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের দুটি মানদণ্ড হল –

 (i) দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।

 (ii) দৃষ্টান্তের ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।

 ৪৬) উপমাযুক্তি বা সাদৃশ্যমূলক আরােহ অনুমান কাকে বলে ? 

উত্তর : দুটি বিষয়ের মধ্যে সাদৃশ্যের ভিত্তিতে কোন কিছু বর্ণনা বা কল্পনা অথবা অনুমান করাকে উপমা যুক্তি বা সাদৃশ্যমূলক অনুমান বলা হয়।

Or,

যে অনুমানে দুই বা ততােধিক বিষয়ের মধ্যে এক বা একাধিক বিষয়ে সাদৃশ্য প্রত্যক্ষ করে যদি ওই বিষয়গুলির মধ্যে কোনাে একটিতে কোনাে ধর্ম প্রত্যক্ষ করে অন্য বিষয়গুলিতে ওই ধর্মের অনুমান করা হয় তবে সেই অনুমানকে বলা হয় উপমাযুক্তি বা সাদৃশ্যমূলক আরােহ অনুমান। 

৪৭) উপমাযুক্তির একটি বাস্তব উদাহরণ দাও।

 উত্তর : উপমাযুক্তির একটি বাস্তব উদাহরণ হল : 

মানুষ (A) এবং উদ্ভিদ (B) — এর মধ্যে জন্ম (p), বৃদ্ধি (q), মৃত্যু (r) প্রভৃতি বিষয়ে সাদৃশ্য আছে। মানুষের (A) → প্রাণ আছে (x)।

. : উদ্ভিদের (B) → প্রাণ আছে (x)। 


৪৮) উপমাযুক্তির দুটি বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করাে।

 উত্তর : উপমাযুক্তির দুটি বৈশিষ্ট্য হল –

 (i) দুই বা ততােধিক বিষয়ের মধ্যে সাদৃশ্য প্রত্যক্ষ করা।

 (ii) সাদৃশ্যের উপর ভিত্তি করে বিশেষ জ্ঞাত ধর্ম থেকে সামান্য অজ্ঞাত ধর্ম অনুমান করা।

৪৯) উপমাযুক্তিকে কি আরােহ অনুমান বলা যায়? 

উত্তর : উপমাযুক্তিকে আরােহ অনুমান বলা যায়। কারণ আরােহ অনুমানের মৌলিক বৈশিষ্ট্য উপমাযুক্তির মধ্যে রয়েছে। যেমন-

 (i) সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না। 

(ii) আশ্রয়বাক্য সত্য হলেও সিন্ধান্ত সর্বদা সম্ভাবনামুলক। 

৫০) উপমাযুক্তি কতপ্রকার ও কী কী? 

উত্তর : উপমাযুক্তি দুইপ্রকার। যথা – 

(i) ভালাে উপমাযুক্তি এবং (oii) মন্দ উপমাযুক্তি।

 

৫১) উপমা ও উপমাযুক্তির ক্ষেত্রে পার্থক্য কী? 

উত্তর : উপমা ও উপমাযুক্তির মধ্যে পার্থক্য হল – 

যুক্তি ভিন্ন অন্য ক্ষেত্রে ‘উপমা' শব্দের ব্যবহার করা হয় কৃত্রিমভাবে, যা সাধারণত স্বাভাবিক ধর্ম হয় না। অপরপক্ষে, যুক্তির ক্ষেত্রে উপমিক ধর্মটি হবে স্বাভাবিক ধর্ম, কৃত্রিম ধর্ম নয়। 

৫২) উপমাযুক্তির বাস্তব ভিত্তি কী? 

উত্তর : উপমাযুক্তির বাস্তবভিত্তি হল পর্যবেক্ষণ। কেননা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আশ্রয়বাক্যগুলি সংগ্রহ করা হয়। 

৫৩) উপমাযুক্তির ভিত্তি কী? 

উত্তর : উপমাযুক্তির ভিত্তি দুই বা ততােধিক  ব্যক্তি বা বস্তুর মধ্যে সাদৃশ্য বা উপমা। কেননা উপমাযুক্তিতে সাদৃশ্য বা উপমার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা করা হয়। 

৫৪) ভালাে বা উত্তম উপমাযুক্তি কাকে বলে? 

উত্তর : যে উপমা যুক্তিতে দুটি বিষয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক সাদৃশ্য বর্তমান থাকে এবং তারই ভিত্তিতে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তাকে ভালাে বা উত্তম উপমাযুক্তি কাকে বলে। 


৫৫) ভালাে উপমাযুক্তির একটি উদাহরণ দাও।

 উত্তর : ভালাে উপমাযুক্তির একটি উদাহরণ হল :

 রাম ও শ্যাম দুজনেরই রক্তে ম্যালেরিয়ার জীবাণু পাওয়া গেছে।

রাম কুইনাইন খেয়ে ভালো হয়েছে,

: . শ্যামও কুইনাইন খেলে ভালো হবে।


৫৬) মন্দ উপমাযুক্তি কাকে বলে? 

উত্তর : যে উপমা যুক্তিতে দুটি বিষয়ের মধ্যে সাদৃশ্য নিছকই আকস্মিক, বাহ্যিক, অপ্রাসঙ্গিক ও কম গুরুত্বপূর্ণ হয় এবং তারই ভিত্তিতে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তাকে মন্দ বা দুষ্ট উপমা যুক্তি বলা হয়।

৫৭) মন্দ উপমাযুক্তির একটি উদাহরণ দাও।

 উত্তর : মন্দ উপমাযুক্তির একটি উদাহরণ হল : 

কুকুর ও চেয়ার উভয়েরই চারটি পা আছে।

 কুকুর কামড়াতে পারে।

: .  চেয়ারও কামড়াতে পারবে।


  ৫৮) ভালাে উপমাযুক্তি ও মন্দ উপমাযুক্তির মধ্যে পার্থক্য কী? 

উত্তর : ভালো উপমার ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক সাদৃশ্য বর্তমান থাকে। অপরপক্ষে, মন্দ উপমার ক্ষেত্রে দুটি বিষয়ের সাদৃশ্য নিছকই আকস্মিক, বাহ্যিক, অপ্রাসঙ্গিক এবং কম গুরুত্বপূর্ণ হয়।


৫৯) উপমাযুক্তির মূল্যায়নের দুটি মানদণ্ডের উল্লেখ করাে।

উত্তর : উপমাযুক্তির মূল্যায়নের দুটি মানদণ্ড হল– 

(i) যুক্তিবাক্যে দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাবনার মাত্রা তত বেশি হবে।

 (ii) যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।

 ৬০) আরােহ অনুমানে পূর্ব স্বীকৃতি বা স্বীকার্য সত্য দুটি কী? 

উত্তর : আরােহ অনুমানের পূর্ব স্বীকৃতি বা স্বীকার্য সত্য দুটি হল – (i) প্রকৃতির একরূপতা নীতি এবং (ii) কার্যকারণ নিয়ম। 

৬১) আরােহ অনুমানের আকার দাও ।

 উত্তর : আরােহ অনুমানের আকার হল  ঃ

 ১ নং S হয় P

 ২ নং S হয় P 

৩ নং S হয় P 

এইভাবে বহু দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ ।

: . সকল S হয় P

৬২। উপমাযুক্তির আকার দাও ।

উত্তর: উপমা যুক্তির আকার হলো -

A এবং B- এর মধ্যে p, q, r বিষয়ে সাদৃশ্য আছে।

 A হল C। 

.: . Bও C। 

৬৩) উপমাযুক্তির গুরুত্ব কী? 

উত্তর : উপমাযুক্তির সিদ্ধান্তকে প্রকল্প হিসাবে গ্রহণ করে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান শুরু করা হয়। সুতরাং, বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের প্রাথমিক স্তর বা উপাদান হিসাবে উপমাযুক্তির গুরুত্ব রয়েছে। 

৬৪) সংশ্লেষক বচন কী? 

উত্তর : যে বচনের উদ্দেশ্য পদকে বিশ্লেষণ করলে বিধেয় পদের ধারণা পাওয়া যায় না এবং উদ্দেশ্য পদ সম্পর্কে বিধেয় নতুন তথ্য প্রদান করে, তাকে সংশ্লেষক বচন বলে।

৬৫) বিশ্লেষক বচন কী? 

উত্তর : যে বচনের বিধেয় পদের ধারণাটি উদ্দেশ্য পদের মধ্যে নিহিত থাকে, তাকে বিশ্লেষক বচন বলে।

 ৬৬) উপমাযুক্তি বৈধ বা অবৈধ হতে পারে না কেন? 

উত্তর : উপমাযুক্তি একপ্রকার আরােহ অনুমান যা বস্তুগত সত্যতার উপর নির্ভরশীল। তাই উপমাযুক্তিকে বৈধ বা অবৈধ বলা যায় না। কেবল যে যুক্তি আকারগত সত্যতার উপর নির্ভরশীল তা বৈধ বা অবৈধ হতে পারে। উপমাযুক্তি আকারগত সত্যতার উপর নির্ভরশীল নয়। তাই উপমাযুক্তিকে বৈধ বা অবৈধ বলা যায় না। 

৬৭) উপমাযুক্তি ও আরােহমূলক সামান্যীকরণের মধ্যে পার্থক্য কী? 

উত্তর : পার্থক্য:

উপমাযুক্তি ও আরােহমূলক সামান্যীকরণের মধ্যে উপমাযুক্তির ভিত্তি সাদৃশ্য। অপরপক্ষে, আরােহমূলক সামান্যীকরণের ভিত্তি কার্য - কারণ নিয়ম ও প্রকৃতির একরূপতা নীতি। 

৬৮) আরােহ অনুমানে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে সম্বন্ধ কীরূপ? 

উত্তর: আরােহ অনুমানে সিদ্ধান্তটি আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় না। অর্থাৎ আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের মধ্যে প্রসক্তি সম্বন্ধ নেই।

৬৯) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি কী? 

উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি হল পর্যবেক্ষণ বা অবাধ অভিজ্ঞতা। কেননা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে  আশ্রয়বাক্যগুলি সংগ্রহ করা হয়। 

৭০) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি কী ? 

উত্তর : প্রকৃতির এরূপতা নীতি অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি। কেননা এই নীতির উপর ভিত্তি করে সামান্যীকরণ সম্ভব হয়। 

৭১) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বা লৌকিক আরােহ অনুমানের দুটি মানদণ্ড লেখো। 

উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমান বা লৌকিক আরােহ অনুমানের দুটি মানদণ্ড হল – 

(i) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানে আশ্রয়বাক্যের দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে। 

(ii) স্বাভাবিক শ্রেণির উপর ভিত্তি করে সামান্যীণ লে সিন্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা বেশি

 ৭২) বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সঙ্গে উপমাযুক্তির পার্থক্য কী? 

উত্তর : বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সঙ্গে উপমাযুক্তির পার্থক্য হল –

 বৈজ্ঞানিক ও অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের আকারগত ভিত্তি হল প্রকৃতির একরূপতা নীতি বা কার্যকারণ নিয়ম বা উভয়ই। অপরপক্ষে, উপমাযুক্তির ভিত্তি সাদৃশ্য বা উপমা। কোনাে কার্য - কারণ নিয়মের ইঙ্গিত থাকে না।

৭৩) লৌকিক আরােহ অনুমানের গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা কী? 

উত্তর : বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের প্রারম্ভিক স্তর হিসাবে লৌকিক বা অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের ব্যাবহারিক গুরুত্ব রয়েছে। 

৭৪) বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্ত কীরূপ বচন?

 উত্তর : বৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের সিদ্ধান্ত সামান্য সংশ্লেষ বচন হয়।


 ৭৫) অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের ভিত্তি কী?

 উত্তর : অবৈজ্ঞানিক আরােহ অনুমানের বস্তুগত ভিত্তি পর্যবেক্ষণ ও আকারগত ভিত্তি প্রকৃতির এপতা নীতি।

 ৭৬) তথাকথিত আবােহ অনুমান কাকে বলে? 

উত্তর : যে সকল অনুমানের আকৃতি অনেকটা আরোহের মতো, অথচ যাদের মধ্যে আরোহ অনুমানের বৈশিষ্ট্যগুলি উপস্থিত থাকে না, তাদের তথাকথিত আরোহ অনুমান বলে।


৭৭) উপমাযুক্তির মূল্যায়নের প্রাসঙ্গিকতার মানদণ্ডটি উল্লেখ করো।

 উত্তর : উপমাযুক্তির মূল্যায়নের প্রাসঙ্গিকতার মানদণ্ডটি হল – 

(i) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে সাদৃশ্যগুলি যদি প্রাসঙ্গিক হয় তবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা বেশি হবে।

 (ii) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে সাদৃশ্যগুলি যদি অপ্রাসঙ্গিক হয় তবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা কম হবে। 

৭৮) উপমাযুক্তির মূল্যায়নের দৃষ্টান্তের সংখ্যার মানদণ্ডটি কী?

উত্তর : উপমাযুক্তির মূল্যায়নের দৃষ্টান্তের সংখ্যার মানদণ্ডটি হল –

 (i) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত কম হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত কম হবে।

 (i) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে। 


৭৯) উপমাযুক্তির মূল্যায়নের ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্যের মানদণ্ডটি লেখাে। 

উত্তর : উপমাযুক্তির মূল্যায়নের ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্যের মানদণ্ডটি হল –

 (i) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য যত কম হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত কম হবে।

 (ii) উপমাযুক্তির যুক্তিবাক্যের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।

 ৮০) লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের একটি মানদণ্ড লেখাে। 

উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের একটি মানদণ্ড হল – লৌকিক আরােহ অনুমানের বিশেষ দৃষ্টান্তের সংখ্যা যত বেশি হবে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা তত বেশি হবে।

৮১) লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের শ্রেণিগত মিলের মানদণ্ডটি কী ?

উত্তর: লৌকিক আরােহ অনুমানের মূল্যায়নের শ্রেণিগত মিলের মানদণ্ডটি হল – লৌকিক আরােহ অনুমানের দৃষ্টান্তগুলির মধ্যে শ্রেণিগত মিল বেশি থাকলে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতার মাত্রা বেশি হবে।

 ৮২) কোন্ আরােহ অনুমানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটে? 

উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানে অবৈধ সামান্যব্রণ দোষ  ঘটে।

 ৮৩) লৌকিক আরােহ অনুমানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ কী কারণে ঘটে? 

উত্তর : লৌকিক আরােহ অনুমানে অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ দুটি কারণে ঘটে। যথা – 

(i) নঞর্থক দৃষ্টান্ত অপর্যবেক্ষণের জন্য।

 (ii) পরিস্থিতি অপর্যবেক্ষণের জন্য।

 ৮৪) উপমাযুক্তি কখন মন্দ উপমার দোষে দুষ্ট হয়? 

 উত্তর : যখন কোনাে উপমাযুক্তির সাদৃশ্যগুলি নিছক বাহ্যিক, আকস্মিক, অপ্রাসঙ্গিক ও কম গুরুত্বপূর্ণ  হয়  তখন উপমাযুক্তিটি মন্দ উপমার দোষে দুষ্ট হয়। 

৮৫) কোন প্রকার আরােহ অনুমানে আমরা বিশেষ যুক্তিবাক্য থেকে বিশেষ সিদ্ধান্ত করে থাকি? 

উত্তর : উপমাযুক্তির ক্ষেত্রে আমরা বিশেষ যুক্তিবাক্য থেকে বিশেষ সিদ্ধান্ত করে থাকি।

 ৮৬) উপমাযুক্তির ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য প্রত্যক্ষ বৃদ্ধি  পেলে সিধান্তের সম্ভাব্যতা কি বাড়ে? 

 উত্তর : হ্যা , বাড়ে। অর্থাৎ উপমাযুক্তির ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বৈসাদৃশ্য প্রত্যক্ষ বৃদ্ধি পেলে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্যতা বাড়ে। 

৮৭) অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে এমন একটি লৌকিক আরােহ অনুমানের উদাহরণ দাও । 

উত্তর : অবৈধ সামান্যীকরণ দোষ ঘটেছে এমন একটি  – আমি যত কাক দেখেছি সবই কালাে। সুতরাং , সকল কাক কালাে ।

৮৮) প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের মধ্যে কোনাে পার্থক্য নেই – এ কথা কে বা কারা বলেছেন ? 

উত্তর : মিল এবং বেইন বলেন প্রকৃতির একরুপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের মধ্যে কোনাে পার্থক্য নেই । 

৮৯) কার্য - কারণ নিয়ম হল মূল নিয়ম এবং প্রকৃতির একরূপতা নীতি কার্য - কারণ নিয়মের একটি বিশেষ রূপ — এ কথা কে বা কারা বলেছেন ? 

উত্তর : যুক্তিবিজ্ঞানী জোসেফ এবং মেলন বলেন যে কার্য - কারণ নিয়ম হল মূল নিয়ম এবং প্রকৃতির একরূপতা নীতি কার্য - কারণ নিয়মের একটি বিশেষ রূপ।

 ৯০) প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের মধ্যে কী সম্বন্ধ? 

উত্তর : প্রকৃতির একরূপতা নীতি অতি ব্যাপক নিয়ম। এই নিয়মের মধ্যে বহু প্রাকৃতিক নিয়ম আছে। তার মধ্যে কার্য - কারণ  নিয়ম অন্যতম। কার্য - কারণ নিয়ম প্রকৃতির একরূপতা নীতির অন্তর্ভুক্ত কম ব্যাপক নিয়ম। 

৯১) প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের মধ্যে পার্থক্য কী? 

উত্তর : প্রকৃতির একরূপতা নীতি ও কার্য - কারণ নিয়মের মধ্যে পার্থক্য হল – প্রকৃতির একরূপতা নীতি অনুসারে প্রকৃতি সম অবস্থায় সম আচরণ করে। অপরপক্ষে, কার্য - কারণ নিয়ম  অনুসারে জগতে প্রত্যেক কার্যের কারণ আছে।

৯২) প্রকৃত আরোহ অনুমান কাকে বলে

উত্তর: যে সকল আরোহ অনুমানে কয়েকটি বিশেষ দৃষ্টান্ত পর্যবেক্ষণ বা পরীক্ষণের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত হিসেবে একটি সামান্য সংশ্লেষক বচন প্রতিষ্ঠা করা হয়, তাকে প্রকৃত আরোহ অনুমান বলে।

<<<<<<<<<< The End >>>>>>>>>>>>>


Read More