Sunday, 7 September 2025

গাউট বা গেঁটে বাত (Gout) ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা

Leave a Comment

 গাউট বা গেঁটে বাত (Gout) ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা


গাউট কী?


গাউট বা গেঁটে বাত হলো এক ধরনের বাত ব্যথা, যা শরীরে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে জয়েন্টে জমে স্ফটিক আকারে তৈরি হয়। এর ফলে হঠাৎ করে জয়েন্ট ফুলে যায়, ব্যথা হয় এবং জয়েন্ট লাল হয়ে গরম হয়ে যায়। সাধারণত পায়ের বড় আঙুলে গাউট সবচেয়ে বেশি দেখা যায়, তবে হাত, হাঁটু, গোড়ালি, কনুই ইত্যাদিতেও হতে পারে।


---


গাউটের কারণ


রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি


অতিরিক্ত লাল মাংস, ডাল, সামুদ্রিক মাছ, অ্যালকোহল সেবন


কিডনির সমস্যা (ইউরিক এসিড বের হতে না পারা)


বংশগত কারণ


স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন


দীর্ঘদিন কিছু ওষুধ যেমন ডাইইউরেটিক (Diuretics) ব্যবহার



প্রয়োজনীয় টেস্ট:


Serum Uric Acid


Joint fluid analysis (Monosodium urate crystals চিহ্নিত করতে)


Kidney function test (Urea, Creatinine)


X-ray (উন্নত পর্যায়ে জয়েন্ট ক্ষয় দেখতে)


---


গাউটের লক্ষণ


জয়েন্টে হঠাৎ করে তীব্র ব্যথা (বিশেষ করে রাতে)


জয়েন্ট ফুলে যাওয়া ও লাল হয়ে যাওয়া


জয়েন্ট গরম হয়ে যাওয়া


জয়েন্টে নড়াচড়ার অক্ষমতা


দীর্ঘদিনে জয়েন্ট বিকৃতি হওয়া


বারবার গাউটের আক্রমণ হওয়া


---


হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা


গাউটের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি একটি কার্যকর ও নিরাপদ চিকিৎসা ব্যবস্থা। রোগীর উপসর্গ অনুযায়ী ঔষধ নির্বাচন করা হয়, যা ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রণ করে ও প্রদাহ কমায়।


প্রচলিত হোমিও ঔষধ


Colchicum Autumnale – গাউট চিকিৎসার প্রধান ঔষধ। পায়ের বড় আঙুল ফুলে লাল হয়ে ব্যথা হয়।


Ledum Palustre – পায়ের ছোট জয়েন্টে ব্যথা, ঠান্ডা লাগলে বেশি হয়।


Lycopodium Clavatum – ডানদিকের জয়েন্টে বেশি ব্যথা, ইউরিক এসিড বেড়ে গেলে উপকারী।


Benzoic Acid – ইউরিক এসিডের গন্ধযুক্ত প্রস্রাব, জয়েন্ট ব্যথার সঙ্গে কিডনির সমস্যা থাকলে।


Guaiacum – দীর্ঘস্থায়ী গাউটে জয়েন্ট শক্ত হয়ে গেলে।



---


বায়োকেমিক চিকিৎসা


Natrum Sulph 6x – শরীরে অতিরিক্ত ইউরিক এসিড বের করতে সাহায্য করে।


Natrum Phos 6x – ইউরিক এসিডের অম্লতা কমায়।


Ferrum Phos 6x – প্রদাহ ও ব্যথার প্রাথমিক পর্যায়ে উপকারী।



---


খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন


লাল মাংস, সামুদ্রিক মাছ, ডাল ও মটরশুঁটি এড়িয়ে চলা


অ্যালকোহল, কোলা জাতীয় পানীয় বন্ধ করা


প্রচুর জল পান করা (ইউরিক এসিড বের হতে সাহায্য করে)


কম চর্বিযুক্ত দুধ, শাকসবজি, ফল খাওয়া


নিয়মিত ব্যায়াম করা ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা


রাতে পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক চাপ কমানো


---


হোমিওপ্যাথির গুরুত্ব


গাউট একটি পুনরাবৃত্তিমূলক রোগ, তাই একবার হলে বারবার হওয়ার প্রবণতা থাকে। এলোপ্যাথি চিকিৎসা সাধারণত ব্যথা কমায় কিন্তু মূল সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। হোমিওপ্যাথি ইউরিক এসিডের অস্বাভাবিকতা ঠিক করতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘমেয়াদে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীনভাবে।


এখানে দেওয়া তথ্য কেবল শিক্ষামূলক। চিকিৎসার জন্য অবশ্যই যোগ্য হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।



If You Enjoyed This, Take 5 Seconds To Share It

0 comments: