Monday, 9 November 2020

HS Philosophy অমাধ্যম অনুমান অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ( মান -1 )

Leave a Comment

 চতুর্থ অধ্যায়: অমাধ্যম অনুমান 

দ্বাদশ শ্রেণী ( wbchse)

 অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ( মান -1 ) 

১) অবরােহ অনুমান কত প্রকার ও কী কী?

উঃ  অবরােহ অনুমান দুই প্রকার -- ( ১ ) অমাধ্যম অনুমান এবং ( ২ ) মাধ্যম অনুমান। 


) অমাধ্যম অনুমান কাকে বলে? 

উঃ যে অবরােহ অনুমানে সিদ্ধান্তটি একটিমাত্র হেতুবাক্য বা আশ্রয়বাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় , তাকে অমাধ্যম অনুমান বলে। 


)  মাধ্যম অনুমান কাকে বলে? 

উঃ যে অবরােহ অনুমানে সিদ্ধান্তটি একাধিক আশ্রয়বাক্য বা হেতুবাক্য থেকে অনিবার্যভাবে নিঃসৃত হয় , তাকে মাধ্যম অনুমান বলে। 


৪) অমাধ্যম অনুমানের একটি উদাহরণ দাও।

উঃ উদাহরণ : 

A —   সকল মানুষ হয় মরণশীল। (আবর্তনীয়)

I — কোনাে কোনো মরণশীল ব্যক্তি হয় মানুষ (আবর্তিত)


) মাধ্যম অনুমানের একটি উদাহরণ দাও।

উঃ  উদাহরণ : 

 E  -- কোনাে মানুষ নয় দেবতা ।

 A -- সকল মানুষ হয় প্রাণী ।

 E -- কোনাে প্রাণী নয় দেবতা।


 ৬) মাধ্যম অনুমানে কয়টি আশ্রয়বাক্য বা যুক্তিবাক্য বা হেতুবাক্য থাকে? 

উঃ মাধ্যম অনুমানে দুই বা ততােধিক আশ্রয়বাক্য বা যুক্তিবাক্য বা হেতুবাক্য থাকে। 


) অমাধ্যম অনুমানে কয়টি আশ্রয়বাক্য বা যুক্তিবাক্য বা হেতুবাক্য থাকে? 

উঃ অমাধ্যম অনুমানে একটি আশ্রয়বাক্য বা যুক্তিবাক্য বা হেতুবাক্য থাকে ।


)  মাধ্যম অনুমানে কয়টি পদ থাকে ও কী কী? 

উঃ মাধ্যম অনুমানে  তিনটি পদ থাকে— ( ১ ) পক্ষপদ, (২) সাধ্যপদ এবং (৩) হেতুপদ। 


) অমাধ্যম অনুমানে কটি পদ থাকে ও কী কী?

উঃ  অমাধ্যম অনুমানে দুটি পদ থাকে -- (১) উদ্দেশ্য পদ এবং (২) বিধেয় পদ। 


১০) মাধ্যম ও অমাধ্যম অনুমানের প্রধান পার্থক্য কী?

উঃ মাধ্যম ও অমাধ্যম অনুমানের প্রধান পার্থক্য হল --

   অনুমানে দুই বা ততােধিক আশ্রয়বাক্য থেকে সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয়। কিন্তু অমাধ্যম অনুমানে সিদ্ধান্তটি একটিমাত্র আশ্রয়বাক্য থেকে নিঃসৃত হয়।


১১) মাধ্যম ও অমাধ্যম অনুমানের একটি সাদৃশ্য লেখো

উঃ মাধ্যম ও অমাধ্যম অনুমানের একটি সাদৃশ্য হল -- 

মাধ্যম ও অমাধ্যম উভয় অনুমানই অবরোহ অনুমান।


 ১২) আবর্তন কাকে বলে? 

উঃ  যে অমাধ্যম অনুমানে একটি বচনের গুণ অপরিবর্তিত রেখে উদ্দেশ্য ও বিধেয়কে ন্যায়সংগতভাবে যথাক্রমে অন্য একটি বচনের বিধেয় ও উদ্দেশ্যে পরিণত করা হয় , তাকে আবর্তন বলে। 

অথবা 

যে অমাধ্যম অনুমানে আশ্রয়বাক্যের উদ্দেশ্য ও বিধেয় পদ ন্যায়সঙ্গতভাবে  সিদ্ধান্তের যথাক্রমে বিধেয় ও উদ্দেশ্য পদ হয় এবং আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণ অপরিবর্তিত থাকে তাকে আবর্তন বলে। আবর্তনের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্যকে আবর্তনীয় এবং সিদ্ধান্তকে আবর্তিত বা আবর্ত বলে।

উদাহরণ:

আবর্তনীয়: সকল মানুষ হয় মরণশীল (A)

আবর্ত: কোন কোন মরণশীল জীব হয় মানুষ (I)



১৩)  ব্যাবর্তন বা বিবর্তন বা প্রতিবর্তন কাকে বলে ?

 উঃ যে অমাধ্যম অনুমানে প্রদত্ত বচনের গুণের পরিবর্তন করে এবং সেই বচনটির বিধেয়ের বিরুদ্ধপদকে সিদ্ধান্তের বিধেয়রুপে গ্রহণ করা হয়, তাকে ব্যাবর্তন বা প্রতিবর্তন বা বিবর্তন বলে। বিবর্তনের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্যকে বিবর্তনীয় এবং সিদ্ধান্তকে বিবর্তিত বা বিবর্ত বলে।

উদাহরণ:

বিবর্তনীয়: সকল মানুষ হয় মরণশীল। (A)

বিবর্ত: কোনো মানুষ নয় অ- মরণশীল। (E)


১৪)  বিরুদ্ধ পদ কী?

 উঃ একটি পদ ও তার পরিপূরক পদকে একত্রে বিরুদ্ধ পদ বলা হয়। 

যেমন— ভারতীয় + অ - ভারতীয় = বিরুদ্ধ পদ 

              ( পদ )              ( পরিপূরক পদ ) 


১৫)  বিপরীত পদ কী? 

 উঃ বিপরীত পদ হল এমন দুটি পদ, যে দুটি পদকে যুক্ত করলে  নির্দেশিত ব্যক্তি বা বস্তুর সমগ্র শ্রেণিকে পাওয়া যায় না । যেমন — সাদা ও কালাে ।


 ১৬)  ‘ মানুষ ’ পদের বিরুদ্ধপদ কী হবে? 

উঃ  ‘মানুষ’ পদের বিরুদ্ধপদ  হল অ - মানুষ। 


১৭)  আবর্তন কত প্রকার ও কী কী?  

উঃ  আবর্তন দুই প্রকার - (১) সরল আবর্তন এবং (২) অ - সরল আবর্তন 


১৮)  সরল আবর্তন কাকে বলে?

উঃ যে আবর্তনের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণ ও পরিমাণ অপরিবর্তিত রেখে উদ্দেশ্য ও বিধেয়কে ন্যায়সংগতভাবে স্থানপরিবর্তন করা হয়, তাকে সরল আবর্তন বলা হয়। E , এবং I বচনের সরল আবর্তন সম্ভব।

অথবা

যে আবর্তনের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের পরিমাণ এক থাকে, তাকে সরল আবর্তন বলে।

উদাহরণ:

I - কোন কোন সাপ হয় বিষাক্ত (আবর্তনীয়)

I - কোন কোন বিষাক্ত জীব হয় সাপ (আবর্তিত)


১৯) অ-সরল আবর্তন কাকে বলে?

উঃ যে আবর্তনের ক্ষেত্রে আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের পরিমাণ ভিন্ন হয় তাকে  অ-সরল বা সীমিত আবর্তন বলে। A বচনের আবর্তন অ-সরল আবর্তন।

উদাহরণ

A - সকল মানুষ হয় মরণশীল (আবর্তনীয়)

I - কোন কোন মরণশীল জীব হয় মানুষ (আবর্তিত)


২০) একটি সরল আবর্তনের উদাহরণ দাও।

উঃ সরল আবর্তনের উদাহরণ:

(১)  A - সকল পুস্তক হয় গ্রন্থ। (আবর্তনীয়)

A- সকল গ্রন্থ হয় পুস্তক। (আবর্তিত)


(২)  A - সকল উদ্ভিদ হয় গাছ। (আবর্তনীয়)

      A- সকল গাছ হয় উদ্ভিদ। (আবর্তিত)


(৩) A- রবীন্দ্রনাথ হন গীতাঞ্জলীর লেখক। (আবর্তনীয়)

A- গীতাঞ্জলির লেখক হন রবীন্দ্রনাথ। (আবর্তিত)


২১) কোন ক্ষেত্রে A বচনের সরল আবর্তন সম্ভব?

উঃ যেসব ক্ষেত্রে প্রদত্ত A বচনের উদ্দেশ্য পদ ও বিধেয় পদ সমব্যাপক বা সমার্থক হয়, সেই ক্ষেত্রে A বচনে সরল আবর্তন সম্ভব। 


২২) A বচনে সরল আবর্তন কেন সম্ভব নয়?

উঃ A বচনের সরল আবর্তন সম্ভব নয়। কারণ A বচনের সরল আবর্তন করলে আবর্তনে চতুর্থ নিয়ম অর্থাৎ ব্যাপ্যতার নিয়মটি লঙ্ঘিত হয়।


২৩) আবর্তনের নিয়মগুলি কী কী?

উঃ আবর্তনের নিয়মগুলি হল -

প্রথম নিয়ম: আশ্রয়বাক্য বা হেতুবাক্যের উদ্দেশ্য পদটি সিদ্ধান্তের বিপদ হবে।

দ্বিতীয় নিয়ম: আশ্রয়বাক্যের বিধেয় পদটি সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য পদ হবে।

তৃতীয় নিয়ম: আশ্রয়বাক্য  এবং সিদ্ধান্তের গুণ অভিন্ন হবে। অর্থাৎ আশ্রয়বাক্য সদর্থক হলে সিদ্ধান্তও সদর্থক হবে এবং আশ্রয়বাক্য নঞর্থক হলে সিদ্ধান্তও নঞর্থক হবে।

চতুর্থ নিয়ম বা ব্যাপ্যতার নিয়ম: যে পদ যুক্তিবাক্যে ব্যাপ্য হয়নি সেই পদ সিদ্ধান্ত ব্যাপ্য হতে পারবে না।


২৪) বিবর্তনের নিয়মগুলি কী কী?

উঃ বিবর্তনের নিয়মগুলি হলো -

প্রথম নিয়ম: আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্য পদ অভিন্ন হবে।

দ্বিতীয় নিয়ম: আশ্রয়বাক্যের বিধেয় পদের বিরুদ্ধ পদ সিদ্ধান্তের বিধেয় হবে।

তৃতীয় নিয়ম: আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের গুণ ভিন্ন হবে।

চতুর্থ নিয়ম: আশ্রয়বাক্য ও সিদ্ধান্তের পরিমাণ অভিন্ন হবে। অর্থাৎ আশ্রয়বাক্য সামান্য বচন হলে সিদ্ধান্তও সামান্য বচন হবে এবং আশ্রয়বাক্য বিশেষ বচন হলে সিদ্ধান্তও বিশেষ বচন হবে।


২৫) বস্তুগত বিবর্তন কাকে বলে?

উঃ যে বিবর্তন প্রক্রিয়ায় প্রদত্ত বচনের আকারগত বিবর্তন না করে তার অর্থের উপর বিশেষভাবে নির্ভর করা হয় এবং বাস্তব অভিজ্ঞতার সাহায্যে প্রদত্ত বচনটিকে. বিবর্তিত করা হয়, তাকে বস্তুগত বিবর্তন বলে।

উদাহরণ:

যুদ্ধ হয় অমঙ্গলসূচক।

শান্তি হয় মঙ্গলসূচক।


২৬) বস্তুগত বিবর্তনকে প্রকৃত বিবর্তন বলা হয় না কেন?

উঃ বস্তুগত বিবর্তন যৌক্তিক বিবর্তনের উদ্দেশ্য পদের নিয়ম, গুনের নিয়ম, আকারগত নিয়ম মেনে চলে না। এই কারণে বস্তুগত বিবর্তনকে প্রকৃত বিবর্তন বলা যায় না।


২৭) অন্তরাবর্তন কী? 

উঃ আবর্তন ও বিবর্তনের যুগ্ম প্রয়োগকেই  অন্তরাবর্তন বলে।

বি. দ্র. 

আবর্তনের নিয়ম অনুসারে--

A বচনের আবর্তিত রূপ -- I (ব্যতিক্রম: A)

E বচনের আবর্তিত রূপ -- E

I বচনের আবর্তিত রূপ -- I

O বচনের আবর্তিত রূপ --সম্ভব নয়।

বিবর্তনের নিয়ম অনুসারে --

A বচনের বিবর্তিত রূপ -- E

E বচনের  বিবর্তিত রূপ -- A

I বচনের বিবর্তিত রূপ -- O

O বচনের বিবর্তিত রূপ -- I



Read More

Sunday, 8 November 2020

HS Philosophy অধ্যায়: বচনের বিরােধিতা (wbchse)

Leave a Comment

 অধ্যায়: বচনের বিরােধিতা (দ্বাদশ শ্রেণী) (wbchse)

 অতিসংক্ষিপ্ত প্রশ্নোত্তর ( মান - ১)

১) বচনের বিরােধিতা কাকে বলে ?

  উঃ একই উদ্দেশ্য - বিধেয়যুক্ত দুটি নিরপেক্ষ বচনের মধ্যে যদি গুণ কিংবা পরিমাণ অথবা গুণ ও পরিমাণ উভয় ক্ষেত্রেই প্রভেদ থাকে, তাহলে বচন দুটির পারস্পরিক সম্বন্ধকে বচনের বিরােধিতা বলা হয় । A ও E বচনের মধ্যে এই সম্বন্ধ বর্তমান 

২) বচনের বিরােধিতা কত প্রকার ও কী কী?  

উঃ  বচনের বিরােধিতা চার প্রকার । যথা— (i) বিপরীত বিরােধিতা (ii) অধীন বিপরীত বিরােধিতা (iii) অসম বিরােধিতা ও (iv) বিরুদ্ধ বিরােধিতা। 

৩)  বিপরীত বিরােধিতা কাকে বলে ? 

 উঃ  একই উদ্দেশ্য ও বিধেয়যুক্ত দুটি সামান্য বচনের মধ্যে যদি কেবল গুণের পার্থক্য থাকে, তবে বচন দুটির পারস্পরিক সম্বন্ধকে বিপরীত বিরােধিতা বলা হয়। A ও E বচনের মধ্যে এই সম্বন্ধ বর্তমান।

৪)  অধীন - বিপরীত বিরােধিতা কাকে বলে?

উঃ একই উদ্দেশ্য ও বিধেয়যুক্ত দুটি বিশেষ বচনের মধ্যে যদি কেবল গুণের পার্থক্য থাকে, তবে বচন দুটির পারস্পরিক সম্বন্ধ কে অধীন বিপরীত বিরোধিতা বলা হয়। I এবং O বচনের মধ্যে এই সম্বন্ধে বর্তমান।

৫)  অসম বিরােধিতা কাকে বলে? 

উঃ একই উদ্দেশ্য, বিধেয় ও গুণযুক্ত দুটি নিরপেক্ষ বচনের মধ্যে যদি কেবল পরিমাণের পার্থক্য থাকে তবে ওই বচন দুটির পারস্পরিক সম্বন্ধকে অসম বিরােধিতা বলা হয়। এই সম্বন্ধে যুক্ত বচন গুলি হল A -- I এবং E --- O।

৬) বিরুদ্ধ বিরােধিতা কাকে বলে?

 একই উদ্দেশ্য ও বিধেয়যুক্ত দুটি নিরপেক্ষ বচন যখন গুণ ও পরিমাণ উভয় দিক থেকে পৃথক হয়, তখন বচন দুটির পারস্পরিক সম্বন্ধকে বিরুদ্ধ বিরােধিতা বলা হয় । এই সম্বন্ধে যুক্ত বচনগুলি হল A - 0 ও E – I।

 ৭) বিপরীত বিরােধিতার উদাহরণ দাও।  

উঃ বিপরীত বিরােধিতা উদাহরণ-

A - সকল মানুষ হয় মরণশীল।

E -- কোনাে মানুষ নয় মরণশীল।

 ৮)  অধীন - বিপরীত বিরােধিতার একটি দৃষ্টান্ত দাও।

উঃ   অধীন - বিপরীত বিরােধিতার একটি দৃষ্টান্ত

  A - কোনাে কোনাে মানুষ হয় সৎ ব্যক্তি

  I -  কোনাে কোনাে মানুষ নয় সৎ ব্যক্তি ( O )

৯) 'কোনাে কোনাে মানুষ হয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন জীব।' --  বচনটির অধীন - বিপরীত বিরােধী বচন উল্লেখ কর।

উঃ  বচনটির অধীন - বিপরীত বিরােধী বচন হল -

 O - কোনাে কোনাে মানুষ নয় বুদ্ধিবৃত্তিসম্পন্ন 

১০) বিরুদ্ধ বিরােধিতার দৃষ্টান্ত দাও।

উঃ 

দৃষ্টান্ত নং 1 

A- সকল শিশু হয় সরল 

O -  কোনাে কোনাে শিশু নয় সরল

দৃষ্টান্ত নং 2

E - কোনাে মানুষ নয় অমর

 I - কোনাে কোনাে মানুষ হয় অমর

১১)  লৌকিক অর্থে বচনের বিরােধিতা কাকে বলে ?

 উঃ লৌকিক অর্থে দুটি নিরপেক্ষ বচন একসঙ্গে সত্য এবং একসঙ্গে মিথ্যা না হলে, উক্ত বচন দুটির পারস্পরিক সম্বন্ধকে বচনের বিরােধিতা বলা হয়।

 ১২) বচনের বিরােধিতার আবশ্যিক শর্ত কী? 

উঃ বিরােধী বচনের উদ্দেশ্য ও বিধেয় অভিন্ন হবে এবং গুণ ও পরিমাণ পৃথক হবে। 

১৩)  প্রচলিত যুক্তিবিজ্ঞানে বিরােধিতার মাপকাঠি কী? 

 উঃ অভিন্ন উদ্দেশ্য ও বিধেয়যুক্ত দুটি নিরপেক্ষ বচনের গুণ ও পরিমাণকেই প্রচলিত যুক্তিবিজ্ঞানে বিরােধিতার মাপকাঠি বলা হয়।

 ১৪) বিপরীত বিরােধিতা ও অধীন - বিপরীত বিরােধিতার মধ্যে মূলগত পার্থক্য কী ? 

উঃ বিপরীত বিরােধিতা হয় দুটি সামান্য বচনের মধ্যে , কিন্তু অধীন - বিপরীত বিরােধিতা হয় দুটি বিশেষ বচনের মধ্যে।

 ১৫) বিরােধানুমান কাকে বলে?

 উঃ বিরােধিতার সম্বন্ধে যুক্ত দুটি বচনের মধ্যে একটির সত্য বা মিথ্যার উপর ভিত্তি করে অন্য বচনটির সত্য বা মিথ্যার অনুমানকে বিরােধানুমান বলা হয় ।

১৬) বিরোধানুমানকে কোন ধরনের অনুমান বলা হয়? 

উঃ বিরোধানুমানকে অবরোহমূলক অমাধ্যম  অনুমান বলা হয়।

১৭) বিরোধ চতুষ্কোণের কর্ণ দুটি দ্বারা কোন বিরোধিতা বোঝানো হয়? 

উঃ বিরোধ চতুষ্কোণের কর্ণ দুটি দ্বারা বিরুদ্ধ বিরোধিতাকে বোঝানো হয়।

১৮) অতিবর্তী বচন কাকে বলে?

উঃ বিপরীত বিরোধিতার ক্ষেত্রে সামান্য বচনকে (A,  E) বলা হয় অতিবর্তী বচন।

১৯) অনুবর্তী বচন কাকে বলে? 

উঃ অধীন-বিপরীত বিরোধিতার ক্ষেত্রে বিশেষ বচনকে ( I, O) বলা হয় অনুবর্তী বচন।

২০) অ্যারিস্টটলের মতে, বিরোধিতা কয় প্রকার ও কী কী? 

উঃ অ্যারিস্টটলের মতে, বিরোধিতা দুই প্রকার যথা - (1) বিপরীত বিরোধিতা ও (2) বিরুদ্ধ বিরোধিতা।

২১) অ্যারিস্টটল অধীন-বিপরীত বিরোধিতাকে বিরোধিতা বলে স্বীকার করেননি কেন?

উঃ  অ্যারিস্টটল অধীন-বিপরীত বিরোধিতাকে বিরোধিতা বলে স্বীকার করেননি। কারণ- তাঁর মতে,  'I' এবং 'O' বচন উভয়ই একসঙ্গে সত্য হতে পারে।

২২) অ্যারিস্টটল কেন অসম বিরোধিতাকে বিরোধিতা বলে স্বীকার করেননি?

উঃ অ্যারিস্টটল  অসম বিরোধিতাকে বিরোধিতা বলে স্বীকার করেননি। কারণ তিনি মনে করেন A এবং I,  E এবং O বচন উভয়ই একসঙ্গে সত্য হতে পারে।

২৩) অ্যারিস্টটলের মতে, সর্বাপেক্ষা তীব্র বিরােধিতার সম্বন্ধ কোনটি? 

উঃ অ্যারিস্টটলের মতে, সর্বাপেক্ষা তীব্র বিরােধিতার সম্বন্ধ হল বিপরীত বিরােধিতা। 

২৪)  বিপরীত বিরােধানুমানের নিয়ম কী?  

উঃ বিপরীত বিরােধানুমানের নিয়ম -

বিপরীত বিরােধানুমানে একটি বচন সত্য হলে অপরটি মিথ্যা হবে এবং একটি মিথ্যা হলে অপরটি অনিশ্চিত হবে। 

২৫) অধীন - বিপরীত বিরােধানুমানের নিয়ম কী? 

উঃ অধীন - বিপরীত বিরােধানুমানের নিয়ম -

 অধীন - বিপরীত বিরােধানুমানে একটি বচন মিথ্যা হলে তার অনুরূপ বচনটি সত্য হবে এবং একটি বচন সত্য হলে অনুরুপ বচনটি অনিশ্চিত হবে। 

২৬) বিরুদ্ধ বিরােধানুমানের নিয়ম কী? 

উঃ বিরুদ্ধ বিরােধানুমানের নিয়ম -

বিরুদ্ধ বিরােধানুমানে যদি একটি বচন সত্য হয়, তবে অনুরুপ বচনটি মিথ্যা হবে এবং একটি বচন যদি মিথ্যা হয় তবে অনুরূপ বচনটি সত্য হবে। 

২৭) কখন দুটি বচন পরস্পরবিরােধী হয়?

উঃ একই উদ্দেশ্য বিধেয়যুক্ত দুটি নিরপেক্ষ বচন যখন গুণ কিংবা পরিমাণ অথবা গুণ ও পরিমাণ উভয় দিক থেকে পৃথক হয়, তখন বচন দুটি পরস্পরবিরােধী হয়। 

২৮) বিরুদ্ধ বিরােধিতার ক্ষেত্রে সত্যমূল্যের নিয়ম কী? 

উঃ বিরুদ্ধ বিরােধিতার ক্ষেত্রে দুটি বচন একসঙ্গে সত্য হতে পারে না , আবার একসঙ্গে মিথ্যা হতে পারে না। 

২৯) অসম বিরােধিতায় বচন দুটির মধ্যে কীরূপ প্রভেদ থাকে?

উঃ অসম বিরােধী বচনগুলির মধ্যে কেবল পরিমাণের পার্থক্য থাকে। 

৩০) অনুসিদ্ধান্ত কী? 

কোন একটি সিদ্ধান্ত থেকে যদি অন্য কোন একটি সিদ্ধান্ত নিঃসৃত হয়, তবে তাকে অনুসিদ্ধান্ত বলে।

৩১) বিপরীত বিরোধানুমানের মূল নিয়মের অনুসিদ্ধান্ত দুটি কী কী?

উঃ (১) A বচন সত্য হলে E বচন মিথ্যা হবে।

     (২) E বচন সত্য হলে A বচন মিথ্যা হবে।

৩২) অসম বিরোধিতার একটি দৃষ্টান্ত দাও।

উঃ অসম বিরোধিতার একটি দৃষ্টান্ত -

E - কোনো মানুষ নয় পূর্ণ।

O - কোনো কোনো মানুষ নয় পুর্ণ।

৩৩) বিপরীত বিরোধিতার একটি বচন সত্য হলে অপর বচন সত্য মূল্য কি হবে? 

উঃ মিথ্যা।

৩৪) দুটি বিরুদ্ধ বচন একসঙ্গে সত্য হয় না কেন? 

উঃ বিরোধী বচনগুলি গুণ ও পরিমাণ উভয় দিক থেকে পৃথক হয় বলে বিরুদ্ধ বসনগুলি একসঙ্গে সত্য হয় না।

৩৫) 'সকল মানুষ হয় বিচারবুদ্ধি সম্পন্ন জীব'' - বচনটির বিপরীত বিরোধী বচন কী হবে?

উঃ  কোন মানুষ নয় বিচারবুদ্ধি সম্পন্ন জীব - (E)

৩৬) 'সকল কবি হয় কল্পনাপ্রবণ' - বচনটির বিপরীত বিরোধী বচন কী হবে?

উঃ প্রদত্ত বচন: সকল কবি হয় কল্পনাপ্রবণ (A)

বিপরীত-বিরোধী বচন: কোন কবি নয় কল্পনাপ্রবণ। ( E)

৩৭) ' মানুষ অসৎ হতে পারে' - অসম বিরোধী বচন নির্ণয় করো।

উঃ প্রদত্ত বচন: কোন কোন মানুষ হয় অসৎ। (I)

 অসম বিরোধী বচন: সকল মানুষ হয় অসৎ। (A) 


Read More

Saturday, 7 November 2020

প্রশ্ন: শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ বলতে কী বোঝ? বৃদ্ধি ও বিকাশের সম্পর্ক আলোচনা কর এবং তাদের পার্থক্য কর।

Leave a Comment

 প্রশ্ন: শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ বলতে কী বোঝ? বৃদ্ধি ও বিকাশের সম্পর্ক আলোচনা কর এবং তাদের পার্থক্য কর।

উত্তর

বৃদ্ধি: একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে মানবশিশুর দেহের আকার বা আয়তন, ওজন ও উচ্চতার স্বতঃস্ফুর্ত ও স্থায়ী পরিবর্তন হলো বৃদ্ধি।

বিকাশ: বিকাশ হল ব্যক্তির সহজাত দৈহিক-মানসিক ক্ষমতা বা সামর্থ্যের  প্রকাশ ও বিস্তার, যা ব্যক্তিকে জটিল থেকে জটিলতর কর্ম সম্পাদন করতে সহায়তা করে। বৃদ্ধির মাধ্যমে বিকাশ অর্জিত হয়। কাজেই জন্মের পর থেকে শিশুর জীবনব্যাপী সামগ্রিক পরিবর্তনের ধারাবাহিক প্রক্রিয়া হল বিকাশ।

বৃদ্ধি ও বিকাশের সম্পর্ক: বৃদ্ধি ও বিকাশ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। বৃদ্ধি ছাড়া বিকাশ সম্ভব নয়। বৃদ্ধি হল দৈহিক আকার আকৃতির সর্বাঙ্গীণ পরিবর্তন কিন্তু বিকাশ বাহ্যিক উদ্দীপকের প্রভাবে মানুষের সামগ্রিক পরিবর্তন সাধন করে। বৃদ্ধি ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার ঠিকই, তেমনি বিকাশও ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। অর্থাৎ ব্যক্তির শারীরিক, বৌদ্ধিক, সামাজিক, আবেগমূলক প্রভৃতি। সুতরাং বিকাশ বলতে আমাদের দৈহিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলির গুণগত পরিবর্তনকে বুঝে থাকি। আমরা জানি দৈহিক বিকাশের মত মানসিক বিকাশ ঘটে পর্যায়ক্রমে ছন্দবদ্ধভাবে। বিকাশ ধারা নিয়ন্ত্রণ ও পরিবেশের বৈশিষ্ট্য এবং প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল। তাই সক্রেটিস ও প্লেটো দুজনের বক্তব্যেরই মূল কথা – বিকাশই শিক্ষা। আমরা জানি প্রতিটি শিশু এক একক সত্তা বিশিষ্ট এবং প্রতিটি শিশুর মধ্যে ব্যক্তিস্বাতন্ত্র বিদ্যমান। সেইদিক লক্ষ্য রেখে জীবনের শুরু থেকে গঠনগত ও প্রকৃতিগত পরিবর্তন লক্ষ করা যায়। এই পরিবর্তন বিভিন্ন দিক থেকে ঘটতে পারে। দৈহিক দিক থেকে যেমন আয়তনগত বা দৈর্ঘ্যগত বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়, তেমনি মানসিক দিক থেকে বৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তন ঘটে। সুতরাং বৃদ্ধি ও বিকাশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক থাকলেও আমরা আধুনিক শিক্ষা - চিন্তার বৃদ্ধি ও বিকাশের মধ্যে মূলগত কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।

বৃদ্ধি ও বিকাশের মধ্যে পার্থক্য:

(১) বৃদ্ধি বলতে সম্পূর্ণভাবে পরিমাণগত পরিবর্তনগুলিকে বােঝায়। যেমন- ব্যক্তির দৈহিক উচ্চতা ওজন ইত্যাদি। অপরদিকে,  বিকাশ হল ক্ৰমউন্নয়নশীল সামগ্রিক পরিবর্তনের প্রক্রিয়া । অর্থাৎ গুণগত প্রকাশ ব্যক্তির আচরণ বা প্রতিক্রিয়ার মধ্যে লক্ষ করা যায় ।

(২) বৃদ্ধি হল কারণ কিন্তু বিকাশ তার ফল।

 (৩) বৃদ্ধির পরিবর্তনকে আমরা নৈর্ব্যক্তিক   ভাবে বিচার করে থাকি। অপরদিকে, বিকাশ সম্পর্কিত ধারণা এই অর্থে ব্যক্তিকেন্দ্রিক

 (৪) বৃদ্ধি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া নয়। কারণ একটি নির্দিষ্ট সময়ে বৃদ্ধির সমাপ্তি ঘটে। অপরদিকে,  বিকাশ জীবনব্যাপী ঘটমান প্রক্রিয়া। যার শুরু ঘটে শিশুর জন্মমুহূর্ত থেকে এবং তা চলে ব্যক্তির মৃত্যু পর্যন্ত।

 (৫) বৃদ্ধি বলতে শুধুমাত্র দৈহিক বিকাশকেই বােঝান হয়। কিন্তু, বিকাশ বলতে আমরা দৈহিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক, সামাজিক, প্রাক্ষোভিক অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলির গুণগত পরিবর্তনকে বােঝান হয়। 

(৬) বৃদ্ধি স্বতস্ফূর্ত, তবে  অনুশীলনের প্রভাব দেখা যায়। অপরদিকে,  পরিবেশের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ার ফলেই বিকাশ ঘটে অর্থাৎ ব্যক্তির সক্রিয়তা এবং অনুশীলন এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ শর্ত।

(৭) বৃদ্ধির পরিমাপ করা হয় আধুনিক পরিমাপক কৌশল দ্বারা। অপরদিকে, বিকাশ পরিমাপযােগ্য যা পরিমাপ করা হয় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এবং আধুনিক নানা বৈজ্ঞানিক অভীক্ষার সাহায্যে।

(৮) বৃদ্ধি পরিমাণগত কিন্তু বিকাশ গুণগত।

<<<<<<<<>>>>>>


Read More

Friday, 6 November 2020

THE WISE SOLOMAN

Leave a Comment

 THE WISE SOLOMAN /  THE WISE JUDGE

 Once upon a time there lived a King called Soloman. He was famous for his wisdom.  He could solve any problem wisely. People praised him for his wisdom and intelligence. Once two women came to him with two babies . One of the babies was alive , and the other was dead . Both claimed the living one . King Soloman was a bit puzzled. After a while he called his men and said, "Cut the living child into two equal halves and give each of the women a half. "One woman readily agreed.   The other began to cry. She then prayed to the King, "Oh King ! I don't want the baby, give it to her.  "Now king Soloman realised who the real mother was. He then ordered his men to give the baby to the real mother. And the other was sent to jail. 

MORAL : Truth Always Triumphs.


জ্ঞানী বা পন্ডিত সোলেমান/ জ্ঞানী বিচারক

একদা  সোলোমান নামে একজন রাজা বাস করতেন।  তিনি তাঁর জ্ঞানের জন্য বিখ্যাত ছিলেন।  তিনি যে কোনও সমস্যা বুদ্ধি করে সমাধান করতে পারতেন।  লোকেরা তাঁর জ্ঞান এবং বুদ্ধি জন্য প্রশংসা করতেন।  একবার দু'জন মহিলা দু'জন বাচ্চা নিয়ে  তাঁর কাছে এলেন।  একটি বাচ্চা বেঁচে ছিল এবং অন্যটি মারা গিয়েছিল।  দুজনেই জীবিতকে দাবি করলেন।  রাজা সলোমন কিছুটা বিস্মিত হয়ে গেলেন।  কিছুক্ষণ পরে তিনি তাঁর লোকদের ডেকে বললেন, "জীবিত শিশুটিকে দুটি  সমান ভাগে ভাগ কর   এবং প্রত্যেক মহিলাকে অর্ধেক দাও।" এক মহিলা অনায়াসেই রাজি হন।  অন্য জন কাঁদতে লাগল।  তারপরে তিনি রাজার কাছে প্রার্থনা করলেন, "ওহ রাজা! আমি বাচ্চা চাই না, তাকে দিয়ে দিন।" এখন রাজা সোলোমান বুঝতে পারলেন আসল মা কে।  তারপরে তিনি তাঁর লোকদের প্রকৃত  মাকে বাচ্চা দেওয়ার নির্দেশ দেন।  আর অপরকে কারাগারে প্রেরণ করা হল।

 নীতিকথা: সত্যের সর্বদা জয়।

Read More

Thursday, 5 November 2020

শিক্ষা শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ কী? এর সংকীর্ণ ও ব্যাপক অর্থ আলোচনা কর।

Leave a Comment

 প্রশ্ন: শিক্ষা শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ কী? এর সংকীর্ণ ও ব্যাপক অর্থ আলোচনা কর।

উত্তর:

  'শিক্ষা’ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ: “শিক্ষা” শব্দটি এসেছে সংস্কৃত “শাস” ধাতু থেকে যার অর্থ ‘শাসন করা', 'শৃঙ্খলিত করা’, ‘নিয়ন্ত্রিত করা', 'নির্দেশনা দেওয়া' ইত্যাদি। এখানে অর্থ হল ‘ প্রচলিত শিক্ষাদান পদ্ধতি।  বাংলা ভাষায় 'শিক্ষা’ শব্দের সমার্থক হিসেবে বিদ্যা’ শব্দটিও ব্যবহৃত হয়। 'বিদ্যা’ কথাটি সংস্কৃত ‘বিদ্’ ধাতু থেকে এসেছে। ‘বিদ্’ কথাটির অর্থ হল 'জ্ঞান অর্জন করা' বা 'জানা'। এক্ষেত্রে ‘বিদ্যা'- র অর্থ হয়েছে 'কোনাে কিছু সম্পর্কে জ্ঞান বা কৌশল আয়ত্ত করা'। 

'এডুকেশন’ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ:  'Education' শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে ভাষাতত্ত্ববিদরা ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। এইসব মতামতকে চারটি ভাগে ভাগ করে আলােচনা করা যায়।

(1) প্রথম মত: ‘শিক্ষার ইংরেজি প্রতিশব্দ' 'Education' শব্দটি লাতিন শব্দ Educatio থেকে গৃহীত হয়েছে। 'Educatio' কথাটির উৎপত্তি ঘটেছে দুটি শব্দের সংমিশ্রণে। শব্দ দুটি হল ‘e' এবং 'duco'। 'e'- এর অর্থ হল ‘থেকে’ (from বা out of) এবং ‘duco'-র অর্থ হল অন্তর্নিহিত কোনাে কিছুকে প্রকাশ করা (to draw out)। এই মত অনুসরণ করে বলা যায়, 'education' বা 'শিক্ষা’-র অর্থ হল শিশুর মধ্যে লুকিয়ে থাকা সম্ভাবনাগুলিকে প্রকাশিত হতে সাহায্য করা।

 (2) দ্বিতীয় মত: 'Education' শব্দটির উৎপত্তি ঘটেছে লাতিন শব্দ 'Educare' থেকে। "Educare ” শব্দের অর্থ হল লালনপালন করা (to bring up), পরিচর্যা করা (to nourish), উদ্দীপিত করা বা জাগিয়ে তােলা (to raise) ইত্যাদি। সুতরাং এই মত অনুযায়ী, শিক্ষা হল শিশুকে বা অপরিণত শিক্ষার্থীকে উপযুক্ত লালনপালন বা পরিচর্যা দ্বারা জীবনধারণের জন্য উপযােগী দক্ষতা ও কৌশল অর্জনে সাহায্য করা। শিশুর মধ্যে যে সুপ্ত প্রতিভা থাকে, তাকে সুপ্তাবস্থা থেকে জাগিয়ে তােলা এবং জীবনপথে পরিচালিত করার প্রক্রিয়াই হল শিক্ষা। 

(3) তৃতীয় মত: 'Education' শব্দটির উদ্ভব ঘটেছে লাতিন শব্দ 'Educere' থেকে।  'Educere' শব্দের অর্থ হল নির্দেশ দান করা (to lead out), প্রকাশ করা(to drawout) ইত্যাদি। শিক্ষাবিদদের এই মত অনুযায়ী, শিক্ষা হল নির্দেশ দানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর সুপ্ত গুণাবলিকে প্রকাশ করে শিক্ষার্থীকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করা। 

(4) চতুর্থ মত: 'Education' কথাটি এসেছে লাতিন শব্দ 'Educatum' থেকে। 'Educatum' শব্দটির অর্থ হল শিক্ষাদানের কাজ (teaching)। এই অর্থে শিক্ষা বলতে বােঝায়, শিক্ষাদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে বিকশিত করা। Education- এর ব্যুৎপত্তিগত চার ধরনের মতবাদকে সংক্ষিপ্ত আকারে সাজালে, Education বা 'শিক্ষা’ বলতে যা বােঝায়, তা হল 

•  শিক্ষার্থীদের মধ্যেকার সম্ভাবনাগুলির বিকাশ ঘটিয়ে, তাদের যথাযথ প্রকাশে সহায়তা করা। 

•  শিক্ষার্থীর উপযুক্ত প্রতিপালনের দ্বারা তার মধ্যেকার সুপ্ত সম্ভাবনাগুলিকে জাগ্রত করা ও পরিচর্যার দ্বারা তাকে জীবনপথে অগ্রসর হতে সাহায্য করা। 

•  শিক্ষার্থীর অন্তর্নিহিত সম্ভাবনাকে প্রকাশ করে, তাকে যথােপযুক্ত নির্দেশ দান করে এগিয়ে যেতে সাহায্য করা।

•  উপযুক্ত শিক্ষা দানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে বিশেষ বিষয়ে শিক্ষিত করে তোলা।

 সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা:  সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা বলতে, যে কোনাে প্রকার জ্ঞান অর্জন, তথ্য সংগ্রহ বা কৌশল আয়ত্ত করাকে বােঝায়। এক কথায় শিক্ষা হল স্কুল, কলেজ প্রভৃতি বিদ্যায়তন নির্ধারিত কোনাে পাঠক্রম অনুসরণ করে কোনাে পর্ষদ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি, ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট হস্তগত করা। অর্থাৎ প্রথাগত শিক্ষা এখনও অর্থাগমের জগতে যাওয়ার ছাড়পত্র, Bread and Butter নীতি। সুতরাং, সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা হচ্ছে এক প্রকার পারদর্শিতা অর্জন।

আমাদের বর্তমান সভ্য সমাজে শিক্ষিত-অশিক্ষিতের ব্যবধান না ভেদাভেদ এই সংকীর্ণ ধারাকে অবলম্বন করে গড়ে উঠেছে। অর্থাৎ যারা কোনাে পর্যদ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি, ডিপ্লোমা বা সাটিফিকেট পেয়েছে তারাই শিক্ষিত আর যারা তা অর্জন করেনি তারা অশিক্ষিত। আর সাধারণ মানুষ সংকীর্ণ অর্থেই, “শিক্ষা" কথাটি ব্যবহার করে থাকে। অনেক শিক্ষিত ব্যক্তিরও শিক্ষা সম্পর্কে ধারণা যথেষ্ট উদার নয়। 

শিক্ষা মতবাদগুলির মধ্যে আহরণ তত্ত্ব (education by accretion) সর্বাপেক্ষা উল্লেখযােগ্য, যা সংকীর্ণ অর্থে ব্যবহার হয়ে থাকে। এই মতবাদ অনুসারে শিক্ষা জ্ঞান বা তথ্য আহরণের পদ্ধতিমাত্র। অর্থাৎ শিশুমনের শুন্যভাণ্ডার নানাবিষয়ক জ্ঞান দ্বারা পরিপূর্ণ করাই শিক্ষার কাজ। তাই শিক্ষা হল জ্ঞানার্জনের নামান্তর। যেমন— জলাধার থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে গৃহস্থের ঘরে জল পৌঁছে যায়, তেমনি জ্ঞান, জ্ঞানভাণ্ডার (বই অথবা শিক্ষক) থেকে নির্দিষ্ট পথে শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে যাবে। এই তত্ত্বটিকে Pipe - line Theory বলা হয়। অর্থাৎ সংকীর্ণ মতানুযায়ী শিক্ষাব্যবস্থায় কেবল পুঁথিগত তথ্য আহরণের উপর আরােপ করা হয়েছে। 

সংকীর্ণ অর্থে "শিক্ষা” অর্থটি বিশ্লেষণ করলে আমরা কতকগুলি ত্রুটি লক্ষ করি তা নিচে আলােচনা করা হল :

(১) সংকীর্ণ অর্থে শিক্ষা কেবল পুঁথিগত তথ্য আহরণের উপর গুরুত্ব আরােপ করার ফলে দৈহিক বিকাশের দিকটি সম্পূর্ণ উপেক্ষিত হয়েছে। 

(২) মানসিক বিকাশের ক্ষেত্রে ইন্দ্রিয়শক্তির বিকাশ, স্বাধীন চিন্তা, সৃজনশীলতা, রুচিবােধ, সৌন্দর্যানুভূতির উন্মেষ, সমাজ জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সামঞ্জস্য বিধানের যােগ্যতা প্রভৃতি বিষয়ে একেবারে অবহেলিত হয়েছে। 

(৩) সংকীর্ণ শিক্ষাব্যবস্থায় শিশুর ব্যক্তিসত্তা, তার স্বতঃস্ফূর্ত কাজ, আশা - আকাঙ্ক্ষা, প্রবৃত্তি, প্রক্ষোভ, অনুরাগ প্রভৃতির প্রতি দৃষ্টি দেওয়া হয় না।

 (৪) সংকীর্ণ ধারণা অনুযায়ী বিশেষ নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রেখে শিক্ষক শিশুদের উপর যে জ্ঞানের বােঝা অর্পণ করতেন তাই হল শিক্ষা। এই ধারণা অনুযায়ী শিক্ষার উৎস হচ্ছে শিক্ষক, পাঠ্যপুস্তক ইত্যাদি। ফলে ঐ তথ্য থেকে শিক্ষার্থী কোনাে কিছু গড়তে পারে না। অতিরিক্ত চাপে স্মৃতিশক্তি ভারাক্রান্ত হয়। 

(৫) সংকীর্ণ শিক্ষামতবাদ বিদ্যালয় ও সমাজের মধ্যে, জীবন ও শিক্ষার মধ্যে এক বিশদ ব্যবধান সৃষ্টি করেছে। সুতরাং, সংকীর্ণ ধারণা অনুযায়ী জ্ঞানকে অপরিবর্তনীয়, সুসম্পূর্ণ, সুনির্দিষ্ট বিষয়রূপে গণ্য করা হয়। এই অর্থে শিক্ষা হল প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের থেকে অপ্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার্থীর মধ্যে জ্ঞান সঞ্চালিত হবার প্রক্রিয়া।

 ব্যাপক অর্থে শিক্ষা: শিক্ষার উল্লিখিত সংকীর্ণ অর্থ ছাড়া আর একটি ব্যাপক অর্থ আছে । এই ব্যাপক অর্থে শিক্ষা হল জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া । জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কোন ব্যক্তি বিভিন্ন পরিস্থিতিতে যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে, তাই হল শিক্ষা। তাই শিক্ষার ব্যাপক অর্থ হল শিশুর জৈব, মানসিক, সামাজিক সর্বপ্রকার বা সর্বাঙ্গীণ জীবন বিকাশ। এই বিকাশ ঘটে নানাবিধ অভিযােজন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। অর্থাৎ ব্যাপক অর্থে শিক্ষা, জ্ঞানসংগ্রহের কৌশল নয়, বৃহত্তর জীবন বিকাশের প্রক্রিয়া। 

শিক্ষাকে যদি সমগ্র জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া হিসাবে ধরা হয়, তাহলে তার একটি অন্যতম কাজই হল মানুষকে পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতি বিধানে সাহায্য করা। শিক্ষা মানুষকে সেই সম্প্রতি বিধানে সাহায্য করে, তাকে সুষ্ঠু জীবনযাপনে সাহায্য করে। শিক্ষার সাহায্যেই শিশু পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতিবিধানের জন্য কতকগুলি কৌশল বা দক্ষতা অর্জন করে। আবার এই যে কৌশল বা দক্ষতা শিশু অর্জন করছে পরিবেশের সতে সঙ্গতিবিধানের জন্য তা আত্মসক্রিয়তার মাধ্যমেই করছে। কারণ, পরিবেশের সঙ্গে সার্থক সামঞ্জস্য স্থাপন আত্মবিকাশের অপরিহার্য অঙ্গ। শিক্ষা ব্যতীত মানবজীবনে সামঞ্জস্য বিধান অসম্ভব এবং ইহার অভাবে আত্মবিকাশলাভ এমনকি জীবনধারাও সম্ভব নয়। তাই “ শিক্ষাই জীবন, জীবনই শিক্ষা ” (ডিউই)। তাই ব্যাপক অর্থে আত্মপ্রচেষ্টার মাধ্যমে সামঞ্জস্য বিধান ও পরিপূর্ণ আত্মবিকাশের নামই শিক্ষা। আর এই আত্মসক্রিয়তা হচ্ছে একটি অন্তর্নিহিত প্রেরণা যা শিশুকে বিভিন্ন ধরনের কাজে উদ্দীপিত করে। সুতরাং, শিশুকে যদি আত্মসক্রিয় করে না তােলা যায়, তাহলে শিক্ষার সমস্ত আয়ােজন ব্যর্থ হতে বাধ্য। 

 শিশুর অন্তর্নিহিত সম্ভাবনার বা ক্ষমতার বিকাশ সাধনই হল প্রকৃত শিক্ষা। অর্থাৎ সে সহজাত অপরিসীম শক্তিসম্ভাবনা নিয়ে সমাজ পরিবেশের মধ্যে জন্মগ্রহণ করে এবং সেই শিশু জন্মগত প্রবণতা ও কতকগুলি সম্ভাবনা নিয়ে বিদ্যালয়ে আসে। সেইসব সম্ভাবনাকে যথাযথ পথে বিকশিত করাই হল শিক্ষা, কারণ তাদের এই শক্তিসম্ভাবনা পরিবেশের সংস্পর্শে এসে ঐ পরিবেশেরই বিভিন্ন পথকে আশ্রয় করে আত্মপ্রকাশ করে এবং নানা পরিবর্তন, পরিমার্জনা ও সংযােগের মধ্যে দিয়ে বিকাশ লাভ করতে থাকে আত্মশক্তি ও জীবন পরিবেশের ঘাত - প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে ব্যক্তি অভিজ্ঞতা লাভ করে, পূর্ব অভিজ্ঞতার সঙ্গে নতুন নতুন অভিজ্ঞতার সংযােজন হয়, অভিজ্ঞতার পুনর্বিন্যাস বা পুনর্গঠন হয়ে থাকে। এই নতুন নতুন অভিজ্ঞতালাভ ও অভিজ্ঞতার পুনর্গঠনকে, সহজাত শক্তি সম্ভাবনার পরিবর্তন, পরিমার্জন ও উৎকর্ষকে, পরিবেশের মাধ্যমে ব্যক্তির পরিপূর্ণ আত্মবিকাশকেই আমরা শিক্ষা বলি। শিক্ষার এইরূপ ব্যাপক অর্থ গ্রহণ করলে দেখা যায় যে কেবল বিদ্যালয়েই শিক্ষালাভ হয় না। বৃহত্তর জগতের প্রতিটি পরিস্থিতিতেই মানুষকে শিক্ষাদান করে থাকে। ব্যাপক অর্থে শিক্ষার এই আলােচনা মনােবিদ্যা ও সমাজবিদ্যার বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের উপর প্রতিষ্ঠিত। তাই ব্যাপক অর্থে— 

• শিক্ষা হল শিশুর জৈব, মানসিক, সামাজিক সর্বপ্রকার বা সর্বাঙ্গীণ জীবন বিকাশ। 

• শিক্ষা হল এমন একটি প্রক্রিয়া যা শিশুকাল থেকে পরিণত বয়স পর্যন্ত পরিব্যাপ্ত এবং যা ব্যক্তিকে বিভিন্ন পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গতিবিধান ও অভিজ্ঞতা অর্জনে সাহায্য করে। 

• অর্থাৎ অভিজ্ঞতা অর্জন, আত্মপ্রচেষ্টার মাধ্যমে সামঞ্জস্য বিধান ও পরিপূর্ণ আত্মবিকাশের নামই শিক্ষা। 

Read More

Tuesday, 3 November 2020

A a question and answer of THE COMEDY OF ERRORS

Leave a Comment

 Why was the Elder Antipholus denied entry  into his own house?

  ANS. There was a comedy of error for which Elder Antipholus was denied entry into his own house. Antipholus of Syracuse  was having his dinner. Adriana thought that her husband was dining in the house. She did not have the least suspicion  that Antipholus of Syracuse was not her husband. In the meantime Elder Antipholus or Antipholus of Ephesus came back to his own home. But he was denied entry as he was supposed to be inside the house. This made Elder Antipholus furious and he  decided to leave the house.

Read More

A a question and answer of THE COMEDY OF ERRORS

Leave a Comment

 How did Aegeon find out all his family members? (কিভাবে ইজিয়ন তার সব পরিবারের সদস্যদের খুঁজে পেলেন?)


Ans. When Aegeon came to Ephesus in search of his younger son, he was arrested and asked to pay a thousand marks as ransome to escape the death sentence.  Failing to pay it, when he was being taken to the place of execution beside a nunnery  he accidentally met his missing twin sons and it came to pass  that the abess of the nunnery was none other than his long-lost wife.  In this way Aegean was reunited with his family members through various confusing incidents that took place for the identical appearance of his two sons and their identical servants.

বঙ্গানুবাদ:

  ইজিয়ন যখন ছােট ছেলের খোঁজে এফেসাসে এসেছিলেন তখন তিনি গ্রেপ্তার হন এবং মৃত্যুদন্ড থেকে রক্ষা পেতে তাকে একহাজার মার্ক পণ দিতে বলা হয়। এই পণ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় যখন তাঁকে একটি মঠের পাশে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন ঘটনাক্রমে তার হারিয়ে যাওয়া দুই যমজ ছেলের সংগে দেখা হয়ে যায় এবং এর প্রকাশ পায় যে মঠের অধ্যক্ষা আর কেউ নন আসলে তাঁর অনেকদিনের হারিয়ে যাওয়া স্ত্রী। এভাবেই তার দুই ছেলে এবং তাদের একইরকমের দুই চাকরের জন্য ঘটা নানা বিভ্রান্তিকর ঘটনার মধ্য দিয়ে ইজিয়ন তার পরিবারের সদস্যদের সংগে পুনর্মিলিত হয়েছিলেন। 

Read More