বচন বলতে কী বোঝো? বচন এবং বাক্যের মধ্যে পার্থক্য করো। নিরপেক্ষ বচনের পদের ব্যাপ্যতা বলতে কী বোঝো? ২+৪+২=৮
উঃ
বচন: সাধারণভাবে, অবধারণের ভাষায় প্রকাশিত রূপকে বচন বলা হয়। অবধারণকে যখন উদ্দেশ্য, বিধেয়, সংযোজক এবং তার সঙ্গে কখনো পরিমাণকের সাহায্যে প্রকাশ করা হয় তখন সেটি বচনে পরিণত হয়। যেমন-
সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব।
অথবা
ভাষায় প্রকাশিত অবধারণকে বচন বলে। অবধারণকে যখন উদ্দেশ্য, বিধেয়, সংযোজক এবং তার সঙ্গে কখনো পরিমাণকের সাহায্যে প্রকাশ করা হয় তখন সেটি বচনে পরিণত হয়। যেমন- সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব।
অথবা
দুটি পদের মধ্যে কোন একটি সম্বন্ধের স্বীকৃতি বা অস্বীকৃতিকে বচন বলা হয়। যেমন-
সকল মানুষ হয় মরণশীল জীব।
বচন ও বাক্যের পার্থক্য :
প্রথমত , ব্যাকরণ সম্মতভাবে গঠিত শব্দসমষ্টির নাম বাক্য। বাক্য গঠনে ব্যাকরণই প্রধান। বাক্যে সাধারণত উদ্দেশ্য, বিধেয় ও একটি ক্রিয়া থাকে। বহুক্ষেত্রে বিধেয়কে স্পষ্টভাবে শনাক্ত করা যাবে না। বচনে উদ্দেশ্য , বিধেয় এবং তাদের সম্বন্ধকে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা যায়। সম্বন্ধসূচক শব্দের নাম সংযােজক।
দ্বিতীয়ত , বাক্য বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। যেমন — বর্ণনামূলক, আদেশসূচক, আবেগ প্রকাশক ইত্যাদি। কিন্তু শুধুমাত্র বিবৃতিমূলক বা ঘােষক বাক্যকেই বচন বলা হয়।
তৃতীয়ত, কোনাে বাক্যে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ — এই তিন কালের সমাপিকা ক্রিয়া বর্তমান থাকতে পারে। কিন্তু বচনে যে ক্রিয়াপদটি সংযােজক হিসাবে ব্যবহৃত হয় তা সর্বদাই ‘ভূ' ধাতুর বর্তমানের কোনাে একটি রূপ হয় । যেমন - সক্রেটিস একজন দার্শনিক ছিলেন। এটি একটি বাক্য এবং এটি অতীতকালকে নিদর্শন করছে। কিন্তু একে বচনে রূপান্তরিত করলে হবে— “ সক্রেটিস হন একজন দার্শনিক। যা বর্তমানকালের একটি রূপ।
চতুর্থত, সব বাক্যই সত্য বা মিথ্যা হওয়ার যােগ্য নয়। যেমন : কাল কি বৃষ্টি হবে? —এই প্রশ্নসূচক বাক্যটি সত্য বা মিথ্যা নয়। কিন্তু বচন মাত্রই সত্য বা মিথ্যা হওয়ার যােগ্য। একমাত্র বিবৃতিমূলক বাক্যই সত্য বা মিথ্যা হতে পারে বলে ওই বাক্যই বচন হয়।
পঞ্চমত, প্রত্যেকটি বাক্যে গুণ ও পরিমাণ স্পষ্টভাবে উল্লেখ নাও থাকতে পারে। যেমন— “ মানুষ জীবসবৃক্তিসম্পন্ন প্রাণী । ” — এখানে পরিমাণসূচক কোনাে মানক যেমন নেই, তেমনি কোনাে কোনাে গুণেরও কোনাে প্রতীক নেই । কিন্তু প্রত্যেকটি বচনে গুণ ও পরিমাণ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতেই হবে । যেমন — সকল মানুষ হয় জীববৃত্তিসম্পন্ন জীব । ”
পদের ব্যাপ্যতার সংজ্ঞা : একটি বচনে কোনাে পদ যখন তার সম্পূর্ণ ব্যক্তর্থ বা ব্যাচ্যার্থকে বােঝায় অর্থাৎ, ওই পদের দ্বারা নির্দেশিত শ্রেণির সকল সদস্যকে বােঝানাে হয়, তখন তাকে ব্যাপ্য বলে।
উদাহরণ — সকল শিশু হয় সরল । (A)
এই বচনটিতে 'শিশু' হল উদ্দেশ্য পদ। বচনটিতে ‘শিশু’ পদটির সমগ্র ব্যক্তর্থকে স্বীকার করা হয়েছে বা গ্রহণ করা হয়েছে। অর্থাৎ বচনটির উদ্দেশ্য পদ দ্বারা ‘শিশু' শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত সকল শিশুকে বােঝানাে হয়েছে। তাই বচনটিতে ‘শিশু’ পদটি হল ব্যাপ।
অথবা, ( i ) কোনাে অসৎ মানুষ নেই :
উঃ: L.F. E কোনাে মানুষ নয় অসৎ।
মানুষ (উদ্দেশ্য) – ব্যাপ্য।
অসৎ( বিধেয়) – ব্যাপ্য
( ii ) সৎ ব্যক্তিরা সর্বদা সুখী হয় না :
L.F. 0 কোনাে কোনাে সৎ ব্যক্তি নয় সুখী।
উদ্দেশ্য(সৎ ব্যক্তি) → অব্যাপ্য।
বিধেয় )সুখী) -- ঔব্যাপ্য।
0 comments:
Post a Comment