চতুর্থ অধ্যায়: অমাধ্যম অনুমান
দ্বাদশ শ্রেণী ( wbchse)
অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ( মান -1 )
১) অবরােহ অনুমান কত প্রকার ও কী কী?
উঃ অবরােহ অনুমান দুই প্রকার -- ( ১ ) অমাধ্যম অনুমান এবং ( ২ ) মাধ্যম অনুমান।
২) অমাধ্যম অনুমান কাকে বলে?
উঃ যে অবরােহ অনুমানে সিদ্ধান্তটি একটিমাত্র হেতুবাক্য বা আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় , তাকে অমাধ্যম অনুমান বলে।
৩) মাধ্যম অনুমান কাকে বলে?
উঃ যে অবরােহ অনুমানে সিদ্ধান্তটি একাধিক আশ্রয়বাক্য বা হেতুবাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় , তাকে মাধ্যম অনুমান বলে।
৪) অমাধ্যম অনুমানের একটি উদাহরণ দাও।
উঃ উদাহরণ :
A — সকল মানুষ হয় মরণশীল। (আবর্তনীয়)
I — কোনাে কোনো মরণশীল ব্যক্তি হয় মানুষ (আবর্তিত)
৫) মাধ্যম অনুমানের একটি উদাহরণ দাও।
উঃ উদাহরণ :
E -- কোনাে মানুষ নয় দেবতা ।
A -- সকল মানুষ হয় প্রাণী ।
E -- কোনাে প্রাণী নয় দেবতা।
৬) মাধ্যম অনুমানে কয়টি আশ্রয়বাক্য বা যুক্তিবাক্য বা হেতুবাক্য থাকে?
উঃ মাধ্যম অনুমানে দুই বা ততােধিক আশ্রয়বাক্য বা যুক্তিবাক্য বা হেতুবাক্য থাকে।
৭) অমাধ্যম অনুমানে কয়টি আশ্রয়বাক্য বা যুক্তিবাক্য বা হেতুবাক্য থাকে?
উঃ অমাধ্যম অনুমানে একটি আশ্রয়বাক্য বা যুক্তিবাক্য বা হেতুবাক্য থাকে ।
৮) মাধ্যম অনুমানে কয়টি পদ থাকে ও কী কী?
উঃ মাধ্যম অনুমানে তিনটি পদ থাকে— ( ১ ) পক্ষপদ, (২) সাধ্যপদ এবং (৩) হেতুপদ।
৯) অমাধ্যম অনুমানে কটি পদ থাকে ও কী কী?
উঃ অমাধ্যম অনুমানে দুটি পদ থাকে -- (১) উদ্দেশ্য পদ এবং (২) বিধেয় পদ।
১০) মাধ্যম ও অমাধ্যম অনুমানের প্রধান পার্থক্য কী?
উঃ মাধ্যম ও অমাধ্যম অনুমানের প্রধান পার্থক্য হল --
অনুমানে দুই বা ততােধিক আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয়। কিন্তু অমাধ্যম অনুমানে সিদ্ধান্তটি একটিমাত্র আশ্রয়বাক্য থেকে নিঃসৃত হয়।
১১) মাধ্যম ও অমাধ্যম অনুমানের একটি সাদৃশ্য লেখো।
উঃ মাধ্যম ও অমাধ্যম অনুমানের একটি সাদৃশ্য হল --
মাধ্যম ও অমাধ্যম উভয় অনুমানই অবরোহ অনুমান।
১২) আবর্তন কাকে বলে?
উঃ যে অমাধ্যম অনুমানে একটি বচনের গুণ অপরিবর্তিত রেখে উদ্দেশ্য ও বিধেয়কে ন্যায়সংগতভাবে যথাক্রমে অন্য একটি বচনের বিধেয় ও উদ্দেশ্যে পরিণত করা হয় , তাকে আবর্তন বলে।
অথবা
যে অমাধ্যম অনুমানে আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদ ন্যায়সঙ্গতভাবে সিদ্ধান্তের যথাক্রমে বিধেয় ও উদ্দেশ্য পদ হয় এবং আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণ অপরিবর্তিত থাকে তাকে আবর্তন বলে। আবর্তনের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্যকে আবর্তনীয় এবং সিদ্ধান্তকে আবর্তিত বা আবর্ত বলে।
উদাহরণ:
আবর্তনীয়: সকল মানুষ হয় মরণশীল (A)
আবর্ত: কোন কোন মরণশীল জীব হয় মানুষ (I)
১৩) ব্যাবর্তন বা বিবর্তন বা প্রতিবর্তন কাকে বলে ?
উঃ যে অমাধ্যম অনুমানে প্রদত্ত বচনের গুণের পরিবর্তন করে এবং সেই বচনটির বিধেয়ের বিরুদ্ধপদকে সিদ্ধান্তের বিধেয়রুপে গ্রহণ করা হয়, তাকে ব্যাবর্তন বা প্রতিবর্তন বা বিবর্তন বলে। বিবর্তনের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্যকে বিবর্তনীয় এবং সিদ্ধান্তকে বিবর্তিত বা বিবর্ত বলে।
উদাহরণ:
বিবর্তনীয়: সকল মানুষ হয় মরণশীল। (A)
বিবর্ত: কোনো মানুষ নয় অ- মরণশীল। (E)
১৪) বিরুদ্ধ পদ কী?
উঃ একটি পদ ও তার পরিপূরক পদকে একত্রে বিরুদ্ধ পদ বলা হয়।
যেমন— ভারতীয় + অ - ভারতীয় = বিরুদ্ধ পদ
( পদ ) ( পরিপূরক পদ )
১৫) বিপরীত পদ কী?
উঃ বিপরীত পদ হল এমন দুটি পদ, যে দুটি পদকে যুক্ত করলে নির্দেশিত ব্যক্তি বা বস্তুর সমগ্র শ্রেণিকে পাওয়া যায় না । যেমন — সাদা ও কালাে ।
১৬) ‘ মানুষ ’ পদের বিরুদ্ধপদ কী হবে?
উঃ ‘মানুষ’ পদের বিরুদ্ধপদ হল অ - মানুষ।
১৭) আবর্তন কত প্রকার ও কী কী?
উঃ আবর্তন দুই প্রকার - (১) সরল আবর্তন এবং (২) অ - সরল আবর্তন
১৮) সরল আবর্তন কাকে বলে?
উঃ যে আবর্তনের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণ ও পরিমাণ অপরিবর্তিত রেখে উদ্দেশ্য ও বিধেয়কে ন্যায়সংগতভাবে স্থানপরিবর্তন করা হয়, তাকে সরল আবর্তন বলা হয়। E , এবং I বচনের সরল আবর্তন সম্ভব।
অথবা,
যে আবর্তনের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের পরিমাণ এক থাকে, তাকে সরল আবর্তন বলে।
উদাহরণ:
I - কোন কোন সাপ হয় বিষাক্ত (আবর্তনীয়)
I - কোন কোন বিষাক্ত জীব হয় সাপ (আবর্তিত)
১৯) অ-সরল আবর্তন কাকে বলে?
উঃ যে আবর্তনের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের পরিমাণ ভিন্ন হয় তাকে অ-সরল বা সীমিত আবর্তন বলে। A বচনের আবর্তন অ-সরল আবর্তন।
উদাহরণ:
A - সকল মানুষ হয় মরণশীল (আবর্তনীয়)
I - কোন কোন মরণশীল জীব হয় মানুষ (আবর্তিত)
২০) একটি সরল আবর্তনের উদাহরণ দাও।
উঃ সরল আবর্তনের উদাহরণ:
(১) A - সকল পুস্তক হয় গ্রন্থ। (আবর্তনীয়)
A- সকল গ্রন্থ হয় পুস্তক। (আবর্তিত)
(২) A - সকল উদ্ভিদ হয় গাছ। (আবর্তনীয়)
A- সকল গাছ হয় উদ্ভিদ। (আবর্তিত)
(৩) A- রবীন্দ্রনাথ হন গীতাঞ্জলীর লেখক। (আবর্তনীয়)
A- গীতাঞ্জলির লেখক হন রবীন্দ্রনাথ। (আবর্তিত)
২১) কোন ক্ষেত্রে A বচনের সরল আবর্তন সম্ভব?
উঃ যেসব ক্ষেত্রে প্রদত্ত A বচনের উদ্দেশ্য পদ ও বিধেয় পদ সমব্যাপক বা সমার্থক হয়, সেই ক্ষেত্রে A বচনে সরল আবর্তন সম্ভব।
২২) A বচনে সরল আবর্তন কেন সম্ভব নয়?
উঃ A বচনের সরল আবর্তন সম্ভব নয়। কারণ A বচনের সরল আবর্তন করলে আবর্তনে চতুর্থ নিয়ম অর্থাৎ ব্যাপ্যতার নিয়মটি লঙ্ঘিত হয়।
২৩) আবর্তনের নিয়মগুলি কী কী?
উঃ আবর্তনের নিয়মগুলি হল -
প্রথম নিয়ম: আশ্রয়বাক্য বা হেতুবাক্যের উদ্দেশ্য পদটি সিদ্ধান্তের বিপদ হবে।
দ্বিতীয় নিয়ম: আশ্রয়বাক্যের বিধেয় পদটি সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য পদ হবে।
তৃতীয় নিয়ম: আশ্রয়বাক্য এবং সিদ্ধান্তের গুণ অভিন্ন হবে। অর্থাৎ আশ্রয়বাক্য সদর্থক হলে সিদ্ধান্তও সদর্থক হবে এবং আশ্রয়বাক্য নঞর্থক হলে সিদ্ধান্তও নঞর্থক হবে।
চতুর্থ নিয়ম বা ব্যাপ্যতার নিয়ম: যে পদ যুক্তিবাক্যে ব্যাপ্য হয়নি সেই পদ সিদ্ধান্ত ব্যাপ্য হতে পারবে না।
২৪) বিবর্তনের নিয়মগুলি কী কী?
উঃ বিবর্তনের নিয়মগুলি হলো -
প্রথম নিয়ম: আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য পদ অভিন্ন হবে।
দ্বিতীয় নিয়ম: আশ্রয়বাক্যের বিধেয় পদের বিরুদ্ধ পদ সিদ্ধান্তের বিধেয় হবে।
তৃতীয় নিয়ম: আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণ ভিন্ন হবে।
চতুর্থ নিয়ম: আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের পরিমাণ অভিন্ন হবে। অর্থাৎ আশ্রয়বাক্য সামান্য বচন হলে সিদ্ধান্তও সামান্য বচন হবে এবং আশ্রয়বাক্য বিশেষ বচন হলে সিদ্ধান্তও বিশেষ বচন হবে।
২৫) বস্তুগত বিবর্তন কাকে বলে?
উঃ যে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় প্রদত্ত বচনের আকারগত বিবর্তন না করে তার অর্থের উপর বিশেষভাবে নির্ভর করা হয় এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার সাহায্যে প্রদত্ত বচনটিকে. বিবর্তিত করা হয়, তাকে বস্তুগত বিবর্তন বলে।
উদাহরণ:
যুদ্ধ হয় অমঙ্গলসূচক।
শান্তি হয় মঙ্গলসূচক।
২৬) বস্তুগত বিবর্তনকে প্রকৃত বিবর্তন বলা হয় না কেন?
উঃ বস্তুগত বিবর্তন যৌক্তিক বিবর্তনের উদ্দেশ্য পদের নিয়ম, গুনের নিয়ম, আকারগত নিয়ম মেনে চলে না। এই কারণে বস্তুগত বিবর্তনকে প্রকৃত বিবর্তন বলা যায় না।
২৭) অন্তরাবর্তন কী?
উঃ আবর্তন ও বিবর্তনের যুগ্ম প্রয়োগকেই অন্তরাবর্তন বলে।
বি. দ্র.
আবর্তনের নিয়ম অনুসারে--
A বচনের আবর্তিত রূপ -- I (ব্যতিক্রম: A)
E বচনের আবর্তিত রূপ -- E
I বচনের আবর্তিত রূপ -- I
O বচনের আবর্তিত রূপ --সম্ভব নয়।
বিবর্তনের নিয়ম অনুসারে --
A বচনের বিবর্তিত রূপ -- E
E বচনের বিবর্তিত রূপ -- A
I বচনের বিবর্তিত রূপ -- O
O বচনের বিবর্তিত রূপ -- I