প্রশ্ন: বৈশেষিক দর্শন অনুসারে কর্ম পদার্থের একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা কর। ১০ নম্বর
উঃ
কর্ম: কর্ম অর্থে গতি বোঝায়। কর্ম বা গতি বিশ্বের এক মূল তত্ত্ব, - দ্রব্য ও গুনের অতিরিক্ত একটি দ্রব্য। কর্মের অর্থ গতি বা স্থান পরিবর্তন। দ্রব্য এবং গুণ থেকে একটি স্বতন্ত্র পদার্থ হল কর্ম। দ্রব্যকে আশ্রয় করেই কর্ম বিরাজ করে। দ্রব্য ছাড়া কর্ম থাকতে পারেনা। কর্মের কোন গুণ থাকতে পারেনা। সব রকমের দ্রব্যের মধ্যই কর্ম থাকেনা। কেবল অনিত্য মূর্ত দ্রব্যের মধ্যেই কর্ম বিরাজ করে। দ্রব্যের মধ্যে গুণ ও কর্ম উভয় বিরাজ করলেও গুণ ও কর্মের মধ্যে পার্থক্য আছে। গুন নিষ্ক্রিয় কিন্তু কর্ম সক্রিয়। গুণ হলো দ্রব্যের স্থায়ী লক্ষণ কিন্তু কর্ম হল অস্থায়ী। কাজেই কর্ম বা গতিকে একটি স্বতন্ত্র পদার্থ হিসেবে স্বীকার করা হয়েছে।
কর্ম পাঁচ প্রকার। যথা - (১) উৎক্ষেপন, (২) অবক্ষেপণ, (৩) আকুঞ্চন, (৪) প্রসারণ ও (৫) গমন।
(১) উৎক্ষেপণ: যে কর্মের দ্বারা উপরের সঙ্গে কোন দ্রব্যের সংযোগ হয়, তাকে বলা হয় উৎক্ষেপণ। যেমন- আম পাড়তে গাছের উপর দিকে ঢিল ছুড়ে দেওয়া
(২) অবক্ষেপণ: যে কর্মের দ্বারা নিচের দিকে কোন দ্রব্যকে নিক্ষেপ করা হয়, তাকে বলা হয় অবক্ষেপণ। যেমন- ছাদ থেকে নিচে কিছু ফেলে দেওয়া।
(৩) আকুঞ্চন: কোন দ্রব্যের বিভিন্ন অংশগুলিকে সংকুচিত করাকেই আকুঞ্চন বলে। যেমন- হাত মুষ্টিবদ্ধ করে হাতের আংগুল গুলিকে সংকুচিত করা।
(৪) প্রসারণ: কোন দ্রব্যের সংযুক্ত অংশকে বিচ্ছিন্ন করাকেই প্রসারণ বলে। যেমন- মুষ্টির মধ্যে ধরা হাতের আঙ্গুলগুলি বিস্তার করা।
(৫) গমন: এই চার প্রকার কর্ম বাদে অন্যসব কর্ম হলো গমন। যেমন- আগুনের ঊর্ধ্বগতি, বাতাসের তীব্র গতি প্রভৃতি গমনের অন্তর্গত।
সবরকম কর্মকে প্রত্যক্ষ করা যায় না। পার্থিব দ্রব্যের কর্মকে প্রত্যক্ষ করা যায়, কিন্তু মনের কর্মকে প্রত্যক্ষ করা যায় না।
<<<<<>>>>>
0 comments:
Post a Comment