Friday, 19 February 2021

Philosophy:“চার্বাক মতে প্রত্যক্ষই একমাত্র প্রমাণ" — চার্বাকদের এই উক্তি ব্যাখ্যা ও বিচার করাে।

Leave a Comment

 'Perception is the only source of knowledge' - Explain and examine this statement of the Carvaka.

“চার্বাক মতে প্রত্যক্ষই একমাত্র প্রমাণ" — চার্বাকদের এই উক্তি ব্যাখ্যা ও বিচার করাে‌।

 উত্তর

প্রত্যক্ষ প্রমাণের স্বরূপ: চার্বাক জ্ঞানতত্ত্ব সমগ্র চার্বাকদর্শনের যৌক্তিক ভিত্তি। জ্ঞানের উৎস নির্ণয় করা জ্ঞানতত্ত্বের একটি মৌলিক কাজ। ভারতীয় দর্শনের বিভিন্ন শাখা, বিশেষ করে নৈয়ায়িকরা যথার্থ জ্ঞানের উৎসরূপে চারটি প্রমাণ স্বীকার করেন। যথা— প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান ও শব্দ। জড়বাদী চার্বাকরা কেবলমাত্র প্রত্যক্ষকে যথার্থ জ্ঞানের উৎসরূপে, অর্থাৎ প্রমাণরূপে স্বীকার করেন। এই মতে অনুমান, উপমান ও শব্দ যথার্থ জ্ঞান বা প্রমা উৎপন্ন করতে পারে না। 

প্রত্যক্ষই একমাত্র প্রমাণ । প্রত্যক্ষ দু - প্রকার – মানসপ্রত্যক্ষ ও বাহ্যপ্রত্যক্ষ । সুখ, দুঃখ, বেদনা প্রভৃতি মানস অবস্থার জ্ঞানকে আন্তর বা মানসপ্রত্যক্ষ বলে। চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা, জিহ্বা ও ত্বক এই পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্রিয়ের সাহায্যে বাহ্যবস্তুর জ্ঞান হয়। এই ক্ষেত্রে পাঁচটি ইন্দ্রিয় নিজ নিজ বিষয়ের সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত হয়। এজন্য ইন্দ্রিয়কে প্রমাণ বলা হয়। এই প্রমাণের নাম প্রত্যক্ষ প্রমাণ। প্রত্যক্ষ প্রমাণের দ্বারা উৎপন্ন জ্ঞান হল প্রত্যক্ষ জ্ঞান। 'ইন্দ্রিয়ার্থ সন্নিকর্ষজন্য জ্ঞান' প্রত্যক্ষের লক্ষণ। ইন্দ্রিয় এবং অর্থের (বিষয়) সন্নিকর্ষের (সম্বন্ধযুক্ত হওয়ার) ফলে প্রত্যক্ষ জ্ঞান পাওয়া যায়। প্রত্যক্ষ জ্ঞান যথার্থ বা প্রমা, এই প্ৰমার করণকে প্রত্যক্ষ প্রমাণ বলা হয়েছে।

 চার্বাক ছাড়া ভারতীয় দর্শনের অন্য সম্প্রদায়গুলি প্রত্যক্ষ প্রমাণ ছাড়াও অনুমান, উপমান ও শব্দকে অতিরিক্ত প্রমাণ হিসাবে স্বীকার করেন। চার্বাকমতে অনুমান প্রমাণ নয়। এটি প্রমা উৎপন্ন করতে পারে না। অনুমানের সাহায্যে পাওয়া জ্ঞান নির্দোষ বা সংশয়মুক্ত নয়। তা ছাড়া প্রত্যক্ষ জ্ঞানের ভিত্তিতে অনুমান প্রমাণ গঠন করা হয় বলে প্রত্যক্ষ প্রমাণকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ বলা যায়। উপমান ও শব্দ প্রমাণ অনুমানের উপর নির্ভর করে। এইজন্য এই দুটিকে সার্থক প্রমাণ বলা যায় না। সুতরাং অনুমান উপমান ও শব্দ এদের কোনােটি যথার্থ জ্ঞান দিতে পারে না। 


প্রত্যক্ষকে একমাত্র প্রমাণ বলার স্বপক্ষে চার্বাকদের যুক্তি :

প্রথমতঃ প্রত্যক্ষের মাধ্যমে বস্তুর অস্তিত্ব সূচিত হয়: প্রত্যক্ষ হল বস্তুর অস্তিত্বসূচক। যে বস্তুকে প্রত্যক্ষ করা যায় না তার অস্তিত্ব আছে — একথা বলা অর্থহীন। যা প্রত্যক্ষলব্ধ তাই বাস্তব এবং যা প্রত্যক্ষের বহির্ভূত তা অবাস্তব। একটি বৃক্ষকে প্রত্যক্ষ করা যায়, তাই বৃক্ষ অস্তিত্বশীল। এজন্য চার্বাকরা প্রত্যক্ষকেই প্রমাণ বলেন।

 দ্বিতীয়তঃ প্রত্যক্ষ জ্ঞান স্পষ্ট ও অভ্রান্ত হয়:  চার্বাক মতে, প্রত্যক্ষলব্ধ জ্ঞান স্পষ্ট ও অভ্রান্ত হয়। প্রত্যক্ষ হল সাক্ষাৎ অনুভব। এখানে ইন্দ্রিয় ও বিষয়ের মধ্যে সরাসরি সংযােগ হয়। এরূপ অভিজ্ঞতা অন্য কোনাে অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভরশীল নয়। তাই প্রত্যক্ষলব্ধ জ্ঞান স্পষ্ট, এই স্পষ্টতা অন্য কোনাে প্রমাণের থাকে না। তাই কেবল  প্রত্যক্ষকেই প্রমাণ বলতে হয়। 

তৃতীয়তঃ প্রত্যক্ষ জ্ঞান সংশয়মুক্ত: চার্বাক মতে, প্রত্যক্ষ জ্ঞান নিশ্চিত ও সংশয়শূন্য। তাই একমাত্র প্রত্যক্ষের সাহায্যেই আমরা যথার্থ ও নিঃসন্ধিগ্ধ জ্ঞান লাভ করতে পারি। আমরা আমাদের চক্ষু, কর্ণ প্রভৃতি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে যা জানি তাতে কোনােরূপ সংশয় পােষণ করি না বলেই এই জ্ঞান নিঃসন্ধিগ্ধ ও যথার্থ হয়। অনুমান ও শব্দের মাধ্যমে আমরা যে জ্ঞান লাভ করি, তা সন্দেহমুক্ত নয়। কিন্তু প্রত্যক্ষ জ্ঞান এতই স্পষ্ট যে, এর যাথার্থ্য সম্পর্কে কোনাে সংশয়ের অবকাশ থাকে না। 

চতুর্থতঃ প্রত্যক্ষই মূল প্রমাণ: চার্বাক মতে, প্রত্যক্ষ হল সকল প্রমাণের মূল প্রমাণ। প্রত্যক্ষকে ভিত্তি করেই অনুমান, উপমান, শব্দ প্রভৃতি অন্যান্য প্রমাণগুলি গড়ে উঠেছে। তাই প্রত্যক্ষকে শ্রেষ্ঠ ও মূল প্রমাণ বলে স্বীকার করতে হবে। 

পঞ্চমত, প্রত্যক্ষই সর্বাপেক্ষা বলবান প্রমাণ ও প্রত্যক্ষ হচ্ছে বিভিন্ন প্রকার প্রমাণের মধ্যে জ্যেষ্ঠ ও উপজীব্য প্রমাণ। অন্য প্রমাণগুলি যেমন — শব্দ প্রমাণ, অনুমান প্রমাণ প্রভৃতি সম্পর্কে কোনাে সংশয় দেখা দিলে সেই সংশয় দূর করার জন্য প্রত্যক্ষ প্রমাণের ওপর নির্ভর করতে হয়। এ কারণে প্রত্যক্ষকেই একমাত্র প্রমাণ বলাই সংগত। 

ষষ্ঠত, নির্দোষ ইন্দ্রিয়জাত প্রত্যক্ষ জ্ঞান সঠিক হয় : চার্বাক দার্শনিকদের মতে, প্রত্যক্ষকে প্রমাণরূপে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কোনাে মতবিরােধ নেই। অবশ্য মাঝেমধ্যে প্রত্যক্ষের ক্ষেত্রে ভ্রান্তি দেখা দেয়। কিন্তু সেই ভ্রান্তির কারণ প্রত্যক্ষ নয়। যে দেশে ও কালে বস্তুটি প্রতীয়মান হয়, সেই দেশ ও কালে বস্তুটি নেই বলেই ভ্রান্তি। প্রকৃতপক্ষে, নির্দোষ ইন্দ্রিয়জাত প্রত্যক্ষ জ্ঞান সঠিক, সুপ্রমাণিত ও বিশ্বাসযােগ্য হয়। এই সকল কারণে চার্বাক দার্শনিকগণ প্রত্যক্ষকেই একমাত্র প্রমাণ হিসাবে স্বীকার করেছেন।

 সমালােচনা: ‘প্রত্যক্ষই একমাত্র প্রমাণ’ — চার্বাকদের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নানা আপত্তি উত্থাপন করা হয়েছে। 

) চার্বাকদের মতানুযায়ী 'প্রত্যক্ষই একমাত্র প্রমাণ’ — একথা বললে অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ সবক্ষেত্রেই প্রত্যক্ষকে প্রমাণ হিসাবে বােঝায়। কিন্তু অতীত ও ভবিষ্যৎ ঘটনার প্রত্যক্ষ কখনােই সম্ভব নয়। এসব ক্ষেত্রে অনুমানের ওপর নির্ভর করতে হয় বা শব্দ প্রমাণের সাহায্য নিতে হয়।

২) চার্বাক মতে, প্রত্যক্ষ জ্ঞান আমরা সাক্ষাৎভাবে বা সরাসরি লাভ করি অর্থাৎ এই জ্ঞান পরােক্ষ জ্ঞান নয়। তাই প্রত্যক্ষ জ্ঞান যথার্থ হয়। কিন্তু জৈন মতে, প্রত্যক্ষ জ্ঞান সাক্ষাৎ নয় বা স্বনির্ভর নয়। প্রত্যক্ষ জ্ঞান ইন্দ্রিয়নির্ভর। কাজেই, অনুমানের মতাে প্রত্যক্ষজ্ঞানও অযথার্থ হয়।

৩) চার্বাক মতে, প্রত্যক্ষ জ্ঞান আমরা সাক্ষাৎভাবে বা সরাসরি লাভ করি অর্থাৎ এই জ্ঞান পরােক্ষ জ্ঞান নয়। তাই প্রত্যক্ষ জ্ঞান যথার্থ হয়। কিন্তু জৈন মতে, প্রত্যক্ষ জ্ঞান সাক্ষাৎ নয় বা স্বনির্ভর নয়। প্রত্যক্ষ জ্ঞান ইন্দ্রিয়নির্ভর। কাজেই, অনুমানের মতাে প্রত্যক্ষজ্ঞানও অযথার্থ হয়। 

৪) প্রত্যক্ষকে একমাত্র প্রমাণ বলা হলে জ্ঞানের পরিসর অত্যন্ত সীমিত হয়ে পড়বে। কেননা, বৈচিত্র্যময় জগতের অধিকাংশ বিষয়ই প্রত্যক্ষের পরিসরের বাইরে অবস্থিত। তাই জগতের বিভিন্ন বিষয় সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করতে হলে প্রত্যক্ষের অতিরিক্ত অনুমান, শব্দ ইত্যাদিকে প্রমাণ হিসাবে স্বীকার করে নিতে হয়। 

৫) যে সকল যুক্তির সাহায্যে চার্বাকগণ অনুমান এবং শব্দকে প্রমাণ হিসাবে অস্বীকার করেছেন, সেই একই যুক্তির সাহায্যে দেখানাে যায় যে প্রত্যক্ষ প্রমাণ নয়। অনুমান ও শব্দের মতাে প্রত্যক্ষের ক্ষেত্রেও অনেক সময় ভ্রান্তি ঘটে। যেমন — রজুতে সর্পভ্রম, শুক্তিতে রজতভ্রম ইত্যাদি। কাজেই, অনুমান প্রভৃতি ভ্রান্ত হয় বলে যদি প্রমাণ না - বলা যায় তাহলে প্রত্যক্ষকেও প্রমাণ বলা যাবে না। 

৬) আধ্যাত্মবাদী ভারতীয় দর্শনের প্রায় সকল গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তই অতীন্দ্রিয় বিষয় সম্পর্কিত। এইসব অতীন্দ্রিয় বিষয়ের ( যেমন — ঈশ্বর, আত্মা, পরলােক ইত্যাদি ) ইন্দ্রিয় প্রত্যক্ষ সম্ভব নয়। কাজেই, প্রত্যক্ষ সম্ভব না - হওয়ার জন্য এইসব বিষয়ের জ্ঞান দান করার ব্যাপারে ভারতীয় দার্শনিকগণ অনুমান প্রভৃতি অন্যান্য প্রমাণের সাহায্য নিয়েছেন। সুতরাং, প্রত্যক্ষকে একমাত্র প্রমাণ বলে স্বীকার করা যায় না।

<<<<<<<<<<>>>>>>>>>
Read More

Thursday, 11 February 2021

SAQ | কারণ (CAUSE) Class- XII (wbchse)

Leave a Comment

 কারণ (CAUSE)

Class- XII (wbchse)

অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর [(SAQ) ( মান -1 ) ]

১) কার্য কী ও কারণ কী? 

উঃ কার্য ও কারণ দুটি হল জাগতিক ঘটনা। যে ঘটনাটি আগে ঘটে তাকে বলে কারণ এবং কারণ দ্বারা যে ঘটনাটি উৎপন্ন হয় তাকে বলে কার্য।

দার্শনিক মিলের মতে, "যদি একটি ঘটনা শর্তহীনভাবে এবং অপরিবর্তনীয়ভাবে অগ্রবর্তী কোন ঘটনা বা ঘটনার সংমিশ্রণকে অনুসরণ করে, তবে অগ্রবর্তী ঘটনাকে কারণ এবং অনুবর্তী ঘটনাকে কার্য বলা হবে।"

     দার্শনিক কাৰ্ভেথ রিড - এর মতে, "গুণের দিক থেকে কারণ হল কার্যের অব্যবহিত, শর্তান্তরহীন, অপরিবর্তনীয়, পূর্ববর্তী ঘটনা এবং পরিমাণের দিক থেকে কারণ হলো কার্যের সমান।"


২) কাৰ্ভেৰ্থ রিড কারণেৱ কটি লক্ষণের উল্লেখ করেছেন ও কী? 

উঃ কার্ভেথ রিড কারণের দুটি লক্ষণের উল্লেখ করেছেন --  (১) গুণগত লক্ষণ এবং (২) পরিমাণগত লক্ষণ। 

৩) কারণের গুণগত লক্ষণগুলি লেখাে। 

উঃ গুণের দিক থেকে কারণ হল কার্যের নিয়ত বা অপরিবর্তনীয়, শর্তান্তরহীন, অব্যবহিত পূর্ববর্তী ঘটনা। (Qualitatively, cause is the invariable, unconditional and immediate antecedent to the effect.)

৪) কারণের পরিমাণগত লক্ষণ লেখাে। 

উঃ  পরিমাণের দিক থেকে কারণ হল কার্যের সমান। (Quantitatively, the cause is equal to the effect.)

৫) স্থায়ী কারণ কী? 

উঃ যেসব ঘটনাকে সম্পূর্ণভাবে অপসারণ করা সম্ভব নয়, দার্শনিক মিল তাদের নাম দিয়েছেন স্থায়ী কারণ। যেমন — উত্তাপ, বায়ুমণ্ডলীয় চাপ, মাধ্যাকর্ষণ শক্তি ইত্যাদি। 

৬) কারণের পরিমাণগত লক্ষণের ভিত্তি কী? 

 উঃ কারণের পরিমাণগত লক্ষণের ভিত্তি হল— (১) জড়ের সংরক্ষণ নীতি এবং (২) শক্তির নিত্যতা নীতি ।

৭) কারণের পরিমাণগত লক্ষণটি কোন দুটি নিয়মের উপর  প্রতিষ্ঠিত ? 

উঃ

(১) ভরের নিত্যতা সূত্র এবং (২) শক্তির নিত্যতা সূত্র । 

৮) কার্যকারণ সম্পর্ক আরােহ অনুমানের কীরূপ ভিত্তি ? 

উঃ আকারগত ভিত্তি । 

৯) কারণ সম্পর্কে লৌকিক অভিমত কী? 

উঃ কারণ সম্পর্কে লৌকিক অভিমত হল — কারণ হল এমন একটি পূর্ববর্তী ঘটনা, যা অন্য একটি ঘটনাকে ঘটতে সাহায্য করে। 

১০) কারণ ও কার্যের মধ্যে কোনাে আবশ্যিক সম্বন্ধ নেই। এ কথা কে বলেন ? 

উঃ ডেভিড হিউম।

১১)  শক্তির নিত্যতা সূত্র কী ? 

উঃ এই জগতে শক্তির পরিমাণ অপরিবর্তিত। যে পরিবর্তন আমরা লক্ষ করি, তা হল শক্তির বিশেষ রূপের পরিবর্তন। যেমন— কয়লার দহনের ফলে তাপ সৃষ্টি হয়। আবার তাপ বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। 

Or,

উঃ শক্তির নিত্যতা সূত্র অনুসারে জগতে মােট শক্তির কোনাে হ্রাসবৃদ্ধি হয় না, শক্তির রূপান্তর ঘটে মাত্র। কারণ - শক্তি কার্য - শক্তিতে রূপান্তর হয় মাত্র।

১২) ভরের নিত্যতা নিয়মটি কী ?

 উঃ ভরের নিত্যতা সূত্র অনুসারে জগতে মােট ভর সর্বদা একই থাকে, বাড়ে না, কমেও না। কারণ থেকে কার্যের রূপান্তর ঘটে, তখন কারণ ও কার্যের আকারগত পরিবর্তন হয় মাত্র। কারণের যা ভর ছিল কার্যেরও সেই ভর থাকবে। তাই পরিমাণের দিক থেকে কারণ ও কার্য সমান। 

১৩) কারণের প্রকৃতি সম্পর্কে কার্ভেথ রিড কী বলেছেন ? 

উঃ গুণের দিক থেকে কারণ হল , কার্যের অব্যবহিত শর্তান্তরহীন অপরিবর্তণীয় পূর্ববর্তী ঘটনা এবং পরিমাণের দিক থেকে কারণ হল কার্যের সমান ।


১৪) কারণ হল সদর্থক ও নঞর্থক শর্তের সমষ্টি ’ - কে বলেছেন ? 

উঃ দার্শনিক মিল কারণকে সদর্থক ও নঞর্থক শর্তের সমষ্টি বলেছেন। 

১৫) শর্ত কী ?  

উঃ শর্ত হল কারণের এমন এক অপরিহার্য অংশ, যা কার্য সৃষ্টি করার পক্ষে একান্ত প্রয়ােজনীয়। 

১৬) শর্ত কত প্রকার ও কী কী?

উঃ শর্ত দুই প্রকার। যথা— সদর্থক শর্ত ও নঞর্থক শর্ত। 

১৭) কারণের সদর্থক শর্ত কাকে বলে ? 

উঃ যে শর্ত উপস্থিত না থাকলে কার্যটি উৎপন্ন হতে পারে না, তাকে সদর্থক শর্ত বলা হয়। অর্থাৎ কোনো কার্যকে সংঘটিত করার জন্য যে সকল শর্তের উপস্থিতি প্রয়োজন, সেই শর্তগুলিকে বলা হয় সদর্থক শর্ত।

 ১৮)  কারণের নঞর্থক শর্ত কাকে বলে ? 

উঃ যে শর্ত উপস্থিত থাকলে কার্য উৎপন্ন হতে পারে না, তাকে নঞর্থক শর্ত বলা হয় । অর্থাৎ কোনো কার্যকে সংঘঠিত করার জন্যে যে সকল শর্তের অনুপস্থিতি প্রয়োজন হয় তাকে বলা হয় নঞর্থক শর্ত।

১৯) কারণ ও শর্তের সম্বন্ধ কী ? 

 উঃ কারণ হল শর্তের সমষ্টি এবং শর্ত হল কারণের অংশ। 

২০) কারণ ও শর্তের মধ্যে পার্থক্য কী? 

উঃ ১) কারণ হলো ঘটনার সংগঠন যা কার্যকে ঘটায়। অপরপক্ষে, শর্ত হল কারণের এমন এক অপরিহার্য অংশ, যা কার্য সৃষ্টির পক্ষে একান্ত প্রয়ােজনীয় । 

২) একটি কার্যের একটি কারণ থাকে। অপরপক্ষে, একটি কার্যের একাধিক শর্ত থাকতে পারে।

২১) 'কারণ’ কথাটি কী কী অর্থে ব্যবহৃত হয়? 

উঃ 'কারণ’ কথাটি তিনটি অর্থে ব্যবহৃত হয়। যথা -- (১) আবশ্যিক অর্থে, (২)  পর্যাপ্ত অর্থে, (৩) আবশ্যিক - পর্যাপ্ত অর্থে । 

২২) কারণের আবশ্যিক বা অনিবার্য শর্ত কাকে বলে?

উঃ যে শর্তটি অনুপস্থিত থাকলে আলোচ্য ঘটনাটি ঘটা সম্ভব নয়, সেই শর্তকে উক্ত ঘটনার আবশ্যিক শর্ত বলা হয়। 

Or,

যে শর্ত অনুপস্থিত থাকলে কোনাে কার্য ঘটে না কিন্তু উপস্থিত থাকলে কার্যটি নাও ঘটতে পারে সেই শর্তকে বলা হয় আবশ্যিক শর্ত ।

সাংকেতিক আকার: যদি ক না ঘটে তাহলে খ ঘটে না, কিন্তু ক ঘটলে খ  নাও ঘটতে পারে। সুতরাং, ক হলো খ- এর আবশ্যিক শর্ত।

বাস্তব উদাহরণ: অক্সিজেনের উপস্থিতি হল দহনক্রিয়ার আবশ্যিক শর্ত।

২৩) কারণের পর্যাপ্ত শর্ত কাকে বলে ? 

উঃ যে শর্তটি উপস্থিত থাকলে আলোচ্য ঘটনাটি ঘটবেই, সেই শর্তকে উক্ত ঘটনার পর্যাপ্ত শর্ত বলা হয়।

Or,

কারণের যে শর্ত উপস্থিত থাকলে কার্য ঘটে কিন্তু অনুপস্থিত থাকলে কার্য ঘটতেও পারে সেই শর্তকে বলা হয়  পর্যাপ্ত শর্ত।

সাংকেতিক আকার: যদি ক ঘটে তাহলে খ ঘটে কিন্তু ক না ঘটলেও খ ঘটতে পারে। সুতরাং ক হল খ - এর পর্যাপ্ত শর্ত।

বাস্তব উদাহরণ: বিষপান করা হল মৃত্যু ঘটার পর্যাপ্ত শর্ত।

 ২৪) আবশ্যিক শর্ত ও পর্যাপ্ত শর্তের একটি পার্থক্য দেখাও । 

উঃ যে শর্ত অনুপস্থিত থাকলে কোনাে বিশেষ কার্য ঘটে না এবং উপস্থিত থাকলে কার্যটি নাও ঘটতে পারে, তাকে আবশ্যিক শর্ত বলে। যেমন— অক্সিজেন না থাকলে আগুন জ্বলবে না, আবার অক্সিজেন থাকলেও আগুন নাও জ্বলতে পারে। 

Or,

যে শর্ত উপস্থিত থাকলে কার্য ঘটে ও অনুপস্থিত থাকলেও কার্য ঘটতে পারে, তাকে পর্যাপ্ত শর্ত বলে। যেমন— বিষপান করলেই মৃত্যু হবে, আবার বিষপান না করলেও মৃত্যু হতে পারে। 

২৫) আবশ্যিক শর্তরূপে কারণ কী?

 উঃ কারণ হল এমন ঘটনা, যা না ঘটলে কাৰ্য ঘটে না। 

২৬) পর্যাপ্ত শর্তরূপে কারণ কী? 

উঃ কারণ হল এমন ঘটনা, যা ঘটলে কার্যটি অবশ্যই ঘটবে এবং যা না ঘটলেও কার্যটি ঘটতে পারে। 

২৭) আবশ্যিক পর্যাপ্ত শর্ত কাকে বলে ? ( What is Necessary and Sufficient Condition ) 

উঃ “ যদি দুটি ঘটনার সম্বন্ধ এমন হয় যে , এদের প্রথমটি না ঘটলে দ্বিতীয়টি ঘটে না এবং প্রথমটি ঘটলেই দ্বিতীয়টি ঘটে, তাহলে প্রথম ঘটনাটিকে দ্বিতীয় ঘটনাটির আবশ্যিক পর্যাপ্ত শর্ত বলা হবে। ”

 ২৮) যুক্তিবিজ্ঞানী মিল কারণের গুণগত লক্ষণ কী দিয়েছেন ? 

উঃ যুক্তিবিজ্ঞানী মিল কারণের গুণগত লক্ষণ সম্পর্কে বলেছেন যে , যদি একটি ঘটনা শর্তান্তরহীনভাবে ও অপরিবর্তনীয়ভাবে পূর্ববর্তী কোনাে ঘটনার অনুগমন করে তবে সেই পূর্ববর্তী ঘটনাকে কারণ ও অনুবর্তী ঘটনাকে কার্য বলা হয় । 

২৯। কার্ভেদ রিড কারণের গুণগত লক্ষণ ও পরিমাণগত লক্ষণ কী দিয়েছেন? 

উঃ কার্ভেদ রিড কারণের গুণগত লক্ষণ ও পরিমাণগত লক্ষণ সম্পর্কে বলেছেন যে, গুণের দিক থেকে কারণ হল কার্যের অব্যবহিত, শর্তান্তরহীন, অপরিবর্তনীয় (নিয়ত) পূর্ববর্তী ঘটনা এবং পরিমাণের দিক থেকে কারণ হল কার্যের সমান। 

৩০) শর্ত কত প্রকার ও কী কী ?

উঃ শর্ত তিনপ্রকার । যেমন – (১) আবশ্যিক শর্ত , (২) পর্যাপ্ত শর্ত এবং (৩) আবশ্যিক - পর্যাপ্ত শর্ত।

  ৩১) আবশ্যিক শর্তের একটি বাস্তব উদাহরণ দাও।

উঃ আবশ্যিক শর্তের একটি বাস্তব উদাহরণ হল – যদি অক্সিজেন না - থাকে তবে আগুন জ্বলবে না। কিন্তু যদি অক্সিজেন থাকে তবে আগুন নাও জ্বলতে পারে, তাই অক্সিজেন হল আগুন জ্বলার আবশ্যিক শর্ত।

 ৩২) A, B- এর আবশ্যিক শর্ত - এই কথার অর্থ কী? 

উঃ A, B- এর আবশ্যিক শর্ত – এই কথার অর্থ হল – যদি A না - ঘটে তবে B ঘটবে না কিন্তু যদি A ঘটে তবে B নাও ঘটতে পারে। 

৩৩)  কারণকে আবশ্যিক শর্ত অর্থে গ্রহণ করলে কী অসুবিধা ?

 উঃ যদি কারণকে আবশ্যিক শর্ত অর্থে ধরা হয় তবে কার্য থেকে কারণ অনুমান করা যায়, কিন্তু কারণ থেকে কার্য অনুমান করা যায় না।

৩৪) কোন্ দার্শনিক 'কারণ’ শব্দটিকে আবশ্যিক শর্ত অর্থে গ্রহণ করেছেন? 

উঃ ডেভিড হিউম 'কারণ' শব্দটি আবশ্যিক শর্ত অর্থে গ্রহণ করেছেন।

 ৩৫) পর্যাপ্ত শর্তের একটি বাস্তব উদাহরণ দাও । 

উঃ পর্যাপ্ত শর্তের একটি বাস্তব উদাহরণ হল – যদি বৃষ্টি হয় তবে মাটি অবশ্যই ভিজবে । কিন্তু যদি বৃষ্টি না - হয় তবে মাটি ভিজতে পারে । তাই বৃষ্টিপাত হল মাটি ভেজা কার্যের পর্যাপ্ত শর্ত।

 ৩৬) A, B- এর পর্যাপ্ত শর্ত – এই কথার অর্থ কী? 

উঃ A , B- এর পর্যাপ্ত শর্ত – এই কথার অর্থ হল - যদি A ঘটে তবে B ঘটবে। কিন্তু যদি A না - ঘটে তবে B ঘটতে পারে। 


৩৭) যদি কারণকে পর্যাপ্ত শর্ত অর্থে গ্রহণ করা হয় তবে কী অসুবিধা ?

উঃ 'কারণ' শব্দটিকে পর্যাপ্ত শর্ত অর্থে গ্রহণ করলে কারণ থেকে কার্য অনুমান করা যায়। কিন্তু কার্য থেকে কারণ অনুমান করা যায় না।

 ৩৮) কোন্ দার্শনিক 'কারণ' শব্দটিকে পর্যাপ্ত শর্ত অর্থে ব্যবহার করেছেন? 

উঃ দার্শনিক মিল কারণ শব্দটিকে পর্যাপ্ত শর্ত অর্থে ব্যবহার করেছেন ।

৩৯) বহুকারণবাদের একটি অসুবিধার উল্লেখ করাে।

 উঃ বহুকারণবাদ স্বীকার করলে কারণ থেকে কার্য সঠিকভাবে অনুমান করা গেলেও কার্য থেকে কারণ অনুমান করা যায় না। 

৪০) বহুকারণবাদ ও বহুকারণ সমন্বয়ের নীতি দুটি উল্লেখ করে। 

উঃ বহুকারণবাদের নীতিটি হল – একটি কার্য অনেকগুলি কারণের দ্বারা উৎপন্ন হয়। বহুকারণ সমন্বয়ের নীতিটি হল – অনেকগুলি কারণ মিলিতভাবে একটি কার্যকে উৎপন্ন করে।  

৪১) বহুকারণবাদ যদি যথার্থ মতবাদ না - হয় তবে এই মতবাদ সৃষ্টির কারণ কী?

 উঃ বহুকারণবাদ একটি ভ্রান্ত মতবাদ। এই মতবাদে কার্যকে সামান্য অর্থে এবং কারণকে বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচার করা হয়েছে বলে বহুকারণবাদ নামে এক ভ্রান্ত মতবাদের সৃষ্টি হয়েছে। 

৪২) বহুকারণবাদ থেকে মুক্তির উপা য় কী ? 

উঃ বহুকারণবাদ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে যদি কারণ ও কার্য উভয়কে বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিচার করা হয় ।

৪৩) বিষপান হল মৃত্যুর কারণ। - এই বাক্যটিতে ‘কারণ’ শব্দটি কী শর্ত অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে ? [ সংসদ নমুনা প্রশ্ন '১৪ ) 

উঃ প্রশ্নে উদ্ধৃত বাক্যটিতে পর্যাপ্ত শর্ত অর্থে কারণ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে ।

 ৪৪) 'আগুন হল ধোয়ার কারণ'।- এই বাক্যটিতে ‘কারণ' শব্দটি কী শর্ত আর্থে ব্যবহার করা হয়েছে? 

উঃ প্রশ্নে উদ্ধৃত বাক্যটিতে আবশ্যিক শর্ত অর্থে ‘কারণ' শব্দটি ব্যবহার রা হয়েছে।

 ৪৫) 'মেঘ হল বৃষ্টির কারণ'। - এই বাক্যটিতে ‘কারণ' শব্দটি কী শর্ত অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে? 

উঃ প্রশ্নে উদ্ধৃত বাক্যটিতে আবশ্যিক শর্ত অর্থে ‘ কারণ শব্দটি ব্যবহার রা হয়েছে ।

 ৪৬) 'জলপান তৃষ্ণা  নিবারণের কারণ'। - এই বাক্যটিতে 'কারণ' শব্দটি কী শর্ত অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে ? 

উঃ প্রশ্নে উদ্ধৃত বাক্যটিতে আবশ্যিক - পর্যাপ্ত শর্ত অর্থে ‘কারণ ' শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে ।

 ৪৮) 'ঘর্ষণ উত্তাপের কারণ'।- এই বাক্যে 'কারণ' শব্দটি কী শর্ত অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে ? 

উঃ প্রশ্নে উদ্ধৃত বাক্যটিতে পর্যাপ্ত শর্ত অর্থে 'কারণ' শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।

৪৯) আবশ্যিক শর্ত হিসাবে কারণের বৈশিষ্ট্য কী?

 উঃ আবশ্যিক শর্ত হিসাবে কারণের বৈশিষ্ট্য হল – কারণ হল কার্যের নিয়ত পূর্বগামী ঘটনা। 

৫০) পর্যাপ্ত শর্ত হিসাবে কারণের বৈশিষ্ট্য কী?

 উঃ পর্যাপ্ত শর্ত হিসাবে কারণের বৈশিষ্ট্য হল – কার্য হল কারণের নিয়ত অনুগামী ঘটনা।

৫১) একটি ঘটনার ক - টি পর্যাপ্ত শর্ত থাকতে পারে? 

উঃ একটি ঘটনার একাধিক পর্যাপ্ত শর্ত থাকা সম্ভব।

 ৫২) একটি ঘটনার ক - টি আবশ্যিক শর্ত থাকতে পারে? 

উঃ একটি ঘটনার একটি আবশ্যিক শর্ত থাকতে পারে। 

৫৩) কারণ না থাকলে কার্য ঘটে না — 'কারণ’ কথাটি এখানে কী শর্তে ব্যবহৃত হয়েছে? 

উঃ 'কারণ’ কথাটি এখানে আবশ্যিক শর্তরূপে গ্রহণ করা হয়েছে । 

৫৪) মানুষের বেঁচে থাকার জন্য জল কীরূপ শর্ত? 

উঃ মানুষের বেঁচে থাকার জন্য জল আবশ্যিক শর্ত। 

৫৫) আবশ্যিক শর্তের একটি সাংকেতিক উদাহরণ দাও।

উঃ  ‘ ক ’ না ঘটলে ‘ খ ’ ঘটে না। কিন্তু ক ঘটলে খ নাও ঘটতে পারে।

 ৫৬) এককারণবাদ কী ? 

 উঃ যে মতবাদ অনুসারে একটি কার্যের কেবল একটি কারণ থাকে, তাকে এককারণবাদ বলে। 

৫৭) “যদি A ঘটে তবে B নামক ঘটনাটিও ঘটে। ” এখানে A , B- এর কীরূপ শর্ত ? 

উঃ এখানে A, B- এর পর্যাপ্ত শর্ত। 


৫৭) পর্যাপ্ত শর্ত হিসেবে কারণের একটি দৃষ্টান্ত দাও।

 উঃ হৃৎপিণ্ডে গুলিবিদ্ধ হওয়া হল মৃত্যুর পর্যাপ্ত শর্ত। 

৫৮) 'বিষপান মৃত্যুর কারণ’ — এক্ষেত্রে কারণ কথাটি কোন্ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে? 

 উঃ এক্ষেত্রে 'কারণ’ কথাটি পর্যাপ্ত শর্তে ব্যবহৃত হয়েছে। 

৫৯) এককারণবাদীরা কারণকে কীরূপ শর্তরূপে গ্রহণ করেন? 

উঃ এককারণবাদীরা কারণকে আবশ্যিক - পর্যাপ্ত শর্তরূপে গ্রহণ করেন।

৬০) বহুকারণবাদীরা কারণকে কীরূপ শর্তরূপে গ্রহণ করেছেন? 

উঃ বহুকারণবাদীরা কারণকে পর্যাপ্ত শর্তরূপে গ্রহণ করেছেন।

 ৬১) বহুকারণবাদীরা কারণ ও কার্যকে কীভাবে গ্রহণ করেন?

 উঃ বহুকারণবাদীরা কারণকে বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এবং কার্যকে সামান্য দৃষ্টিভঙ্গি থেকে গ্রহণ করেন। 

৬২)বহুকারণবাদ বলতে কী বােঝাে?

 উঃ যে মতবাদ অনুসারে একটি কার্য বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারণের দ্বারা উৎপন্ন হয় সেই মতবাদকে বলা হয় বহুকারণবাদ।

৬৩) বহুকারণবাদের একটি বাস্তব উদাহরণ দাও। 

উঃ বহুকারণবাদের একটি বাস্তব উদাহরণ হল – মৃত্যু কার্যটি কখনও বিষপানে, কখনও - বা জলে ডুবে, কখনও - বা আগুনে  পুড়ে, কখনও - বা রােগে প্রভৃতি কারণে ঘটতে পারে। তাই মৃত্যু কার্যটির বহুকারণ আছে। 

৬৪) ক, খ - এর পর্যাপ্ত - আবশ্যিক শর্ত —এ কথার অর্থ কী? 

উঃ এর অর্থ হল ‘ ক ’ ঘটলে ‘ খ ’ ঘটবে এবং ক ’ না ঘটলে ‘ খ ’ ও ঘটবে না।

৬৫) আবশ্যিক - পর্যাপ্ত শর্ত হিসেবে কারণের একটি দৃষ্টান্ত দাও।

উঃ ” ভিজে কাঠে অগ্নিসংযােগ ধূম উৎপাদনের আবশ্যিক - পর্যাপ্ত শর্ত।

৬৬) বহুকারণবাদের অর্থ কী? 

উঃ একই কার্যের বহু কারণ থাকতে পারে।

 ৬৭) বহুকারণবাদের সমর্থক কারা? 

উঃ  জন স্টুয়ার্ট মিল ও বেইন বহুকরণবাদের সমর্থক। 

৬৮)  বহুকার সমন্বয় কী? 


উঃ যখন একাধিক কারণ একত্রে মিলিত হয়ে একটি মিশ্র কার্য  উৎপন্ন করে, তখন সেই মিশ্র কার্যের কারণকে বলা হয় বহুকারণ সমন্বয়। যেমন — জল উৎপাদনের জন্য হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের সমন্বয় প্রয়ােজন।

 ৬৯) বহুকারণবাদ এবং বহুকারণ সমন্বয় - এর নীতি দুটি লেখাে।

উঃ বহুকারণবাদ এবং বহুকারণ সমন্বয় - এর নীতি দুটি হল— (১) সমজাতীয় কার্য সংমিশ্রণ এবং (২) ভিন্নজাতীয় কার্য সংমিশ্রণ।

 ৭০)  বহুকারণবাদের একটি অসুবিধা লেখাে।

 উঃ বহুকারণবাদ মেনে নিলে কারণকে কার্যের অপরিবর্তনীয় পূর্ববর্তী ঘটনা বলা যাবে না। 

৭১) বহুকারণবাদের সমস্যা দূর করার একটি উপায় লেখাে। 

উঃ বহুকারণবাদে কারণ ও কার্য উভয়কে সামান্য অথবা বিশেষ অর্থে গ্রহণ করা হলে, বহুকারণবাদের সমস্যা দূর হবে।

 ৭২) কোন্ মতবাদকে কার্যকারণ বিরােধী মতবাদ বলা হয়? 

উঃ বহুকারণবাদকে কার্যকারণ বিরােধী মতবাদ বলা হয়।

Read More

Wednesday, 10 February 2021

6 Questions and Answers of OUR CULTURE THEIR CULTURE

1 comment

 OUR CULTURE THEIR CULTURE-- Rabindranath Tagore

Questions and Answers (5 Marks)

1. Estimate Rabindranath Tagore's view of Indian culture vis - a - vis European culture.  [ইউরোপীয় সংস্কৃতির প্রেক্ষিতে ভারতীয় সংস্কৃতির ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথের মতের মূল্যায়ন করো। ]

Ans . According to Rabindranath, if Indians want to create a center of Indian culture, they must believe that India has a culture and that this culture deserves to be given to everyone else.  Rabindranath, however, admits that Indian culture has its superstitions and shortcomings.  But as Indian culture has ceased moving, its shortcomings and superstitions are becoming more and more apparent.  European culture also has its superstitions and shortcomings.  But these are not fatally unhealthy because they are dynamic and changing.

বঙ্গানুবাদ:

রবীন্দ্রনাথের মতে যদি ভারতীয়রা ভারতীয় সংস্কৃতির কেন্দ্র সৃষ্টি করতে চায় তাহলে তাদের বিশ্বাস করতেই হবে যে ভারতের একটি সংস্কৃতি আছে এবং এই সংস্কৃতি অন্য সকলকে দেওয়ার যোগ্য। রবীন্দ্রনাথ অবশ্য স্বীকার করেন যে ভারতীয় সংস্কৃতির কুসংস্কার ও ত্রুটি আছে। কিন্তু যেহেতু ভারতীয় সংস্কৃতি গতিহীন হয়ে পড়েছে, সেজন্য এর ত্রুটি ও কুসংস্কারগুলি বেশি করে চোখে পড়ছে। ইউরােপীয় সংস্কৃতিরও তুটি ও কুসংস্কার আছে। কিন্তু এগুলি মারাত্মকভাবে অস্বাস্থ্যকর হয় না কারণ তারা গতিশীল এবং পরিবর্তিত হচ্ছে। 

  2. What does Rabindranath say about a pupil's knowledge of geography? [ একটি ছাত্রের ভূগােলের জ্ঞান সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথের মন্তব্য লেখাে। ] 

Ans . A pupil's knowledge of geography was wrong, because he thought that his familiar world  could never be the learned world of geography.  That is why in later life, when he hears from a foreign tourist that India is a great big country, that the Himalayas are big mountains, he must be mentally disturbed.  When he recovers from the shock, he will loudly declare that other countries are  merely countries, but his country itself is heaven.

বঙ্গানুবাদ: একটি ছাত্রের ভূগােলের জ্ঞান ভুল ছিল, কারণ সে মনে করত তার পরিচিত জগৎ কখনও ভূগােলের পাণ্ডিত্যপূর্ণ মহান জগৎ হতে পারে না। সেজন্য পরবর্তী জীবনে যখন সে কোনও বিদেশি পর্যটকের কাছে শুনবে যে ভারতবর্ষ একটি মহান বিরাট দেশ, যে হিমালয় বিশাল পর্বতমালা, তখন সে নিশ্চয়ই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে থাকবে। যখন সে মানসিক আঘাত কাটিয়ে উঠবে তখন সে উচ্চকণ্ঠে ঘােষণা করবে যে অন্যান্য দেশ কেবলমাত্র দেশ, কিন্তু তার দেশ নিজেই হল স্বর্গ।

 3. "The same thing happens in the case of our Indian culture. " ( Para 2) 

Describe how the same thing happens in the case of Indian culture. [ ভারতীয় সংস্কৃতির ক্ষেত্রে কীভাবে একই জিনিস ঘটে তা বর্ণনা করাে।]

Ans . We take it for granted that India has no culture or even if it does not exist. Then when we hear some foreign pundits praise our Indian culture, we can no longer hold ourselves  and rend the sky with the shout that the cultures of other countries are merely human, but ours is divine - it is a special creation of Brahma. 


 বঙ্গানুবাদ:

 আমরা বিনা বিচারে সত্য বলে ধরে নিই যে ভারতের কোনও সংস্কৃতি নেই বা থাকলেও তা না থাকার মতাে। তারপর আমরা যখন কোনও বিদেশি পণ্ডিতদের কাছে ভারতীয় সংস্কৃতির প্রশংসা শুনি, তখন আমরা আর নিজেদেরকে ধরে রাখতে পারি না এবং আকাশ ফাটিয়ে চিৎকার করে বলি যে অন্যান্য দেশের সংস্কৃতি কেবলমাত্র মানবীয়, কিন্তু আমাদের সংস্কৃতি ঐশ্বরিক - ইহা ব্রহ্মার বিশেষ সৃষ্টি। 

4 . How does Rabindranath view the doctrine of special creation and the idea of a specially favoured race? [ বিশেষ সৃষ্টি ও বিশেষ অনুগ্রহপুষ্ট জাতির মতবাদ সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথের মতামত কী? ]

 Ans : According to Rabindranath, the doctrine of special creation is outdated and the idea of ​​a specially favored nation is a matter of barbaric age.  In modern times we know that any special truth or special culture which is completely detached from universal objects is not at all true.  According to Rabindranath, those who declare that Indian culture is separate from all other cultures of the world do not help to glorify Indian culture.

বঙ্গানুবাদ: রবীন্দ্রনাথের মতে বিশেষ সৃষ্টির মতবাদ সেকেলে এবং বিশেষ অনুগ্রহপুষ্ট জাতির ধারণা বর্বর যুগের বিষয় । আধুনিক যুগে আমরা জানি যে বিশেষ কোনও সত্য বা বিশেষ কোনও সংস্কৃতি যা বিশ্বজনীন বস্তু থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন তা মােটেই সত্য নয়। রবীন্দ্রনাথের মতে যারা প্রচার করে যে ভারতীয় সংস্কৃতি পৃথিবীর অন্য সব সংস্কৃতি থেকে পৃথক তারা ভারতীয় সংস্কৃতিকে মহিমান্বিত করতে সাহায্য করে না।


5. What does Rabindranath say about 'the struggle for existence'? ['টিকে থাকার জন্য লড়াই ’ সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথের বক্তব্য কী ?

 Or , 

What is Rabindranath's view about the theory of 'the struggle for existence'? [ 'টিকে থাকার জন্য লড়াই’ মতবাদের সম্বন্ধে রবীন্দ্রনাথের দৃষ্টিভঙ্গি কী? ] 

Ans . A few years ago Europe used to see the whole world through the formula 'the struggle for existence'. It influenced the outlook for Europe and fixed her viewpoint. Indians also took this phrase from Europe and thought that not believing in it was a sign of incomplete education. The theory of 't thehe struggle for existence' has of late showed change, and it is now thought that the power of sympathy, the power to unite lies at the basis of natural selection. 

বঙ্গানুবাদ: কয়েক বছর পূর্বে 'টিকে থাকার জন্য লড়াই' — এই ফর্মুলার মধ্য দিয়ে ইউরােপ সমগ্র পৃথিবীকে দেখত। এটি ইউরােপের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করে এবং তার দৃষ্টিকোণকে স্থির  করে দেয়। ভারতীয়রাও ইউরােপের কাছ থেকে এই শব্দসমষ্টি নেয় এবং ভাবে যে এতে  বিশ্বাস না কাটা অসম্পূর্ণ শিক্ষার চিহ্ন। সম্প্রতি 'টিকে থাকার জন্য লড়াই' এই মতবাদে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে এবং এখন মনে হয় যে সহানুভূতির ক্ষমতা তথা একত্রিত হওয়ার ক্ষমতা প্রাকৃতিক নির্বাচনের ভিত্তি। 


6. Why does Rabindranath point out the superstitions and shortcomings of Indian culture,  and how does he compare them with those of European culture?  [ কেন রবীন্দ্রনাথ ভারতীয় সংস্কৃতির কুসংস্কার এবং ত্রুটিগুলিকে নির্দেশ করেছেন এবং কিভাবে এদের সঙ্গে ইউরােপীয় সংস্কৃতির কুসংস্কার ও ত্রুটিগুলির তুলনা করেছেন ? ]

 Ans . Taking cue from western pundits the Indians consider their culture to be a special creation of the divine- Brahma. Rabindranath thinks that the habit of regarding Indian culture as superlative is sophisticated foolishness. According to him, there are superstitions and shortcomings in Indian culture.  These are seen prominently because the movement of Indian culture has stopped. European culture also has superstitions. But they are not harmful to the people, because they are dynamic and changeable.


বঙ্গানুবাদ: পশ্চিমি পণ্ডিতদের কাছ থেকে খেই ধরে ভারতীয়রা তাদের সংস্কৃতিকে ঐশ্বরিক - ব্রহ্মার  বিশেষ সৃষ্টি বলে মনে করে। রবীন্দ্রনাথ মনে করেন যে, ভারতীয় সংস্কৃতিকে সর্বোৎকৃষ্ট বলে মনে করার অভ্যাস হল কৃত্রিমতাপূর্ণ মূর্খতা। তারঁ মতে ভারতীয় সংস্কৃতির কুসংস্কার ও ত্রুটি - বিচ্যুতি আছে। এই ত্রুটি - বিচ্যুতি ও কুসংস্কারগুলি আমাদের খুব বেশি চোখে পড়ে, কেননা ভারতীয় সংস্কৃতির গতিথেমে গেছে। ইউরােপীয় সংস্কৃতিরও কুসংস্কার আছে। কিন্তু লােকেদের পক্ষে এরা ক্ষতিকারক হয় না, কেননা এরা গতিশীল ও পরিবর্তনশীল।


Read More