প্রশ্ন: সামান্য লক্ষণ প্রত্যক্ষ কাকে বলে? ব্যাপ্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সামান্য লক্ষণ প্রত্যক্ষ ভূমিকা আলোচনা কর।
সামান্যলক্ষণ প্রত্যক্ষ : কোন একটি শ্রেণী বা জাতির অন্তর্গত একটি ব্যক্তি বা বস্তুর সামান্য ধর্মের প্রত্যক্ষের ভিত্তিতে সেই জাতি বা শ্রেণীর অন্তর্গত সমস্ত ব্যক্তির প্রত্যক্ষকে সামান্য লক্ষণ প্রত্যক্ষ বলে। যেমন- মানুষ জাতির সামান্য ধর্ম হলো মনুষ্যত্ব। ন্যায় মতে, যখন আমরা একটি বিশেষ মানুষকে প্রত্যক্ষ করি তখন 'মনুষত্ব' নামক সামান্য ধর্মটিও প্রত্যক্ষ করি। এই 'মনুষত্ব' ধর্মের মাধ্যমে সকল মানুষকে প্রত্যক্ষ করাই হলো সামান্য লক্ষণ প্রত্যক্ষ।
ব্যাপ্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সামান্য লক্ষণ প্রত্যক্ষের ভূমিকা: ন্যায়সম্মত ব্যাপ্তি নির্ণয়ের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো সামান্যলক্ষণ প্রত্যক্ষ। সামান্যলক্ষণ প্রত্যক্ষ একপ্রকার অলৌকিক প্রত্যক্ষ। যেমন আমরা পর্বত, পাকশালা প্রভৃতি কোন কোন ক্ষেত্রে ধূম ও বহ্নির ব্যাপ্তি প্রত্যক্ষ করতে পারি। কিন্তু ব্যাপ্তি সম্বন্ধ সার্বজনীন। তাই আমাদের বলার উদ্দেশ্য এরকম হয় না যে, শুধু পর্বতীয় ধূমের সঙ্গে পর্বতীয় বহ্নির ব্যাপ্তি আছে বা পাকশালার ধূমের সঙ্গে পাকশালার বহ্নির ব্যাপ্তি আছে। সকল ধূমের সঙ্গে সকল বহ্নির ব্যাপ্তিই আমরা জানতে চাই। কিন্তু সকল ধূম ও সকল বহ্নির সঙ্গে আমাদের ইন্দ্রিয়ের সাধারণ বা লৌকিক সন্নিকর্ষ সম্ভব নয়। তা সমাধানকল্পেই ন্যায়দর্শনে সামান্যলক্ষণ সন্নিকর্ষের দ্বারা সকল ধূম ও সকল বহ্নির ব্যাপ্তিজ্ঞানকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
এই সামান্যলক্ষণ প্রত্যক্ষের সাহায্যে আমরা কোন একটি স্থানে ধূমকে প্রত্যক্ষ করার সময় ঐ ধূমের মাধ্যমে ধূমত্ব জাতিকে এবং ঐ ধূমত্ব জাতির মাধ্যমে সকল ধূমকে প্রত্যক্ষ করতে পারি। অনুরূপভাবে বহ্নিত্ব জাতির মাধ্যমে আমরা সকল বহ্নিকে প্রত্যক্ষ করতে পারি। ধূমত্ব ও বহ্নিত্বের প্রত্যক্ষকালে ধূমত্ব ও বহ্নিত্বের সম্বন্ধও আমাদের প্রত্যক্ষের বিষয় হয়। ধূমত্ব ও বহ্নিত্বের এই সম্বন্ধের সাহায্যে আমরা সামান্যত সকল ধূমের সঙ্গে সকল বহ্নির একটি সম্বন্ধ প্রত্যক্ষ করি। এই প্রত্যক্ষ হয় এক ধরনের অলৌকিক প্রত্যক্ষ। এটাই সামান্যলক্ষণ প্রত্যক্ষ। এইভাবে সামান্যলক্ষণ প্রত্যক্ষের সাহায্যে হেতু ও সাধ্যের মধ্যে ব্যাপ্তি নির্ণয় করা যেতে পারে।
<<<<<>>>>>
0 comments:
Post a Comment